রৌদ্রদেশে মেঘের বেশে পর্ব-২

0
1154

#রৌদ্রদেশে_মেঘের_বেশে
#পুষ্পিতা_প্রিমা

[২]

সাগর আহমেদ কান টেনে ধরল সাহিলের। পছন্দ করার জন্য আর মেয়ে পেলনা হারামজাদা। শফিক্কের মাইয়া শেষপর্যন্ত? না জেনে না বুঝে আমি ফোন করে নিজের পরিচয় দিয়ে কতবড় লজ্জায় পড়ে গিয়েছিলাম। সে তো আমাকে এখন হাঁটতে বসতে যেখানে দেখবে সেখানেই ঠেস গুঁতা মারবে। বলবে,
‘ আমার মেয়ের উপর শকুনের নজর পড়ছে।
সাহিল সাগর আহমেদের হাত ধরল। বলল,
‘ লাগছে তো। তোমাকে আমি বারণ করেছি না ফোন না করার জন্য। করেছ কেন? আর শফিক তালুকদারের সাথে তোমার আবার কিসের শত্রুতা? তোমাদের ঝামেলায় আমাকে কেন জড়াচ্ছ?
সাগর আর ও জোরে কান টেনে ধরল সাহিলের। বলল,
‘ হারামজাদা তোমারে কত মাইয়্যা দেখাইলাম আমি, একটারে ও পছন্দ হয়না তোমার। শেষমেশ ওই শফিক্কের মাইয়্যারে পছন্দ?
সাহিল বলল,
‘ আরেহ আমি কি ওই মেয়ের জন্য মরে যাচ্ছি নাকি? তুমি কি শুরু করেছ বাবা?
সাগর আহমেদ কান ছাড়লেন অনেকক্ষণ পর। সাহিল কান ঢলতে লাগল। সাগর আহমেদ সোফায় বসলেন। জোড়াল শ্বাস ফেলে বলল,
‘ তুমি বিদেশ থেকে আসছ মাত্র দুদিন। কিছুদিন যাক, বুঝতে পারবে। ওই শফিক্কের সাথে আমার কেমন ঝগড়া হয়। তার মেয়েটা অবশ্য লক্ষ্মী বটে। কিন্তু ছেলেটা গোঁয়ার। একদম বাপের মতো।
সাহিল শুনল কি শুনল না। বলল,
‘ মজনু আন্কেল কি জানত না? তারপর ও তোমাকে ফোন দিতে বলেছে কেন?
সাগর আহমেদ তেলেবেগুনে জ্বলে বলল,
‘ ঠিক। ওই হারামজাদা টাকা হাতে পাওয়ায় আর নাই। নিখোঁজ হইয়্যা গেছে। শালা,, কি অপমানিত না হলাম আমি। টাকার জন্য মানুষ এমন করে?
সাহিল কান ঢলল। বলল,
‘ আমার গ্র্যান্ডমা কোথায়? আমার খিদে পাইছে। তাড়াতাড়ি খেতে দাও।
তরিনা বেগম তার ছ্যাঁনছ্যান মার্কা গলায় বলল,
‘ আসছে আরেকডা, আমারে হুকুম করবো। আর আমি তো তাদের দাসী।
সাগর আহমেদ বিরক্ত হয়ে বলল,
‘ আহা চাচি। কেন প্যানপ্যান করো বলোতো? তুমি ছাড়া আর কে আছে ওদের?

সাহিল,,, তুমি নাহিল কোথায় দেখো। তাকে নিয়ে একসাথে খেতে বসো।
সাহিল মাথা দুলিয়ে ডাকল,
‘ এই নাহিল নিচে আয়। আমি খেয়ে ফেললে আবার খ্যাঁ খ্যাঁ করলে সমস্যা আছে।
নাহিল কানের ইয়ারফোন খুলে আসতে আসতে জবাব দিল,
‘ বড়ভাই তোমার নাকি শফিক আন্কেলের মেয়েকে পছন্দ হয়েছে? আর মেয়ে পেলেনা তুমি?
সাহিল রেগে গেল।
‘ এক চড় দিয়ে দাঁত বত্রিশটা ফেলে দেব বেয়াদব।
টেবিলে খাবার সাজাতে সাজাতে তরিনা খাতুন প্যানপ্যানানি শুরু করল।
‘ বাপ কি পোলা শিক্ষা করতে পারে? মা না থাকায় এই হাল পোলাগুলোর।
সাহিলের মুখ দেখার চেষ্টা করল সাগর আহমেদ। দেখার আগে সাহিল মুখ ঘুরিয়ে চলে গেল। নাহিলকে ডাকল,
‘ নাহিল আয়।
নাহিল বলল,
‘ বড়আব্বা বাবা কোথায় বলোতো? আজ তার দেখা সাক্ষাৎ নাই।
সাগর আহমেদ বলল,
‘ কোথায় তা এখন জানতে চাইছিস ? রাখিস বাপের খবর? ব্যবসার সব দেখাশোনা তো তোর বাপই করছে। না বাপকে একটু হেল্প করি।
নাহিল মাথা চুলকালো।
‘ আমার এখনো পড়ালেখা শেষ হয়নি। আর তুমি বলো, ব্যবসা সামলাতে। বড়ভাই চলে আসছেনা? বড়ভাই দেখবে।
সাগর আহমেদ ব্যঙ্গ করে বলল,
‘ হ, সে সামলাবে বিজনেস। মজনু আছে লাইলির খোঁজে। বিজনেস ও সামলাবে।
নাহিল হাসল। বলল,
‘ যাই বলো বড়আব্বা। জিনিয়া মেয়েটা সুন্দরী আছে। ভাবী হিসেবে আমার সেই পছন্দ হইছে। ভাইয়ের সাথে ঝাক্কাস লাগবে।
সাগর আহমেদ নড়েচড়ে বলল,
‘ নরপুরীতে কি নারী আসবে রে বাপ? শফিক্কে তো এক্কেবারেই মেয়ে দিবেনা।
নাহিল বেশ চিন্তিত ভঙ্গিতে বলল,
‘ ঠিক বলেছ কিন্তু ভাইয়ের কি হবে?
সাগর আহমেদ চিন্তায় পড়ল। মুখের উপর কয়েক আঙুল দিয়ে বেশ চিন্তিত ভঙ্গিতে বলল,
‘ আমার ছেলে আরেকবার মুখ ফুটে বললে, দরকার হলে ওই মেয়েরে তুলে আনব।
নাহিল বলল,
‘ সাব্বাশ কথা বলেছ বড়আব্বা। আমার বাপ ও যদি এমন বলতো?
সাগর আহমেদ হেসে বললেন,
‘ এই আহমেদপুরী নরপুরী থেকে নারীপুরী হয়ে যেত।
নাহিল বলল
‘ এটা কোনো কথা? আমি শুধু একটা বিয়ে করতাম। হুহহ।
সাহিলের ডাক ভেসে এল তারমধ্যে।
‘ মাছের মাথা তোর আর খাওয়া হলোনা নাহিল। আমার পেটে চলে গেছে।
নাহিল দৌড় লাগাল। সাহিলের পাশে চেয়ার টেনে বসে পড়ে বলল
‘ একে তো একা একা খাচ্ছ। আবার মাছের মাথা?
সাহিল বলল,
‘ মাছের মাথা দুটো আছে। একটা তুই খাবি, আরেকটা আমি। দুই দুইয়ে চার। মিলল?
নাহিল মাথা নাড়াল। বলল,
‘ মিলছে মিলছে। একে একে দুই।
তরিনা খাতুন দুইভাইয়ের খুনসুটি দেখল। কানে ভেসে এল সাহিলের একটুখানি বলা কথা।

‘ আজ আমি মিস করছি সেই মানুষটাকে, আজ নয় প্রতিনিয়ত করি। স্বার্থপর মানুষগুলোকে দিনশেষে ও আমরা কেন ভুলতে পারিনারে। আমি দেশে ফিরেছি তারপরেও কি তার আমাকে দেখতে ইচ্ছে করেনা? কোথায় লুকিয়ে আছে সে? কেন আমার কাছ থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখে? এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আমি আর কতকাল ঘুরব?

নাহিল চুপ থেকে অনেকক্ষণ পর বলে,
‘ ভাই বড়মা দেখবে ঠিক একদিন চলে আসবে।

‘ আর তোর মা? ছোট মাকে কখন ফিরিয়ে আনবি?

নাহিল মাথা নিচু করে ফেলল। বলল,

‘ আমি যাই মায়ের কাছে। কাল ও গিয়েছি।

সাহিল খেতে খেতে বলল,

‘ ফিরিয়ে নিয়ে আয়।

‘ আমার কথা শুনবে না।

সাহিল আর কোনোকিছু বলল না। তরিনা খাতুন এসে সাহিলের গ্লাসে পানি ঢেলে দিল। মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
‘ মাইয়্যাডারে পছন্দ হইছে ভালা কথা। তাড়াতাড়ি বউ কইরা লইয়্যা আসো ভাই। বাপ চাচা তো শেষ করল সবডা। তোমরা দেইখো। মাইয়্যা মানুষ মানেই ঘরের রাণী। তারে রাণীর মতো রাখতে পারলে বিয়া করবা। নইতো নয়। শুধু শুধু একটা মাইয়্যার জীবন লইয়্যা খেলা কইরা লাভ নাই।

সাহিল পানি খেয়ে উঠে পড়ল। হাত ঝেড়ে তরিনা খাতুনের শাড়ির আঁচলে মুখ, হাত মুছে বলল,
‘ গ্র্যান্ডমা আমি জীবনে ও বিয়ে করব না। নো নেভার।
তরিনা খাতুন রেগে চ্যানচ্যান করে উঠে।
‘ তোর ওই ইংলিশ কথা আমার সাথে কইবি না গুড্ডু ।
সাহিল ঢেকুর তুলে বলল,
আমার নাম সাহিল।
তরিনা খাতুন রেগে বলে,
‘ হইছে,
সাহিল মাথা দুলিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চলে গেল। সাগর আহমেদ বলল,
‘ ছাদ টাদ দেখে আসিও । ঘরদোরের বিস্তর পরিবর্তন করছি, দেখো নাই?
সাহিল যেতে যেতে হাত নেড়ে বলল,
‘ ছাদে কি কাজ আমার? আমি কি মেয়ে? ছাদে মেয়েদের কাজ।
একসময় নারী বিদ্বেষী থাকা সাগর সাহেব মনে মনে বেশ অসন্তুষ্ট। ছেলে যাতে অন্তত তার মতো না হয়। এই নরপুরী নারীপুরীতে পরিণত হোক।

________________________

সিংহের মতো গর্জন ভেসে আসছে ছাদ থেকে। সন্ধ্যা তার ঝাপি নামিয়ে দিতে চলেছে। মাগরিবের আযান পড়বে কিছুক্ষণের মধ্যে। জিনিয়া বসার ঘর থেকে মাকে ডেকে বলল,
‘ আম্মা ছাদ থেকে আব্বার গলা ভেসে আসছেনা?
জিনিয়ার মা জাহেদা বেগম হায় হায় করে উঠে বললেন,
‘ ও আল্লাহ আবার ঝগড়া লাগছে? দেখ তো। তোর বাপ কেন যায় ওই ছাদে?
জিনিয়া ওড়না দিয়ে মাথা ঢেকে দৌড়ে উঠল ছাদে। হাত ছুড়ে ছুড়ে ঝগড়া করছে শফিক সাহেব। জিনিয়া মাথা সামান্য তুলে ওই বাড়ির ছাদের দিকে তাকালো। সাগর আহমেদ চুপ হয়ে গেল জিনিয়াকে দেখে। জিনিয়া শফিক সাহেবের হাত ধরে টেনে আনতে আনতে বলল,
‘ আব্বা চলে এসো। এখন আযান পড়বে। এমন সময় কেউ ঝগড়া করে? যাও মসজিদে চলে যাও। আব্বা শুনেছ?
সাগর আহমেদ ভেংচি কেটে বলে,
‘ বাচ্চাকাচ্চার কাছ থেকে কিছু শিখে নে ভাই। আক্কেল বলতে তো কিছুই নাই।
শফিক সাহেব হাত ছুড়ল।
‘ এই বেয়াদব হারামি আরেকটা কথা মুখ দিয়ে বের করলে তোর জিহ্বা টেনে ছিঁড়ে দেব আমি।
সাগর আহমেদ কিছু বলার আগেই নাহিল চলে আসল। মুখ চেপে ধরল সাগর আহমেদের। জিনিয়া নাহিলকে দেখে হাসল। বলল,
‘ ভাইয়া উনাকে একটু সামলান প্লিজ। নিয়ে যান।
নাহিল হাত নেড়ে বলল,
‘ আচ্ছা, তুমি নিয়ে যাও তোমার আব্বাকে। আমি দেখছি।
জিনিয়া বলল,
‘ আব্বা আযান পড়ছে। শোনো। শুনেছ? যাও। এখন মসজিদে যাও।
শফিক সাহেব থমথমে মুখে তাকিয়ে থেকে বলে,
‘ আমি ছাদটা একটু ঝাড়ু দিচ্ছি, তা দেখে তার চুলকানি বেড়ে গিয়েছে । আমাকে গুঁতো দিয়ে বলল,
‘ শফিক মিয়া মাইয়্যা মানুষের কাজ করতাছেন কখন থেইকা? তুমি বলো আম্মা, আমার রাগ লাগবে না?
জিনিয়া বলল,
‘ বুঝতে পারছি আব্বা কিন্তু?

‘ আহারে ছোট্ট বাচ্চা। মাইয়্যা কিভাবে বুঝাই, তারপরে ও বুঝেনা।

সাগরের ঠেস মারা কথা শুনে শফিক সাহেবের গলার স্বর আরো বড় হলো। জিনিয়া চিল্লিয়ে ডাকল,
‘ আম্মা ভাইয়াকে আসতে বলো। তাড়াতাড়ি।
জাহেদা বেগম ছাদের দরজার কাছেই ছিলেন। জিনিয়ার কথা শুনে দৌড়ে গেলেন নিচে। ফোন হাতে নিয়ে ছেলের ফোনে ফোন লাগালেন। ফোন রিসিভ হতেই জাহেদা বেগম গড়গড় করে বললেন,
‘ আব্বা, অ্যাই আব্বা জায়িদ? শুনছিস? তাড়াতাড়ি বাসায় আয় আব্বা। তোর বাপ আবার ওই বাড়ির লোকের সাথে ঝগড়া লাগায়ছে।
জায়িদ মাকে আশ্বাস দিল।
‘ বাড়ির কাছেই আছি আম্মা এক্ষুনি আসছি আমি।

মিনিট পাঁচেকের মধ্যে জায়িদ চলে এল। জিনিয়া ভাইকে দেখে স্বস্তির বদলে আর ভয়ে পড়ে গেল। জায়িদ শফিক সাহেবকে থামানোর চেষ্টা করল।
তারপর সাগর আহমেদকে বলল,
‘ আপনার সমস্যা কি মিয়া? সবসময় আমার আব্বার সাথে লাগেন কেন?
নাহিল বলল,
‘ জায়িদ ভাই আপনার আব্বারে নিয়ে যান। আমি বড়আব্বাকে নিয়ে যাচ্ছি।
সাগর জায়িদকে বলল,
‘ হুহ, তুমি এক বেয়াদব পোলা হইছো আর কি? আমার ছেলে নাই? তোমার সমবয়সী। একই দিনে দুইজন হইছো। কিন্তু দেখো আদব কায়দায় বিস্তর ফারাক। আমার ছেলে কত ভালা।
জায়িদ বলল,
‘ তো আমরা কি করব? আপনার ছেলেকে দিয়ে হালচাষ করেন কিংবা বাথরুম পরিষ্কার। আমাদের কি?
শফিক সাহেব তাল মিলালেন ছেলের সাথে সাথে।
‘ আমাদের কি?
জায়িদ ধমক দিল।
‘ চুপ করো আব্বা। তুমি কি ছোট্ট বাচ্চা?
শফিক সাহেব বললেন,
‘ তুই চুপ কর। আমারে কি বলছে তুই শুনছস?
জায়িদ বলল,
‘ তোমাদের এই মেয়েলি ঝগড়া জীবনে ও থামার নয়। তোমরা একসাথে একইসময় ছাদে আসো কেন?
সাগর বলল,
‘ তোমার বাপ আসে। আমি না।
শফিক সাহেব হাত ছুড়ল।
‘ চোপ বেয়াদব পুরুষ। মুখে মুখে খালি তর্ক।
সাগর আহমেদ হাত দেখিয়ে বলে,
‘ তুই চুপ একদম।
শফিক সাহেব হাত গুটিয়ে বলে,
‘ আমার ছেলেমেয়ে আছে। নইলে সত্যিটা বলে তোর নাককান কাটতাম আমি।
সাগর আহমেদ চুপ হয়ে গেল।
‘ ছেলেটা কেন এই শফিক্কের মেয়েরে পছন্দ করতে গেল আল্লায় জানে। এ খোঁটা দেওয়া শুরু করছে। নাহিল পেরে উঠল না। সাগর তাকে ঠেলে দিয়ে ছাদের রেলিং ধরে বলল,
‘ খোঁচা মারার অভ্যাস তোর গেলনা ভাই।
ব্যস শফিক সাহেব চেতে গেল। বলল,
‘ নারী বিদ্বষী লোক তুই। নাফরমান।
সাগর পারলনা রেলিং টপকে লাফ দিয়ে এই ছাদে এসে শফিকের গলা চেপে ধরতে। পেছন থেকে কেউ একজন আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে ফেলল সাগর সাহেবকে। সাহিল বাবার পিঠে মাথা ফেলে রাখল।
সবাই চুপ হয়ে গেল। জিনিয়া, জায়িদ, শফিক তাকালো সাগরের দিকে। সাহিল বাবাকে জড়িয়ে ধরা অবস্থায় ধীরে ধীরে গলা বাড়িয়ে একটুখানি উঁকি দিল সামনের ছাদে। জায়িদ জিনিয়াকে বলল,
‘ জুননু তুই যাহ ।
জিনিয়া ঘনঘন মাথা নাড়ায়। চলে যেতে যেতে একটুখানি পিছু ফিরে তাকায়। সাহিলকে দেখে মাথা চাপড়ে বলে,
‘ এটাতো ওই ছেলে? কোথায় যেন দেখেছি। ও হ্যা। কিন্তু এই ছেলে কি করে সাগর আন্কেলের ছেলে হয়? কতটা শান্ত?
জিনিয়া যেতে না যেতেই সাহিল শার্টের হাতা গুটালো। বলল
‘ কি সমস্যা তালুকদার সাহেব?
শফিক সাহেব বললেন,
‘ তোমার বাপেরে জিজ্ঞাসা করো কি সমস্যা?
জায়িদ বলল
‘ তোর বাপকে সামলা ভাই। বিরক্তিকর প্রাণী একটা। এতটাই বিরক্তিকর যে বউ ও পালিয়েছে।
সাহিলের মাথার রগ দপদপ করা শুরু করল। হাতের মুঠি শক্ত করে সে জায়িদকে বলল,
‘ মুখ সামলিয়ে।
জায়িদ বলল
‘ তোর বাপকে বল ভাই। নিজেদের সাথে আমাদের মিলাতে যাবিনা।
সাহিল বলল
‘ আরেহ তোর সাথে না স্কুলে পড়েছি একসাথে। তুই ছিলি গুন্ডা আর?
জায়িদ রেগে গেল।
‘ মুখ সামলিয়ে কথা বল সাহিল।
জিনিয়া আবার দৌড়ে এল। সাহিলকে উদ্দেশ্য করে অনুরোধ করে বলল
‘ এবার থামুন না প্লিজ। আপনার বাবাকে নিয়ে যান প্লিজ।
ব্যস।
সাহিল থেমে গেল। পকেট হাতড়ালো৷ সিগারেট পেলনা। মাথাটা ধরছে ভীষণ। সিগারেটের নেশা কেমনে লাগল হঠাৎ? এত গন্ধভরা সিগারেটের নেশা কেন?
সাহিল হাঁটা ধরল সাগরকে নিয়ে। ফিসফিস করে বলল,
‘ ওই মেয়েকে আমি একটু ও পছন্দ করিনা বাবা। একটু ও না। করব ও না। কখনোই না। নো এন্ড নেভার। তুমি চিন্তা মুক্ত থাকো।
সাগর মাথা দুলিয়ে বলল,
‘ মেয়ের কি অভাব পড়ছে আব্বা। চিন্তা নাই।

সাহিল চিন্তা ছাড়াই রাতের খাওয়ার পরে ঘুমোতে গেল। চোখ বন্ধ করলেই চোখে ভাসে একটা মুখ। কানে বাজে একটি কথা , “থামুন না প্লিজ”
সাহিল বিরক্ত হয়।
‘ মেয়েটা কি নির্লজ্জ। একদম কথা বলতে চলে আসল। কি একটু পছন্দ হয়েছে যেখানে সেখানে থাকতে হবে তাকে? জ্বালারে জ্বালা। বিরক্তিকর। অসহ্য। মেয়েটা ভালো না। ভালো হবেনা সাহিলের জন্য। কখনোই না। এই মেয়ের সামনে ও পড়া যাবেনা আর। কখনোই না। নো নেভার।

চলবে,

গঠনমূলক মন্তব্য করবেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here