শরতের বৃষ্টি পর্ব-১৮

0
2401

#শরতের_বৃষ্টি
#লেখনীতে_তাশরিফা_খান
পর্ব–১৮

বাঙালি মাত্রই আড্ডাপ্রিয়। এই আড্ডা তুলনাহীন। পৃথিবীর কোনো দেশের, জাতির মানুষের সাথে এই আড্ডার তুলনা মেলে না। তাই এ ভূ-সংসারে এমন কোনো বাঙালি পাওয়া যাবে না যে জীবনে একবারও আড্ডা দেয়নি। বাঙালির আড্ডার ইতিহাস বেশ প্রাচীন। বাংলার বিখ্যাত ব্যক্তিদের আড্ডা নিয়ে কত মজার কাহিনী চালু রয়েছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই। বিংশ শতাব্দীর গোড়ায় দুই বাংলায় বেশ কয়েকটি জমাট আড্ডার ঠেক ছিল। বাংলার বহু জ্ঞানী-গুণী বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ ছিলেন সেসব আড্ডার মধ্যমণি। সেই আড্ডাগুলো ছিল প্রাণোচ্ছ্বল। আড্ডা হতে পারে নানা ধরণের। রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক, গানের, কবিতার, সিনেমার- এমনই আরও অনেক কিছুর। যে আড্ডায় যত বহুবর্ণ মানুষ সে আড্ডা তত আকর্ষক। তবে বাস্তবে দেখা যায়, সাধারণত এক ধরণের বিষয়ে আগ্রহীরা এক সাথে বসে আড্ডা দিতে ভালবাসেন। নির্মল আড্ডার কিছু নিয়মও থাকা চাই। যেন সবাই অংশগ্রহণ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন শুরুতে। কোন একজন ‘অতি জ্ঞানীর’ এক তরফা বক্তব্য একটি সুন্দর আড্ডার মৃত্যুর কারণ হতে পারে। এমন ক্ষেত্রে নির্দোষ ও গঠনমূলক আড্ডাকে বাঁচাতে হলে কোন একজনকে দায়িত্ব নিয়ে কৌশলে সব নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কাউকে না চটিয়ে, সবার কথা বলার মত পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। নইলে আড্ডা দীর্ঘজীবন পাবে না, কোন ইতিবাচক ফলও বয়ে নিয়ে আসবে না!

বর্তমান কালের এই ডিজিটাল যুগে সেসব বিখ্যাত আড্ডাগুলো অনেকটাই যেন কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। ‘কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই’। এখন মানুষ তার অনেকটা সময় ব্যয় করে স্মার্ট ফোনে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্রাউজ করে। স্মার্ট ফোনে যে আড্ডা (চ্যাট) হয়, তা কি কখনো এই সরাসরি চায়ের পেয়ালা হাতে নিয়ে, মুড়ি মাখা খেতে খেতে যে বিতর্ক হয় তার সমতুল্য! বন্ধুকে ছুঁয়ে দেখা বা পাশে বসে যে অনুভূতি, ফোনের স্ক্রিনে তার ছবি ভেসে ওঠায় বা নানা বর্ণের ইমো দিয়ে কি তার সত্যিকারের প্রতিস্থাপন হয়? বেঁচে থাক ভালো মানুষের সৃজনশীল আড্ডা। মানুষ হোক মানবিক, সৃজনশীল, সংবেদনশীল। ‘মানুষ মানুষের জন্যে, জীবন জীবনের জন্যে’- নিঃসঙ্গ মানুষের মন সব সময় আকাঙ্ক্ষা করে বসে থাকে উপযুক্ত মানুষের সঙ্গ। এই সু-সঙ্গই তো সেই প্রাণের আড্ডা। কলেজে বসেই আঁখি আনিকা আর সাদিয়া মিলে ডিসাইড করেছে ওরা সন্ধ্যায় আড্ডা দিবে। যেখানে ওরা বিভিন্ন আলোচনা আর হাসি আনন্দে সময়টা ব্যয় করবে। ওরা এটাও ভেবে রেখেছে আজ সন্ধ্যায় মুড়ি মাখা খেতে খেতে আড্ডা দিবে। বিকেল বেলা আনিকা আঁখির বাসায় গেলো। আঁখির কথা জিজ্ঞাসা করতেই মিসেস রোকেয়া রহমান বললেন আঁখি এখনও ঘুমাচ্ছে।। আনিকা ওর রুমে যেতেই দেখলো আঁখি উপুর হয়ে ঘুমাচ্ছে। ওকে অনেকবার ডাকলো আনিকা কিন্তু ও উঠবে তো দূর একটু নড়ছেও না। আনিকা বিরক্ত হয়ে জোরে চিল্লান দিতেই আঁখি লাফিয়ে উঠলো। “কি! কি হয়েছে!” বলে এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো। আনিকা ওর কাহিনী দেখে হেসে ফেললো। আঁখির কাছে গিয়ে বললো।

” অনেক সময় হয়ে গেছি উঠ! দুপুরে তো বললি বিকালে নিপা আপুকেও ইনভাইট করবি আমাদের আড্ডায়। তো কখন যাবি? সন্ধ্যা হয়ে এলো।”

আঁখি তাড়াতাড়ি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললো।

“হায় আল্লাহ! এখনও আসরের নামাজ পরিনি। একটু দাড়া আমি নামাজ পড়ে নেই।”

কথাটা বলেই আঁখি তাড়াহুড়ো করে ওয়াশরুমে চলে গেল। ও আসরের নামাজ পরেই হিজাবটা খুলে ওড়না নিয়ে আনিকাকে উদ্দেশ্য করে বললো।

“চল চল!”

আনিকা কথাটা শোনার অপেক্ষায় বসে ছিলোনা। ও আঁখির আগেই তাড়াতাড়ি চলছে। আঁখি ওর মাকে বলে নিচতলার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়লো। নিপাদের বাসায় গিয়ে কলিংবেল দিতেই নিরব দরজা খুললো। দরজার বাইরে আঁখিকে দাড়ানো দেখে অবাক হয়ে গেলো। ওর কাছে মনে হচ্ছে মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি পেয়ে গেছে ও। ওইদিন যে আঁখি কে দেখেছিলো আর দেখেনি। ওকে দেখার জন্য নিরবের মন আনচান করেছিলো। নিরব আঁখির কলেজে যাওয়ার সময়েও অপেক্ষা করছে দুদিন ধরে কিন্তু ওকে দেখেনি। নিরব এক দৃষ্টিতে আঁখির দিকে তাকিয়ে আছে। আঁখি ওকে তাকিয়ে থাকতে দেখে কাঁদো কাঁদো মুখে এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো। এখন ওর নিজের মাথাতেই ওর বারি মারতে ইচ্ছা করছে। ও তো একেবারে ভুলে গিয়েছিলো নিরব বাড়িতে। এই দুদিন ধরে আঁখি পালিয়ে পালিয়ে কলেজে যাচ্ছে। নিরবের সামনে পরলেই ওই দিনের মতো ওকে পটাতে চাইবে এটা ওটা বলবে, যা ওর একেবারেই ভালো লাগেনা। এতদিন এড়িয়ে চলে আজ ওর বাসায় এসেই পড়লো। আনিকা নিরব কে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে কপাল কুচকে বললো।

“এই যে মি. এমন পিলারের মতো দরজার সামনে দাড়িয়ে আছেন কেনো? এখানে দাঁড়িয়ে না থেকে দরজা থেকে সরিয়ে দাড়ান! নিময় কানুন জানেন না?”

আনিকার কথা শুনে নিরবের ধ্যান ভাংলো। হালকা কেশে আঁখির থেকে চোখ ফিরিয়ে ওর দিকে তাকালো। আনিকা একটু পাশে ছিলো বিধায় নিরব এতক্ষণ ওকে খেয়ালেই করেনি। নিরব আনিকার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো।

“আসুন আসুন! ভিতরে আসুন।”

কথাটা বলেই নিরব দরজা থেকে সরে দাড়ালো। আনিকা বিরক্ত চোখে নিরবের দিকে তাকিয়ে বাসার ভিতরে প্রবেশ করলো। আঁখি ভিতরে যেতেই নিরব ওর পাশে এসে মুচকি হেসে বললো।

“কেমন আছো?”

আঁখি যত দূরে দূরে থাকতে চাচ্ছে নিরব তত চিপকে থাকছে ওর সাথে। আনিকা এখনও ভ্রু কুচকে নিরবের দিকে তাকিয়ে আছে। এই ছেলেটার ভাবসাব ওর একটুও ভালো লাগছেনা। আঁখি ভদ্রতার খাতিরে জোর পূর্বক হেসে বললো।

“আলহামদুল্লিলাহ ভালো আছি! নিপা আপু কোথায়?”

কথাটা বলার মাঝেই নিরবের মা নুরজাহান বেগম ওখানে আসলেন। তিনি খুব ভালো একজন মানুষ। সহজেই সবাইকে আপন করে নেন৷ আরিবা, আনিকাকে খুব ভালোবাসে। নিপাও ওদের সাথে খুবেই মিশে। নিপাদের বাসার সবাই খুবেই মিশুক। নুরজাহান বেগম ওদের কাছে এসে মুচকি হেসে বললো।

“আরে আমার মেয়েরা এসেছি দেখি। কি খবর তোমাদের?”

আঁখি আর আনিকা দুজনেই খুশিতে গদগদ হয়ে নুরজাহান বেগমের হাত ধরলো। আঁখি ঠোঁট প্রসারিত করে বললো।

“আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন আন্টি?”

“ভালো। বসো তোমরা! আমি কিছু নিয়ে আসি।”

আনিকা নুরজাহান বেগমকে থামিয়ে দিয়ে বললো।

“নাহ! আন্টি এত ব্যস্ত হতে হবেনা। পরে একসময় খাবো। এখন নিপা আপুর কাছে যাই।”

“জরুরী কোনো দরকার আছে নাকি?”

নুরজাহান বেগমের কথা শুনে আঁখি মুচকি হেসে বললো।

“আসলে আজ আমরা সন্ধ্যায় একটা আড্ডার আয়োজন করেছি। সেখানে আপুকে ইনভাইট করতে এসেছি।”

নুরজাহান বেগম কিছুই বললেন না। ওদের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন। পাশে নিরবের দিকে তাকিয়ে বললেন।

“ওহ তোমাদের তো বলাই হয়নি। আমার বড় ছেলে নিরব। পুলিশ অফিসার। ছয় মাস পরে ছুটিতে আসলো। ভাবছি এবার বিয়ে করিয়ে দিবো।”

কথাটা শুনে আঁখি জোর পূর্বক হেসে নিরবের দিকে তাকালো। নিরব মুচকি মুচকি হাসছে। কথাটা বলে নুরজাহান বেগম রান্না ঘরের দিকে গেলেন। আনিকা কিছু না বলে নিপার রুমে চলে গেলো। আঁখি উঠতে যাবে তার আগেই নিরব ওর সামনে দাঁড়িয়ে বললো।

“তোমাদের প্রবলেম না হলে আমি কি তোমাদের আড্ডায় জয়েন করতে পারি?”

কথাটা শুনে আঁখি চমকে তাকালো। এখন ওর কেঁদে দিতেই ইচ্ছে করছে। কেনো যে এখানে এসেছিল আল্লাহ জানে। আজ নিশ্চয়ই আতিকের মুখ দেখে ঘুম থেকে উঠেছিলো। বারবার ঝামেলায় ফেসে যাচ্ছে। এবার কি বলবে আঁখি? মুখের উপরে তো নাও বলতে পারবে না। না বলা কোনো ভদ্র মানুষের কাজ না। আবার পুলিশ যদি রেগে যায়? আঁখির এবার পুরো কাঁদার মতো অবস্হা হয়ে গেছে। এখানে না আসলেই ভালো হতো। তাকিয়ে দেখলো নিরব মুচকি হেসে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। নিরব কে বুঝতে না দিয়ে আঁখি কোনো মতে মুখটা ঠিক করলো। নিরবের দিকে তাকিয়ে জোরপূর্বক হেসে বললো।

“নাহ সমস্যা নাই! আপনি আসতে পারেন।”

কথাটা বলেই আঁখি নিরবকে কিছু বলতে না দিয়ে নিপার রুমে চলে গেলো। নিরব ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো। ভাব নিয়ে দু হাত দিয়ে চুলগুলো পিছনে ঠেলে দিয়ে বললো।

“আমি জানি তুমি চাওনা আমি তোমাদের ওখানে যাই। কিন্তু রূপসী কন্যা! তুমি চাও আর না চাও, তোমাকে দেখার জন্য, তোমার কথা শোনার জন্য, আমি জোর করেই যাবো।”

———————————

সন্ধ্যার পর পরেই সবাই একে একে ছাঁদে জড়ো হয়েছে। নিরব আর নিপা এখনও আসেনি। সাদিয়া আঁখি আর আনিকা একসাথে ছাঁদে গিয়েছে। বাসা থেকে পেঁয়াজ, মরিচ, ধনিয়া পাতা আর শসা কুচি কুচি করে কেটে নিয়ে গেছে। সাথে বড় গামলা। সরিষর তৈল, মুড় সবকিছু নিয়ে গেছে। বলতে গেলে ওরা মুড়ি মাখার সব উপকরন নিয়ে গিয়েছে। আনিকা ছাঁদে গিয়ে কপাল কুচকে ওদের দিকে তাকিয়ে বললো।

“নিপা আপুর সাথে তার ভাই ওই নিরবও আসবে। সব আঁখির জন্য! আগ বাড়িয়ে তোর বলার কি দরকার ছিলো? আমার একটুও ভালো লাগছে না।”

নিরবের কথা শুনে আঁখি ঠোঁট উল্টে আনিকার দিকে তাকালো। নিরবের আসার কথা শুনে সাদিয়ার মুখে আপনা আপনি হাসি ফুটলো। মুচকি হেসে আঁখির দিকে তাকালো। আঁখিকে সাদিয়ার একটা ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছে করছে। নিরবের সাথে সাদিয়ার এই কয়দিনে অনেকবার দেখা হয়েছে, কথাও হয়েছে। নিরব খুব সুন্দর করে হেসে হেসে কথা বলে। সব সময় হেসেই থাকে। দেখতেও অনেক সুদর্শন। সাদিয়া হেসে ওদের কিছু বলতে যাবে তার আগেই আঁখি বললো।

“আমি কি করবো দোস্ত? কেউ জোর করে আসতে চাইলে না করা যায় বল? আমি তো তাও আকার ইঙ্গিতে না আসলে খুশি হবো তা বুঝাইছি। লোকটা বুঝলে ভালো।”

অসহায় ভঙিতে কথাটা বলেই ওদের ছাদের মাঝে বসার জায়গায় বসে পড়লো আঁখি। আনিকাও সব রেখে বসে পড়লো। ওদের কথা শুনে সাদিয়া চুপ হয়ে গেলো। ও বুঝতে পারলোনা নিরব কে ওদের দুজনের অপছন্দ কেনো? ওর কাছে তো ভালোই লাগে। নিরব অবশ্যই ভালো লাগার মতোই একজন। সাদিয়া ওদের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলো।

“নিরব ভাইয়াকে তোমরা অপছন্দ করো কেনো? তিনি কি কিছু করেছেন?”

আনিকা বিরক্ত নিয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগেই দেখলো নিপা আর নিরব ছাঁদে এসেছে। ওদের দেখে আনিকা চুপ হয়ে গেলো। নিরব মুচকি হেসে ওদের দিকে তাকিয়ে বললো।

“গুড ইভিনিং এভরিবডি!”

আনিকা ওকে দেখে বেশ বিরক্ত হলো। বিরক্ত হলোও তা বাইরে প্রকাশ না করে ভিতরে দমিয়ে রাখলো। আঁখি জোরপূর্বক হাসি দিয়ে নিরবের দিকে তাকালো। ওর হাসিটা কৃত্রিম হলেও নিরবের হৃদয় ছুঁয়ে গেলো। মুখে হাসি ঝুলিয়ে আঁখির দিকে তাকিয়ে রইলো নিরব। সাদিয়া মুচকি হেসে নিরবকে উদ্দেশ্য করে বললো।

“গুড ইভিনিং ভাইয়া! বসুন!”

নিপা ওদের মাঝে বসে পড়লো। নিরব আঁখির ঠিক সামনে বসে ওর দিকে তাকিয়ে রইলো। আঁখি হেসে হেসে ওদের সাথে কথা বলছে নিরব মনভরে ওর হাসিটা দেখছে। ওর মনে হচ্ছে এটাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ হাসি। এই হাসিতে সকল পুরুষ নিজেকে বিলিয়ে দিতে এক মূহুর্তেই রাজি হয়ে যাবে। নিরব জীবনে এত মেয়ে দেখেছে কিন্তু কাউকেই এত ভালোলাগেনি ওর। কখনও কোনো মেয়ের চেহারায় এত মায়া আর লাবন্য খুঁজে পায়নি। কাউকে নিয়ে এত ভাবেনি ও। ওইদিন দেখার পর থেকেই সারাদিন রাত ওকে নিয়েই ভাবছে। ওর মায়াভরা মুখটাই ওর চোখের সামনে ভেসে উঠছে। এক মূহুর্তের জন্য ওকে ভুলতে দেয়নি। কি যাদু করেছে ওকে তা ভেবেই পায়না নিরব। কথা বলার ফাঁকে নিরবের দিকে চোখ পরতেই আঁখি দেখলো ওর দিকে তাকিয়ে আছে। ও আমতা আমতা করে সবার দিকে তাকাতে লাগলো। দেখলো কেউ দেখছে কিনা? নিপা আর সাদিয়া কথা বলায় ব্যস্ত ব্যাপারটা ওরা খেয়াল করেনি। কিন্তু আনিকা খেয়াল করেছে। ও চোখ দিয়ে আঁখি কে নিরবের দিকে ইশারা করে বুঝালো ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আখিও চোখ দিয়ে বুঝালো ও বিষয়টা খেয়াল করেছে। আনিকা রেগে নিরবের দিকে তাকালো। সাদিয়া নিপার সাথে কথা বলা শেষ করে নিরবের দিকে তাকালো। দেখলো নিরব চুপচাপ বসে আছে কথা বলছেনা। ও মুচকি হেসে বললো।

“ভাইয়া আপনার বোধহয় একা ভালো লাগছেনা। আমাদের মাঝে বোর হচ্ছেন, সঙ্গী হলে ভালো হতো তাইনা?”

সাদিয়ার কথায় নিরবের ধ্যান ভাঙলো। একটু বিরক্ত হলেও তা প্রকাশ করলো না। ও আঁখির থেকে চোখ ফিরিয়ে সাদিয়ার দিকে তাকালো। মুচকি হেসে বললো।

“তা তো ভালো হতোই!”

“ওহ আচ্ছা। তাহলে আমি ভাইয়াকে ফোন করছি!”

কথাটা বলেই সাদিয়া ফোন বের করলো। আঁখি কথাটা শুনেই চমকে তাকালে, ওর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। বলে কি? ওর সুখের ঘরে সবাই আগুন লাগায়। আঁখি মুখ কালো করে ফেললো। ওর আনন্দের মূহুর্ত আর আজ হলোনা। ওর আনন্দ এখানেই শেষ। সাজ্জাদ আসা মানেই ওর চরম ক্ষতি। আঁখি সাদিয়াকে বাঁধা দিতে গিয়েও দিলোনা। সবাই কি ভাববে তাই চুপ করে রইলো।

ইনশাআল্লাহ চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here