বিকেল পাঁচটা বাজে। তেজী সূর্যের তৎপরতা কিছুটা কমেছে। সাথে রয়েছে এক কাপ চা আর আমার অসময়ের সঙ্গী আমার প্রিয় ডাইরিটা। হঠাৎ কলিংবেলটা বেজে উঠলো, ডাইরিটা টেবিলের উপর রেখে দরজা খুলতে গেলাম।দরজাটা খুলতেই দেখি রোহান ভাইয়া আর সোহানা এসেছে।
” আরে মুগ্ধতা আপু, দেখি সরে দাঁড়াও মানে ঢুকতে দেবেনা। ”
” আমি কখন বললাম তোমাকে যেতে দেব না। ”
” সোহানা ভিতরে গিয়ে বস, আমি রেহানকে নিয়ে আসছি। ”
” সে কি ভাইয়া বসবেন না। ”
” কখন বললাম বসবো না, আমি রেহানকে নিয়ে আসি তারপর সকলে একসাথে বসে তোমার হাতে চা খাব আর জমিয়ে আড্ডা দেবে মাইন্ড করবেনা তো। ”
” আরে না, কি যে বলো না ভাইয়া আমি আবার কী মনে করবো? ঠিক আছে তাড়াতাড়ি এসো। ”
” বাহ মুগ্ধতা আপুকে পেয়ে রোহান ভাই দেখি আমার কথা ভুলেই গেছে। বাই দ্যা ওয়ে আপুর সাথে কিন্তু আজকে অনেক গল্প আছে। চলো চলো।”
” হুম সোহানা চলো ”
” তুমি আমার রুমে যেয়ে অপেক্ষা করো আমি চা নিয়ে আসছি। ”
” আচ্ছা আপু। ”
দোতলার প্রথম রুমটাই মুগ্ধতা আপু আর রেহান ভাই এর; রুমটা খুব ছিমছাম। কিন্তু বেশ গোছালো দেখেই বুঝা যায় , রুমে বসবাসকারী খুব সৌখিন।হঠাৎ টেবিলে থাকা খোলা ডাইরি আর খালি চায়ের কাপটা। আমার খুব লোভ হলো ডায়েরিটা খুলে দেখতে। ডায়েরীটা ছিল মুগ্ধতা আপুর।
চা বানাতে বানাতে ভাবছি দেখতে দেখতে পাঁচটা বছর চোখের পলকে চলে গেল। জীবনে কোন দিন ভাবিও নি যে আমার জীবনটা হঠাৎই রেহানের সাথে জড়িয়ে যাবে। অনেক কথা বলে ফেলেছি এবার আমার পরিচয়টা দেওয়ার পালা আমি মুগ্ধতা কবির আর আমার আধার জীবনের আলো হলো রেহান চৌধুরী। আমার ভালোবাসার মানুষ, আমার পৃথিবী, আমার প্রিয় হাজবেন্ড।আজ আমাদের প্রথম বিবাহ বার্ষিকী। একটু আগে যারা এলো তাদের পরিচয়টা দিয়ে দিচ্ছি সোহানা চৌধুরী; রেহান চৌধুরীর এক মাত্র ছোট বোন আর রোহান আহমদ রেহানের বেস্টফ্রেন্ড। কিছুদিন আগেই সোহানা আর রোহান ভাইয়ার এংগেজমেন্ট হয়েছে।আজকের দিনটা আমাদের সাথে কাটাতে ওরা চলে এসেছে. এই দেখো কথা বলতে বলতে অনেকটা সময় কেটে গেছে বাকি পরিচয় আস্তে আস্তে জানতে পারবেন।
ফ্ল্যাশব্যাক পাঁচ বছর আগের কথা:
” হ্যালো মা,ভালো আছো? ”
………………………….
” হ্যাঁ আমি ভালো আছি। ”
………………………………
” তোমাকে কতদিন বলব যে আমার মেডিকেলে পড়তে ইচ্ছা করে না ওই সব কাটাকাটির কাজ আমার জন্য নয় আর মেডিকেলে চান্স পেতে গেলে প্রচুর পড়তে হয়,পরিশ্রম করতে হয়। আমার দ্বারা এসব সম্ভব নয়। আমিতো ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পেরে খুব খুশি। আচ্ছা আম্মু তোমার ডাক্তার এত পছন্দ কেন?”
…………………………….
” না বললাম তো আমি ইঞ্জিনিয়ারিং কমপ্লিট করব।না আমি মেডিকেলে পরীক্ষা দেবো না, আমি ট্রাইও করবো না। ধুর রাখোতো মেজাজটাই খারাপ করে দিলে। সোহানা কই? থাক বলতে হবেনা। ”
” কিরে দোস্ত তোরা কি করস? ”
” আরে রেহান মামা যে, আসো আসো। এতক্ষণ তোমার কথাই হচ্ছিল। কি ব্যাপার মুড অফ নাকি?”
” জানিসই তো আম্মু সবসময় প্যারা দেয়। খালি কয় মেডিকেলে পর, আমার ভালো লাগেনা। ”
” চিল ব্রো এসব প্যারা থাকবোই এখননি তো সময়। ”
” হ রোহান ঠিক কইছস। ”
আড্ডা চলতেছিল হঠাৎ দেখলাম..
( #চলবে )
#শেষটা_সুন্দর
#সূচনা_পর্ব
#নুসরাত_তাবাস্সুম_মিথিলা
[এটা আমার লেখা প্রথম গল্প হতে চলেছে আপনাদের ভালোবাসা এবং শুভকামনা পেলে গল্পটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই]
হ্যাপি রিডিং