#ভালোবাসি_বলেই_তো ♥️
লেখিকা – #আদ্রিয়া_রাওনাফ
পর্ব – ৪৩
সন্ধ্যা ৬ টা ,
শাড়ি এবং লেহেঙ্গার পর্ব শেষ করে সবাই সেগুলোর সাথে ম্যাচিং অর্নামেন্টস কিনতে লেভেল – ৫ এ গেল ।
পূর্ণতা নিজেই জানে না ওর জন্য কি রং এর কি কেনা হয়েছে । কারন ওর সেদিকে কোনো খেয়ালই নেই । ওর কাধে , পেছনে মাপ দিয়ে সবাই এটা ওটা কিনছে কিন্তু ও খেয়ালই করেনি কি কিনছে আর কি কিনছে না ! কেউ সামনে দেখিয়ে যখন জিজ্ঞেস করেছে ,
এটা কেমন , ওটা কেমন ? তখন জবাবে পূর্ণতা শুধু একটা কথাই বলেছে – ‘ভালো’ ।
পূর্ণতা আর নাদিরার জন্য মিলি রহমান বিয়ের দিন পড়তে গলার সব ধরনের অর্নামেন্টস দেখছে । পূর্ণতা কে বার বার বলা হচ্ছে ,
– পছন্দ কর ! তোর বিয়ে আর তুই ই যদি পছন্দ ছাড়া জিনিস কিনিস তাহলে কি করে হবে !
কিন্তু জবাবে পূর্ণতার একটা কথাই মাথায় ঘুরছে ,
– বিয়েটা যার সাথে হচ্ছে তাকেই তো আমার পছন্দ না ! তাহলে বাকি সব আমার পছন্দ হলেই কি আর না হলেই কি ?
সায়ন পূর্ণতা কে একটা একটা করে অর্নামেন্টস হাতে নিয়ে দেখাচ্ছে ,
– দেখো , এটা কেমন লাগে ?
কিন্তু পূর্ণতা কোনো কথা বলছে না ।
আধিরা আনজুম জলের জন্য এটা ওটা জলকে দেখিয়ে ওর পছন্দেই কিনছে । কিন্তু জল মনে মনে ভাবছে ,
– আমি তো আবরনকে বিয়ে করতে পারবো না ! এটা কি করে সম্ভব ?
আবরন আর শাদমান চৌধুরী এবং আফতাব উজ্জামান মিলে জিব্রানের জন্য আংটি , চেইন এসব দেখছে । সাথে আবরনের জন্যও জিনিস পত্র দেখছে ।
মিলি রহমান পূর্ণতার হাত মুঠ করে এক জোড়া ব্যাংগেলস ঢুকিয়ে বলল ,
– দেখ তো কেমন ?
পূর্ণতা শুধু এক পলক তাকিয়ে দেখে বলল ,
– ভালো ।
সায়ন বলল ,
– তাহলে এটাই নাও মামনি ।
আবরন মাঝখান থেকে এদিকে এসে বলল ,
– কোথায় দেখি ! আন্টি আমাকে একটা দেখান !
মিলি রহমান হেসে বললেন ,
– এই তো পূর্ণতার হাতে !
আবরন পূর্ণতার হাতের দিকে তাকিয়ে বলল ,
– না , এটা ভালো না । এতে ওর সুন্দর হাত দুটো চকমক করছে না ।
আবরনের কথা শুনে পূর্ণতা আবরনের দিকে তাকালো ।
আবরন ওর থেকে ব্যাংগেলস দুটো খুলে নিয়ে তা রেখে দিয়ে বলল ,
– ইউনিক ডিজাইনের দেখান যেগুলো মানুষ সচরাচর কম পড়ে ।
এই বলে আবরন পূর্ণতার পাশে দাঁড়িয়ে আস্তে করে বলল ,
– তোমার কি হয়েছে বলো তো ? সবাই এত এত শপিং করলাম তোমার তো দেখছি কোনো হুশ ই নেই ।
পূর্ণতা বলল ,
– আমার ভালো লাগছে না ।
আবরন বলল ,
– কি ভালো লাগছে না ?শপিং করতে নাকি বিয়ে করতে ?
– ধরে নিন দুটোই ।
আবরন হেসে সেলসম্যানের হাতে থাকা এক জোড়া ব্যাংগেলস দেখে বলল ,
– দেখি , ওটা দিন তো !
সেলসম্যানের হাত থেকে আবরন ব্যাংগেলস দুটো নিয়ে পূর্ণতা কে বলল,
– দেখি হাত দাও ।
পূর্ণতা হাত বাড়িয়ে দিতেই আবরন ওর হাতে ব্যাংগেলস দুটো ঢুকিয়ে বলল ,
– ইটস বিউটিফুল । সি !
পূর্ণতা হাতের দিকে তাকিয়ে দেখল সত্যিই এই জোড়া ব্যাংগেলস অনেক সুন্দর ।
মিলি রহমান দেখে বললেন ,
– বাহ , বেশ তো । আবরন বাবার চয়েস একদম অসাধারণ ।
আবরন হেসে বলল ,
– ধন্যবাদ আন্টি ।
সায়ন আবরনের দিকে তাকিয়ে বলল ,
– তাহলে ব্রো , আমি ঐদিকটা দেখছি । তুমি একটু আমার হবু বউকে হেল্প করো জিনিস পছন্দ করে দিতে ।
আবরন শুধু মুখে মলিন একটা হাসি দিয়ে মাথা নেড়ে সায় জানালো ।
………………………………………………..
অবশেষে বিয়ের বর কনেদের জন্য সকল ধরনের শপিং শেষ করে রাত ৯ টায় সবাই যার যার বাসায় পৌঁছালো ।
পূর্ণতা খুবই টায়ার্ড । তাই জলদি জলদি খেয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ল । কারন কাল সকালে ভার্সিটিতে যেতে হবে কুইজ এক্সামে অংশগ্রহণের জন্য ।
বিছানায় গা হেলিয়ে দিতেই পূর্ণতার চোখ জোড়া ঘুমে বন্ধ হয়ে গেল ।
এক ঘুমে সকাল হতেই পূর্ণতা ঘুম থেকে জেগে ফ্রেশ হয়ে একেবারে রেডি হয়ে ব্রেক ফাষ্ট টেবিলে বসতেই দেখল মিলি রহমান আর শাদমান চৌধুরী সবাইকে দাওয়াত দিতে ব্যস্ত । এদিকে জিব্রানও তার সকল বন্ধুদের দাওয়াত দিচ্ছে আর বলছে ,
– কার্ড ছাপানো হয়ে গেলে সবার বাসায় ই গিয়ে কার্ড দিয়ে আসবো । আপাতত জেনে রাখ তোদের বন্ধু অবশেষে বিয়ে করছে ।
জিব্রানের খুশি দেখে পূর্ণতাও মনে মনে খুশি হয়ে খেতে শুরু করলো । হঠাৎ কোথা থেকে পাশে সায়ন চেয়ার টেনে ওর পাশে এসে বসে বলল ,
– গুড মর্নিং ।
পূর্ণতা কিছু বললো না । চুপচাপ খেয়ে যাচ্ছে ।
সায়ন বলল ,
– রেডি হয়েছো যে ? কোথাও যাচ্ছো নাকি ?
পূর্ণতা বলল ,
– ভার্সিটিতে ।
– ওও , ঠিক আছে চলো আমি নামিয়ে দিয়ে আসছি ।
– লাগবেনা । আমি একাই যেতে পারবো । আর আমাকে ক্লাবেও যেতে হবে কারাতি প্র্যাকটিসের জন্য ।
– তো আমি নামিয়ে দিয়ে আসলে প্রবলেম কোথায় ?
– বললাম তো আমি একাই যেতে পারবো ।
– রাস্তায় প্রবলেম হলে ?
-আমি জানি কিভাবে নিজেকে সেইভ করতে হয় , so ,আমার কাউকে প্রয়োজন নেই । এন্ড প্লিজ সকাল সকাল আমার মুড খারাপ করবেন না ।
এই বলে পূর্ণতা কোনোরকম খেয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে গেল ।
রাস্তায় মোড় পর্যন্ত হেঁটে যেতে যেতে বিরবির করে বলল ,
– বিয়ের আগেই অধিকার খাটাতে আসছে ! যত্তসব আজাইরা পাবলিক । ধুর , কেন যে বিয়েতে রাজি হতে গিয়েছিলাম ? সব ভুল আমারই । আমার সাথেই সবসময় খারাপ টা হতে হয় । সকাল সকাল জোরজবরদস্তি ! একদম অসহ্যকর একটা ফিলিংস নিয়ে আজ এক্সামটা দিতে হবে বলে মনে হচ্ছে ।
আজিমপুর চিপা গলির মাথায় রিক্সার জন্য অপেক্ষা করছে পূর্ণতা । একা যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই । আবরন ফোন করে জানায় নি যে ও নিতে আসবে তাই একাই বের হতে হয়েছে ।
সকাল সকাল রিক্সা পাওয়াটা বড়ই মুশকিল । অফিসিয়াল টাইম বলে অনেক রিক্সা ই জ্যামের কারনে ঐদিকটায় যেতে রাজি হচ্ছে না । পূর্ণতা একবার ভাবছে বাসে করে চলে যাবে কিনা । আবার ভাবছে রিক্সায় খোলা হাওয়া খেতে খেতে যদি একটু মুড টা ভালো হয় ।
খালি রাস্তা , লোকজন নেই তেমন একটা ।
হঠাৎ ৩ জন ছেলে কোথা থেকে এসে পূর্ণতার অপর পাশের রোডে দাঁড়িয়ে অসহ্যকর ভাবে সিটি বাজাতে শুরু করলো । পূর্ণতার বুঝতে বাকি নেই পূর্ণতা আজ ভুল দিশায় বের হয়েছে । পূর্ণতা কি করবে ভেবে না পেয়ে আবার বাসার দিকে হাঁটতে শুরু করলো ।
হাঁটা শুরু করতেই ছেলে গুলোও ওর পেছন পেছন ওকে ফলো করতে শুরু করেছে । পূর্ণতা মনে মনে ভাবছে , একটা রিক্সা পেলে জলদি জলদি উঠে যাবে । কিন্তু এই রোডে কোনো রিক্সাই নেই ।
পূর্ণতা বুঝলো যে ছেলেগুলো ওর থেকে মাত্র ৩-৪ হাত দূরে এবং ওর দিকেই এগিয়ে আসছে ।
পূর্ণতা মনে মনে ভাবছে ,
– আল্লাহ রিক্সা তে যাবো ভেবে মেইন রোডে না গিয়ে এই রোডে এসেছি । এখন তো দেখছি অনেক বড় ভুল করেছি । আর বড় লোক দোকানদারেরাও ৯ টার আগে দোকান খুলে না ।
পূর্ণতা কিছুটা জোরে জোরেই এগিয়ে যাচ্ছে সামনে কিন্তু এতক্ষন ছেলেগুলো শুধু সিটি বাজালেও এখন বাজে বাজে কথা বলতে শুরু করেছে ।
পূর্ণতার বাসা বটতলা থেকে আরো ৫ মিনিট ভিতরে যেতে হয় হেঁটে । তাই বটতলার মোড় চোখে পড়তেই পূর্ণতা আর কিছু না ভেবে দিল এক দৌড় । ছেলে গুলোও ওর পেছন পেছন এখন দৌড়াতে শুরু করেছে । পূর্ণতা নিজের সবটুকু শক্তি দিয়ে দৌড়াচ্ছে কিন্তু তবুও যেন বটতলায় গিয়ে পৌঁছাতে পারছে না ।
ছেলেগুলো জোড়ে জোড়ে দৌড়ে পূর্ণতার হাত ধরে ওকে থামিয়ে দিয়ে বাজে ভাবে হেসে বলল ,
– এখন কোথায় পালাবে বেইব ?
পূর্ণতা হাত মুচড়িয়ে বলল ,
– ছাড়ুন আমাকে । এটা কিন্তু আমার এলাকা । আমি চিল্লাতে শুরু করলে কিন্তু সবাই এসে আপনাদের গণ ধোলাই দেবে ।
ছেলে গুলোর মধ্যে অন্য আরেকটা ছেলে হেসে বলল ,
– তাই নাকি ??
তারপর পূর্ণতার মুখ চেপে ধরে বলল ,
– এখন চিল্লিয়ে দেখাও পারলে ! তোমার ঐ কচি গলা দিয়ে এখন আর আওয়াজ বের হবে না বেবি !
পূর্ণতা চোখ বন্ধ করে মনে করতে শুরু করলো কি করে ডিফেন্স শেখানো হয়েছে ! পূর্ণতা মনে সাহস যুগিয়ে পেছন থেকে যে ছেলেটা ওর একহাত শক্ত করে সামনে দাঁড়িয়ে ধরে রেখেছে সে ছেলেটাকে ডান হাত মুঠ করে স্বজোরে নাক বরাবর ঘুষি মেরে এক মূহুর্তেই পেছন থেকে যে ছেলেটা ওর মুখ চেপে ধরেছে সে ছেলেটাকে ডান হাতের কনুই দিয়ে স্বজোরে পেছনের দিকে ছেলেটার বুক বরাবর মারতেই একই সাথে দুটো ছেলেই ওর হাত এবং মুখ ছেড়ে দূরে সরে গেল । পূর্ণতা খুশি হয়ে ‘ইয়েস , ইটস ওয়ার্ক ‘ বলে আবারো দৌঁড়াতে শুরু করলো ।
সামনে থাকা ছেলেটা নাক থেকে হাত সরাতেই ৩য় ছেলেটা বলল ,
– বস , তোমার নাক দিয়ে তো রক্ত পড়ছে ।
আর পেছনে থাকা ছেলেটা বুকে হাত দিয়ে এখনো ডলে যাচ্ছে আর বলছে ,
– বুকে একদম ছুড়ি ঢোকানোর মতো ব্যথা ফিল হচ্ছে ।
১ম ছেলেটা নাকে রক্ত হাতে দেখে ৩য় ছেলেটাকে চিল্লিয়ে বলল ,
– তুই দাঁড়িয়ে আছিস কেন ? ধর মেয়েটাকে !
৩য় ছেলেটা পূর্ণতার পেছনে দৌঁড়াতে শুরু করলো ।
পূর্ণতা বট তলা পর্যন্ত গিয়ে থেমে দাঁড়িয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখল তিনজনই ওর দিকে আবারো তেড়ে আসছে । তা দেখে পূর্ণতা চোখ বড় করে আবারো দৌড় দিতেই যাচ্ছিল কিন্তু দৌড় দিতে গিয়ে একটা আগত গাড়ির উপর গিয়ে পড়তে পড়তে বেঁচে গেল ।
পূর্ণতা সামনে তাকিয়ে দেখল গাড়িটা আবরনের ।
এদিকে আবরন সেখানে গাড়িটা পার্ক করে থামিয়েছে মাত্র আর পূর্ণতা সেখানে ওর গাড়ির সামনে হঠাৎ এসে পড়ল ।
পূর্ণতা কোনো কিছু না ভেবেই জলদি জলদি গাড়ির ডোরের সামনে গিয়ে বলল ,
– হেল্প মি , হেল্প প্লিজ ।
আবরন গাড়ি থেকে জলদি জলদি নেমে দাঁড়িয়ে বলল ,
– কি হয়েছে ? বলো !
ছেলেগুলো এসে বটতলায় থেমেছে মাত্র । পূর্ণতা ওদেরকে দেখিয়ে বলল ,
– ছেলেগুলো আমাকে তাড়া করেছে ।
আবরন ছেলেগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখে পূর্ণতা কে গাড়িতে বসতে বলে ছেলেগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে বলল ,
– কি সমস্যা তোদের ??
ছেলেগুলো বলল ,
– তুই কে রে ! আগে তো এই এলাকায় কখনো দেখিনি !
আবরন বলল ,
– আমি কে তোদের না জানলেও চলবে ! তোরা আগে বল ওর সাথে কি করেছিস ??
– কিছু করতে পারলাম কোথায় ? মেয়েটাই তো উল্টো আমাদের মেরে পালালো । এখন তো এসেছিলাম সুদে আসলে সব মিটাতে !
আবরন হেসে বলল ,
– তাই নাকি ? আয় তাহলে !
ছেলেগুলো রেগে মেগে এগিয়ে আসতেই আবরন কারাতি স্টাইলে জাষ্ট মেইন কিছু পয়েন্টে তিনজনকে পাঞ্চ – কিক করতেই ওরা মাটিতে গড়াতে শুরু করলো ।
আবরন হেসে বলল ,
– কিরে ! এই ছিল তোদের সুদে আসলে মিটানোর প্রস্তুতি ! নেক্সট টাইম শুধু ও কেন , অন্য কোনো মেয়ের দিকেও যদি বদ নজরে তাকিয়েছিস না এর চেয়েও খারাপ হাল করবো । গট ইট ।
পূর্ণতা গাড়িতে বসে গ্লাস দিয়ে তাকিয়ে বাহিরে আবরন কি করছে তা দেখে ভেতরে বসে হাত তালি দিতে দিতে বলল ,
– ইয়েস , আরো জোরে মারুন আরো জোরে ।
আবরন গাড়িতে এসে ওর পাশে ড্রাইভিং সিটে এসে বসতেই পূর্ণতা বলল,
-বাহ , আপনি তো ভালোই কারাতি জানেন ।
আবরন বলল ,
– আমার চেহারা দেখে তো আর আমাকে ব্ল্যাক বেল্ট টা দিয়ে দেয় নি ।
পূর্ণতা বলল ,
– তা অবশ্য ঠিক । কিন্তু জানেন এই প্রথম মনে হচ্ছে কারাতি মেয়েদের জন্য শেখা টা খুব বেশি জরুরি ।
আবরন বলল ,
– হুম , মনোযোগ দিয়ে প্র্যাকটিস করো । ব্ল্যাক বেল্ট না পেলেও ব্রাউন বেল্ট পর্যন্ত যাও যেন ডিফেন্স টা জানতে পারো ।
– হুম । বাই দ্য ওয়ে , আপনি যে আসবেন বলেন নি তো ! আমি তো একাই চলে যাচ্ছিলাম ।
আবরন গাড়ি স্টার্ট করে ড্রাইভিং করতে শুরু করে বলল ,
– নেক্সট একা একা কোথাও যাওয়ার সাহস করো না যতদিন না পর্যন্ত তুমি সেল্ফ ডিফেন্স টা শিখতে পারছো । আমি কল দেই বা না দেই অপেক্ষা করবে আমি না আসা পর্যন্ত ।
– হুম ।
পূর্ণতা মনে মনে ভাবছে ,
– আপনি ই কি আমাকে সবসময় সব জায়গায় সাথে করে নিয়ে যাবেন নাকি বিয়ের পর আমাকে আমার পথ একাই দেখে নিতে হবে !
ভাবনার মাঝেই আবরন বলল ,
– প্রিপারেশন কেমন ?
পূর্ণতা ভাবনা থেকে বের হয়ে বলল ,
– হুম । ভালো ।
– গুড ।
…………………………………………………
দুপুর ২:৫০ টা ,
পূর্ণতা এবং প্রেনাসহ সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে রেজাল্টের জন্য অপেক্ষা করছে । পূর্ণতা মনে মনে আশা করছে ওর ১০ টার ১০ টা ই সঠিক হবে কিন্তু মুখে তা প্রকাশ করলো না ।
৩ টায় রেজাল্ট দিয়ে দেয়া হবে এবং পুরস্কার এবং সার্টিফিকেট দিয়ে তারপর বিদায় দেয়া হবে সবাইকে ।
আবরন ওর দলবল নিয়ে স্টেজে কথা বার্তা চালাচ্ছে পরীক্ষা এবং পুরস্কার বিতরণী সম্পর্কিত ।
অবশেষে তিনটা বাজতেই স্টেজে দাঁড়িয়ে একজন মাইক নিয়ে রেজাল্ট বলতে শুরু করলো । প্রথমে ৩য় এবং ২য় স্থান অধিকারীদের দাম বলা হলো । ১ম স্থান অধিকারীদের নাম বলার আগে আবরনসহ সবাই চোখ বন্ধ করে দোয়া দুরুদ পড়তে শুরু করলো ।
প্রায় ১ মিনিট চোখ বন্ধ করে থাকার পর স্পিকার অবশেষে ঘোষনা করল ,
– এবং আজকে আমাদের প্রতিযোগিতায় মূল বিজয়ী অর্থাৎ ১ম স্থান অধিকারী আমাদের ঢাকা মেডিক্যালের ছাত্র-ছাত্রী বৃন্দ ।
স্পিকারের মুখে ঘোষনা শুনতেই আবরন এবং পূর্ণতা সহ সবার মুখে খুশি এবং আনন্দের রোল দেখা দিল ।
পুরষ্কার নিয়ে অবশেষে মেডিক্যাল এর সকলে মেডিক্যালের উদ্দেশ্য নিয়ে রওনা হলো ।
মেডিক্যালে পৌছে আবরন সবাইকে উদ্দেশ্য করে কিছু উপদেশ মূলক কথা বলে অবেশেষে মার্কস সিট দেখে আবরন ঘোষনা দিল যে পূর্ণতা এবং প্রেনার উত্তর ১০টার ১০ টা ই সঠিক হয়েছে । তাই প্রথম পুরষ্কার ওদের হাতে দেওয়া হলো এবং এই পুরস্কার মেডিক্যাল এর পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে ।
খুশি হয়ে পূর্ণতা বাসায় গিয়ে খেয়ে দেয়ে একটা শান্তির ঘুম দিল ।
………………………………………………..
অবশেষে দেখতে দেখতে গায়ে হলুদের দিন চলে এলো । আজ বাদে কাল গায়ে হলুদ । এই উপলক্ষে পূর্ণতাদের বিল্ডিং টা সাজানো হলেও সবাই আজই রওনা হয়ে যাচ্ছে গাজীপুরের একটা হেরিটেজ রিসোর্ট এর উদ্দেশ্যে । আবরনের ফুল ফ্যামিলি , পূর্ণতাদের ফুল ফ্যামিলি , নাদিরাদের ফুল ফ্যামিলি এবং সাথে প্রেনাদের ফুল ফ্যামিলি , আয়মান , তাসিন , ফাহিম , রুহি , নীরাদের ফ্যামিলি সহ আবরনদের ঘনিষ্ঠ কিছু আত্মীয় স্বজন এবং নাদিরাদের ঘনিষ্ঠ কিছু আত্মীয় স্বজন সকলেই রওনা হয়ে আজ রাতের ভেতর রিসোর্টে পৌঁছনোর প্ল্যান করা হয়েছে । ঐদিকে পূর্ণতার ছোট খালামনি একা একা সিলেট থেকে রওনা হয়েছে ঢাকার উদ্দেশ্যে ।
সবাই বিয়েতে এনজয় করার জন্য প্রচুর পরিমাণে এক্সাইটেড হলেও আবরন , পূর্ণতা এবং জল কিছুটা অন্যমনস্ক ।
#চলবে ♥️
বিঃদ্রঃ আজ গল্পটা একটু ছোট হয়ে গিয়েছে এবং দেড়ি হয়ে হয়ে গেল এইজন্য দুঃখিত । আসলে আজ আমার ভ্যাকসিনের ১ম ডোজ দেওয়া হয়েছে , so , হাতে প্রচুর পরিমাণে ব্যথা । এইটুকু লিখতেই খুব কষ্ট হয়েছে । ফোনটা হাতে ধরে রাখতেও খুব কষ্ট হচ্ছে । সবাই দোয়া করবেন যেন জলদি ব্যথা সেড়ে যায় , নাহলে জ্বর এলে তো আমার আবার ৩ দিনের আগে সাড়ে না । যাই – ই হোক , বিয়ের দিনটা ঘনিয়ে আসছে । গল্পটা শেষের দিকে প্রায় । সবাই সাথেই থাকুন । আর গল্পের ভুল ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন । ধন্যবাদ । ♥️