ভালোবাসি তোকে ❤ #লেখিকা: অনিমা কোতয়াল #পর্ব- ২

#ভালোবাসি তোকে ❤
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল
#পর্ব- ২
.
আপির হাসি দেখে আমার ভ্রু আরো কুচকে গেলো। সত্যিই সত্যিই আমায় বিদায় করার প্লান করেছে নাকি? আমার ওমন চাহনী দেখে আপি হাসতে হাসতে কাবার্ড থেকে একটা সালওয়ার সুট এনে বেডে রেখে বলল,

— “সেই আসায় ঘুমাও তুমি। এখনো এইচ এস সি দাও নি। এতো তাড়াতাড়ি তোমার সেই আশা পূরণ হবেনা। তাছাড়া তোমার আগে যে আমাকেই বিদায় করবে সেটা শিউর। তাই চিল করো।”

আমি ভ্রু কুচকে বললাম,

— ” তাহলে কোন মেহমান আসছে বলবে তো?”

আপি মুখে হাসি রেখেই বলল,

— ” মানিক আঙ্কেল আর ওনার বড় ভাই নিজেদের পরিবার নিয়ে এসছেন।”

আমি কিছুক্ষণ ভেবে বললাম,

— ” মানিক আঙ্কেল? আব্বুর সেই বন্ধু যার কথা আব্বু প্রায়ই বলে?”

— ” হ্যাঁ ফুপার বন্ধু মানিক আবরার।”

আপি কেমন একটু লজ্জা লজ্জা পাচ্ছে যার কারণ বুঝতে পারছিনা আমি। তবুও আমি আর বেশি কথা না পেঁচিয়ে স্যালওয়ার সুট নিয়ে রেডি হতে চলে গেলাম। শাওয়ার নিতে আমার যে এক ঘন্টা লাগবে সেটা শিউর। শাওয়ার নিয়ে বেড়িয়ে এসে আমি পুরো অবাক হয়ে গেলাম। আম্মু আর মামী মিলে আপিকে শাড়ি পড়িয়ে দিয়েছে আর সাজিয়েও দিচ্ছে। মামীকে দেখে আমি আরো অবাক। আমি চুল মুছতে মুছতে অবাক হয়ে বললাম,

— ” কখন এলে মামী? আর আম্মু? আপিকে তোমরা এভাবে সাজাচ্ছো কেনো?”

মামী একটু হেসে বলল,

— ” আরে আমার মেয়ের বিয়ে ঠিক হচ্ছে আমি আসবোনা?”

আমি অবাক হয়ে তাকালাম আপির দিকে। আপির বিয়ে ঠিক হচ্ছে? সিরিয়াসলি? আমাকে ওভাবে ঠাই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আম্মু ধমক দিয়ে বলল,

— ” যাও তাড়াতাড়ি চুল শুকিয়ে তৈরী হয়ে নাও।”

আমি হ্যাবলার মতো ওনাদের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললাম,

— ” কেস টা কী একটু বলবে আমাকে?”

মামী আপিকে ছেড়ে আমার কাছে এসে গাল টেনে বলল,

— ” আরে ওরা তোর আপির সাথে মানিক আঙ্কেলের বড় ভাইয়ের ছেলে ইফাজ এর বিয়ের কথা পাকা করতে এসছে।”

আমি তো অবাকের পুরো শেষ পর্যায়ে। মামীর দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বললাম,

—” মানে ডিরেক্ট বিয়ের কথা পাকা করতে চলে এলো? কেমনে কী?”

আম্মু এবার একটা রাম ধমক দিয়ে বলল,

— ” তুমি তাড়াতাড়ি রেডি হও। এসব কথা পরেও বলা যাবে।”

আমি মুখ ফুলিয়ে হেয়ার ড্রায়ারটা বার করে চুল শুকাতে শুকাতে ভাবছি। বিয়ে পাকা তো আপির হবে আমার রেডি হওয়া নিয়ে এতো মাথা ব্যাথা কীসের সেটাই বুঝতে পারছি না। আর কথা নেই বার্তা নেই হঠাৎ আপির বিয়ের ডেট ফিক্সট হয়ে যাবে? যাই হোক মামা মামী এসছে মানেতো সজীব ভাইয়া অর্নব ভাইয়াও এসছে, দারুণ মজা হবে। এসব ভাবতে ভাবতে আম্মু আবার চেচিয়ে বলল,

— ” অনি তাড়াতাড়ি করো।”

বলে আপিকে নিয়ে বাইরে সোফার রুমে চলে গেলো। আম্মুর ডাকে আমি হাত চালানোর গতি বাড়িয়ে দিলাম। তাড়াহুড়ো করে রেডি হয়ে মাথায় ওড়নাটা দিয়ে আস্তে আস্তে গিয়ে সোফার রুমে উঁকি দিলাম। আপি সোফার মাঝখানে বসে আছে। আপির দুপাশে মধ্যবয়স্ক দুজন বসে আছে। অনুমান করতে পারছি একজন হয়তো মানিক আঙ্কেল আর আরেকজন মানেক আঙ্কেলের বড় ভাই হবে। তারপাশের সিঙ্গেল সোফায় একজন সুর্দশন যুবক বসে আছে। এটাই কী ইফাজ ভাইয়া? হতে পারে। আরেকপাশের সোফার পাশে প্রায় আমার বয়সী একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে, আর সোফাতে মধ্য বয়স্ক দুইজন মহিলা বসে আছেন। আর আব্বু, আম্মু, মামা, মামী আর সজীব ভাইয়া আছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য মেহমানদের মধ্যে কাউকেই চিনিনা আমি। কারণ কাউকেই আগে দেখতে পাইনি। হঠাৎ করে আব্বু বলে উঠল,

— ” মামনী এদিকে এসো?”

আমি একটু চমকে গিয়ে আস্তে ওনাদের সামনে গেলাম। তারপর ওনাদের সালাম দিলাম। ওনারাও হাসি মুখে সালামের জবাব দিলেন। তারপর আপির ডানপাশে বসে থাকা লোকটা আব্বুর দিকে তাকিয়ে বললেন,

— ” এটাই তোর মেয়ে।”

আব্বু হেসে বলল,

— ” হ্যাঁ এটাই আমার মেয়ে অনিমা। আর অনি উনি তোমার মানিক আঙ্কেল।”

আমি মানিক আঙ্কেলের দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিলাম। মানিক আঙ্কেল চারপাশে তাকিয়ে বলল,

— “হ্যাঁ কিন্তু তোর ছেলেটা কোথায়?”

আব্বু বললেন,

— ” কাব্য? কাব্য তো অর্নবের সাথে একটু বাজারে গেছে। চলে আসবে এখনি।”

এরপর সবার সাথেই আব্বু আমার পরিচয় করিয়ে দিলেন। সিঙ্গেল সোফায় যেই ছেলেটা বসে আছেন উনিই ইফাজ ভাইয়া, মধ্যবয়স্ক অন্য লোকটি হলো ইফাজ ভাইয়ার বাবা। আর যেই দুইজন মহিলা আছেন ওনারা একজন হলেন ইফাজ ভাইয়ার মা আরেকজন মানিক আঙ্কেলের স্ত্রী। আর মেয়েটা হলো মানিক আঙ্কেলের মেয়ে জাবিন। মানিক আঙ্কেলের স্ত্রী উঠে এসে আমার কপালে চুমু দিয়ে বললেন,

— ” বাহ ভারী মিষ্টি দেখতে হয়েছে তো।”

আমার বেশ লজ্জা লাগছে এভাবে বলার কী আছে? তখনি আব্বু মানিক আঙ্কেলের দিকে তাকিয়ে বললেন,

— ” কীরে আদ্রিয়ান কোথায় ?”

আদ্রিয়ান নামটা শুনেই বুকের ভেতরে ধক করে উঠল, মনের মধ্যে একগাদা বিরক্তি ভর করল। যদিও ঐ ছেলেটাকে কোনোদিন দেখিনি। কিন্তু বাড়িতে ঐ ছেলের এত্তো এত্তো বেশি প্রশংসা শুনতে শুনতে এখন সে আমার কাছে চরম বিরক্তির কারণ হয়ে গেছে। এসব ভাবতে ভাবতেই মানিক আঙ্কেল বললেন,

— ” একেবারে সন্ধ্যায় এনগেইজমেন্ট পার্টিতেই আসবে।”

আমি অবাক হয়ে গেলাম। আজ সন্ধ্যায় এনগেইজমেন্ট ও হবে? আমি ছিলাম কোথায়? কিছুই জানিনা? নিজেকে কেমন একটা এলিয়েন এলিয়েন মনে হচ্ছে। মুখ ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। এরমধ্যে কাব্য আর অর্নব ভাইয়াও চলে এলো। এরপর অনেকক্ষণ কথাবার্তা বলার পর সবাই মিলে ডাইনিং এ গেলাম লাঞ্চ করতে। লাঞ্চ শেষে একটু রেস্ট করার পর। আঙ্কেলরা মামু আর আব্বু বাইরের সব ডেকোরেশন দেখছেন। আন্টিরা, মামী আর আম্মু রুমে গিয়ে গল্প করছেন। আমরা সব ভাইবোনেরা মিলে একটা রুমে বসে আছি।আপি আর ইফাজ ভাইয়াকে ছাদে পাঠানো হয়েছে কথা বলার জন্যে। আমরাও গেছিলাম লুকিয়ে কথা শুনতে কিন্তু আম্মুর কানমোলা খেয়ে ফিরে আসতে হয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে একটা ভয়াবহ কথা জানতে পেরে আমরা সবাই শকড হয়ে বসে আছি। সেটা হলো ইফাজ ভাইয়া আপিকে দুইমাস ধরে ভালোবাসে। যদিও আপি সেটা জানতোনা। আসলে দুইমাস আগে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসছিলো নিজের কাছে তখনই দেখছিলো আপিকে। বাড়িতে বলতেই ওনারা খোজ নিয়ে জানতে পারেন যে মেয়ে ওনাদের পরিচিত। এরপর মানিক আঙ্কেল আব্বুকে ফোন করে আর আব্বুও মামুকে ফোন করে ডাকে। সব খোজ নিয়ে মামুও রাজী হয়ে যায়। আর তারপরেই হুট করে এসব আয়োজন। যদিও আপির এতে কোনো আপত্তি নেই। আমরা আমাদের শক কাটিয়ে উঠতে উঠতেই সন্ধ্যা হয়ে গেলো।

পুরো বাড়ি খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে, শুধু ঘনিষ্ট আত্মীয় আর প্রতিবেশিদের ডাকা হয়েছে তবুও অনেক লোকজন হয়েছে। আপুকেও সাজানো কম্প্লিট আমিও একটা পিঙ্ক কালার গাউন পরে নিয়েছি। নিজেকে ঠিকঠাক করে আড্ডা দিচ্ছি তখনই দেখলাম আমার কাজিন সিস্টারস আর প্রতিবেশিদের মধ্যেও কিছু আপুরা পুরা ফিদা টাইপ হয়েছে গেছে। মানে ক্রাশ খেয়ে উল্টে গেলে যা হয় আরকি এমন কী দেখলো যে একেকজনের অবস্থা এমন ফিট টাইপ হয়ে গেছে। আমি ভ্রু কুচকে ওনাদের দিকে তাকিয়ে তারপর ওনাদের দৃষ্টি অনুসরণ করে তাকিয়ে হা হয়ে গেলাম। শুধু শুধুই আপুদের দোষ দিচ্ছিলাম। যদিও ওনাদের মতো বিশাল মাপের ক্রাশ খাইনি, কিন্তু ছোটখাটো একটা ক্রাশ নিশ্চয়ই খেয়েছি। একটা কালো পাঞ্জাবী পরা ছেলে ফোন দেখতে দেখতে এগিয়ে আসছে। ফর্সা সুঠাম দেহে কালো পাঞ্জাবীটা পুরো ফুটে উঠেছে। হাতে কালো ঘরি, কালো জিন্স। সিল্কি চুলগুলো কপালে পরে আছে অনেকটা। মুখে একেবারে হালকা খোঁচা দাঁড়ি, সব মিলিয়ে এর ওপর ক্রাশ খাওয়াটা অসম্ভব কিছু না। আমি নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও আপুদের দিকে তাকালাম ওনারা এখনো হা করে গিলে খাচ্ছে ছেলেটাকে। আমার এবার খুব হাসি পাচ্ছে নিশ্চিত ছেলেটার আজ ডায়রিয়া হয়ে যাবে এতো মেয়ের নজরে। ঠিকই আছে হওয়াই উচিত এতো সুন্দর হয়েছে কেনো? কিন্তু কে উনি? আমাদের কেউ তো না। তাহলে কী ইফাজ ভাইয়াদের পরিচিত কেউ? এসব ভাবতে ভাবতে ওখান থেকে চলে গেলাম। বেশ অনেকটা সময় কেটে গেছে। সবার সাথে মজা করছি কথা বলছি হঠাৎ আম্মু একটা জুসের গ্লাস হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,

— ” ওকে গিয়ে দিয়ে এসো। তাড়াতাড়ি, ছেলেটা একটু জুস খেতে চেয়েছে। ক্লান্ত মনে হয়। আমার হাতে কাজ আছে।”

বলে তাড়াহুড়ো করে চলে গেলো। আমিও অবাক হয়ে ওদিকে তাকিয়ে দেখলাম সেই ছেলেটা যেই ছেলেটার ওপর সবাই ক্রাশ নামক বাশ খেয়ে বসে আছে। কে এই ছেলেটা? আম্মু চেনে? যাই হোক তাতে আমার কী? আমার জুস দেওয়ার দরকার দিয়ে আসি। বলে জুসটা নিয়ে ওনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি উনি আরো দুজনের কথা বলছেন। আমি ওনার প্রায় কাছাকাছি গিয়ে হঠাৎ নিচে পরে থাকা ইটের সাথে ধাক্কা খেয়ে নিচে পরে গেলাম আর জুসের কিছুটা অংশ ঐ লোকটার গায়ে পড়লো। কিন্ত খবিশটা নায়কদের মতো আমাকে ধরলোতো নাই উল্টে আমার দিকে রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে নিজের পাঞ্জাবীটা ঝাড়তে শুরু করলো। ওনার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটাই টেনে তুলল আমাকে। ছেলেটা আমার দিকে তাকিয়ে জোরে ধমক দিয়ে বলল,

— ” স্টুপিড। চোখ কী কপালে নিয়ে হাটো নাকি? ড্রেসটাই নষ্ট করে দিলো ইডিয়ট।”

ওনার ধমকে হালকা কেঁপে উঠলাম। চোখ ছলছল করে উঠলো আমার। পাশের সেই লোকটা বলল,

— ” আহ ছাড়না বাচ্চা মেয়ে টাল সামলাতে পারেনি।”

উনি বিরক্ত হয়ে বললেন,

— ” যেটা সামলাতে পারোনা সেটা করতে যায় কেনো? ডিসগাস্টিং।”

বলে আমার দিকে এগিয়ে আসতেই আমি চোখ খিচে বন্ধ করে নিলাম, নিশ্চয়ই মারবে আমাকে এখন। আল্লাহ বাঁচাও আর জীবণের ইটের সাথে হোচট খাবোনা। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে উনি আমার দুই হাত ধরে সামনে এনে ভালোভাবে চেক করে নিলেন। তারপর আমার দিকে তাকিয়ে আবারও ধমকের সুরে বললেন,

— ” গাউনটা একটু উচু করো।”

আমি বোকার মতো তাকিয়ে আছি। উনি আবারও জোরে ধমক দিয়ে বললেন,

— ” গাউন ওঠাও।”

আমি একটু কেঁপে উঠলাম। কেঁদেই দিয়েছি পুরো তারপর গাউনটা একটু উঁচু করে ধরলাম। উনি ভালোকরে আমার পা চেক করে বললেন,

— ” হাটুতে জ্বালা করছে?”

আমি ভদ্রভাবে না বোধক মাথা নাড়লাম। উনি এবার শক্ত কন্ঠে বললেন,

— ” এখন থেকে আশেপাশে দেখে চলবে। তাহলে আর অন্যের পোশাক নষ্ট হবেনা।”

বলে ওখান থেকে চলে গেলেন। ওনার সাথে সাথে ঐ দুজনও চলে গেলেন। হুহ একটু ড্রেস নষ্ট হয়েছে বলে ওমন ব্যবহার করে কেউ কারো সাথে? বদলোক একটা, আমাকে ডিসগাস্টিং বলা? তোর কপালে এমন একটা ডিসগাসটিং বউই জুটবে দেখে নিস। এসব ভেবে মুখ ফুলিয়ে ওখান থেকে চলে এলাম আপির কাছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আংটি পরানোর জন্যে ডাকা হলো আপি আর ইফাজ ভাইয়াকে আর তখনি জানতে পারলাম যে ঐ ছেলেটাই আদ্রিয়ান ভাইয়া। মানিক আঙ্কেলের একমাত্র ছেলে। যখন পরিচয় করাচ্ছিলো তখন শুধু আমার দিকে তাকিয়ে একটা সৌজন্যতার হাসি দিয়ে আবার নিজের কাজে মন দিলো। হুহ ভাব। সারা অনুষ্ঠানে আর আমার দিকে ঘুরেও তাকায়নি । যাওয়ার সময় ওনাদের এগিয়ে দিতে গিয়ে আবারও হোচট খেয়ে আদ্রিয়ান ভাইয়ার ওপরেই পরেছিলাম। উনি এবার কিছু না বললেও একটা বিরক্তিমাখা দৃষ্টি নিক্ষেপ করেছিলেন আমার ওপর। আমিও নিজেও বিরক্ত নিজের ওপর। আমি এতো ক্লামজি কবে থেকে হলাম? আর পরি তো পরি ওনার ওপরে গিয়েই পরি? যত্তোসব। দুনিয়াতে ওনার বুক ছাড়া পরার মতো আর কোনো জায়গা নেই আমার কাছে?

______________________

এমনিই ঘুম ভেঙ্গে গেলো। অতীতের কথা ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পরেছি বুঝতেই পারিনি। আলো দেখে বুঝলাম সবে ভোর হয়েছে। পাখিদের হালকা কিচিরমিচির শব্দ এখনো শোনা যাচ্ছে। আমি একটা হাই তুলে উঠে বসলাম। কালকে রাতের কথা আর আদ্রিয়ান ভাইয়ার ব্যবহার মনে পরতেই মন খারাপ হয়ে গেলো। নিজের দিকে তাকিয়ে নিজেই একটু অবাক হলাম। আমি ঘোমটা আর গয়নাগুলো কখন খুললাম ? হয়তো খুলেছি কিন্তু ভুলে গেছি। আমার এরকম হয় প্রচন্ড ঘুম চোখে নিয়ে কিছু করলে পরে সেটা ভুলে যাই। সোফায় তাকিয়ে দেখলাম আদ্রিয়ান ভাইয়া নেই। দরজাটাও ভেতর দিয়ে লক করা ওয়াসরুমের লাইট ও অফ। তাহলে কী ব্যালকনিতে আছেন? আস্তে করে উঠে ব্যালকনিতে উঁকি দিয়ে যা দেখলাম তাতে আমার বুকের মধ্যে মোচর দিয়ে উঠলো। উনি রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে এক দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন। আমার জানামতে উনি এতো ভোরে ওঠেন না। ওনার চোখেমুখে একরাশ বিষণ্নতা। দেখে মনে হচ্ছে প্রবল কোনো বিষাদ গ্রাস করেছে ওনাকে। ওনাকে ওভাবে দেখে আমার বুকের ভেতরেও ভারী হয়ে উঠলো।

#চলবে…

( নতুন গল্পটা কেমন লাগছে অবশ্যই জানাবেন। ধন্যবাদ।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here