#ভালোবাসি_বলেই_তো ♥️
লেখিকা – #আদ্রিয়া_রাওনাফ
পর্ব – ১৪
সকাল ৬:৩০ টা ,
আবরন ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে মোবাইলটা হাতে নিয়ে ভাবছে ,
– এখন তো সবাই ঘুমাচ্ছে । কালকে পূর্ণতা কে বাসায় সন্ধ্যায় ড্রপ করে দিয়ে আসার পর আর একবারও কথা হয় নি আর দেখা হওয়া তো দূরের কথা !! মাত্র ১২ ঘন্টা হয়েছে ওর সাথে কথা বলি নি , একটু দেখি নি ওর মায়া ভরা ফেস টা , আর আজকে তো মনে হয় দেখতেও পারবো না । কি যে করি !!
ওকে কি এখন একটা কল দেব ??
ও নিশ্চয়ই এখন ঘুমুচ্ছে । কি যে করি ??
না একটা কল দিয়েই ফেলি । ভিডিও কল ই দিই । কথা ও হবে আর দেখা ও হয়ে যাবে ।
আবরন নিজের রুমের দরজা খুলে বাহিরে উঁকি মেরে দেখল কেউ আছে কিনা । কেউ না থাকায় আবরন আবার দরজা টা লক করে নিজের রুমের পর্দা গুলো খুলে দিয়ে বিছানায় বসলো পূর্ণতা কে কল দিবে বলে ।
হোয়াটস অ্যাপে ভিডিও কল দিয়ে চুপচাপ পূর্ণতার রিসিভ করার অপেক্ষায় বসে রইল ।
পূর্ণতা সারারাত ঘুমায় নি । সকালে একেবারে ফজরের নামাজ টা পড়ে সবেই শুয়েছিল আর ঘুমে চোখটা লেগে গিয়েছিল ঠিক তখন স্বজোরে ফোন বাজতে লাগল ।
খুবই বিরক্তিকর একটা মুড নিয়ে শুয়ে থেকেই কলটা রিসিভ করতেই দেখল ওপাশে আবরন কে দেখা যাচ্ছে ।
আবরন বলল ,
– গুড মর্নিং !!
পূর্ণতা ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলায় উত্তর দিল ,
– মর্নিং !! এই আপনি না আসলেই কাউয়্যা । না মানে এত সকালে কেউ কল দেয় !! তা ও আবার ভিডিও কল !!
কাক কে দেখেছেন সাত সকালে কা কা শুরু করে , আপনি ও ঠিক তেমন !!
আবরন মুচকি হেসে বলল ,
– তুমিও তো কাউয়্যার বউ ! তাই সাত সকালে উঠা দরকার তোমার !!
পূর্ণতা শোয়া থেকে উঠে বসে বলল ,
– এখন কি বলবেন জলদি বলুন ! আমার প্রচুর ঘুম পাচ্ছে ।
পূর্ণতা শোয়া থেকে উঠে বসার পর ওর মুখে বাহিরের আলো এসে পড়তেই আবরন ভ্রু কুচকে ওকে ভালো করে তাকিয়ে দেখে বলল ,
– এই , ওয়েট ওয়েট ওয়েট !! তুমি কি কাল রাতে কান্না করেছিলে !!
আবরনের প্রশ্ন শুনে পূর্ণতা চোখে মুখে হাত দিয়ে আমতা আমতা করে বলল ,
– না , ইয়ে মানে !! কাল রাতে অনেক ঘুমিয়েছি তো তাই আরকি মুখ টা ফোলা ফোলা লাগছে ।
আবরন চোখে মুখে রাগ নিয়ে বলল ,
– পূর্ণ !! আমি সবসময় তোমাকে নিষেধ করি যে আমার সাথে মিথ্যা বলবে না , তবুও কেন মিথ্যা বলো !! তোমার সাথে সবার চেয়ে ভালো বিহেইভ করি তার মানে এই না যে তুমি আমার কথায় পাত্তা দেবে না , বাকি সবার মতো তোমাকেও আমার কথা শুনতে হবে ।
পূর্ণতা রেগে বলল ,
– তো কে বলেছে আমার সাথে এত ভালো বিহেইভ করতে ?? যত্তসব আজাইরা ।
এই বলে পূর্ণতা লাইনটা ডিসকানেক্ট করে দিল , তারপর ফোনটা সাইলেন্ট করে শুয়ে পড়লো ।
আবরন রেগে আরো কয়েকবার কলে ট্রাই করলো কিন্তু পূর্ণতার কোনো রেসপন্স না পেয়ে রাগে ফোনটা খাটের এক কোনায় ছুড়ে ফেলে বলল
– damn it …..
তোমাকে বেশি বেশি সাহস দিয়ে ফেলেছি , তুমি জানো না তোমাকে আমি এই জন্য কি শাস্তি দিতে পারি !! আমার নরম দিকটাই সবসময় দেখেছো , কারন আমি চাই নি তোমাকে আমার কঠোর দিকটা শো অফ করতে । কিন্তু এখন তুমি ই আমাকে বাধ্য করলে মিস পূর্ণতা জামান । জাষ্ট সময়ের অপেক্ষা , তারপর হারে হারে বোঝাবো আমি কি কি করতে পারি !!
এইসব মনে মনে ভেবে তারপর আবার মোবাইল টা হাতে নিয়ে দেখল ৭ টা ১০ বাজে ।
কিছু একটা ভেবে তারপর ঠোঁটে বাকা হাসি দিয়ে ফাহিম , তাসিন আর আয়মানকে ভিডিও কনফারেন্সে গ্ৰুপ কল দিল ।
একজন একজন করে সবাই ফোন রিসিভ করলো , সবাই ঘুমু চোখে তাকিয়ে আবরনকে জিজ্ঞেস করলো ,
– কি জরুরি তলবে এই কানা সকালে কল দিয়েছিস রে !! ( আয়মান)
আবরন বলল ,
– আমি সিরিয়াস কিছু কথা বলবো , সব মনোযোগ সহকারে শুনে সেইভাবেই কাজ গুলো করবি , ফাইন ?
সবাই অধির আগ্ৰহ নিয়ে আবরনের দিকে তাকাতেই আবরন ওদেরকে সব ভেঙ্গে বুঝিয়ে দিল । ওরা আবরনের কথা শুনে এক্সাইটেড হয়ে শোয়া থেকে বসে দাঁত কেলিয়ে একসাথে বলে উঠল ,
– কপি দ্যাট !! 😁
………………………………………………..
সকাল ১০ টা ,
আবরন গোসল সেড়ে ডায়নিং রুমে গিয়ে নাস্তা করতে টেবিলে বসতেই জল ওকে দেখে দৌড়ে গিয়ে ওর পাশের চেয়ারটা টেনে বসে টেবিলের অপর পাশে বসা শাদমান চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে বলল ,
– গুড মর্নিং ।
শাদমান চৌধুরী পেপার পড়ছিলেন , জলের মর্নিং উইশ শুনে পেপারটা ভাজ করতে করতে বললেন ,
– গুড মর্নিং জল মামনি । আর “শুভ জন্মদিন ” । ভালো কাটুক তোমার আগামি দিন গুলো , অনেক বড় হও , মানুষের মতো মানুষ হও সেই দোয়া করি ।
আবরন শাদমান চৌধুরীর উইশ শুনে মনে মনে ভাবছে ,
– হেহ্ ,, তুমি ওকে যতই দোয়া দেও না কেন , ওর পক্ষে মানুষের মতো মানুষ হয়ে ওঠা কখনোই পসিবল না , কারন কুকুরের লেজ কখনো সোজা হয় না ।
গরুর পেট থেকে গরু বের হয় , ছাগলের পেট থেকে ছাগল বের হয় কিন্তু মানুষের পেট থেকে মানুষ বের হলেও তার মধ্যে মনুষ্যত্বের শিক্ষা থাকে না , তাকে সেটা সম্পূর্ণ ভাবে দিতে পারলে সে মানুষ হয়ে ওঠে , নাহলে তারা পশুর চেয়েও অধম ।
ওর ভাবনার মাঝেই জল শাদমান চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে বলল ,
– মামা , সেই সবার আগে তুমিই উইশ করলে , কোথায় ভেবেছিলাম আমাকে সবার আগে আবরন উইশ করবে !! ধুর !!
শাদমান চৌধুরী বললেন ,
– কে আগে উইশ করলো সেটা দেখার বিষয় না মা । কে তোমাকে ভালোবেসে কি দোয়া দেয় সেটাই বড় বিষয় ।
এরপর আবরনের দিকে তাকিয়ে বললেন ,
– আবরন তাকিয়ে দেখছো কি ? জল মাকে উইশ করো ।
আবরন শাদমান চৌধুরীর কথায় জলের দিকে না তাকিয়েই বলল ,
– Happy birthday .. Many many happy returns of the day .. I wish
Allah bless you .
জল আবরনের উইশ শুনে বলল ,
– শুধু এইটুকুই বলবে ? আর কিছু না ?
আবরন ওর দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলল ,
– আর কি বলবো ? এইটুকুই মুখস্ত , তাই এই টুকুই বললাম । That’s it ..
জল কিছু একটা ভেবে তারপর আবরনের হাত ধরে বলল ,
– Thank you .
আবরন জোড় পূর্বক মুখে হাসির রেখা টেনে জলের থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে বলল ,
– It’s ok .
শাকিলা ইয়াসমিন একটা চেয়ার টেনে বসে বললেন ,
– একি ! ভাবি এখনো নাস্তা দেয় নি ? আমরা খাবো কখন আর যাবো কখন ??
আধিরা আনজুম রান্না ঘর থেকে নাস্তা রেডি করে আনতে আনতে বললেন ,
– এই তো চলে এসেছি নাস্তা নিয়ে !
শাকিলা ইয়াসমিন বললেন ,
– এত দেড়ি করলে হয় ! এক জায়গায় যেতে হবে তো নাকি !
আধিরা আনজুম মুখে মিথ্যা হাসি দিয়ে বললেন ,
– সরি , একটু দেড়ি হয়ে গেল । এখন খেয়ে নাও ।
আবরন তাকিয়ে তাকিয়ে দেখল , কিছু বলল না ।
নাস্তা করতে করতে আবরন শাদমান চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে বলল ,
– বাবা , If you give me permission , can I invite some of my friends in this occasion ??
শাদমান চৌধুরী ছেলের কথা শুনে বললেন ,
– কেন নয় ! আমার জল মায়ের জাকজমক পার্টিতে আমি সবাইকে চাই । তুমি তোমার সব ফ্রেন্ড দের ইনভাইট করো , কোনো অসুবিধা নেই ।
জল খুশি হয়ে বলল ,
– তাহলে তো আরো মজা হবে ।
আবরন মনে মনে খুশি হয়ে শাদমান চৌধুরী কে উদ্দেশ্য করে বলল ,
– থ্যাংকস বাবা ।
তারপর মনে মনে ভাবলো ,
– আমি তো সবাইকে সাত সকালেই ইনভাইট করে ফেলছি , জাষ্ট তোমার থেকে শুনে নিলাম তুমি রাজি হও কি না !!
……………………………………………..
মিলি রহমান পূর্ণতার রুমে গিয়ে দেখলো ও এখনো ঘুমাচ্ছে । মিলি রহমান ওকে ডাকতে শুরু করলো ,
– পূর্ণ , এই পূর্ণ !! অনেক সকাল হয়ে গিয়েছে । উঠ !! দেখ প্রেনা এসেছে , সাথে আরো কিছু তোর মেডিক্যাল এর সিনিয়র ভাই বোনেরা এসেছে । জলদি উঠ !
পূর্ণতা ঘুমাচ্ছিল !! হঠাৎ মিলি রহমানের ডাক শুনে পূর্ণতার ঘুম ভেঙ্গে গেল ।
– কি হয়েছে আম্মু ?
– প্রেনা এসেছে ।
পূর্ণতা চোখ মুখ ডলতে ডলতে বলল ,
– কেন ? আজকে তো কোনো প্রোগ্ৰাম নেই ।
তখনই প্রেনা ওর রুমে হাজির হয়ে বলল ,
– কে বলেছে প্রোগ্ৰাম নেই ? তুই জানিস না আজ আমাদের মেডিক্যাল এর এক প্রোফেসরের ওয়াইফের বার্থডে ?? আমাদের সবাইকে যেতে বলেছে ??
পূর্ণতা ভ্রু কুচকে বলল ,
– কখন বলল ?
– ওও , তুই জানবি কি করে ? আমাকে তো আয়মান বলছে ! আচ্ছা , এখন আর কি ?? কথা না বাড়িয়ে জলদি গোসল করে আয় !! তারপর খেয়ে নে , আমি রেডি করিয়ে দিচ্ছি ।
পূর্ণতা কিছুই বুঝলো না । তাই প্রেনার কথা মতো ফ্রেশ হয়ে তারপর নাস্তা করে গোসল করে নিল ।
প্রেনা ওকে একটা বেবি পিংক কালারের নেটের উপর কাজ করা শাড়ি পড়িয়ে দিল । পূর্ণতা ভারি শাড়ি পড়ে অভ্যস্ত না , কিন্তু প্রেনার জোড়াজোড়ি তে পড়ে নিল । প্রেনা ও নেটের শাড়ি পড়েছে তবে ওর টা গ্ৰে কালার ।
পূর্ণতা বলল ,
– এত ভারী শাড়ি টা না পড়লেই না !!
– না , ঐখানে সব বড় বড় হাই লেভেলের গেস্ট রা আসবে , সেখানে নরমাল শাড়ি পড়লে আমাদেরকে সবার মাঝে লো ক্লাস লাগবে । তাই পার্টি শাড়ি ই পড়েছি আর তোকেও পড়ালাম । প্লিজ ঘ্যান ঘ্যান করিস না ।
পূর্ণতা বলল ,
– এখন কি করবি ?
– একটু সাজিয়ে দিই হালকা পাতলা !
– ধুর , এই গরমে সাজবো না !
– তুই চুপ কর । যাবি এসি গাড়িতে , সেখানে থাকবি ও এসিতে । গরম লাগবে না ।
প্রেনা পূর্ণতার চুল গুলো হেয়ার ড্রাইয়ার দিয়ে শুকিয়ে তারপর স্ট্রেইটনার দিয়ে পেছনের চুলগুলো কার্লি করে দিল । তারপর সামনের চুলগুলো মাঝখানে শিথি করে দুই পাশে বেনি বেনি করে ফ্লাফি করে পেছনে পাঞ্চিং ক্লিপ দিয়ে আটকে দিল । আর কার্লি চুলগুলো পেছনে ছেড়ে দিল । তারপর কপালের উপরের ছোট চুল গুলো রেখে মিডিয়াম সাইজের চুলগুলোও হালকা কার্লি করে গালের দুই পাশে ঝুলিয়ে দিল ।
মুখে বিবি ক্রিম আর ফেস পাউডার লাগিয়ে চোখে আইলাইনার আর কাজল দিয়ে দিল । তারপর ঠোঁটে শাড়ির সাথে মিলিয়ে ডিপ বেবি পিংক কালারে লিকস্টিক লাগিয়ে দিল ।
তারপর শাড়ির সাথে ম্যাচিং করে কানের দুল , গলার হাড় , আর চুড়ি পড়িয়ে একদম ফুল ফিল রেডি করে দিল প্রেনা ।
পূর্ণতা আয়নায় নিজেকে দেখে বলল ,
– এত্ত গুলো আটা ময়দা দিয়ে আমার ফেসের বারোটা বাজায় দিছিস !! এতো ভারি শাড়ি আর ভারি সাজ আমি জীবনেও দিই নাই ।
প্রেনা হেসে হেসে বলল ,
– আজকে দিলি , আর বিয়ের দিন দিবি । এখন চল বের হই ।
পূর্ণতা ড্রয়িং রুমে পা রাখতেই চমকে গেল । সেখানে ফাহিম আর ওর সাথে একটা মেয়ে , তাসিন আর ওর সাথেও একটা মেয়ে আর একদম সাইডের সোফায় আয়মানকে বসা দেখে পূর্ণতা প্রেনার দিকে ভ্রু কুচকে তাকালো ।
প্রেনা হেসে বলল ,
– সবাই একটু পূর্ণতার সাথে পরিচিত হও ।
ফাহিম বলল ,
– পূর্ণতা তো আমাকে , তাসিনকে আর আয়মানকে চিনেই । চিনে না শুধু আমার আর তাসিনের গার্লফ্রেন্ড কে ।
তাহলে ওদের সাথেই পরিচয় করিয়ে দিই । এটা আমার গার্লফ্রেন্ড রুহি , আর ওটা তাসিনের গার্লফ্রেন্ড নীরা ।
রুহি আর নীরা উঠে এসে পূর্ণতা কে থুতনিতে হাত দিয়ে বলল ,
– মাশাআল্লাহ , একদম বার্বি ডলের মতো লাগছে তোমাকে । ( রুহি )
– তুমি যে এত সুন্দর তোমাকে না দেখলে হয় তো জানতাম ই না । ( নীরা)
পূর্ণতা হেসে বলল ,
– তোমরাও সুন্দর । আল্লাহ সবাইকেই সুন্দর করে বানিয়েছেন ।
প্রেনা বলল ,
– আয়ে হায় !! আমাদের কারো উপর যেন নজর না লাগে !
সবাই এক সাথে হেসে উঠলো ।
মিলি রহমান বললেন ,
– ১১:৩০ টা তো বেজে গিয়েছে । তোমরা বেরিয়ে পড়ো । রাস্তায় জ্যামে পড়লে তো আরো দেড়ি হবে ।
সবাই উঠে বের হতে লাগল । পূর্ণতা মিলি রহমানকে বলল ,
– আম্মু , ভাইয়া কোথায় ?
– তোর ভাইয়া অফিসে গিয়েছে ।
– ও , আচ্ছা ।
তারপর পূর্ণতা ও বেরিয়ে গেল মিলি রহমানকে বিদায় জানিয়ে ।
নিচে নামতেই দেখলো আট সিটের একটা মাইক্রোবাস । সবাই উঠে বসতেই গাড়ি চলতে শুরু করলো । গন্তব্য উত্তরা ।
অপরদিকে আবরন , শাদমান চৌধুরী , আধিরা আনজুম , শাকিলা ইয়াসমিন , জল ওরা ১১ টায় রওনা হয়ে গিয়েছে বাসা থেকে । ওদের ও একই গন্তব্য ।
পূর্ণতা চুপচাপ বসে আছে , কারন এখানে শুধু ওই একা , আর সবাই কাপল । সবাই খুব হৈ হুল্লোর করছে ।
পূর্ণতা কে চুপ থাকতে দেখে প্রেনা দুষ্টুমি করে বলল ,
– পূর্ণ , আমরা সবাই তো ইন এ রিলেশনশিপ । তোর স্ট্যাটাস টা কবে এমন হবে রে ??
সবাই একই প্রশ্ন করলো ।
পূর্ণতা বললো ,
– আমি একেবারে বিয়ের পর মজা করবো । এর আগে ইচ্ছে নেই ।
রুহি বলল ,
– ওয়াও , ইন্টারেষ্টিং !!
ফাহিম বলল ,
– না , ও ইউনিক ।
আয়মান বলল ,
– আমরা এখন সবাই প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি , আর পূর্ণতা বিয়ের পর খাবে , তাই না পূর্ণ ??
পূর্ণতা বলল ,
– হ্যা ।
সবাই হাসলো ।
এভাবেই হাসতে হাসতে খেলতে খেলতে প্রায় দেড়টার দিকে ওরা সবাই উত্তরা পৌঁছে গেল ।
আবরনরা আরো ৩০ মিনিট আগে পৌঁছে গিয়েছিল ।
একটা বিশাল বড় ডুপ্লেক্স বাংলো বাড়ির সামনে ওদের গাড়ি এসে থামতেই ফাহিম কাউকে কল করে বলল ,
– কোথায় তুই ? আমরা তো বাড়ির গেইটের সামনে । তুই না এলে যদি ঢুকতে না দেয় !
-………
– ওকে , আয় ।
পূর্ণতা বলল ,
– আর কে এসেছে ?
প্রেনা বলল ,
– ভার্সিটির সবাই ই এসেছে ।
পূর্ণতা আশে পাশে তাকিয়ে বলল ,
– আমি তো আর কাউকে দেখছি না । সবাই তো কত বড় বড় ।
আয়মান বলল ,
– আরে , এতো মানুষের ভিড়ে কি করে পাবে ?
এরই মধ্যে আবরন এসে গাড়ির সামনে দাঁড়াতেই সবাই একে একে হৈ চৈ করে গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়াতেই পূর্ণতা একদম শেষে নেমে দাঁড়ালো ।
আবরনের দিকে তাকাতেই আবরন ঠোঁটে বাকা হাসি দিয়ে ওকে না দেখার ভান করে চলে গেল ।
সবাই আবরনের পেছন পেছন যাচ্ছে , পূর্ণতা প্রেনাকে গুতো মেরে বলল ,
– উনি এখানে আছেন জানলে আমি জীবনেও আসতাম না !
প্রেনা বলল ,
– কেন , কি হয়েছে ?
আয়মান বলল ,
– তোমাদের কি মনমালিন্য হয়েছে ! আবরন ও দেখলাম তোমার সাথে কথা বললো না !
– কিছুই হয় নি । আর কথা না বললে আমার কি ?
ওর কথা শুনে সবাই মুখ টিপে হাসলো , পূর্ণতা কোনো ভ্রুক্ষেপ না করে ভেতরে চলে গেল ।
সবাই ভিতরে যেতেই দেখল নিচের রুমটায় হল রুমের মতো স্পেস । সেখানে একপাশের দেয়ালে বিশাল বড় করে লেখা “Happy birthday to our beauty queen Jol “..
এই লেখা পড়েই পূর্ণতা যেন ৪৪০ ভোল্টের শক খেল ,
ওর ফেস রিয়েকশন দেখে বাকিরা ভয়ে চুপসে গেল ………………
#চলবে ♥️
বিঃদ্রঃ দুঃখিত !! আজকে একটু লেইট হয়ে গেল । আসলে যখন লিখতে বসি , মনে হয় তখনই আল্লাহর দুনিয়ার সবাই কল দিতে শুরু করে । 😒 যাই হোক , নেক্সট পর্বে কি হতে যাচ্ছে তা নিয়ে আমি নিজেই খুব চিন্তিত । 🙃
আর ভুল ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন । ধন্যবাদ । ♥️
আমার পেইজ লিংক – https://www.facebook.com/আদ্রিয়া-রাওনাফ-105596265191725/