#যে_শহরে_এখনো_ফুল_ফোটে
#পর্ব২৭
(আজ কিন্তু বিরাট পর্ব ❤️)
গাড়িতে আসতে আসতেই তিতলি ঘুমিয়ে পড়েছে, রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা, এত রাত জেগে থাকার অভ্যেস তিতলির নেই, দশটা না বাজতে ঘুমিয়ে পড়ে। তিতলিকে কোলে করেই নতুন জীবন আর বাড়িতে প্রবেশ করে রুমি।
রুমিকে বরণ করা নিয়ে বেশি ঝামেলা করেনি রাকিনের মা আর বড় বোন। রাকিনের বোন সিমি রুমিদের বাসায় যাননি, দুলাভাই গিয়েছেলেন। বোন বাসা গুছিয়ে নিয়েছে এই সময়ে, তিনিই রুমিকে শরবত খাইয়ে বরণ করে নিলেন। তবে রুমির কোলে ঘুমন্ত তিতলিকে দেখে খুব একটা খুশি হয়েছেন বলে মনে হলো না। রুমিকে সোফায় বসিয়ে দিলেন, তিতলি কোলেই ঘুমাচ্ছে।
“তোমার এত বড় মেয়ে আছে জানতাম না। তা এতরাতে কষ্ট করে ওকে সাথে না নিয়ে আসলেও হতো, কাল নানা নানুর সাথে বেড়িয়ে যেত।”
বেড়ানোর কথা কী বললেন আপু ঠিক বুঝলো না রুমি। তাছাড়া তিতলি বেড়াতে আসবে কেন! যেখানে রুমি, সেখানেই তিতলি থাকবে, এই কথা তো আগেই পরিষ্কার করে বলে নিয়েছে। রুমি কিছু বলার আগে রাকিনই উত্তর দেয়, “বেড়াতে আসবে কী আপু, তিতলি তো আমাদের সাথেই থাকবে। আজ বরং ওর কাপড়চোপড় সব আনতে পারিনি, কাল ওর মামা দিয়ে যাবে।”
“ও এখানে থাকবে? কোন রুমে থাকবে? রুম তো মোটে তিনটা। ছোট মানুষ আম্মার সাথে থাকলে রাতে হয়তো বারবার জাগবে, কান্না করবে, তাতে আম্মার ঘুমের সমস্যা হবে। আর গেস্টরুম ব্লক করে ফেললে আমরা আসলে থাকবো কোথায়? না এখন থেকে বেড়াতে এসে রাতে থাকা যাবে না, চলে যেতে হবে।”
“তিতলি আমার সাথে ঘুমাবে, ও কখনো আমাকে ছাড়া থাকেনি আপু।” রুমি নিচু স্বরে জবাব দেয়। প্রথম দিনই কোন তর্কে জড়াতে চায় না। রুমি জানে নতুন নতুন পায়ে পায়ে দোষ ঘুরে বেড়াবে, নতুন বৌয়ের কথা আচার আচরণ সব অতসী কাঁচের নিচে রাখা হবে।
“তোমার সাথে আগে থেকেছে, কারণ তখন তুমি একা ছিলে। কিন্তু এখন তুমি আর রাকিন একসাথে থাকবে। রাতবিরাতে তোমাদের এলোমেলো কাজকারবার কিছু দেখা তো বাচ্চার জন্যও ঠিক না।”
অস্বস্তি আর বিরক্তিতে রুমির গা রিরি করে উঠলো। এই টক্সিক কথাগুলো থেকে কী দুনিয়ার কোথাও গেলে ও শান্তি পাবে না! কী বিশ্রী কথা, ‘এলোমেলো কাজকারবার’।
“সিমি, কী বলতেছিস এসব? আমি সামনে আছি, তোর জামাই আছে, সবার সামনে কী কথা বলা উচিত আর উচিত না তা জানোস না?”
“আম্মা ভুল কী বলছি? এই কথায় এত লজ্জার বা কী আছে? ওরা দুইজনই অভিজ্ঞ, নতুন জামাই বৌ না যে লজ্জায় লাল হবে। আগে থেকে ভাব ভালোবাসা, তাই তো এমন হন্তদন্ত হয়ে বিয়ে। রুমির তো ছেলেমেয়েও হয়ে গিয়েছে, নতুন করে আর লজ্জার বাকি কী আছে?”
“আপু, রুমির একটাই মেয়ে তিতলি।”
” জানি, ছেলেমেয়ে কথার কথা বললাম আরকি। তবে তোকে এতদিন ধরে এত মেয়ে দেখালাম, বিয়ের কথা বললাম, তখন খালি করবো না করবো না করলি। আর এখন হুট করে বাচ্চাসহ রেডিমেড বৌ নিয়ে এসেছিস। আবার এমন ঢং করছিস যেন দুজনই লাজুক লতা।”
“আপা, তুমি এভাবে কথা বলছো কেন? সমস্যাটা কী? আমি নিজে রুমিকে পছন্দ করেছি। তিতলির কথা জেনেশুনেই করেছি, এবং বলা যায় তিতলি আমাদের বিয়ের একটা কারণ।”
“মাগো, ভালোই তো। তোর আগের বৌ বলতো তুই রোমান্টিক না, রোবট টাইপের, আমরাও তাই ভাবতাম। এখন দেখি তোর ভালোই উন্নতি হয়েছে। আম্মা এইবার আর ছেলে নিজের থাকবে না।”
জেসমিন আক্তার মেয়ের উপর মনে মনে প্রচন্ড বিরক্ত হোন, কিন্তু সিমিকে কড়া করে কিছু বললে কেঁদে কেটে মহল খারাপ করবে। এই মেয়েটা কেন এমন করে তিনি বুঝেন না, অথচ কালে কালে বয়স কম হয়নি সিমির, রাকিনের পাঁচ বছরের বড়ো, দুই বাচ্চার মা। তারপরও সবসময় এমন আচরণ।
“আহ্ সিমি এই খুশির সময়ে কী শুরু করলে? রাকিনের ইচ্ছে করেছে বিয়ে করেছে। এতদিন মনের মতো মেয়ে পায় নাই করে নাই। ও এখন আর ছোটো মানুষ না যে সবসময় তোমাদের জানিয়ে সিদ্ধান্ত নিবে। সেই কখন থেকে অযথা কিসের অভিমান দেখাচ্ছ জানি না। বাসা গুছানোর বাহানা দিয়ে ঐ বাসায় গেলা না, বাচ্চাদেরও দিলে না। তো কী বাসা গুছালে! রাকিনের রুমটাও সাজালে না। আমি না টাকা দিয়ে গেলাম ফুল আনানোর জন্য।” সিমির উপর বিরক্ত হয়ে রাকিনের দুলাভাই সোহেল ধমকে উঠে। সোহেল আগেও দেখেছে, সব খুশির দিনে অযথা একটা ছুতো ধরে অভিমান দেখানো সিমির স্বভাব। শুধু বাবার বাড়ি না, শ্বশুরবাড়িতেও একই কাজ করে। সোহেলের ছোটভাইয়ের শারমানের বিয়েতেও সিমি কম তামাশা করেনি, প্রতিটি ফাংশনে একবার করে রাগ দেখিয়েছে, হলুদের দিন রাগ করে কমিউনিটি সেন্টার থেকে চলে এসেছিল, কারণ শারমানের পরিবার নাকি ওকে সম্মান করে আগে স্টেজে উঠতে দেয়নি! আর এখানে রাগের কারণ হলো রাকিন আগে থেকে কিছু জানায়নি, হঠাৎ করে ফোন দিয়ে সবাইকে বিয়ের কথা বলেছে। এমন হঠাৎ বিয়ের কথা সিমি মেনে নিতে পারেনি, তাই অভিমান করে যায়নি, ভেবেছিল সবাই সাধাসাধি করবে, কিন্তু সিমির স্বভাবের কথা সবারই জানা, তাছাড়া জেসমিন আক্তার মনে মনে স্বস্তি পেয়েছিলেন সিমি যাবে না শুনে। কেননা তিনিও জানেন সিমি গেলে অযথা একটা ভ্যাজাল লাগাবে। রাকিন এতদিনে বিয়ে করতে রাজি হয়েছে, তাই তো রুমির বাচ্চা আছে শুনেও তিনি আপত্তি করেননি।
“এই যে তোমার টাকা। আমি কী ফুল কিনতে এখন শাহবাগ যাব? যতটুকু সম্ভব গুছিয়েছি রুম, বিছানার চাদর বদলে নতুন চাদর দিয়েছি, এমন তাড়াহুড়োর বিয়েতে আর কী সাজাব?”
“দুলাভাই বাদ দিন। আম্মা এককাজ করো, রুমিকে রুমে নিয়ে যাও, ও তিতলিকে শুইয়ে দিয়ে নিজেও ফ্রেশ হয়ে নিক। আমি আসছি একটু।”
“তুই কই যাস এই রাতে?”
“একটু নিচে যাই। মানা করো না তো, যাব আর আসব।”
রাকিনের রুমটা বেশ বড়, দক্ষিণে খোলা বারান্দা। রুমে এককোণায় একটা কাপড় রাখার স্ট্যান্ড, তাতে রাকিনের কিছু কাপড় ঝুলছে। দেয়ালে আড়ংয়ের একটা আয়না লাগানো যাতে চিরুনি রাখার মতো একটু স্ট্যান্ড করে দেওয়া। পারফিউমের একটা বোতল, একটা নেভিয়া ক্রিম, আর চিরুনি রাখা আছে। একপাশে একটা পড়ার টেবিল আর বুকশেলফ। খাটের পাশে ছোট একটা ওয়ারড্রব। রুমি খুটিয়ে খুটিয়ে পুরোটা রুম দেখলো। খাটের মাঝামাঝি তিতলিকে শুইয়ে দিয়েছে রুমি।
হাতব্যাগ থেকে পোশাক বের করে ওয়াশরুমে চলে যায়। গোসল করে শাড়ি পাল্টে সালোয়ার কামিজ পরে নিয়েছে, যদিও মেকআপ তেমন কিছু ছিল না, তারপরও সারাদিনের সমস্ত ক্লান্তি কাটাতে শাওয়ার নেওয়ার বিকল্প নেই। গয়না গুলো খুলে হাতব্যাগে রেখে দিয়েছে, শুধু শুধু গয়না পরে নতুন বৌয়ের মতো বসে থাকতে ইচ্ছে করছে না। কোনকিছুই আসলে রুমির ইচ্ছে করছে না। যদিও একটু হলেও সাজগোজ করা উচিত, কিছু না হোক বিয়ে যেহেতু হয়েছে রাকিনের সাথে, নিজেকে তাই একটু হলেও গুছিয়ে রাখা উচিত, এমন বৈধব্য বেশ নিশ্চয়ই রাকিনের ভালো লাগবে না।
বিয়ের আগে যদিও নিপাট ভদ্রলোক হয়েই ছিল রাকিন, কিন্তু বিয়ের পর নিজের অধিকার আদায়ে পেছপা কেন হবে। রাকিন কী রুমির ইচ্ছে অনিচ্ছের সম্মান করবে! না আর দশজনের মতো নিজেরটা আদায় করে নিতে উদগ্রীব থাকবে। রুমির মাথায় অনেক কিছু আসলেও কোন কিছু ভাবতে ইচ্ছে হয় না। যা হয় সহজভাবে গ্রহণ করবে, মনকে তাই বুঝিয়ে নেয়। নিজের ফেসওয়াশটা ব্যাগেই ছিল, তাই দিয়ে মুখ ধুয়ে নিয়েছে। রাকিন এখনো ফিরেনি। খাটে বসে ভেজা চুল আঁচড়াতে আঁচড়াতে হিমেলের সাথে বিয়ের দিনের কথা না চাইলেও মনে পড়ে যায় রুমির। কত আয়োজন আর আলোর রোশনাই ছিল সেদিন। সাজানো বাসরঘরে কতরকম ছবি তোলা হয়েছিল। নামকরা পার্লার থেকে সাজ, ভারী গয়না আর লেহেঙ্গায় রাজরানীর বেশ নিয়েছিল যেন রুমি। আর হিমেলেও কম যায়নি, জমকালো শেরওয়ানিতে রুমিকে টক্কর দিয়েছিল। সেদিন রাতে রুমির একঘন্টা লেগেছিল শুধু চুল খুলে মেকআপ তুলতে। পোশাক পাল্টে লাগেজ থেকে রাত পোশাকটা বের করে নিয়েছিল রুমি। সেই নাইট ড্রেসটা হিমেলই পছন্দ করে কিনেছিল। প্রথম বার কাছে আসার এক তীব্র অনুভূতি ছিল সেদিন, লজ্জা পেলেও শরীরে শিহরণ খেলে যাচ্ছিল ক্ষণে ক্ষণে।
অথচ আজ তার কোনকিছুই নেই, না সেই শিহরণ না অনুভূতি। হঠাৎ বিয়ে হওয়ায় ঘরবাড়ি সাজানোর কোন বালাই নেই, তবু বিছানায় একটা পরিষ্কার চাদর বিছানো হয়েছে। এমনিতে রাকিন বেশ পরিপাটি মনে হচ্ছে। রুমে এদিকসেদিক এলোমেলো কাপড় পড়ে নেই, পড়ার টেবিলটা গোছানো, টিপটপ। তিতলিকে শুয়ে দিয়ে আয়নার সামনে এসে দাঁড়ায় রুমি, ভাবে একটু কী পরিপাটি হবে! বেশি কিছু না, ভেজা চুলতো আঁচড়ে নিয়েছে, এখন চোখে একটু কাজল দিলেই হয়। কিন্তু এই সাজটুকু রাকিন যদি তা সম্মতি ভেবে নেয়! তিতলিও এই রুমে আছে, হঠাৎ উঠে গিয়ে আসলেও অপ্রীতিকর কিছু দেখে ফেলবে না তো। যদিও শারীরিক কিছুর বিন্দুমাত্র আগ্রহ এখন নেই রুমির, কিন্তু একাকী কামরায় পূর্ণ অধিকার পাওয়ার পর কতটা নিজেকে সামলে রাখবে রাকিন, তা রুমির জানা নেই। কেননা ভদ্রতার মুখোশ খুলে গেলে ভদ্রলোকেরা ভীষণ ভয়ংকর হয়ে যায়।
“রুমি।” হঠাৎ রাকিনের সম্বোধনে এতটাই চমকে ওঠে, হাত থেকে সশব্দে চিরুনি পরে যায়।
“স্যরি, তোমাকে ভয় পাইয়ে দিলাম বোধহয়।”
“না না ঠিক আছে। আমি একটু অন্যমনষ্ক ছিলাম।” রাকিনের হাতে একরাশ রজনীগন্ধা দেখে মন ভালো হয়ে যায় রুমির। রজনীগন্ধা তার প্রিয় ফুল।
“রুমি, টিচার্স রুমে একদিন বলেছিলে, রজনীগন্ধা তোমার প্রিয় ফুল। তাই নিয়ে এলাম। আর রুম সাজানে হয়নি তা একদিকে ভালোই হয়েছে। আমার মনে হয় একদিনে তোমার মনের উপর যথেষ্ট চাপ পড়েছে। বিয়ের রাতেই বাসর হবে এমন তো কথা নেই। ফুল না ফুটলেও বসন্ত হয়, কিন্তু মন সায় না দিলে ফুলশয্যাও কাঁটার বিছানা মনে হয়। শায়নাকে আমি বুঝিনি, ও আমাকে বুঝেনি। কিন্তু এইবার আমি রুমিকে বুঝতে চাই, চাই রুমিও আমাকে বুঝুক। শরীরটা না হয় তারপরই একে অপরকে পাক।”
****
বাসায় আসার পর থেকে মরিয়ম দেখছে শাশুড়ির মুখটা থমথমে। অবশ্য সেই দুপুর একটায় বের হয়েছিল মরিয়ম, আর ফিরেছে রাত দশটায়। যদিও শিহাব সাথে ছিল, কিন্তু সারাদিন সেজেগুজে বাইরে থাকাটা যে শাশুড়ির ভালো লাগেনি, তা জানে মরিয়ম।
“আম্মা, ভাত খেয়েছেন না?”
“হ্যাঁ। তোমরা?”
“খেয়েছি, রুমির বিয়ে ছিল তো। খেয়েই আসলাম। রুমন খায়নি, ও তো নিজের সময় না হলে যখন তখন খেতে চায় না। এখন খাইয়ে দেব।”
“মরিয়ম, এই বাচ্চাটা সুস্থ হোক চাও না তুমি? কিছু বললে আমি খারাপ হয়ে যাব। কিন্তু এই যে রাত বিরাতে সেজেগুজে বাইরে থেকে আসলে, কতরকম খারাপ বাতাসের আছর হয়।”
“আম্মা, এই বাচ্চাটা সুস্থ হোক মানে কী? রুমন অসুস্থ না, সেও সম্পূর্ণ সুস্থ।”
“মায়ের চোখে খোঁড়া, লুলা, পাগল সব এক। কিন্তু মানুষের চোখে না।”
একমুহূর্তের জন্য মাথায় আগুন ধরে যায় মরিয়মের, মনে থাকে না এখন সে আট মাসের গর্ভবতী।
“আম্মা, আমার বিশ্বাস হয় না আপনিই সেই মানুষ। আপনি না রুমনকে কত আদর করতেন, কেউ রুমনকে খারাপ কিছু বললে ঝগড়া লাগিয়ে দিতেন। আর আজ আপনি ওকে পাগল বলছেন?”
মা আর বৌয়ের উচ্চস্বরের কথা শুনে শিহাব বাথরুম থেকে বের হয়ে আসে।
“আমি রুমনকে পাগল বললাম কোন সময়। তুমি ইদানীং বেশি বুঝতেছ মরিয়ম। শিহাব দেখ তোর বৌয়ের অবস্থা। এই জিদের জন্য প্রথম বাচ্চার ক্ষতি হলো, এখন এতদিন পর আরেকটা বাচ্চা আসছে, সেটারও ভালো হতে দিবে না।”
“আমি কী আমার বাচ্চার শত্রু মা? কেন ভালো হতে দেব না। আমি ইচ্ছে করে এতদিন বাচ্চা নেইনি। আমার মনে হয়েছিল এমন কিছু হবে। তাই হচ্ছে। এখন মনে হচ্ছে আরেকটা বাচ্চা নিয়ে আমি অনেক বড় ভুল করেছি। আমার একটা সন্তানই যথেষ্ট ছিল।”
বলতে বলতে চেয়ার আঁকড়ে ধরে বসে যায় মরিয়ম, পেট জুড়ে তীব্র ব্যথার দমক উঠেছে। পা বেয়ে আঠালো তরল বেয়ে পড়ার অনুভূতি হয় মরিয়মের। বুঝতে পারছে পানি ভেঙে গিয়েছে, সময়ের আরও দেড় মাস আগেই।