#মন_চায়_তোকে
#পার্ট_৭
#নিশাত_জাহান_নিশি
—-“আমি খুব খারাপ তাই না? কারণে, অকারণে আপনাকে কষ্ট দেই!”
অন্তর মলিন হেসে বলল,,,,,
—-“প্রথম দিনের ব্যাপারটা এক্টু খারাপ লেগেছিলো তবে সত্যিটা জানার পর থেকে তোমার হাজার পাগলামী ও আমার খারাপ লাগবে না। উল্টে ভালো লাগবে। তোমার করা প্রত্যেকটা টর্চার আমাকে বেশ আনন্দ দিচ্ছে।”
মল্লিকা বেকু্ব হয়ে অন্তরের দিকে তাকিয়ে আছে। অন্তরের কথার আগা মাথা সে কিছুই বুঝছে না। মল্লিকা বেশ কৌতুহল নিয়ে অন্তরের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,,
—-“কোন সত্যির কথা বলছেন আপনি?”
অন্তর থতমত খেয়ে গলা ঝাঁকিয়ে বলল,,,,
—-“আরে কথার কথা বলছি।”
অন্তর আবার কিছুটা বাঁকা হেসে মল্লিকার কানে ফিসফিসিয়ে বলল,,,,,,
—-“একচুয়েলি আঙ্কেল ফোন করে বলল তোমার মাথায় নাকি এক্টু প্রবলেম আছে। যাকে বলে হাফ ম্যান্টাল।”
মুহূর্তেই মল্লিকার কৌততুহলী চোখ দুটো রাগে লাল হয়ে গেলো। হুট করে মল্লিকা অন্তরের শার্টের কলার চেঁপে ধরে অন্তরের নাকের সাথে নাক লাগিয়ে চোয়াল শক্ত করে বলল,,,,,,
—-“কি বললেন আপনি? আমি হাফ ম্যান্টাল?”
—-“আরে আরে আমি কখন বললাম? বলেছে তো তোমার আব্বু। আমি জাস্ট এক্টু মাসালা মিক্স করে বলেছি। এতে এতো হাইপার হওয়ার কি আছে? আমার বউ হাফ ম্যান্টাল হলে ও আমার কোনো প্রবলেম নেই। আমি ঠিক মানিয়ে নিবো। এছাড়া পাবনা হসপিটাল তো আছেই। যদি মানাতে না পারি তাহলে হসপিটালে এডমিট করাব। আশা করছি ট্রিটমেন্টের কোনো ত্রুটি হবে না।”
কথা গুলো বলেই অন্তর হু হা করে হাসতে লাগল। অন্তরের হাসি দেখে মল্লিকার রাগটা যেনো আরো তিনগুন বেড়ে গেলো। মল্লিকা দাঁত গিজগিজ করে বলল,,,,
—-“তোকে আমি পিস পিস করে কেটে শেয়াল কুকুরকে খাওয়াবো। চিনিস তুই আমাকে?”
মল্লিকার এমন ভয়ংকর রূপ দেখে অন্তরের কেমন ঘোর লেগে এলো। অন্তর ঘোর লাগা কন্ঠে মল্লিকার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,
—-“হুম চিনি তো। “তুমি আমার নীলান্জ্ঞনা!”
মল্লিকা কপাল কুঁচকে বলল,,,,,,
—-“কে নীলান্জ্ঞনা?”
—-“কেনো…. তুমি!”
মল্লিকা চোখ লাল করে অন্তরের নাকের কাছে তুড়ি মেরে বলল,,,,,
—-“ও হ্যালো মিস্টার আমার নাম নীলান্জ্ঞনা না। আমার নাম মল্লিকা।”
—-“ঐ একই হলো।”
—-“ধ্যাত আপনার সাথে কথা বলাই বেকার। নিজেই একজন ফুল ম্যান্টাল। আবার আমাকে বলতে আসে আমি নাকি হাফ ম্যান্টাল।”
কথা গুলো বলেই মল্লিকা অন্তরের শার্টের কলার ছেড়ে ডেস্কের প্রথম ড্রয়ারটা খুলে ফাস্টএইড বক্সটা নিয়ে অন্তরের মুখোমুখি দাঁড়ালো। অন্তর মল্লিকার চোখের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বিড়বিড় করে বলছে,,,,,,
—-“তুমিই আমার সেই নীলান্জ্ঞনা। যাকে আমার মন চায়। যার নীলাভ চোখ দেখে আমি প্রথম প্রেমের পরশ পেয়েছি। একদিন মন খুলে আমার সব মনের কথা তোমাকে বলব। ঐদিন তোমার মনে ও থাকবে আমার জন্য অফুরন্ত ভালোবাসা। ভালোবাসি নীলান্জ্ঞনা। খুব খুব খুব ভালোবাসি।”
অন্তরের অদ্ভুত চাহনী দেখে মল্লিকা কিছুটা অস্বস্তিবোধ করে গলা ঝাঁকিয়ে অন্তরকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,
—-“এভাবে ড্যাব ড্যাব করে কি দেখছেন হুম? তাড়াতাড়ি বেডে গিয়ে বসুন। কাটা জায়গায় ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছি।”
অন্তর মুখে হাত দিয়ে চোখ দুটো বড় বড় করে অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে মল্লিকার দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,
—-“ওহ্ মাই গড। এসব কি শুনছি আমি! তুমি সত্যি সত্যি আমার হাতে ব্যান্ডেজ করে দিবে?”
—-“এতে এতো অবাক হওয়ার কি আছে? আজব! আমার কারনেই তো আপনাকে চোট পেতে হলো। তাই আমিই আপনার সেবা করব।”
অন্তর এক ভ্রু উঁচু করে বাঁকা হেসে বলল,,,,,
—-“সত্যিই কি চাপে পড়ে তুমি আমার সেবা করবে? নাকি তুমি আমার উপর ক্রাশিত?”
মল্লিকা তেজী কন্ঠে অন্তরের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,
—-“বয়ে গেছে আপনার উপর ক্রাশ খেতে আমার। আমি যার তার উপর ক্রাশ খাই না। এক্টু মনুষ্যত্ববোধ থেকে সেবা করতে গেলে যে এতো কটু কথা শুনতে হবে আমার সত্যি জানা ছিলো না।”
কথাগুলো বলেই মল্লিকা রাগ দেখিয়ে অন্তরকে ক্রস করে যেই না সামনের দিকে পা বাড়াতে যাবে অমনি অন্তর মল্লিকার হাত ধরে নম্র স্বরে বলল,,,,,,
—-“মজা করেছি। প্লিজ এতো হাইপার হয়ো না। ব্যান্ডেজটা করে দাও। আমার হাতটা খুব জ্বালা করছে।”
মল্লিকা শান্ত কন্ঠে বলল,,,,,
—-“তাড়াতাড়ি বেডে এসে বসুন।”
অন্তর লক্ষী ছেলের মতো বেডের উপর বসে গেলো। মল্লিকা হনহনিয়ে অন্তরের পাশে বসে অন্তরের শার্টের হাতাটা উপরে তুলে কাটা জায়গাটা স্যাভলন দিয়ে ওয়াশ করে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিলো। মল্লিকার কেয়ারিং অন্তরের মনকে আরো বেশি মল্লিকার দিকে টানছে। ওভারঅল মল্লিকা ওর কাছে পার্ফেক্ট।
মল্লিকা ওর কাজ সেরে ফাস্টএইড বক্সটা ডেস্কের ড্রয়ারে রেখে অন্তরের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলল,,,,,
—-“আপনি বেডে শুয়ে পড়ুন। আমি সোফায় শুবো।”
অন্তর কপালে বিরক্তির রেখা ফুটিয়ে মল্লিকার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলল,,,,,,
—–“এতো বড় এক্টা বেড রেখে তুমি সোফায় শোতে যাবে কেনো?”
—-“আমি আপনার সাথে এক বেডে শুতে পারব না তাই!”
—-“কেনো ভয় পাচ্ছ আমাকে? আমি তোমার থেকে স্বামীর অধিকার চাইব বলে।”
—-“হুম ঠিক ধরেছেন!”
—-“তুমি নিশ্চিন্তে থাকতে পারো মল্লিকা। তোমার অনুমতি ছাড়া আমি তোমার গাঁয়ে টাচ করব না। অন্তত একবার হলে ও আমাকে বিশ্বাস করে দেখতে পারো।”
মল্লিকা কিছুটা ভেবে বলল,,,,,
—-“উহহহ…. আপনাকে আমি বিশ্বাস করতে পারি। তবে এক্টা শর্তে!”
—-“কি শর্ত?”
—-“আমাদের মাঝখানে এক্টা কোল বালিশ থাকবে। আপনি দয়া করে সীমানা পাড় করে আমার গাঁয়ের উপর পড়বেন না।”
অন্তর মলিন হেসে বলল,,,,,,
—-“তুমি যা বলবে তাই হবে।”
মল্লিকা অন্তরের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে অন্তরের নাকের কাছে তুড়ি মেরে বলল,,,,,
—-“আপনি কখনো আমার গাঁয়ে টাচ করার অনুমতি পাবেন না বুঝেছেন?”
অন্তর বাঁকা হেসে মল্লিকার তুড়ি দেওয়া আঙ্গুলটা চেঁপে ধরে বলল,,,,,,
—-“সময় সব বলে দিবে। আপাতত না হয় সঠিক সময়টার প্রতীক্ষায় থাকব।”
কথাটা বলেই অন্তর মল্লিকার হাতটা ছেড়ে বেডের এক কোণায় শুয়ে পড়ল। মল্লিকা মুখটা বাঁকা করে বুকের উপর দুইহাত গুজে অন্তরের কথা গুলো ব্যঙ্গ করে মিনমিনিয়ে বলল,,,,,
—-“সময় সব বলে দিবে। আপাতত না হয় সঠিক সময়ের প্রতীক্ষায় থাকব।”
মল্লিকা এবার কিছুটা সিরিয়াস হয়ে বলল,,,,,,
—-“তোর সঠিক সময় জিন্দেগিতে ও আসবে না বুঝলি? মল্লিকা আর কখনো কাউকে ভালোবাসবে না। ভালোবাসলেই ঠকতে হয়। যেমনটা নীল আমাকে ঠকিয়েছে।”
কথাগুলো বলেই মল্লিকা বেডের উপর ধপ করে বসে মাঝখানে বড় এক্টা কোল বালিশ রেখে অন্যপাশ ফিরে শুয়ে পড়ল। অন্তর আর মল্লিকা দুজনই বিপরীত পাশ ফিরে শুয়ে আছে। এক জনের মনে প্রবল ভালোবাসা কাজ করছে। আর অন্যজনের মনে প্রবল জড়তা কাজ করছে। দুজনই দুটো আলাদা জগতে আছে। প্রায় কিছুক্ষন পর দুজনই চোখ বুজে ঘুমের রাজ্যে পাড়ি দিলো।
পরের দিন,,,,,,
সকাল আটটা। সকালের মুঠো ভরা রোদের আলো জানালার কাঁচ ভেদ করে মল্লিকার পুরো শরীরে তিক্তকা ছড়িয়ে দিচ্ছে। সকালের রোদটা খুবই তেজী। কাঁচা ঘুম ভাঙ্গিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। চোখে রোদের ঝলক পড়লেই নাক, মুখ কেমন কুচকে আসে। তখন হাজার চাইলে ও চোখ বুজে রাখা যায় না। উল্টে মাথা ধরে আসে। মল্লিকার রিসেন্ট অবস্থাটা ও ঠিক এরকম। সূর্য্যের তেজী ঝলকে চোখ, মুখ কুচকে রেখেছে সে। আর কিছুতেই চোখ বুজে রাখা যাবে না। নাছোড়বান্দা সূর্য কিছুতেই তার তেজ কমাবে না। দিন বাড়ার সাথে সাথে তেজী ভাবটা আরো দ্বিগুন বাড়িয়ে তুলবে।
এর মাঝেই কারো গলা ঝাঁকানোর শব্দ মল্লিকার কানে বাজতে লাগল। মল্লিকা এবার ফট করে চোখ জোড়া খুলে ফেলল। পিটপিট চোখে মল্লিকা অন্তরের দিকে তাকিয়ে আছে। সদ্য গোসল করেছে অন্তর। সিল্কি চুল গুলো থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে। ঠোঁটে অন্তরের বাঁকা হাসি। পড়নে কেবল মোটা এক সাইজ গেন্জ্ঞী। গলায় টাওয়াল ঝুলানো। হাতে ধোঁয়া উঠা দুই মগ কফি। এক মগ কফি অন্তর মল্লিকার দিকে এগিয়ে রেখেছে। মল্লিকা খুব মুগ্ধ দৃষ্টিতে অন্তরের দিকে তাকিয়ে আছে। এই রূপে অন্তরকে অসম্ভব ড্যাশিং লাগছে। যেকোন মেয়ে অন্তরকে এই রূপে দেখলে কাত হয়ে যাবে। মল্লিকার মৌণতা দেখে অন্তর গলা ঝাঁকিয়ে মল্লিকার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,
—-“তো মিসেস নীলান্জ্ঞনা। এবার কি আপনার বিছানা ছেড়ে উঠা হবে? ধোঁয়া উঠা হট কফি আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। আমি নিজ হাতে বানিয়েছি। একবার এর টেস্ট পেলে বার বার খেতে মন চাইবে। তখন হয়তো রোজ সকালে আমার কানের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করে বলবে,,,,,,
—-“প্লিজ অন্তর তোমার হাতের স্পেশাল এক মগ কফি বানিয়ে দাও না। তোমার হাতের বানানো কফির টেস্ট ই আলাদা।”
তখন অবশ্য আমি নাকোচ করব না। উল্টে হাসি মুখে তোমার সব আবদার মেনে নিবো।
মল্লিকা বড় এক্টা হাই তুলে শোয়া থেকে বসে অন্তরের হাত থেকে কফির মগটা নিয়ে অন্তরের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,
—-“আমি ও খুব ভালো কফি বানাতে পারি বুঝেছেন? আমার হাতের কফি ও খুব স্পেশাল। আগে তো আমি রোজ সকালে উঠে আব্বুর জন্য গরম গরম কফি বানাতাম। আব্বু কফিতে চুমুক দিতো আর আমার গুনোগান করত।”
অন্তর কফির মগটা নিয়ে মল্লিকার পাশে বসে কফিতে চুমুক দিচ্ছে আর বলছে,,,,,,
—-“ওহ্ তাই বুঝি? তাহলে কাল থেকে প্রতিদিন সকালে তুমি আমার জন্য গরম গরম কফি করে আনবে কেমন? তোমার হাতের স্পেশাল কফি খেয়ে ঘুমের রেশ কাটাবো।”
মল্লিকা কফিতে চুমুক দিতে যেয়ে ও থেমে গেলো। পর পর কয়েকটা শুকনো ঢোক গিলে মল্লিকা বিড়বিড় করে বলল,,,,,,,
—-“ইসসসস কি দরকার ছিলো আগ বাড়িয়ে মিথ্যে বলার? গেলাম তো ফেঁসে এবার। আমি তো কফির “ক” ও জানি না। তো বানাবো কি করে শুনি? ধ্যাত ভাল্লাগে না। সবসময় চালাকী করতে গিয়ে নিজেই ধরা খেয়ে যাই। লোকটা যখন দেখবে আমি কফি বানাতে পারি না, তখন নিশ্চয়ই আমার খিল্লি উড়াবে।”
মল্লিকা কিছু এক্টা ভেবে চিন্তে বাঁকা হেসে আবার বিড়বিড় করে বলল,,,,,,,
—-“ধ্যাত মল্লিকা এতো ভয় পাচ্ছিস কেনো? ইউটিউব আছে না? ইউটিউব দেখে ঠিক শিখে নেবো কফি বানানোর ইউনিক টেকনিক।”
অন্তর ঠিক বুঝতে পারছে মল্লিকা মনে মনে শয়তানী বুদ্ধি কষছে। অন্তর এ ও জানে মল্লিকা কফি বানাতে জানে না। অন্তর মল্লিকার আম্মুর থেকে মল্লিকা সম্পর্কে A-Z জেনে নিয়েছে। অন্তর গলা ঝাঁকিয়ে মল্লিকাকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,
—-“কি ভাবছ নীলান্জ্ঞনা? তাড়াতাড়ি কফিটা শেষ করো। ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।”
মল্লিকা মাথা নাঁড়িয়ে পর পর কফিতে কয়েকটা চুমুক দিয়ে পুরো কফির মগটা ভ্যানিশ করে ফেলল। আপাতত মল্লিকার মাথায় এক্টা জিনিস ঘুরপাক খাচ্ছে। এই নীলান্জ্ঞনা টা কে? মল্লিকা অন্তরের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বলছে,,,,,,
—-“নীলান্জ্ঞনা মেয়েটা নিশ্চয়ই এই কিউট ছেলেটার এক্স গার্লফ্রেন্ড হবে। মেয়েটা হয়তো আমার মতো দেখতে ছিলো। তাই এই কিউট ছেলেটা আমাকে বার বার নীলান্জ্ঞনা নামে ডাকছে। কি কপাল আমার, নিজের জামাইয়ের মুখে অন্য এক্টা ধ্বংস মেয়ের নাম শুনতে হচ্ছে।”
অন্তর কফিতে চুমুক দিচ্ছে আর মল্লিকাকে দেখছে। এর মাঝেই দরজায় খটখট শব্দ হলো। অন্তর বসা থেকে উঠে দরজাটা খুলে দিলো। মল্লিকা কফির মগটা ডেস্কের উপর রেখে শোয়া থেকে উঠে গেলো। দরজায় অনন্যা আর নুসাইবা দাঁত কেলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অন্তর মুচকি হেসে দুজনকে রুমে আসতে বলল। দরজা ছেড়ে অন্তর কাবার্ড থেকে এক্টা টি শার্ট বের করে গাঁয়ে জড়িয়ে নিলো। অনন্যা আর নুসাইবা রুমে ঢুকে মুচকি হেসে মল্লিকাকে জড়িয়ে ধরল।নুসাইবা শয়তানী হাসি দিয়ে মল্লিকার কানে ফিসফিসিয়ে বলল,,,,,,,
—-“ঘুম কেমন হয়েছে ছোট জা?”
মল্লিকা ও ফিসফিসিয়ে বলল,,,,,
—-“খুব ভালো হয়েছে। তবে বেশিক্ষন ঘুমাতে পারি নি।”
—-“নিশ্চয়ই অন্তর ঘুমাতে দেয় নি?”
—-“এই না না…সূর্য্যের আলো চোখে মুখে পড়াতে সকালের মজার ঘুমটা ভেঙ্গে গেছে।”
—-“বুঝি বুঝি সবই বুঝি। সব আমাদের বিভ্রান্ত করার ধান্দা।”
মল্লিকা মুখ খুলে কিছু বলতে যাবে এর আগেই অনন্যা মুখ ফুলিয়ে বলে উঠল,,,,,
—-“এই তোমরা দুজন মিলে কি ফুসুর ফুসুর করছে। আমাকে ও তো এক্টু বলো।”
নুসাইবা অনন্যার গাল টেনে বলল,,,,,,,
—-“তুমি এসব বুঝবে না ননদিনী। এসব আমাদের জা দের পার্সোনাল কথা। তোমার যখন বিয়ে হবে তখন তোমার সাথে ও আমরা এভাবে ফুসুর ফুসুর করব। কেমন?”
অনন্যা আগা মাথা কিছু না বুঝে বেকুব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নুসাইবার কথা শুনে অন্তর বেশ বুঝতে পেরেছে ওদের মধ্যে কি নিয়ে চর্চা হচ্ছে। মল্লিকা অন্তরের দিকে লজ্জামাখা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। অন্তর মাথা চুলকাতে চুলকাতে মল্লিকাকে চোখ মেরে সোজা রুম থেকে বের হয়ে সাহেদের রুমে চলে গেলো।
অন্তরের কান্ড দেখে মল্লিকা বেশ লজ্জায় পড়ে গেছে। অনন্যা মল্লিকার মুখটা উঁচু করে মুচকি হেসে বলল,,,,,
—-“ভাবী চলো ব্রেকফাস্ট করবে। এক্টু পরেই পাড়া প্রতিবেশী, রিলেটিভসরা আসা শুরু করবে। সবাই তোমাকে দেখার জন্য হুমড়ী খেয়ে পড়বে। এরপর আবার পার্লার থেকে লোক আসবে তোমাকে সাজাতে। রিসিপশান বলে কথা।”
মল্লিকা মাথা নাঁড়িয়ে হ্যাঁ বুঝালো। নুসাইবা আর অনন্যা দেরি না করে মল্লিকার হাত ধরে সোজা নিচে নেমে গেলো। মল্লিকাদের পিছু পিছু অন্তর আর সাহেদ ও হাঁটছে। অন্তর পিছন থেকে মল্লিকাকে বেশ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে। হুট করে অন্তরের নজর গেলো মল্লিকার পিঠের কুচকুচে কালো তিলটার দিকে। মল্লিকার শাড়ীর আঁচলটা খানিক সরে গেছে, তাই তিলটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। অন্তরের কাছে ব্যাপারটা বেশ অস্বস্তিকর মনে হচ্ছে। তাই সে দৌঁড়ে গিয়ে মল্লিকার পিছনে দাঁড়ালো। অন্তরের পিছু নেওয়াটা মল্লিকার বেশ বিরক্তি লাগছে। মল্লিকা কাঁধটা বেঁকিয়ে অন্তরকে উদ্দেশ্য করে ফিসফিসিয়ে বলল,,,,,,
—-“কি হচ্ছে কি? এভাবে পিছু নিয়েছেন কেনো?”
#চলবে,,,,,,,,,