মনের_অন্দরমহলে পর্ব ১৩
#আনিশা_সাবিহা
টিভিতে নিউজ চ্যানেলে একই খবরের ছড়াছড়ি! ঢাকার সব থেকে নামকরা বিজনেসম্যানকে জেলে তুলে ছাড়ল আয়াশ। ব্রেকিং নিউজে একটাই শিরোনাম, ‘এতোদিন ভদ্রলোকের মুখোশ পড়ে থাকা শিল্পপতি রক্তিম বাহাদুরের মুখোশ টেনে ছিঁড়ে দিল লইয়ার আয়াশ রায়হান।’
এই নিউজটা চোখ লাগিয়ে গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখছে এক রমনী। তার মুখে মুচকি মুচকি হাসি। আয়াশের ছবি মাঝে মাঝে দেখার জন্য তার মনটা তুখোড় হয়ে উঠেছে। একসময় লাফিয়ে ওঠে সে। সোফার ওপর নাচতে শুরু করে রিমোট হাতে নিয়ে। জোরে চিল্লিয়ে বলে…..
–“ইয়াহু!! মাই আইডল ম্যান ইজ গ্রেট। ইয়েস। আমি জানতাম আমার আইডল আয়াশ এমন হতেই পারেন না। উনি আজ কত বড় একটা কাজ করলেন। সমাজের সামনে পুরো মুখোশধারী লোকের চেহারা তুলে ধরলেন। এর চেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে? আমি জানতাম উনি খারাপ হতেই পারেন না।”
তার চিৎকার-চেঁচামেচিতে ছুটে আসে একটা ছেলে। মেয়েটির লাফালাফি দেখে ছেলেটা দাঁত কেলিয়ে বলে…..
–“মৃধা? লুঙ্গি ডান্স শুনেছি। ব্যাঙ মানে ফ্রগ ডান্সও হয় তুই সেটা দেখিয়ে দিলি।”
মৃধা তবুও থামেনা। যেন কেসটা সে নিজে জিতে ফেলেছে। মেয়েটা খুশিতে আত্মহারা। হাসি মুখে নিয়ে বলে…..
–“জীবন ভাই? আজ তুই যা বলিস বল। আমি রাগ করব না। আমার আইডল আয়াশ রায়হান কেস জিতেছে। তুই বলিস না উনি অসৎ? চ্যানেলে দেখ উনি অসৎ লোকের বিরুদ্ধে আজ লড়েছেন।”
–“মা? দেখে যাও তোমার ভাইয়ের মেয়ের মাথা আজকে পুরোটাই গেছে আয়াশ রায়হান করে করে। মাথায় খুন্তি দিয়ে কয়েকটা বাড়ি দিয়ে দাও। ঠিক হলেও হতে পারে।”
জীবন তার মাকে উদ্দেশ্য করে জোরে জোরে কথাগুলো বলল। মৃধা হোসাইন মৃধার পুরো নাম। মা-বাবা এক্সিডেন্টে মারা যাওয়ার পর থেকে ফুপির কাছেই বেশ আদরে বড় হয়েছে। জীবন হচ্ছে তার ফুপাতো ভাই। জীবনে প্রথমবার আয়াশকে দেখার পর থেকে মৃধা ক্রাশ নামক বাঁশ খেয়ে বসে আছে। লোকটাকে অকারণেই তার ভালো লাগে। কোনো কারণ ছাড়া ভালো লাগলে তাকে কি বলে? তার দেখে দেখে তারও ভীষণ ইচ্ছে জাগল LAW নিয়ে পড়তে। সেই ইচ্ছে অপূর্ণ রাখেনি তার ফুপি। তার পড়াশোনা শেষদিকে। সে খুব ইচ্ছে নিয়ে বসে আছে একদিন আয়াশের এসিস্ট্যান্ট লইয়ার হবে। সেই স্বপ্ন নিয়েই সে দৃঢ় পড়াশোনা করে চলেছে।
–“ভাই? তুই পাগল। তোর মাথা গেছে। তুই যা তো ঘরে যা। একদম আসবি না আমার সামনে। তুই এসে আমার মুড টাই খারাপ করে দিস।”
চোখ ছোট করে বলে মৃধা। জীবন ঠোঁট উল্টে বলে….
–“তোর মতো ডাইনির সামনে কে সেধে আসতে চাইবে? সারাদিন আয়াশ আয়াশ করিস। আমি ভাবলাম আজ ফুল মেন্টাল হয়ে গেছিস। নয়ত স্বপ্নে দেখেছিস আয়াশের এসিস্ট্যান্ট হয়ে গেছিস তাই মাথার সবকটা তার কেটে গেছে। পাবনা পাঠাতে হবে। তাই ঘর থেকে এলাম।”
–“স্বপ্ন খুব তাড়াতাড়ি পূরণও হতে চলেছে। আয়াশ রায়হান এসিস্ট্যান্ট লইয়ার খুব দ্রুত সেই পদ ছেড়ে দেবে। তারপর শুধু আমি হবো উনার এসিস্ট্যান্ট। দেখে নিস।” (ভেংচি কেটে)
–“দেখা যাবে!”
মৃধাকে ভেঙিয়ে ঘরে পা বাড়ায় জীবন। মৃধা স্বপ্ন দেখতে থাকে আয়াশকে চোখের সামনে দেখার। তার সঙ্গে কালো কোট টা পড়ে কোর্টে যাওয়ার। কখনো কি পূরণ হবে সেই স্বপ্ন?
ক্লান্তিতে ভরা শরীর নিয়ে দুপুরে বাড়ি ফেরে আয়াশ। বাড়ির বড় ড্রয়িংরুমটাতে পা রাখতেই এতো ভীড় দেখে হকচকিয়ে ওঠে সে। আশেপাশে দেখে বোঝার চেষ্টা করে এটা তার বাড়ি নাকি অন্যকারো? এতো লোকজন এলো কোথা থেকে? ভালো করে দেখে সে বুঝতে পারল এরা প্রেসের লোক। রাগ উঠল তার। মেজাজটা গেল বিগড়ে। এরা কি কোথাও শান্তি দিবে না? কোর্টে তো ছেঁকেই ধরেছিল আর বাড়িতে? এখানে ওদের কি? খানিকটা জোর গলায় সে বলল…..
–“হোয়াট দ্যা হেল ইজ দিস? আপনারা এখানে কেন?”
আয়াশের কন্ঠ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে প্রেসের লোক ক্যামেরা তার দিকে করে এগিয়ে এলো। দাঁতে দাঁত চেপে রাগ কন্ট্রোল করল আয়াশ।
–“মি. রায়হান! আমরা খবর পেয়েছি আপনি নাকি ব্ল্যাকমেইল করে একটা মেয়েকে বিয়ে করেছেন? তাও তার বয়স আঠারো বছরের নিচে। এই খবর কি সত্যি?”
চোয়াল শক্ত করে এলো আয়াশের। মেজাজটা ঠিক রাখার চেষ্টা করলেও বিগড়ে যাচ্ছে বারংবার। হালকা কেশে নিজেকে সামলে শান্ত কন্ঠে উত্তর দিল…..
–“কে বলেছে এটা? আপনারা কি পাগল নাকি? কে কি বলল আর ছুটে চলে এলেন সোজা বাড়িতে?”
–“আমাদের কাজই এটা মি. রায়হান। আপনি বলুন, এই খবর কি সত্যি? আপনি কি সত্যিই নিজে সুইসাইড করার ব্ল্যাকমেইল করে কোনো মেয়েকে বিয়ে করেছেন? যদিও করেন কি করে করলেন? আপনারা আইনজীবী তো বলেন আঠারো বছরের নিচে কোনো মেয়েকে বিয়ে করা দণ্ডনীয় অপরাধ? তাহলে আপনার দ্বারা এই কাজ কি করে হলো?”
–“আজেবাজে এলিগেশন দেওয়ার আগে দুইবার ভেবে নিন। আপনারা ভুলে যাচ্ছেন কার সামনে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছেন। সিকিউরিটি? সিকিউরিটি?”
সিকিউরিটি গার্ড দৌড়ে এলো। হাঁপাতে হাঁপাতে বলল…..
–“দুঃখিত স্যার। এতোজনকে আটকাতে পারিনি।”
–“আমরা সঠিক তথ্য না নিয়ে এখান থেকে যাব না মি. রায়হান।”
একজন সাংবাদিক একভাবেই কথাটা বলল। পরিস্থিতি সামলানো আয়াশের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ছে। কঠিন হয়ে পড়ছে তার রাগ সামলানো। সাংবাদিক আবারও সোজাসুজি বলে দেয়…..
–“আপনার চুপ থাকাটাতে আরো বেশি সন্দেহ হচ্ছে। তাছাড়া আমরা দেখেছি এই বাড়িতে প্রবেশ করতে একটা মেয়েকে। ড্রয়িংরুমে একটা মেয়ের হাত ধরে হাঁটছিল। মেয়েটি মনে হয় দেখতেও পায় না। আমরা যখন বিয়ের কথা জিজ্ঞেস করি ওপরে উঠে যান তিনি। তবে কি ওই মেয়েটাই আপনার স্ত্রী? যাকে বাধ্য করে বিয়ে করেছেন?”
–“বাড়িতে একটা মেয়ে থাকলেই যে সে-ই মেয়েটাই আয়াশ রায়হানের স্ত্রী হবে এটা কেমন লজিক? ফালতু লজিক দেখিয়ে নিজেদের মনগড়া কথা বানাবেন না। আপনারা আসুন।”
কড়া কন্ঠে বলে ওঠেন সাহাদ সাহেব। আয়াশ উনার কথায় বাগড়া দিয়ে বলে….
–“এটা আমার পারসোনাল ইস্যু আপনাকে কথা না বললেও চলবে। আমি নিজেরটা সামলে নিতে পারি। আর আপনারা কি যেন বলছিলেন? বিয়ে? আমি যদি করেও থাকি তাতে আপনাদের কি? ইটস মাই পারসোনাল লাইফ। আমার ব্যক্তিগত জীবনে কাউকে ইন্টারফেয়ার করার অনুমতি দিইনি। আপনারা ভালোই ভালোই চলে যাবেন। আদারওয়াইজ আমাকে আইনের সাহায্য নিতে হবে।”
–“আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে আপনি সত্যিই এমন কাউকে বিয়ে করেছেন। আর সেটা লুকাতে চাইছেন। এটা ঠিক নয় মি. রায়হান।”
চোখ বন্ধ করে কয়েকবার জোরে জোরে শ্বাস নিল আয়াশ। এদেরকে বাড়ি থেকে বের করতে হবে আর তার একটাই রাস্তা সেটা হচ্ছে আনিশা। সে যদি নিজের মুখে স্বীকার করে তাহলেই এরা বিদায় হবে। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথায় পেরে ওঠা মুশকিল। আয়াশ ফুলকিকে ডাক দিল।
–“ফুলকি? আনিশাকে নিয়ে আয়। আর সাবধানে নিয়ে আয়।”
ফুলকি মাথা দুলিয়ে ছুটে গেল আনিশার ঘরে।
ঘরে বসে ছিলাম আমি। সাংবাদিকদের প্রশ্নে ঘাবড়ে গিয়েছি। ব্যাপারটা যদি একবার লোক জানাজানি হয় তবে আয়াশের সম্মান নিয়ে তো টানাটানি হবেই সেই সঙ্গে আমারও যে কি হবে তা জানা নেই। ফুলকির ডাকে ভাবনাচ্ছেদ হলো আমার। আচমকা ওর ভয়াতুর কন্ঠে হকচকিয়ে উঠলাম।
–“ম্যাম? স্যার আপনাকে ডাকছে। নিচে সাংবাদিকদের লোকজন প্রশ্ন করে একেবারে মাথা খারাপ করে দিচ্ছে স্যারের।”
–“আয়াশ এসে গেছেন?”
–“হ্যাঁ। তাতেই তো আরো ঝামেলা হচ্ছে। উনিও সামলাতে পারছেন না। তাই হয়ত পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য আপনাকে ডাকল।”
আমার কপালে ভাঁজ পড়ল। সব দোষটা ওই জেদি লোকের। লোকটাকে বারবার মানা করেছি এমন পাগলামি না করলে। অবশেষে লোক জানাজানি হয়েই গেল। নিচে যাওয়ার জন্য বিন্দুমাত্র ইচ্ছে করছে না। কত লোকজন থাকবে সেখানে। তবুও মনে সাহস রেখে উঠে দাঁড়ালাম। দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে পা বাড়াতেই কারো ছুটে আসার শব্দ পেলাম। কেউ মূহুর্তেই আমার হাতজোড়া ধরে ফেলল। অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম। কিন্তু কন্ঠে শান্ত হলো আমার মন।
–“নিশাপাখি? আমি বলে তো দিয়েছি তোমায় নিচে আসতে। কিন্তু তোমাকে এতো লোকের সামনে আমি কি করে উপস্থিত করতে পারি বলো? লোকে তোমার ছবি তুলবে। অনেক ছেলে আছে সেখানে। তোমার ওপর নজর দেবে। মনে হচ্ছে আমি ভুল করে ফেলেছি। কিন্তু ওরা যে শান্ত হচ্ছে না।”
–“আমি যাচ্ছি। বিয়ের কথা উঠবে না। আপনিও আসুন।”
নিজেকে ছাড়িয়ে উনার পাশ কাটিয়ে যেতেই উনি আবারও আমার হাত চেপে ধরলেন।
–“না না। এটা কিভাবে হয়? এতো জনের নজর তোমার ওপর পড়তে পারে না। আমি শুধু তোমাকে দেখব বলো! তাই না? ওরা কেন তোমায় দেখবে তোমার ছবি নেবে? এটা হবে না। আমি একাই বাইরে যাব।”
উনার এই ব্যবহারে আমি মোটেও হতবাক হইনি। উনার এই পাগলামি আমি চিনি। প্রথমবার যেদিন বউ সেজেছিলাম সেদিনও আমার মুখ ঢেকে দিয়েছিলেন যাতে কেউ না দেখে। আজও একই কান্ড করছেন। কিন্তু এটা বুঝতে পারছেন না বাইরে কত বড় সমস্যা হতে পারে। আমি কিছু বলার আগেই দরজায় ঠকঠক আওয়াজ শুরু হলো। বাইরে শোরগোল। ফুলকি কাঁপা কাঁপা গলায় বলল….
–“আমার মন হচ্ছে ওরা ভিতরে চলে এসেছে। এখন কি করব স্যার?”
–“ওদের আজকে আমি তো…..”
কথাটা পূরণ না করেই হাতটা ছেড়ে দিলেন আয়াশ।আমায় কাঠকাঠ গলায় বললেন…..
–“তুমি ঘরে চুপ করে বসে থাকবে। বাইরে আসবে না ঠিক আছে? তুমি এখান থেকেই যা বলার বলবে। কারো সামনে যেতে হবে না তোমায়।”
আমায় রেখে দরজা খুলে বেরিয়ে গেলেন উনি। বাইরে থেকে ভেসে আসছে উনাদের কথোপকথন।
–“আপনাদের কি ভদ্রতা বলতে কিছু নেই নাকি? সামান্য একটা খবর ছাপার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। ইভেন রুম পর্যন্ত চলে এসেছেন। আপনারা কিন্তু আমার ধৈর্যের পরিক্ষা নিচ্ছেন। ধৈর্যের বাঁধ একবার ভেঙে গেলে কারো পক্ষে ভালো হবে না।”
–“আমরা জাস্ট ওই মেয়েটার সঙ্গে কথা বলতে চাই। তাহলেই সবটা পরিষ্কার হয়ে যাবে।”
–“ওকে দেন কথা বলবেন। এখান থেকে প্রশ্ন করুন। মেয়েটা ওপার থেকে জবাব দেবে। ও আপনাদের সামনে আসতে অস্বস্তিবোধ করছে। তাই ঘরের মধ্যে যাওয়ার চেষ্টাও করবেন না।”
সাংবাদিকদের লোকজন একটু চুপ থেকে বললেন….
–“ঠিক আছে। মিস! ভেতরে যিনি আছেন আপনার নাম?”
আমি কিছু বলতে উদ্যত হতেই আয়াশের রাগি কন্ঠে থম মেরে গেলাম।
–“নাম জেনে কি কাজ? যা জানতে চান স্ট্রেটকাট প্রশ্ন করুন। আর আসুন।”
–“সরি মি. রায়হান। আচ্ছা মিস. আপনি কে এই বাড়ির? আমরা খবর পেয়েছি অ্যাডভোকেট আয়াশ রায়হান কাউকে জোর করে বিয়ে করেছে। সেই মেয়েটা কি আপনি?”
আমি বিব্রত হয়ে জবাব দিলাম…..
–“না! আমি কেন হবো? আর এই বাড়িতে কোনো বিয়ে হয়নি। আমি এই বাড়ির বিশেষ কেউ নই। আমি শুধু…..”
বলেই আঁটকে গেলাম। কি উত্তর দেওয়া যায়? মিথ্যে বলতে গলা কাঁপছে আমার। একটু ভেবে বললাম…..
–“আমাকে দয়া করছেন আয়াশ রায়হান। আমি অন্ধ। সেই কারণে উনি ঢাকায় এনেছেন চিকিৎসা করানোর জন্য। কাজ হলে আবার ফিরে যাব নিজের বাড়িতে।”
–“মি. রায়হান চোখ সারানোর জন্য আপনাকেই কেন বাছলেন? দেশে তো অনেক অন্ধ মেয়ে আছে।”
এই উত্তরটাও আমাকে দিতে হলো না। আয়াশ রেগেমেগে বললেন….
–“ব্যাস….অনেক হয়েছে। জেনে নিয়েছেন যা জানার ছিল। কেন ওকে বেছেছি তার স্পেশাল রিজন আছে যা কাউকে বলতে চাই না। এবার সবাই আসুন নয়ত…..”
–“উই আর সরি মি. রায়হান। হয়ত ভুল খবর পেয়েছিলাম আমরা। আমরা যাচ্ছি।”
আমি হাফ ছাড়লাম। হয়ত সবাই চলে যাচ্ছে। তৎক্ষণাৎ মনে হলো রুমে কেউ হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ার আওয়াজ পেলাম। সঙ্গে সঙ্গে চেপে ধরলাম ফুলকির হাত। শুনতে পেলাম আয়াশের রাগে হুংকার দেওয়া কন্ঠ।
–“ইউ রাসকেল রিপোর্টার।”
মারধরের শব্দ হলো। কিছু বোঝার আগেই ফুলকি ভয় পেয়ে বলল…..
–“একটা সাংবাদিক ঘরে ঢুকে এসেছে। স্যার ওকে মারতেছে।”
আঁতকে গেলাম আমি। আন্দাজমতো সামনে গিয়ে উনার হাত আটকালাম। কিন্তু আমাকেও তোয়াক্কা করলেন না উনি। আমি বেকুবের মতো দাঁড়িয়ে রইলাম। আয়াশের শার্ট খামচে ধরতেই শান্ত হলেন উনি।
–“আজকে কম মার পড়ল তোর ওপর। আমি বলেছি ধৈর্যের পরিক্ষা নিস না। ঘরেও ঢুকে পড়লি। তোর চোখ উপড়ে ফেলব। আর একটা কথা। আমার নামে আজেবাজে ছাপলে কিন্তু সারাজীবন পস্তাতে হবে। ইউজলেস। গেট আউট।”
বড় বড় শ্বাস ছাড়লেন উনি। আমি অসহায় হয়ে উনার শার্ট খামচে ধরেই দাঁড়িয়ে রইলাম।
চলবে…….
[বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]