—ঠাসসসসস, বুকের উপর ওড়না না রাখতে পারলে এটা লোক দেখাতে গায়ে রাখতে হবে না। বলেই রাজ মিষ্টির ওড়না টান মেরে নিচে ফেলে দিলো। ভার্সিটির সবার সামনে কাজটা করলো রাজ যাতে লজ্জা কুকরে উঠলো মিষ্টি। কিছু না ভেবেই রাজকে জরিয়ে ধরে বুকে মুখ গুজে দিলো নিজেকে লজ্জিত হওয়া থেকে আর কোন উপায় নাই মিষ্টির।
ভার্সিটির সবাই এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেন চোখ দুটো বেরিয়ে আসবে। বড় বড় চোখে তাকিয়ে আছে সবাই মিষ্টি আর রাজের দিকে কারণে সবাই রাজকে চিনে রাজ ভার্সিটির ক্রাশ ভয় ফাইনাল ইয়ার এ পড়ে। সবাই রাজ বলতে পাগল কিন্তু রাজ কোন মেয়ে মেয়ে কে পাওা দেয় না। সব মেয়েরা সেজেগুজে রাজের আসে পাশে ঘুরে বেরায় যাতে রাজের চোখে পড়ে কিন্তু রাজ ফিরে ও তাকায় না আজ রাজের এমন বিহেভার আবার একটা মেয়ে রাজকে জরিয়ে ধরে আছে যা কেউ মেনে নিতে পারছে না সবাই রেগে তাকিয়ে আছে। সবাই মিষ্টি কে হিংস বাঘের মতো দেখছে যেন ধরতে পারলেই উচিত শিক্ষা দিয়ে ছারবে।
রাজ জোর চিৎকার করে সবাই কে যার যার ক্লাসে যেতে বলল আর সবাই ভয়ে সুরসুর করে চলে গেল সেকেন্ডের ভেতরে মাঠ ফাকাঁ হয়ে গেছে। সবাই চলে যেতেই রাজ ধাক্কা দিয়ে মিষ্টি কে নিজের থেকে সরিয়ে দিলো মিষ্টি আচমকা চিৎকার আর ধাক্কা খেয়ে নিজেকে সামলাতে পারলো না ঠাস, করে নিচে পরে গেল।
–তোর সাহস কি করে হলো আমাকে জরিয়ে ধরার? তোর ওই নোংরা হাতে আমাকে ধরে আমার এতো দামী শার্টটা নষ্ট করে ফেললি?
বলেই শার্ট মুছতে লাগলো,, মিষ্টি অবাক চোখে তাকিয়ে আছে কতোক্ষণ তো ধরে রাখলাম তখন তো কিছু বলল না এখন এভাবে। সব সময় আমার সাথে এমন ব্যবহার কেন করেন ওনি এভাবে সবার সামনে আমাকে অপমান করতে ওনার এতো ভালো লাগে। ভাবতে মিষ্টি চোখ দিয়ে নোনা জল পরতে লাগল।
–নেক্মট টাইম আমাকে টাচ করতে দশ বার ভাববি বুঝছত। আর ওড়না টা ভালো করে পরবি নয়তো এর পর থেকে আর তোর ওই ওড়নাটাই থাকবে না এতো দেখাতে ইচ্ছে থাকলে কষ্ট করে টাকা দিয়ে ওড়না কেন কিনবো?
বলেই রাজ চোখে সানগ্লাস পড়ে চলে গেল আর মিষ্টি রাজের যাওয়ার দিকে অশ্রু নয়ন চোখে তাকিয়ে আছে। এই লোকটাকে কখনো বুঝতে পারে না মিষ্টি কি চাই? বুঝা দুষ্কর সব সময় এতো কষ্ট কেন দেয় আমাকে কেন কি করেছি আমি সামান্য ভুলের জন্য সবার সামনে এভাবে বলতে পারলো। পায়ের কাছে ওড়না পড়ে আছে মিষ্টি ওড়না নিয়ে ভালো করে গায়ে পেচিয়ে উঠে দাড়ালো।
আর দাড়ালো না মিষ্টি আজকে আর ক্লাস করতে পারবো না এতো অপমানিত হয়ে আমি কারো সামনে যেতে পারবো না। চোখ হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে মুছে বাড়ির পথে রওনা দিলো। কিছু দূর যেতেই পায়ের জুতো জোরা ছিরে গেল বিপদের সময় আর বিপদ আসে আজকে বুঝতে পারছি। জুতো খুলে ঠিক করতে চাইলো কিন্তু এটা ঠিক করা গেল না বাম হাতে জুতো নিয়ে হাটা দিলো প্রখর রোদের তাপে পাতের নিচে প্রচণ্ড গরম হাটা যাচ্ছে না আবার জুতো ছেড়া কষ্টে অভিমানে হেটে চলেছে মিষ্টি গরমে পা ফেলা যাচ্ছে না কিন্তু এটা বুকের ভেতরে যে কষ্টে কাছে কিছু না। ওই ভাবে হেটে বাড়ি চলে এলো।
–কি রে এতো তারাতারি চলে এলি যে?
–এমনি মামুনি,ভালো লাগছিলো না তাই ক্লাস না করেই চলে এসেছি।
— তোর হাতে কি? জুতো কি হয়েছে একি পা এতো লাল কেন?
–ও কিছু না মামুনি আমি রুমে যাচ্ছি ঢেকো না।
বলেই মিষ্টি রুমে চলে এলো এখন আর পা ফেলতে পারছে না তখন বুঝতে পারে নি এখন বুঝছে কতো ক্ষতি হয়েছে তাপে পা মুরে গেছে কোন রকম ব্যাগ টা রেখেই মিষ্টি বিছানায় শুয়ে পরলো এতো ক্লান্তি লাগছে পা জলছে। ওমনি মামুনি এলো হাতে বরফ এসেই পায়ে হাত দিতে গেলে আমি উঠে বসি।
— কি করছো মামুনি?
–তারাতারি শুয়ে পর কি করছিস পায়ের।তোকে নিয়ে আর পারি না জুতো ছিরে গেছে ওই ভাবে হেটে এলি কেন? রাজ কে বলতি জুতো কিনে দিতো আর গাড়ি ছাড়া বা আসলি কেন?
–এমনি
আমি আর কিছু বললাম না কথা বলতে ভালো লাগছে না মামুনি কে শত বলে ও যাওয়াতে পারলাম না জোর করে পায়ে বরফ দিতে লাগলো। আমি ব্যথ হয়ে শুয়ে পরলাম কখন ঘুমিয়ে পরেছি জানি না। ঘুমের ঘুরে মনে হচ্ছে কেউ আমার পায়ে নরম হাত ছুয়ে দিচ্ছে চোখের পানি পরছে সঙ্গে সঙ্গে চোখ মেলে তাকালাম…???
চলবে❤
#লুকোচুরি_ভালোবাসা💖
#লেখিকা:তানজিনা আক্তার মিষ্টি
#পর্ব:১