মন চায় তোকে পর্ব-১১

0
2000

#মন_চায়_তোকে
#পার্ট_১১
#নিশাত_জাহান_নিশি

নিচে নেমে সবার থেকে বিদায় নিয়ে অন্তর আর মল্লিকা গাড়িতে উঠে পড়ল। ড্রাইভার এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে গাড়ি ছেড়ে দিলো। অন্তর মল্লিকার হাতটা শক্ত করে ধরে রেখেছে। মল্লিকা মুচকি হেসে অন্তরের দিকে তাকিয়ে আছে।

মল্লিকার দৃষ্টি জানালার কাঁচে ঢাকা নিস্তব্ধ রাতের শহরে। জানালার কাঁচে স্বচ্ছ ভাবে রাতের আঁধারটাকে দেখা যাচ্ছে। অন্তর মল্লিকার দৃষ্টিকে ফলো করে মৃদ্যু হেসে জানালার কাঁচটা সরিয়ে দিলো। সাথে সাথেই শোঁ শো বেগে বাতাস হানা দিলো পুরো গাড়িতে। প্রবল বাতাসের তান্ডবে মল্লিকার খোঁপা থেকে চুল সরে যাচ্ছে। খোঁপাটা আস্তে আস্তে করে খুলতে শুরু করেছে। অন্তর ঘোর লাগা দৃষ্টিতে মল্লিকার দিকে তাকিয়ে আছে। মল্লিকা এখনো জানালার বাইরে চোখ দিয়ে রেখেছে। দৃষ্টি তার স্থির। হুট করে অন্তর মল্লিকাকে হেচকা টান দিয়ে ওর বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো। মল্লিকা বড় বড় শ্বাস ফেলে অন্তরের শার্ট আঁকড়ে ধরল। অন্তর মল্লিকার চুলের ঘ্রাণ নিচ্ছে আর ঘোর লাগা কন্ঠে বলছে,,,,,,

—-“মল্লিকা….তোমার চুলের স্মেইলটা সাংঘাতিক আকৃষ্টকর। আমাকে মাতাল করে দিচ্ছে। ভুল কিছু হয়ে গেলে আমাকে দোষ দিয়ো না প্লিজ।”

মল্লিকা তাড়াহুড়ো করে অন্তরের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে শাড়ীটা ঠিক করে গাড়ির দরজা ঘেঁষে বসে পড়ল। অন্তর বাঁকা হেসে বিড়বিড় করে বলল,,,,,

—–“তুমি বেশিদিন আমার থেকে দূরে দূরে থাকতে পারবে না মল্লিকা। নিজেই এসে আমার কাছে ধরা দিবে। ঐ দিনটা শীঘ্রই আসবে মল্লিকা। অপেক্ষায় থাকব আমি ঐ দিনটার।”

কথাগুলো বলেই অন্তর গাড়ির সিটে মাথা এলিয়ে দিলো। মল্লিকা গাড়ির দরজায় মাথা ঠেকিয়ে চোখ বুজে ফেলল। এক পর্যায়ে মল্লিকা ঘুমিয়ে পড়ল। অন্তর তাড়াহুড়ো করে গাড়ির দরজা থেকে মল্লিকার মাথাটা তুলে মল্লিকাকে ওর সাথে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে নিলো। অন্তরের বুকে মাথা রেখে মল্লিকা গুটিশুটি হয়ে আরামসে ঘুম দিলো। অন্তর মুচকি হেসে মল্লিকার কপালে চুমো খেয়ে দিলো।

এভাবেই কেটে গেলো প্রায় এক ঘন্টা। গাড়ি এসে পৌঁছে গেছে এয়ারপোর্টে। অন্তর মল্লিকার গালে আস্তে করে কয়েকটা চাপড় মেরে মল্লিকাকে ঘুম থেকে উঠালো। ঢুলুঢুলু চোখে মল্লিকা অন্তরের দিকে তাকিয়ে আছে। অন্তর মল্লিকার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,

—-“আমরা এয়ারপোর্ট পৌঁছে গেছি মল্লিকা। আর এক্টু দেরি করলে হয়তো প্লেইনটাই মিস করব।”

মল্লিকা চট জলদি অন্তরের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে সোজা গাড়ি থেকে নেমে পড়ল। অন্তর ল্যাকেজ নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে মল্লিকার পাশে এসে দাঁড়ালো। আচমকা মল্লিকা অন্তরের হাতে হাত ঢুকিয়ে সামনে হাঁটা ধরল। অন্তর বেশ অবাক হয়ে মল্লিকার দিকে তাকিয়ে আছে। মল্লিকা মৃদ্যু হেসে অন্তরের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,

—–“অবাক হওয়ার কি আছে অন্তর? আমি কি আপনার হাত ধরতে পারি না?”

—-“শুধু হাত কেনো মল্লিকা। আমার জীবনের প্রতিটা জিনিসেই তোমার হাত দেওয়ার হক আছে। হাত ধরাতে আমি অবাক হই নি তবে অবাক হয়েছি তোমার মন মর্জি চেইন্জ্ঞ হওয়াতে।”

মল্লিকা গলা ঝাঁকিয়ে বলল,,,,,

—-“হয়েছে হয়েছে এবার চলুন তো। না হয় আবার ফ্লাইট মিস হয়ে যাবে।”

দুজনই এবার দ্রুত পায়ে হাঁটা ধরল। এয়ারপোর্টের লনে আসার সাথে সাথেই এনাউন্সমেন্ট শুরু হয়ে গেলো। প্লেইন আর দশ মিনিটের মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হবে। অন্তর মল্লিকার হাতটা শক্ত করে ধরে চেইকিং পর্ব শেষ করে সোজা প্লেইনে উঠে পড়ল। জানালার পাশের সিটটাতে বসেছে মল্লিকা। অন্তর বসেছে মল্লিকার পাশের সিটটাতে। মল্লিকা বেশ এক্সাইটেড। খুশিতে সে খিলখিল করে হাসছে। অন্তর বেশ কেয়ারফুললি মল্লিকার সিটবেল্ট বেঁধে দিচ্ছে। মল্লিকার লাফালাফিতে অন্তর ঠিকভাবে সিটবেল্টটা বাঁধতে পারছে না। অনেক সাধনার পর অন্তর সফল হয়েছে মল্লিকার সিটবেল্টটা বেঁধে দিতে। অন্তর এবার নিজের সিট বেল্টটা ও বেঁধে নিলো। প্লেইন আস্তে আস্তে আকাশে উড়া শুরু করল। মল্লিকা অন্তরকে ঝাপটে ধরে জানালার দিকে তাকিয়ে আছে। অন্তর মল্লিকাকে টাইট করে জড়িয়ে ধরে মল্লিকার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। প্লেইন এবার আকাশপথে ছুটা শুরু করল। মল্লিকা অনেকক্ষন জানালার দিকে তাকিয়ে থেকে চোখ বুজে ঘুমিয়ে পড়ল। মল্লিকার ঘুম থেকে অন্তরের ও কেমন চোখ লেগে এলো। এক পর্যায়ে অন্তর ও ঘুমিয়ে পড়ল।

ঘুমে ঘুমে কেটে গেলো প্রায় পাঁচ ঘন্টা। প্লেইন এসে সিঙ্গাপুর এয়ারপোর্টে থেমেছে। এক এক করে সবাই প্লেইন থেকে নেমে পড়ছে। লোকজনের হাক ডাকে অন্তরের ঘুম ভাঙ্গল। অন্তর আর দেরি না করে মল্লিকাকে ঝাঁকিয়ে ঘুম থেকে উঠিয়ে দিলো। মল্লিকা আধ খোলা চোখে অন্তরের দিকে তাকিয়ে আছে। অন্তর ল্যাকেজটা হাতে নিয়ে মল্লিকার হাত ধরে প্লেইন থেকে নেমে সোজা এয়ারপোর্টের বাইরে চলে এলো। দুজনই এক্টা ক্যাব বুক করে আশেপাশের ভালো এক্টা লজে উঠল। লজটা দেখতে চমৎকার। সাত তলার বিরাট ভবন বিশিষ্ট লজটা রাতের বেলায় ও দিনের মতো আলোয় আলোচিত থাকে। চারদিকে অগনিত লাইট আর রোশনাই। দেখলেই চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়ার মতো।

মল্লিকাদের রুমটা পড়েছে তিনতলায়। রুমটা বেশ বড় সাথে এডজাস্ট ওয়াশরুম। পুরো রুমটায় বিভিন্ন কালারের ঝাড়বাতি লাগানো। ব্যালকনি থেকে বিশাল এক নীল পানির ল্যাক দেখা যায়। পাশাপাশি মৃদ্যুমন্দ বাতাস ও আসে। মল্লিকা রুমে ঢুকেই হা করে পুরো রুমটা চোখ বুলিয়ে দেখছে। অন্তর রুমের দরজা আটকে পিছনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মল্লিকার কান্ড দেখছে। মল্লিকা বেডের উপর উঠে ইচ্ছে মতো লাফালাফি করছে। এক লাফের সাথে মল্লিকা দুই, তিন ফুট উপরে উঠে যাচ্ছে। বেডের গদিটা খুবই সফট। সফটনেসের কারণে এমনটা হচ্ছে। মল্লিকা লাফাচ্ছে আর খিলখিল হেসে অন্তরকে বলছে,,,,,,

—-“অন্তর প্লিজ আপনি ও এসে আমার সাথে জয়েন করুন। খুব মজা পাবেন।”

অন্তর বুকের উপর দুই হাত গুজে মল্লিকার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,

—-“আমি তোমাকে এভাবে দেখেই খুব মজা পাচ্ছি। নিজে গিয়ে করতে হবে না। তোমাকে এতো হাসি খুশি দেখে বেশ ভালো লাগছে।”

মল্লিকা লাফালাফি থামিয়ে চিৎ হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ল। অন্তর বুঝতে পেরেছে মল্লিকা ক্লান্ত হয়ে গেছে। অন্তর ব্যালকনির দরজাটা লাগিয়ে মল্লিকার পাশে এসে বসল। মল্লিকা এতক্ষনে চোখ বুজে নিয়েছে। অন্তর এক্টু ঝুঁকে মল্লিকার কানে ফিসফিসিয়ে বলল,,,,,,

—-“ফ্রেশ হয়ে নাও মল্লিকা। খেয়ে দেয়ে এরপর ঘুমিও। আমি খাবার অর্ডার করছি।”

মল্লিকা ঢুলুঢুলু কন্ঠে বলল,,,,,

—-“আমি এখন চেইন্জ্ঞ ও করতে পারব না, খেতে ও পারব না। ঘুম পেয়েছে আমার।”

অন্তর বাঁকা হেসে বলল,,,,,

—-“তাহলে কি আমি তোমাকে চেইন্জ্ঞ করিয়ে খাইয়ে দিবো?”

মল্লিকা রাগী কন্ঠে বলল,,,,

—-“আপনি আমাকে ভয় দেখাচ্ছেন তাই না?”

—-“একদমই না। আমি এখনই করে দেখাচ্ছি।”

কথাটা বলেই অন্তর হেচকা টান দিয়ে মল্লিকাকে শোয়া থেকে বসিয়ে এক টানে মল্লিকার শাড়িটা খুলে ফেলল। মল্লিকা বেকুব হয়ে অন্তরের দিকে তাকিয়ে আছে। অন্তর ল্যাকেজ থেকে আরেকটা শাড়ী বের করে মল্লিকাকে বসা থেকে দাঁড় করিয়ে দিলো। অন্তর এবার চোখটা বন্ধ করে খু্ব পারদর্শিতার সাথে মল্লিকাকে শাড়ীটা পড়িয়ে দিলো। মল্লিকা মুখে হাত দিয়ে অন্তরের কান্ড দেখছে। শাড়ীটা ঠিকভাবে পড়ানোর পর অন্তর মল্লিকাকে আধ কোলে করে সোজা ওয়াশরুমে নিয়ে গেলো। মল্লিকা অবাক হয়ে অন্তরকে দেখছে। ট্যাব ছেড়ে অন্তর মল্লিকার চোখে, মুখে পানি ছিটিয়ে মল্লিকাকে নিয়ে আবার রুমে ঢুকে পড়ল।

রুমে ঢুকার সাথে সাথেই অন্তর আচমকাই ব্যালকনির দরজার সাথ ধাক্কা খেলো। দরজাটা একদম খোলা। অন্তর কপাল কুঁচকে দরজাটার দিকে তাকিয়ে আছে। হিসেব মিলাতে পারছে না সে। অন্তর চোখে, মুখে বিরক্তির ছাপ ফুটিয়ে বিড়বিড় করে বলল,,,,,,

—–“দরজাটা খুলল কিভাবে? আমি তো দরজাটা এক্টু আগেই বন্ধ করে গেলাম। বাইরে তো অতোটা ও বাতাস নেই। যতোটা বাতাসে দরজাটা আপনা আপনি খুলে যাবে।”

অন্তর মনে মনে বিড়বিড় করতে করতে মল্লিকাকে বেডে বসিয়ে ব্যালকনীতে গিয়ে দাঁড়ালো। অন্তরের রুমের পাশাপাশি আরেকটা ব্যালকনী। ঐ ব্যালকনীতে নজর পড়ার সাথে সাথেই কিছু এক্টা ব্যালকনী থেকে সরে গেলো। মনে হচ্ছে কোনো মানুষের ছায়া। অন্তর বেশ আগ্রহ নিয়ে ওর ব্যালকনীর শেষ কর্ণারে গিয়ে ছাঁয়াটাকে খোঁজার চেষ্টা করছে। কিন্তু ছায়াটা আর দৃশমান হচ্ছে না। অন্তর অনেকক্ষন যাবত উঁকি চুকি মেরে ছায়াটাকে খুঁজছে আর বিড়বিড় করে বলছে,,,,,,

—-“আই থিংক ছায়াটা কোনো পুরুষের ছায়া হবে। আমাদের ব্যালকনীতে পুরুষের ছায়া কিভাবে পড়তে পারে? তাছাড়া দরজাটা আপনাআপনি খুলে নি, মনে হচ্ছে কেউ ব্যালকনীতে এসে দরজাটা খুলেছে। কে হতে পারে সে? তাহলে কি কেউ আমাদের ফলো করছে?”

মল্লিকা বসে থাকতে থাকতে কিছুটা অধৈর্য্য হয়ে বেড থেকে নেমে তেড়ে গেলো ব্যালকনীর দিকে। পিছন থেকে অন্তরের পিঠে এক্টা চিমটি মেরে মল্লিকা দাঁত গিজগিজ করে বলল,,,,,

—–“এই….আপনি এতো ইররেস্পন্সিবল কেনো? আমাকে একা রুমে বসিয়ে রেখে আপনি ব্যালকনীতে দাঁড়িয়ে চন্দ্র বিলাস করছেন তাই না?”

অন্তর মাথাটা ঝাঁকিয়ে নিজেকে কিছুটা কন্ট্রোল করে মল্লিকার হাত ধরে রুমে ঢুকে আবারো ভালো করে ব্যালকনীর দরজাটা লাগিয়ে মল্লিকাকে নিয়ে বেডে বসে পড়ল। অন্তর খুব টেনশানে পড়ে গেছে। মাথায় হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে সে কিছু এক্টা ভাবছে। অন্তরের এমন ভাবুক লুক দেখে মল্লিকা বেশ হকচকিয়ে গেলো। মল্লিকা কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে অন্তরের কাঁধে হাত রেখে বলল,,,,,,

—-“কি হয়েছে অন্তর? আপনাকে অনেক চিন্তিত মনে হচ্ছে!”

অন্তর মাথা থেকে হাত সরিয়ে মল্লিকার দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,

—-“মল্লিকা এই দুটো দিন আমাদের খুব সাবধানে থাকতে হবে। প্লিজ আমাকে না বলে তুমি কোথাও যেও না। এমনকি ওয়াশরুমে ও না।”

—-“কেনো অন্তর? আপনি কি কোনো কিছু নিয়ে ভয় পাচ্ছেন?”

—-“আমার মনে হচ্ছে কেউ আমাদের ফলো করছে মল্লিকা। এটা জাস্ট আমার ধারণা। বাকীটা আস্তে আস্তে বুঝতে পারব। তাই আমাদের যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে।”

অন্তরের কথা শুনে মল্লিকা বেশ ভয় পেয়ে গেছে। অন্তর মল্লিকার ভয় কাটানোর জন্য মল্লিকাকে ঝাপটে ধরে বলল,,,,,

—–“ভয় পাওয়ার কিছু নেই মল্লিকা। আমি তো আছি। আমি থাকতে তোমার কোনো ভয় নেই।”

মল্লিকা অন্তরের শার্ট আকঁড়ে ধরে বলল,,,,

—-“আমি ঘুমাবো অন্তর। ঘুমালে আর ভয় করবে না।”

অন্তর মল্লিকার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,,,,

—-“আগে খেয়ে নাও মল্লিকা। এরপর ঘুমাবে। ওয়েট আমি নিচ থেকে ফুড অর্ডার করে আনছি।”

—-“না না অন্তর প্লিজ আপনি কোথাও যাবেন না। আপনি এখান থেকেই খাবার অর্ডার করুন।”

—-“ওকে বাবা করছি। আগে তো আমাকে ছাড়ো।”

মল্লিকা অন্তরকে ছেড়ে গুটিশুটি মেরে খাটে বসে পড়ল। অন্তর তাড়াহুড়ো করে ল্যান্ডলাইনে কল করে খাবার অর্ডার করে দিলো। প্রায় দশ মিনিট পর একজন ওয়েটার হাতে করে অন্তরের অর্ডার অনুযায়ী খাবার নিয়ে এলো। ওয়েটার যেই না রুমের দরজা ধাক্কা দিতে যাবে অমনি পিছন থেকে কেউ এসে ওয়েটারের মুখে রুমাল চেঁপে ধরল। সাথে সাথে ওয়েটার টা সেন্সলেস হয়ে গেলো। খাবারের ট্রে টা হাতে নিয়ে হুডি ওয়ালা লোকটা অন্তরের রুমের দরজা ধাক্কালো। অন্তর মল্লিকার পাশ থেকে রুমের দরজাটা খুলে দিলো। অন্তর দরজা খুলেই হুডি ওয়ালা লোকটাকে দেখে ভ্রু কুঁচকে বলল,,,

—-“ডুড আপনার ফেইসটা দেখান। সচরাচর ওয়েটার রা তো এভাবে হুডি পরে চলাচল করে না। আপনার হঠাৎ এই লুক? বিষয়টা কেমন সন্দেহজনক না?”

হুডির নিচ থেকে মেয়েলী কন্ঠ ভেসে আসল। কাঁপা কাঁপা গলায় মেয়েটি হুডির নিচ থেকে অন্তরকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,

—-“স্যার মাফ করবেন। আমি এই লজটাতে নতুন কর্মচারী। কোনো এক্টা দুর্ঘটনায় আমার ফেইসটা এসিডে পুড়ে যায়। কেউ শত্রুতা করে আমার ফেইসটা জ্বালিয়ে দিয়েছে। নিজের ট্রিটমেন্টের খরচ চালানোর জন্য আমাকে বাধ্য হয়ে এই কাজটা বেছে নিতে হয়েছে। আমি আপনাকে এই জ্বলন্ত ফেইসটা দেখাতে পারব না। মাফ করবেন আমায়।”

অন্তর অসহায় দৃষ্টিতে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে। অন্তর বেশ ব্যথিত হয়ে মেয়েটার হাত থেকে ট্রে টা হাতে নিয়ে রুমের দরজা আটকে রুমে ঢুকে পড়ল। মুহূর্তেই মেয়েটি হুডির ক্যাপটা মুখ থেকে সরিয়ে শয়তানী হাসি দিয়ে মিনমিন করে বলল,,,,,

—-“অন্তর তুমি মোটে ও ঠিক করলে না আমার শহরে এসে আবার আমার মুখোমুখি হয়ে। তোমার সাথে প্রথম দেখাটা আমার এভাবে অন্য সুরুত ধরে করতে হবে আমি জাস্ট ভাবতে পারি নি। কাল থেকে খেলা জমবে। এবার তুমি আমারই হবে।”

কথাগুলো বলেই মেয়েটা দ্রুত পায়ে প্রস্থান নিলো।

#চলবে,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here