মেঘে ঢাকা চাঁদ পর্ব-২১

0
901

#মেঘে_ঢাকা_চাঁদ (পর্ব ২১)
সায়লা সুলতানা লাকী

হিমেল যখন কথা বলছিল মোবাইল কলে তখন পিছনে দাঁড়িয়ে ছিল হোমায়রা আর ওর মা। কথা শেষ হতেই। হোমা বলে উঠল
“দেখছো আম্মু আমি যা বলেছিলাম তাই সত্যি । তুমিতো বোকা, কিছুই বোঝো না। আমি প্রথম থেকেই বিষয়টা আন্দাজ করতে পেরেছি।”

“কিসের কথা বলছো আপু?”

“তোকে আর বলে কি হবে? তুইতো যা করার তা করলিই। একটা মাত্র ভাই আমার। কীভাবে পারলি বোনের সংসারে এমন অশান্তি সৃষ্টি করতে? এসব স্বার্থপরতা শিখলি কোথায়?”

“এক্সকিউজ মি, কি বলছো তুমি ? বুঝে বলছোতো? আমি আবার কিসের অশান্তি করলাম তোমার?”

“ন্যাকামো করিস না। আমি আম্মুর মতো এত বোকা না। এত বোকা হলে দেশের বাহিরে আর স্বামী সন্তান নিয়ে সংসার করে খেতে পারতাম না!”

“আলহামদুলিল্লাহ, তুমি অতি চালাক।আবারও বলি আলহামদুলিল্লাহ। এখন বলো কি কথা বলতে চাও! শুধু শুধু এত ঘুরায় প্যাচায় ঝামেলা আরও কঠিন করছো কেন?”

“আমি করছি ঝামেলা? বদ ছেলে হইছিস একটা। আমার ননদকে বিয়ে করতে তোর অসুবিধাটা কোথায় ছিলো? কেন তুই ওকে কল দিয়ে সাফ সাফ জানিয়ে দিলি তুই এখনই বিয়ে করতে চাস না? যেখানে কি না আমি আসছি এই বলে যে দেশে এসে আমার ভাইয়ের সাথে ওর বিয়ে দিব। তারপর দুজনকেই আমার কাছে নিয়ে যাব। এতে আমার কদরটা কতটুকু বাড়তো শ্বশুরবাড়িতে তার কোন আন্দাজ আছে তোর? এক কথায় সবাই আমার প্রতি অন্ধ হয়ে যেত।”

“গুড, এতক্ষণে কাহিনি বুঝলাম। এখন যাদি আবার ছোটপুও বলে তার ননদকে বিয়ে করতে তাহলে আমার তার ননদকেও বিয়ে করতে হব নয়তো আমিতো তাকেও তার শ্বশুরবাড়িতে ছোট করে ফেলবো। শ্বশুরবাড়িতে তারও কদর বাড়বে যদি আমি তার ননদকে বিয়েটা করি। এখন বলো আমি দুই বৌ নিয়ে কীভাবে কি করব? ভাই হিসেবেতো আমার দুই বোনের কদর তাদের শ্বশুরবাড়িতে বাড়ানোর দায়িত্ব নেওয়া উচিৎ, তাই না?” হিমেল এবার একটু ব্যঙ্গ করেই বলল কথাটা।

“বেশি বেশি কথা বলিস কেন? তোর ছোটপু কি তোকে এমন কিছু বলেছে? ওরতো কোন ননদই নাই। হোমা কত করে শখ করেছিল ননদকেই ভাইয়ের বৌ বানাবে। ননদ সব সময় ওর কথা মতো চলতো।এরজন্য কত কত মার্কেটিং করে এসেছে। শুধু শুধু তোকে আমেরিকায় নিয়ে গেলে ওর শ্বশুর বাড়ির সবাই নানান কথা শুনাবে ওকে। কিন্তু ননদসহ নিয়ে গেলে কেউ আর কিছুই বলবে না বরং হোমার কথায় তখন সবাই উঠবস করবে। কিন্তু তুইতো সব নষ্ট করে দিলি।”

“ইশশশ আমার পাওয়ার দেখে আমি নিজেতো চমৎকৃত, অভিভূত।”

“এখনও সময় আছে তুই বিয়াটাতে রাজি হয়ে যা।”

“সরি, আমি পারব না। আমি এই মুহুর্তে বিয়ে করতে পারব না। মিনিমাম কয়েক বছর লাগবে আমার এস্টাবলিশ হতে। নিজেকে বিয়ের জন্য প্রস্তুত না করে আমি বিয়ে করব না।”

“কি প্রস্তুত করবি? তোরতো আর চাকরির দরকার নাই। তুই ইমপোর্ট এক্সপোর্ট এর বিজনেস করবি। লাইন ঘাট সব তোর দুলাভাই ঠিক করে দিবে আর ক্যাপিটাল আব্বু দিবে তোরতো নিজের কোন সমস্যা নাই। ”
“তোমার চোখে নাই কিন্তু আমার চোখে আছে।”

“হুমম সেই সমস্যাটাইতো খুঁজছি দুদিন ধরে। এখন পেয়ে গেলাম। ”

“কি পেয়েছো শুনি?”

“আহ থামতো তোরা? হিমু বড় বোনের সাথে এমন মুখে মুখে তর্ক করছিস কেন? আগেতো কখনও করিস নাই? কি হলো তোর ইদানীং। আগেতো সবার কথা ভাবতি, এখন মনে হচ্ছে খুব স্বার্থপর হয়ে উঠেছিস। মেজাজও দেখি সবসময় খিটমিট খিটমিট হয়েছে। ঘটনা কি তোর?”

“ঘটনা আবার কি? তুমি এখন ধরতে পারোনি আম্মু? মিশতো কার সাথে, কার সাগরেদ ছিলো? ভুলে যাও কেন? ”

“হায়রে আল্লাহ! খালামনিকে তুমিও এতটা অপছন্দ করতা আপু ? কই আগে কখনও বুঝি নাইতো? খালামনি দেখি তোমাকে কত কত গিফট করতো! ওগুলোতো খুব খুশি হয়েই নিতা। মানুষটা নাই তারপরও তার ব্যাকবাইটিং করা ছাড়তে পারলা না? আজব মানুষ তোমরা আজব তোমাদের মন মানসিকতা! আম্মু, আপু না হয় এমন করে বলতে পারে কিন্তু তুমি? তোমারতো আপন বোন। তোমার বোন মারা গেলো তার জন্য তোমার এতটুকুও সিমপ্যাথি নাই?”

“আমার বোনও মারা গেছে সাথে ওর প্রতি রাগ ভালোবাসা সব নিয়েই চলেগেছে। এখন আর আছে কে? কার জন্য মন খারাপ করব, সিমপ্যাথি দেখাবো?”

“তোমার বোনের ছেলেমেয়ে দুইটা?”

“সাবধান ওই মেয়ের কথা আমার সামনে আর কখনও বলবি না। কি ডেঞ্জারাস মেয়ে, বাপ আরেকটা বিয়ে করছে বলে তার সম্পত্তি লিখিয়ে রেখে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। যে মেয়ে তার বাপকেও ছাড়ে না সে মেয়ে এই পৃথিবীতে আর কাউকে ছাড়বে? ওরে আল্লাহ আমার জীবনেরও আমি এমন মেয়ে আর একটা দেখিনি। এই মেয়ের কপালে অনেক অশান্তি আছে। বাপের অভিশাপ নিয়ে কোন মেয়ে জীবনে সুখী হতে পারে না। সবধান অমন মেয়ে সম্পর্কে এই বাসায় আর কখনও কোন কথা হবে না বলে দিলাম।”

“আম্মু তুমিই পারো এমন নির্দয় হয়ে কথা বলতে কিন্তু আমি পারি না। কারন আমি….. ”

“চুপ একদম চুপ আর একটা কথা উচ্চারণ করবি না। আমি এসব নিয়ে তোর মুখে আর কোন কথা শুনতে চাই না। এখন তুই বিয়েটা করলেই বাচঁতাম আমি। পিছন থেকে সব অশুভ ছায়া সরতো।”

“তবে শুনে রাখো, আমার খালামনি, আমার আপন খালামনি, যার স্নেহ ভালোবাসা পেয়ে বড় হয়ে উঠেছি। এমন একজন আপন মানুষের মৃত্যুর পর পরই যে আমার বিয়ে নিয়ে ভাবতে পারে তার সাথে আমারও আর কোন কথা থাকতে পারে না।”
কথাটা শেষ করেই ও বাসা থেকে বের হতে চাইল আর তখন ওর মা পিছন থেকে চিৎকার করে উঠল
“সাবধান হিমু তুই এখন বাসা থেকে একটুও বের হবি না। আমি মান করলাম তুই আমার অবাধ্য হতে পারবি না। তুই বাসার বাহিরে এখন যাবি না।”

“ও কে যাব না। তবুও ঠান্ডা থাকো।” বলে হিমেল ফিরে নিজের রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিল।

“দেখছো আম্মু ঘটনা কোন দিক থেকে কোন দিকে যাচ্ছিলো। আমি না আসলেতো তুমি সব হারাতে।”

“কে কি হারাতোরে হোমা? জীবনের হিসাবতো বেশ ভালোই শিখেছিস দেখছি।” নাজমুল সাহেব একটু শক্ত গলায় বলে উঠলেন। ওদের কথপোকথন যে তিনি ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে শুনছিলেন তা কেউ খেয়াল করেনি। তার হঠাৎ এমন প্রশ্ন শোনে হোমা একটু অপ্রস্তুত হয়ে উঠল।
” জি আব্বু মানে—-”

“তুই সবার বড়, আমার বড় সন্তান। ভেবেছিলাম আমার মৃত্যুর পর তুই তোর ছোট ভাইবোনদের দেখে রাখবি। কিন্তু আমার আশাটা আজ নষ্ট হয়ে গেল। যেখানে স্বার্থ কাজ করে সেখানে নিরপেক্ষতা আশা করা অবাঞ্ছনীয়।”

“আব্বু তুমি আসলে কি বলছো তা বুঝতেছি না।”

“হুমম বুঝবি কীভাবে, বুঝতে হলেতো — থাক এ বিষয়ে আর চর্চা না’ই হোক। তুই আর হিমুর বিয়ে নিয়ে কোন কথা নাই বলিস। এই বিয়েতে আমারও মত নেই। জীবনসঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিজের একটা মতামত থাকতেই পারে আর এগে অন্য সবার সম্মানও দেখানো উচিৎ। তোদের দুইবোনের মতামতের ভিত্তিতেই বিয়ে দিয়েছি। তখন তোদের পছন্দ অগ্রাহ্য করে নিজের স্বার্থ দেখিনি। সেখানে ছেলের বেলায় কেন ভিন্ন হবে?”

“কিন্তু তোমার ছেলের চোখতো ভুল জায়গায়।”

“কোনটা ভুল আর কোন সঠিক তা তুমিই বা কতটুকু জানো, বোঝো রেহানা?”

” এতটুকু যে বুঝবো না তা ঠিক না।মেয়েটার সাহস দেখছো? কত্তো বড় কলিজা, কি করল কাজটা।”

“পরের মেয়ে বলে দোষটা দেখছো। একবার নিজের দিকে তাকাও চোখ বন্ধ করে নিজেকে একবার মেয়েটার জায়গায় দেখো তারপর বুকে হাত দিয়ে বলো মেয়েটা কতটুকু ভুল।”

“কি বলছো তুমি? তুমি লাবন্যের ভুল দেখছো না? তুমি ওকে সাপোর্ট করছো? এই মেয়ে…..”

তোমার ছোট মেয়ে ওর হাজবেন্ডের বিজনেস শুরু করতে নিজের সব গহনা বিক্রি করে দিয়েছে। এখন ওরা ভালো আছে। নিজেদের সংসারটা গুছিয়ে নিয়েছে। তোমার মেয়ের স্ট্রাগল দেখে দেশে বসে কত কেঁদেছো।এখন সুখ দেখে হাসো। আল্লাহ এমন দিন যেনো আমাকে না দেখায় ধরো তোমার মেয়েটা হুট করেই মরে গেলো। ঠিকতার কিছুদিন পরই তোমার ছোট জামাই আবার বিয়ে করে তেমার মেয়ের কষ্টের গড়ে তোলা সংসারে অন্য কোনো মেয়ে নিয়ে সুখে সংসার করগে শুরু করল। তোমার নাতি নাতনির ভবিষ্যত……
“উফফ তুমি থামোতো। কি সব বলছো আবোল তাবোল, মাথা ঠিক আছে তোমার। কীভাবে এসব বলো? আমার জামাই এত খারাপ না। ও আবার বিয়ে করবে না। ও কখনোই আমার মেয়ের কষ্টে গড়া সম্পদ অন্যকে দিয়ে দিবে না।”

“এমন বিশ্বাস হয়তো রেশমাও করতো। কিন্তু বাস্তবতো হলো ভিন্ন। স্ত্রীর মৃত্যুতে পুরুষ আবার বিয়ে করতে পারে এটা জায়েজ কিন্তু তৃতীয় পক্ষের ক্ষেত্রে তা কতটুকু সহনীয় তা কি কেউ ভেবে দেখে?”

“তুমি হঠাৎ রেশমার পক্ষে কথা বলছো যে? অথচ এই রেশমার জন্য আমি আমার অনেক কিছু হারিয়েছি……”

“তুমি সেদিনও ভুল ছিলা আজও ভুলের মধ্যেই দাঁড়িয়ে আছো। তুমি যা হারিয়েছো তা সব তোমার নিজের করা ভুলের মাশুল শুধু। কেন অন্যকে দোষারোপ করছো আর নিজের পাপের বোঝা বাড়াচ্ছো।”

“আমি? আমার ভুল?”

“হুমম তোমার ভুল। রেশমার তখন বয়স কম ছিল, চোখে অন্যরকম একটা স্বপ্ন। লিখনকে হারানোর ভয়ে অন্য আরও আট দশটা মেয়ের মতোনই না বুঝে ওর সাথে পালিয়ে গিয়েছিলো। ওর ধারনা ছিলো না যে ও চলে যাওয়ার পর ওর বাবার এমন অবস্থা হবে। ও একেবারেই বুঝতে পারেনাই ওর যাওয়ার পরিনাম কি হবে। কিন্তু তুমি যা করেছো তা জেনে বুঝেই করেছো। তুমি চাইলেই পারতে ওই দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে। তোমার এর আগেই আরও দুইটা বাচ্চা হয়েছে তোমার অভিজ্ঞতাও ছিল কিভাবে তোমাকে চলতে হবে ওই সময়টাতে । কিন্তু তুমি তা করো নাই। তুমি হাসপাতালে গিয়ে এমন কোন উদ্ধারও করোনি কারউ। উলটা গিয়ে নিজের ক্ষতি করেছো।”

“আমার আব্বা… ”

“তো! সবসময় আবেগ দিয়ে না কিছু সময় বিবেক দিয়েও সিদ্ধান্ত নিতে হয়। তুমি যদি নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারতে সেই সময় তবে আজকের দিনগুলো অন্যরকম হতে পারতো। নিজের ভুলকে এতদিন রেশমার উপর চাপিয়ে নিজের দায়কে মাটিচাপা দিয়েছিলে। আমি শুধু সহ্য করেছি, এ ছাড়া আর কিছুই করার ছিলো না। ভেবেছি আল্লাহ অতটুকুই আমার ভাগ্যে রেখেছেন। আমার চোখে তুমি সেদিনও অপরাধী ছিলে আজও তাই। মেয়ের কুবুদ্ধি নিয়ে ছেলের পিছে লেগেছো। এসব ছাড়ো।মেয়ের সুবুদ্ধির জন্য আল্লাহর কাছে কাঁদো। নয়তো একজনকেতো হারিয়েছো এবার আরেকজনকেও হারানোর প্রস্তুতিও নিতে হবে।” কথাটা শেষ করে নাজমুল সাহেব আর বসলেন না উঠে নিজের রুমে চলে গেলেন।

রেহেনা বেগম নিজের স্বামীর কথা শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে বসে পড়লেন। কি বলবে তা বুঝতে পারছেন না। সবকিছু কেমন যেন অস্পষ্ট হয়ে আসতে লাগল ক্রমশ।

সকালে রুশকে স্কুলে দিয়ে লাবন্য আবার বাসায় ফিরল। এরপর আবার বুয়া খালাকে নিয়ে বের হল বাজারের জন্য। লিস্ট অনুযায়ী সবটা নিয়ে যখন ফিরল তখন সিড়ির সামনে আবার ওই দোতলার আংকেলের সাথে দেখা হয়ে গেল। লাবন্য এভয়ড করতে চেয়েও পারলো না। তিনি সামনে এগিয়ে এসে বেশ আগ্রহ দেখিয়েই বলতে শুরু করল
“হে ইয়াং লেডি, একি করেছো তুমি? তুমি গেছো বাজারে? কি সাংঘাতিক! এই মেয়ে তুমি আমাকে বলতা। আরে মেয়ে এতে লজ্জার কি আছে। আমি কি পর? যাও যাও বাসায় যাও, আমি আজ রাতে আসব তোমাদর বাসায়। তখন জানিও তোমার আর কি কি দরকার। আরে মেয়ে আমি আছি কি করতে?”

“সরি আংকেল আমার কিছু লাগবে না। আর রাতে বাসায় নাও থাকতে পারি। আসি একটু তাড়া আছে।” বলে খালাকে তাড়া দিয়ে নিজেও উপরে উঠতে শুরু করল দ্রুত । লোকটা সরতেই বুয়া খালা চিৎকার করে বলা শুরু করল
“দেখছেননি খালা কত্তো বড় শয়তান ব্যাডা। কেমন চোখমুখ ট্যাড়াইতে ট্যাড়াইতে কথাগুলো কইলো। বদের হাড্ডি বদ কোহেনকার। শিয়ানা একটা মাইয়া আছে বেডার। তারপরও দিশা ঠিক হয় নাই।”

“আহা খালা থামোতো! সিড়িতে এসব কি শুরু করলা? যাও বাসায় যাও আমি আবার স্কুলে যাব এখন। এমন আরও কত কি আছে কপালে এগুলো নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে?” বলে আর দাঁড়ালো না দরজা থেকেই ফিরে এল স্কুলে যাওয়ার জন্য।

লাবন্য বাসায় ফিরতেই দেখল বুয়া খালা সব বাজার না গুছিয়েই খাবার টেবিলে সার্ভ করছে আগে এমনটা কখনও সে করেনাই। মনে মনে একটু বিরক্ত হল কিন্তু মুখে কিছু বলল না। খাবার খেতে খেতে খেয়াল করল খালার মুখটা বেশ খুশি খুশি। কিন্তু কারনটা বুঝতে পারল না। শরীর আর মন দুটোই এতটা বিক্ষিপ্ত যে আগ বাড়িয়ে নতুন কিছু জিজ্ঞেস করতেও ইচ্ছে করল না। খাওয়া শেষ করে ভাতঘুমের জন্য চলে এল রুমে। ইদানীং খাটা খাটনিটা বেশি হয় বলে ঘুমও বেশ ভালো হয়।

ঘুম ভাঙলো ডোরবেলের আওয়াজে। বিছানায় উঠে বসে দেখল চারপাশ অন্ধকার হয়ে আছে। এখন বাসার দরজাটা অন্য কেউ খুলে না। মাথাটা কেমন জানি একটু ঝিমঝিম করছে। কে আসলো এই সময়তে? একটুকু ভাবতেই মেজাজ গেলো খারাপ হয়ে।বিরবির করে বলে উঠল “ওই ব্যাটা হারামজাদাটা নাতো?”
লাফিয়ে নামলো আর বলল, যদি সেই হয় তবে আজকে তার সাড়ে সর্বনাশ ঘটায় ছাড়বে। এমনই একটা হিংস্র মনোভাব নিয়ে দরজাটা খুললো।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here