#পর্ব_১৩
গল্পঃ #ভালোবেসে_মরেছি🍂❣
writer: #Ashura_Akter_Anu
_________________
‘মিহু?’ ও ‘অর্নি’ দুটো নাম নিয়েই অর্নব কখন থেকে পড়ে আছে।একটা নাম যেটা ও নিজের জীবনের চাইতেও বেশি পছন্দ করে,আর অন্য একটা নাম যেটা ওর জীবনের বড় শত্রু।ও কি করে বুঝলোনা মিহুই অর্নি ছিলো।কেন বুঝলো না।
শেল্ফ থেকে বই খাতা সব ফেলে দিল।
মিহুর বলা কথাগুলো অর্নবের কানে বাজছে।
—
‘অর্নি নামটা আসল হলেও মিহু নামে ডাকলে আমি মাইন্ড করবোনা(বাকা হেসে)এট লিস্ট এই নামে এতটাদিন বাচলাম।নামটাকে একটু রেসপেক্ট দিতে হয়।’
অর্নব জানেনা কি করবে।কারন যাকে মন প্রান দিয়ে ভালোবাসলো সেই ওর জাত শত্রু বের হলো?
এই মানুষটাকে অনেকদিন আগে ও ভুলে গিয়েছিল।মিহু তো অন্যরকম ছিল।একদমই অন্যরকম।হ্যা মিহুকে দেখে অর্নির কথা মনে হলেও খুব একটা চিন্তিত ছিলনা অর্নব।কারন সেই মিহু আর অর্নির মাঝে কথা বলা,হাটা চলা,ড্রেসিং সেন্স সবকিছুর মাঝে আকাশ-পাতাল তফাত।
আজকে যাকে দেখছে অর্নব সে মিহু হয়েও মিহু নয়।এটা অর্নি।দ্যা গ্রেট রিয়েল এস্টেট কোম্পানি এর মালিক আবরার আনাফ এর একমাত্র মেয়ে সে।আয়েশা মেহেজাবিন। ওরফে অর্নি।যার বাবার হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি আছে। ব্রিটেন এর বেস্ট ভার্সিটিগুলোর মাঝে একটা দ্যা অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে অর্নি গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করেছে। অর্নির নিজের ইউজ করার জন্য দশ বারোটার মতো পার্সোনাল কার আছে। বাবার মারা যাওয়ার পর সবকিছুর দায়িত্ব অর্নির ও তার চাচা নিয়েছে(যে এতদিন অর্নির বাবা হিসেবে ছিলেন)।
(এতকিছু থাকার পরও কেন সে এই ভার্সিটির চক্কর আবার কেটেছে তা না হয় পরে বলি।আগে এদের মামলা সেট করে নেই কেমন?)
-সো, এখন বলুন,আমাকে উফ সরি মিহুকে কেন ডেকেছিলেন?
অর্নব যা বলতে চেয়েছিল তা হয়তো আর বলা হবে না।
অর্নি যে ওকে এত বড় শাস্তি দেবে ভাবেনি অর্নব।
অনেকটা ভালোবেসে ফেলেছে মিহুকে।মিহুকে না পেলে হয়তো বাচার কোন মূল্যই নেই তার জীবনে। কিন্তু মিহু তো এখন অর্নি রুপে এসেছে। যাকে আজীবনেও ভালোবাসতে পারবেনা অর্নব।
অর্নবের মনে মনে কয়েকটা কথা বাজছে,
ঘৃনায় পরিপূর্ণ ছিলাম,
এরপরই তোমার স্পর্শ পেলাম.
জানতাম না সেই ঘৃনাই ফিরে আসবে।
শত্রু ছিলাম তুমি আমি,
জানি এখনো তোমার কাছে শত্রুই আছি,
কিন্তু এদিকে আমি তোমায় #ভালোবেসে_মরেছি🍂❣
অর্নি বলে ওঠে,
-যে কয়জন ছিল আপনার সাথে হাত মিলিয়ে, সব কটাকে টপকে দিয়েছি,আপনাকেও টপকাতাম। পরে দেখলাম যেহেতু আপনি এই গেইমের মাস্টারমাইন্ড সেহেতু আপনাকে একটু অন্যরকমভাবে মারি,তাই এসব প্লান আরকি।অনেক খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি দ্যা গ্রেট মিস্টার শায়েখ অর্নব ওই ভার্সিটিতে জয়েন করেছে। সো আমিও আর কি, ভেবে চিন্তে সিলেট থেকে সোজা চলে এলাম এখানে। সেদিন বেচারি ইফফাত আমায় শপিং মলে দেখে তো চিনেই ফেলেছিল।বাট ব্যাড লাক।বেচারি আমার ওপর নজর রাখার আগেই দুনিয়া থেকে বিদায় নিল।
‘নাহ ম্যাম ও মরে নি।কোমায় রয়েছে’
পাশে থাকা ছেলেটি বলে ওঠে।
-ওহহ মরেনি?।তাও ভালে।একটা পাপ কমে গেল তাইনা।আচ্ছা বাদ দেই,তারপর আপনার সাথে ওসব মন খারাপের নাটক,পিয়াসের মৃত্যুতে ইমোশনাল হওয়ার নাটক,পা ভাঙ্গার নাটক।ওহ গড৷ এত প্রবলেমস আমার লাইফে কখনো ফেস করি নি যতটা এই ঢাকাতে এসে করতে হয়েছে। আচ্ছা যাই হোক,এখন কি করা উচিত আমার?
অর্নব হাটু গেড়ে বসে পড়েছিল। ওর মুখের কাছে এসেই এসব কথা জিজ্ঞেস করছে অর্নি।
অর্নির গলাটা হঠাৎ করে চেপে ধরে অর্নব।এরপর বলে,
-হাও ডেয়ার ইউ টক টু মি লাইক দ্যাট। আই ডোন্ট কেয়ার ইউ। বাট ওয়ান থিং,আই লাভ মিহু। ওকে আমি নিজের করে ছাড়বোই। তাতে তোকে রাস্তা থেকে সরাতে চাইলে তাই করবো। মাইন্ড ইট।
পাশে থাকা ছেলেরা অর্নবকে ধরে কিল ঘুষি মারতে শুরু করে। অর্নি নিজেকে সামলে নিয়ে ছেলেগুলোকে থামতে বলে।
-ডোন্ট ক্রস ইওর লিমিট সো কল্ড শায়েখ অর্নব। আপনাকে মারতে৷ মার এক সেকেন্ড সময় লাগবেন। (তুরি বাজাতে বাজাতে)কিন্তু আমি সেটা করবোনা।আমি তো আপনাকে তিলে তিলে মারবো। ঠিক যেমনটা আমায় মেরেছিলেন।নাও ইটস মাই টার্ন। ইউ ওয়েট এ্যান্ড সি।।
পাশে থাকা ছেলেটির থেকে সানগ্লাসটি নিয়ে চোখে গুজে উল্টো পথে হাটা দেয় অর্নি। অর্নির মাঝের মিহু আস্তে আস্তে শেষ হতে থাকে।
.
অর্নব উঠে দাড়ায়। এবং চিৎকার করে বলে,
-আই লাভ ইউ মিহু।আই লাভ ইউ। আমার কোন আফসোস নেই। আমি মরেছি। আমি তোমায় #ভালোবেসে মরেছি মিহু। ইউ আর মাইন।
____________
বড় সেই আলীশান বাংলোর সবচেয়ে দামী কামরাটা অর্নির।বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটা জেলাতেই ওর বাবা একটা করে এমন আলীশান বাংলো করে গেছেন।কারন সারা বাংলাদেশে ওনাদের কোম্পানির শাখা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
বিছানার এককোনে বসে অর্নি চোখের জল গড়াচ্ছে আনমনে। প্রতি রাতেই সে এমনটা করে। তবে আজ কষ্টটা একটু বেশি। কেন সে তা নিজেও জানেনা।তবে মন ভাঙ্গার কষ্ট কি তা সে যানে। তাই তো অর্নবকে এমন একটা শাস্তি দেওয়ার প্লান করেছিল সে।
______
পরদিন ভার্সিটিতে অর্নি সেই আগের রুপে যায়। মিহু রুপে।
ক্লাসের দরজার কাছে গিয়ে ঢুকতে যাবে তখনি একটা হাত ওর হাতটা চেপে ধরে টানতে টানতে স্টোর রুমে নিয়ে চলে যায়। ঘটনার আকস্মিকতায় কে মিহুকে ওভাবে টানছে তা দেখতে পায়না সে।
যতটা সম্ভব হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করলেও ছাড়াতে পারেনা।
স্টোর রুমটা এমনিতেই অন্ধকার। তারওপর সেই ব্যক্তিটি দরজা লাগিয়ে দেয়।
আস্তে আস্তে মিহুর অনেকটা কাছাকাছি চলে আসে সে এরপর হাতটা মিহুর হাতে স্লাইড করতে……..
.
.
.
.
#চলবে___
.
.