লুকোচুরি ভালোবাসা💖পর্ব:২৬

0
1791

#লুকোচুড়ি_ভালোবাসা💖
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি
#পর্বঃ- ২৬

ঘুম ভেঙে যায় পানির পিপাসায়। মিষ্টি জাগানা পেয়ে হাত দিয়ে ট্রি টেবিলের উপর পানি খুজে নাই। আজ আনতে ভুলে গেছে পানি। আলসামি করে উঠতে মন চাইছে না ওই ভাবেই চোখ বন্ধ করে শুয়ে রইল কিন্তু পানি না খাওয়া পযর্ন্ত মনে হয় না ঘুম আসবে। কি জ্বালায় পরলো রাগ উঠছে? প্রতিদিন পানি নিয়ে আসি আজ আনতেই ভুলে গেছি। এখন উঠতেই হবে আলসামি ফেলে রেখে উঠে বসলো। মিষ্টির ঘুম অনেক বেশি তাই এতো রাগ হচ্ছে একটু উঠতে ইচ্ছে হচ্ছে না কিন্তু পানি না খেলে ঘুম ও আসবে না।

মিষ্টি উঠে বাইরে এলো রুমের নিচে এসে পানি খেয়ে রুমে যেতে যাবে। হঠাৎ চোখ পরলো রাজের রুমের দিকে লাইট জ্বলছে রুমে। এতো রাতে লাইট জ্বলছে কেন দেখার ইচ্ছা জাগলো মনে। একবার যাবে তো একবার যাবে না ভাবছে অবশেষে গেল। ধীর পায়ে দরজায় কাছে এসে দাড়ালো ভয়ে হাত কাপছে উকিঁ দেবার সাহস ও হচ্ছে না। যত বার ই এই রুমের দরজায় কাছে এসে দাড়িয়েছে ততবারই ধরা খেয়েছে মিষ্টি। এখন অবশ্য রাজ ভয় কমই পায় কিন্তু একটি এখানে দেখলে কি লজ্জায় ই না ফেলবে ভাবতে পেছনে ফিরে চলে আষতে চাইলো।

কিন্তু তা আর হলো না কেউ ওর হাত টেনে ধরেছে। মিষ্টির জান যায় যায় অবস্থা এই ভয়টাই পাচ্ছিলো তাই হলো। বুক ধুকধুকনি বেড়ে গেছে ইস কেন যে আসতে গেলাম এখানে। এমন কিছু হয় জানা সক্তে ও আসছি। এখন কি হবে রাজ তো আমাকে দেখে নিয়েছে আমি হাত ছিরাতে মুচরা মুচরি করছি রাজ সেদিকে তোয়াক্কা না করে রুমে নিয়ে গেল আমাকে।

–তুমি এখানে কি করছো এত রাতে? আবার উকিঁ দিচ্ছিলা তোমাকে বলেছিলাম না….

–আমি উকিঁ দিচ্ছিলাম না তো।[ ভয়ে ভয়ে]

–তাহলে এভাবে দরজায় আড়ালে দাড়িয়ে ছিলে কেন। আবার এখন লুকিয়ে চলে ও যাচ্ছ। তোমাকে কি বলেছিলাম এভাবে লুকিয়ে থাকবে না যখন ইচ্ছে রুমে চলে যাবে আমি কিছু বলবো না তোমাকে তবুও এভাবে।

–সরি, আসলে

–ওফ মিষ্টি আবার সরি বলছো তুমি এমন মাথা নিচু করে আছে কেন? এসব আমার ভালো লাগে না আর কখনো মাথা নিচু করে থাকবে না আর আমাকে এতো ভয় কেন পাও তুমি।

–জানিনা।

–যাও কফি করে নিয়ে আসো মাথা ব্যাথা করছে।

সঙ্গে সঙ্গে মিষ্টি মাথা সুরু চোখে তাকায় রাজের দিকে কেমন লাগছে দেখতে চোখ লাল টকটকে হয়ে আছে ঘুমে। মিষ্টি ভিতরে তাকালো টেবিলে বই রাখা বিছানায় উপর ও বই পরতাছিলো এতোক্ষণ। সারা বছর পরে না এখন এতো পরে কি অবস্থা করেছে নিজের।

রাজের কাল থেকে ইয়ার চেন্জ এক্মাম তাই এতো পড়া। সারাবছর যাই করুক এক্মামের আগের দিন তার পরা একেবারে ফাস্ট বয় এর মতো। মিষ্টির রাজের ক্লান্ত মুখ দেখে কষ্ট হলো অনেক।

–আপনি এখন ও পরতেছিলেন কতো বাজে এখন?

–হুম একটু পরছিলাম। সারা বছর তো পরি না এখন না পরলে তো ফেল করতে হবে তখন তুমি কি বলবে তোমার বয়ফ্রেন্ড ফেলটু তাই এতো পরা।

–সারা বছর টুটু না করে একটু পরলে এতো কষ্ট করতে হতো না একবার আয়নার দেখেছেন নিজের মুখ কি অবস্থা হয়েছে। আর এখন ঘুভিয়ে পরুন ২ টা বাজে প্রায়। ঘুম না হলে আবার কাল পরিক্ষার হলে গিয়ে ঘুম পারতে হবে।

–কফি কি দেবে নাকি নিজেই করে আনবো।

–আনছি।

মিষ্টি রাজকে ছারিয়ে নিচে নেমে এলো কফি করতে।

–কফি

রাজ মাথা উচু করে মিষ্টি দিকে তাকালো কফি না ধরে মিষ্টির হাত ধরে বেলকনি তে নিয়ে গেল তারপর দোলনায় বসে পরলো।

–এখানে কেন

–বসো

–না আপনি ঘুম আসেন আমি ও ঘুম আসবো।

বলেই মিষ্টি চলে আসতে চাইলো রাজ আসতে দিলো না।

–কি হয়েছে?

–আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মিষ্টি ভ্রু কুচকে তাকালো রাজের দিকে তারপর রাজ যা বলল তাতে ওর ভাথায় আকাশ ভেঙে পরলো। চোখ বড় বড় করে রাজের দিকে তাকিয়ে আছে। এটা কি বলছে রাজ পাগল হলো নাকি।

সব সময় চিন্তা মাথায় নিয়ে বসে থাকৈ মিষ্টি কিছু ওর মাথায় ডুকছে না। রাজকে ও খুব ভালোবাসে রাজের কথা ফেলতে পারবে না কিন্তু রাজের কথা শুনে অন্য দের ধোকা দেওয়া হবে না তো। সবাই যদি মেনে না নেয় তখন কি হবে। মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে মিষ্টি হঠাৎ পাশে থেকে কেউ কথা বলে উঠলো।

— মিষ্টি

তাকিয়ে দেখে মামুনি। রাজের এক্মাম কালকেই শেষ কালের পরই টেনশন কি যে হবে।মামুনি রা কি আমাকে ভুল বুঝবে না মামুনি তো আমাকে খুব ভালোবাসে কিছু বলবে না মনে হয়। মামুনির মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবছি মামুনি আমার পাশে এসে বসে ঝাকিয়ে দিলো সিটকে সরে গেলাম ভয় পেয়েছি।

–হুম মামুনি বলো।

–কি হয়েছে তোর বলতো এতো কি চিন্তা করছিলি? আর ইদানিং একটু বেশি মনমরা লাগছে তোকে।

–তেমন কিছু না মামুনি মা মিনার কথা মনে পরছিলো তাই একটু।

–ওহ তুই তো গ্রামে যাস না অনেক দিন হয় তোর মা ও গেল কতো দিন যাবি নাকি একদিন পরিক্ষাতো নেই এখন।

–হ্যা যাবো।

–তা যাবি কিন্তু এখন না আমরা কাল বাবুনের ফুফির বাড়ি যাচ্ছি। দুইদিন থাকবো তারপর যাস রাজ দিয়ে আসবে নি ওর পরিক্ষা ও শেষ হয়ে যাবে।

–কবে যাবে।

–কাল

–ভাইয়ার যে এক্মাম।

–কালই তো শেষ যেতাম না ফোন দিয়ে খুব কেদেছে পরে গিয়ে ব্যাথা পেয়েছে না গেলে খারাপ দেখা যায় তাই যেতেই হবে।

পরদিন রাজ এক্মাম দিতে চলে যাওয়ার সময় মামুনিরা ও চলে যায়। বাসায় আমি একা মামুনিরা থাকলে চিন্তা কম থাকতো মামুনির সাথে গল্প করে কিন্তু একা বাসার চিন্তা বারছে।
আল্লাহ জানে কি যে হবে?

হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো হাযে নিয়ে দেখি কোয়েল এতো দিন পর কোয়েল এর নাম্বার দেখে হা করে তাকিয়ে আছি।
ফোন কানে নিতেই চিৎকার করে বলতে লাগলো,,

–দোস্ত রে একটা খুশির খবর আছে। তোকে কিন্তু আসতেই হবে যে ভাবেই হোক কোন এক্মকিউজ আমি শুনবো না।

–কি হয়েছে আগে বল তো।

–আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে। সামনে মাসেই বিয়ে তোকে কিন্তু আসেই হবে ভাইয়া কে নিয়ে।

–কার সাথে তোর না বয়ফ্রেন্ড ছিলো।

–হুম

–তাকে ছেরে অন্য জনকে বিয়ে করবি তাও এতো খুশি তুই।

–কি বলছি অন্য জনকে কে বলেছে ওর সাথেই তো বিয়ে ঠিক হয়েছে।

— সত্যি কী ভাবে তোর বাড়িতে মানলো।

–হুম মানছে কতো কাহিনি করে যে মানাতে হয়েছে বলে বুঝিতে পারবো না আমরা একাই যে বিয়ে করেছি সেটাও জেনে গেছীলো জেনেই রাজি হয়েছে না হলে রাজি হতো না।

কোয়েল সব বলল,

কিছু ক্ষণ কথা বলে ফোন রেখে দিলাম। সারাদিন এটা ওটা করে কাটালাম শেষে রাজের পছন্দের বিরিয়ানী করে ফেললাম,

.

.

— মিষ্টি তারাতারি রেডি হয়ে আসো। আর কতো সময় লাগবে সব সময় আমাকে বলো লেট হয় এখন কার লেট হচ্ছে।

রাজ বিরক্ত হয়ে বসে আছে মিষ্টির আসার নাম নেই। ঘরির দিকে তাকিয়ে দেখলো চারটার উপরে বাজে উঠে দাড়ালো মিষ্টির রুমের দিকে হাটা দিলো।
রুমে এসে অবাক শাড়ি কোন রকম পরে বসে আছে সাজ গোজ কিছু করে নি। রাগে মাথা ফেটে যাওয়ার উপক্রম রাজের এতো সময় ধরে বসে আছৈ তার জন্য আর সেই এভাবে বসে আছে। রেডি না না হয়ে মিষ্টি শাড়ির আচল আঙ্গুল পেচাচ্ছে আর কি যেন ভেবে যাচ্ছে। রাজ রেগে তার দিকে এগিয়ে গেল।

চলবে❤

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here