মেঘকন্যা☁️
Part_03
#Writer_NOVA
মেঘার যখন ঘুম ভাঙ্গলো তখন দেখলো সে তার নিজের রুমের বিছানায় শুয়ে আছে। তার শিউরের পাশে তার মা জাওদা ইসলাম এক হাতে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছে। তার বাবা মোহাম্মদ আবিদ ইসলাম রুমের কোণার সোফায় মাথা হেলান দিয়ে ঘুমোচ্ছে।
মাথাটা ঝিম ঝিম করছে।আমি এখন কোথায়?চারদিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম, এটা তো আমাদের বাসা।কিন্তু আমি তো আয়িশের সাথে ছিলাম।হঠাৎ করে আমার কি হয়েছিলো?আমি উঠে বসলাম।আমি উঠতেই আমার আম্মি জেগে উঠলেন।
আম্মিঃ কেমন আছিস মা? কি হয়েছিল তোর?আমরা কত চিন্তা করছিলাম তোর জন্য? সেই যে গতকাল সকালে বের হয়ে গেলি।তোর আর কোন খোঁজ নেই। তোর বন্ধু-বান্ধবীদের কাছে কল করে জানতে পারলাম তুই তাদের সাথে নেই। আমি ঠিক কতটা চিন্তায় ছিলাম তার কোন ধারণা আছে তোর?তোর আব্বি তোকে সারা শহর খুঁজে হয়রান হয়ে গেছে।
আমিঃ আম্মি তুমি শান্ত হও।আমি তোমাকে সব বলছি।তুমি এত চিন্তিত হয়ো না।দেখো আমি ঠিক আছি।তোমাদের দোয়া আমার সাথে সবসময় আছে। আমার কি কোন ক্ষতি হতে পারে বলো।
আমাদের কথার আওয়াজে আব্বি ঘুম থেকে জেগে গেল।সোফা থেকে উঠে আমার পাশে বসলো।
আব্বিঃ সকাল ভোরে না বলে কোথায় বের হয়ে গিয়েছিলে?তোমার চিন্তায় আমরা অস্থির হয়ে গেছি।কোথায় ছিলে তুমি মা-মণি? আমারা কতটা টেনশনে ছিলাম তা তুমি জানো? এক মুহুর্তে মনে হয়েছে তোমাকে আমরা হারিয়ে ফেলেছি।
আমিঃ আব্বি,আমি তোমাদের বলেই যেতে চেয়েছিলাম।কিন্তু তোমাদের রুমে গিয়ে দেখলাম তোমরা ঘুমোচ্ছো।তাই কোন ডিস্টার্ব করি নি।আমি ভেবেছিলাম কয়েক ঘন্টার মধ্যে বাসায় ফিরে আসতে পারবো।ঐ গ্রামে মোবাইলে নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না।তাই তোমাদের কল করে জানাতেও পারিনি।সরি আব্বি,আম্মি।আমি আর কখনো তোমাদের না বলে কোথাও যাবো না।দয়া করে আমাকে মাফ করে দেও।
আব্বিঃ তুমি তোমার ভুল বুঝতে পেরেছো তাতেই আমরা খুশি।কিন্তু পরের বার এরকম ভুল দ্বিতীয় বার করো না।তাহলে আব্বি,আম্মি খুব কষ্ট পাবে।
আম্মিঃ তুই কোথায় গিয়েছিলি? আমায় খোলসা করে বল তো।আয়িশ তোকে কোলে করে বাসায় পৌঁছে দিয়ে গেল।তখন তুই বিঘোর ঘুমোচ্ছিলি।আজ যদি আয়িশ না হয়ে অন্য কেউ হতো তাহলে তোর অবস্থা কি হতো তুই কি তা ভেবেছিস।
আব্বিঃ মেঘার আম্মি, কি শুরু করলে? আমাদের মেয়ে নিশ্চয়ই কারো সাহায্য করতে গিয়েছিলো।যার জন্য আমাদের বলতে পারেনি।এক জায়গা থেকে ফিরেছি।ওকে রেস্ট নিতে দেও।(আম্মিকে ধমকের সুরে কথাগুলো বলে আমার দিকে তাকিয়ে বললো)
কিছু সময় পর ফজরের আজান হবে নামাজ পড়ে নেও মেঘা মা-মণি।আর মেঘার আম্মি, তুমি গিয়ে মেয়ের জন্য এক গ্লাস গরম দুধ নিয়ে এসো।মেয়েটার মুখটা দেখেছো।শুকিয়ে এতটুকু হয়ে গেছে।
🌨️🌨️🌨️
আব্বি,আম্মি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।আমি চোখ বন্ধ করে গতকালের ঘটনা মনে করতে লাগলাম।সারা শরীর ভয়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো।কানে দূর থেকে আসা আজানের সুর ভেসে আসছে। হঠাৎ নিজের দিকে তাকিয়ে আৎকে উঠি।আমার পরনে গোল জামা কেন?বিয়ের শাড়ি কোথায়? আর এই জামাটাতো আমি আফিয়াদের বাসায় পাল্টিয়ে শাড়ি পরেছিলাম।
আমিঃ আম্মি আম্মি কোথায় তুমি? (জোরে চেঁচিয়ে)
আম্মি পাশের রুম থেকে ছুটে এলো।আমার পাশে বসে জিজ্ঞেস করলো।
আম্মিঃ কি হয়েছে মেঘা?
আমিঃ আমার গায়ের শাড়িটা কোথায়?
আম্মিঃ কিসের শাড়ি?(ভ্রু কুঁচকে)
আমিঃ আমার পরনে একটা জমকালো বিয়ের লাল শাড়ি ছিলো।সেটা কোথায়? তুমি কি আমার শাড়ি পাল্টিয়েছো?
আম্মিঃ কি আবোলতাবোল বকছিস?তুই তো এই জামা পরা ছিলি।আয়িশ যখন তোকে বাসায় দিয়ে গেলো তখন তোর শরীরে কোন শাড়ি ছিলো না।এই জামা পরিহিত ছিলি।আমি তোর জামা কিংবা শাড়ি কিছুই পাল্টায়নি।
আমিঃ এটা কি করে সম্ভব? আমার স্পষ্ট মনে আছে আমি এই জামা আফিয়াদের বাসায় রেখে এসেছি। সেটা আমার গায়ে কি করে আসলো?আর বিয়ের শাড়িটা কোথায়? তাহলে কি আয়িশ আমার শাড়ি– না না আমি কি ভাবছি এসব? ও জীবনেও এমন কাজ করবে না।তাহলে কি করে হলো এমনটা?গতকাল থেকে আমার সাথে এমন অদ্ভুত অদ্ভুত কাজ কেন হচ্ছে? (মনে মনে)
আম্মিঃ কি রে কি ভাবছিস? (ধাক্কা দিয়ে)
আমিঃ কোথায়, কিছু না।তুমি গিয়ে বিশ্রাম নেও।আমাকে একটু একা থাকতে দেও।
আম্মি চলে যেতেই আমি গতকাল বিয়ের পর থেকে যাবতীয় ঘটনা একটা ছকে সাজাতে লাগলাম।
আমিঃ কার সাথে বিয়ে হলো আমার? ঐ অদ্ভুত দেখতে প্রাণীগুলো কোথা থেকে আসলো? কুহুকলি আমাকে বারবার মেঘকন্যা কেন বলছিলো? সারা শরীর মেঘের মতো সাদা রঙ হয়ে যাওয়া,সারা শরীরে পোড়া-ঘায়ের সৃষ্টি হওয়া।চাঁদের আলো গায়ে লাগতেই এক নিমিষে সব উধাও। আয়িশের বাইকে উঠতেই ঘুমিয়ে যাওয়া, তারপর শাড়ির ব্যাপারটা।আমি কিছু মেলাতে পারছি না।আমার যার সাথে বিয়ে হলো তার মনের কথা আমি কেন শুনতে পারলাম না।আমি তো শুধুমাত্র একজনের মনের কথা শুনতে পাই না।কিন্তু সে তো তখন বিয়ের আসরে ছিলো না।তাহলে কে সেই ছিলো বরের বেশে?কিন্তু সেটাও কি করে সম্ভব।
চারিদিকে আজানের ধ্বনি প্রতিধ্বনি হতে লাগলো।আমি আর কিছু চিন্তা না করে বিছানা থেকে উঠে ওযু করতে চলে গেলাম।এখন নামাজ পরলেই একমাত্র আমার মনটা শান্ত হবে।
মেঘা ওযু করতে চলে যেতেই সোফায় বসে থাকা মেঘপুত্র হাই তুললো। পায়ের ওপর পা তুলে সে এতক্ষণ ধরে অদৃশ্য হয়ে বসে আছে।
মেঘপুত্রঃ আমি বুঝি না বউ।তুমি তোমার ছোট মাথাটাকে এত চাপ কেন দেও? যা হওয়ার তা হয়েছে। ওসব চিন্তা করে নিজের ঘুম হারাম করার কোন মানে হয় না।সে যাই হোক।তোমার ওপর আমার ভীষণ রাগ হয়েছে। তুমি গতকাল বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে আমার বাসর রাত ভেস্তে দিয়েছো।তুমি না পালালে তো আমিও পালাতাম না।এর শোধ আমি তুলবোই তুলবো।তৈরি হয়ে যাও আমার বউ।আজ থেকে তোমার রোমান্টিক অত্যাচার শুরু।ধূর,শ্বশুর মশাইয়ের নাক ডাকার ঠেলায় রাতে ভালোমতো ঘুমোতেও পারিনি।এত জোরে কেউ নাক ডাকে তা আমার শ্বশুর মশাইয়ের সাথে আজ সোফায় না ঘুমালে জানতেই পারতাম না। আজান হচ্ছে, যাই মসজিদ থেকে নামাজ পরে আসি।তারপর বাসায় গিয়ে একটু ঘুমিয়ে নিবো।
অদৃশ্য থাকা অবস্থায় রুম থেকে বের হয়ে গেলো মেঘপুত্র। গতকাল সারা রাত সে এখানেই ছিলো।
🌨️🌨️🌨️
অঙ্গরাজ্য……….
মেঘরাজ্য থেকে ২০০ মাইল দূরে কালো মেঘের মধ্য বিশাল বড় একটা রাজ্য।নাম তার অঙ্গরাজ্য।
সেই রাজ্যে আজ ছোট-খাটো ঝড় বয়ে গেছে। অন্দরমহলেের নানা জিনিসপত্র ভেঙে চুরে এদিক সেদিক পরে আছে।পুরো কক্ষের যাবতীয় জিনিসপত্র লন্ডভন্ড করে রাজপুত্র ইশাল রাগে ফুঁসছে।পুরো রাজ্য তছনছ করেও তার রাগ কমেনি।হাতের সামনে থাকা বিশাল বড় ফুলদানিটা চোখের ইশারায় শূন্যে তুলে আছাড় মারলো।তার ক্রোধের খবর শুনে কক্ষে অঙ্গরাজ্যের রাজা ও মন্ত্রী প্রবেশ করলো।
রাজাঃ শান্ত হও পুত্র।এখন জিনিসপত্র ভাঙচুর করলে তুমি মেঘকন্যাকে বিয়ে করতে পারবে না।সে এখন মেঘপুত্রের হয়ে গেছে।এটাই এখন চির সত্য।যা তোমাকে মানতেই হবে। তোমাকে আমি বারবার বলেছিলাম বিয়েটা আটকাতে। কিন্তু তুমি তা করতে পারোনি।মেঘপুত্রের শক্তির কাছে হেরে বিয়ের আসর থেকে পালিয়েছো।দিহানের রূপ নিয়ে তুমি সর্দার বাড়ির চৌকাঠেও প্রবেশ করতে পারোনি।তোমার আগে মেঘপুত্র সেখানে উপস্থিত হয়ে মেঘকন্যাকে বিয়ে করে নিয়েছে। তাহলে এতদিন দিহানকে সরিয়ে তার রূপ নিয়ে থাকার মানেটা কি হলো?আমাদের শুধু শুধু তিন পূর্ণমা নষ্ট হলো।
দিহানের রূপ নিয়ে ইশালের যাওয়ার কথা ছিলো বিয়ের আসরে।যার কারণে দিহানকে সরিয়ে ফেলে।
কিন্তু তার আগেই সেখানে মেঘপুত্র চলে আসে।পুরো বাড়ি ও বাড়ির মানুষকে তার অদৃশ্য শক্তি দিয়ে ঘিরে ফেলে।যার কারণে ইশাল বা তাদের রাজ্যের কোন লোক বিয়ের আসরে ঢুকতে পারে না।বিয়ে শেষ হওয়ার সাথে সাথে সবার ওপর থেকে অদৃশ্য মায়া কেটে যায়।
মন্ত্রীঃ আমাদের পরিকল্পনা মাফিক সব হলেও মেঘপুত্রের কিছুই অজানা ছিলো না।সে পুরো বাড়ি নিজের শক্তিতে ঘেরা দিয়ে রেখেছিলো।সর্দার বাড়ির সবাইকে তার শক্তি দিয়ে বশ করে নিয়েছিলো।যার ফলে বিয়ের সময় কেউ নিজের মধ্যে ছিলো না।যদি তারা নিজের মধ্যে থাকতো তাহলে কাজী সাহেব যখন বিয়ে পরাচ্ছিলো তখন মেঘকন্যা ও মেঘপুত্রের নাম ও তার বাবা-মায়ের নামও স্পষ্ট শুনতে পেতো।সাথে আজকাল পৃথিবীতে বিয়ের জন্য যে রেজিস্ট্রী পেপারে থাকা নাম,তথ্য ও বর-কনের স্বাক্ষরও দেখতে পেতো।আর দেখলেও যে খুব একটা লাভ হতো তা কিন্তু নয়।কারণ কাজী ছাড়াও বিয়ের স্বাক্ষীরা কিন্তু মেঘরাজ্যেরি ছিলো।
ইশালঃ আব্বাজান,আপনি আমাকে বড় বড় বক্তব্য কেন দিলেন?কোথায় আপনিও তো সর্দার বাড়িতে প্রবেশ করতে পারেননি।আপনার নাকি এত শক্তি তাহলে কেন যেতে পারলেন না।মেঘকন্যার বিয়ে হয়েছে তো কি হয়েছে? আমি গত ২৮ তম পূর্ণিমার আগে বিয়ে করে পুরো মেঘরাজ্যের রাজা হয়ে যাবো।তারপর মেঘকন্যাকে মেরে তার তাজা রক্ত দিয়ে গোসল করে সারাজীবনের জন্য অমর হয়ে যাবো।তাই এখন মেঘকন্যাকে পেতে হলে আমাকে মেঘপুত্রকে শেষ করতে হবে।
মন্ত্রীঃ মেঘপুত্রকে বিনাশ করা এতো সহজ নয় রাজপুত্র। সে এখন অনেক শক্তির অধিকারী।তারা দুজন বৈধভাবে পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে।তাদের সাথে স্বয়ং আল্লাহ আছে।তুমি এত সহজে ওদের হারাতে পারবে না।আর মনে রেখো পুত্র, মেঘপুত্র বেঁচে থাকা অবস্থায় তুমি কখনো মেঘকন্যাকে পাবে না।মেঘকন্যাকে না পেলে তোমার উদ্দেশ্য কখনো সফল হবে না।
🌨️🌨️🌨️
ইশাল রেগে চোখ থেকে আগুনের ফুলকি বের করে কিছু দূরে থাকা দরজা ও জানালায় থাকা ঝুলন্ত পর্দায় আগুন ধরিয়ে দিলো।
ইশালঃ আমি তা কিছুতেই হতে দিবো না।আমার মেঘকন্যা ও মেঘপুত্র দুজনকেই চাই। আর কিছু সময়ের মধ্যে আমি চির জীবনের জন্য কন্যাকে পেয়ে যেতাম।কিন্তু চাঁদ মেঘ থেকে উন্মুক্ত হয়ে আমার এতোদিনের সাধনায় পানি ফেলে দিলো।(রেগে)
রাজাঃ কুহুকলির কথা ভুলে গেলে চলবে না।ওর কারণে কিন্তু আমাদের উদ্দেশ্য সফল হয়নি।
ইশালঃ ঐ পেঁচাকে তো আমি আমার চোখের আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারবো।যত নষ্টের গোড়া ওটা।খুব বেশি বাড়াবাড়ি করে ফেলছে ওই কুহুকলি।ওর মৃত্যু ঘনিয়ে এসেছে। আমার শক্তি দিয়ে তৈরি প্রাণীগুলো এক মুহুর্তে মেঘকন্যার শরীরের আলোয়, দূরে ছিটকে নষ্ট হয়ে গেলো।আমি শুধু পদ্ম পুকুরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলাম।সামনে গিয়ে কিছু করতে পারলাম না।
মন্ত্রীঃ তুমি পাগল হয়েছে পুত্র। তুমি ওর সামনে গেলে কয়েক সেকেন্ডের মাঝে ঝলসে কালো ছাইয়ে পরিণত হতে।আমাদের পরবর্তী পরিকল্পনা আরো মজবুত করে তৈরি করতে হবে।
ইশালঃ পরবর্তী পরিকল্পনা আমি ভেবে ফেলেছি। এখন শুধু আমাকে মেঘকন্যার আশেপাশে থাকতে হবে।মেঘপুত্রের থেকে ওকে দূরে নিয়ে আসতে হবে।তাহলেই খুব শীঘ্র আমার উদ্দেশ্য হাসিল হবে।
রাজাঃ কি ভেবেছো তুমি?
মন্ত্রীঃ খুব সাবধান পুত্র। নয়তো হিতের-বিপরীত হতে পারে।মেঘকন্যা ও পুত্র কোন সাধারণ মানুষ নয় যে তুমি তাদের সাথে জিতে যাবে।ওরা এখন অনেক শক্তির অধিকারী। যদিও মেঘকন্যা এসবের কিছু জানে না।তবুও ওকে রক্ষা করার জন্য সর্বক্ষণ মেঘপুত্র ওর সাথেই থাকে।
ইশালঃ আমার পরিকল্পনাটা শোনো——
তিনজন মিলে শলাপরামর্শ করে ফের একটা শয়তানি পরিকল্পনা বের করলো।ইশাল সাধারণ মানুষের রূপ নিয়ে পৃথিবীতে চলে এলো।
ইশাল দেখতে অদ্ভুত রকমের।চেহারা দেখতে সাধারণ মানুষ হলেও তার মাঝে আছে শয়তানি শক্তি। ওর গায়ের রংটা তামাটে বর্ণের।চোখ দুটো আগুনের ফুলকির মতো গাঢ় হলুদ।চুলগুলো গাঢ় লাল। গলায় সবসময় একটা বিষাক্ত কালো সাপ ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে।মূলত ওর শক্তির মূল উৎসই এই সাপটা।তার একটা নামও আছে রিহিস।
পৃথিবীতে পা রাখার সাথে সাথে ইশাল চোখের বর্ণটা হালকা হলুদ করে ফেললো।চুলের রঙটাও হালকা করলো।কাঁধে থাকা রিহিসকে ট্যাটুতে পরিণত করলো।ঘাড় থেকে বুক পর্যন্ত প্যাঁচানো রিহিসের ট্যাটু।রিহিসের লেজটা ইশালের ঘাড়ের পেছনে।আর মাথাটা ওর উন্মুক্ত বুকের মাঝখানে। দেখে কারো বোঝার সাধ্য নেই যে এটা ট্যাটু হলেও বাস্তবে জীবন্ত সাপ।সাথে আছে খুব সুন্দর ডিজাইনের ফুলের ট্যাটু।
ফুলের ট্যাটু শুরু হয়েছে তার বাম গাল থেকে।গালের অর্ধেক অংশ জুড়ে ফুলের ট্যাটু। আঁকা-বাঁকা সাপের সাথে ফুলের কম্বিনেশনটাও বেশ মানিয়েছে।ট্যাটু-টি পুরো ঘাড় থেকে বুক অব্দি ফুল ও কালো সাপের আঁকা। পরনে তার কালো শার্ট।বুকের দিকটায় দুটো বোতাম খোলা থাকায় স্পষ্ট ট্যাটু-টা দেখা যাচ্ছে।
ঠোঁটের কোণায় শয়তানি হাসি ফুটিয়ে সে চললো তার গন্তব্যে।কিন্তু ইশাল তো জানে না, সে পৃথিবীর বুকে পা রাখলেই তার আভাস সবার আগে মেঘপুত্র পেয়ে যায়।
#চলবে