শুকতারা পর্ব-৫

0
1663

#শুকতারা (পর্ব-৫)
#হালিমা রহমান।

সূচিদের গ্রামের নাম উদয়পুর।ভোলার অন্তর্গত ছোট্ট একটা গ্রাম। উদয়পুরে ইউনিয়ন পর্যায়ের নির্বাচন চলছে।সময়-অসময়ে দোরগোড়ায় প্রার্থীদের আগমন,চায়ের কাপে হার-জিতের লড়াই।সমর্থকরা অকারণেই একে-অন্যের সাথে ঝগড়া করছে,এখানে -সেখানে মারামারি,দলীয় কোন্দল।কেউ কারো পা ভেঙে দিচ্ছে,কেউ কেউ আবার একে-অন্যের বংশ উদ্ধার করছে কথায় কথায়।দেয়ালে দেয়ালে পোস্টারের ছড়াছড়ি,মিছিল-মিটিং-সমাবেশ সময়ে অসময়ে,প্রার্থীরা গ্রামবাসীর সামনে বিনয়ে গদগদ,কাঁধে হাত রেখে সুন্দর করে কথা বলছে,কেউ আবার চা খাওয়াচ্ছে,কেউ কেউ এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ছে পাঁচ ওয়াক্ত।এসব দেখে আবার গ্রামবাসীরা কৌতুক করে নিজেদের মাঝে।কেউ কেউ তো আবার প্রার্থীদের সামনেই ঠোঁটকাটার মতো বলে ফেলেঃ” নির্বাচনের শেষে আমগোরে মনে রাখবেন তো? এই যে নামাজ পড়াতাছেন,কাঁন্দে হাত দিয়া কথা কইতাছেন,এডি মনে থাকব তো?”

নির্বাচনী গরম হাওয়া ছুঁতে পারে না মমিন শেখকে।তিনি সংসারী মানুষ,এসব জিনিসে তার আগ্রহ কম।তার পৃথিবীটা ছোট।মেয়ে,বউ,জমিজমা,ক্ষেতের কাজ –এই তার গন্ডি।ভোট দেওয়া নাগরিকের অধিকার-কর্তব্য, এই কথাটাও মনে থাকে না তার।শেষ কবে ভোট দিয়েছেন তাও মনে পড়ে না।চায়ের দোকানে অন্যরা যখন নির্বাচনের খবর নিয়ে মত্ত,মমিন শেখ তখন বন্ধু রতন পাটোয়ারীর সাথে জমি-জমা নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত। এ বছর ফসল কম হয়েছে,অসময়ের বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে অনেক ফসল।অন্যান্য বছরের তুলনায় মমিন শেখের ক্ষতি হয়েছে এবার।সামনে সবজি করার ইচ্ছে আছে।তাজা সবজির কদর ঢাকায় বেশি।পাইকারদার গাড়িতে ক্ষেতের তাজা তাজা সবজি তুলে দিতে পারলে লাভই লাভ।মমিন শেখের ব্যবসায়িক খবরাখবরের পাশ কাটিয়ে রতন পাটোয়ারী ভিন্ন প্রসঙ্গ তুললেন।চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বললেনঃ” তুই ওইদিন মাইয়াটারে ওমনে না মারলেও পারতি।”

মমিন শেখ বুঝতে পারলেন না বন্ধুর কথা।কপাল কুঁচকে বললেনঃ” কী কছ?”

_” রত্নার মুখে শুনলাম,সূচিরে নাকি অনেক মারছিলি মেলায় যাওয়ার লেগা।”

_” হ,মারছি।অন্যায় করছে,তাই মারছি।”

_” এতো বড় মাইয়ার গায়ে হাত তুলোছ ক্যামনে? লজ্জা-শরমও থাকে মাইনষের।”

_” তুই এডি বুঝবি না।”

_” বুঝাও লাগব না।আমার রত্না কি খারাপ মাইয়া? ওর লগেই তো মেলায় গেছে সূচি।পোলাপাইন মানুষ একটু-আকটু শখ-আহ্লাদ থাকেই।আরেকটা কথা মাথায় রাখিছ মমিন,রশি বেশি টানলে কিন্তু রশি ছিঁড়া যায়।এতো শাসন ভালো না।”

মমিন শেখ চায়ের কাপে শেষ চুমুক দেন।দোকানদারের কাছে চায়ের কাপ ফিরিয়ে দিতে দিতে বলেনঃ” আমার রশি ছিঁড়া গেছে অনেক আগেই।ছিঁড়া রশিটাই যাতে আর না ছিঁড়ে তাই হাতে রাখি। তোর মাইয়া তো আর মুখে চুনকালি দিয়া যায় নাই,এর লেগাই বুঝোছ না।আমার জায়গায় থাকলে বুঝতি।শাসনে থাকে দেইখাই সূচির চরিত্রে এহনো দাগ লাগে নাই।শাসন না করলে বড়টার মতোই হইতো।আগের গরু যেমনে যায় পরেরটাও ওমনেও যায়।”

রতন পাটোয়ারী চা শেষ করে বন্ধুকে বললেনঃ” তবুও,এহনকার পোলাপাইনের মতি-গতির ঠিক নাই।তালেব মাস্টারের পোলায় আত্মহত্যা করছিলো,মনে আছে? বাপে একটা থাপ্পড় মারছে দেইখা ফাঁসি দিলো।এহনকার পোলাপাইনের রক্ত গরম।কি থুইয়া কি করে কওন যায় না।”

আতঁকে উঠেন মমিন শেখ।শত হলেও তিনি তো বাবা।মাথা নেড়ে বলেনঃ” আল্লাহ না করুক,আমার মাইয়া এমন করব না।ওরে আমি চিনি।”

_” বাদ দে ওইসব কথা।একটা দরকারি কথা আছিলো।সূচিরে বিয়া-শাদি দিবি নাকি?”

_” ভালো পোলা পাইলে দিমু।”

_” আমার কাছে ভালো একটা পোলা আছে।কাজী বংশের পোলা ফয়সাল।চিনোছ না?”

ফয়সালের নাম শুনে ভীষণ অবাক হন মমিন শেখ।অবিশ্বাস্য চোখে বন্ধুর দিকে চেয়ে বলেনঃ” কার নাম কইলি,ফয়সাল?”

_” হ।”

_” ওরা আমগো লগে সম্বন্ধ করব না।”

রতন পাটোয়ারী কপাল কুঁচকে প্রশ্ন করেনঃ” ক্যান?”

_” কাজী বংশ বউ হিসেবে আরো ভালো মেয়ে খুঁজব।শিক্ষিত,সুন্দর, নম্র-ভদ্র মেয়ে খুঁজব ফয়সালের মায়ে।তুই তো সূচিরে চিনোছ।সূচির চাইতে আরো কত ভালো মেয়ে আছে গ্রামে।ওরা ওইগুলি থুইয়া আমগো লগে আত্মীয়তা করব ক্যান?”

চরম বিরক্ত হন রতন পাটোয়ারী। গলায় একরাশ বিরক্তি নিয়ে বলেনঃ” তোর মাইয়া তুই যদি এমন কছ,তাইলে বাকিরা কি কইব? ফয়সালের মা রত্নার মার লগে সূচির কথা কইছিলো সেদিন। ফয়সালের লেগা সূচিরে নেওয়ার খুব ইচ্ছা তার।সূচিরে তো আগের থেকাই চিনে,তবুও একটু আনুষ্ঠানিকভাবে দেখার ইচ্ছা।আমি আরো আগেই তোরে কইতাম কিন্তু সূচিরে মাইরা অসুস্থ বানায়া ফেললি, তাই বলি নাই।তোর যদি ইচ্ছা থাকে তাইলে চিন্তা-ভাবনা করতে পারোছ।সম্বন্ধ করলে ঠকবি না।পোলা খাঁটি সোনা।”

মমিন শেখ বিশ্বাস করতে চান না।অবিশ্বাসের ভঙ্গিতে বলেনঃ” সত্যি কইতাছোছ?”

_” হ।তোর মাইয়া মানে আমার মাইয়া। মিথ্যা কমু ক্যান?”

মমিন শেখ সহসা কথা খুঁজে পেলেন না।ফয়সালের পাশাপাশি সূচি! এতবড় সৌভাগ্য! ফয়সাল ছেলে হিসেবে ভালো।সৎ,কর্মঠ,মাতৃভক্ত,ভদ্র,দেখতেও বেশ সুন্দর। সূচির কপালে এমন একটা মানুষ ছিল! মনে মনে আল্লাহকে ধন্যবাদ জানাতে ভুললেন না মমিন শেখ।

_” তাইলে পরশুদিন আসতে বলি ফয়সালের মারে?”

_” বল।”

_” আচ্ছা, তাইলে তুই আয়োজন কর। তারা আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়ে দেখুক।দেখি এরপরে কি কয়।”

মমিন শেখ ঝিম মেরে বসে থাকেন কিছুক্ষণ।ফয়সাল ও সূচি,নাম দুটো মিলাতে এখনো বেশ কষ্ট হচ্ছে তার। ফয়সালের মা নিজের ছেলের জন্য সত্যিই পছন্দ করেছেন সূচিকে? বিশ্বাস না হলেও বিশ্বাস করলেন মমিন শেখ।বেপরোয়া, গোঁয়ার, কাঠ-খোট্টা, চঞ্চল মেয়েটার কপালে এমন এক সৎপাত্র জুটবে তা কে জানতো?

_” সূচির একটা কূল-কিনারা কইরা দাও, খোদা।ভালো পাত্র মিলায়া দিছো তুমি, এহন ভালোয় ভালোয় সব ঠিক কইরা দিও।একটু দয়া করো খোদা।”— মনে মনে প্রার্থনা করেন মমিন শেখ।সূচির ছোট-খাট বিষয়ে প্রার্থনা করায় একদম পটু তিনি।

***

টানা তিনদিন জ্বরে ভুগলো সূচি।সেদিনের মারের ব্যাথায় জ্বর এসেছিল।সকাল-বিকাল গা কাঁপানো জ্বরে সূচির নাজেহাল অবস্থা।ঘরের কারো সাথে কথা বলে না।বাবা-মায়ের সাথে রাগ করে ঘরে কথা বন্ধ সূচির।ঘরের বাইরে এলেই টুকটাক কথা বলে।সূচি এখন আর বাড়ির বাইরে যায় না।নিজেই ঘরবন্দি হয়ে আছে।রত্না এসেছিল সেদিন দেখা করতে।ভালো লাগেনি বলে কথা বলেনি সূচি।ঘুমের ভান ধরে মরার মতো পড়েছিল বিছানায়।রত্না কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে চলে গেছে।ইদানীং রত্নাকেও সহ্য হয় না সূচির।

আজ একটু বেশিই ঠান্ডা পড়েছে।সূচি গায়ের চাদর আরেকটু ভালোভাবে জড়িয়ে নেয়।ওর পাশেই দাঁড়িয়ে আছে জয়ার ছয় বছর বয়সী মেয়ে লিয়া। পুকুরের পানিতে ঢিল ছুঁড়ে মারছে লিয়া।এই শীতের বিকালে ঠান্ডা পানিতে সাতার কাটছে রনি। ছেলেটা বোধহয় মানুষ না। মানুষ হলে এমন ঠান্ডা পানিতে সাতার কাটতে পারতো? সত্যিই মনি ভাবির ভাইটা একদম মাথা ভাঙা।

টুপ করে ডুব দিলো রনি।কয়েক সেকেন্ড পর পানি থেকে মাথা তুলে সূচিকে প্রশ্ন করলোঃ” সূচি আপা,সাতার শিখবানি?”

_” দূর হ,হতভাগা। এটা সাতার শিখার সময়?”

_” তুমি আসলেও কোনো পদের না।দেশ-গেরামের মাইয়া সাতার জানে না! ইছ! তোমারে দেশে থাকার অনুমতি কে দিছে? তোমারে বস্তায় ভইরা বিদেশে পাচার করা দরকার।”

আবারে ডুব দেয় রনি।লিলি আরেকটা ঢিল ছুঁড়ে মারে রনিকে উদ্দেশ্য করে।পানিতে ঢিল পড়তেই ছড়িয়ে যায় পানি।লিলি তা পর্যবেক্ষণ করে সূচিকে বলেঃ” ফুপি, রনি মামার ঠান্ডা লাগে না?”

_” না। ও তো মানুষ না, তাই ওর শীত-গরম নাই।”

_” রনি মামা তাইলে কী?”

_” এলিয়েন।”

_” ফুপি, এলিয়েন কী?”

_” ভিনগ্রহের প্রাণী।”

_” ভিনগরহো কী?”— সঠিকভাবে উচ্চারণ করতে পারে না লিলি।

সূচি বিরক্ত।মেয়েটা মহাত্যাদড়।এর প্রশ্ন শেষ হয় না।একটার পর একটা তৈরি হতেই থাকে।সূচি বিরক্ত ভঙ্গিতে বলেঃ ” তোর বুঝার বয়স হয়নি।বড় হলে বুঝবি।”

_” কত বড় হইতে হইব? তোমার মতো বড়? আমি এতো বড় কখন হমু?”

লিলির এতো প্রশ্ন শুনে পানি থেকে মাথা তুলে দাঁত বের করে হাসে রনি। ঘাটের কাছে এসে বলেঃ” সব বুঝতে হইলে বিয়া করতে হয়।বিয়ার পরে মাইনষে সব বুঝে।তুই এহন বুঝবি না লিলি বিলি।তোর যেদিন বিয়া হইব সেদিন বুঝবি।”

রনিকে ধমক দেয় সূচি।চোখ পাকিয়ে বলেঃ” এই রনি,ছোট মানুষের সাথে এসব বলে? মানুষ হ।”

রনিকে ধমকে এদিক-ওদিক চোখ বুলাতেই রত্নাকে চোখে পড়লো সূচির।পুকুরটা একটু ভিতরের দিকে।গাছ-পালা ডিঙিয়ে এদিকেই আসছে রত্না।সূচির বিরক্ত লাগে।মার খাওয়ার পর থেকে রত্নাকে দেখতে পারে না সূচি।সেদিন বাবাকে একটু মিথ্যা বললেই হতো।কোথায় গেছিল জিজ্ঞেস করতেই গড়গড় করে সত্যি কথা বলা দিলো।মেলায় যাওয়ার কথা না বলে অন্যকিছু বললেই হতো।রত্নার জন্যই এতো মার খেতে হলো।বেয়াদব মেয়ে।রত্নাকে উদ্দেশ্য করে মুখ ভেংচি দেয় সূচি।

_” কি রে তুই এই জায়গায়? আমি আরো ঘরে খুঁজতে খুঁজতে শেষ। শরীর কেমন তোর?”

উত্তর দেওয়ার ইচ্ছা না থাকলেও উত্তর দেয় সূচি।আর যাইহোক সূচির গায়ে অসামাজিকতার অপবাদ দেওয়া যায় না।সে বিরসমুখে বলেঃ” ভালো আছি।”

_” জ্বর কমছে?”

_” হুম।”

_” তুই কি আমার উপরে রাইগা আছোছ?”একটু ইতস্ততভাবে প্রশ্ন করে রত্না।

_” হঠাৎ? ”

_” না মানে ওইদিন আমিই মেলার কথা বলছিলাম।না বললে তো তুই যাইতি না।আর কাকাও দেখতো না।”

হা করে রত্না ও সূচির কথা শুনছিলো রনি।ঘাটে উঠে শরীর মুছতে মুছতে বললোঃ” তোমার লেগা ওইদিন অনেক মাইর খাইছে সূচি আপায়।এর লেগাই কয় বান্ধবী পাতাইতে হয় বুইঝা-শুইন্না।সূচি আপা, রত্না আপা তোমার ভালো বান্ধুবী না।নিজে বাঁইচ্চা গেছে,চিপা দিয়া তোমারে ফাসায়া দিছে।”

রত্নার মুখ কালো হয়ে গেলো মুহূর্তেই।রনিকে দুই চোখে দেখতে পারে সে।ছেলেটা সূচির মতোই বেয়াদব।মুখে মুখে কথার উত্তর দেয়।মনে মনে দশ-বারোটা গালি দিলো রত্না।সূচির হাত টেনে সামনে পা বাড়িয়ে বললোঃ” তোর সাথে দরকারী কথা আছে।এদিকে আয়।”

রনি ও লিলির থেকে একটু দূরে সরে রত্না।বিকালের আলো বিদায় নেওয়ার তোড়জোড় করছে। লম্বা বাঁশগাছের ওপাড়ে বিকালের আকাশ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায় সূচির। শেষ বিকাল আসলেই সুন্দর।গাছ-গাছালির মাঝে দাঁড়িয়ে রত্না ফিসফিস করে বলে তার গোপন কথা।

_” ফয়সাল ভাইয়ের মা আইছিলো সেদিন।জানোছ কী কইছে?”

_” না বললে জানব কীভাবে?”

_” খালাম্মার নাকি তোরে অনেক পছন্দ। ফয়সাল ভাইয়ের বউ হিসেবে তোরে নিতে চায়।”

তুড়ি মেরে রত্নার কথা উড়িয়ে দিলো সূচি।মুখ ভেংচি দিয়ে বললোঃ” তুই বললেই বিশ্বাস করব আমি?ফাজলামি করার জায়গা পাস না? মিথ্যা বলছিস কেন?”

_” আরে মিথ্যা না, সত্যি।আমি নিজের কানে শুনছি।”

রেগে যায় সূচি।গলা শক্ত করে বলেঃ” মিথ্যা বলবি না রত্না।আমাকে পছন্দ হলে আমাদের বাড়ি আসতো বিয়ের কথা নিয়ে।”

_” আরে আসব তো।তোর তখন জ্বর আছিলো না? আম্মায় তাই মানা করছে। ”

একটু দ্বিধাবোধ ফুটে উঠে সূচির চোখে।রত্না মিথ্যা বলবে কেন? তাছাড়া, মিথ্যা বলায় খুব বেশি পটু নয় রত্না।মিথ্যা বলার সময় গলা কাঁপে।রত্নার কথা শুনে মনে হচ্ছে না মিথ্যা বলছে।তবে কি সত্যি? সূচি আরেকটু নিশ্চিত হতে চায়।

_” তুই সত্যি বলছিস?”

_” হ বইন।”

_” আল্লাহর কসম বল।”

_” আল্লাহর কসম।মিথ্যা কইলে যেন আমার উপরে ঠাডা পড়ে।”

সহসা কথা বন্ধ হয়ে যায় সূচির।ঠান্ডা লাগছে খুব।পুরো শরীর শিরশির করে। ভিন্ন রকম অনুভূতির জন্ম হয় সূচির মাঝে।ফয়সালের মা পছন্দ করেছে ওকে? কথাটা সত্যি? তবে কি ফয়সালের সাথেই জুড়ে যাবে ভাগ্য? ফয়সাল,কাজী ফয়সাল! সূচির বহুদিনের আকাঙ্ক্ষিত পুরুষ,বারবার প্রার্থনায় ভিক্ষা চাওয়া সেই মানুষ! সূচি কল্পনায় বেশ সুন্দর একটা দৃশ্য দেখতে পায় মেয়েটা।তার আকাঙ্ক্ষিত মানুষটার পাশেই সে বসে আছে।লাল বেনারসি গায়ে জড়িয়ে, একহাত ঘোমটা দিয়ে,একরাশ লজ্জায় শরীর গুটিয়ে সূচি বসে আছে।ফয়সাল হাসলো,হাত বাড়ালো,সূচির ঘোমটা তুললো,সূচি লজ্জায় আরেকটু গুটিয়ে গেল,তারপর? তারপর?

_” সূচি,সূচি”

_” হুম।”

_” তুই খুশি হইছোছ?”—রত্নার চোখে-মুখে খুশির ঝিলিক।

_” আমার পেট গুড়গুড় করছে রত্না।পেটে মোচড় দিচ্ছে।”

_” ফয়সাল ভাইয়ের নাম শুনলেই তো তোর পেট মোচড় দেয়।”

_” আমার খুব কাঁদতে ইচ্ছা করছে রত্না।ইচ্ছা করছে খুশিতে ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদি। আমি কি একটু কাঁদব?”

সূচির চোখের কোণে সত্যিই পানি চিকচিক করছে।রত্না অবাক হয়ে চেয়ে রইলো।সূচিকে খুশি করা এতো সহজ! এইটুকু খবরেই কেউ এতো খুশি হয়? কি আশ্চর্য! কি আশ্চর্য!

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here