শেষটা সুন্দর’ পর্ব-১৮

0
202

#শেষটা_সুন্দর
#পর্ব_১৮
#নুসরাত_তাবাস্সুম_মিথিলা

কি আর করার ওর কাছে বসলাম এবং বলতে শুরু করলাম ।

রেহানের সাথে কাটানো সময়গুলোর কথা ভাবতে ভাবতেই ফোন হাতে নিলাম । তারপর রোজকার মতো রেহানের নাম্বারে কল করলাম । আজ মানুষটার ফোন বন্ধ । তার সাথে আর কি কখনোই কথা হবে না । মন খারাপ করে বারান্দায় এলাম । এর সাথে মিনি স্পিকারটা নিয়ে এলাম । অসম্ভব পছন্দের একটা গান বাজিয়ে দিলাম ।

সবই বুঝি
তবু অবুঝের মতো, তোমায় খুঁজি
নিয়ে হারানোর ক্ষত,
আজও ভাবি
কেন বেদনার মতো
হৃদয়ে আঁকি, নীল প্রজাপতি শত।

ফেরাতে পারিনি আমি
পারিনি তোমার হতে,
তুমি তো গিয়েছো চলে
দ্রুতলয়ে আলোর পথে।

সবই বুঝি
তবু অবুঝের মতো, তোমায় খুঁজি
নিয়ে হারানোর ক্ষত,
আজও ভাবি
কেন বেদনার মতো
হৃদয়ে আঁকি, নীল প্রজাপতি শত।

সেই যে ভালোবেসে
হৃদয়ের পাল তুলে,
প্রেমের বৈঠা নিয়ে
অজানায় গিয়েছো চলে।

ফেরাতে পারিনি আমি
পারিনি তোমার হতে,
তুমি তো গিয়েছো চলে
দ্রুতলয়ে আলোর পথে।

সবই বুঝি
তবু অবুঝের মতো, তোমায় খুঁজি
নিয়ে হারানোর ক্ষত,
আজও ভাবি
কেন বেদনার মতো
হৃদয়ে আঁকি, নীল প্রজাপতি শত।

এই যে আলো থেকে
আঁধারে দিয়েছো ঠেলে,
কী যে একা একা লাগে
চোখ ভিজে লোনা জলে।

ফেরাতে পারিনি আমি
পারিনি তোমার হতে,
তুমি তো গিয়েছো চলে
দ্রুতলয়ে আলোর পথে।
সবই বুঝি
তবু অবুঝের মতো, তোমায় খুঁজি
নিয়ে হারানোর ক্ষত,
আজও ভাবি
কেন বেদনার মতো
হৃদয়ে আঁকি, নীল প্রজাপতি শত।

গানটা শুনলে আমার খুব কষ্ট হয় । মনের গভীরের কথাগুলো বেরিয়ে আসে । রেহানকে তো সত্যিই ফেরাতে পারিনি আমি , পারিনি ওর হতে ।
মনের অজান্তে চোখের কোণা থেকে কয়েকফোটা নোনাজল বেরিয়ে এলো । আজকের আবহাওয়াটা না গরম না ঠাণ্ডা । মেঘমুক্ত আকাশ , দখিনা বাতাস , কপোত-কপোতীদের জন্য একদম পারফেক্ট একটা ওয়েদার । আকাশে চাঁদ রয়েছে । জোৎস্না বিলাস করার জন্য উপযুক্ত একটা সময় হলো এখন । যদিও এখন রাত ১০টা বাজে তবুও এই সময়টা মুগ্ধতার কাছে গভীর রাত বলে মনে হচ্ছে । ওর এই একাকী , বিষন্ন সময়টাতে কাধে মাথা রাখার মতো একজন সঙ্গীর বড্ড দরকার । দিনশেষে রাত এলেই মুগ্ধতা প্রচন্ড একাকিত্বে ভোগে । খুব কষ্ট হয় তখন । কখনো কি ঘটবে এর অবসান । আজ রেহান ওর জীবনে থাকলে কতো ভালোই না হতো । এসব ভাবতে ভাবতে আবার চোখের কোনা ভোরে আসলো । হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো । একটা আননোন নাম্বার থেকে কলটা এসেছে । কিন্তু কোনো অজানা এক কারণে বুকের ভেতরে তোলপাড় বয়ে চলেছে । মনে হচ্ছে হৃদপিন্ডটা এখনি ছিটকে বেরিয়ে আসবে । এমনটা তো ঠিক চার বছর আগে হয়েছিল। যখন রেহান আমার খুব কাছে এসেছিলো । তবে কি আবার রেহান আমার খুব কাছে আসতে চলেছে । কিন্তু আজ কেন এমনটা মনে হচ্ছে আমার । ও কি তবে এবার আমার জীবনে ফিরে আসতে চলেছে । কাঁপা কাঁপা হাতে ফোনটা রিসিভ করে বললাম ,

মুগ্ধতা বলছি । কে বলছেন?

আজ চার বছর পর আমার মায়াবতীর গলা শুনলাম । ভেতরে খুব কষ্ট অনুভূত হচ্ছে । সময়টা যদি এখানেই থেমে যেতো । আমার পৃথিবীটা যদি এখানেই থমকে যেত । অনেক কষ্ট করে কম্পিত গলায় বললাম ,

মুগ্ধ কেমন আছো ?

আরে এ কণ্ঠটা তো আমার খুব পরিচিত , রেহানের কণ্ঠ । আমি উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলাম ,

রেহান , এইটা কি তুমি ? প্লিজ জলদি বলো । চুপ করে থেকো না ।
হ্যাঁ , চিনতে পেরেছো ।
হুম ।
দুজনের মাঝেই পিনপতন নীরবতা । কেউ যেনো কথা বলার কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না । নীরবতা ভেঙে মুগ্ধতাই বলে উঠলো ,

রেহান আমার সাথে দেখা করবে ? তোমায় অনেক কিছু বলার আছে । আমি ___ এই কফি শপ এ আসব । রেহান বলে উঠলো ,

মুগ্ধ তুমি ঢাকায় থাকছো ?
আসলে পাসপোর্ট অফিসে কিছু কাজ ছিলো আর সামনের মাসেই তো ফ্লাইট তাই আর কি ? খালামণির বাসায় উঠেছি ।এই মাসটা এখানেই থাকব। তুমি তো ঢাকাতেই আছো রেহান তাই না?
কিন্তু তুমি কিভাবে জানলে ?
জানি না , কিন্তু মনে হলো ।
ও আচ্ছা , তাহলে কাল বিকেল ৫টাই আসবো আমি ।
ওকে ।

এটুকু বলে থামতেই আমার ফোন বেজে ওঠে । এই নাম্বারটা যে বাংলাদেশী নয় তা বেশ বুঝতে পারছি । কিন্তু এবরোড থেকে হঠাৎ কে আমায় কল করলো ? ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে কল রিসিভ করলাম । ও পাশ থেকে একটি পুরুষ কন্ঠে বলে উঠলো ,

হ্যালো , মুগ্ধতা । হ্যাপি এনিভার্সারী ।
কে বলছেন ?
চিনতে পারলে না । নাকি চিনতে চাইছো না । হা হা হা

এই বিদঘুটে হাসির শব্দটা শুনে শরীরে কাঁটা দিয়ে উঠলো । তবে কি কোনো বিপদ আসতে চলেছে আমার জীবনে । সব চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে বললাম ,

কে আপনি ? কি চাই আপনার ?
তোমাকে চাই । ইনফ্যাক্ট চেয়েছিলাম , ব্যাট আফসোস পাইনি ।

এই জঘন্য কথাটা শুনে বুঝতে বাকি রইলো না এটা কে হতে পারে ?মিনহাজ আবার কেন আমায় ফোন করেছে ? কি উদ্দেশ্য ওর ? রেহানের ক্ষতি করবে ? আমি থাকতে তা হতে দিব না । সব ভাবনা থেকে বেরিয়ে বললাম ,

ফোন করেছেন কেন ?
বাহ্ ! ৩ বছরে এত পরিবর্তন ? তুমি থেকে আপনি ? আর তোমায় কি আমি কল করতে পারি না ? তোমায় কল করতে আবার কারণ লাগে ?
এতো প্যাচগোছের কথা বলবেন না । ফোন রাখুন ।
নিজের স্বামীকে সামলে রেখো , হা হা হা ।

আবারও সেই বিদঘুটে বিশ্রী হাসি । আমি কিছু বলতে যাব তার আগেই মিনহাজ ফোনটা কেটে দিয়েছে । আমি আবার ট্রাই করলাম , ওর ফোন বন্ধ । ও কি তবে আমাদের সাজানো , সুন্দর জীবনটাকে তছনছ করতে ফিরে আসছে । আমার রেহানের দিকে চোখ তুলে তাকালে মেরে ফেলবো ওকে । জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিবো । মনে মনে এসব ভাবছিলাম তখন সোহান বলল ,

আপু , কি হয়েছে তোমার ? এমন অস্থির হয়ে উঠলে কেন ? কে ফোন করেছিলো ?
মিনহাজ ।
কি বলছোটা কি ? এত দিন পর হঠাৎ ?
জানি না , ও আমাদের ক্ষতি করতে চায় ।
কিচ্ছু হবে না । ভাইয়া আছে তো ।
আচ্ছা বলোতো মিনহাজ তোমার জীবন থেকে এতো সহজে যেতে চাইল কেন ?

আমি আবার বলতে শুরু করলাম সোহানাকে ।

#চলবে

#NUSRAT_TABASSUM_METHILA

[রি চেইক হয়নি। আজকের লিখাটি বড্ডো অগোছালো । তার জন্য দুঃখিত । ভুলত্রুটি মাফ করবেন ]

[ডিয়ার রিডার্স ,
গল্প কি একঘেমেয়ি লাগছে ? গঠনমুলক মন্তব্য পাচ্ছি না আপনাদের।এরকম রেসপন্সে তবে তাড়াতাড়িই ইতি টানতে হবে আমাকে🙂 ।আপনাদের সময় নষ্ট করার জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখীত । আপনাদের অপ্রিয় মিথিলা ।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here