বিন্নি ধানের খই পর্ব-২০

0
2941

#বিন্নি_ধানের_খই
#পর্ব_২০
#মিদহাদ_আহমদ

আসিফ আমার হাত ধরে আলিশান থেকে বের হয়ে এলো। বাসার গেইটে আসতেই দারোয়ান জিজ্ঞেস করলো,

‘স্যার গাড়ি কোনটা বের করবো? কালোটা না নতুন এইটা আনছেন পর্শুদিন ইনপোর্ট করে ওইটা?’

আসিফ কোন জবাব দিলো না। আমি বললাম,

‘গাড়ি লাগবে না চাচা’

‘ওমা! একী কথা! স্যার কোনদিন গাড়ি ছাড়া তো বাড়ি থেকে বের হয়নাই। ও বুঝছি, বাইক নিয়ে যাবেন? ম্যাডামরে নিয়া রাইতে বাইক দিয়া ঘুরবেন শহর বুঝতে পারছি!’

‘যাস্ট গো! আমি বলেছি আমার গাড়ি লাগবে? কী সব আবোল তাবোল বকছো তুমি!’

‘না না না। এভাবে আমার দারোয়ানের সাথে কথা বলা যাবে না। মুরোদ থাকলে টাকা দিয়ে এমন দারোয়ান পুষে রাখো এক দুইটা। তারপর এমন গলাবাজি করবা’

কথাটা পেছন থেকে এসে আমার শ্বশুর বললেন আসিফকে। শব্দহীন ভাবে আমরা দুজন মানব মানবী গেইট অতিক্রম করে বেরিয়ে এলাম। খোলা রাস্তায় মানুষজন আছে। ঈদের আগের সময়, বাজারহাট করছে লোকজন। আসিফ আমাকে বললো,

‘আমার হাত ধরে যখন বের হয়ে এসেছো, তখন থাকতে পারবা তো আমার সাথে?’

আমি কোন বাছবিচার করলাম না। আসিফকে বললাম,

‘কেন পারবো না? দেখো দুজন মিলে ঠিকই নিজেদের মতো করে গুছিয়ে নিবো সবকিছু।’

আমার মনে হতে লাগলো আমাদের স্কুলের বিপাশা রানী ম্যাডামের কথা। উনি সব সময় বলতেন, পুরুষদের প্রয়োজন বিশ্বস্ত হাতের। একটা শুদ্ধ মনের। একটা বিশ্বস্ত হাত যদি পুরুষেরা পেয়ে যায়, যদি তাদেরকে ভরসা যোগানোর মতো মানুষ তাদের পাশে থাকে, তাহলে পুরুষেরা জীবনে অনেক অসাধ্য করে ফেলতে পারে সাধন। আজ বারবার শুধু বিপাশা ম্যাডামের কথা মাথায় আসছে। তারা যখন বিয়ে করেছিলেন, ম্যাডাম তখন সবেমাত্র স্কুলে জয়েন করেছেন৷ তার স্বামী তখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যাল থেকে সদ্য পাশ করে বেরিয়েছেন। কোন চাকরি নাই, কিচ্ছু নাই। একদিকে জীবনের টেনশন, অন্যদিকে স্ত্রী, অন্যদিকে কেরিয়ার। বিপাশা ম্যাডাম বলেছেন ক্লাসে যে তিনি তার স্বামীকে পুরোপুরি বিসিএস এর প্রিপারেশনে মনোযোগ দিতে বলেছিলেন৷ একা হাতে তুলে নিয়েছেন পুরো পরিবারের দায়িত্ব। তারপর আর কই! চার বছর! আমি ক্লাস সিক্স থেকে টেনে উঠলাম। একদিন পুরো স্কুলে মিষ্টি বিতরণ হলো। জানতে পারলাম বিপাশা ম্যাডমের স্বামী এডমিন ক্যাডার হয়েছেন। আজ আবার সেই দিনটাকে আমি অনুধাবন করতে লাগলাম। যদি বিপাশা ম্যাডাম তার নিজ হাতে তুলে নিতে পারেন পরিবারের দায়িত্ব, তাহলে আমি কেন নয়?

অন্যদিকে আমার মনকোটরে হানা দিতে লাগলো এক অজানা হয়! আমি কী করবো এখন! ইন্টার পাশ করা ছাড়া এ মেয়ে, অসহায়ের মতো মজ জোয়াড়ে ভাবণায় বদ্ধ হয়ে গেলাম। কিছু করতে হবে, অন্যদিকে এই করতে পারার মতো যোগ্যতাও যে আমার থাকা লাগবে! অন্যথায় হবে কীভাবে?’

আসিফ আমাকে বললো,

‘নুপুর! জানি না কী করতে পারবো। বা কিছু করতে পারবো কিনা এইটারও নিশ্চয়তা আমার কাছে নেই। আমি দিতে পারছি না। কিন্তু সব সময় একটা পজেটিভ এনার্জি আমাকে এসে বলছে, আমাকে দিয়ে হবে। আমি চেষ্টা করেই দেখিনা একবার!’

রাস্তায় একজন মধ্য বয়স্ক লোক আসিফকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন,

‘বাবা আসিফ রাতে এখানে কেন? বউমা নাকি সাথে? কোথাও যাচ্ছো নাকি?’

‘না আঙ্কেল এমনি।’

‘অহ আচ্ছা। কিছু মনে করো না। তোমাকে তো কখনো বাইক বা কার ছাড়া দেখিনি, তাই আজ দেখে কিছুটা অবাক হলাম। তা কেমন আছে বউমা? ভালো আছো তো?’

আমি সালাম দিলাম। বললাম,

‘জি আঙ্কেল। আপনি ভালো আছেন?’

‘হ্যাঁ মা ভালো আছি। ভারী মিষ্টি মেয়ে তুমি’

উনি চলে গেলেন। খেয়াল করলাম আসিফ ঘামছে। হাত দিয়ে ঘাম মুছে নিচ্ছে। আমি আসিফকে বললাম,

‘সুযোগ এসেছে। এবং এই সুযোগ আমাদের নিতে হবে৷ দেখবা, কোনদিক থেকে আমরা উপর ওয়ালার সাহায্য পাবো তার কল্পনাও করতে পারবা না। শুধু দরকার আমাদের একাগ্রচিত্ত। এছাড়া আর কিছু না।’

‘এখন কী করবো? কোথায় যাবো?’

‘বাড়িতে। আমার বাড়িতে। ‘

‘কিন্তু ওখানে…’

‘হ্যাঁ। সেখানেই যাবো আমরা। আপাতত একটা ব্যবস্থা হোক। তারপর দেখি কী করা যায় ‘

আসিফ আর আমার কথার আপত্তি জানালো না। শুধু কিছুক্ষণ ভেবে বললো,

‘ভাড়ার টাকা যে…’

‘সে তোমার চিন্তা করতে হবে না। বাড়িতে যাই। বাবা আছেন। ঠিক একটা ব্যবস্থা বাবা আমাদের জন্য করে দিবেন।’

প্রায় আধঘন্টা রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে সিএনজি খুঁজছিলাম আমরা। আশেপাশের অনেকেই কানাঘুষা করতে লাগলো বুঝতে পারলাম৷ বিল্ডিংয়ে খেয়াল করলাম প্রায় প্রতি তলা থেকেই কেউ না কেউ পর্দার আড়ালে এসে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে আমাদের। হয়তো তাদের এই দেখায় মিশে আছে উৎসুক মনের নানার প্রশ্ন! আসলে এটাই স্বাভাবিক। যে ছেলেকে কখনো কেউ রাস্তায় দেখেনি আজ কয়েকটা বছর ধরে, যে ছেলে সব সময় হই বাইকে নাহলে কারে বসা ছিলো, যে ছেলের বাবা এই শহরের নামকরা শিল্পপতি সেই ছেলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিএনজি খুঁজছে! বাসায় জোড়া জোড়া কার লাইটেস রেখে? তাও এই রাতে স্ত্রী কে নিয়ে? হাতে একটা বড় ব্যাগ! কীসের ব্যাগ এইটা? অবাক করা বিষয় অবশ্যই! মানুষের এই আশ্চর্য হওয়ার মধ্যে কোন আশ্চর্য নেই।

নিশুতি অন্ধকার অন্যদিন হলে ছেয়ে যেতো। আজ আর সেই অন্ধকার নেই। চারিদিকে আলো জ্বলছে। ঈদের বাজার। দেখতে পেলাম রিকশায় হুড নামিয়ে হাতে আইসক্রিম খেতে খেতে এক দম্পতি গল্প করতে করতে যাচ্ছে। পুরুষটার হাতে বেশ কয়েকটা ব্যাগ। নিশ্চয়ই ব্যাগভর্তি ঈদের বাজার! ঈদের আনন্দ! আর তাদের মুখে লেগে থাকা আনন্দ হাসি আমাকে বলছিলো যেনো, ‘নুপুর, তোমার জীবনে এমন আনন্দ হাসি হবে কখনো?’

আবার ভেতরে ভেতরে নিজের বিপরীত সত্বা এসে নিজেকে ধমক দিয়ে বললো,

‘কী ভাবছো নুপুর? জীবনে সবকিছু পাওয়া কি সহজ? তোমার পড়ার স্বপ্ন কী পূর্ণ হয়েছে?’ বলো হয়েছে? ‘

আমি অজান্তেই জোরে জোরে বলে উঠলাম,

‘না না। না না হয়নি।’

আসিফ আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,

‘কী না না? কী হয়নি?’

একটা সিএনজি এসে থামলো তখন। আসিফকে দেখে ড্রাইভার জিজ্ঞেস করলো,

‘স্যার আপনি এতরাতে?’

‘হুম৷ যাবা কিনা বলো?’

‘হায় হায়! কী বলেন স্যার? মনে আছে আপনার? আমি ওই যে রিকশা চালাইতাম? আমার ঘরে খাবার আছিলো না। পায়ের কোণা কাইটা ফুইলা রহছিলো। আমারে কেউ খাওন দেয়নাই। আমার সব মনে আছে স্যার। সব মনে আছে। সেদিন আপনি যে আমার হাতে বিশ হাজার টাকা আর অষুধ কিইনা দিয়া বলছিলেন কিছু করতে? তারপর দিলাম দুকান। সেই দুকান দিয়া আস্তে আস্তে পুঞ্জিপাতি বাড়াইলাম। তারপর আল্লায় দিলে আজ ছয়মাস থিকা এই সিএনজির মালিক আমি।’

আসিফ বললো,

‘নিয়ে যাবা আমাদের?’

‘আয় হায়! কী কন। বসেন বসেন। কই যাবেন স্যার?আপনারে আমার গাড়িতে কইরা নিয়া যাইতে পারলে আমি খুব বেশি খুশি হইমু। জানেন স্যার, এই গাড়িটা কেনার পর আমার গিন্নিও বইলা দিছে, আপনারে আমার গাড়িতে চড়াইয়া আপনার যেনো দোয়া লই। আপনার দোয়া যে এত তাড়াতাড়ি পাইয়া যাইমু এইটা ভাবতে পারিনাই। কী ভাগ্য আমার’

‘বড়লেখা যাবো। আমার শ্বশুরবাড়ি। নিয়ে যেতে পারবেন?’

‘আরে আরে কী কন স্যার। চলেন চলেন৷ উঠেন।’

তারপর ড্রাইভার আবার বললো,

‘অহ! লগে মনে হয় ভাবি? আস্লামালেকুম ভাবি। আপনি বড়ো ভাগ্যবান। এমন দিলখোলা মানুষ এই যুগে আর হয় না। মানুষের জন্য যে করে, যে কাঁদে সে আর যাই হোক, সাধারণ মানুষের কাতারে পড়ে না। এককালে নবী রাসূল আইছিলো। এখন তো আর ভালা মানুষও আয় না। তয় একেবারে ভালা মানুষ যে নাই, তাও না। এই দুই একজন আছে আপনার স্বামীর মতো। ভাই একেবারে গিনি সোনা। ভাইজান, ভাবিরে নিয়া উঠেন। আমি দিয়া আই।’

‘আসতে আসতে যে ফজর হয়ে যাবে তোমার। সেহরিও রাস্তায় করা লাগবে।’

‘আরে উঠেন ভাই। সে যা হবার হোক। আইজ আপনারে নিয়া গল্প করতে করতে যামু।’

আমরা সিএনজিতে উঠে বসলাম। এক দমকা বাতাস বইতে লাগলো। আজ কয়েকটা মাস পর আমি সিএনজিতে উঠেছি। এস এস সি পরীক্ষার সময়ে বাবা একটা লাইটেস ভাড়া করে দেয়। আমরা এগারো জন যেতাম। পুরো পরীক্ষা চুক্তি। জনপ্রতি ভাড়া আসছে পুরো এক্সাম সিজনে ৬০০ টাকা। তখন ভাবতাম, আমার যদি এমন গাড়ি থাকতো! আজ কয়েকটা মাস ছাড়া এমন গাড়ি ছাড়া অন্য গাড়ি যেনো চড়াই নিষিদ্ধ। রাস্তাঘাট সিএনজি, রিক্সা দেখলে ইচ্ছা হতো, ইশ! যদি এগুলো চড়তে পারতাম এখন!

নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিশ্বাস, ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস!

আমি মনেমনে অনুভব করতে লাগলাম, আমি এক মহাপুরুষের পাশে বসে আছি যেনো! আসিফের ভেতরে ভেতরে এসব কাজের সম্পর্কে আমি জানতাম না। হয়তো বাসায়ও কেউ জানে না। জানতোও না। একটা খারাপ অবয়বের ভেতরে যে এত নির্মল, এত সুন্দর, এত পরিস্কার, এত স্নিগ্ধ একটা মানুষ বাস করছে! পৃথিবী যেনো তার সব আশীর্বাদ দিয়ে মানুষ গড়েছে। আর সেই মানুষটাই যেনো আসিফ।

আসিফ সিএনজিতে বসে জিজ্ঞেস করলো,

‘তখন কী না না করছিলা?’

‘স্বপ্ন’

‘কী স্বপ্ন?’

‘আমার স্বপ্ন।’

‘বলো আমাকে।’

‘আমার ডাক্তার হওয়া। আমার পড়ালেখা করা। আমার স্বপ্ন। আমার সব স্বপ্ন। এই স্বপ্নগুলো আমি বুনেছিলাম নিজের মাঝে। যেই স্বপ্নগুলোর থেকে আমি আমি হাজার ক্রোশ দূরে। যোজন যোজন দূর আমাকে আমার স্বপ্ন থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। বিচ্ছিন্ন।’

পুরো রাস্তায় আমাদের আর কথা হলো না তেমন। আসিফ ড্রাইভারের থেকে চেয়ে নিয়ে একটা সিগারেট টানলো কিছুক্ষণ পর৷ ঘন্টা দুয়েকের মাথায় আমার বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থাকে। গাড়ির হর্ণেই আমার বাবা মা বাইরে বেরিয়ে আসেন। বাবা জিজ্ঞেস করেন,

‘কী হয়েছে মা? কোন সমস্যা? এতরাতে?’

আমি বাবাকে বললাম,

‘না বাবা। আপাতত আসিফকে নিয়ে রুমে যাও। কোন সমস্যা না।’

বাবা আমাদের নিয়ে রুমে ঢুকলেন। আসিফকে নিয়ে বসালেন সোফায়। আজ সন্ধ্যা থেকেই কারেন্ট নাই গ্রামে। আমাদের টিনচালা ঘর দিনের গরমে একেবারে সিদ্ধ হয়ে যাওয়ার মতো হয়ে উঠেছে এই মধ্যরাতে। আসিফকে নিয়ে কলের ধারে গেলাম আমি কল জাতা দিয়ে পানি বের করে তাকে হাতমুখ ধূয়ে নিতে বললাম। রান্নাঘরে গিয়ে মায়ের সাথে সেহরির খাবার রেডি করার সময়ে মা আমাকে ফিসফিস করে বললেন,

‘ফতাকুবেলা ইতা নারিং বিরিং কিতা? হরির লগে মাইর অইছেনি? ভালায় ভালায় খাইলকু যাইবায়গিয়া। জামাই লইয়া আকতা ধরি বাফোর বাড়ি আইল্লায়। অতার লাগিয়া দিছলাম নি বড় ঘর দেখিয়া বিয়া? ডংগর একটা সময় থাখে৷ এখন ই সময় নায়৷ বিয়া দিয়া হারলে ফুড়িন কালে ভদ্রে বাফোর বাড়ি নাইওর আইন। তুমি দেখরাম নাইওর না একবারে জামাই লইয়া আইচ্ছ লাগের।’

[সেহরির সময় এসব ডং কী? শাশুড়ির সাথে মারামারি হয়েছে? ভালোয় ভালোয় আগামীকাল চলে। স্বামী নিয়ে হুট করে বাপের বাড়িতে চলে এলে। এর জন্য বড় ঘরে বিয়ে দিয়েছিলাম? ডংগের একটা সময় থাকে। এখন এই সময় নয়৷ বিয়ের পর কালেভদ্রে মেয়ে বাপের বাড়িতে নাইওর কর‍তে আসে। তুমি দেখছি নাইওর না একেবারে স্বামী নিয়ে চলে এসেছো]

মায়ের মুখে কথাগুলো শুনে আমি ভেতরে চাপা কষ্ট আর চাপা রাখতে পারলাম না৷ বললাম,

‘অহ আচ্ছা! এই তাহলে আসল রূপ দেখাচ্ছো এখন? আরে আমি না তোমার মেয়ে? তুমি না আমার মা? আর একজন মা হয়ে তুমি এসব বলছো আমাকে?’

‘কেন বলবো না? সকালে যখন আশেপাশের বাড়ির লোকেরা জিজ্ঞেস করবে মেয়ে কেন এসেছে, জামাই কেন এলো? গাড়ি কই? তখন কী জবাব দিবো আমি?’

বাবা পেছন থেকে এসে বললেন,

‘নুপুরের মা কী হচ্ছে এসব? জামাই বসা। তাড়াতাড়ি ভাত দাও। এখন এসব বলার সময়? মা নুপুর তুই চল। জামাই অপেক্ষা করছে।’

আমি চলে গেলাম৷ মোমবাতির আলোতে খেতে বসলো আসিফ। আমিও পাশে বসা আছি৷ একটা পোকা উড়ে এসে পড়লো আসিফের পাতের মাছের উপর। খেয়াল করলাম আসিফ পোকাটা সরিয়ে নিলো৷ কিছু বললো না। বাসায় হলে নিশ্চিত এই সময়ে ভাতের প্লেইট ছুড়ে ফেলে দিতো!

রাতে ঘুমানোর সময় আমি পাখা হাতে বাতাস করতে লাগলাম আসিফকে। এসি ছাড়া মানুষটা গরমে ঘামছে। কিন্তু কোন অভিযোগ করছে না। ছেড়াফাড়া মশারির ভেতরে এসে ঢুকেছে মশাও। কানের কাছে মশার গান৷ অথচ মানুষটার কোন অভিযোগ নেই।

কিছুক্ষণ পর মৌণতা ভেঙ্গে আসিফ আমাকে বললো,

‘আমরা এখানেও থাকবো না নুপুর। মাকে এভাবে উপরি কষ্ট দেয়া ঠিক না।’

আসিফ কি মায়ের কথাগুলোও তবে শুনে ফেলেছে?

এক অজানা শঙ্কা, মনের আনন্দ, অন্যদিকে মানুষটাকে নিজের মতো করে পাওয়ার সাধে আমার দেহ মন ইচ্ছা একেবারে তনুজল হয়ে গেলো। বিধাতা কি এবার সত্যি সত্যি আমার ভেতরের নুপুরকে পরিচয় দিতে এগিয়ে আসবেন?

[লাইক কমেন্ট করে যাবেন সবাই। আপনাদের জন্যই পর্ব বড় করে লেখলাম। গল্পের রিচ অনেক ভালো। আপনাদের লাইক, কমেন্ট, শেয়ারে গল্পের রিচ আরও বাড়িয়ে দিবে। লেখকের অনুরোধ হিসাবে আশাকরি গল্পটা ছড়িয়ে দিতে পাশে থাকবেন৷ অবশ্যই মন্তব্য জানাবেন। লাইক দিবেন পড়ার পর। আপনাদের পাশে থাকাই যে আমার আসল অনুপ্রেরণা ❤️]

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here