মায়াবতীর_প্রণয়ে পর্বঃ২
#মম_সাহা
পুরো উত্তপ্ত শহর এখন ঠান্ডায় নিমজ্জিত। শহরের প্রতিটা অলিগলি নিজেদের ভেজাচ্ছে বর্ষনের ধারায়। শুধু শহর না এক মানবী সেই শহরের রাস্তার মাঝে দু’হাত মেলে বৃষ্টির ফোঁটা নিজের শরীরে মেখে নিচ্ছে।
দূর থেকে এ দৃশ্য দেখে চোখ আর মন ভেজাচ্ছে এক প্রেমিক পুরুষ। যে ঝাঁপ দিয়েছে ঐ রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা মানবীর প্রণয়ে।
বেশ নিরিবিলি রাস্তায় হঠাৎ বৃষ্টি দেখে নিজেকে আটকে রাখতে পারে নি মিষ্টি।রাস্তাও মানুষজন নেই বললেই চলে।ভাবল মনের সুখে আজ ভেজা যাবে।যেই ভাবনা সেই কাজ।
আদ্র মিষ্টির পিছে পিছে বেশ খানিক রাস্তা এসেছিলো।কিন্তু হঠাৎ মিষ্টিকে মাঝরাস্তায় দাঁড়িয়ে ভিজতে দেখে দাঁড়িয়ে পরে সে।রঙহীন বৃষ্টিও আজ তার কাছে রঙিন লাগছে।কারণ তার প্রেয়সী এই বৃষ্টিতে আরও সতেজ হয়ে উঠেছে।অষ্টাদশী মেয়েদের মতন খিলখিল করে হাসছে।ভেজা চুল গুলো নাকে মুখে লেপ্টে আছে।প্রকৃতিও আরো সুন্দর হয়ে গেছে প্রেয়সীর ছোঁয়া পেয়ে।
মিষ্টি ভিজতে ভিজতে হঠাৎ আঁচলে টান খেলো।চমকে ফিরে তাকায় সে।সামনে একটা ছয়সাত বছরের ছেলেকে দেখে সামান্য অবাকে ভ্রু কুঁচকে ফেলে।
-“তোমার মাথার ঐ সাদা সাদা ফুলটা দিবা আমারে?”
মিষ্টি হাসি দিয়ে হাঁটু গেঁড়ে বসে রাস্তার উপরে।বাচ্চাটার গাল টেনে জিজ্ঞেস করে
-“তুমি এই সাদা সাদা ফুলটা দিয়ে কি করবে হুম?”
বাচ্চাটা আঙুল উঁচিয়ে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে থাকা তারই সমবয়সী একটা মেয়ের দিকে দেখায়।তারপর বলে
-“আমার বন্ধু রিমি না তোমার ফুলটা অনেক পছন্দ করেছে। আসলে তোমাকে এই ফুলটাতে সুন্দর লাগছে তো তাই রিমি বলছে তাকে পড়লেও নাকি সুন্দর লাগবে।দিবা আমাকে?”
মিষ্টি ছোট্ট একটা হাসি দিয়ে কানের পাশে থেকে কাঠগোলাপ ফুলটা খুলে বাচ্চা টার হাতে দেয়। তারপর জিজ্ঞেস করে
-“আচ্ছা তোমরা দুজন কি করো? ”
ছেলেটা ফুলটা হাতে নিয়ে খুশিতে আত্মহারা।হাসি হাসি মুখ করে উত্তর দেয়
-“আমরা মানুষের থেকে টাকা তুলি।সারাদিন টাকা তুলে আম্মার কাছে নিয়ে দেই।জানো আমার বন্ধু টা না অনেক রাগী।এহন যদি ফুলটা না দিতাম তাইলে আমার উপর অনেক রাগ করতো।”
মিষ্টি ছেলেটার পাঁকা কথাই হাহা করে হেসে দেয়। তারপর ছেলেটার হাতে কিছু টাকা গুঁজে দিয়ে বলল
-“তোমার বন্ধুরে নিয়ে এই টাকা দিয়ে কিছু খাবে।আর আমি প্রতিদিন তোমার বন্ধুর জন্য তোমার কাছে একটা ফুল দিয়ে যাবো।তারপর তোমার বন্ধুকে প্রতিদিন সে ফুল পড়ে আরও বেশি সুন্দর লাগবে।তাই না।”
ছেলেটা খুশিতে মাথা নাড়িয়ে বিদায় দিয়ে ফুটপাতে উঠে যায়। মিষ্টি দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকে বাচ্চাটার দিকে।কি সুন্দর ফুলটা মেয়েটার মাথায় গুঁজে দিচ্ছে।দুজন খুশিতে মুখ চেঁপে হাসছে। কত অল্পতে এরা খুশি।
বাচ্চা গুলোকে দেখি মিষ্টির মন আরও ফুড় ফুঁড়া হয়ে গেলো।শরীরে সাথে শাড়িটা ভিজে চেপে আছে দেখে চুল গুলো আর বাধঁলো না।হাঁটা দিলো নিজের গন্তব্যে। এমনতেও বিকেল নেমেছে ধরনীর বুকে তারপর আবার বৃষ্টির কারণে অন্ধকার। তাড়াতাড়ি বাসায় পৌছাঁতে হবে।
-“এই যে লীলাবতী সরি মিষ্টি একটু শুনেন।”
অপরিচিত পুরুষ নালী কণ্ঠে নিজের নাম শুনে বেশ চমকে যায় মিষ্টি।তৎক্ষনাৎ ফিরে তাকায়। ওমা এটা তো সেই অভদ্র ছেলেটা।মিষ্টির হঠাৎ করে রাগ উঠে যায়। ছেলেটা তাহলে তার পিছে পিছে এসেছে? কিছু শক্ত কথা শুনাতে হবে।যেমন ভাবনা তেমন কাজ।মিষ্টি রাগী রাগী মুখ করে বলল
-“কি সমস্যা? আপনি আমার পিছে পিছে আসছেন কেনো?”
আদ্র মিষ্টির রাগী মুখটা দেখে আবারও থমকে যায়। তারপর হঠাৎ করে এক লাফে মিষ্টির সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।মিষ্টি একটু ভয় পেয়ে যায় প্রথমে।তারপর বিরক্তির সুরে বলল
-“কি সমস্যা সামনে এসেছেন কেনো?”
আদ্র পকেটে দু’হাত গুজে বলল
-“আপনিই তো বললেন পিছে পিছে কেনো আসছি তাই সামনে আসলাম এখন থেকে সামনে সামনে থাকবো।”
মিষ্টি আদ্রের হেয়ালি কথায় ভ্রু কুঁচকে ফেলল।লোকটা হঠাৎ মুখোশ বদলে ফেলল।নিশ্চয়ই কোনো উদ্দেশ্য আছে।মিষ্টি কোমড়ে দুহাত রেখে সন্দিহান কন্ঠে আদ্রকে বলল
-“এই যে ভাই আপনার উদ্দেশ্য টা কি বলুন তো?প্রথম দিন তো পারেন না অগ্নি বর্ষন করেন আমার উপর আর আজ আমার পিছে পিছে আসছেন ঠাট্টা ও করছেন কি ব্যাপার?”
এতক্ষণ ফাইজলামির মুডে থাকলেও মিষ্টির ভাই ডাকটা সব কিছুতে পানি ঢেলে দিলো।মুখটা যতটা পারে গম্ভীর করে আদ্র বলল
-“প্রথমত আমি আপনার কোনো জন্মের ভাই না সো এসব ডাক ডাকবেন না।আর দ্বিতীয়ত এখন রাস্তা নিরিবিলি আর রাতও নেমেছে। আপনার শরীরে ভেজা শাড়ি জড়ানো।এমন রূপে কোনো খারাপ মানুষের চোখে পরলে বিপদ।তাই আপনার সাথে ছিলাম।”
মিষ্টি সন্দিহান দৃষ্টি ফেলে।কন্ঠ খাদে নামিয়ে ভেংচি দিযে বলে
-“ইশ আসছে মাদার তেরেসার মেল ভার্সন।তা আপনি কি সব মেয়েদের দ্বায়িত্ব নিয়েছেন নাকি?উল্টাপাল্টা বুঝাতে আসছেন আমাকে?”
এবার আদ্র পুরো গম্ভীর কন্ঠে বলল
-” আমি একদমই মজা করছি না বা উল্টাপাল্টা বুজাচ্ছি না।এই গলিটার মোড়েই কত গুলো ছেলে ছিলো।যারা বাজে দৃষ্টিতে আপনার দিকে তাকাচ্ছিলো।আর শুধু এই কারণে আমি আপনার পিছে আসি নি।আরেকটা কারণও আছে।”
এবার মিষ্টি স্বাভাবিক কন্ঠে ধীরে বলল
-“জ্বি বলেন আরেকটা কারণ কী?”
আদ্র তার পকেট থেকে হাত বের করে একটা টকটকে রক্তজবা ফুল বাড়িয়ে দিলো মিষ্টির পানে।মিষ্টি একবার ফুলের দিকে তাকিয়ে আদ্রের দিকে তাকালো।
আদ্র মিষ্টির চোখের চাহনি বুঝতে পেরে বলল
-“আসলে আপনার বড় চুল গুলো ফুল ছাড়া কেমন জেনো লাগে। তাই এই কৃষ্ণচূড়াটা দিতে আসলাম।লাল টকটকে কৃষ্ণচূড়াটা আপনার চুলের সৌন্দর্য টাকে আরও বাড়াবে।আপনি কি নিবেন ফুলটা?”
মিষ্টি কতক্ষণ অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে মুখ ফিরিয়ে হাতের থেকে ফুলটা নিয়ে নিলো।হাতের মুঠে ফুলটা রেখে গটগট করে হেঁটে চলে গেলো।
আদ্র মুচকি হাসি দিয়ে তাকিয়ে রইল মায়াবতীর যাওয়ার পানে।তারপর গুনগুন করে গান ধরে সেও হাঁটা দিলো নিজের গন্তব্যে কিন্তু মন?সেটা মায়াবতীর কাছেই রেখে এসেছে।
_________
“আদ্র তোর যে বৃষ্টিতে ভিজলে জ্বর হয় সেটা ভুলে গিয়েছিলি নাকি?”- নিজের মায়ের কথায় চোখটা মেলে তাকায় আদ্র।আজ দুদিন যাবত জ্বরে ভুগছে সে।সেই সন্ধ্যা বেলা বৃষ্টিতে ভেজার পর আজ দুদিন যাবত বিছানায়।
” না মা হঠাৎ কাজ পরে গিয়েছিল তাই বৃষ্টিতে ভিজেই কাজটা করতে হলো।” -আদ্র ধীর কন্ঠে বলল।
আদ্রের মা সাদিয়া রহমান ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দেন।
বিকেলের শুভ্র মেঘ আকাশে উড়ছে।কেমন নরম তুলার মতন দেখাচ্ছে।মিষ্টি মেঘের দিকে তাকিয়ে নিশ্চুপ হেঁটে যাচ্ছে।আজ একটা টিউশন করিয়েছে।শরীরটা ভালো লাগছে না তার।আবার ঐ পিচ্চিদের কাছে যেতে হবে ফুল নিয়ে। সেদিন ছেলেটাকে কথা দিয়েছিলো প্রতিদিন তাকে ফুল এনে দিবে।তাই সে গত দুইদিন যথারীতি ফুল দিয়েছে।আজও যাবে ফুল দিতে।
-“কেমন আছেন লীলাবতী? ”
হঠাৎ নিজের পাশে কারো কন্ঠ শুনে চমকে উঠলো মিষ্টি।পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখে আদ্র।মিষ্টি বিষ্ময়কর দৃষ্টি নিয়ে তাকায় আদ্রের দিকে।সেদিন সন্ধ্যার পর লোকটাকে আর দেখে নি।
মিষ্টিকে ভাবতে দেখে আদ্র আবারও জিজ্ঞেস করল
-“কেমন আছেন বললেন না তো?”
মিষ্টির আজ শরীরটা ভালো নেই।নাহয় বেশ তেজী উত্তর দিতো।কিন্তু আপাতত তার কথা বলতে ইচ্ছে করছে না। তাই বিষন্ন কন্ঠে বলল
-“আজ আবার কি কারণে পিছু নিলেন?আজ তো সন্ধ্যা হয় নি,না বখাটে ছেলেরা আছে।”
আদ্র মিষ্টির ঠান্ডা কন্ঠে শুনে আন্দাজ করতে পারলো মিষ্টির শরীর যে ততটা ভালো নেই।সে মিষ্টির হাঁটার সাথে তাল মিলিয়ে বলল
-“না আজ পিছু করি নি।আমি একটু হাঁটতে বের হয়ে ছিলাম আর আপনার সাথে দেখা হয়ে গেলো।তাই কথা বলতে চলে আসলাম।”
মিষ্টি আর কিছু বলে না।চুপচাপ হাঁটতে থাকে।আদ্রও মিষ্টিকে বিরক্ত না করে মিষ্টির পাশাপাশি হাঁটে। মিষ্টি কিছু বলে না।থাকুক লোকটা।তার নিশ্চুপ উপস্থিতি ততটা খারাপ লাগছে না।
মিষ্টি হঠাৎ হাঁটা থামিয়ে দেয়। মিষ্টিকে থামতে দেখে আদ্রও থেমে যায়। দেখে মিষ্টি হাতের ইশারায় কাকে জেনো ডাকছে।আদ্র তাকিয়ে দেখে একটা পিচ্চি ছেলে মিষ্টির দিকে এগিয়ে আসছে।
মিষ্টি পিচ্চিটাকে এগিয়ে আসতে দেখে নিজেও দুকদম এগিয়ে যায়। তারপর ব্যাগ হাতরে একটা কাঠগোলাপ বের করে ছেলাটার হাতে দেয়। তারপর ছেলেটার গাল টেনে বলল
-“কিরে সুখদাতা তোর রিমি এখন পাত্তা দেয় তো তোকে?”
ছেলেটা মুখে হাত দিয়ে হেসে বলে
-“হ্যাঁ পরী অন্নেক পাত্তা দেয়। তুমি জানো রিমির ফুল এত পছন্দ।আর এই ফুলডাও তো অনেক সুন্দর।প্রতিদিন নতুন ফুল কানে গুঁজে আমি আর রিমি অনেক খানি হাঁটি।”
মিষ্টি পিচ্চিটার চুল গুলো হাত দিয়ে গুছিয়ে ব্যাগ থেকে একশ টাকার একটা নোট দিয়ে বিদায় জানায়।
এতক্ষণ সবটা চুপ করে দেখলো আদ্র।আদ্রকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে মিষ্টি মুচকি হাসি দিয়ে বলল
-“জানেন এই ছোট্ট বাচ্চাটির বান্ধবীকে প্রতিদিন একটা করে ফুল দিয়ে খুশি করে।বান্ধবীর নাকি ফুল অনেক পছন্দ।আমাদের কলেজের পাশে একটা কাঠগোলাপ গাছ আছে আমি প্রতিদিন ঐ গাছ থেকে একটা করে ফুল নিয়ে এসে ওরে দেই।ফুলের বিনিময়ে দেওয়া ওর হাসিটা দেখলে প্রাণ টা জুড়িয়ে যায়। ”
আদ্র মিষ্টির কর্মকাণ্ডে অবাক হয়।ফুটপাতের একটা হতদরিদ্র ছেলের জন্য মিষ্টির এমন ভালোবাসা দেখে আদ্রও তৃপ্তি পায়।তৃপ্তিময় হাসি দিয়ে আদ্র জিজ্ঞেস করে
-“সব তো বুঝলাম কিন্তু আপনি ওর নাম সুখদাতা বললেন যে?আর ও মনে হয় আপনাকে পরী ডেকেছে কেনো?”
মিষ্টি প্রশ্নটায় বেশ মজা পেয়েছে।সে হেসে বলল
-“এতটুকু একটা বাচ্চা তার বান্ধবীকে খুশি করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।এই স্বার্থপর দুনিয়ায় এতটুকু একটা বাচ্চার নিঃস্বার্থ আবদার দেখে আমি মুগ্ধ। ও প্রতিদিন নিজের বান্ধবীকে খুশি রাখার চেষ্টা করছে এতটুকু বাচ্চা হয়েও, যা আমাদের মতন বড় বড় মানুষও করি না।তাই ওর নাম সুখদাতা রেখেছি।আর ওর কাছে নাকি আমাকে পরীর মতন লাগে তাই পরী ডাকে।”
মিষ্টির কথায় আদ্রও মুগ্ধ হয়ে হেসে দিলো।দুজন বেশ খানিকটা পথ হেটেঁ গেলো। মাঝে দু একটা কথা হয়েছে দুজনের।মিষ্টি তার বাড়ির কাছাকাছি আসার পর আদ্র মিষ্টিকে ডাক দিলো
-“লীলাবতী।”
মিষ্টি আদ্রের দিকে একবার তাকিয়ে চোখ নামিয়ে বলল
-“জ্বি বলুন।”
আদ্র আজও পকেট থেকে একটা কৃষ্ণচূড়া ফুল বের করে মিষ্টির হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল
-“আমিও সুখদাতা হতে চাই।”
কথাটা বলে একমুহূর্ত দাঁড়ায় না আদ্র। গটগট করে উল্টো পথে হেঁটে চলে যায় আদ্র।আর মিষ্টি আহাম্মক হয়ে তাকিয়ে থাকে কতক্ষণ।তারপর আনমনে মুচকি হেসে ফুলটা কানের পিঠে গুঁজে নিয়ে নিজের গন্তব্যে পাড়ি জমায়।
দূর থেকে পুরো দৃশ্যটা দেখেছে আদ্রের পিএ নীড়। কারণ সে আদ্রের সাথেই বেড়িয়েছিলো মিষ্টির সাথে আদ্রের দেখা করার উদ্দেশ্যে।তাই তো সে অনেক দূরে ছিলো।আদ্রের শরীর অসুস্থ না হলে সে গাড়িতেই অপেক্ষা করতো।কিন্তু আদ্রের শরীর অসুস্থ বিধায় সে ওদের পিছে পিছে এসেছে।নীড় নিজের গম্ভীর স্যারের নতুন রূপ দেখে অবাক।তবে কি প্রেম মানুষকে এভাবে বদলে দেয়?
চলবে,,