বৃষ্টিস্নাত ভোর পর্বঃ৩৪

0
3902

#বৃষ্টিস্নাত_ভোর
#পর্বঃ৩৪
লিখাঃতাজরিয়ান খান তানভি

বিকেল হতেই আজ আকাশটা বিমর্ষ।থমথমে পরিবেশ।গুমোট চারধার।যেনো মন খারাপের আকাশ।দেখে মনে হচ্ছে এখনই আকাশ ফুঁড়ে নামবে বর্ষন নামের সেই অশ্রুজল।শীতকালের প্রগাঢ়তা বাড়ে পৌষের শেষে।অবাধ্য আকাশ তখন ঝড়ায় ঝিরিঝিরি বৃষ্টি।আর তাতেই হিম চাদরে অবগাহন করে পুরো পরিবেশ।

সকাল হতেই তোড়জোড় করে চলছে আজরাহান আর প্রহর এর বিয়ের আয়োজন।সানোয়ার আহমেদ আজরাহান কে সময় দিতে বলেছে।কিন্তু আজরাহান তার সিদ্ধান্তে অটল।বিয়ে আজই হবে।তাই বাধ্য হয়ে ঘরোয়া পরিবেশেই কাজী ডেকে আজরাহান আর প্রহর এর বিয়ে সম্পন্ন হয়।
মেঘমেদুর অপেক্ষারত কখন অঝোর ধারায় বইয়ে দেবে তার অন্তর্নিহিত জল।

লিভিং রুমে বসে আছে চার বন্ধু।নিস্তব্ধ,নিঃশব্দ।আজরাহান এর চোখে মুখে অদৃশ্য সুখানুভুতি।তার রেড রোজ আজ তার হবে।
আশফিক অধর জোড়া প্রশ্বস্ত করে শান্ত গলায় বলল–

“কিরে বসে আছিস যে!
একটা বেজে গেছে অলরেডি।সময় সংক্ষেপ। ”

আজরাহান নিরস চোখদুটো দিয়ে তাকালো আশফিক এর দিকে।আশফিক মৃদু ছন্দে হাসলো।ফিচেল গলায় বলল—

“টেনশেন হচ্ছে নাকি!
আরে টেনশেন নিস না।আমরা তো আছি।হেল্প লাগলে বল।”

আজরাহান শক্ত চোখে তাকায়।আশফিক মুখে অদ্ভুত শব্দ করে আমতা আমতা করে বলল–

“না মানে আমি বলছিলাম,যদি তোর কোনো টিপস লাগে!আই মিন শিহরণ তো আছে।ওর তো আবার এক্সপেরিয়েন্স আছে।তাই বলছিলাম আরকি।”

আজরাহান দৃঢ় গলায় বলল–

“ওর টিপস আমার লাগবে না।পড়াতে গিয়ে যে মালা বদল করে আসে তার দৌঁড় আমার জানা আছে।”

মুখ খুলে শিহরণ।দাম্ভিক হাসি দিয়ে বলল—

“সে যাই বলিস।যা করেছি বিয়ের পরই করেছি।তোর মতো তো বিয়ের আগেই শুরু করে দেই নি।”

মারশিয়াদ স্মিত হেসে বলল–

“তোদের কী আর টপিকস নেই কথা বলার!

আশফিক ব্যস্ত হয়ে বলল–

“এইটাই তো ইমপর্টেন্ট টপিক।ফার্স্ট টাইম বলে কথা।আমার ভাইকে একটু শিখিয়ে দিতে হবে তো।”

শিহরণ বাঁকা হেসে বলল—

“ফার্স্ট টাইম না সেকেন্ড,থার্ড আল্লাম মালুম।”

আজরাহান চোয়াল শক্ত করে গাঢ় তপ্ত গলায় বলল–

“একদম বাজে কথা বলবি না।”

ওদের কথায় বিগলিত হাসে মারশিয়াদ।নম্র গলায় আজরাহান কে বলল–

“তুই যা তো।এমনিতেই অনেক লেট হয়েগেছে।”

ওদের সামনেই উচ্ছলিত হয়ে হাসি হাসি মুখ নিয়ে এসে দাঁড়ায় নুরাইসা।সরস গলায় বলল–

“জান,আপনি খাবেন না?

মারশিয়াদ অধর প্রসারিত করে মিষ্টি গলায় পাল্টা প্রশ্ন করলো—-

“আপনি খেয়েছেন?

“হ্যাঁ।”

“আমার খিদে নেই।বসেন।”

মারশিয়াদ নুরাইসার হাত ধরে ওকে নিজের পাশে বসায়।নুরাইসার পাশের কাউচেই বসা আজরাহান।ওর দিকে তাকিয়ে চোখ ক্ষীন করে আবার মারশিয়াদ এর দিকে তাকায়।আলতো হাতে মারশিয়াদ এর এক হাত আঁকড়ে ধরে ওর কাঁধে মাথা রাখে।
আজরাহান নুরাইসা কে উদ্দেশ্য করে ক্ষীন গলায় বলল–

“সরি মারমেইড।”

নুরাইসা স্নিগ্ধ হেসে বলল—

“ইটস ওকে।”

নুরাইসা মারশিয়াদ এর দিকে তাকিয়ে ফিক করে হাসে।মারশিয়াদ নুরাইসা চোখে চোখ রেখে অধর কোন প্রস্ফুটিত করে।আজরাহান এর দিকে তাকিয়ে নরম গলায় বলল–

“তুই এখনো বসে আছিস কেনো?যা।রেড চিলি তোর জন্য অপেক্ষা করছে।”

আজরাহান মৃদু হাসে।স্বাভাবিক গলায় বলল–

“যাচ্ছি।গুড নাইট।”

নুরাইসা ব্যস্ত গলায় বলল–

“যান,যান।আপু আপনাকে যেতে বলেছ।”

আশফিক হতাশভরা দীর্ঘশ্বাস ফেলে দুঃখী দুঃখী গলায় বলল–

“তোর গুড আর আমাদের হরর নাইট।আল্লাম মালুম আজ ঘুমাতে পারবো কি না!

আশফিক এইবার একটু গলা উঁচু করে বলল–

“ভাই রে সাবধান।দারোগা এলে কিন্তু তোর সাথে আমাদেরও নিয়ে যাবে শশুড়বাড়ি।আমার আর এই জন্মে বিয়ে করা হবে না।”

নুরাইসা ঠোঁট কামড়ে ধরে চোখ পিটপিট করে ফিকে গলায় মারশিয়াদ কে বলল—

“জান!

“হু।”

“পুলিশ কেনো আসবে?

আশফিক শুকনো ঢোক গিলে।শিহরণ হাসতে গিয়েও হাসি বন্ধ করার জন্য মুখ ফুলিয়ে রাখে।মারশিয়াদ কঠিন দৃষ্টিতে তাকায় আশফিক এর দিকে।আশফিক হালকা কাশি দিয়ে গলা পরিষ্কার করে ধীর গলায় বলল–

“নুরাইসা,
তুমি দুধ খাও?

“হ্যাঁ।”

“তা গ্লাসে খাও নাকি ফিডারে?

নুরাইসা কপাল কুঁচকে ভ্রু নাচিয়ে বলল–

“এইসব কী বলছেন!

মারশিয়াদ অক্ষিপল্লব প্রশ্বস্ত করে গম্ভীর গলায় বলল–

“তোকে কী আজরাহান এর ভুতে পেয়েছে!

আশফিক ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে অন্যদিকে তাকায়।যেনো সে কিছুই শুনতে পায় নি।কিছুক্ষন সবাই নিরব।মারশিয়াদ মোবাইলে কিছু একটা দেখছে আর তাতেই অক্ষিজোড়া নিবদ্ধ করে রেখেছে নুরাইসা।

আশফিক বাঁকা হেসে বলল–

“নুরাইসা!

নুরাইসা মারশিয়াদ এর কাঁধ থেকে মাথা উঠিয়ে ঠোঁট গুজ করে বলল–

“হু।”

“না মানে বলছিলাম যে তোমার আর মারশিয়াদ এর বিয়ে তো হয়েগেছে।কিন্তু তার মানে এই নয় যে তুমি সবার সামনেই একদম লেগে লেগে বসে থাকবে।আমি না হয় সম্পর্কে তোমার দেবর।কিন্তু শিহরণ তো ভাসুর হয় তোমার।অন্তত তার মান রেখো।”

শিহরণ দুবোর্ধ্য হাসে।বুঝতে পারে আজ আজরাহান এর জায়গা পূরণ করবে আশফিক।দুই ভাই কেউ কারোর চেয়ে কম না।
নুরাইসা ঝামটা মেরে উঠে বলল–

“হাত ধরেছি তো কী হয়েছে!
আজরাহান স্যার যে ফুলসজ্জা করতে গেলো তার বেলা!

মারশিয়াদ তপ্ত গলায় বলল–

“মিষ্টি!
এইসব কী বলছেন!কোথায় কী বলতে হয় জানেন না!

নুরাইসা কাঁদো কাঁদো গলায় বলল–

“আমি কী করেছি!আশফিক স্যার ই তো বলল।”

“কেউ কিছু বললেই তার মুখে মুখে বলতে হবে !এইটা কোন ধরনের ম্যানার?

“দুর!
আপনি শুধু আমাকেই বকেন।”

নুরাইসা রাগে হনহন করে চলে যায়।শিহরণ আর আশফিক দাম্ভিক হাসি হাসে।মারশিয়াদ বলল—

“খুশি?

আশফিক দম্ভ করে বলল—

“অবশ্যই।আমরা একা বসে থাকবো আর তুই আমাদের সামনেই বউ নিয়ে চুপকাচুপকি করবি তাতো হতে দিতে পারি না।কিরে শিহরণ তুই কী বলিস?

শিহরণ দাঁত কেলিয়ে হেসে বলল–

“হক কথা।”

মারশিয়াদ দাঁতে দাঁত চেপে বলল–

“শালা,ঘরের শত্রু বিভীষণ।”

“সে তুই যাই ই বলিস তোদের কপাল তো সোনায় সোহাগা।আজরাহান আর তুই দুইটা কচি কচি বউ পেয়ে গেলি।আর আমাদের দেখ!
আমাদের আগেই আমাদের বউ বুড়ি হয়ে যাবে।তখন কী অবস্থা হবে আমাদের!

” তো আমার পিছনে কুকুরের মতো ঘুরঘুর করতে কে বলেছে তোমাকে?

আশফিক বিস্ফোরিত চোখে দেখে ওর সামনেই অগ্নিচোখ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ইনশিরাহ।আশফিক বৃহৎ ঢোক গিলে আহত গলায় বলল–

“আরে আমি তো মজা করছিলাম।তুমি সিরিয়াসলি কেনো নিচ্ছো।”

ইনশিরাহ ঝাঁঝিয়ে উঠে বলল—

” একদম চুপ।আর একবারো আমার সামনে আসবে না।এই জন্যই তোমাদের মতো পুরুষদের আমি দেখতে পারি না।মেয়েদের ভোগ্যপন্য মনে হয় তোমাদের!যত্তসব ঝঞ্জাল।”

ইনশিরাহ গজরাতে গজরাতে চলে যায়।আশফিক দাঁত কিড়মিড় করে ক্ষুন্ন গলায় মারশিয়াদ কে উদ্দেশ্য করে বলল–

“ওই তোর বাপ কী রেড ওয়াইন খেয়ে ওর মার সাথে মেটিং করেছিলো নাকি যে এমন একটা চিজ পয়দা করলো।আমার জীবনটাই বনবাসে পরিণত করে ছাড়লো।”

আশফিক এর কথা শেষ হতেই ঠাস করে এক চড় পরে ওর তুলতুলে গালে।আশফিক গালে হাত দিয়ে তাকাতেই ওর সামনে যেনো এক আহত বাঘিনী কে দেখতে পায়।জ্বলন্ত আগুনে তেতে উঠা গলায় ইনশিরাহ বলল–

“একদম আমার বাবা মা কে নিয়ে বাজে কথা বলবে না।চরিত্রহীন,লম্পট কোথাকার!

শিহরণ আর মারশিয়াদ ঠোঁট কামড়ে বসে ছিলো।ইনশিরাহ যেতেই হো হো করে অট্টহাসিতে দুইজন গড়াগড়ি খেতে লাগলো।আশফিক গালে হাত দিয়েই ধপ করে কাউচে বসে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।বার্তাহীন ঝড় ওর পুরো জীবনটাই বিস্বাদ করে দিলো।
আশফিক ঝামটে মেরে বলল–

“ওই তোরা থামবি!
শালা,বেওয়ারিশ কুত্তা।থাম।”

ওদের হাসি উল্টো দ্বিগুন হারে বাড়তে থাকে।

“এতো হাসাহাসি কীসের?

কুহেলিকার স্বাভাবিক এবং শান্ত গলার আওয়াজ এ অনেক কষ্টে নিজেদের হাসি থামায় মারশিয়াদ আর শিহরণ।কুহলিকা চোখের কোন ক্ষীন করে উৎসুক গলায় বললেন–

“আশফিক,গালে হাত দিয়ে বসে আছিস কেনো?

আশফিক মুখ গোমড়া করে ম্লান গলায় বলল–

“কিছু না।”

“তা এখানে বসে আছিস কেনো?কত কাজ বাকি জানিস!

আশফিক দাঁড়িয়ে যায়।ফিকে গলায় বলল–

“নিজের ছেলেকে ফুলসজ্জা করতে পাঠিয়ে আমাদের দিয়ে কাজ করাবে!
বাহ!চমৎকার।”

কুহেলিকা আশফিক এর কান টেনে বললেন–

“বাঁদড় ছেলে।এইসব কী কথা!

আশফিক মৃদু আর্তনাদ করে বলল–

“ও বড় মা ছাড়ো লাগছে।”

কুহেলিকা মুচকি হেসে আশফিক এর কান ছাড়লেন।চিন্তিত গলায় বললেন–

“এতো কাজ কী করে হবে বলতো!এই আজরাহান টাও কী পাগলামো শুরু করলো।আর কিছুদিন সময় নিয়ে বিয়েটা হলে কী হতো!কাল ই বৌভাত।হাতে মাত্র একরাত সময়।”

মারশিয়াদ স্মিত হেসে কুহেলিকার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।নম্র গলায় বলল–

“চিন্তা করবেন না আনটি।আপনার দুই নয় পাঁচ ছেলে।একজনের বিয়ে তো বাকি চারজন তো আছে।আমরা সামলে নিবো।সব সময় মতোই হবে।আপনি টেনশন করবেন না।”

কুহেলিকা প্রশ্রয়ের হাসি হাসলেন।বিগলিত গলায় বললেন—

“ধন্যবাদ জান।বুঝতেই তো পারছো এতো কম সময়ে এতো আয়োজন!

“ইটস ওকে আনটি।ডোন্ট ওয়ারি।”

আশফিক হেড়ে গলায় বলল–

“বাহ!বাহ! চমৎকার।শুধু নিজের ছেলের কথাই ভাবলে!তিন বছরের বড় আমি ওর।”

“আচ্ছা পাজি ছেলে তো তুই।
চিন্তা করিস না।আজরাহান এর বিয়েটা মিটে যাক।আমি তোর মায়ের সাথে কথা বলছি।তোর আর ইনশিরাহ এর ব্যপারে।”

আশফিক ঝপাৎ করে কুহেলিকা কে জড়িয়ে ধরে আবেগভরা গলায় বলল—

“জয় হোক বড় মা তোমার।তোমার মতো মা যেনো প্রতি ছেলের ভাগ্যে জোটে।”

কুহেলিকা ঈষৎ হেসে মারশিয়াদ কে লক্ষ্য করে বললেন–

“তোমার কোনো আপত্তি নেই তো জান!

মারশিয়াদ নরম গলায় বলল–

“তা কেনো হবে!ওরা দুজন দুজন কে পছন্দ করে।আপত্তি করবো কেনো।”

আশফিক একগাল হেসে মারশিয়াদ কে জড়িয়ে ধরে স্বাভাবিক গলায় বলল–

“তোর মতো ভাই যেনো বাংলার ঘরে ঘরে জন্মায়।তাহলে আমাদের মতো প্রেমিকদের লাইফটা সেট হতে বেশি তেল খরচ করতে হবে না।আজকাল তো সব হিটলার ভাইদের পয়দা হয়।”

আশফিক এর কথায় সবাই হেসে উঠে।

কাল বৌভাত।আর কাল সন্ধ্যার ফ্লাইটেই মারশিয়াদ নুরাইসা কে নিয়ে আমেরিকা চলে যাবে।তাই সবকিছুর আয়োজন দ্রুতগতিতে করা হচ্ছে।
,
,
,
নিজের ঘরের দরজার সামনে আসতেই আজরাহান এর সামনে নারিকেল গাছ হয়ে দাঁড়ায় নন্দিতা।আজরাহান ভ্রু কুঁচকে ব্যস্ত গলায় বলল–

“এইসব কী ভাবী!
ভিতরে যেতে দাও আমাকে।”

নন্দিতা অবাক হওয়ার ভঙি করে চোখ চোখ বড় বড় করে বলল–

“ও মা..
এতো তাড়া কীসের দেবরঝি!

আজরাহান শশব্যস্ত হয়ে বলল–

“তাড়া হবে না!
অলরেডি একটা।”

“তো!

“সময় আছে নাকি!

নন্দিতা চোখ পিটপিট করে বলল—

“বাব্বাহ!দেবরঝির আর তর সইছে না!

নন্দিতা আজরাহান এর হাতে কিছু একটা গুঁজে দিলো।আজরাহান হাতের মুষ্টি খুলে তা দেখেই নাক ছিটকে বলল–

“এইসব কী!

নন্দিতা মিচকি হেসে ফিসফিসিয়ে বলল–

“প্রটেকশন দেবরঝি।”

“ছিঃ
তুমি কী প্রাগৈতিহাসিক যুগে বাস করো নাকি!
এইসবের প্রয়োজন নেই আমার।আমার ব্যবস্থা আমি করে নিয়েছি।”

“কি!
তুমি তো দেখছি ফাইভ জী বেগে চলো।”

আজরাহান তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলল–

“তোমার বরের মতো বেরসিক না কি!

নন্দিতা চোখ ছোট ছোট করে কপট রাগ দেখিয়ে গলার স্বর ব্যঙ্গাত্মকভাবে মোটা করে বলল–

“এই অভদ্র ছেলে।একদম আমার বরকে বেরসিক বলবে না।”

আজরাহান অপরাধী মুখ করে বলল–

“ওপস!
সরি সরি।বেরসিক হবে ক্যান!বেরসিক হলে তো আর তিন মাসেই আমাকে চাচ্চু বানাতো না।”

নন্দিতা আজরাহান কে একটা দূর্বল ঘুষি মেরে বলল–

“আচ্ছা শয়তান তো তুমি।মুখে কিছু আটকায় না।”

“আমি বললেই দোষ নিজে করলেই জোস।সরোতো যেতে দাও আমাকে।”

“এতো উতলা হচ্ছো কেনো তুমি!এখনো অনেক সময় বাকি!

আজরাহান ভ্রু নাচিয়ে ব্যস্ত গলায় বলল–

“কোথায় দেখলে সময়!অলরেডী একটা।ওকে বুজাতেই তো দুই ঘন্টা লাগবে আমার।আর সময় কোথায়!

নন্দিতা ঠোঁট কামড়ে কঠিন গলায় বলল–

“এই ছেলে,কতো সময় লাগবে তোমার!

আজরাহান বিগলিত হেসে ফিচেল গলায় বলল–

“মিনিমাম তিন চার ঘন্টা তো লাগবেই।”

নন্দিতা ভুত দেখায মতো চমকে বিস্মিত গলায় বলল–

“তুমি কী মানুষ নাকী এলিয়েন!মেয়েটাকে মেরে ফেলবে নাকি!

“ওটা পড়ে ভেবে দেখবো।আমাতে অভ্যস্ত সে।বাকিটা আমি সামলে নিবো।এখন সরোতো।”

নন্দিতা কে হালকা ধাক্কা দিয়ে সরাতেই ও আবার দরজা আগলে দাঁড়ায়।হিসহিসিয়ে বলল–

“সাবধান দেবরঝি।আমরা কিন্তু পাশের ঘরেই আছি।”

আজরাহান বাঁকা হেসে নন্দিতার কানের কাছে গিয়ে বলল–

“পাশের ঘরে যাওয়ার কী দরকার?
তুমি বরং সি সি ক্যামেরা হয়ে আমার ঘরেই চলে আসো।লাইভ টেলিকাস্ট দেখবে।”

নন্দিতা দাঁত মুখ খিচে হালকা হাতে ধাক্কা মারে আজরাহান কে।ক্ষীন গলায় বলল–

“ছিঃ!
তুমি তো ভালোই ঠোঁট কাটা।”

“আর কিছু শুনবে না কি লাইভ দেখবে!

“আরে তুমি যাওতো।তোমার ডিঙি নৌকা বসে আছে।গিয়ে তাকে তোমার ভালোবাসার সাগরে ভাসাও।অসভ্য ছেলে কোথাকার!

আজরাহান কে রুমে ঠেলে দিয়েই দরজা ভেজিয়ে দেয় নন্দিতা।মনে মনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে।

চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here