বর বউয়ের রোমান্টিক ঝগড়ার গল্প :
♠♥♠#মশারি ♠♥♠
♣♣পর্ব: ১৪
গল্পকার :#গল্প বুড়ি তিলোত্তমা
!
!
!
!
তারপর চুপচাপ দুজনেই ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে উঠে প্রতিদিনের মত আজকের দিনটাও কেটে রাত আসলো।
!
রাতে তো আমার জন্য কি যে অপেক্ষা করছে আল্লাহ জানে”””””””
আজকের দিনটা আমার খুব বোরিং কেটেছে ।
কারন সায়লা টা সকালবেলায় বেরিয়ে গিয়েছে। তার এ দুদিন লেখাপড়ার ক্ষতি হয়ছে নাকি। তাই আজ থেকে স্কুল, কোচিং, টিউশন সব শুরু করে দিয়েছে। সেই সকালবেলায় বেড়িয়েছিল সন্ধ্যার আগে ফিরলো।
!
মা- বাবা তো হজ্জ্বে যাবেন বলে, তাদের কত প্রস্তুতি । বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছেন। আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা করছেন। তারাও দেখা করতে আসছেন। আজ তো কত মেহমান এসেছিল। তাদের আদর আপ্যায়ন করতেই দিনটা কেটে গেল। তারা বড়রা তাদের কথা নিয়ে তারা তারা ব্যস্ত। আমি তো শুধু নিরব দর্শকের মত শুনছিলাম।
!
আর বরটার কথা কি আর বলবো, সেই রাত থেকে গাল ফুলিয়ে আছে। মুখে কোন কথা নেই। থাক না তাতে আমার কি।
তার রাগে আমার “” বয়েই গেল”””
!
আজ দেখছিলাম একটা বাচ্চার সাথে খুব ভাব জমিয়েছে। বাচ্চাটার বয়স ৫-৬ বছরের হবে।
থাকুক না বাচ্চাদের সাথে তবুও যদি “শিশুসুলভ আচারণ ” শেখে।
!
ওহ্ আজ তো শুধু তনুর সাথে কথা বলছি। বাড়িতে তো কারো সাথে কথা হল না। ফোনটা যে কোথায় কোথায় রাখি। সে দিকেও খেয়াল করি না।
বড় ভাবিকে একটা বরং ফোন দেই””
ফোন রিসিভ করেই বড় গিন্নি ঝাড়ি মারা শুরু করলো—-
!
বড় ভাবী : কিরে বর পেয়ে তো আমাদের ভুলেই গেলি। একটু খোঁজ খবরও নিস না
!
!
আমি : দেখ বড় গিন্নি খোচা মেরে কথা বলা বন্ধ কর।
তোমরা আমার খবর নিয়েছো একবারো।
” বিয়ে দিয়ে তো তোমরা তাল গাছ কেটেছো”” মনে হয়।
!
!
ভাবী : শয়তান মেয়ে তোকে ফোন দিলে কি পাওয়ার উপায় আছে। তোর বড় ভাইয়া কত বার তোর ফোনে ফোন দেয়ার চেষ্টা করছে। তোকে না পেয়ে ামাকে ফোন দেয়। আমি আবার তোকে ফোনে না পেয়ে, সাহিলকে ফোন দিয়েছি। আর ওর কাছ থেকেই তোর সব খবর নিয়েছি “”।
!
!
আমি : কথায় বলে না,
“” দুই দিনের বৈরাগী ভাতে কয় অন্ন আর আমি হইছি নগন্য”””
আমাকে রেখে এখন এই দুদিনের লোকটাই আপন হল। যাও তোমার সাথে কথাই বলবো না।
!
!
ভাবী : থাপ্পড় খাবি একটা । তোর বর পর হতে যাবে কোন দুঃখে। জানিস তোর বর তোর কত প্রশংসা করছে আমার কাছে।
!
!
আমি : কি প্রশংসা করলো গো বড় গিন্নি।
!
মনে মনে বলি বদনামের কাজ ছাড়া তো কিছুই করি নাই। প্রশংসা করবে কোথা থেকে।
!
!
ভাবী : তুই নাকি ওর খুব যত্ন নিচ্ছস। আমাকে বলে, যত্নের চোটে তো বেচারা নাকি পেরেশান।
!
!
আমি : তাই বল। বাড়ির সবাই ভাল তো।
তাজ আর তাহা কি করে।
ওরা আমার কথা বলেনা, নাকি ভুলে গিয়েছে?
!
!
ভাবী : বাড়ির সবাই ভাল। আর ও দুটোর কথা বলিস না। সাড়াদিন তোর কথা তো জিজ্ঞেস করেই। আর দুটো তোর রুম নিয়ে ঝগড়া করে। ও বলে এখন এটা ওর রুম, আরেকটা বলে ওটা ও রুম। দুটো এখন টিভি দেখছে।
!
!
আমি : দুটো ভারী বদমাইশ হয়েছে। আমি আসতে না আসতেই আমার রুম দখলের যড়যন্ত্র চলছে। হি হি হি
!
!
ভাবী : ভাল কথা তোর ভাইয়া আর বাবা বললো, তোর কি কি জিনিষ লাগবে তার লিস্ট দিতে। যাতে পরে তুই তাদের কোন খোটা না দিস।
!
!
আমি : মানে ! আমি তো ভেবেছি বাবা বিনা খরচেই সব চালিয়ে নেবে।
শোন বাবাকে বলো তেমন কিছু লাগবে না।
শুধু ডজন খানেক #মশারি দিলেই চলবে। হা হা হা
!
!
ভাবী : শয়তান মেয়ে। যাই হোক শোন বরের কথামত চলবি। বর যা বলে শুনবি। কারন বরকে নারাজ করে কোন স্ত্রী রাতে ঘুমালে ফেরেস্ততারা তাকে সারা রাত-দিন অভিশাপ দেয় ।
এজন্য কোন প্রকার ঝগড়া-ঝাটি অশান্তি করবি না।
রাখছি তাহলে।
!
!
বড় গিন্নির কথা শুনে তো মাথা ঘুরছে। তাহলে তো আমার জীবনে অভিশাপেই অভিশাপ। না আজ থেকে একটু ভাল হতে চেষ্টা করবো “””।
!
!
সায়লা : কি গো মিষ্টি ভাবী কালকে তোমার হট লুক দেখে তো ভাইয়া আমার শক হয়ে গিয়েছে। কারন সে আজ আরো বেশি চুপচাপ হয়ে আছে।
!
!
আমি : জানো আমাকে কি গিফট্ দিয়েছে “””?
!
সায়লা : কেন শাড়ী “”‘
!
আমি : না না ওটা শাড়ী না গো ওটা ছিল #মশারি “”
!
সায়লা : কি ইইইইই””””””” #মশারি।
!
আমি : জ্বী।
!
!
সায়লার সাথে কিছুক্ষন হাসাহাসি গল্প করে রুমে গেলাম । আর ভাবছি আজ আর শাড়ী পড়ে ঘুমাবো না। শাড়ী ঠিক মত কোন্টোল করতে পারি না। একদিক দিয়ে ঢাকি তো আরেক দিক দিয়ে বের হয়।
এজন্যত মানুষ বলে,
!
মেয়েদের নাকি ১২ হাত শাড়ীতে ও গা ঢাকে না “”””
!
যে বলছে সত্যিই বলেছে।
!
রুমে ঢুকে দেখি আজ একবারে ই অন্ধকার। ড্রিম লাইটা ও জ্বালানো নাই। কি আর করার আমিই লাইটা দিই। লাইট দিয়ে পিছন ঘুরে দেখি আমার বর দাড়িয়ে আছে। একি এ আমার পিছনে কি করে এলো। মনে হয় আমার জন্য অপেক্ষা করেছিল।
!
সাহিলটা খুব চুপচাপ আছে। মনে হচ্ছে বড় কোন ঝড় আসার আগে প্রকৃতি যেমনটা শান্ত হয় ঠিক তেমনটা।
!
আমার শরীরে কি যেন বিড়বিড় করছে। কেমন কেমন জানি লাগছে।
ও””””মা””””””” এ “”””””কি তেলাপোকা।
ওরে আল্লাহ রে আমি কি করবো।
সাহিল টা দরজা লক করছিল। দরজাটা লক করে বিছানায় চুপচাপ বসে পড়লো।
!
আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। সে কি জানে না তেলাপোঁকা দেখে আমি কত ভয় পাই।
তেলাপোঁকা যখন হাটে তখন ঠিক আছে।
কিন্তু উড়ে যখন গায়ে বসে তখন মনে উড়ন্ত কোন রাক্ষস এসে শরীরে পড়লো।
!
তার নীরবতা দেখে আমি হতবাক। আমি যেভাবে চিৎকার চেঁচামেচি করছি। তাতে আশে পাশের সব লোক চলে আসতো। ভাগ্য ভাল গরমের দিন ফুল স্পিডে ফ্যান দরজা জানালা বন্ধ। তাই কোন লোক আসার সুযোগ নাই।
!
!
আমি : এই যে শুনুন না । আপনি এত নিষ্ঠুর হবেন না। কাল আপনাকে চিমটি দিয়েছি বলে এভাবে প্রতিশোধ নিবেন না।
ওরে”””‘””””মাগো”””‘””””
আমারে বাঁচান “””””””
আমি তো শেষ””””””’
!
!
সাহিল : আমি কি করে বাঁচাবো আপনাকে ?
!
!
আমি : মানে””””‘ কি বলছেন আপনে। আপনে না আসলে কি পাশের বাড়ির সখিনার বাপ আসবে নাকি?
ওরে”””” আল্লাহ রুমের ভিতর এত তেঁলাপোকা আসলো কিভাবে ?
ঘরকে গোয়াল ঘর করে রাখে এজন্য তো এত তেঁলাপোকা “””””
!
!
সাহিল : সখিনার বাপ টা কে?
!
!
আমি : আপনার নানা”””” তাড়াতাড়ি তেলাপোুকাগুলো মারেন।
!
!
সাহিল : তেলাপোঁকা শরীর থেকে সরাতে গেলে তো আপনার শরীরে কোথায় না কোথায় হাত লেগে যাবে তখন।
!
!
আমি : আপনার যা ইচ্ছা তাই করেন। আরেকটু পর কিন্তু আমি ভয়ে হার্টফেল করবো।
!
!
সাহিল : মনে মনে বলে একেই বলে
“ঠ্যালার নাম বাবাজি”””””””
আমার শর্ত আছে যদি রাজি থাকেন তবে ১ চাপুন না থাকলে দুই।
!
!
আমি : এই আপনি কি মোবাইলের সিম কার্ড নাকি রাজি থাকলে ১ চাপবো না থাকলে ২। আপনি ফাজলামি শুরু করছেন আমার সাথে।
!
কথায় বলে না”””
হাতি যখন কাদায় পড়ে চামচিকেতেও লাথি মারে””””
বলেন আপনার কি শর্ত। আপনার শর্ত শুনতে শুনতে না তেলাপোঁকারা আমার শরীরে বাসা বানিয়ে ডিম না ফুটায়।
ওরে “”” আল্লহ।
!
!
সাহিল : তেলাপোকার মত না লাফিয়ে আমার কথা শুনুন। এত লাফালে বান্ধুবী মনে করে গলা জড়িয়ে ধরবে। হা হা হা।
শর্ত ১. আমাকে বলতে হবে, জান প্লিজ তুমি আমার শরীর থেকে তেলাপোঁকা গুলো ছাড়িয়ে দাওনা।
২.শরীরে যেকোন জায়গায় টাচ করতে পারবো। শুধু এখন না সব সময়ের জন্য।
৩. আমাকে আদর করতে দিতে হবে। আদর করতে গেলে চিমটা বা কোনপ্রকার বাহানা চলবে না।
আপতত এই তিনটা শর্ত মানলেই হবে ।
!
!
আমার মনে হচ্ছে শালা তোকে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুচি কুচি করি। শালা মিচকে শয়তান,ভেজা বিড়াল।, লেংটি ইঁদুর,লুচু
আমি তোর শর্তে রাজি হব না ।
!
ওমা তেলাপোঁকা আস্তে আস্তে আমার ঘাড়ের উপর আসতেছে।
রাজি হই রাজি না হয়ে উপায় নাই।
আ”””””””””’মি রা””””””””’জি
!
!
সাহিল : আল্লাহর কসম “!
!
!
আমি : আল্লাহর কসম (কেঁদে কেঁদে)
!
!
সাহিল বিছানার ঝাড়ু হাতে নিল। মনে হয় কাল রাতের চিমটি দেয়ার বদলাটা আজ নিয়েই নিবে।
সে আমার শরীর থেকে তেলাপোকা সরিয়ে দিল।
তারপর ঝাড়ু দিয়ে মারলো তেলাপোঁকা গুলো।
৫ টা তেলাপোঁকা মারলো।
আরো খুজতেছে।
!
আমি আর মনে হয় নাই। সে বলে আরো একটা আছে। আমি বললাম তা আপনি জানেন কি করে।
সে বললো বেড়াতে আসলে গার্লফেন্ড তো সঙ্গেই নিয়ে আসবে। একা তো আসবে না। এই বলে আরেক টা তেলাপোঁকা মারলো।
মোট ৬ টা।
!
ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে গিয়েছে। সাহিল আমাকে ১ গ্লাস পানি দিলো খেতে। তারপর ওর হাত দিয়ে আমার চোখের পানি মুছে দিল।
আর বললো আমার বউটা যে ছোটই রয়ে গেল তার কি হবে।
!
এই বলেই ওর ঠোটা আমার “”””””””””
!
চলবে””””””‘