#শেষটা_সুন্দর
#পর্ব_১৭
#নুসরাত_তাবাস্সুম_মিথিলা
হঠাৎ শুনতে পেল সেই চিরচেনা কাঙ্খিত কণ্ঠস্বর ।
রোহান …
রেহান তুই আমার সাথে কথা একটাও কথা বলবি না ।
দোস্ত আর রাগ করে থাকিস না । বুকে আয় ।
এই একটা কথাই রোহানের মনকে গলিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট । সে ছুটে গিয়ে তার বেস্টফ্রেন্ড রেহানকে জড়িয়ে ধরে । এ যেনো চার বছরের জমিয়ে রাখা আবেগ। দুই বেস্টফ্রেন্ড এর মহামিলন ঘটলো চারটি বছর পর । দুজনেই নীরবে চোখের জল ফেলছে ।
কারো মুখেই কোন কথা নেই । নীরবতা ভেঙে রোহান কান্নাভেজা কণ্ঠে বলে উঠলো ,
তুই এখন কি করছিস ?
আর দুই মাস পরে ডাক্তার হিসেবে ঢামেক এ জয়েন করবো ।
হোয়াট তু্ই ডাক্তার হয়ে গেছস ?
হুম, ওই আরকি । ইন্টার্নশিপ আজকেই কমপ্লিট করলাম ।
ভাইরে ভাই তুই না ডাক্তারি পড়ারে ভয় পাইতি ।
মানুষ চাইলে সবটাই সম্ভব ।
এই এতো জ্ঞানের কথা কবি না । ডাক্তার হইয়া ভাব বাইরা গেছে না ?
আমিও একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার ।
হা হা হা । তা যা বলেছিল ।
রেহান তুই এভাবে আমাদের কাউকে কিছু না জানিয়ে কোথায় গিয়েছিলি আর না বলে এভাবে চলে যেতে পারলি ?
আমি তো ঢাকায় এসেছিলাম কারণ আমার মেডিকেল এ চান্স হয়েছিল আর তোদেরকে জানিয়ে মায়া বাড়াতে চাইনিরে । আর তোদেরকে বললে তো আর তোদের ছেড়ে আসতে পারতাম না , আসলে ছেড়ে আসতে মনটাই চাইতো না । আর আজকের এই পর্যায়ে থাকতে পারতাম না । আচ্ছা রোহান তোকে একটা কথা জিজ্ঞেস করি ?
ওই তুই আমার লগে ফর্মালিটি মারাস ?
আরে না ।
ভনিতা না করে বল , কি জানতে চাস ?
মুগ্ধতা কেমন আছে ?
ও তো ভালোই আছে । কিন্তু তুই চলে যাবার পর থেকে চুপচাপ হয়ে গেছে । একটা কথা কি জানিস ও কষ্টে থাকলেও সবার সামনে ভালো থাকার মুখোশ পরে থাকে । আর মুগ্ধতা সামনের মাসে আমেরিকা চলে যাবে ওর জন্য ইউএসএ থেকে চাকরির ওফার এসেছে ।
ও আচ্ছা । আসবেই তো সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বলে কথা । মিনহাজকে নিয়েই যাবে তাই না ?
রেহান একটা কথা বলি , মুগ্ধতার বিয়ে হয় নি ।
মানে ?
মিনহাজ তোর সাথে গ্যান্জাম করার পর পর , আস্তে আস্তে ওর কর্মকাণ্ডগুলো সবার সামনে আসতে শুরু করে । ওই ছেলে একটা দুশ্চরিত্র , নীতিহীন , আর গুন্ডাটাইপ । আর তোর সাথে ওই ব্যবহার করার পর তো মুগ্ধতা ওর সাথে কথা বলাই ছাইড়া দিসিলো । আর মিনহাজ ইউকেতে সেটেলড হয়ে গেছে । তাই মুগ্ধতার মা-বাবা ওকে মিনহাজের সাথে বিয়ে দেয় নি । মেয়েকে উনারা এতদূরে বিয়ে দেবেন না বলে । একমাত্র মেয়ে বলে কথা ।
রোহান অনেক তো উপকার করেছিস ভাই আরেকটা না হয় করলি ?
বল কি করতে হবে ?
মুগ্ধতার নাম্বারটা দে দোস্ত ।
আচ্ছা , দোস্ত আরেকটা কথা মেয়েটাকে অনেক কষ্ট দিছোস । এবার থাম আর কষ্ট দিস না । ওয় সহ্য করতে পারবো না । ওয় যদি একবার ইউএসএ চইলা যায় , আমি শিওর ওয় আর দেশে ফিরবো না । ওকে আটক যেম্নে পারোস ।
হ্যাঁ আমি তাই করবো । আসি তাহলে কাল দেখা হবে , ইনশাআল্লাহ ।
হুম ।
অপরদিকে ,
আজ আমার জীবনটা এমন নিরানন্দময় হলো কেন ? এটা হওয়ার কি খুব প্রয়োজন ছিল ? রেহান আমার জীবন থেকে চলে গেলো কেন ? রেহান আমার জীবনে যতদিন ছিলো অগণিত চকোলেট খেয়েছি । রেহান আমার জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়ার পর আশ্চর্যজনক ভাবে চকোলেট আমার জীবন থেকে হারিয়ে গেছে ।
বর্তমানে ,
এই পর্যন্ত পড়ার পর , সোহানা উঠে দাঁড়ালো । ডায়েরিতে আর কিছুই লেখা নেই । এরপর ঠিক কি ঘটেছিলো ? তা জানার জন্য সোহানার মনটা আকুপাকু করছে । তা না জানতে পারলে সোহানার চলবে না। আর ঠিক তখনি মুগ্ধতা চা-নাস্তা নিয়ে রুমে প্রবেশ করল। সোহানা বলে উঠলো ,
আপু তুমি কি আর চকলেট খাওনা ?
রুমে ঢুকে হঠাৎই এমন একটা প্রশ্ন শুনে একটু অবাক হলাম । আমি হাতে থাকা ট্রেটা টেবিলে রেখে বললাম ,
খাই কিন্তু অল্প । রেহান যখন এনে দেয় তখন খাই । এছাড়া তেমন একটা খাওয়া হয় না । কেন বলতো ?
আসলে আপু আমি না একটা ভুল করে ফেলেছি । তোমার পারমিশন ছাড়াই তোমার এই ডায়েরীটা পড়ে ফেলেছি । আরএ টুকু পড়ার পর , দেখলাম ডায়েরিটা ফাঁকা আর কিছু লেখা নেই। কিন্তু কি বলতো ? আমার এখন বাকি ঘটনাটুকু না জানলে অস্থির অস্থির লাগবে । কিছুই ভালো লাগবে না । প্লিজ বলবে এরপর ঠিক কি ঘটেছিলো ?
আমরা অসময়ের সঙ্গী আমার ডায়েরিটা হাতে নিয়ে সোহানা এই কথাগুলো বলছিলো । ওর কথাগুলো শুনে আমি মৃদু প্রীতিকর হাসি হেসে বললাম ,
বাকি ঘটনা টুকু শুনতেই হবে? না শুনলে হবে না ।
সোহানা মুখটাকে বাংলার পাঁচের মতো করে ওর মাথাটা ডানে বায়ে নাড়ালো । যার অর্থ হলো হ্যাঁ শুনতেই হবে । কি আর করার ওর কাছে বসলাম এবং বলতে শুরু করলাম ।
#চলবে_কি_?
#NUSRAT_TABASSUM_METHILA
[রি চেইক হয়নি । ভুলত্রুটি মাফ করবেন । আপনাদের ও কি বাকি ঘটনা জানতে হবে ? না লিখলে হবে না ? লেখা থামিয়ে দেই কি বলেন । কারো কাছেই হয়তো আমার লেখা গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে না । তাই গল্পটাকে থামিয়ে দিতে চাইছি । আপনাদের মূল্যবান মতামত গুলো কমেন্ট বক্স এ জানাবেন । ধন্যবাদ । আপনাদের অপ্রিয় , মিথিলা ]