মনের_অন্দরমহলে পর্ব ১৬

মনের_অন্দরমহলে পর্ব ১৬
#আনিশা_সাবিহা

–“আমাকে এখানক এক্সপেক্ট করোনি মনে হয় তাই না আনিশা? করবেও বা কি করে? আমাকে মনে আছে তো তোমার?”

হার্টবিট দ্রুত গতিতে দৌড়ে চলেছে। আমার মুখে কোনো কথা আসছে না। কন্ঠস্বর কাঁপছে। নীলাদ্রকে কি জবাব দেব সেটা বুঝতে সময়ের পর সময় লেগে যাচ্ছে। ওকে কি বলব? আমার ধর্মীয় মতে বিয়ে হয়ে গেছে আমাকে পাওয়ার আশা যেন না রাখে? অনেক কষ্ট করে অস্পষ্ট কন্ঠে বলতে লাগলাম…..
–“নীলাদ্র আমি…..”

–“কি তুমি? এটাই হয়ত বলতে চাও যে তোমার বিয়ে হয়ে গেছে। আমি যেন তোমায় ভুলে যাই। নতুন করে জীবনটা শুরু করি। এসবই বলবে তো?”

আবার আঁটকে গেলাম আমি। চোখ বুঁজে ফেললাম। জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে বললাম…..
–“তুমি এখান থেকে যাও। আয়াশ আশেপাশেই আছেন। যদি তোমাকে আর আমাকে একসঙ্গে দেখে ফেলে তবে কিন্তু আবারও খারাপ কিছু ঘটবে।”

–“ওহ, তুমি এখন আমার না ওই আয়াশ রায়হানের চিন্তা করছো।”

নীলাদ্র ভুল বুঝল আমায়। আমি তো ওর ভালোর জন্যই বললাম। আমি আরো কিছু বলতে নিলেই সে দম নিয়ে বলল…..
–“বুঝেছি বুঝেছি সব বুঝেছি। আর কিছু বলতে হবে না। টাকা! সব টাকার খেলা তাই না? টাকা দিয়েই আয়াশ তোমায় নিজের করে নিয়েছে। শুধু টাকা নয় গয়নাগাটি, দামি পোশাক, রাজপ্রাসাদের মতো বাড়ি এসব দেখে তুমি পাগল হয়ে গেছো? এখন ওকে মেনেও নিয়েছো তাই না? আবার আরো অনেক কিছু দিয়েছে হয়ত তোমায়। যা আমি দিতে পারিনি। আমাকে বলতে পারতে। আমিও দিতে পারতাম।”

নীলাদ্রের বিশ্রী কথাবার্তায় গা গুলিয়ে এলো আমার। আপনাআপনি চোখমুখ খিঁচে ফেললাম। ক্রুদ্ধ হয়ে বললাম…..
–“ছি…নীলাদ্র! এসব নোংরা কথাবার্তা কেন বলছো? তুমি কি আগের থেকেই এমন ছিলে নাকি হয়ে গেছো এখন এমন?”

–“হ্যাঁ হয়ে গেছি আমি এমন। পাগল হয়ে গেছি আমি। যাকে নিয়ে মানুষ স্বপ্ন দেখে সেই স্বপ্ন পূরণ না হলে যে কত কষ্ট লাগে সেটা তুমি কি বুঝবে? স্বপ্ন তৈরি করে দিয়ে যাওয়া মানুষ যখন নিজহাতে স্বপ্ন ভেঙে দিয়ে যায় তখন কেমন লাগে জানো? আমি তো প্রায় ১০ দিন হসপিটালে পড়ে ছিলাম। এতোটা ইনজুরি হয়েছিল আমার! কিন্তু অবাক তো তখন হই যখন জানতে পারি তুমি আমায় দেখতেই আসোনি। চলে গেছো নিজের হবু বরের সঙ্গে।”

–“আমি নিজে আসিনি আমাকে আনা হয়েছিল।”

–“ওকে বুঝলাম। মানলাম তোমার কথা। কিন্তু তুমি কি একবারও পালানোর চেষ্টা বা চলে আসার চেষ্টা করেছো?”

–“হ্যাঁ আমি করেছি। বিয়ে হওয়ার দিনে আমি পুলিশ ডেকেছি। লাভ হয়নি। আর তুমি জানো আমি দেখতে পাই না। একা একা ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোথায় যেতাম? যতটুকু পেরেছি চেষ্টা করেছি। শেষমেশ উনি আমায় ছাড়েন নি। বাধ্য করলেন বিয়ে করার জন্য। তাছাড়াও আমার মনে হয় না উনি আমায় ভালো টালো বাসেন বলে। উনাকে আমি ফোনে কথা বলতে শুনেছি। উনি আমায় দয়া করছেন মাত্র।”

–“তাহলে তোমার থুঁতনিতে লাল দাগটা কীসের আনিশা?”

–“ওটা তো জাস্ট উনি কিস…..”
থমকে গেলাম। হুড়মুড়িয়ে মুখ ফসকে কি বলতে যাচ্ছিলাম আমি? নিজের ওপরই প্রচন্ড রাগ হলো আমার। এক্ষুনি কি বলতাম? আয়াশ কিস করতে করতে থুঁতনিতে কামড় বসিয়েছেন? কি লজ্জার ব্যাপার….! চোখ বন্ধ করে নিজেকে ধাতস্থ করবার চেষ্টা করতে থাকলাম।

আমার গাল স্পর্শ করল নীলাদ্র। অস্বস্তিতে ভরে গেল আমার মন। মনে হচ্ছে স্পর্শটা আমার জন্য নয়। ঢক গিলে দেয়াল ঘেঁষে সরে এলাম আমি। এবার নীলাদ্র আমার হাত ধরে। এবার আমি বিরক্ত হই। কেননা ওর স্পর্শ করায় ব্যাপারটা আমার কাছে বাজে লাগছে। খুবই বাজে লাগছে। আমি কম্পিত কণ্ঠে বললাম…..
–“আমায় যেতে দাও নীলাদ্র…..!”

–“তোমার কাছে চান্স আছে আনিশা। তুমি যদি চাও আয়াশের কবল থেকে মুক্তি পেতে পারো।”

অনুভূতিরা যেন কোথাও হারিয়ে গেল। অনুভূতিশুন্য হয়ে পড়লাম। ভাবলেশহীন হয়ে মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে গেলাম। কপালে পড়ল একটা চিন্তার ছাপ। পড়নে থাকা ওড়না খামচে ধরলাম। আয়াশ রায়হানের থেকে মুক্তি বিষয়টা শুনে এমন মনের উথাল-পাতাল ঝড় যেন মানতে পারছি না আমি।
–“মুক্তি?”

–“হ্যাঁ। তোমাদের তো ধর্মমতে বিয়ে হয়েছে না? মৌখিক তালাক দিলেই বিয়ে ভেঙে যায়। এতে তুমি মুক্ত হতে পারো। তখন আমরা আবার আগের মতো হতে পারি। পারি না বলো?”

উম্মাদের মতো কথাগুলো বলে গেল নীলাদ্র। আমি কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। মন চাইছে না এমন কাজ করতে। মনটা বলছে ‘তালাক’ জিনিসটা এখন সব থেকে বেশি জঘন্য তার কাছে। মুখে বলে সম্পর্ক ছিন্ন করা খুব সহজ হলেও আজ আমি বাকরুদ্ধ। এটা যেন আমার জীবন মরণের প্রশ্ন! নীলাদ্রের কথায় ধ্যান ভাঙে আমার। সে আমার বাহু ঝাঁকিয়ে বলে……
–“কি হলো? কোথায় হারালে?”

–“কোথাও না। আমি যাচ্ছি। উনি হয়ত আমায় খুঁজছেন। না পেলে না জানি এখানেই সিনক্রিয়েট করে বসবেন।”

থমথমে কন্ঠে কথাটা বলেই হাতড়ে হাতড়ে এগোতে লাগলাম আমি।
–“কবে তুমি শুভকাজটা সম্পূর্ণ করছো? কবে তালাক দিচ্ছো আয়াশকে?”

পা জোড়া থেমে গেল। দম ফেলে কড়া গলায় জবাব দিলাম…..
–” জানি না আমি।”

–“ওহ, তার মানে আমার ধারণা সত্যি? তুমি পারছো না ওই লোকটার থেকে দূরে আসতে। তুমি ভালোবাসছো ওকে? আমার জায়গা দিয়ে দিচ্ছো ওকে? যে নাকি তোমায় দয়া করছে তার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছো তুমি? যে তোমায় দিনরাত টর্চার করছে তাকে ভালোবেসে ফেলেছো? তোমার নাকি খুব আত্মসম্মান? তাহলে কোথায় গেল তোমার আত্মসম্মান? আয়াশকে পেয়ে নিজের আত্মসম্মানও জলাঞ্জলি দিয়েছো?”

নীলাদ্রের বলা প্রত্যেকটা কথা কাঁটার মতো বিঁধল আমার গলায়। আমি হাসফাস করছি। তিক্ত হলেও সত্যি যে আমি আয়াশকে মেনে নিতে শুরু করেছি। ভালোবাসার কথা বলতে পারছি না। তবে উনাকে মানতে আরম্ভ করেছি আমি। বড় শ্বাস ছেড়ে চিল্লিয়ে বললাম…..
–“না! আমি উনাকে ভালোবাসি না। ভালোবাসতে পারি না। এমন বেমানান লোকের সঙ্গে ভালোবাসা হয় না। যে আমায় দয়া করে তাকে ভালোবাসি না আমি। যে আমায় প্রতিনিয়ত নিজের সিদ্ধান্ত আমার ওপর চাপিয়ে দেয় তাকে ভালোবাসি না আমি।”

–“যদি তাই হয় তাহলে মৌখিক তালাক দিতে তোমার বাঁধছে কেন?”

–“আমার একটু সময় লাগবে।”

থেমে থেমে বললাম আমি। নীলাদ্র জবাবে বলল…..
–“ওকে। আই ক্যান আন্ডারস্ট্যান্ড।”

চোখমুখের ভাবভঙ্গি পাল্টে গেল নীলাদ্রের জবাব শুনে। ও কি আসলেও আমায় কখনো বোঝে? কনফিউজড হয়ে ওকে বললাম…..
–“সত্যি?”

–“কি সত্যি?”
আয়াশের শক্ত কন্ঠ শুনে হকচকিয়ে গেলাম আমি। ভয়ংকর কিছু ঘটার আভাস এলো। এখন নীলাদ্রের কি হবে? আমারই বা কি হবে? কি করতে চলেছেন আয়াশ? উনি আমার কাঁধে হাত রাখলেন। কেঁপে উঠলাম আমি। চোখ খিঁচে বন্ধ করলাম ভয়ে।

–“কার সঙ্গে কথা বলছিলে? তাও সত্যি মিথ্যের কথা?”

চোখ মেললাম। নীলাদ্র কি এখানে নেই? হয়ত নেই। আয়াশকে দেখে চলে গিয়েছে। ভালো হয়েছে চলে গিয়েছে। ঠোঁটে ঠোঁট চেপে আয়াশের দিকে ঘুরলাম। বর্তমানে উনার প্রতি প্রচন্ড রাগ আর ক্ষোভ কাজ করছে। এমন মানুষের জন্য আমি কি করে ভালোবাসা নামক এই অসাধারণ অনুভূতি অনুভব করতে পারি? না পারি না।

–“কি হলো বললে না তো এখানে কার সঙ্গে কথা বলছিলে? আর এখানে এলেই বা কেন? আমি তোমায় বলেছিলাম না ওখানে দাঁড়িয়ে ওয়েট করতে? আমার কথার অমান্য করছো কেন? কেন এসেছো এখানে? পালিয়ে যেতে? কারো সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার প্লান আঁটছ তুমি? হ্যাঁ বলো? পালিয়ে যাবে তুমি?”

শেষ কথাগুলো চিৎকার দিয়ে বললেন উনি। কথায় কথায় সেকেন্ডেই উনার ভালো মুড পাল্টে বমের মতো ফেটে গেলেন।
–“না বুঝে কেন রাগ করছেন? আমি পালাতে যাব কেন আপনার থেকে? আমার কি সেই সাধ্য আছে বলুন? নেই তো! আমি এখানে শুধু গরমের কারণে এসেছি। ওখানে প্রচন্ড রোদ। সিঁড়ির ভেতরে শপিংমলেও তো ঢুকতে পারছিলাম না আপনাকে ছাড়া। তাই এখানে এসেছি। আর নিজে সঙ্গে নিজেই কথা বলছিলাম। কি কিনব সেটা নিয়ে।”

আয়াশ এবারের মতো আমার কথায় বিশ্বাস করলেন। হিংস্র মনোভাবটা কমে এলো উনার মধ্যে থেকে। আমার মাথা নেড়ে দিয়ে আয়াশ হাত শক্ত করে চেপে ধরেন আয়াশ। আমি ছাড়াতে গিয়েও ছাড়ালাম না হাত। কারণ এখানকার কিছুই আমি চিনি না। কখনো তো এতো বড় শপিংমলে আসিই নি।

বেশ কিছুক্ষণ হেঁটে আমায় এনে দাঁড় করালেন শাড়ির শপের সামনে। আমায় বসিয়ে দিলেন আয়াশ। দোকানদার আয়াশকে দেখে খুশিতে আটখানা হয়ে পড়লেন।
–“আরে আয়াশ স্যার! এতোদিন পর তাও শাড়ির দোকানে? ভাবাই যায় না। বসুন বসুন। কি নেবেন বলুন? এই ম্যাডামের জন্য কোনো শাড়ি?”

–“ইয়েস। আপনার দোকানে তো ভালো কালেকশানের শাড়ি পাওয়া যায়। তো যত কালেকশন সব দেখান। বাট একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন শাড়ি যাতে বেশি গর্জিয়াস না হয়। সিম্পল তবে সুন্দর!”

চোখজোড়া সরু হয়ে এলো আমার। লোকটা তো ভারি কিপ্টে! দামি শাড়ি কিনে দিলে বুঝি তার একাউন্টের সব টাকা শেষ হয়ে যাবে? যাই হোক, আমিও ভারি কাজ করা শাড়ি পছন্দ করি না। এমনকি শাড়ি পরার অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে। আগে বছরে দুই-একদিন শখের বশে শাড়ি পরতাম। এখন শাড়ি নিয়ে কি করব?

–“শাড়ি নিয়ে কি করব আমি? আমি তো শাড়ি পরি না।”

আয়াশ আমার ওপর ঝুঁকে পড়লেন সেটা বেশ ভালোমতো আন্দাজ করতে পারলাম। আমিও একটু হেলে গেলাম ভয়ের চোটে। এই ভরা শপিংমলেও কি অসভ্যতা শুরু করবেন নাকি উনি? এই ভেবে গলা শুকিয়ে এলো আমার।

–“পরো না তো কি হয়েছে? আমার জন্য পড়বে। সবসময় পড়তে হবে না। কাল একটা স্পেশাল দিন আছে। সেকারণে না হয় পড়বে। ডু ইউ হ্যাভ এনি প্রবলেম নিশাপাখি?”

আমি দ্রুত মাথা নাড়ালাম। উনি সরে গেলে সোজা হয়ে বসলাম। একটা একটা করে শাড়ি দেখাতে শুরু করলেন দোকানদার। কিন্তু আমি কিছুই বুঝছি না। চোখে না দেখে বুঝব কি করে শাড়ি কোনটা কেমন? আমার বিষয়টা বুঝে আয়াশ বলে উঠলেন…..
–“আই থিংক কালো রঙের শাড়ি তোমায় বেশ মানাবে।”

চোখ গোল করে ফেললাম। কালো রঙ? আর কোনো রঙ খুঁজে পেলেন না? আয়াশ এবার আমার কাঁধে একটা শাড়ি তুলে দিলেন।
–“সাদা রঙটাও সুন্দর! ডু ইউ নো? তোমায় সব রঙে ভালো লাগে। একেক রঙে একেক রকম সৌন্দর্য ফুটে ওঠে তোমার মাঝে। আর তাতে খুন হয়ে যেতে পারি আমি।”

ফিসফিসিয়ে কথাগুলো বলতেই আমি বিষম খেয়ে গেলাম। নিজেকে ধাতস্থ করে হলুদ রঙের একটা শাড়ি নিলাম।
–“হলুদ রঙের প্রথম দেখেছিলাম তোমায়। যাতে আহত হয়ে পড়েছিলাম। এখন আবারও এই রঙে আমায় মেরে ফেলতে চাও?”

কানে কানে কথাগুলো বললেন আয়াশ। আমি ঢোক গিলে শাড়িটা রেখে দিলাম। উনি আমার হাতে চিমটি কেটে বললেন…..
–“এটা কি জানো তোমায় কেন সিম্পল শাড়ি দেখাতে বললাম?”

–“কেন?”

–“বিকজ তুমি নিজেই গর্জিয়াস!”

থতমত খেয়ে সামনের দিকে মুখ করলাম। ঢপের চপ দিয়ে চলেছেন উনি। তবুও কেন জানি লজ্জা লাগছে। ঠোঁটে ঠোঁট টিপে দোকানদারকে বললাম…..
–“বেগুনি রঙের শাড়ি আছে?”

মা বলে বেগুনি রঙে আমায় বেশ মানায়। তাই বেগুনি রঙের শাড়ি নিতে মন চাইলো আমার। কিন্তু তাতে বাঁধা প্রদান করে বসেন আয়াশ।
–“না নেবে না বেগুনি রঙের শাড়ি।”

কাঠকাঠ গলায় বললেন উনি। আমি ভ্রু কুঁচকালাম। আমার জন্য শাড়ি কিনতে এসেছেন অথচ আমার পছন্দ অনুযায়ী কিনতে নাকচ করছেন? আমি দৃঢ় কন্ঠে বললাম…..
–“শাড়ি তো আপনি পরবেন না। পরব আমি। তাই আমার পছন্দের হওয়া উচিত নয় কি?”

–“আরো অনেক কালার আছে। লাল, নীল, সবুজ, সাদা, আকাশী অনেক কালার আছে। যেই কালারের শাড়ির ইচ্ছে তাই নাও। কিন্তু বেগুনি কালার নয়।”

চোয়াল শক্ত করে বলেন উনি। আমি ঠিক করেছি উনার অনুযায়ী চলব না। নীলাদ্র ঠিকই বলেছিল। আমিও নিজের কথায় অটল থাকলাম।
–“কেন? সবসময় আপনার পছন্দই কেন মানব? বেগুনি শাড়িতে কি সমস্যা?”

–“সমস্যা আছে আছে আছে! ওই কালার নেবে না তুমি। আই হেট দিস কালার। ওই কালারের কিছু নেবে না তুমি। গট ইট?”

কথাগুলো উনি এতোটাই জোরে বললেন হয়ত এখানকার সকলে চমকে তামাশা দেখছেন। এই ভেবেই অপমানে মাথা নিচু হয়ে এলো আমার। সামান্য কালার জন্য ভরা শপিংমলেও অপমান করতে ছাড়লেন না উনি। এই ভেবেই চোখে পানি এসে গেল।

–“হেই লিসেন, ওই কালারটা খুব খারাপ খুব বাজে। ওই কালারের শাড়ি পড়লে তুমিও দূরে চলে যাবে। মায়ের মতো আমিও তোমায় কি করে যেতে দিই বলো? পারব না তো তোমায় ছেড়ে থাকতে। ওই কালার নেবে না তুমি। নিতেও পারবে না আর আমার থেকে দূরেও যেতে পারবে না।” (বাহু জোরে চেপে ধরে)

–“অনেক তো মেনেছি আপনার কথা। আপনার যখন আমায় নিয়ে এতোই ইনসিকিউরিটি তাহলে কেন লোক দেখিয়ে বাইরে এনেছেন? এখন সকলের সামনে অপমান করছেন।” (উঁচু গলায়)

–“হুঁশশ! আমি বলেছি আমার সামনে গলা নামিয়ে কথা বলবে। আমার সামনে কেউ গলা উঁচিয়ে কথা বলবে না।”

আমার ঠোঁট চেপে ধরে বললেন উনি। আমি ছলছল চোখ নিয়ে বসে রইলাম। কিছু বলার নেই উনাকে। দোকানদার পরিস্থিতি সামলাতে কিছু বলতে নিলেই আমার হাত ধরে উঠিয়ে টানতে টানতে নিয়ে আসেন উনি।

চলবে…….

[বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আমি আগেও বলেছি এখনো বলছি প্রতিদিন গল্প দেওয়া সম্ভব নয়। তবুও আমি চেষ্টা করব। আমার সমস্যাও আপনারা বুঝুন। আমার এসাইনমেন্টের অনেক চাপ।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here