#মোহঘোর
#পর্বঃ৩৯
লেখনীতেঃতাজরিয়ান খান তানভি
“আপনি হাসছেন?”
ইনজাদ হাসি বন্ধ করল। নির্মোহ গলায় বলল—
“হাসব না তো কী করব? এতটুকুর জন্য কেউ এভাবে কাঁদে?”
রেহাংশী অভিমানী গলায় বলল—
“আপনার কাছে এতটুকু মনে হচ্ছে?”
“তা নয়তো কী! কী অবস্থা করেছ নিজের?”
ইনজাদ পকেট হাতড়ে একটা টিশু বের করল। মৃদু শীতলতায়ও ঘেমে যাচ্ছে রেহাংশী। তার চুলের খোঁপা হতে চুল বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে। চোখের জলে ধুয়ে গেছে মুখের চামড়ায় আস্তরণ পড়া প্রসাধনীর। কপালে, চোখের নিচে, চিবুকে জমেছে বিন্দু বিন্দু মুক্তোর মতো ঝকঝকে ঘাম। ইনজাদ বড়ো দানাগুলো হাত দিয়ে পরম যত্নে মুছে দিলো। বাকি ঘাম মুছে দিলো টিশু দিয়ে চেপে। কপট হতাশতা দেখিয়ে বলল—
“এত টাকা খরচ করে মেকওভার করালাম, সব জলে ধুইয়ে দিলে। কতগুলো টাকা লস করালে আমার বলোতো?”
রেহাংশী ভাসন্ত চোখে চাইল। এই মুহুর্তেও মানুষটার মজা করা বন্ধ হয় না! রেহাংশী নির্নিমেষ চাহনিতে হেসে ফেলে ইনজাদ। আবেশিত গলায় বলল—
“মায়ের কথা মনে পড়ছে?”
রেহাংশীর ম্লান চাহনি অনুপলেই সরব হলো। ইনজাদ ঠোঁট ছোঁয়াল রেহাংশীর ললাটে। মৃদু স্বরে নিজের গরজেই বলল—
“আম্মার কাছে কিছুদিন রেখে আসি তোমাকে? যাবে?”
রেহাংশী কথা বলল না। আদুরে চড়ুই পাখির ছোট্ট শরীরটা গুঁজে দিলো ইনজাদের বুকে। ইনজাদ পা সরাল। রেহাংশীকে বসতে দিয়ে বিছানায় রাখা পা টা ছড়াল। ইনজাদের শরীরের সাথে লেপ্টে গেল রেহাংশী। ইনজাদ পা টেনে এনে একটা বলয়ে আবদ্ধ করে নিল রেহাংশীকে। তার গলায় এক হাত জড়িয়ে রেখে আরেক হাতে ব্লেজারের ভেতরে হাত গলিয়ে দিয়ে শার্ট খামচে রেখেছে রেহাংশী। ইনজাদ বাম হাতের বেড়িতে রেহাংশীর কটিদেশ আবদ্ধ করল। ইনজাদের মুখের কাছে মুখ নিয়ে ভাবুক চোখে তাকিয়ে রইল রেহাংশী। ইনজাদ চিবুক ঠুকল রেহাংশী কপালে। ঠান্ডা স্বরে বলল—
“রেখে আসবো তোমাকে?”
ঢোক গিলে নিল রেহাংশী। ক্ষীণ কণ্ঠে বলল—
“উঁহু।”
“যাবে না?”
“উঁহু।”
ইনজাদ অন্য হাতও কাজে লাগালো। দুই হাতে বন্দি করে নিল প্রেমময়ীকে। তার প্রশস্ত, দৃঢ় বক্ষ পাটাতনে মিশে রইল ক্লান্ত, শ্রান্ত রেহাংশী। মাথাটা রাখল ইনজাদের স্বরনালির কাছে। বুকের একপাশ অনুভব করছে স্বামীর উষ্ণতা পূর্ণ হৃদয়ের কম্পন। গলা থেকে হাত নামাল রেহাংশী। আড়ষ্ট হয়ে রইল নিরুপদ্রপ শেষ আশ্রয়ের বুকে। ইনজাদ অপ্রতিরোধ্য গলায় বলল—
“বাঙালি মেয়েরা সব এক। আর যাই হোক, এরা শাশুড়ির আশেপাশে ঘেঁষতে চায় না।”
নিরুত্তর রেহাংশী বিমর্ষতার অবসান হলো না। ইনজাদ নরম স্বরে বলল—
“আম্মা যে কেন আমাকে বাদাম ওয়ালা দুধ খাওয়ালো না! এতবার নাম শুনেও আমি একবারো খেয়াল করতে পারিনি। আমি ভেবেছিলাম নাম তো অনেকেরই এক হয়। মানুষও যে এক তা বুঝতে পারিনি।”
“অমানুষ!”
ইনজাদ চমকে ওঠল। নমনীয় কণ্ঠে বলল—
“এভাবে বলতে নেই রেহাংশী।”
এক হাত উঠিয়ে রেহাংশীর মাথাটা আরেকটু চেপে নিল নিজের সাথে ইনজাদ। স্বরভার করে বলল—
“বি স্ট্রং রেহাংশী। জীবন অনির্ণীত। অমোঘ মৃত্যু ছাড়া সব পরিবর্তন হতে পারে। জীবন সংবিধান ওপরওয়ালার লিখিত। আমরা যা অবশম্ভাবী ভাবি তা সবসময় নাও ঘটতে পারে। আবার এমন কিছুও ঘটতে পারে যা আমরা কখনো কল্পনাও করিনি। জীবন বাস্তব চোখ দিয়ে দেখতে হবে। ওপরওয়ালা তাই করেন যা তাঁর বান্দাদের জন্য সঠিক। তিনি সর্বদ্রষ্টা! আমাদের তার ওপর ভরসা রাখতে হবে। তোমার মনে আছে বিয়ের দিন সকালে কী হয়েছিল? আমি তোমার সাথে কথা বলতে তোমাদের বাড়ির পেছনে গিয়েছিলাম। কতবার তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি, শুধু একটিবার বলো যে তোমার মনে আমার জন্য একটু হলেও জায়গা আছে। কিন্তু তুমি! সেদিনও চোখের জলে ফিরিয়ে দিয়েছিলে আমায়। কিন্তু আজ তুমি আমার অর্ধাঙ্গীনি। কারণ, ওপরওয়ালা চেয়েছেন তাই। আমার হৃদয়ের ডাক তো তিঁনি শুনেছেন। তোমারও শুনবে। নিজেকে শক্ত করো বিষবাণ। আমার বিষবাণ হেরে যাবে না। অন্য কেউ তোমার জন্য লড়ার আগে, তোমার নিজেকে নিজের জন্য লড়তে হবে। আমি সবসময় তোমার ছায়া হয়ে থাকব।”
রেহাংশীর ঝিম ধরা মস্তিষ্কে জ্ঞাত হলো না ইনজাদের বাণী। সে নির্বিকার চেয়ে রইল। অনুভব করতে লাগল নিজের ক্ষীণ হৃৎকম্পনের বিপরীতে স্বামীর সচল হৃৎস্পন্দন।
ইনজাদ শ্বাস ফেলল। সন্ধানী গলায় বলল—
“আমার মনে হয় তোমার মা মারা যাওয়ার আগেই সৌরভের জন্ম। স্যার ভুল করে ফেলেছেন হয়তো না বুঝে। ঘোরের বশে বুঝতেই পারেননি কী করছেন তিনি। তার মোহ, তার জীবনের সবচেয়ে বড়ো মোহঘোর।”
রেহাংশীর বিবশ দেহে জঙ্গমতা এলো। ইনজাদের বুক থেকে দেহ সরিয়ে স্থির চোখে তাকাল তার দিকে। ইনজাদ চোখে হাসল। প্রেয়সীর চোখ ভরা জলে ডুবে যেতে ইচ্ছে হলো তার। গভীর প্রণয়ে আস্থার সেতুবন্ধন তৈরি করল। রেহাংশীর ভীত মনে প্রাণের সঞ্চারণ হলো। গহীন অন্তঃকরণ হতে প্রশ্ন ছুড়ল—
” আমি কখনো আপনার মোহঘোর হয়ে যাবে না তো?”
রেহাংশীর ওষ্ঠাধরের সুধা শুষে নিল ইনজাদ। প্রগাঢ় মোহবিষ্ট গলায় বলল—
“তার আগে যেন এই দেহ থেকে প্রাণটা চলে যায়।”
রেহাংশী তূরন্ত বেগে ঝাপটে পড়ে ইনজাদের বক্ষস্থলে। দুই হাঁটুতে ভর দিয়ে ইনজাদের গলা জড়িয়ে ধরে। এতটা দৃঢ় যেন পাঁজর ভেঙে স্বামীর অন্তঃপুরে লুকিয়ে যাবে!
দরজায় কড়া পড়তেও রেহাংশীর ধ্যান ছুটল না। ইনজাদ পিঠের ওপর আলতো হাত ঘষে বলল—
“কেউ এসেছে রেহাংশী।”
রেহাংশী গলা ছাড়ল না। জেদি, একরোখা বাচ্চাদের মতো জড়িয়ে ধরে রাখল ইনজাদকে। ইনজাদ তাড়া দিলো। করাঘাতের শব্দ জোরালো হচ্ছে। রেহাংশী নিশ্চিত হলো। ইনজাদকে ছেড়ে গদিতে বসল। ইনজাদ নরম পায়ে কক্ষের বাইরে আসে। মেহমাদ দুশ্চিন্তায় আচ্ছন্ন। ভ্রূ তুলে ইশারায় প্রশ্ন ছুড়ে, রেহাংশী কেমন আছে? মাথা নাড়িয়ে তার অবস্থার স্বাভাবিকতা জানান দেয় ইনজাদ। মেহমাদ স্বাভাবিক গলায় বলল—
“তাহলে ওকে নিয়ে যা। রেস্টের প্রয়োজন ওর।”
ইনজাদ মনমরা গলায় বলল—
“সরি ইয়ার! ঝামেলা হয়ে গেল আমার জন্য।”
“সরি বলছিস কেন? আমি তো মনে করি যা হয়েছে একদম ঠিক হয়েছে। আঙ্কল যা করেছে তার পরিণতিটা তার জানার দরকাল ছিল। বাদ দে সেসব। যা এখন। খেয়াল রাখিস ওর।”
“হুম। স্যার কোথায় এখন?”
“আছেন। বসে আছেন হলরুমে।”
“হুম। ওকে, যাচ্ছি আমি।”
ইনজাদ ভেতরে ঢুকে। উৎসুক চোখে দাঁড়িয়ে আছে রেহাংশী। ইনজাদ অধর কোণে হাসল। রেহাংশীর হাতটা শক্ত করে ধরে বলল—
“চলো।”
রেহাংশী দ্বিরূক্তি করল না। হলরুমের এক পাশে দাঁড়িয়ে আছেন জিবরান খন্দকার। তার পুরো পরিবার চেয়ে আছে রেহাংশীর দিকে। কিন্তু রেহাংশীর সম্পূর্ণ মনোযোগ তার স্বামীর চপল পায়ে। সে তাই অনুসরণ করল। আপাতত প্রফেশনাল সম্পর্কও ইনজাদের দৃষ্টির অগোচরে।
,
,
,
নিকষকৃষ্ণ নভোলোকে ঝুলে থাকা রুপালি থালার অবিরত কিরণে মাখো মাখো রাতের আঁধার। অদূরে ভূতগ্রস্তের মতো দাঁড়িয়ে থাকা দালানগুলো থেকে ছিটকে আসা ক্ষীণ আলো আবছা আঁধারে মিলিয়ে যাচ্ছে। শীতল মলয়ে হিম হয়ে হয়ে আছে দেহ। সেই শীলতার ব্যবচ্ছেদ ঘটিয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগারেট টেনে যাচ্ছে ইনজাদ।
সময় এখন মধ্য রাতের ওসপার। ঘুমন্ত, নিস্তব্ধ, ভুতুড়ে নগরী কঠিন শান্ত। ইনজাদ হাতের ফিল্টার টুকু বারান্দার গ্রিলের সাথে চেপে নিভিয়ে নিল। ছুড়ে ফেলল বাইরে।
থাই টেনে ভেতরে এসে আবার তা টেনে দিল। আলো জ্বলছে ঘরে। তন্দ্রায় বিভোর রেহাংশী। গায়ে পাতলা চাদর টানা। ইনজাদ বিড়ালপায়ে হেঁটে সুইচবোর্ডের কাছে গেল। রেহাংশীর ঘুমন্ত, নিষ্পাপ মুখটার দিকে তাকিয়ে গাঢ় শ্বাস ফেলল। লাইট অফ করে দাঁড়িয়ে রইল কিছুক্ষণ।
তমসার চাঁদোয়ায় ঢেকে গেল শয়ন কক্ষ। থাই ভেদ করে আসছে চন্দ্রকিরণ! ইনজাদ পর্দা টেনে দিলো। ঘন আঁধারে নিমজ্জিত হলো পুরো কক্ষ। ধীর পায়ে বিছানার কাছে এসে বসল সে। আঁধারে চেয়ে রইল রেহাংশীর দিকে। কিছু বুঝা না গেলেও অনেক কিছু বুঝে নিল ইনজাদ। বিছানায় গা এলিয়ে দিলো। দুই চোখের পাতা এক হলো না তার। ভয়, শঙ্কিত মনের দৃঢ় বিশ্বাস রেহাংশী জেগে উঠবে। হলোও তাই। ঘণ্টা খানিকের ব্যবধানে আচমকা চোখ ছুটে গেল রেহাংশীর। নিভুনিভু চোখে আঁধার কালো দেখে শিউরে উঠল সে। দ্রত উঠে বসে ঘায়েল হওয়া পাখির মতো ছটফটাতে লাগল। চিৎকার করে বলতে লাগল—
“লাইট বন্ধ করেছেন কেন? লাইট জ্বালান! দয়া করে লাইট জ্বালা!। ”
ইনজাদ বিদ্যুৎ বেগে উঠে বসে। অস্পষ্ট সবকিছু। আঁধার সাগরে হাবুডুবু খেয়ে রেহাংশীকে খুঁজে নিল। জড়িয়ে নিল নিজের সাথে। সান্ত্বনার সুরে বলল—
“বি কোয়াইট রেহাংশী। শান্তু হও।”
“দোহাই লাগে আপনার। লাইট কেন বন্ধ করেছেন? লাইট জ্বালান, লাইট জ্বালান।”
“আগে তুমি চুপ করো। শান্ত হও।”
“না, আপনি লাইট কেন বন্ধ করেছেন। জ্বালান, জলদি জ্বালান।”
রেহাংশী হাত-পা ছুড়তে থাকে। অন্ধকারে কোথায় কী হচ্ছে টের পাওয়া যাচ্ছে না। বদ্ধ বাতাসে রেহাংশীর ক্রন্দনেরা শুধু প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। ইনজাদের চোখে নখ লেগে যায় রেহাংশীর, গলায় আঁচড় লাগে। ইনজাদ রুষ্ট হয়। জোর করে ধমকে উঠে সে। নিভে যায় রেহাংশী। সমাহিত হয় স্বামীর বুকে। তার অন্তঃকরণের ক্লেশ কমেনি। তরতর করে ছড়িয়ে পড়ছে সমস্ত দেহে। ইনজাদ মোলায়েম গলায় বলল—
“কেন পাগলামি করছ? এমন করো না রেহাংশী।”
“আপনি বলতে পারেন, কী দোষ করেছি আমি? কেন আমার সাথে এমন হলো?”
“কারো জীবনে কারো হাত নেই। সব আল্লাহর বিধান। তিঁনিই মালিক।”
রেহাংশী ডুকরে ওঠল। কেঁপে কেঁপে উঠছে তার শরীর। থরথর করা গলায় বলল—
“মা আমাকে কেন ছেড়ে গেল বলেন তো? একটুও মায়া হলো না আমার জন্য? তার স্বামীই তার কাছে সব? আমি কেউ না? এই নিষ্ঠুর দুনিয়ায় আমাকে একা ফেলে চলে গেল!”
” মায়েরা নিষ্ঠুর হয় না রেহাংশী। পৃথিবীতে একমাত্র মা আছেন, যিনি বিনা স্বার্থে সন্তানকে ভালোবাসেন। যা হয়েছে ভাগ্যের লিখন। তাতে আমরা মানুষরা কিছুই করার ক্ষমতা রাখি না।”
রেহাংশী শ্বাস ফেলল। বুক কাঁপিয়ে কেঁদে বলল—
“এত ভালোবাসা কী করে ভুলে গেল? আমাকে একা করে চলে গেল! জিবরান খন্দকার তাকে ছেড়ে যাবে বলে সে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে? ভাবলো না আমার কী হবে? আমি কার কাছে থাকব?”
“আমার কাছে, আমার কাছে থাকবে তুমি। আল্লাহ যা কেড়ে নেন তার চেয়ে দ্বিগুন ফেরত দেন। আমার আম্মা কী তোমার মা নয়, আমার বাবা কী তোমার বাবা নয়? আমি তোমার কেউ নই?”
ইনজাদের বুক থেকে মাথা তুলে রেহাংশী। গাঢ় অন্ধকারেও এক অদ্ভুত, ঐন্দ্রজালিক শক্তিতে ইনজাদের ভরসায় আবিষ্ট দুই চোখ দেখতে পারছে রেহাংশী। বদ্ধ কক্ষের, বদ্ধ বায়ুতে ভরসা, বিশ্বাসের তীব্র ঘ্রাণের ঘূর্ণন চলছে। অবিশ্বাস্য প্রশ্ন করল রেহাংশী।
“আপনি আমাকে ভালোবাসেন?”
অন্ধকার নীরবতায় ঝংকার তুলল ইনজাদের পুরুষালী কণ্ঠস্বর।
“বিশ্বাস হয় না আমাকে?”
“হয় না, একটুও হয় না। আপনারা সবাই এক। শরীরের মায়া সব। এই চামড়া ঝুলে পড়তেই সব ভালোবাসা শেষ। নোনতা স্বাদে মন ভরে গেলে আর ফিরে তাকাতে ইচ্ছে হবে না। ভালোবাসা নিঃশেষ হয়ে যায়। অন্ধকারে বিলীন হয়ে যায়।”
ইনজাদ থেমে গেলো। তিক্ত সত্য হজম করতে সময়ের প্রয়োজন। মৌনতা ভেঙে বলল—
“যেখানে জিবরান খন্দকার আছে, সেখানে জুলহাস খন্দকারও আছে। যেখানে রতন আছে, সেখানে নুহাশও তো আছে। আমার ভালোবাসায় আমি কমতি রাখিনি রেহাংশী। যদি সত্যিই শরীরের মোহ আমাকে টানত তাহলে সেদিন পাগলের মতো ছুটে যেতাম না তোমার কাছে। মিনতি করতাম না তোমার স্বীকারোক্তির জন্য। আমি কথা দিচ্ছি, আমার জীবনের শেষ যৌবন পর্যন্ত আমি তোমার হয়ে থাকব। শরতের আকাশ হও যদি, তার মেঘ হয়ে থাকব আমি। তোমার আশ্লেষে পূর্ণতা আমার, তোমার বিরহে শূন্যতা। আমার হৃৎকুঠিরের একচ্ছত্র সম্রাজ্ঞী তুমি, ব্যবচ্ছেদ করা হৃৎপিন্ডের বিষবাণ আমার। তোমার মাঝেই আমি, আমার সর্বত্র তোমার অধিকার। তোমার বিষেই যেন প্রাণহরণ হয় আমার।”
চলবে,,,





