মন মুনিয়া পর্ব-৪০

0
1509

#মন_মুনিয়া
তন্বী ইসলাম -৪০

রাতের মধ্যভাগের শেষে ঘুম হওয়ায় সকাল সকাল উঠতে সমস্যা হলো মনির। তবুও কলেজ যেতে হবে বিধায় হিমা ওকে ডেকে তুলতে ভুললোনা। হিমার ডাকে ঘুম ভাংগে মনির। ভোরের আলো ফুটে কিছুটা বেলাও হয়ে গেছে। মনি ধরফরিয়ে উঠে বিছানা থেকে। ওড়নাটা ভালো করে গায়ে জরিয়ে পাশ ফিরে দেখে মুনিয়া পাশে নেই। মনি অবাক হয়। চিন্তার স্বরে হিমাকে বলে
-মুনিয়া কোথায়?
হিমা হেসে বললো
-মুনিয়া তোমার ভাইয়ার কোলে।
-নিলয় ভাইয়ার কাছে?
-নীল নিশ্চয়ই তোমার ভাইয়া হবে না। তোমার নিলয় ভাইয়ার কাছেই আছে।

মনি লজ্জা পেলো কিছুটা। এরপর লজ্জা কাটিয়ে আবারও বললো
-মুনিয়া জেগে গেছিলো?
-হুম। তুমি ঘুমিয়ে ছিলে তাই ডাকিনি।
-ওহ।
-যাও ফ্রেশ হয়ে এসো। নাস্তা খেয়ে রেডি হতে হবে না? আজ তো তোমার কলেজ আছে।
মনি কৃতজ্ঞতার সাথে বললো
-আপনারা আসলেই অনেক ভালো ভাবি। এমন একটা ফ্যামিলিতে থাকা সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার।
-এই ফ্যামিলির তুমিও একজন সদস্য মনি। কয়েকটা বছর অপেক্ষা করো, একদিন তোমাকে সবাই এই ফ্যামির মেম্বার হিসেবেই চিনবে।

মনি আর কোনো কথা বাড়ালো না। সে হিমার কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে ওয়াশরুমে গেলো।।সেখান থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে আশার পাশে বসে হালকা নাস্তা করতে লাগলো মনি।
নীল সবেমাত্র বিছানা ছেড়ে উঠে এসেছে। চোখমুখ এখনো ফুলে আছে। ঘুমের ভাবটা এখনো কাটেনি। সে ফ্রেশ না হয়েই চলে এলো সকলের সামনে। মনিকে খেতে দেখে বললো
-কলেজের চিন্তা মাথায় আছে, নাকি সেটাও নাস্তার সাথে খেয়ে নিচ্ছো?
নীলের কথায় বিষম খেলো মনি। আশা সামান্য বিরক্তি নিয়ে বললো
-কি রে ভাইয়া, খাওয়ার সময়ও ওকে জ্বালাবি।
নীল হাসলো। মনি এবার চোখ তুলে তাকালো নীলের দিকে।

ওর ঘুম ঘুম চেহারাটায় অনেক মায়া। ইচ্ছে করছে সে মায়াময় মুখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকুক। তবে সেটা যে সম্ভব নয়। মনি চোখ নামিয়ে নিলো। ওর বয়স কম হলেও ওর কাছে এটা শোভাকর নয়। একটা মেয়ের মা যে সে। লোকে বলবে, মেয়ের মা হয়েও লাজলজ্জা ভুলে বেহায়ামি করছে।
এরমধ্যে হিমাও চলে এলো সেখানে। নীল মনির দিকে তাকিয়ে আছে। মনি নিচের দিকে তাকিয়ে একভাবে খেয়ে যাচ্ছে। নীলের মুখে দুষ্টিমির হাসি। সে হিমাকে বললো
-আমার জন্য খাবার থাকলে সেটাও দিয়ে দিও ভাবি। একজনের আজ খুব খিদে।

মনির লজ্জায় এবার মাথা কাটা গেলো। লজ্জা থেকে বাচঁতে গিয়ে সে খাওয়ায় মনোযোগ দিয়েছিলো, কিন্তু এখন যে এটাও লজ্জার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।

খাওয়া দাওয়া শেষ হলে আশা ওকে তাড়া দিলো রেডি হবার জন্য। যদিও ইন্টার লাইফে কলজের নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম পরে কলেজে যাওয়া আবশ্যক। তাই নীল আর্জেন্ট অর্ডার দিয়ে ওর জন্য ইউনিফর্ম বানিয়ে নিয়ে এসেছিলো গতকালের আগেরদিন রাতেই। সেটাই এখন ওর সামনে রাখা আছে।

তবে মনি এটাতে কিছুটা দোনোমোনো করতে লাগলো। কেন জানি, বেশ অস্বস্তিতে পরছে সে। নীলের সামনে ইউনিফর্ম পরে আসাটা বেশ লজ্জার মনে হলো তার কাছে। এবার আশা চোখ পাকিয়ে তাকালো মনির দিকে। মনি ঢোক গিললো। সে মনের কানে শুনতে পেলো আশা বলছে, “নিজে নিজে পরবি, নাকি ভাইয়াকে বলবো তোকে এটা পরিয়ে দিতে?”
মনের চিন্তা থেকে মনি অস্ফুটে বললো
-নাহ…
আশা অবাক হয়ে বললো
-চিৎকার করছিস কেন?
মনির হুশ এলো। সে ভাবলো, “ধুর ছাই, কি ভাবছি এইসব। নীল আশাকে বললো
-আমি বাইরে অপেক্ষা করছি। তোর ভাইবউকে তারাতাড়ি তৈরি হতে বল।

মনি বড় বড় চোখ করে তাকালো নীলের দিকে। এটা কি বলে গেলেন তিনি? আশা মুখ টিপে হাসছে। মনি সামান্য রেগে আশার কাছে বললো
-তোমার ভাইকে উদ্ভব কথাবার্তা বলতে মানা করে দিও আশাপু।
-আচ্ছা ঠিকাছে। বলে দিবো। এবার রেডি হো।
মনি ড্রেসটা হাতে নিয়ে বললো
-রেডি হতে যাচ্ছি। তবে, আমি উনার সাথে যাবোনা বলে দিলাম। তুমি নিয়ে যাবে আমাকে।

ড্রয়িং রুমে বসে আছে সবাই। এটা ওটা নিয়ে আলাপচারিতা চলছে। এমন সময় গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে এলো মনি। লজ্জায় মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছেনা সে। স্কুল ড্রেস পরিহিত মনিকে আজ চেনাই যাচ্ছেনা। রাবেয়া উঠে এসে মনির গালে হাত দিয়ে বললো
-মাশআল্লাহ, আমার মেয়েটাকে খুবই সুন্দর লাগছে। মনি লাজুক হেসে তাকালো রাবেয়ার দিকে। মনে হলো একবার জরিয়ে ধরুক এই ভদ্র মহিলাকে। হিমা পাশ থেকে ইশারা করলো রাবেয়াকে সালাম করার জন্য। মনি তাই করলো। সে রাবেয়ার পা ছুয়ে খুব সতর্কতার সাথে সালাম করলো। রাবেয়া খুশিতে গদগদ হয়ে গেলো হটাৎ। সে মনিকে দুহাতে টেনে নিয়ে আরো একবার মুখপানে তাকিয়ে ওকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো।

মমতাময়ী মায়ের এমন স্নেহমাখা আদরে চোখের কোনে সামান্য পানি বেরিয়ে এলো মনির। রাবেয়া চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো
-জীবনে বড় হবার হাতিয়ার নিজেকে শক্ত করা। সামান্যতে ভেংগে পরে ভীতুরা। আমি চাই, তুই নিজেকে শক্ত কর, সামনে এগিয়ে যা। তোর সাথে হওয়া সমস্ত অন্যায়ের মুখ্যম জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত কর নিজেকে।

মুনিয়াকে কোলে নিয়ে দুই গালে দুবার আলতো চুমু খেয়ে আশাকে নিয়ে বেরিয়ে পরলো মনি। নীল যেতে চেয়েছিলো আজও। তবে মনির মনের ইচ্ছের বিরুদ্ধে সে যাবেনা। মেয়েটাকে একটু সময় দেওয়া যাক। তাই, আজ আর বাড়াবাড়ি করেনি সে। তবে ওরা যাবার মুহূর্তে নীল বললো,
-আমার বউটাকে আজ বেশ পিচ্চি পিচ্চি লাগছে। ওকে সামলে রাখিস আশা, কারো কুনজর লাগলে তোর কিন্তু রেহাই নেই।
আশা চোখ পাকিয়ে বললো
-তোর বউ এর দায়িত্ব আমার না হাদা। তুই যে এমন একটা বউ পাইছিস কার জন্য পাইছিস শুনি? আমি মনিকে না নিয়া আসলে পাইতি জীবনে ওরে?
-তার জন্য তোরে বখশিশ দিবো, তবুও ওকে দেখে রাখিস। আমারে তো যাইতে দিলোনা। এ বড় অত্যাচার। আশা হাসলো ভাইয়ের কথায়। তবে মনির মুখের অবয়ব চেঞ্জ হলোনা।

প্রায় বিশ মিনিটের রাস্তা রিক্সা করে যাওয়ার পর এক সময় কলেজের সামনে এসে নামলো ওরা। ভাড়া মিটিয়ে মনিকে সাথে করে কলেজের ভিতরে ঢুকলো আশা। এ কলেজটা একটা পুরোনো দিনের রাজবাড়ি। অনেক সুন্দর কারুকার্য করা এ বিশাল বাড়িটি একটা সময় সুন্দর একটা কলেজে রুপান্তরিত হয়েছে। এ কলেজের দু ধারে রয়েছে দুটো বিশাল দিঘী৷ দিঘীর পাড়ে বসার ব্যবস্থা করা আছে। কলেজের সামনে বিভিন্ন ধরনের গাছগাছালি মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে। সেই সাথে ফুলের বাগানগুলো জানান দিচ্ছে, এখানেও সৌন্দর্যের অন্ত নেই।

যখন ছোট ছিলো, সবেমাত্র প্রাইমারি ছেড়ে হাইস্কুলে উঠেছিলো, তখন থেকেই আশার মনে সুপ্ত বাসনা ছিলো এস এস সি পাস করার পর ইন্টারমিডিয়েট এ কলেজেই পড়বে। তবে বড় হবার সাথে সাথে মনের সুপ্ত বাসনাটাও জেগে উঠেছে। স্বপ্নগুলো ডানা মেলে বিশালাকার ধারণ করেছে। যার ফলে এখানে আর পড়া হয়নি, স্কুলের গন্ডি পার করেই সে শহরে পাড়ি জমিয়েছিলো।

মনি এগিয়ে চলেছে সামনের দিকে। আশা ওকে বুঝিয়ে দিচ্ছে এ স্কুলের নিয়ম কানুন সম্পর্কে। একটা সময় মনির ক্লাসের পাশে চলে এলো ওরা। মনির মনের মধ্যে ধুকবুক করতে লাগলো। একেতো অনেক দেরিতে ভর্তি হয়েছে সে, তার উপর একেবারে অচেনা অজানা পরিবেশ। পরিচিত কেউ নেই৷

মনি সামান্য ভয়ার্ত গলায় বললো
-আমার ভয় লাগছে আশাপু।
-আরে পাগলী ভয় পাস না। এটা কলেজ, কোনো সন্ত্রাসীদের আখড়া না, কিংবা জানোয়ারে পরিপূর্ণ কোনো বন বাদর না। এখানে তুই শিখতে এসেছিস, শিখবি, নিজেকে সেই শিক্ষা দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করবি।
-তোমরা এতো ভালো কেন আশাপু?
-তুই যে ভালো তাই আমরাও ভালো । আসলে ভালো মন্দ হচ্ছে নিজের মনের ব্যাপার। আমি ভালো তো, আমার দুনিয়াটাই আমার কাছে ভালো মনে হবে। আমি যদি খারাপ মেন্টালিটির হই, তাহলে কোনো ভালোটাই আমার নজরে আসবেনা৷ ভালোটার ভিতরেও খারাপ কিছু খোঁজার চেষ্টা করবো আমি।

মনি উত্তর দিলোনা। আশা বললো
-ক্লাসে যা। আমি এবার চললাম।
-তুমি থাকবে না এখানে?
-আরে বোকা, এতো সময় আমি এখানে কি করবো শুনি? তবে চিন্তা করিস না। তোর ক্লাস শেষ হবার আগেই আমি চলে আসবো তোকে নিতে।
আশার কথায় মনি আশ্বস্ত হলো। সে আশার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলো নিজের ক্লাসের দিকে।
মনির ক্লাসে যাবার প্রান্তে তাকিয়ে হাসলো আশা। মেয়েটা বড় হয়েছে ঠিকই, কিন্তু মনের দিক থেকে এখনো সেই বাচ্চাটিই রয়ে গেছে।।

আশা কলেজ থেকে বেরিয়ে যাবার সময় ভাবলো, “এতোদিন পর এসেছি, একটু ঘুরে দেখেই যাই না। আগের কলেজ আর এখনকার কলেজে দিন রাত তফাৎ। ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে এটায়। ওদিকটায় নাকি নতুন নতুন কয়েকটা ভবন গড়া হয়েছে। ভবনের সামনের দিকে ফুলের বাগানকে বিভিন্ন শেইপ দেওয়া হয়েছে। মানুষের কাছ থেকে শুনেছে সে, কিন্তু আসা হয়নি। আজ যেহেতু এসেছি তাহলে একটু দেখেই যাই।”

আশা সামনের দিকে এগুতে লাগলো। কলেজে একটা ক্যান্টিনও আছে দেখছি। সে হাসিমুখে ক্যান্টিনের দিকে এগিয়ে গেলো। সেখানে গিয়ে বসে একটা বার্গার খেয়ে আবারও বেরিয়ে পরলো সে।

ওদিকটায় যেয়ে ভবনগুলো মুগ্ধতার সাথে দেখতে লাগলো আশা। যে বা যারা এই ভবনের ডিজাইন টা করেছে, তাদের রুচির তারিফ করতে হবে। আশা চারপাশটায় চোখ বুলাতে বুলাতে সামনের দিকে এগুতে লাগলো। ঠিক তক্ষুনি কিছু একটার সাথে খুব জোরেশোরে ধাক্কা খেলো সে। ধাক্কার চোটে সামান্য ব্যাথা পেয়ে আশার মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো
-আহহ..
কিন্তু আশার মুখের কথা মুখে থাকতেই ওপাশ থেকে কেউ চেঁচিয়ে বলে উঠলো
-হোয়াট দ্যা হেল! এভাবে কেউ হাটে, দেখতে পাও না নাকি চোখে?

আশার কানে কথাটা বেজায় বিষাদভাবে ঠেকলো। সে রাগীচোখে সামনের দিকে তাকালো। একটা জলজ্যান্ত মানুষ, সামনে দাঁড়িয়ে আছে। মানুষটা নিজের গা টা বার বার করে নিজের হাত দিয়ে ঝেড়ে মুছে পরিষ্কার করতে ব্যস্ত। মনে হচ্ছে যেনো, আশা কোনো মানুষ নয়, ময়লার গাড়ি। ছেলেটার নাক মুখ কুচকে আছে।
আশা রেগে গিয়ে বললো
-আমার চোখ নেই, আমি তাই দেখিনি। আপনার তো চোখ আছে, তাহলে চোখ থাকতেও যাওয়া আসার পথের মাঝে এভাবে খাম্বার মতো দাঁড়িয়ে আছেন কেন শুনি?

ছেলেটি হতভম্ব হয়ে গেলো আশার কথায়। সে এবার সামনের দিকে তাকালো।। আশার দিকে তাকিয়ে কিছুটা ভ্রু বাকালো সে। চোখের মোটা ফ্রেমের চশমাটা খুলে সেটাকে ভালোকরে মুছে আবারও চোখে দিয়ে বললো
-আপনি কে?
আশা গর্জে বললো
-আপনার মতো খাম্বা নয়, আমি একজন মানুষ।
-এই লেডি, বার বার খাম্বা খাম্বা করছেন কেন, সমস্যা কি হ্যাঁ?
-আমার কোনো সমস্যা নেই, সমস্যাটা আপনার। রাস্তার মাঝখানে এভাবে দাঁড়িয়ে আছেন কেন?
ছেলেটি এবার নির্লিপ্ত গলায় বললো
-আপনাকে দেখে তো এ কলেজের স্টুডেন্ট মনে হচ্ছে না। তাও আমার সাথে এভাবে কথা বলার সাহস পাচ্ছেন কোথায়? আমিতো অবাক হয়ে যাচ্ছি!!
-আপনি অবাক হোন কিংবা আরো কিছু হোন, আমার তাতে কি? খাম্বা কোথাকার। আশা মুখ বাকালো।

ছেলেটা রেগে গিয়ে বললো
-লিমিট ক্রস করছেন কিন্তু আপনি। এরজন্য পানিশমেন্ট পাওয়া উচিৎ আপনার।
-কি পানিশমেন্ট দিবেন আমায়? দাঁতে দাঁত খিঁচিয়ে বললো আশা।
ছেলেটি চোখের চশমা ঠিক করতে করতে বললো
-আপনি নিশ্চয়ই স্টুডেন্ট এর গার্জিয়ান? কে পড়ে এখানে? আপনার ছেলে নাকি মেয়ে?
-এই মিস্টার খাম্বা, মুখ সামলে কথা বলেন।
ছেলেটি হেসে বললো
-শুনুন মিসেস গার্জিয়ান, আপনার সাথে ফালতু কথা বলার মত সময় আমার নেই। পথ ছাড়ুন তো।
ছেলেটি আশার সামনে দিয়ে হনহন করে চলে গেলো। আশা হতবাক। এ কি বলে গেলো লোকটা? আমি কি এতোটাই বুড়ি হয়ে গেছি?

চলবে…..

[সবার গঠনমূলক মন্তব্য কামনা করছি। আর হ্যাঁ, আপনাদের সাড়া প্রদানের উপর নির্ভর করবে (লাইক/কমেন্ট) পরবর্তী পর্বটা জলদি দিবো, নাকি লেইট করে দিব🙂]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here