ভালোবেসে মরেছি পর্ব-১৪

0
1509

#পর্ব_১৪
গল্পঃ #ভালোবেসে_মরেছি🍂❣
writer: #Ashura_Akter_Anu
__________________
হাতে স্লাইড করতে করতে এক পর্যায়ে ঠোঁটে চলে যায় হাতের আঙ্গুল গুলো।আঙ্গুল দিয়ে ঠোট চেপে ধরে সামনে থাকা ব্যক্তিটি বলে,

-ডোন্ট ওয়ারি,তোমায় কিছু করবোনা। আর এমনিতেও আমাদের বিয়ের তো আর বেশি দেরি নেই। সো এটুকু ধৈর্য তো ধরতেই পারি তাইনা?

মিহুর আর বুঝতে বাকি নেই যে সে কে।মুখের ওপর থেকে এক ঝটকায় হাতটি সরিয়ে অর্নবের গাল বরাবর কষে একটা থাপ্পড় মারে মিহু। নিজেকে অর্নবের থেকে কিছুটা দুরে নিয়ে গর্জিত কন্ঠে বলে ওঠে,

‘হাও ডেয়ার ইউ টু টাচ মি?আপনি যে একজন ভিলেন তা আগেই জানতাম বাট ক্যারেক্টারলেস তা জানতাম না। ছি!আর বিয়ে?হাহ কি ভেবেছেন, আপনাকে আমি জীবনে বিয়ে করবো?নাহ জীবনেও না।আপনি ভাবলেন কিভাবে এই অর্নি আপনাকে বিয়ে করবে । ‘

চরটা ও বাকি কথাগুলো সহ্য হলেও ক্যারেক্টারলেস কথাটা অর্নব সহ্য করতে পারলো না।মিহুর গলাটা চেপে ধরে এক টানে নিজের একদম কাছে এনে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে চেপে ধরলো।গলাটা এতটা জোরে ধরায় মিহু অনেকটা কষ্ট পাচ্ছে।।।

অর্নব ওকে উদ্দেশ্য করে বলল,

-ক্যারেক্টারলেস না?এখন যদি এই ফাঁকা রুমে তোর কোন ক্ষতি করি তাহলে কেউ কিছুই টের পাবেনা বুঝলি?তোর সাথে পারলে অনেক খারাপ করতে পারতাম কিন্তু করিনি। কেন জানিস?কারন তোকে ভালোবাসি। তোর তো ধারনাও নেই আমি তোকে কতটা ভালোবাসি। যদি ধারনা থাকতো তাহলে এমন কথা বলতে পারতি না।বাকি রইল বিয়ের কথা তাহলে শোন, কি মনে করেছিস তোর ধোকা দেওয়ার পর আমি দেবদাস হয়ে বসে থাকবো?কক্ষনো না। এই শায়েখ অর্নবকে এক ইঞ্চিও তুই চিনিসনি। তোর বিয়ে একমাত্র আমার সাথেই হবে। তুই যেখানেই থাকিস সেখান থেকেই তোকে খুজে এনে আমার বউ বানাবো। আর সেটা খুবই তাড়াতাড়ি হবে। মনে রাখিস।
মিহুর গলা ছেড়ে দেয় অর্নব।মিহু মনে হয় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসলো। গলাটা ধরে জোরে জোরে প্রশ্বাস নিচ্ছে ও। আর মনে মনে হাজারটা গালি দিচ্ছে অর্নবকে।

অর্নব আবারও বলে,
‘তোকে এখানে নিয়ে আসার একটা কারন ছিলো।
(বলেই স্টোর রুমের লাইট অন করে দিল)

সাথে সাথেই রুমটায় হাজার হাজার টিপটপ লাইট জ্বলে উঠল। সাথে অনেক বেলুন ও সাইডে টেবিলে রাখা একটা কেক ও চাকু।

মিহু এসব দেখে সামান্য ভ্রু কুচকালো।মনে মনে বললো,(এ কিভাবে জানলো আজ আমার বার্থডে)
অমনি অর্নব মোমবাতি জ্বালাতে জ্বালাতে বললো,

-অত না ভেবে এসে কেকটা কাট।সার্টিফিকেটে তোমার বার্থ ডেট দেখেছিলাম। আর হ্যা এখন এই কেক না কাটলে আমি তোমায় কেটে ফেলবো(ছুরিটা দেখিয়ে)

মিহু আর দেরি না করে কেক রাখা টেবিলটার পাশে গিয়ে দাড়ায়। ওর কাছ অসহ্য লাগলেও কিছুই করার নেই। কারন এখন ওর আশেপাশে কেন গার্ড নেই। এমন তেমন করলে যদি সত্যিই মেরে দেয়?

কেকটা কেটে অর্নব মিহুকে একটুখানি খাইয়ে দিল। খেতে না চাইলেও অর্নব জোর করে মুখে পুরে দিল ।

এরপর মিহু চলে যেতে চাইলে আবারও অর্নব ওকে চেপে ধরে ও ঘাড়ে মুখ গুজে দেয়। অর্নবের এতটা কাছাকাছি এসে মিহুর সমস্তে শরীরে একটা কারেন্ট বয়ে যায়। নিজেকে অর্নবের থেকে দূরে সরাতে চাইলে সে নেশা ধরানো সুরে বলে,

”তুমি কি বুঝতে পারছোনা তোমার মাঝে কতটা ডুবে গেছি আমি। এতটা যে সাঁতরে আর কিনারা পাচ্ছিনা।।তুমি কি বুঝবেনা?”

পকেট থেকে একটা ডায়মন্ড পাথরের লকেট ওয়ালা চেইন বের করে মিহুর গলায় পরিয়ে দেয় মিহুকে।

পেছন থেকেই মিহুর মাথায় একটা চুমু একে দেয় অর্নব। মিহু হালকা ছুট পেয়ে তাড়াতাড়ি সেখান থেকে বেরিয়ে যায়।

অর্নব সেখানে নিচ দিকে তাকিয়ে দাড়িয়ে থাকে। ওর কপালের সামনে আসা অবাধ্য চুলগুলো খেলা করতে থাকে। ওর মনে একটাই ভাবনা,মিহুকে ও পাবেই তবে ভালোবেসে,জোর করে নয়।

___________________
রুমে বসে একটা কথাই ভাবছে অর্নি,
ভালোবাসা মাই ফুট। সব ওর প্লান।আমি কি বুঝিনা?সব বুঝি। ওকে আগেও চিনেছি। এখন আবার নতুন করে চিনতে হবে?নাহ। এ ভুল আমি কখনোই হতে দেবনা।

এর মাঝে অর্নির রুমে ওর চাচী বিনা পারমিশনে ঢুকে পরে।অর্নির কাছে এসব বিসয় খুবই বিরক্তিকর।

কারও রুমে নিশ্চয়ই বিনা পারমিশনে ঢোকা উচিত নয়। তাই রেগে ওর চাচীকে বলে,

-ছোটমা আপনাকে কতবার বলেছি, বিনা পারমিশনে কারও রুমে না ঢুকতে।

ওর চাচী এ কথাটা শুনে বেশ রাগ হয়। তবে কিছু বলেনা।

-এখন বলুন?কেন আসতে হলো?

-তোর ছোটআব্বু তোকে ডাকছিল। তাই
[অর্নি অন্য কারও কথা বা আদেশে মানলেও ওর ছোটআব্বুকে ভীষন মানে। উনিও অর্নিকে ছোটবেলা থেকেই অনেক ভালোবাসে। ]

অর্নি কথাটি শুনে বলে
‘ওহ ঠিকআছে, আপনি যান আমি দূ মিনিটের ভেতর আসছি’

.
কিছুক্ষণ পর অর্নি ওর ছোটআব্বুর রুমের সামনে গিয়ে দরজায় নক করে,ভেতর থেকে আওয়াজ আসে,

-দরজা খোলা আছে মামনী, এসো।

হাসিমুখে ভেতরে প্রবেশ করে অর্নি। বিছানায় চাচার পাশে গিয়ে বসে সে।
একটা মুচকি হাসি দিয়ে চাচাকে উদ্দেশ্য করে বলে,

-আমায় ডেকেছিলে ছোটআব্বু?

-হুম,একটা জরুরী দরকারে ডেকেছিলাম তোমায়।

-জরুরি দরকার?কি দরকার?(মুচকি হেসে)

-মামনী তোমায় কিছু কথা বলি, আমার কথায় রাগ করোনা,আমার বড় ভাই মানে তোমার বাবা আমার কাছে দায়িত্ব রেখে গেছিলেন তোমার। তোমার সবকিছুই আমি দেখি। এখন দেখো তুমি বড় হয়েছ,তোমার গ্র্যাজুয়েশনও কমপ্লিট, আর বিজনেসের দায়িত্বও সামলাও৷ কিন্তু মামনী এ সবকিছুর আগে তুমি একটা মেয়ে। আর মেয়েদের স্বাবালিকা হওয়ার পর পিতার একটা বিশেষ দায়িত্ব মেয়ের জন্য ভালো পাত্র খোজা। এখন দেখ তোমার জন্য এমনিতেই ভলো পাত্রের লাইন লেগে যাবে। কিন্তু তোমার এতে আগে রাজি হওয়া উচিত তাইনা?তাই আমি ভেবেছি আমারও বয়স হয়েছে। ভাইজানের মত চলে যাওয়ার আগে আমি তোমার বিয়ে দিতে চাই।

অর্নির নিজের চাচার কাছথেকে শোনা কথাগুলো ততটা খারাপ লাগেনি। তবে বেশ ভালোও লাগেনি।

তাই হালকা হেসে চাচার উদ্দেশ্য বলল,

-ছোটআব্বু,আমি জানি তুমি আমায় ভালোবাসো,আমার কেয়ার কর। আমি যে বিয়ে করবোনা কথা সেটা নয়। কথা হলো এটা যে,আমি মাত্রই গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করলাম। এসব নিয়ে এখনও ভাবিনি আমি। তাই আমার আরও সময় দরকার। তবে হ্যা আমি তোমায় প্রমিস করছি, আমি খুব শিঘ্রই তোমায় নিজেই পাত্র খুজতে বলবো।বুঝলে?
অর্নির চাচা মেয়ের এমন কথায় মুচকি হেসে দিল। এরপর অর্নির মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল,

-আচ্ছা মামনী,তুৃমি যেটা ভালো বোঝো।
______
ঘুমোতে যাবে ঠিক এমন সময় অর্নির ফোনে একটা মেসেজ আসলো।

”একটু ব্যালকনিতে আসলে মন্দ হতো না”

ফোনটা বিছানায় ছুড়ে দিয়ে গিয়ে ব্যালকনিতে গিয়ে অনেকটা রাগীভাব নিয়ে দাড়ায় ও।।।

ও দেখে বাড়ির দেয়ালের ওপাশে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে সাদা টি-শার্ট ও লাল থ্রি কোয়ার্টার প্যান্টে হাতে হাত গুজে অর্নব দাড়িয়ে আছে। অর্নির সাথে চোখাচোখি হতেই অর্নব একটা চোখ মারে৷ পকেট থেকে ফোনটা বের করে কল দেয় অর্নিকে।

ও কল ধরলে বলে,

ওরনা ছাড়া বেশ ভালো মানায় তো তোমায়।
(বলেই একটা ……..
.
.
.
.
#চলবে___
.

.
.
★Sorry 🙏 লেইট করে ফেলছি😁★
হ্যাপি রিডিং

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here