মন চায় তোকে পর্ব-৮

0
2050

#মন_চায়_তোকে
#পার্ট_৮
#নিশাত_জাহান_নিশি

—-“কি হচ্ছে কি? এভাবে পিছু নিয়েছেন কেনো?”

—“শাড়ীর আঁচলটা ঠিক করো।”

—-“কেনো কি হয়েছে শাড়ীর আঁচলে?”

—-“পিঠের তিলটা দেখা যাচ্ছে।”

মল্লিকা তাড়াতাড়ি করে শাড়ীর আঁচলটা পিঠে টেনে নিলো। অন্তর ও তৎক্ষনাত মল্লিকার পেছন থেকে সরে দাঁড়ালো। শাড়ির আঁচলটা ঠিক করে মল্লিকা পিছু ফিরে অন্তরকে দেখতে পেলো না। মল্লিকা পুরো ড্রইং রুমে চোখ বুলিয়ে অন্তরকে খুঁজছে। বাট অন্তরের ছায়াটা ও কোথাও দেখা যাচ্ছে না। আচমকাই অনন্যা টেনে এনে মল্লিকাকে ডাইনিং টেবিলে বসিয়ে দিলো। মল্লিকা চেয়ারে বসে মাথাটা নিচু করে বিড়বিড় করে বলছে,,,,,,

—-“লোকটা আসলেই খুব ভালো। আমার সব দিকেই খেয়াল রাখে। শুধু শুধু লোকটার সাথে আমি ঝগড়া করি। লোকটাকে একবার থ্যাংকস বলা দরকার। কিন্তু খুঁজেই তো পাচ্ছি না লোকটাকে। কোথায় উবে গেলো আল্লাহ্ মালুম।”

এর মাঝেই অন্তর এসে মল্লিকার পাশের চেয়ারটা টেনে বসে পড়ল। মল্লিকা অন্তরকে দেখা মাএ অন্তরের কানে ফিসফিসিয়ে বলল,,,,,

—-“কোথায় ছিলেন আপনি?”

অন্তর বাঁকা হেসে বলল,,,,,

—-“কেনো মিস করছিলে বুঝি? এখন থেকেই আমাকে চোখে চোখে হারাচ্ছ?”

—-“ধ্যাত বয়ে গেছে আমার আপনাকে মিস করতে। জাস্ট শুকনো এক্টা থ্যাংকস দেওয়ার জন্য আপনাকে খুঁজছিলাম।”

—-“শুকনো থ্যাংকস তো আমি নিবো না মিসেস নীলান্জ্ঞনা।”

—-“তাহলে?”

—-“আমি তো অন্য কিছু চাই। অবশ্য তুমি চাইলেই পারবে।”

—-“কি শুনি?”

অন্তর বাঁকা হেসে বলল,,,,,

—-“থ্যাংকস এর বদলে এক্টা চুমোই এনাফ।”

মল্লিকা চোখ লাল করে অন্তরের দিকে তাকিয়ে আছে। অন্তর পর পর কয়েকটা শুকনো ঢোক গিলে বলল,,,,,

—-“এতো রাগ করার কি আছে? আমি তো জাস্ট মজা করছিলাম।”

কথাগুলো বলেই অন্তর পাউরুটির পিস মুখে পুড়ে নিলো। অন্তরের অবস্থা দেখে মল্লিকা হেসে কুটিকুটি। আপাতত হাসিটাকে সাইডে রেখে মল্লিকা ব্রেকফাস্টে মনযোগ দিলো। প্রায় পনেরো মিনিট পর ব্রেকফাস্ট সেরে সবাই নিজেদের কাজে চলে গেলো। মল্লিকাকে নিয়ে অনন্যা আর নুসাইবা উপরে উঠে গেলো। অন্তর চলে গেলো বাইরের কাজ সামলাতে।

এর মাঝেই দলে দলে রিলেটিভসরা আসা শুরু করল। সবাই মল্লিকাকে এক এক করে দেখছে। আর মল্লিকার প্রশংসা করছে। অনন্যা কল করে পার্লারের মহিলাদের বাড়ি আসতে বলে দিলো। অনন্যা বেশ হাসি মুখে মল্লিকার পাশে বসে কিছুটা লজ্জা পেয়ে বলল,,,,,,

—-“ভাবী জানো আমার এক্টা ছেলে ফ্রেন্ড আছে। আমি আজ ওকে ইনভাইট করেছি রিসিপশানে আসতে।”

মল্লিকা অনন্যার গাল টেনে বলল,,,,,

—-“বাঃহ্। খুব ভালো করেছ।”

অনন্যা মাথাটা নিচু করে হাত দুটো কচলাতে কচলাতে বলল,,,,,

—-“একচুয়েলি ভাবী সে শুধু আমার ফ্রেন্ড না। আমার বয়ফ্রেন্ড।”

মল্লিকা চোখ দুটো বড় বড় করে বলল,,,,,,

—-“এ্যা।”

অনন্যা কিছুটা কাতর হয়ে মল্লিকার হাত ধরে বলল,,,,,

—-“এ্যা না হ্যা। বাড়ির কেউ এই ব্যাপারে কিছু জানে না। প্লিজ ভাবি, তুমি কাউকে কিছু বলো না। এমনকি ভাইয়াকে ও না।”

মল্লিকা অনন্যার হাতে হাত রেখে বলল,,,

—-“ওকে ননদিনী। বলব না। তুমি নিশ্চিন্তে থাকো।”

মুহূর্তেই অনন্যা মল্লিকাকে জড়িয়ে ধরে বলল,,,,,

—-“থ্যাংক ইউ ভাবী। তুমি না অনেক অনেক অনেক ভালো।”

এর মাঝেই নুসাইবা এসে মল্লিকার পাশে বসে মল্লিকাকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,

—-“মল্লিকা তুমি শাওয়ার নিয়ে নাও। পার্লারের মেয়েরা এলো বলে।”

মল্লিকা মাথা নেড়ে সম্মতি জানিয়ে কাবার্ড থেকে এক্টা শাড়ী নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো। প্রায় এিশ মিনিট পর শাওয়ার নিয়ে মল্লিকা রুমে ঢুকল। এর মাঝেই পার্লারের মেয়েরা এসে হাজির হয়ে গেলো। মিসেস অরুনীমা রুমে ঢুকে মল্লিকার জন্য এক্টা নীল রং এর লেহেঙ্গা আর মেচিং করা অরনামেন্টস দিয়ে গেলো। অনন্যা আর নুসাইবা রুম থেকে বের হয়ে নিজেদের রুমে চলে গেলো শাওয়ার নিতে। কজ মল্লিকার সাজ গোজের পরেই ওদের টার্ণ।

বেডের উপর রাখা লেহেঙ্গাটা নিয়ে মল্লিকা ওয়াশরুমে চলে গেলো। প্রায় দশ মিনিট পর লেহেঙ্গাটা গায়ে জড়িয়ে মল্লিকা রুমে ঢুকল। পার্লারের মেয়েরা মল্লিকাকে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসিয়ে দিলো। আস্তে আস্তে ওরা মল্লিকাকে সাজাতে শুরু করল। ঐ দিকে অন্তর বেশ ব্যস্ত অতিথী অ্যাপায়নে। অফিসের অনেক ক্লাইন্ড এসেছে তাদের সাথে আলাপচারীতায় মগ্ন হয়ে আছে সারফারাজ চৌধুরী আর অন্তর।

প্রায় আড়াই ঘন্টা পর,,,,,,

দুপুর সাড়ে বারোটা। মল্লিকার সাজ অলরেডি শেষ। এবার শুধু মাথায় ঘোমটা দেওয়া বাকি। পার্লারের মেয়ে গুলো মল্লিকার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। নীল রঙ্গের লেহেঙ্গাতে মল্লিকার সৌন্দর্য্য উপচে পড়ছে। মাথায় বড় ঘোমটা টেনে পার্লারের মেয়ে গুলো মল্লিকাকে বেডের উপর বসিয়ে দিলো। অনন্যা আর নুসাইবা পার্লারের মেয়ে গুলোকে টেনে টুনে ওদের রুমে নিয়ে গেলো। ওরা ওদের নিজেদের রুমে সাজবে।

মল্লিকা বেডের উপর বসে মুখটা ভাড় করে রেখেছে। নীলের কথা খুব মনে পড়ছে ওর। নীলের বিশ্বাসঘাতকতা মল্লিকার মনকে নাড়িয়ে দিচ্ছে। হুট করে কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে মল্লিকা খানিক চমকে উঠল। পিছু ফিরে মল্লিকা ওর বড় বোন মল্লরকে দেখে মুচকি হেসে মল্লরকে জড়িয়ে ধরল। মল্লর খিলখিল করে হেসে মল্লিকাকে ঝাপটে ধরে বলল,,,,,

—-“কেমন আছিস মল্লিকা?”

—-“ভালো আছি আপু। তুমি কেমন আছো? মুসকান কোথায়?”

—-“আমি ও ভালো আছি। মুসকান ওর বাবার কোলে।”

—-“আম্মু, আব্বু এসেছে?”

—-“হু সবাই এসেছে। ওরা নিচে স্টেইজে তোর জন্য ওয়েট করছে।”

—-“তাহলে চলো নিচে যাই।”

—-“তুমি তোমার বরের সাথে নিচে যাবে বুঝলে? অন্তর রুমে আসছে। আমি যাই।”

কথাগুলো বলেই মল্লর হাসতে হাসতে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। মল্লিকা মুখটা ভাড় করে বসে আছে। প্রায় পাঁচ মিনিট পর অন্তর রুমের দরজা ঠেলে রুমে ঢুকে পড়ল। মল্লিকা বেশ বুঝতে পেরেছে অন্তর রুমে ঢুকেছে। তাই সে মাথার ঘোমটা টা আরো বড় করে টেনে দিলো। অন্তর রুমে ঢুকে বাঁকা হেসে মল্লিকার মুখোমুখি ধপ করে বিছানায় বসে পড়ল। মল্লিকা জড়সড় হয়ে মাথাটা নিচু করে রেখেছে। অন্তর মল্লিকার দিকে কিছুটা ঝুঁকে শান্ত কন্ঠে বলল,,,,,,

—-“ঘোমটা টেনে নিজের চাঁদ মুখটা হাজার আড়াল করে রাখলে ও আমার মন থেকে তোমার চাঁদ মুখটা আড়াল করতে পারবে না। আমি ঠিক মনের চোখ দিয়ে তোমাকে দেখে নিয়েছি।”

মল্লিকা ঘোমটার নিচ থেকে চোখ তুলে অন্তরের দিকে তাকালো। অন্তর ঘোর লাগা দৃষ্টিতে মল্লিকার দিকে তাকিয়ে আছে। অন্তরের তেজী দৃষ্টিতে দৃষ্টি রাখার ক্ষমতা নেই মল্লিকার। তাই সে চোখ জোড়া নামিয়ে নিলো। অন্তর মলিন হেসে বসা থেকে উঠে কাবার্ড থেকে নীল শেরোয়ানীটা বের করে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো। প্রায় দশ মিনিট পর অন্তর শেরোয়ারী গায়ে জড়িয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়ালো। অন্তর বেশ মনযোগ দিয়ে শেরোয়ানীর বোতম গুলো এক এক করে লাগাচ্ছে। মল্লিকা আড়চোখে আয়না দিয়ে অন্তরকে দেখছে। নীল শেরোয়ানীতে অন্তরকে অনেক বেশি মানিয়েছে। মল্লিকার চোখ আটকে গেছে অন্তরের দিকে। শেরোয়ানীর বোতম গুলো লাগিয়ে অন্তর ওর সিল্কি গুলো স্পাইক করে নিলো, হাতে এক্টা ব্ল্যাক ওয়াচ ঝুলিয়ে অন্তর মল্লিকার দিকে অগ্রসর হচ্ছে আর বলছে,,,,,

—-“আ’ম রেডি। চলো মল্লিকা।”

মল্লিকা বেড থেকে নেমে দাঁড়ানোর সাথে সাথেই অন্তর ছুটে এসে মল্লিকাকে কোলে তুলে নিলো। মল্লিকা বেকুব হয়ে অন্তরের দিকে তাকিয়ে আছে। অন্তর মুগ্ধ নয়নে মল্লিকার দিকে তাকিয়ে আছে। অনেকক্ষন এভাবে তাকিয়ে থাকার পর অন্তর মল্লিকার নাকের সাথে নাক ঘঁষে বলল,,,,,,

—–“আমি আমার বউকে আজ কোলে নিয়ে স্ট্যাইজে যাবো। এক কদম পা ও মাটিতে ফেলতে দেবো না।”

মল্লিকা চোখ দুটো বড় বড় করে চরম আশ্চর্যিত হয়ে বলল,,,,,

—-“মাথা ঠিক আছে আপনার? কি যা তা বলছেন? লাজ লজ্জা নেই নাকি?”

—-“না নেই। আমার কোনো লাজ লজ্জা নেই। আমার যা ভালো মনে হবে আমি তাই করব। ওকে?”

কথাগুলো বলেই অন্তর মল্লিকাকে কোলে নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। বাড়ি ভর্তি মানুষ অন্তর আর মল্লিকার দিকে তাকিয়ে আছে। মল্লিকা লজ্জায় মুর্ছা যাচ্ছে। তবে মল্লিকার মনে কোথাও না কোথাও এক্টা ভালো লাগা কাজ করছে। অন্তরের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাগলামী গুলো মল্লিকার মনে অনেকটা দাগ কাটছে। সব মেয়েরাই হয়তো তাদের স্বামীর থেকে এতোটা পাগলামী ই আশা করে। মল্লিকার পরিবার প্লাস অন্তরের পরিবার বেশ খুশি ওদের এভাবে দেখে। অন্তর হাঁটতে হাঁটতে সোজা স্ট্যাইজে চলে গেলো। স্ট্যাইজের পাতানো এক্টা সোফায় অন্তর মল্লিকাকে আস্তে করে বসিয়ে দিলো। একে একে সব রিলেটিভস, পাড়া প্রতিবেশীরা মল্লিকাকে দেখছে আর তারিফ করছে। অনেকে আবার মল্লিকার হাতে ফুল থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের গিফটস গুজে দিচ্ছে। অন্তর মল্লিকার পাশের সোফায় বসে আছে। মল্লরের হাজবেন্ড রাফসান এসে মল্লিকার কোলে মুসকানকে ধরিয়ে দিলো। মুসকানের বয়স মাএ এক বছর। মেয়েটা অসম্ভব পাকা বুড়ী আর সুন্দুরী। মল্লিকাকে পেয়ে মুসকান খিলখিল করে হাসছে। সাথে মল্লিকা ও মুসকানকে আদরে আদরে ভরিয়ে দিচ্ছে আর দাঁত বের করে হাসছে। অন্তর ও মাঝে মাঝে মুসকানকে খুব আদর করছে। এর মাঝেই অনন্যা সেজে গুজে দৌঁড়ে এসে মল্লিকার কানে কানে ফিসফিস করে বলল,,,,,,

—-“ভাবী…আমার বয়ফ্রেন্ড এসেছে। ওকে এখানে ডেকে আনি?”

মল্লিকা ও ফিসফিসিয়ে বলল,,,,,

—-“পাগলী মেয়ে। এটা আবার জিগ্যেস করার কি আছে? তাড়াতাড়ি নিয়ে এসো।”

—-“ওকে ভাবী। এক্ষনি নিয়ে আসছি।”

অনন্যা আর দেরি না করে দৌঁড়ে চলে গেলো স্ট্যাইজের বাইরে। মল্লিকা আবার মুসকানের সাথে খুনসুটিতে লেগে গেলো। অন্তর সোফা থেকে উঠে ওর ফ্রেন্ডদের সাথে আলাপে মশগুল হয়ে গেলো। অন্তরের ফ্রেন্ডসরা নানাভাবে অন্তরের খিল্লি উড়াচ্ছে। অন্তর লাজুক ভঙ্গিত মল্লিকার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে।

এর মাঝেই অনন্যা ওর বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে স্ট্যাইজে চলে এলো। মল্লিকা এখনো অনন্যার বয়ফ্রেন্ডকে খেয়াল করে নি। অনন্যার বয়ফ্রেন্ড ও মল্লিকাকে খেয়াল করে নি। অনন্যার সাথে এক্টা অজানা ছেলেকে দেখে অন্তর দৌঁড়ে এসে ওদের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পড়ল। অন্তর এক ভ্রু উঁচু করে অনন্যার দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,

—-“হু ইজ হি অনন্যা?”

অনন্যা কাঠ কাঠ গলায় বলল,,,,,,

—-“আমার কলেজে ফ্রেন্ড ভাইয়া। তোমার বিয়েতে ওকে ইনভাইট করতে পারি নি। ভাবলাম রিসিপশানে ইনভাইট করি। তাই আর কি…..

অনন্যা আর কিছু বলতে পারল না এর আগেই অন্তর মুচকি হেসে অনন্যার দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,

—-“ভালো করেছিস। যা ওকে নিয়ে স্ট্যাইজে বসা।”

অনন্যার বয়ফ্রেন্ড মুচকি হেসে অন্তরের দিকে তাকিয়ে আছে। বিনিময়ে অন্তর ও মৃদ্যু হেসে ওর ফ্রেন্ডদের কাছে আবার ফিরে গেলো। অনন্যা এক গাল হেসে ওর বয়ফ্রেন্ডের হাত ধরে সোজা মল্লিকার মুখোমুখি এনে দাঁড় করিয়ে দিলো। মল্লিকা চোখ তুলে উপরে তাকানোর সাথে সাথেই চোখ দু্টো বড় বড় করে ফেলল। অনন্যার বয়ফ্রেন্ড আর কেউ না মল্লিকার এক্স বয়ফ্রেন্ড নীল। নীল মল্লিকাকে দেখা মাএই একনাগাড়ে শুকনো ঢোক গিলতে লাগল। অনন্যা মৃদ্যু হেসে নীলের হাত ধরে মল্লিকাকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,,

—-“ভাবী….হি ইজ নীল। আমার বয়ফ্রেন্ড।”

কথাটা শোনার সাথে সাথেই মল্লিকার চোখে পানি জমে গেলো। নীল অস্থির দৃষ্টিতে এদিক সেদিক তাকিয়ে মিনমিনিয়ে বলছে,,,,,,,

—-“এই আইটেম টাই কি তাহলে অনন্যার ভাবী। তাহলে কি মল্লিকা আমার কাছে এতোদিন সত্যিটা গোপন করেছে? ইচ্ছে করে আমাকে বিয়ের কথাটা শুনায় নি? ইসসস পুরোপুরি ফেসে গেলাম আজ। এবার তো মনে হচ্ছে দুই দুটো পাখিকে একসাথেই হারাব। ধ্যাত আজকের দিনটাই খারাপ। যে করেই হোক এখান থেকে কেটে পড়তে হবে। না হয় সবটা গন্ডগোল হয়ে যাবে। মল্লিকা যেকোনো মুহূর্তে মুখ খুলে দিতে পারে।”

নীলের মুচড়ামুচড়ি দেখে অনন্যা কিছুটা বিরক্ত হয়ে নীলকে উদ্দেশ্য করে বিড়বিড় করে বলল,,,,,,,

—-“কি হচ্ছে কি নীল? এভাবে নড়াচড়া করছ কেনো? নতুন ভাবী কি ভাববে বলো তো? ভাবীকে ইমপ্রেস করতে হবে তো নাকি? না হলে ভাইয়াকে তোমার ব্যাপারে কে বুঝাবে বলো? ভাবীই তো আমাদের লাস্ট ভরসার জায়গা।”

নীল কিছুই বলছে না। সে কেবল পালানোর ধান্দা করছে। মল্লিকা বেশ বুঝতে পেরেছে নীল অনন্যাকে ও প্রেমের জালে ফাঁসিয়েছে। মল্লিকা সমানে ঘামছে আর বিড়বিড় করে বলছে,,,,,

—-“যে করেই হোক অনন্যাকে সত্যিটা জানাতে হবে। নীলের থেকে অনন্যাকে আলাদা করতে হবে। নীলের আসল মুখোশটা টেনে হেছড়ে অনন্যার সামনে আনতে হবে। না হয় অনন্যার জীবনটা ও নষ্ট হয়ে যাবে।”

নীল এখান থেকে পালানোর জন্য অনন্যার কানে ফিসফিসিয়ে বলল,,,,,,

—-“অনন্যা আমাকে এক্ষনি বাড়ি যেতে হবে। আজ আব্বুর সাথে অফিসের কাজে আমাকে এক জায়গায় যেতে হবে। আজ বরং আসি আমি। অন্য একদিন না হয় ভাবীর সাথে আলাপ করে নেব।”

কথা গুলো বলেই নীল অনন্যার হাত ছেড়ে দৌঁড়ে পালালো। অনন্যা বেকুব হয়ে নীলের যাওয়ার পথে তাকিয়ে আছে। মল্লিকা চোখ লাল করে নীলের যাওয়ার পথে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বলছে,,,,,,,

—-“অনন্যার হাতেই তোর খেলা শেষ করব নীল। দরকার হলে অন্তরের সাথে আমি তোর ব্যাপারটা নিয়ে খোলসা করে কথা বলব। তোর চ্যাপ্টার যে করেই হোক ক্লোজ করব।”

#চলবে,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here