শেষটা সুন্দর’ পর্ব-১৯

0
224

#শেষটা_সুন্দর
#পর্ব_১৯
#নুসরাত_তাবাস্সুম_মিথিলা

আমি আবার বলতে শুরু করলাম সোহানাকে ।

আসলে রেহানকে হস্পিটালাইজড করার সময়টাতে মিনহাজের জন্য আমি যেতে পারিনি । এই নিয়ে দু মাস ওর সাথে আমি কথা বলিনি । এরপর ও ক্ষমা চায় , আমি মন থেকে ক্ষমা না করলেও মুখে কিছু বলিনি । কারণ ওর সাথে কথা বলতে ঘেন্না হতো । অমানুষ একটা , যাকে বলে মানুষরুপি পশু একটা ।

এরপর একদিন তিতির নামের একটি মেয়ে আমাকে ওর আর মিনহাজের কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি পাঠায় । তা দেখার পরপরই আমার মাথা হ্যাং হয়ে যায় । ওই ছবিগুলো দেখে আমার নিজের চোখকে বিশ্বাস হচ্ছিলো না । একটা ছেলে কতটা জঘন্য হতে পারে । ছিঃ , এই ছেলেকে আমি কোনোদিন কিছুতেই বিয়ে করবো না । মেয়েটা আমাকে মেসেজও সেন্ট করে । যা দেখার সাহস আমার হচ্ছিলো না । মনে সাহস সঞ্চার করে মেসেজটা ওপেন করেই ফেললাম । সেখানে লেখা ছিলো –

আপু ওর নেক্সট টার্গেট কিন্তু আপনি । ও এইভাবে অনেক মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার শরীর উপভোগ করে তারপর তাকে ছুড়ে ফেলে দেয় । ভালোবাসার নাম করে প্রতারণা করে , তারপর কেউ মুখ খুললে তাকে মেরে ফেলতেও দ্বিধা করে না । আর তার মা বাবাকেও কিচ্ছু জানতে দেয় না । যদিও উনারা উনাদের ছেলে সম্পর্কে অবহিত তবুও তারা নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করে । আমি উনাদেরকে সবটা বলেছিলাম কিন্তু তারা উল্টো আমাকেই জীবননাশের হুমকি দেয় । আপু ওই জানোয়ার আর তার পরিবারের জন্য আজ একই সাথে আমার ও আমার বোন তিশার জীবন ধ্বংসের পথে । আপু আপনি ওর কাছ থেকে সাবধানে থাকবেন । আর ওর মুখোশ সকলের সামনে উন্মোচন করবেন দয়া করে । আমি আপনার শুভাকাঙ্খি তিতির ।

সবটুকু পড়ার পর , আমার পুরো শরীর ঘিন ঘিন করে উঠলো । ছিহ এরকম একটা জানোয়ার লাইক মানুষরুপি পশুর সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়ে রয়েছে ? আমি মিনহাজকে ফোন লাগালাম । দুবার রিং হতেই রিসিভ হলো । আমি বললাম –

মিনহাজ , তিতির আর তিশা কে ?

ও ভনিতা করতে লাগলো যাকে বলে কথা ঘুরাবার প্রচেষ্টা । তারপর আমি ওকে সেই ছবিগুলো সেন্ট করলাম । আমি বললাম –

এই তু্ই কথা একদম ঘুরবি না । ওকে আর ওর বোনকে রেপ করে এখন আর চিনতে পারিস না তাই না ? কি ভেবেছিলি কেউ কোনদিন জানতে পারবে না তোর এই কুকর্মের কথা ?

মিনহাজ হাসতে শুরু করলো আর বলল –

ও কাম অন বেবি এগুলা এখনকার ট্রেন্ড । এসব একটু আকটু সবাই করে । তাতে কি ?

আমি বললাম-

তুই একটা জানোয়ার ।

এরপর মিনহাজ ধমকে বলে উঠলো –

খবরদার জানোয়ার বলেছিস তো , কি করবি তুই আমার , যা পারিস করে দেখা । তোর মত মেয়ে আমার কিচ্ছু করতে পারবে না । আর এগুলারে তো আমি রোজ কিনি । কিচ্ছু করতে পারবি না তুই আমার ।
আমি বললাম-
দেখে এখন থেকে আমি কি করি ।

তারপর থেকে আমি মিনহাজের বিরুদ্ধে এভিডেন্স কালেক্ট করতে থাকি এবং সাক্ষী জোগাড় করতে করতে থাকি এবং সম্পূর্ণ ঘটনা প্রথমে আমার ফ্যামিলির সামনে এন্ড দেন ভার্সিটির ভিসি ও পুলিশকে সবটা উপস্থাপন করি । ভিসি উপযুক্ত প্রমাণের ভিত্তিতে মিহাজকে রাস্টিগেট করেন আর ওর ছাত্রত্ব বাতিল করা হয় । পুলিশ ওর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার আগেই ও নিজের মুখ বাঁচাতে দেশ ত্যাগ করে বলা যায় একপ্রকার বাধ্য হয়েই । এই কাজ গুলো করাটা আমার পক্ষে খুব ঝুঁকিপূর্ণ ছিল । পদে পদে বিপদ ফেস করেছি । যাবার আগে আমাকে বলে যায় ও একপ্রকার হুমকিস্বরুপ –

তোমার জীবন ছারখার করে দিবো । দেখে নিও । এটা মিনহাজের চ্যালেঞ্জ টু মুগ্ধতা ।
তখন আমার জীবনের সাথে রেহান জড়িয়ে ছিল না , আর এত কিছু নিয়ে চিন্তাই আসেনি । বলেছিলাম –

যা পারিস করে নিস্ ।

আমার পরিবার যদিও মিনহাজের হুমকি নিয়ে অনেক সংকিত ছিলেন । কিন্তু সময়ের সাথে আস্তে আস্তে সবাই সবটা ভুলে যেতে থাকে । এর বেশ কিছুদিন পর থেকে আমার মাঝে মাঝেই মনে হতো কেউ আমায় ফলো করে । তবে সেইসময়টাতে একে নিছকই মনের ভুল ভেবে উড়িয়ে দিলেও আজ বুঝতে পারছি এই সবার পিছনে মিনহাজই কোনো না কোনো ভাবে জড়িত । ওর নির্দেশ মোতাবেক এই গুলো হয়েছে । আমি থামতেই সোহানা বলল-

আপু শান্ত হও । আর তোমরা সতর্ক থাক । আল্লাহর রহমতে কোনো বিপদ তোমাদের ছুতে পারবে না । ইশ আমার এই ভুল প্রশ্নের জন্য আড্ডার মহলই পাল্টে গেছে । এখন মাথা থেকে ওই ফালতু চিন্তা ঝেড়ে ফেলো আর কিছুক্ষন এর মাঝেই রেহান ভাইয়া আর উনি চলে আসবেন । সোহানার কথা শুনে স্বাভাবিক হয়ে ওকে বললাম ,

ও বাবা ! এখনি উনি ।
যায় কি যে বলো না তুমি আপু ।
লজ্জা পেয়েছ বুঝি ।
আপু বাদ দাও তো , এরপরের ঘটনাগুলো বলো , কি হয়েছিলো ?
ও এখন প্রসঙ্গ পাল্টানো হচ্ছে তাই না । আচ্ছা যাও বলছি ।

#চলবে

#NUSRAT_TABASSUM_METHILA

[রি চেইক হয়নি। আজকের লিখাটি বড্ডো অগোছালো । তার জন্য দুঃখিত । ভুলত্রুটি মাফ করবেন ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here