মন চায় তোকে পর্ব-১৮

0
1945

#মন_চায়_তোকে
#পার্ট_১৮
#নিশাত_জাহান_নিশি

বিকেল পাঁচটা। তন্ময় ওর পরিবার নিয়ে অনন্যার বাড়ি এসে হাজির হয়ে গেলো।

অনন্যা, মল্লিকা আর মিসেস অরুনীমা ড্রইং রুমে বসে আড্ডা দিচ্ছিলো। এর মাঝেই তন্ময়রা এসে হাজির হয়ে গেলো। অনন্যা খানিক লজ্জা পেয়ে ড্রইং রুম ছেড়ে নিজের রুমে চলে গেলো। মল্লিকা বেশ অবাক হয়ে তন্ময়দের দেখছে। অনন্যার বিয়ের ব্যাপারে মল্লিকা কিছুই জানে না। অন্তর মল্লিকাকে কিছুই বলে নি। তন্ময়ের আম্মু, আব্বু বেশ বিনীত কন্ঠে অনন্যার আম্মুর সাথে কথা বলছে। তন্ময় মাথা নিচু করে বসে আছে। মল্লিকা আগা মাথা কিছু না বুঝে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেলো। অন্তর ল্যাপটপে কাজ করছে। মল্লিকা রুমে ঢুকেই অন্তরের কাছ থেকে ল্যাপটপটা ছিনিয়ে নিয়ে বেশ তেজী কন্ঠে বলল,,,,,

—-“নিচে এসব কি হচ্ছে হুম?”

অন্তর এক ভ্রু উঁচু করে বলল,,,,,

—-“কি হচ্ছে?”

—-“এয়ারপোর্টে যে ছেলেটা আমাদের পিক করতে গিয়েছিলো সে ছেলেটা ওর ফ্যামিলি নিয়ে এসেছে।”

অন্তর তাড়াতাড়ি বসা থেকে উঠে জুতো জুড়ো পায়ে পড়ছে আর এক নিশ্বাসে বলছে,,,,,

—-“ওহ্ সিট। তন্ময় এসে গেছে। আগে বললে না কেনো?”

মল্লিকা খুব অবাক হয়ে বলল,,,,

—-“আগে বললে কি হতো?”

—-“আগেই নিচে চলে যেতাম। উনাদের সাথে কথা বলতাম।”

—“উফফফ অন্তর… আমাকে ক্লিয়ারলি বলুন তো ওরা কেনো এসেছে?”

—-“অনন্যার বিয়ের ডেইট ফিক্সড করতে।”

—-“এ্যা। তন্ময়ের সাথে অনন্যার বিয়ে?”

—-“হুম। আজই ডেইট ফিক্সড করব।”

—-“তো কতোদিন ধরে এসব বিয়ের আলাপ চলছে?”

—-“অনেক আগে থেকেই।”

—-“আমাকে একবার ও জানানোর প্রয়োজন মনে করেন নি তাই না?”

অন্তর শুকনো ঢোক গিলে মল্লিকার হাতে চুমো খেয়ে বলল,,,,,

—-“একদম ভুলে গেছিলাম মল্লিকা। টেনশানে টেনশানে মাথা থেকে বের হয়ে গিয়েছিলো।”

মল্লিকা এক ঝটকায় হাতটা সরিয়ে বেশ অভিমানী স্বরে বলল,,,,,

—-“থাক এখন সাফাই গাইতে হবে না। আমার বুঝা হয়ে গেছে। যান যান নিচে যান। সবাই আপনার জন্য ওয়েট করছে।”

অন্তর বাঁকা হেসে মল্লিকাকে পেছন থেকে ঝাপটে ধরে মল্লিকার পিঠে এক্টা চুমো খেয়ে বলল,,,,,

—-“ইসসস রাগ করলে আমার নীলান্জ্ঞনাকে খুব খুব খুব কিউট লাগে। তখন ইচ্ছে করে সারাজীবন ঠিক এভাবেই রাগাই।”

মল্লিকা অন্তরের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে মুখটা বাঁকা করে রুম থেকে বের হয়ে সোজা নিচে চলে গেলো। অন্তর হি হি করে হেসে রুম থেকে বের হয়ে ড্রইং রুমে চলে গেলো। মিসেস অরুনীমা মল্লিকার সাথে তন্ময়ের আম্মু, আব্বুর পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। উনারা মল্লিকার প্রশংসা করতে করতে মুখে ফেনা বের করে ফেলছে। মিসেস অরুনীমা মল্লিকাকে ইশারা দিয়ে বলল নাস্তা রেডি করার জন্য। মল্লিকা জলদি কিচেন রুমে চলে গেলো। অন্তর তন্ময়ের আম্মু, আব্বুর সাথে অনন্যার বিয়ে নিয়ে কথা বলছে। সারফারাজ চৌধুরীকে ছাড়া অন্তর বিয়ের ডেইট ফিক্সড করত চাইছে না। অনন্যা রুমে বসে আগে থেকে মল্লিকার দেওয়া পিংক কালার শাড়িটা বের করে রেখেছে। এবার শুধু ফ্রেশ হয়ে এসে নিজের মনের মতো সাজবে।

মল্লিকা প্লেইটে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি সাজাচ্ছে। সাথে ফল, ফ্রুটস, কেক, বিস্কিট। এর মাঝেই সারফারাজ চৌধুরী চলে এলো। হাসি মুখে উনি তন্ময়ের আম্মু আব্বুর সাথে খোশ গল্পে মেতে উঠলো। অন্তর বসা থেকে উঠে কিচেনে গেলো মল্লিকাকে দেখতে। মল্লিকা কোঁমড়ে কাপড় গুজে চুলায় চা বসিয়েছে। মল্লিকার লুক দেখে অন্তর হু হা করে হেসে মল্লিকার পাশে দাঁড়িয়ে বলল,,,,,

—-“সামান্য চা বানাবে। এতে এভাবে কাপড় গুজার কি আছে? তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে হাড়ি হাড়ি ভাত, তরকারী রান্না করছ। তুমি পারো ও বটে মল্লিকা। হাসিয়ে ছাড়লে আমায়।”

মল্লিকা চোখ লাল করে রান্না করার খুন্তি নিয়ে অন্তরের মুখের কাছে তেড়ে এসে বলল,,,,,

—-“চুপ একদম চুপ। না হয় এক্ষুনি এই গরম খুন্তি টা গাঁয়ে লাগিয়ে দিবো। আমার যেভাবে ইচ্ছে হবে আমি সেভাবে কাপড় গুজে রাঁধব। এতে আপনার কি? আসলে আপনার কাজ নেই খেয়ে দেয়ে বুঝেছেন? আজাইরা মানুষ তো, তাই অকারণে আমার পিছনে লাগতে আসেন।”

অন্তর আপাতত হাসিটা চেঁপে মল্লিকার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,

—-“কাল থেকে আর জ্বালাব না। আজকের দিনটাই আমাকে সহ্য করে নাও। ওকে?”

মল্লিকা মুখটা কালো করে বলল,,,,,

—-“কাল কোথায় যাবেন অন্তর?”

—-“কোথায় আবার অফিসে। কাল থেকে সব আগের মতো শুরু হবে।”

—-“রাত হবে ফিরতে তাই না?”

—-“হুম কমচে কম দশটা, এগারোটা তো বাজবেই।”

মল্লিকা অন্তরের থেকে মুখটা ফিরিয়ে চুলা থেকে চা নামিয়ে কাপে ঢালছে। অন্তর বেশ বুঝতে পেরেছে মল্লিকা মন খারাপ করেছে। অন্তর আহ্লাদি কন্ঠে মল্লিকাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল,,,,,

—-“ওলে বাবা লে। আমার নীলান্জ্ঞনা দেখছি আমাকে এখন চোখে চোখে হারাচ্ছে। আমাকে কাল থেকে কাছে পাবে না বলে মনটা কেমন খারাপ করে ফেলেছে।”

—-“বয়ে গেছে আমার আপনার জন্য মন খারাপ করতে। দেখি ছাড়ুন, চা বানানো হয়ে গেছে, নাস্তা সাজানো ও হয়ে গেছে। এবার শুধু সার্ভ করতে হবে।”

অন্তর মল্লিকাকে ছেড়ে নাস্তার ট্রে টা হাতে নিয়ে মল্লিকার দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,

—-“আমি নাস্তার ট্রে টা নিয়ে যাচ্ছি। তুমি চায়ের ট্রে টা নিয়ে এসো।”

মল্লিকা মুচকি হাসল। অন্তর চোখ মেরে নাস্তার ট্রে টা নিয়ে ড্রইং রুমে চলে গেলো। মল্লিকা মৃদ্যু হেসে চায়ের ট্রে টা নিয়ে ড্রইং রুমে চলে গেলো। অন্তর আর মল্লিকা টেবিলের উপর চায়ের ট্রে টা আর নাস্তার ট্রে টা সাজিয়ে দিলো। মিসেস অরুনীমা হেসে হেস মল্লিকাকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,

—-“মল্লিকা….যাও অনন্যাকে রেডি করিয়ে নিয়ে এসো।”

মল্লিকা মাথা নাঁড়িয়ে চলে গেলো অনন্যার রুমে। অনন্যার রুমের ড্রেসিং টেবিলের দিকে চোখ বুলিয়ে মল্লিকা বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে অনন্যার দিকে। অনন্যা সেজে গুজে বিয়ে বাড়ি হয়ে আছে। পিংক কালার শাড়ী। সাথে ম্যাচ করা অরনামেন্টস। চোখে মোটা করে কাজল, ঠোঁটে লাল লিপস্টিক। চুল ছেড়ে মাঝ সিঁথি বরাবর টিকলি। হাত ভর্তি পিংক কালার চুড়ি। মল্লিকা অনন্যার পাশে দাঁড়িয়ে আয়নাতে অনন্যার প্রতিচ্ছবির দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,

—-“তুতুমি সেজে গুজে রেরেডি?”

অনন্যা লাজুক হাসি দিয়ে বলল,,,,,

—-“হুম ভাবী রেডি। আমাকে কেমন লাগছে বলো তো?”

—-“ফার্স্ট ক্লাস লাগছে।”

মল্লিকা এখনো চোখ বড় বড় করে অনন্যার দিকে তাকিয়ে আছে। অনন্যা কৌতুহলী দৃষ্টিতে মল্লিকার দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,

—-“কি হয়েছে ভাবী? এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?”

—-“তোমার স্পিড দেখে আমি হয়রান। আমি তো ভেবেছিলাম আমি এসে তোমাকে সাজিয়ে দিবো। কিন্তু হলো পুরো উল্টো।”

অনন্যা দাঁত বের করে হেসে বলল,,,,,

—-“ওহ্ আচ্ছা এই ব্যাপার। আমি তো ভেবেছিলাম কি না কি। আসলে ভাবী…. আমি নিজে সাজতে পছন্দ করি।”

মল্লিকা মুচকি হেসে বলল,,,,,

—-“ভালোই হয়েছে বলো। আমার কাজ কমে গেলো। এবার শুধু তোমাকে নিয়ে ওদের সামনে বসিয়ে দিলেই হবে।”

কথাটা বলেই মল্লিকা হু হা করে হেসে দিলো। অনন্যা ও মল্লিকার সাথে তাল মিলিয়ে হাসছে। অনেকক্ষন হাসাহাসির পর মল্লিকা অনন্যার মাথায় বড় এক্টা ঘোমটা টেনে দিয়ে অনন্যাকে ধরে রুম থেকে বের করে সোজা ড্রইং রুমে চলে গেলো। তন্ময়ের আম্মুর পাশে অনন্যাকে বসিয়ে দিয়েছে মল্লিকা। অনন্যা লজ্জা পেয়ে মুখটা নিচু করে রেখেছে। তন্ময় আড়চোখে অনন্যার দিকে তাকাচ্ছে। তন্ময়ের আম্মু মৃদ্যু হেসে অনন্যার মুখ থেকে ঘোমটা টা সরিয়ে অনন্যার দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,

—-“মাশাআল্লাহ্ আমাদের অনন্যা মা দিন দিন আরো বেশি গ্লো করছে। দেখলেই চোখ ধাঁধিয়ে যায়।”

উপস্থিত সবাই তন্ময়ের আম্মুর কথায় খিলখিল করে হেসে দিলো। অনন্যা লজ্জায় মুর্ছা যাচ্ছে। তন্ময় কেবল আড়চোখে অনন্যার দিকে তাকাচ্ছে। মল্লিকা হেসে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,

—-“সবাই নাস্তা করে নিন আগে। এরপর মেয়ের সাথে কথা বলবেন দেন বিয়ের ডেইট ফিক্সড করবেন।”

মল্লিকার কথায় অন্তর সায় জানিয়ে বসা থেকে সবার দিকে চায়ের কাপ এগিয়ে দিচ্ছে আর বলছে,,,,,

—-“প্লিজ খেয়ে নিন। এরপর কথা বার্তা হবে।”

সবাই অন্তরের হাত থেকে চায়ের কাপ নিয়ে খাওয়া শুরু করল। মল্লিকা সবার মুখে মিষ্টি পুরে দিলো। অন্তরের মুখে মিষ্টি দিতে নিলেই অন্তর মল্লিকার আঙ্গুলে কামড় বসিয়ে দেয়। মল্লিকা ব্যাথা পেয়ে ও চেঁপে যায়। সবার সামনে তো আর চিৎকার করা যাবে না। অন্তর মুখ টিপে হাসছে। মল্লিকার কাঁদো কাঁদো ফেইসটা দেখে অন্তর বেশ মজা পাচ্ছে। মল্লিকা অন্তরের দিকে তাকিয়ে রাগে ফুসছে।

প্রায় পনেরো মিনিট পর সবাই খাওয়া দাওয়া সেরে মূল কথায় এলো। তন্ময়ের আব্বু সারফারাজ চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,

—-“তো সারফারাজ ভাই চলেন এবার ভালো দেখে এক্টা বিয়ের ডেইট ফিক্সড করে ফেলি।”

সারফারাজ চৌধুরী হেসে বলল,,,,,

—-“আই থিংক সামনের শুক্রবার বিয়ের ডেইট টা ফিক্সড করা হলে ভালো হবে। শুক্রবার ছাড়া অন্য কোনো দিন রিলেটিভসরা ও ফ্রী থাকে না। সব দিক বিবেচনা করে পার্সোনালী আমরা মনে হচ্ছে সামনের শুক্রবারই ঠিক আছে। এবার আপনাদের মতামত জানার পালা?”

তন্ময়ের আব্বু সারফারাজ চৌধুরীর সাথে হাত মিলিয়ে বলল,,,,,

—-“ডান। সামনের শুক্রবারই তাহলে তন্ময় আর অনন্যার বিয়েটা হচ্ছে। আমাদের হাতে আরো এক সপ্তাহ পড়ে আছে। আজ তো মাএ শুকবার। অনেকটা সময় নিয়ে বিয়ের এরেন্জ্ঞমেন্ট করা যাবে।”

উপস্থিত সবাই বেশ খুশি। খুশিতে আবারো সবাই মিষ্টি মুখ করছে। অনন্যা আর তন্ময় দুজন দুজনের দিকে এক দৃষ্টিতে আছে। তন্ময়ের ঠোঁটে বাঁকা হাসি। আর অনন্যার ঠোঁটে লজ্জামিশ্রিত হাসি। অন্তর আর মল্লিকা উড বি বর আর বউয়ের দিতে তাকিয়ে মুচকি হাসছে। প্রায় এক ঘন্টা যাবত আড্ডা দিয়ে তন্ময় অনন্যার হাতে এক্টা ডায়মন্ড রিং পড়িয়ে সবার থেকে বিদেয় নিয়ে চলে গেলো। তন্ময়রা যাওয়ার পর পরই মল্লিকা অনন্যার খিল্লি উড়ানো শুরু করেছে। সাথে অন্তর ও আছে। নানাভাবে ওরা অনন্যাকে লজ্জা দিচ্ছে। মিসেস অরুনীমা মনটা খারাপ করে ওদের কাহিনী দেখছে। আর এক সপ্তাহ পর উনার আদরের ছোট মেয়ে এই বাড়ি ছেড়ে শ্বশুড় বাড়ি চলে যাবে। এসব ভেবে উনার মন ব্যথিত হয়ে আছে।

রাত দশটা,,,,,

বাড়ির সবাই ডাইনিং টেবিলে ডিনার করতে বসেছে। মল্লিকা আর অরুনীমা সবাইকে সার্ভ করে নিজেরা ও খেতে বসে গেছে। খাওয়ার মাঝখানে অন্তর সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,

—-“আমি ভাবছি কাল থেকে মল্লিকাকে ভার্সিটিতে দিয়ে আসব। বাড়িতে বসে বসে কি করবে। কাজ কর্ম তো কিছুই জানেই না। তাই স্টাডিটা কনটিনিউ করলে বেটার হয়।”

অন্তরের প্রস্তাবে রাজি হয়ে মিসেস অরুনীমা আর সারফারাজ চৌধুরী মাথা নাঁড়িয়ে বলল,,,,,

—-“হুম আমাদের কোনো আপওি নেই। তোদের যা ভালো মনে হয় তাই কর।”

মল্লিকা ভাতের লোকমা মুখে নিয়ে চোখ লাল করে অন্তরের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বলল,,,,,

—-“ইসসস এই ছেলেটা আর কোনো টপিক পেলো না? বেছে বেছে আমার পড়াশোনার টপিকটাই পেলো। কোথায় ভাবলাম বিয়ে হয়েছে এক্টু চিল করব। এক্টু গুছিয়ে সংসার করব তা না এখন ঢ্যাং ঢ্যাং করে ভার্সিটি টু বাড়ি, বাড়ি টু ভার্সিটি আসা যাওয়া করতে হবে।”

অন্তর মল্লিকার দিকে তাকিয়ে মনে মনে হাসছে। অন্তর ঠিক বুঝতে পেরেছে মল্লিকার হিসেব মিলে নি। তাই মল্লিকা মুখটা বাংলার পাঁচ করে রেখেছে।

প্রায় বিশ মিনিট পর সবাই খেয়ে দেয়ে নিজেদের রুমে চলে গেলো। অন্তর আর মল্লিকা রুমে ঢুকে কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়ল। অন্তর মল্লিকাকে জড়িয়ে ধরে বাঁকা হেসে মল্লিকাকে আদর করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। মল্লিকা মুচকি হেসে অন্তরকে আঁকড় ধরে অন্তরের সাথে সায় মিলাচ্ছে।

অনন্যা কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে তন্ময়ের সাথে প্রেমালাপ করছে। তন্ময় রুমের ব্যালকনিতে বসে হেসে হেসে কথা বলছে। প্রায় এক ঘন্টা যাবত কথা বলার পর অনন্যার চোখ লেগে এলো। তন্ময়কে লাইনে রেখেই অনন্যা ঘুমিয়ে পড়ল। তন্ময় অনেকক্ষন হ্যালো হ্যালো করে অনন্যার কোনো রেসপন্স না পেয়ে ফোনটা কেটে নিজেও রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়ল।

পরের দিন,,,,,

সকাল আটটা। মল্লিকা ঘুম থেকে উঠে শাওয়া নিয়ে কিচেনে চলে গেছে। মিসেস অরুনীমাকে নাস্তা বানানোর কাজে হেল্প করছে সর। প্রায় আধ ঘন্টা পর অন্তর ঘুম থেকে উঠে শাওয়ার নিয়ে অফিসের জন্য রেডি হয়ে ল্যাপটপটা হাতে নিয়ে নিচে চলে গেলো। মল্লিকা এতক্ষনে ডাইনিং টেবিলে নাস্তা সাজিয়ে দিয়েছে। অনন্যা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং টেবিলে চলে এলো। সারফারাজ চৌধুরী ও রেডি হয়ে চলে এসেছে। সবাই এক সাথে বসে ব্রেকফাস্ট করছে। সারফারাজ চৌধুরী কফির মগে চুমুক দিচ্ছে আর অন্তরকে উদ্দেশ করে বলছে,,,,,

—-“অন্তর….আজকের মধ্যেই ইনভিটিশান কার্ড গুলো ছাপিয়ে ফেলতে হবে। কাল থেকে রিলেটিভসদের বাড়িতে কার্ড বিলি করতে হবে। হাতে কিন্তু সময় তেমন নেই।”

—-“তুমি চিন্তা করো না আব্বু। অফিসের কাজ সেরে আজ রাতেই আমি রাতুলের দোকানে চলে যাবো। অনন্যার চুজ করা ডিজাইন অনুযায়ী বিয়ের কার্ড ছাপানো হবে। আর কাল থেকেই ইনভিটেশান কার্ড রিলেটিভসদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে।”

সারফারাজ চৌধুরী মাথা নাঁড়িয়ে হ্যাঁ বুঝালো। অন্তর এবার মল্লিকাকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,

—-“মল্লিকা….তাড়াতাড়ি ব্রেকফাস্ট করে রেডি হয়ে নাও ভার্সিটি যেতে হবে।”

মল্লিকা মাথা নাঁড়িয়ে ব্রেকফাস্ট টেবিল থেকে উঠে রুমে গিয়ে কালো বোরখা সাথে কালো হিজাব পড়ে রেডি হয়ে নিলো।

#চলবে,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here