#ভালোবাসার_চেয়েও_বেশি💞💞
#লেখিকা-Mehruma Nurr
#পর্ব-৫৩
★ রাত ১১ টা
আদিত্যর গাড়ি একটা গেটের ভেতর ঢুকলো। ভেতরে ঢুকে গাড়ি থামিয়ে আদিত্য গাড়ি থেকে নেমে নূরের পাশে এসে দরজা খুলে নূরের দিকে ঝুঁকে এক হাত নূরের চোখের ওপর রেখে, আরেক হাত দিয়ে নূরের হাত ধরে আস্তে করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দাঁড় করালো। নূরকে সামনে রেখে আদিত্য নূরের পেছন থেকে কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো।
…..প্রাণপাখী আর ইউ রেডি ফর ইউর সারপ্রাইজ?
নূর মুচকি হেসে আস্তে করে মাথা উপর নিচে ঝাকালো।
আদিত্য নূরের চোখের ওপর থেকে আস্তে করে হাতটা সরিয়ে নিল। নূর ধীরে ধীরে চোখ খুলে সামনে তাকালো। ওর সামনে সুন্দর একটা দোতলা বিশিষ্ট একটা ডুপ্লেক্স বাসা। যেন কোনো বারবিডল হাউজ। বাসার সামনে একটা সুইমিং পুল। চারিদিকে হরেক রকম গাছগাছালি। ফার্মহাউসের মতো অত জায়গা না হলেও, বাসাটা প্রায় ওইরকমই। নূর মুগ্ধ হয়ে চেয়ে আছে। ও ভেবে পাচ্ছে না কোথায় আসলো ওরা?
আদিত্য আবারও নূরের কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো।
….পছন্দ হয়েছে আমাদের ছোট্ট ভালোবাসার নীড়?
নূর ঘাড় বাকিয়ে বিস্ময় ভরা চোখে আদিত্যর দিকে তাকিয়ে বললো।
….এ এটা আমাদের বাসা?
আদিত্য মুচকি হেসে পেছন থেকে নূরের কোমড় জড়িয়ে ধরে নূরের ঘাড়ের ওপর থুতনি রেখে বললো।
…..তো তোমার কি মনে হয়, বিয়ের রাতে আমি আমার বউকে অন্যের বাড়িতে নিয়ে আসবো? হ্যাঁ এটা আমাদের বাসা। তোমার খোলামেলা প্রাকৃতিক জায়গা অনেক পছন্দ। তাই অনেক খুঁজে এই বাসাটা পেয়েছি। হয়তো ফার্মহাউসের মতো অতটা সুন্দর না। তবে কিছুটা ওইরকমই। তোমার পছন্দ হয়েছে তো?
নূর কি বলবে, ও ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। এই মানুষটা কিভাবে এতকিছু করতে পারে আমার জন্য? নূর ছলছল চোখে মাথা ঝাকিয়ে বললো।
….হ্যাঁ অনেক পছন্দ হয়েছে। তবে এটার কি দরকার ছিল? তোমার ,,, আই মিন আমাদের তো ফ্ল্যাটই আছে। আমরা ওখানেই থাকতে পারতাম। আর তাছাড়া আমাদের তো সাভারের বাড়িও আছে। তাহলে শুধু শুধু এত টাকা নষ্ট করার কি দরকার ছিল?
…..দরকার ছিল। কারণ আমি চাই তোমার আমার আলাদা একটা ভালোবাসার নীড় হোক। যেখানে বাইরের কেও থাকবে না। শুধু আমরা আর আমাদের পরিবার থাকবে। আর সাভারের বাড়িতে তো আর সবসময় থাকতে পারবো না। আমার অফিস আর তোমার ভার্সিটি ওখান থেকে অনেক দূরে হয়ে যায়। তাই এই বাসাটা কিনেছি।
…..তারমানে বাকি সবাইও এখানেই আছে?
….না আজকে শুধু তুমি আর আমি ছাড়া আর কেউ নেই। ওরা সবাই সাভারের বাড়িতে চলে গেছে। আমি চেয়েছিলাম আমাদের বিয়ের প্রথম রাতটা এখানেই কাটাবো। তাই তোমাকে এখানে নিয়ে এসেছি।
নূর একটু ইতস্তত হয়ে বললো।
…আমরা যে এখানে আসলাম, বাসার সবাই কি ভাববে আমদের নিয়ে?
আদিত্য মুচকি হেসে বললো।
….কেউ কিছুই ভাববে না। এটা সবাই জানে। আমি বাবা আর বাকি সবাইকে আগেই বলেছি। তাই শুধু শুধু এসব ভেবে আমাদের আজকের এই সুন্দর মুহূর্তটা নষ্ট করোনা।
…কিন্তু,,
নূরের কথা শেষ হওয়ার আগেই, আদিত্য নূরের ঠোঁটের ওপর আঙুল রেখে বললো।
….হুঁশ, আর কোনো কিন্তু না। এখন চলো ভেতরে যাওয়া যাক?
কথাটা বলেই আদিত্য নূরকে পাঁজা কোলে তুলে নিয়ে ভেতরের দিকে এগুলো। নূর লজ্জায় আদিত্যর বুকে মুখ লুকালো।
ভেতরে ঢুকে আদিত্য নূরকে কোলে নিয়েই বাসা ঘুরে ঘুরে দেখালো। তারপর বেডরুমে নিয়ে গেল। বেডের নিয়ে এসে আদিত্য বললো।
….আর এটা হলো আমাদের বেডরুম। কেমন লাগছে?
নূর সবকিছু দেখে মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছে। নূর দেখলো বেডের ওপর দেয়াল জুড়ে নূর আর আদিত্যের একটা ছবি বিশাল বড়ো করে লাগিয়ে রাখা হয়েছে । পুরো বেড টাকে ফুল দিয়ে সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। এসব দেখে নূর আরো লজ্জায় নুইয়ে পড়লো। আজ থেকে এই বেডেই ওরা একসাথে থাকবে। এখানেই আদিত্যের হাতে ওর মরণ হবে, সুখের মরণ। কথাগুলো ভেবে নূরের বুকের ভেতর ঢিপঢিপ করছে। হার্টবিট অনেক দ্রুত গতিতে চলছে। লজ্জায় আদিত্যর দিকে তাকাতেই পারছে না।
আদিত্য নূরকে নিয়ে বেডের ওপর বসিয়ে দিল। নূর মাথা নুইয়ে বসে রইলো। আদিত্য নূরের পাশে বসে এক হাত নূরের গালে রেখে বললো।
…..এতো হেভী গহনা পড়ে নিশ্চয় টায়ার্ড হয়ে গেছ? এগুলো খুলে রাখ, তারপর ওয়াশরুম থেকে অযু করে এসো। আমরা একসাথে নফল নামাজ পড়ে নেই।
নূর মাথা ঝাকিয়ে সায় জানালো।
নূর বেড থেকে নেমে ড্রেসিং টেবিলের সামনে এসে গহনা খুলতে লাগলো। আদিত্য বেডের ওপর বসে ঘোর লাগা চোখে তাকিয়ে রইলো নূরের দিকে। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে নূরের পাশে গিয়ে দাড়ালো। পেছন থেকে নূরের গহনা গুলো খুলতে সাহায্য করলো। আদিত্য কাছে আসায় নূরের কাপাকাপি শুরু হয়ে গেলো। আজ যেন একটু বেশিই লজ্জা লাগছে নূরের।হয়তো আদিত্য ওর স্বামী হয়ে গেছে এইজন্য।
গহনা খোলা হয়ে গেলে নূর গিয়ে ওয়াশরুম থেকে অযু করে আসলো। আদিত্য ও ওযু করে আসলো, তারপর দুজন নফল নামাজ আদায় করে নিল।
নামাজ শেষে আদিত্য কাবার্ড থেকে একটা প্যাকেট বের করে এনে নূরের হাতে দিয়ে বললো।
……যাও চেঞ্জ করে এই শাড়িটা পরে এসো।
নূর প্যাকেট খুলে দেখলো।গোল্ডেন পাড়ের একটা সাদা রঙের জর্জেটের শাড়ী।সাথে লাল রঙের ব্লাউজ পেটিকোট। নূর ইতস্তত হয়ে বললো।
….ক কিন্তু আমিতো,,,,,
…..জানি শাড়ী পরতে পারো না। তুমি শুধু বাকিগুলো পড়ে এসো। শাড়ী আমি পরিয়ে দিচ্ছি।
নূর মাথা নেড়ে প্যাকেট টা নিয়ে ওয়াশরুমে গেল। এই ফাঁকে আদিত্যও চেঞ্জ করে নিল।
একটু পরে দরজা খোলার শব্দে আদিত্য পেছনে ফিরে তাকালো। নূর ব্লাউজ পেটিকোট পড়ে বুকের ওপর তোয়ালে ওড়নার মতো করে দিয়ে আস্তে করে বেড়িয়ে এলো। এভাবে আদিত্যের সামনে যেতে ভীষণ লজ্জা লাগছে নূরের। হাত পা প্রচুর কাঁপছে। বুকের ভেতর ঢিপঢিপ করছে। লজ্জায় আদিত্যের দিকে তাকাতে পারছে না। মাথা নিচু করে কাঁপা কাঁপা পায়ে এগিয়ে এলো আদিত্যের কাছে।
নূরকে এভাবে দেখে আদিত্যর ঘোর লেগে যাচ্ছে। নেশায় মাতাল হয়ে যাচ্ছে। নূরের দিকে নেশা ভরা চোখে তাকিয়ে আছে। আদিত্যের এভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে নূর আরও লজ্জায় নুইয়ে পরছে। আদিত্যের ঘোর কাটানোর জন্য নূর আস্তে করে গলা খাঁকারি দিয়ে বললো।
…..উহুম,, শ শশাড়ী?
নূরের কথায় আদিত্যের ঘোর কাটলো। আদিত্য নিজেকে একটু সামলে নিয়ে, শাড়ী পড়ানো শুরু করলো। আদিত্য নূরের চারিদিকে ঘুরে ঘুরে শাড়ি পরাচ্ছে। নূর চোরা চোখে আদিত্যের দিকে তাকালো। এতক্ষণে খেয়াল করলো আদিত্যও চেঞ্জ করেছে। আদিত্যও নূরের সাথে ম্যাচিং করে সাদা প্যান্ট আর সাদা রঙের পাতলা একটা শার্ট পরেছে। শার্টের শুধু নিচের দুটো বোতাম লাগানো, বাকি ওপরের সবগুলো বোতামই খোলা। এরফলে আদিত্যর সিক্স প্যাক এ্যাপ, আর খোলা বুক স্পষ্ট দৃশ্যমান। ফ্যানের বাতাসে আদিত্যের সিল্কি চুলগুলো কপালের উপর এলোমেলো হয়ে উড়ছে। এভাবে আজ আদিত্যকে চরম আকর্ষণীয় লাগছে। নূর কিছুতেই চোখ ফেরাতে পারছে না। বারবার চোরা চোখে আদিত্যের দিকে তাকাচ্ছে।
…..দেখতে মন চাইলে সরাসরি দেখো। এভাবে চোরা চোখে দেখার কি আছে? আমিতো তোমারই হাসব্যান্ড। যত খুশী দেখতে পারো।
আদিত্যের কথায় নূর লজ্জায় চোখ খিঁচে বন্ধ করে ফেললো। ইশশ ধরে ফেলেছে।
কুচি দেওয়া শেষ হলে আদিত্য নূরের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে কুচিগুলো নূরের কোমড়ে গুঁজে দিল। সাথে সাথে নূর কেঁপে উঠলো। কুচি গুজার সময় আদিত্যর নজর পড়লো নূরের পেটের নাভীর ওপর। আদিত্যের চোখ ওখানেই আটকে গেল। শরীরের ভেতর কেমন মোচড় দিয়ে উঠলো। আদিত্য হাত বাড়িয়ে নূরের নাভীর চারিদিকে বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে স্লাইড করে ঘুরাতে লাগলো। সাথে সাথে নূরের সারা শরীর শিরশির করে কেঁপে উঠলো। আদিত্য মুখটা বাড়িয়ে নূরের নাভীতে নাক ডুবিয়ে ঘ্রাণ নিল, তারপর ঠোঁট চেপে ধরে গভীর ভাবে চুমু খেল। নূর সহ্য করতে না পেরে, চোখ বন্ধ করে আদিত্যের চুল খামচে ধরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলতে লাগলো।
কিছুক্ষণ পর আদিত্য উঠে দাঁড়িয়ে দুই হাতে নূরের মুখটা আগলে ধরে, নূরের কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে নেশা ভরা কন্ঠে বললো।
….তুমি কখনো শাড়ী পরা শিখবে না। তোমাকে সারাজীবন আমিই শাড়ী পরিয়ে দেব। বুঝেছ প্রাণপাখী?
নূর কিছুই বলতে পারছে না। নিচের দিকে তাকিয়ে শুধু লাজুক হাসছে।
আদিত্য এবার নূরকে পাঁজা কোলে তুলে নিল। নূর লজ্জায় আদিত্যের বুকে মাথা গুঁজল। আদিত্য নূরকে কোলে নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে এসে সিড়ি বেয়ে ছাঁদে উঠে এলো।
ছাঁদে এসে নূর সামনে তাকিয়ে আরেক দফা অবাক হলো। পুরো ছাদটা এতো সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। ছাদের রেলিং দিয়ে সাদা আর পিংক কালারের পাতলা কার্টন, তার ওপর দিয়ে সাদা আর পিংক কালারের জারবেরা ফুল আর ফেইরি লাইট দিয়ে সাজানো হয়েছে। পুরো ছাঁদের ফ্লোর জুড়ে গোলাপের পাপড়ি আর হার্ট শেপের বেলুন ছড়িয়ে আছে। ছাদের মাঝখানে একটা দোলনা রাখা আছে। দোলনাটাও পুরো ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। নূরের মনে হচ্ছে ও সত্যি সত্যিই কোনো রুপকথার রাজ্যে চলে এসেছে।
নূরের ভাবনার মাঝেই আদিত্য বলে উঠলো।
…..কেমন লাগছে প্রাণপাখী? পছন্দ হয়েছে?
নূর আদিত্যের দিকে তাকিয়ে বললো।
…..পছন্দ? আমিতো এটাই বুঝতে পারছি না যে এটা স্বপ্ন নাকি বাস্তব? এতো সুন্দর সবকিছু।
আদিত্য মুচকি হেসে নূরকে কোলে নিয়েই দোলনায় যেয়ে বসলো।আদিত্য হাত দিয়ে নূরের কাঁধের ওপর থেকে চুল সরিয়ে ঘাড়ে চুমু খেয়ে কানে নাক ঘষে লো ভয়েসো বললো।
….এখন থেকে তোমার সব স্বপ্ন বাস্তবে রুপ নেবে প্রাণপাখী। কারণ এখন থেকে তোমার সবকিছু শুধু আমার, একান্তই আমার। তোমার স্বপ্ন, তোমার ইচ্ছে সবই আমার। তোমার মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত পুরোটাই আমার। তুমি পুরোটাই আমার। শুধুই আমার। এমনকি তোমার নিজের ওপরও তোমার কোনো অধিকার নেই। তোমার ওপর শুধু আমার অধিকার।
আদিত্যের এমন মোহনীয় কথাগুলো শুনে নূরের শিরদাঁড়া দিয়ে ঠান্ডা শীতল বাতাস বয়ে গেলো। নিঃশ্বাস ভারী হয়ে যাচ্ছে নূরের।
আদিত্য নূরের ঘাড়ে নাক ডুবিয়ে ঘ্রাণ নিয়ে, মাতাল হওয়া কন্ঠে বললো।
…..উফফ,, তোমার এই স্মেল। পাগল করে দেয় আমাকে। ইচ্ছে করে নিজের সারা শরীরে সবসময় তোমার এই মন মাতানো ঘ্রাণটা মাখিয়ে রাখি।
কথাগুলো বলে আদিত্য নূরের ফর্সা মোলায়েম ঘাড়ে চুমু খেতে লাগলো। নূরের সারা শরীর যেন অবশ হয়ে আসছে। নিজের শরীরের ভর ধরে রাখতে পারছে না। নূর আদিত্যের শার্টের হাতা শক্ত করে খামচে ধরে কাপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠলো।
…..এ এএকটা গান শোনাবে?
আদিত্য নূরকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো।
……মাইন্ড ডাইভার্ট করার চেষ্টা করে লাভ নেই প্রাণপাখী । আজ আমার মাইন্ড ডাইভার্ট হবে না। তোমাকে আগেই বলেছি বিয়ের পরে আর কোনো বাঁধা মানবো না।
…..না না স সত্যি বলছি। এ এমন সুন্দর মুহূ্র্তে, তোমার কন্ঠে একটা গান শুনতে ইচ্ছে করছে।
…..আমার প্রাণপাখী যখন বলেছে, আমি কি মানা করতে পারি। আপকা হুকুম সার আখো পার।
আদিত্য নূরের গলায় নাক ঘষে কানে চুমু খেয়ে গেয়ে উঠলো।
♬ ♬ তোমার মাঝেই নামবো আমি
♬ ♬ তোমার ভেতর ডুব
♬ ♬ তোমার মাঝেই কাটবো সাতার
♬ ♬ ভাসবো আমি খুব
♬ ♬ তোমার মাঝেই জীবনযাপন
♬ ♬ স্বপ্ন দেখা, স্বপ্ন ভাঙ্গা
(আদিত্য এক হাতের আঙুল দিয়ে নূরের হাতের ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত স্লাইড করে গেয়ে উঠলো)
♬ ♬ সারা নিশি ভিজবো দুজন
♬ ♬ চাঁদের ঝরা জলে
♬ ♬ সবুজ সুখে করবো কুজন
♬ ♬ নীল আকাশের তলে
(আদিত্য হাত দিয়ে নূরের পিঠের নিচ থেকে উপর পর্যন্ত স্লাইড করে গেয়ে উঠলো)
♬ ♬ পাঁজর দিয়ে আগলে রবো
♬ ♬ তোমায় সারাজীবন
(আদিত্য এবার নূরকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নূরের মুখের কাছে ঝুঁকে, এক হাতের আঙুল দিয়ে নূরের গালে স্লাইড করে গাইলো)
♬ ♬ সূর্য ছোঁবে রাতের অধর
♬ ♬ ঝরবে নরম আলো
♬ ♬ নামবো তোমার চোখের ভেতরে
♬ ♬ বাসবো অনেক ভালো
♬ ♬ মনের সবুজ সুতো দিয়ে
♬ ♬ বুনবো অনেক স্বপন
♬ ♬ তোমার মাঝেই নামবো আমি
♬ ♬ তোমার ভেতর ডুব
♬ ♬ তোমার মাঝেই কাটবো সাতার
♬ ♬ ভাসবো আমি খুব
♬ ♬ তোমার মাঝেই জীবনযাপন
♬ ♬ স্বপ্ন দেখা,স্বপ্ন ভাঙা।
এভাবে গান গাইতে গাইতে আদিত্যর হাত নূরের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বিচরণ করছে। আদিত্যের ছোঁয়ায় নূরের নিঃশ্বাস আরো ভারী হয়ে আসছে। সারা শরীর অবশ হয়ে আসছে। নিজের শরীরে শক্তি না পাওয়ায় নূর সাপোর্টের জন্য আদিত্যর বুকের ওপর শার্ট শক্ত করে খামচে ধরে জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলতে লাগলো।
নূরের এসব মুভমেন্ট আদিত্যকে আরও পাগল করে তুলছে। আদিত্য নূরের কানের কাছে মুখ নিয়ে নেশা ভরা কন্ঠে বললো।
….প্রাণপাখী,, আই ওয়ান্ট ইউ। আমি তোমার মাঝে ডুব দিতে চাই। হারিয়ে যেতে চায় আজ তোমার মাঝে। দেবে কি আমাকে সেই অনুমতি?
নূর কি বলবে, লজ্জায় ওর জান যায় যায় অবস্থা। নূর লাজুক হেসে আদিত্যের বুকে মাথা গুঁজে, জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলে বললো।
…..তুমিই তো বললে আমার ওপর এখন আর আমার নিজের কোনো অধিকার নেই। আমার উপর শুধু তোমার অধিকার। তাহলে আমার কাছে কেন অনুমতি চাইছো? আমিতো নিজেকে অনেক আগেই তোমার নামে করে দিয়েছি।
আদিত্য একটা তৃপ্তির হাসি দিয়ে, দুই হাতে নূরের মুখটা আগলে ধরে উপরে তুললো। নূর লজ্জায় চোখ বন্ধ করে আছে। নূরের গোলাপি অধর যুগল কাপছে। যা আদিত্যকে চুম্বকের মতো টানছে। আদিত্য আর দেরি না করে এক হাতে নূরের কোমড় জড়িয়ে ধরে, আরেক হাত নূরের কানের নিচ দিয়ে চুলের ভেতর ঢুকিয়ে নূরের ঠোঁটে আলতো করে একটা চুমু খেল। নূরের সারা শরীর শিনশিন করে কেঁপে উঠে, আদিত্যের শার্ট আরও শক্ত করে ধরলো। আদিত্য এবার নূরের ঠোঁট জোড়া মুখে পুরে নিয়ে, নূরের রসালো অধরসুধাপান করতে লাগলো। আর হাত দিয়ে কোমড়ে স্লাইড করতে লাগলো। নূরও আদিত্যের সাথে সমানতালে রেসপন্স করতে লাগলো।
কিছুক্ষণ পর আদিত্য উঠে দাঁড়িয়ে নূরকে আবারও পাঁজা কোলে তুলে নিল। নূরকে কোলে নিয়ে সিড়ি বেয়ে নিচে বেডরুমে চলে এলো। বেডরুমে এসে আদিত্য নূরকে আস্তে করে বিছানায় শুইয়ে দিল। তারপর নিজের শার্ট খুলে নিচে ফেলে দিল।আদিত্য নূরের পাশে বিছানায় হাঁটু গেড়ে বসে,নেশায় মাতাল হওয়া চোখে নূরের দিকে তাকিয়ে রইলো। দুজনেই ভারী নিঃশ্বাস ফেলছে। নূরের নিঃশ্বাসের সাথে উঠানামা আদিত্যকে আরও উন্মাদ করে তুলছে।
আদিত্যের এমন চাহনি দেখে নূর আরও লজ্জায় কুঁকড়ে যায়। নূর লাজুক হেসে দুই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলে উল্টো ঘুরে গেল। আদিত্য নূরের ওপর আধশোয়া হয়ে, নূরের পিঠের ওপর থেকে চুলগুলো সরিয়ে ফেললো। আদিত্য প্রথমে হাতের আঙ্গুলের উল্টো পাশ দিয়ে নূরের পিঠে স্লাইড করতে লাগলো। তারপর মুখ নামিয়ে নূরের গলায় আর ঘাড়ে চুমু খেতে লাগলো। আদিত্যের এমন পাগল করা স্পর্শ নূর সহ্য করতে না পেরে বিছানার চাদর খামচে ধরলো। আদিত্য এবার নূরের পিঠে ব্লাউজের ফিতা একটানে খুলে ফেললো। নূরের সারা পিঠে অসংখ্য চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিল। নূরের নিঃশ্বাস ফেলা মুশকিল হয়ে গেছে। এ কেমন অসহ্য যন্ত্রণাদায়ক সুখ। এই সুখে যেন মরে যেতে ইচ্ছে করছে।
আদিত্য এবার নূরকে আস্তে করে নিজের দিকে ঘুরালো। নূর এখনো চোখ বন্ধ করেই আছে। আদিত্যের দিকে তাকানোর ক্ষমতা নেই ওর। আদিত্য মুখ নামিয়ে নূরের কপালে চুমু খেল, তারপর দুই চোখের পাতায় চুমু দিল, দুই গালে চুমু খেল। নাকের ডগায় চুমু খেয়ে, আবারও নূরের ঠোঁটে ডুব দিল। চুষে নিতে থাকলো নূরের ঠোঁটের সব মধু। নূরও আদিত্যের ঘাড়ের ওপর দিয়ে হাত বাড়িয়ে আদিত্যের চুল খামচে ধরে আদিত্যের ঠোঁটে চুমু খেতে লাগলো। আদিত্য চুমু খেতে খেতে নূরের ঠোঁটে আলতো করে কামড় দিতে লাগলো।
আদিত্য এবার নূরের ঠোঁট ছেড়ে চুমু খেতে খেতে গলায় নেমে এলো। পাগলের মতো নূরের গলায়, ঘাড়ে চুমু খেতে লাগলো। নূরের সারা শরীর অসম্ভব ভাবে কাপছে। নূর এক হাত দিয়ে আদিত্যের চুল খামচে ধরে আছে, আর আরেক হাত দিয়ে আদিত্যের পিঠ খামচে ধরে আছে। খামচে ধরায় নূরের হাতের নখগুলো আদিত্যের পিঠে গেধে পরেছে। তবে সেদিকে আদিত্যের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। ওতো ওর প্রাণপাখীকে আদর করতে ব্যাস্ত।
আদিত্য এবার নূরের পায়ের কাছে এসে নূরের পায়ের পাতায় চুমু খেতে লাগলো। সাথে সাথে নূর নিজের পা টান দিয়ে কম্পিত কণ্ঠে বললো।
….ক ককি করছো? পা পায়ে কেন মুখ দিচ্ছ? আ আমার পাপ হবে।
……কিচ্ছু হবে না। তোমার এই সুন্দর পা জোরার ওপর আমার অনেক লোভ। এখন কথা না বলে আমাকে আদর করতে দেও।
কথাটা বলেই আদিত্য আবার নূরের পায়ে চুমু খেতে লাগলো।
নূরও আর বাঁধা দিল না। কারণ ও জানে আদিত্য শুনবে না।
পায়ে চুমু খাওয়া শেষে আদিত্য আবার নূরের মুখের কাছে এসে , নূরের অধর যুগলে ডুব দিল।
এভাবেই দুজন দুজনার মাঝে হারিয়ে গেলো। পারি দিল এক সুখের সাগরে। ভালোবাসার মানুষকে একান্ত আপন করে পাওয়ার চেয়ে বেশি সুখ আর কিছুতেই নেই। আজ পরিপূর্ণতা পেল আদিত্য আর নূরের ভালোবাসা।
চলবে……
(আজকে আদিত্য আর নূরের ফাস্ট নাইট, তাই আজকের পর্বে রোমাঞ্চ একটু বেশি ছিল।
আজকি শাম আদিত্য আর নূর কে নাম🥂
আপনারাও চিয়ার্স করতে ভুলবেন না কিন্তু । সবাই কমেন্টের শেষে একটা করে চিয়ার্স ইমোজি দিবেন।🥂)