ভোরের_আলো শেষ পর্ব-

0
1873

#ভোরের_আলো
৬১.

– আমার ভালোবাসা সত্যিই কি তুমি বুঝতে পারো?
– হুম পারি। এজন্যই তোমার পিছু ছাড়ি না।
– বুঝোই যেহেতু তাহলে আমাকে ভালোবাসো না কেনো?
– কে বললো ভালোবাসি না?
– তোমার মনে তো অন্য কেও বাস করে।
– করতো। সেই ঘর থেকে তাকে বের করে দিয়েছি সেই কবেই৷
– তাহলে সেদিনও যে ওকে বাসায় আনলে?
– আমি জানি না অর্পিতা৷ ঐ কাজটা কেনো করেছি আমি নিজেও বুঝে পাইনা৷
– ভালোবাসা ছাড়া কি কারো গায়ে হাত দেয়া সম্ভব?
– যারা প্রস্টিটিউট তারা তো ভালোবাসা ছাড়াই যার তার সাথে শুয়ে পড়ছে। আবার যারা তাদের কাছে যায় তারা নিশ্চয়ই ভালোবেসে তাদেরকে স্পর্শ করে না। তাদের মাঝে কখনোই কোনো ধরনের ইমোশনাল এটাচমেন্ট থাকে না৷
– তুমি কি বুঝাতে চাচ্ছো রাত্রি আর তোমার রিলেশনটা সেরকম কিছু?
– হুম অনেকটা।
– তোমার গার্লফ্রেন্ড তো প্রস্টিটিউট না।
– কোনো অংশে কমও না। ও শুধুমাত্র টাকার জন্য আমার কাছে আসতো। আর ওকে টাকার লোভ দেখিয়ে বিছানা পর্যন্ত এনে আমি শান্তি পেতাম। যেই মেয়ে টাকার জন্য আমাকে ছেড়ে আমার ভাইয়ের কাছে চলে গিয়েছিলো সে এখন সেই টাকার লোভেই আমার সাথে বিছানা পর্যন্ত চলে আসে। আর সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে ওর হাজবেন্ড এসব জানে। অদ্ভুত শান্তি লাগতো আমার এগুলো দেখে।
– এখন সে কোথায়?
– রাত্রি?
– হুম? ওর সাথে যোগাযোগ হয় না?
– নাহ্।
-সত্যিই হয় না?
– উহুম। ওসব ছেড়ে দিয়েছি।

একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাহিরের দিকে তাকালো অর্পিতা। অর্পিতার দিকে তাকিয়ে আছে আশফাক। টুলটা টেনে এনে খানিকটা কাছে এগিয়ে এসেছে সে। অর্পিতার হাতটা টেনে বুকের কাছে নিয়ে এলো। ঘাড় ঘুরিয়ে আশফাকের দিকে তাকালো অর্পিতা।

– ভালোবাসি অর্পিতা। অনেক বেশি ভালোবাসি। আমার ভালোবাসায় নূন্যতম খাঁদ নেই। জানি অনেকবড় অন্যায় করেছি। ক্ষমা পাওয়ার যোগ্যতা আমার নেই৷ তবু ক্ষমা চাচ্ছি। আমাকে ক্ষমা করে দাও।
-..……………..
– আমার ভালোবাসা কি একদমই অনুভব করতে পারো না?
– পারি। তবে দ্বিধায় থাকি।
– কিসের দ্বিধা?
– যদি আবারও ধোঁকা দাও?
– সব হারিয়ে তোমাকে পেয়েছি। একটু সুখের খোঁজ পেয়েছি। তখন যেটা করেছিলাম না বুঝে করেছিলাম। এখন তো বুঝতে পারি। বুঝেশুনে নিশ্চয়ই নিজের সুখটুকু শেষ করবো না৷ আমার দিকটা একটু বিবেচনা করো তো? কি আছে আমার? কিছু আছে? নেই তো। তোমার তো সব আছে। জীবনে কোনো অপ্রাপ্তিও ছিলো না। তুমি দেখতে সুন্দরী, শিক্ষিত, ভালো ফ্যামিলিতে জন্ম নিয়েছো। তোমার বয়সও তো কম। কিসের অভাব তোমার? কোনো কিছুর অভাব নেই। আমার মত একজন আশফাক তোমার জীবন থেকে চলে গেলে কিছুই আসবে যাবে না। কিন্তু আমার তো একটাই তুমি। আমার ভেতরটা ভেঙে টুকরো হয়ে গেছে সেই কবেই৷ এতখানি ভাঙা টুকরায় কেও হাত দিবে না কখনো। আমার সব জেনে কেও আসবে না আমার হাত ধরতে৷ যারা আসবে টাকার জন্য আসবে। তোমার মত করে কেও কখনো ভালোবাসবে না। আর আমি নিজে চাইলেও কাওকে ভালোবাসতে পারবো না৷ এমন যদি হতো তুমি স্বেচ্ছায় আমার জীবন থেকে চলে যেতে চাচ্ছো সেক্ষেত্রে মেনে নিতাম। কিন্তু তুমি চলে যেতে চাচ্ছো আমার দোষে৷ এতগুলো বছর পাগলের মত যা খুঁজে বেরিয়েছি সেটা পাওয়ার পর আমার দোষে আমি হারিয়ে ফেলছি এটা কি সহ্য করার মত কোনো বিষয়? সহ্য হবে না তো আমার। তুমি আমার জীবন থেকে চলে গেলে আদৌ কি বেঁচে থাকতে পারবো? মারা যাবো আমি অর্পিতা। আমি পারবো না তোমার দূরে সরে থাকাটা মেনে নিতে৷
– দূরে কোথায়? তোমার সাথেই তো আছি।
– সাথে আছো। কাছে তো নেই৷ মনের দিক থেকে কতটা দূরে চলে এসেছো। মানতে পারি না আমি অর্পিতা। কষ্ট হয় আমার। আমি বলছিনা আমাকে ক্ষমা করে দাও। যে অন্যায় করেছি সেটা চাইলেই তুমি ক্ষমা করতে পারবে না৷ তোমার মন তোমাকে সায় দিবে না। শুধু বলবো নিজেকে প্রমান করার একটা সুযোগ দাও। তোমার সমস্ত অভিমান, কষ্টগুলো মুছে দেয়ার একটা সুযোগ দাও। যদি কখনো দেখতে পাও আমি তোমাকে আবারো ধোঁকা দিচ্ছি তাহলে চলে যেও আমার জীবন থেকে। আমি তোমাকে আটকাবো না কথা দিচ্ছি।
-…………………
– একটাবার আমাদের সন্তানের কথা ভাবো। আমি চাইনা আমাদের মাঝে দূরত্ব দেখে ও বড় হোক। বাবা মায়ের দূরত্ব সন্তানের উপর কতটা বাজে প্রভাব ফেলে তা তুমি জানো না। আমি নিজে এই অবস্থার ভুক্তভোগী ছিলাম। আমি চাইনা আমার মত করে আমার সন্তানও কষ্ট পাক। একটু সুখ আর স্বস্তি চাই আমি। আর কিছু চাইনা তোমার কাছে। একটুখানি স্বস্তির জন্য বারবার তোমার কাছে ছুটে আসি। প্লিজ অর্পিতা আর দূরত্ব রেখো না। একটা সুযোগ আমাকে দাও। এটলিস্ট বাচ্চার কথা ভেবে হলেও একটা সুযোগ তো দাও।
– আমি বাসায় যাবো।
– বিরক্ত হচ্ছো তাই না? ভাাবছো আবারও মিথ্যা কথা বলছি?
– আমি সেটা বলিনি৷ দেখো অলরেডি তোমাকে নিয়ে খুব বেশি দ্বিধায় আছি। তোমার এখনকার কথাগুলো আমাকে আরো দোটানায় ফেলে দিচ্ছে। অস্থির লাগছে খুব। আমার বাসায় যাওয়াটাই ভালো হবে।
– হুম,,,,, তুমি বের হও। আমি চাবি নিয়ে আসছি।

বাবা মায়ের ঘরের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে অর্পিতা৷ খাটে বসে আমজাদ সাহেব গভীর মনোযোগে ক্যালকুলেটরে কিছু একটা হিসাব করছেন। দরজার সীমানায় দাঁড়িয়েই বাবাকে প্রশ্ন করলো,

– আব্বু, একটু সময় হবে?

হিসাব ছেড়ে মেয়ের দিকে তাকালেন আমজাদ সাহেব। মেয়ের চেহারার ভাঁজে অস্থিরতার প্রতিচ্ছবি স্পষ্ট ভেসে উঠেছে। হাত থেকে ক্যালকুলেটর রেখে মেয়েকে বললেন,

– আয় না! ভিতরে আয়। ওখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছিস কেনো?

ঘরে ঢুকে বিছানায় পা তুলে বসলো অর্পিতা। বললো,
– তুমি মনে হচ্ছে ব্যস্ত তাই আরকি…..
– ব্যস্ত হলে হয়েছি৷ তাতে কি? তোর সাথে আমার ব্যস্ততার কোনো যোগাযোগ নেই।
– কতদিন হয়ে গেলো তোমার সাথে বসে একটু কথা বলিনা। আমরা বেশ দূরে চলে এসেছি তাই না আব্বু?
– দূরে কই? বাবা তো আছিই সবসময়। এতদিন তোর বিয়ে শাদী নিয়ে ঝামেলা ছিলো তাই হয়তো তোর সাথে বসে একটু আলাদা কথা বলা হয়নি৷ এই তো….. দূরত্ব তো আসেনি।
– আব্বু আমি একটু এখানে শুই? আমার মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দিবে?
– আয়, আমার কোলে মাথা রাখ।

বাবার কোলে মাথা রেখে চুপচাপ শুয়ে আছে অর্পিতা৷ মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন আমজাদ সাহেব। মেয়ের মনে হাজারটা প্রশ্ন ছুটোছুটি করছে সেটা বেশ ভালোই বুঝতে পারছেন তিনি৷ অনেকটা সময় চুপচাপ কাটানোর পর আমজাদ সাহেব জিজ্ঞেস করলেন,

– কোনো সমস্যা অর্পি?
-……………
– বাবাকে নির্দ্বিধায় বলতে পারিস।
– খুব দোটানায় আছি আব্বু।
– আশফাককে নিয়ে?
– হুম।
– কেমন?
– ও কি সত্যিই আমাকে ভালোবাসে?
– নিঃসন্দেহে।
– তাহলে ওরকম করলো কেনো?
– যা ঘটে গেছে তা কি আমরা কেও বদলাতে পারবো? অতীত নিয়ে যত ঘাটাবি ততবেশি কষ্ট পাবি।
– আমি যে ভুলতে পারিনা।
– চেষ্টা করতে হবে।
– আশফাক বারবার আমার কাছে একটা সুযোগ চাচ্ছে৷ আজকে বাচ্চার কথা বলছে৷ আমাদের সম্পর্ক যদি এমনই থাকে তাহলে নাকি বাচ্চার উপরও প্রভাব পড়বে।
– তা তো পড়বেই।
– আব্বু আমি তো কখনো চাইনি আমাদের সম্পর্কটা এমন হয়ে যাক
বা আমি কখনো কল্পনাও করিনি সম্পর্ক একদিন এই পর্যায়ে এসে দাঁড়াবে।
– কেউই কখনো চায় না তার ভালোবাসা এভাবে নষ্ট হয়ে যাক। প্রতিটা মানুষের জীবনে কিছু না কিছু ঘটে যার প্রেক্ষিতে সম্পর্কগুলো নষ্ট হয়ে যায়। ভালোবাসার উপর ঘৃনা নামের পর্দা পড়ে যায়। আশফাক তোকে ভালোবাসে সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ রাখিস না। তোর বয়স এখনও অনেক কম। জগতের অনেক কিছু তোর অজানা৷ তোর মায়ের সাথে আমার, তোর চাচ্চুর সাথে ছোট মায়ের সম্পর্ক ভালো দেখে এসেছিস ছোট থেকে৷ তাই তুই ভাবিস জগতের সব সংসারের গল্পগুলো বোধহয় রেশমি সুতোর মত মসৃন৷ এমনটা হয় না। কিছু সংসারের গল্প খুব খারাপ হয়। আমার পাশের দোকানের মালিকের মেয়ে আছে একটা৷ পালিয়ে বিয়ে করেছিলো দুজন। মাস দুই তিনেক সংসার করেছে। এরপর জানা গেলো মেয়েটা প্রেগন্যান্ট। খবর শুনে ছেলে সাফ গলায় বলে দিলো এখনই সে কোনো বাচ্চার দায়িত্ব নিতে পারবে না। বাচ্চা এ্যাবর্ট করানোর জন্য মেয়েটাকে বললো। মেয়ে করাবে না। এগুলো নিয়ে অনেক কথা বাড়লো৷ শেষমেশ মেয়েটা বাবার বাড়ি এসে পড়লো। এখানেই বাচ্চাটা হয়েছে। পুরো পাঁচ বছর যাবৎ বাচ্চা নিয়ে বাবার বাড়িতেই পড়ে আছে মেয়েটা। বউ বাচ্চার একটা খবরও সেই ছেলে কখনো নেয় নি। সেই মেয়ে কোন এক ফার্মে জব করে। বাচ্চার আর নিজের খরচ সেই চালায়৷ বাবার কাছ থেকে এক টাকাও নেয় না। তোর ছোট ফুফুর ননদের কথা বলি। ওর হাজবেন্ডের বাহিরে মেয়ে মানুষের নেশা ছিলো৷ এখনও আছে৷ আমরা সবাই জানি এসব৷ তোর ঐ আন্টিও জানে। এসব নিয়ে যখন আমরা বিচার বসালাম তখন ঐ লোক একবাক্যে বলে দিলো আমি এমনই। আপনাদের মেয়ে রাখলে রাখবেন, না রাখলে নাই৷ আপনাদের বোনের দুই বাচ্চাসহ তাকে আপনারা নিয়ে যেতে পারেন। তোর আন্টি আর কোনো শব্দ করেনি। বাচ্চাগুলোর কথা ভেবে ঐ লোকের সংসার করে যাচ্ছে আজকে চব্বিশ বছর হয়ে গেলো৷ এটা তো শুধু দুটো সংসারের গল্প ছিলো। তুই খোঁজ নিয়ে দেখবি সব সংসারেই ঝামেলা আছে। কারো কারো ঝামেলাগুলো খুব বেশিই কুৎসিত হয়৷ তবু এরা হাসিমুখে সংসার করে যাচ্ছে৷ আশফাক চাইলেই তোকে একটা বাজে রকমের হেনস্তা করতে পারতো বা বাচ্চাটাকে অস্বীকার করতে পারতো৷ কিন্তু ও তো এমন কিছুই করেনি৷ ও তোর সাথে আপোষে সংসার করতে চাচ্ছে। বাচ্চাটাকে আর তোকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাচ্ছে। সেদিন ওকে নিয়ে কবির যে আমার বাসায় আসলো, ও আমার কাছে দুই হাত জোড় করে তোকে ভিক্ষা চেয়েছিলো৷ কাঁদছিলো ছেলেটা। কান্নার জন্য ওর মুখে কথা আটকে যাচ্ছিলো। সেই মূহূর্ত্বে ওকে সত্যিই আমার ভিখারী মনে হয়েছিলো৷ ও তোকে ভালোবাসে। তোকে কখনো ও আর কষ্ট দিবে না৷ জেনেশুনে তো কখনোই না৷ কারণ ওর সুখটা তোর মাঝে লুকিয়ে আছে৷ দ্বিধা বাদ দে অর্পি৷ দ্বিধায় থেকে সামনের সুন্দর দিনগুলো নষ্ট করিস না। একটা সুযোগই তো৷ খুব বেশি কিছু তো না। দিয়েই দেখ। সুযোগ দেয়ার পর যদি মনে হয় আবারও ভুল করেছিস তাহলে বলবো বাবার ঘরের দরজা তো খোলা আছেই৷ তোর বাচ্চাসহ চলে আসবি এই বাসায়। একটা সুযোগের বিনিময়ে যদি সম্পর্কটা আবার সুন্দর হয়ে যায় তাহলে তো সুযোগ দেয়াটাই ভালো তাই না?
– হুম।
-এখনও কি দ্বিধায় আছিস?

উঠে বসলো অর্পিতা। দুচোখে তার পানি ছলছল করছে। বাবার দুহাত চেপে ধরে বললো,

– আমি জানি তোমাদেরকে আমি কষ্ট দিয়েছি খুব। আমাকে মাফ করেছো তো আব্বু?
– ধুর পাগল! তোকে আমরা নিজের চেয়েও বেশি ভালোবাসি। তোর প্রতি কি কষ্ট জমিয়ে রাখতে পারবো নাকি? তোকে নিয়ে একটু দুশ্চিন্তায় থাকি এই যা। এমন দুশ্চিন্তা হওয়াই তো স্বাভাবিক তাই না? সন্তান অস্থিরতায় দিন কাটাচ্ছে এটা তো আমাদের জন্য কোনো সুখের খবর না তুই তোর সংসার নিয়ে সুখে আছিস এটা দেখলেই আমাদের শান্তি৷ আর কিছু না৷
– ওর সাথে আমার সম্পর্কটা ঠিক হয়ে গেলে দুশ্চিন্তামুক্ত হবে?
– অবশ্যই হবো৷
– আব্বু আমার না ঘুম পেয়েছে। ঘরে যাই।
– চাইলে তুই এখানেও ঘুমাতে পারিস৷
– উহুম৷ আমার ঘরেই ঘুমাবো।

খাটে হেলান দিয়ে শুয়ে আছে অর্পিতা। চোখে একফোঁটা ঘুমও নেই। বাবাকে তখন মিথ্যা বলে নিজের ঘরে এসেছে। ঐ মূহুর্ত্বে নিজের সাথে বোঝাপড়া করাটা খুব দরকার ছিলো। সেই তিনঘণ্টা ধরে হিসেব কষেই যাচ্ছে। এদিকে হিসেব মিলছে তো অন্যদিকে মিলছে না৷ কোথাও একটা দ্বিধা থেকেই যাচ্ছে।

সকাল সাতটা,,,,,
আশফাকের বাসার কলিংবেল বাজছে৷ দরজা খুলতেই আশফাক দেখতে পেলো বাহিরে অর্পিতা দাঁড়িয়ে। চমকে গেলো সে। অর্পিতাকে জিজ্ঞেস করলো,

– তুমি এত সকালে? কার সাথে এসেছো?

আশফাকের কথার কোনো উত্তর না দিয়ে ঘরে ঢুকেই জড়িয়ে ধরলো আশফাককে। আশফাকের বুকে নাক মুখ ঘষে বললো,

– ভাইয়া বাসার নিচ পর্যন্ত এসে দিয়ে গিয়েছে৷
– ও আসেনি কেনো? কোনো সমস্যা হয়েছে?
– নাহ্। সমাধান হয়েছে। সারাটারাত কতকিছু ভেবেছি৷ নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করতে করতে অবশেষে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷ একটা সুযোগই তো? যাও দিলাম। যাকে এত ভালোবেসেছি তাকে একটা সুযোগ তো অন্তত দেয়াই যায়। কিন্তু এটাই শেষ। আর দিবো না। ঠিকাছে?

পানি ছলছল করছে আশফাকের চোখে৷ মুখ থেকে কোনো কথা বেরুচ্ছে না। জড়ো কন্ঠে একটাই উত্তর দিলো,

– হুম।
– বহুদিন হয় আমি ভালোমতো ঘুমাই না। আমার মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দিবে প্লিজ? আমি ঘুমাবো।

অর্পিতাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রেখেছে আশফাক৷ চোখের সীমানা ছেড়ে পানিগুলো বেরিয়ে আসছে৷ কাঁধের অংশের গায়ের চাদরটুকু ভিজে যাচ্ছে অর্পিতার।

-সমাপ্তি-

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here