লুকোচুরি ভালোবাসা💖পর্ব:১৭

0
3068

#লুকোচুড়ি_ভালোবাসা💖
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি (Tanjina Akter Misti)
#পর্বঃ- ১৭

রাজ মিষ্টি দিকে তাকিয়ে আছে আর এদিকে মারিয়া নিজের মতো সব বলে যাচ্ছে। রাজের সেদিকে খেয়াল নেই শুধু শিকার করে যাচ্ছে। মারিয়া রাজের এমন অন্য মনষ্ক দেখে ওর দৃষ্টি অনুসরণ করে দরজায় দিকে তাকিয়ে দেখে মিষ্টি দাড়িয়ে আছে। যা দেখে মারিয়া অবাক হয় কারণ মিষ্টি কখনো এখানে আসে না রাজকে ভয় পায়। আজ এখানে কি করছে ভ্রু কুচকে ভাবছে। রাজের কথায় ঘোর কাটলো…

—তুই এখানে কি করছিস?

—আমি আসলে [ মিষ্টি কি বলবে বুঝতে পারছে না ও তো কেন এসেছে নিজে ও জানে না। হঠাৎ কিন জানি রাজকে দেখতে ইচ্ছে হলো তাই কিছু না ভেবেই চলে এসেছে এখন কি বলবে? আচ্ছা আমাকে অপমান করবে আবার সব সময় তো অপমান ই করে। স কেন যে আসতে গেলাম]

—আরে মিষ্টি তুমি এখানে আসো ভেতরে আস। রাজকে কিছু বলবে নাকি মিষ্টি তুমি তো এখানে আস না কখনো !!

মাথা নিচু করে আকাশ পাতাল ভেবছিলাম এরমাঝে মারিয়া আপুর কথা শুনে মাথা উচু করে উনার দিকে তাকালাম, হেসে হেসে কা বলছে আমাকে ভেতরে যেতে বলছে। আচ্ছা রাজের সাথে কি কথা বলছি মারিয়া রাজ ওর হাত ধরে আছে কেন? এখনো ধরে আছে আমার ভেতরে যেতে একদম ইচ্ছে হচ্ছে না। ভেতরে থেকে একটা রাগ বেরিয়ে আসছে কিন্তু কিন? হাতের দিকে তাকালাম এখন রাজ না মারিয়া ধরে আছে আমি তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে আছি অসহ্য লাগছে।

—কি হলো ওই ভাবে দাড়িয়ে কি ভাবছো?

—কিছু না।

–এখানে কি জন্য এসেছিস?[রাজ]

—এ এ মমনি [ তোতলিয়ে]

–এমনি [ অবাক হয়ে] আগে কখনো আসিস নি তো আজ কেন? যা ক্লাসে যা ক্লাস না করে ঘুরে বেরাচ্ছিস। এসবের জন্য ভার্সিটিতে আসিস তাই না।

—আমি ঘুরে বেরায়!

—হুম

—কই আমি সব ক্লাস ই করি এখন ক্লাস নাই তাই [ মুখে থেকে কথা কেরে নিয়ে ]

—ক্লাস নাই তাই ঘুরতে বেরিয়ে যাবি। হোয়াই ক্লাসে বসে পরা যায় না আর আমার এখানে কেন এসেছিস আর কখনো জানি তোকে আমার আশেপাশে ঘুরঘুর করতে না দেখি!

—আমি আপনার আশেপাশে ঘুরঘুর করি? কখন কবে আমি কখনো এমন করি না আজ তো শুধু…

—তোর কাছে কৈইফত চাইনি আমি। ঘুরঘুর করিস নাকি আমি ভাল করে জানি?

—আহ রাজ বেচারার সাথে এমন করছো কেন? আসো মিষ্টি একটা ঢ়শির খবর আছে তোমাকে ও ইনভাইট করবো আসবে কিন্তু?

কথা টা বলে মারিয়া আপু আমার পাশে এসে দাড়ালো। হাতে একটা কার্ড দিল

—কাল আমার বাথড্রে তুমি রাজের সাথে চলে এসো কেমন ! আর একটা কথা…

বলে আপু আমার কানের কাছে এসে ফিস ফিস করে বলতে লাগলো, কালকে একটা সারপ্রাইজ আছে?

–কি ?

— আববু কে বলে দিয়েছি রাজের কথা আববু কাল আমাদের বিয়ের কথা রাজকে বলবো,

বলেই আপুটা লজ্জা পাওয়ার ভঙ্গিতে হাসলো,

কিন্তু আমি খুশি হতে পারলাম না কথা টা কানে আসতে বাম চোখে পানি চলে এলো কান্না পাচ্ছে প্রচণ্ড কান্না পাচ্ছে গলা ছেড়ে চিৎকার করে কাদতে ইচ্ছে হচ্ছে। হাত পা অবশ হয়ে আসছে দাড়িয়ে থাকতে পারছি না এখানে থাকতে পারবো না রাজের দিকে একবার তাকালাম ওর দৃষ্টি আমাদের দিকেই কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে হয়তো কি বলছে জানতে চাইছে। আমি আর দাড়ালাম না পেছনে ফিরে চলে এলাম। পেছনে থেকে মারিয়া আপুর ডাক কানে এলো কিন্তু আমি আর থামলাম না। এমন কষ্ট হচ্ছে কেন আমার আমি তো জানি রাজকে আমি কখনো পাব না সে অন্য একজানের তবুও কষ্ট হচ্ছে কেন । কেন মনে চাইছে রাজের সামনে গিয়ে বলি আমাকে একটু ভালোবাসনা খুব ভালোবাসি তো তোমার। কিন্তু এটা বলার সাহস আমার নেই কোথায় আমি আর কোথায় রাজ আমার মতো একটা মেয়ে রাজ কখনো ভালোবাসবে না। ওর জন্য মারিয়া আপুই ঠিক আছে আর সেও তো আপুকেই ভালোবাসে। একটা সময় মনে হয়েছিল রাজ আমাকে চায় কিন্তু সেইদিনই আমি আমার ভুল বুঝতে পারি।

—এই কোথায় যাচ্ছিস ক্লাস রেখে?

হঠাৎ ধাক্কা আর তিথির কথায় তাকিয়ে দেখি সিড়ি বেয়ে চার তালায় চলে যাচ্ছি আমাদের ক্লাস তিন তালায়।

—কি হয়েছে তোর চোখে পানি কেনো? তুই কাদছিলি মিষ্টি কি হয়েছে আমাকে বল তোর ওই রাজ আবার অপমান করেছে তাই না?

—নাহ কেউ কিছু করে নি আর আমি কাদছি না চোখে কি যেন পরছে তাই?

— আমাকে বোকা বানাতে পারবি না তুই। বল না কি হয়েছে আমি জানি কিছু হয়েছে একটু আগেই তো ঠিক ছিলি এখনই এই করে ফেলেছিস।

—এতো কথা কেন বলিস বললাম না কিছু হয় নাই।

বলেই মিষ্টি চলে গেল হাত ঝামটা দিয়ে ছারিয়ে তিথি ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। কিছু তো অবশ্যই হয়েছে না হয়ে এমন করে কথা বলতি না তুই মিষ্টি কিন্তু আমি খুব কষ্ট পেলাম তোর ব্যবহারে। তিথি মন বেজার করে ক্লাসে ঢুকতে যাবে ফোন বেজে উঠলো,

–হুম বলেন।

–কি হয়েছে মন খারাপ? কণ্ঠ টা কেমন জানি লাগছে?

–রাখি বিজি আছি।

–আরে কি হয়েছে বলে তো নাও আমার উপর রাগ করেছো আবার আচ্ছা সরি এখন থেকে,

–ধুর

ফট করে মুখের উপর ফোন কেটে দিল তিথি। কথা বলতে একদম ইচ্ছে করছে এখন মিষ্টির উপর রাগ করেছি খুব কষ্ট হচ্ছে এভাবে চলে গেল আমি ওকে কতো আপন ভাবি আর ওকিনা আমার সাথে এমন করলো কথা কমু না হূহ।
আবার ফোন বেজে উঠলো রিসিভ করলো না ক্লাসে গিয়ে মিষ্টি পাশে বসে অন্য দিকে ফিরে রইল আবার পেছনে তাকালো একটা সিট ও খালি নাই তাহলে অন্য সিটে বসতো।আবার ফোন বাজলো, এবার তিথির রাগ সাত আসমানে উঠে গেল এমনিতে তো এতো ফোন দেয় না আজ জম্মের ফোন দিচ্ছে তোকে আজ ইচ্ছে মতো কথা শুনাবো হনুমান কোথাকার।

—হ্যালো জান কি হয়েছে ফোন কেটে দিলে কেন আবার এখন রিসিভ ও করছো না।

—এই তোর মতলব কি বলতো এমনে তে তো এতো ফোন দিস না আজ এতো তোকে যদি এখন সামনে পাইতাম না মেরে তকতা বানাই দিতাম। এতো প্রেম উতলিয়া পরতাছে কেন এখন এমনিতে এতো একবার ফোন দিস না দিনে আর এখন কইলাম পরে কথা কমু আর শুরু হইয়া গেল ফোন দেওয়া। বিজি আছি বলছিনা আর একটা ফোন আসলে এখনি তোর অফিসে যাইয়া তোর কি করবো ভেবেও পাবি না।

মাসুদ তারাতারি ফোন কেটে পানি খেয়ে নিলো। বিশ্বাস নেই তিথি সত্যি যদি অফিসে চশে আসে তাহলে তো লঙ্কা কাণ্ড বাদিয়ে ছারবে। ভাবতেই কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম বেয়ে পরতে লাগলো। তিথি একটা পাগলা টাইপের সিরিয়াস মেয়ে যখন যা ইচ্ছে করে ছারে ফোন না দেওয়ায় কাল কি অত্যাচার ই না করেছে তাই আজ এতো ফোন দিয়েছে তাতে ও ভুল কোন দিকে যাব আমি। সব কিছুতেই পার্নিশমেন্ট কিন্তু এতে মাসুদ একটু কষ্ট পায় না কারণে ও তিথিকে ভালোবাসে এসবের জন্য ই। বাড়ির সবাই দেখেই বিয়ে ঠিক করেছে আর তার পর থেকে শুরু হয়েছে প্রেম এখন এই তিথি নামক মেয়েটাকে ছাড়া তার চলে না।
চলবে❤

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here