ভালোবেসে মরেছি পর্ব-২০

0
2059

#পর্ব_২০
গল্পঃ #ভালোবেসে_মরেছি🍂❣
writer: #Ashura_Akter_Anu
____________________________
”ভালোবাসি ভালোবাসি,আপনাকে অনেক ভালোবাসি। এবার যে আমিও মরেছি আপনার ভালোবাসায়। কি আছে এই ভালোবাসা নামক শব্দটাতে?অন্য জগতের সুখ দেয়। অন্যরকম অনুভুতি জাগায়। আচ্ছা আপনাকে তো আমি পছন্দ করতাম না, তাহলে ভালোবাসলাম কি করে বলুন তো?”

‘কি বলো তো অর্নি, ভালোবাসা জিনিসটাই এমন।অপছন্দকেও প্রিয় বানিয়ে দেয়। ‘

‘হ্যা, আমারও তাই মনে হচ্ছে।’

‘আমিও তোমায় অনেক ভালোবাসি মিহু,তোমায় নিজের কাছে আগলে রাখতে চাই, আরও বেশি ভালোবাসতে চাই তোমায়।তুমি কি আমায় সে সুযোগ করে দেবে?’

”কেন দেবনা?আমিও যে আপনাকে ভালোবাসি,সারাটা জীবন আপনার সাথে একসাথে কাটাতে চাই। ‘

বলেই অর্নবকে জড়িয়ে ধরে অর্নি

,সাথে সাথে একটা গুলির আওয়াজ হয়।

চমকে উঠে ঘুম থেকে জেগে শোয়া থেকে বসে পড়ে সে। রুমে এসি থাকা সত্বেও ঘেমে উঠেছে সে। এমন স্বপ্ন? মানে কি ছিল এমন স্বপ্নের? আর ওই গুলির আওয়াজ?সবকিছু কি বোঝাতে চাচ্ছিল?

সবকিছু মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে ওর। কাল রাতে ওই লোকটাকে মারার সাইড এফেক্ট হয়তো এটা ছিল।

অবশ্য একটা জিনিস ভেবে সে মুচকি হাসছে,অর্নবকে সে স্বপ্নের মাঝে ওভাবে,, ইশশশ ভাবতেই লজ্জা লাগছে।

সব চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে ওয়াশরুম গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসে।

রেডি হয়ে রুমের বাইরে পা রাখে। নিচতলার ড্রয়িংরুমে বসে ওর চাচা ও চাচি চা খাচ্ছিল ও খবর পড়ছিল। তখনিই অর্নিকে সিঁড়ি দিয়ে নামতে দেখে চমকে ওঠে। হাত থেকে খবরের কাগজ রেখে উঠে এসে জিজ্ঞেস করে,

–কিরে মা, কখন এলি তুই?আর আমাদের জানাসনি?

–ছোটআব্বু কাল অনেক রাত করে ফিরেছি, তাই আর তোমাদেরকে ডাকিনি।

–ভালো করেছিস মা।তা তুই সুস্হ আছিস তো?আসতে কোন অসুবিধে হয়নি তো?

–না, কোন সমস্যা হয়নি ছোটআব্বু। তুমি ঠিক আছো তো?

–হ্যা আমার আবার কি হবে,আমি ঠিক আছি।

–ছোট আব্বু আমি তোমায় একটা কথা বলতে চাচ্ছিলাম।

–কি কথা মা?(চিন্তিত সুরে)

–তুমি কিছুদিন আগে বলেছিলে না বিয়ের ব্যাপারে,?

–হ্যা বলেছিলাম, তুই কি কাউকে?(হাসিমুখে)

–হ্যা, আমি একজনকে ভালোবাসি,এবং তাকেই বিয়ে করতে চাই।

–এটাতো অনেক ভালো কথা। তুই তো আগে বলবি?আমি আজই তোদের এনগেজমেন্ট করে রাখতাম। তা কে সে?

–এত তাড়াতাড়ি নয়, তবে দেরিও করবোনা, আর সব জানবে,আমহ আজই তাকে এ ব্যাপারে বলবো।

–আচ্ছা মা,তুই আমায় ছেলেটির সাথে দেখা করাস।আমিও দেখতে চাই কে আমার অর্নি মায়ের মন জয় করলো।

অর্নি হাসিমুখে নিজের রুমে চলে যায়। এদিকে ড্রয়িংরুমেই একজন প্রচন্ড ক্ষোভ নিয়ে আছে। অর্নির ভালোবাসা নয়, হয়তো অন্য কোন কারনে।

_______
নদীর তীরে পা ভিজিয়ে সাদা চুরি দার এ নদীর দিকে তাকিয়ে আছে। এমন একটা দিনের আশা ছিল ওর। অনেক দিন আগে পূরন হতে চেয়েও হয়েছিল না।
তবে আজ পূরন হতে চলেছে। অর্নব এসে গাড়িটি থামিয়ে সোজা নদীর পাড়ে গিয়ে দাড়ায়। দেখে মনে হচ্ছ মনটা ভীষন খারাপ ওর। হালকা নীল রংয়ের শার্ট ও অ্যাস কালারের প্যান্টে দারুন লাগছে অর্নবকে দেখতে। অর্নিও আজ মিহুর রুপে এসেছে।

ভালোবেসে ফেলেছ অর্নবকে সেটা ওর কাছে অজানা নয়। এবার দেরি না করে বলে দেওয়াটাই শ্রেয় বলে মনে হচ্ছে অর্নির। পানিতে পা নাচিয়ে নাচিয়ে খেলা করছে দেখে অর্নবের ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে ওঠে।
পেছন থেকে ডাক দেয়,

–অর্নি?

নামটি শুনে হালকা খারাপ লাগে অর্নির। কারন ও চেয়েছিল আজ ওকে মিহু বলে ডাকুক অর্নব। তবুও এমন একটা অনুভুতি মেশানো সন্ধ্যায় অন্য কিছু না ভেবে পেছনে ফিরে তাকায় অর্নি।

অর্নবকে আজ কেমন অগোছালো লাগছে ওর।

পোশাকে পরিচ্ছদে পরিপাটি হলেও চেহারা দেখে বেশ বিষন্ন মনে হচ্ছে ওর।

–অর্নব?আপনি কি ঠিক আছেন?

এই প্রথম নিজের নাম ভালোবাসার মানুষটির মুখে শুনে বুকে সুখের হাওয়া বয়ে গেল।

–হ্যা আমি ঠিক আছি।

–আপনিও বুঝতে পারছেন আমি আপনাকে কেন এখানে ডেকেছি।

–নিশ্চুপ

–অর্নব, আমি আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি।ভালোবাসার অনুভুতিতে আমিও তলিয়ে যাচ্ছি।একটা সুখের আভাস পাচ্ছি আমি। আপনাকে ভালোবেসে। আপনি কি আমায় আপনাকে আরও ভালেবাসার সুযোগ করে দেবেন?

অর্নব কিছু না বলে শুধু মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়।
অর্নি আর কিছু না বলে দৌড়ে এসে অর্নবকে জড়িয়ে ধরে। অর্নবের চোখের কোন বেয়ে একফোটা জল গড়িয়ে পড়ে।

হঠাৎই গুলির আওয়াজে নদীর তীরে বসা বক পাখিগুলো উড়ে যায়। অর্নব আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে অর্নিকে।

তবে…..!?

অর্নির হাত হালকা হয়ে আসে। অর্নি হেলে পড়ে যায়।

এদিকে কান্নামাখা চোখে অর্নব ওকে পড়ে যেতে নিলেই ধরে ফেলে। অর্নির সাদা চুড়িদারটি লাল রক্তে মাখামাখি হয়ে গেছে। অর্নবের দিকে তাকিয়ে অর্নি শেষোক্ত একটা কথা বলে,
“আমি তো সত্যিই #ভালোবেসে_মরেছি🍂💔
অর্নির চোখের কোন বেয়ে একফোটা জল গড়ায়।

আস্তে করে নদীর তীরে অর্নিকে শুইয়ে দিয়ে হাতে থাকা রিভলবারটি নদীতে ছুঁড়ে মারে অর্নব। এরপর অর্নির কপালে আলতো একটা চুমো একে দিয়ে গাড়িতে করে চলে যায়।

অর্নি সেখনেই পড়ে থাকে।

একজোড়া চোখ এতক্ষন সবকিছু পরখ করছিল। অর্নব চলে গেলে একটা শয়তানি হাসি দিয়ে সেই চোখজোড়ার মালিকও চলে যায়।
.
.
.
#চলবে___

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here