#ভালোবাসি_আমি_যে_তোমায়
#Sohani_Simu
পর্ব:২৯
রাতে নির্ভীক ভাইয়াদের বাসায় সবাই গোল মিটিং এ বসেছি।কাল রাযীন ভাইয়া দেশে ফিরছে আমরা কে কে উনাকে ঢাকায় রিসিভ করতে যাবো সেটাই মিটিং এর বিষয়বস্তু।ইচ্ছে আর আমি এক পায়ে খাড়া কিন্তু কেউ আমাদের একবারও যাওয়ার কথা বলছেনা,আমরাও বলছিনা।অ্যাঙ্কেল অ্যান্টি আগেই বলে দিয়েছেন উনারা যেতে পারবেন না।জাফর চাচা আর কমলা খালাও বলছে অতিদূর জার্নি করে যেতে পারবেনা।তাই নির্ভীক ভাইয়া সবার উপর চিল্লীয়ে কথা বলছেন,
নির্ভীক:ওকে ফাইন,কেউ যেও না তোমরা।আমি একাই যাবো,আমার ভাই আমার তো যেতেই হবে।(রেগে চিল্লীয়ে)
অ্যান্টি:আমার হসপিটালে এত ঝামেলা আমি কি করে যাই বল?
নির্ভীক:ব্যস আম্মু,তুমি কোন কথায় বলবা না।থাকো তুমি তোমার হসপিটাল নিয়ে তারপর ভাইয়া আসলে ভাইয়াকেও নিয়ে যেও ওই জঘন্য জায়গাই।(রেগে চিল্লীয়ে)
অ্যান্টি:আহ্,এত জোড়ে কথা বলছিস কেন?(বিরক্ত হয়ে)
নির্ভীক:বিকজ হি’জ মাই ব্রাদার।দুই বছর পর দেশে ফিরছে অথচ তোমাদের দেখে মনেই হচ্ছেনা তোমাদের ছেলে দেশে ফিরছে।(দাঁড়িয়ে থেকে চিৎকার করে)
উনার এমন চিৎকার করা ভয়েস শুনে আমি আর ইচ্ছে এক কোণায় জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।
অ্যাঙ্কেল:এই আস্তে কথা বলো।এটা ভদ্র লোকের বাড়ি।(বিরক্ত হয়ে)
নির্ভীক:ভদ্রলোক মাই ফুট,তুমি যাবে দ্যাটস ফাইনাল।(চিৎকার করে)
অ্যাঙ্কেল:তোমরা ছোটরা যাও। এটাই ভাল হবে।তুমি, জারিফ,অন্ত,ইচ্ছে তোমরা যাও। প্রান্ত,টোয়া,প্রবাল,শৈবাল ওদেরও জানাও, ওরা গেলে ওদের নিয়ে যাও।(শান্ত ভয়েসে)
নির্ভীক:প্রান্ত,তুমি,জাফর চাচা,জারিফ ভাইয়া,ইচ্ছেমতি,অন্ত আর আমি যাবো।দ্যাটস ফাইনাল।(শান্ত কন্ঠে)
বলেই উনি হন হন করে উপরে নিজের রুমে চলে গেলেন।আমি আর ইচ্ছে হাসি খুশি মুডে একে অন্যের দিকে তাকালাম কারন লিস্টে আমাদের নাম আছে।জাফর চাচা আর অ্যাঙ্কেলের মুখ দেখে মনে হচ্ছেনা উনারা খুশি।অ্যাঙ্কেল হতাশার সুরে বললেন,
অ্যাঙ্কেল:ছেলেটা আমার এত একরোখা হলো কেমন করে।
অ্যান্টি:যেমন বাপ তেমন তার ছেলে।(হেসে)
অ্যাঙ্কেল:এই তুমি….
অ্যান্টি:হ্যাপি জার্নি।(মুচকি হেসে)
অ্যাঙ্কেল:বললেই হলো নাকি?আমি কিছুতেই যাবোনা।(চোখ থেকে চশমা খুলে)
অ্যান্টি:আচ্ছা যেও না,খাবে চলো।এই তোরাও আমাদের সাথে ডিনার করে তারপর বাসায় যাবি।(আমাদের দিকে তাকিয়ে)
টেবিলে বসে সবাই ডিনার করছি।অ্যান্টি আর কমলা খালা খাবার সার্ভ করছে।আমি খাচ্ছি আর জাফর চাচাকে দেখছি।চাচা মনে হয় ঢাকা যাওয়া নিয়ে নির্ভীক ভাইয়াকে কিছু বলতে চায় কিন্তু বলছে না শুধু তাকাচ্ছে।অ্যাঙ্কেলেরও একই অবস্থা।আমি নির্ভীক ভাইয়ার বাম পাশে বসে আছি তাই আড় চোখে উনাকে দেখার চেষ্টা করছি।যতটুকু দৃষ্টিগোচর হচ্ছে তাতে বুঝতে পারছি উনি মাথা নিচু করে খাচ্ছেন।
খাওয়া শেষ করে আমরা গিয়ে সোফায় বসলাম।অ্যাঙ্কেল আর নির্ভীক ভাইয়া রুমে চলে গেলেন।অ্যান্টি আর খালা খেতে বসলো কিন্তু জাফর চাচা কিচেনে ঢুকলো।আর খালাকে বললো,
জাফর:সাগরের আম্মা?তোমার পানের ডালাডা কোথায়?
কমলা:ওই বড় তাকের উপর আছে।(খেতে খেতে)
জাফর চাচা পানের ডালা নিয়ে মেঝেতে বসেই পান বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।আমি ইচ্ছের দিকে তাকিয়ে বললাম,
আমি:পান খাবি?
ইচ্ছে:কখনও খাইনি।খেয়ে যদি মরে টরে যাই তাহলে কাল আর প্রান্ত ভাইয়ার সাথে ঢাকা যেতে পারবোনা।(ফিসফিস করে)
আমি:আরে পান খেয়ে কেউ মরেনা,চাচা খাচ্ছে দেখ। আমিও কখনও পান খাইনি চল না খাই।
ইচ্ছে:ওকে চল,মজা হবে।
আমরা খালাকে বলে দুইজন কিচেনের মেঝেতে পানের ডালা নিয়ে বসলাম।ডালাতে ছোট ছোট কৌটায় অনেক গুলো মশলা আছে এর মধ্যে পান আর সুপারি আমরা চিনতে পারছি।খালা বলেছে সবগুলো মশলাই একটু একটু করে দিতে হবে তাহলে পানের স্বাদ ভাল হবে।ইচ্ছে দুটো পান ধুয়ে নিল।
আমি:এটা ক্যালসিয়াম কার্বনেট না?(সাদা মশলার কৌটো খুলে)
ইচ্ছে:হুম,আমি আমার পান বানাবো আর তোর পান তুই বানা। (আমার হাতে একটা পান ধরিয়ে দিয়ে)
আমরা মন মতো সবগুলো মশলা পানে দিয়ে পান টোপা করে মুখের মধ্যে গুজে দিলাম,ধরছেইনা মুখে।তারপর চিবোতে চিবোতে কিচেন থেকে বেড়িয়ে আসলাম। খালা আর অ্যান্টি ডাইনিং টেবিল গোছাচ্ছে।আমরা যেতেই খালা বললো,
কমলা:কি গো মায়েরা,পান খাইতে কেমন?
ইচ্ছে:ঝাল আর শক্ত।(চিবোতে চিবোতে)
আমি:উহুম,খুব ঝাল অনেক মিষ্টি আর শক্ত।(চিবোনো শেষ এখন গিলার পালা)
অ্যান্টি:বাহ্!খুব ঝাল আবার অনেক মিষ্টিও?এটা কি ধরনের টেস্ট?
কমলা:তোমাগো পান বানানো হয়নি ফালাইয়া দাও ওইগুলা।(আমাদের সামনে এসে)
আমি:খেয়ে নিয়েছি তো সব।
কমলা:হাই আল্লাহ এইডা কি করলা?মুখ জ্বলতাছে?
আমি:হুম, খুব।(গ্লাসে পানি ঢালতে ঢালতে)
ইচ্ছে:আমারও জ্বলছে।খেতে পারবো না আর।
বলেই ও ডাস্টবিনে মুখে থাকা অবশিষ্ট পান ফেলে দিল।আমি পানি খেতে লাগলাম।কিন্তু অসম্ভব ঝাল।কিছুক্ষণ পর খেয়াল করলাম আমার মাথাও ঘুরছে।
ইচ্ছে:খালা এটা তুমি কিভাবে খাও?খুব বাজে খেতে। উফ্ এত ঝাল।
কমলা:তোমরা চুন বেশি মিশাইছো।মুখ পুইরা গেছে।
আমি:খালা আমার মাথা ঘুরছে আর মুখ জ্বলছে খুব।(কান্নার সুরে)
কমলা:তুমি জর্দা খাইতে গেলা ক্যান?আর আমি একটু করে মশলা দিতে কইছিলাম তোমরা কতগুলা দিছো?
অ্যান্টি:এই তোদের পান খেতে হবে কেন বলতো?বুড়ি হয়েছিস তোরা?(বকা দিয়ে)
আমি কারও কোন কথা কানে না নিয়ে সোফায় গিয়ে গা এলিয়ে দিলাম।গা গুলোচ্ছে,মাথা ঘুরছে আর জিহ্বা জ্বলছে সব মিলিয়ে পান আমার কাছে একটা জঘন্য খাবার মনে হয়েছে।মানুষ কি করে এই জঘন্য খাবার খাই?আদৌ তারা মানুষ তো?
ইচ্ছে:খালা আমাকে একটা মিষ্টি দাও।
কমলা:এখন মিষ্টি ক্যান যা খাইবা তাই ঝাল লাগবো।দেখি মুখ হা করো তো।
ইচ্ছে আর খালা কথা বলছে।আমি সোফা থেকে তুমুল গতিতে বেসিনে যেয়ে বমি করে দিলাম।অ্যান্টি চিন্তিত হয়ে আমার পাশে এগিয়ে এসে আমার পেটে হাত দিল।বমি করে মুখে পানি দিয়ে বেসিনে ঝুকে দাঁড়িয়ে আছি আবার বমি হওয়ার সম্ভাবনা আছে অ্যান্টি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।এমন সময় নির্ভীক ভাইয়া নিচে আসলেন।
নির্ভীক:এই তোমরা বাসায় যাবা এখন?(ফোনে কিছু করতে করতে)
অ্যান্টি:দাঁড়া, এখন না। আজ এখানেই থাকবে এরা। অন্তর তো শরীর খারাপ।
নির্ভীক:হোয়াট হেপেন্ড। (ব্যস্ত হয়ে আমার পাশে এসে দাঁড়িয়ে)
আমি কোন কথা বলছিনা বেসিনে ঝুকে দাঁড়িয়ে আছি।গা গুলোচ্ছে কথা বললেই বমি হবে। আমাকে এভাবে দেখে উনি আমার গাল ধরে নিজের দিকে ঘুরালেন আমি এক ঝটকায় উনার হাত সরিয়ে দিয়ে আবার বেসিনে ঝুকে থাকলাম।
নির্ভীক:আম্মু কি হয়েছে ওর?(উত্তেজিত হয়ে)
অ্যান্টি:আর বলিস না এই দুই বুড়ি কমলার পানের ডালা থেকে পান খেয়েছে।এখন আর সামাল দিতে পারছেনা।চুন আর মশলা খেয়ে মুখ পুড়িয়ে ফেলেছে।
নির্ভীক:হোয়াট দ্যা হেল।এই তুমি কি ছাগল হ্যা?পান খেয়েছো কেন?হুয়াই?(রেগে আমার একবাহু ঝাকিয়ে)
আমি দ্বিতীয় দফায় বমি করে দিলাম।উনি আমার মুখের কাছের চুল গুলো সরিয়ে দিচ্ছেন।আমি ফ্রেশ হয়ে সোফায় এসে বসলাম।ইচ্ছের দিকে তাকিয়ে দেখি ঝিমোচ্ছে।নির্ভীক ভাইয়া আমার পাশে বসে বকা বকি শুরু করে দিলেন,
নির্ভীক:আর ইউ ম্যাড?পান কেউ খাই?(রেগে)
কমলা খালা কিচেন থেকে পানের ডালা নিয়ে এসে হায় হায় করতে লাগলো।
কমলা:সব মশলা খাইয়া নিছো তোমরা।চুন আর জর্দা তো রাখোইনি।তোমরা একটু দেরি করলে আমি তোমাগো পান বানাইয়া দিতাম।তোমরা কিভাবে পান বানাইছো কও তো?(ইচ্ছের দিকে তাকিয়ে)
ইচ্ছে:আমার পান আমি বানিয়েছি ওর পান ও।আমার পানে এক চামচ ক্যালসিয়াম কার্বনেট কিছু সুপারি আর কালোর মতো মশলা দিয়েছি।এমন বাজে খেতে হয়েছে পুরোটা খেতেই পারলাম না।
আমি:আমিও এক চামচ ক্যালসিয়াম কার্বনেট, কিছু সুপারি, ওই লাল মশলা এক চামচ আর কালোর মতো ওগুলো একচামচ দিয়েছি।খেতে তো ঝাল মিষ্টি লাগছিল এখন এমন হচ্ছে কেন।(মাথা ধরে)
নির্ভীক:হোয়াট?এক চামচ ক্যালসিয়াম কার্বনেট? তোমরা কেমিস্ট্রি নিয়ে স্টাডি করছো না? তাও ওত গুলো ক্যালসিয়াম কার্বনেট খেয়ে নিলে?(রেগে)
কমলা:ভাবি তুমি ওগোরে চিকিৎসা দাও।(অ্যান্টির দিকে তাকিয়ে) এতগুলা মশলা খাইছে কি কইরা?অন্ত তো এই জর্দা গুলা সব খাইছে তাই ওর মাথা ঘুরতাছে।
অ্যান্টি:এই তোরা ঘরে যেয়ে একটু রেস্ট নে,পারলে ঘুমিয়ে পর।না ঘুমালে তোরা ভাল হতে পারবি না।
নির্ভীক:চলো ঘুমাবে এখনই।(আমার হাত ধরে)
আমি:বাসায় যাবো।
নির্ভীক:শাট আপ।চলো রুমে।
আমি আর ইচ্ছে একটা রুমে গিয়ে শুয়ে পরলাম।আমি শুয়ে ফোন হাতে নিলাম কোথায় থেকে নির্ভীক ভাইয়া এসে ছো মেরে আমার হাত থেকে ফোন নিয়ে রুমে লাইট অফ করে ডিম লাইট অন করে দরজা লাগিয়ে দিয়ে চলে গেলেন।
ইচ্ছে:বদমাইশ মহিলা সব তোর জন্য হয়েছে।(রাগি কন্ঠে)
আমি:ভাই আমি আর জীবনেও পান খাব না।
ইচ্ছে:এই পোড়া মুখ নিয়ে কাল প্রান্ত ভাইয়ার সামনে কিভাবে যাবো?(কান্নার ভান করে)
ঘুমা সব ঠিক হয়ে যাবে।বলেই দুজন ঘুমানোর ট্রাই করলাম।প্রায় এক ঘন্টা পর দুজনই ঘুমিয়ে গেলাম।
.
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করলাম।মুখের অবস্থা খারাপ, জিহ্বা ফুলে উঠেছে একটু।ব্রেকফাস্ট করার সময় নির্ভীক ভাইয়া আবার একটু ঝারি দিলেন।খুব শুদ্ধ ভাষায় আমাদের পাগল আর ছাগল বললেন।ব্রেকফাস্ট শেষ করে উনি আমাদের বাসায় দিয়ে গেলেন আর ঢাকায় যাওয়ার জন্য রেডি হতে বললেন।আমি আর ইচ্ছে রেডি হয়ে জারিফ ভাইয়ার সাথে নির্ভীক ভাইয়াদের বাসায় চলে গেলাম।যেয়েই দেখি নির্ভীক ভাইয়া রেডি হয়ে গাড়ির দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছেন।
উনি সাদা শার্ট আর ব্লু জিন্স পরেছেন।হাতে কালো ফিতার ঘড়ি চোখে ব্লু সানগ্লাস। মুখের উপর রোদ পরে মুখ চকচক করছে বিশেষ করে নাকটা।দেখেই ইচ্ছে করছে কিসি দিয়ে দিই।এক ধ্যানে উনার দিকে তাকিয়ে এসবই ভাবছিলাম।ইচ্ছের ডাকে ধ্যান ভেঙ্গে গেল।
ইচ্ছে:হোয়াট আ কো-ইন্সিডেন্স,নির্ভীক ভাইয়া আর তোর ড্রেস এক হয়ে গিয়েছে।(অবাক হয়ে)
আমি নিজের দিকে তাকিয়ে দেখি সত্যি এক হয়ে গিয়েছে।আমিও সাদা লেডিস শার্ট আর ব্লু জিন্স পরেছি।এই নীল ওড়নাটা না নিলে উনার সাথে পুরো মিল থাকতো।
ইচ্ছে:আই উইশ,প্রান্ত ভাইয়া লাইট ইয়োলো শার্ট পরে আসুক।(আমার কানের কাছে ফিস ফিস করে)
আমি:তুই বরং এই শার্টটা চেন্জ করে আয় কারন প্রান্ত ভাইয়া এমন হলুদ কালারের মধ্যে কিছুই পরবেননা।(ফিসফিস করে)
আমাদের কথার মাঝেই নির্ভীক ভাইয়া আমাকে ডেকে বললেন,
নির্ভীক:অন্ত,তোমার ফোন নিবা না?(পকেট থেকে আমার ফোন বের করে)
আমি:হুম দিন।(উনার কাছে এগিয়ে গিয়ে)
উনি হাতে ফোন দিয়ে আমার গাল টেনে দিয়ে মুচকি হেসে বললেন,
নির্ভীক:একদম পিচ্চি লাগছে।
বলেই উনি জারিফ ভাইয়াকে গাড়িতে উঠতে বললেন।জারিফ ভাইয়াকে মাঝখানে দিয়ে আমি আর ইচ্ছে জানালার ধারে বসেছি।আমরা বসতেই প্রান্ত ভাইয়া এলেন।উনি নীল শার্ট আর কালো প্যান্ট পরে এসেছেন।আমি ইচ্ছের দিকে অসহায় মুখ করে তাকালাম।কিন্তু ওকে দেখে খুব হাসি খুশিই দেখাচ্ছে। মাঝখানে জারিফ ভাইয়া থাকায় ওকে কিছু বলতেও পারছিনা।তাই গাড়ি থেকে নামলাম উদ্দেশ্য ইচ্ছের জানালার কাছে যেয়ে ওর সাথে কথা বলবো।কিন্তু নামতেই প্রান্ত ভাইয়া আমাকে আটকে দিলেন।নানান কথা শেষে উনি আমাকে ছাড়লেন।আমি এক দৌড়ে ইচ্ছের কাছে যেয়ে জানালা দিয়ে ভেতরে মুখ ঢুকিয়ে দিয়ে ওর কানে কানে বললাম,
আমি:কিরে প্রান্ত ভাইয়াতো নীল শার্ট পরে এসেছেন।তোর সাথে কোন কিছুই মিলছে না।
ইচ্ছে:তুই হিমু আর রুপার ড্রেসের ব্যাপারে জানিস না?(আমার কানে কানে)
আমি:হুম জানি, হিমু হলুদ পান্জাবি আর রুপা নীল শাড়ি পরে কিন্তু প্রান্ত ভাইয়া তো হিমু হতে পারলোনা।(ইচ্ছের কানে কানে)
ইচ্ছে:আজকে প্রান্ত ভাইয়া রুপা আর আমি তার হিমু,ওকে?(মুচকি হেসে আমার কানে কানে)
আমি অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালাম তারপর আবার ওর কানে কানে বললাম,
আমি:প্রান্ত ভাইয়াকে ফিমেল বানিয়ে দিলি?
ইচ্ছে:আমি মেল হলে উনাকে ফিমেল হতেই হবে।দুজন তো একই জেন্ডার হওয়া যাবে না। (কানে কানে)
আমি অবাক হয়ে ইচ্ছের দিকে তাকালাম।এই মেয়ের সাথে কথায় পারা মুশকিল।হটাৎ নির্ভীক ভাইয়া আমাকে বললেন,
নির্ভীক:এই যে পিচ্চি কানাকানি শেষ হলে এবার গাড়িতে এসে বসো।(আমার দিকে তাকিয়ে)
আমি পুরো গাড়িতে তাকিয়ে দেখি সবাই গাড়ির মধ্যে বসে আছে।ড্রাইভার চাচা ড্রাইভিং সিটে।উনার পাশে জাফর চাচা সাদা পান্জাবি পায়জামা পরে বসে আছেন।তার পেছনের সিটে ইচ্ছে,ভাইয়া আর অ্যাঙ্কেল বসে আছেন।আমার সিটে অ্যাঙ্কেল বসেছেন।আর পেছনে প্রান্ত ভাইয়া আর নির্ভীক ভাইয়া বসে আছেন।আমি হা করে সবার দিকে তাকিয়ে বললাম,
আমি:আমি কোথায় বসবো?
নির্ভীক:তোমাকে ছাদে বসিয়ে নিয়ে যাবো।(হেসে)
আমি:কিভাবে?(অবাক হয়ে)
নির্ভীক:এখানে জায়গা আছে, কাম ফাস্ট।(পাশের সিটে হাত রেখে)
আমি একবার ওই দিকে তাকিয়ে আবার ইচ্ছের কানে কানে বললাম,
আমি:এই হিমু,রুপা তোর পেছনেই বসেছে।
বলেই গাড়ি থেকে মুখ বের করে অন্যপাশে যেয়ে নির্ভীক ভাইয়ার পাশে বসলাম।উনি মুচকি হেসে আমার দিকে তাকালেন আমি মুচকি হেসে জানালা দিয়ে বাহিরে তাকালাম।গাড়ি চলতে থাকলো।অর্ধেক রাস্তা আসতে না আসতেই আমি ঘুমে কাঁদা হয়ে গেলাম।
চলবে……………