সংসর্গ (পর্ব ৩) ফ্যান্টাসি_গল্প তুষার_আব্দুল্লাহ_রিজভী

সংসর্গ (পর্ব ৩)
ফ্যান্টাসি_গল্প
তুষার_আব্দুল্লাহ_রিজভী

অরণ্যের পশুপাখিগুলো সব এক দিকে ছুটছে। চিৎকারের শব্দ যেদিক থেকে এসেছে ঠিক সেদিকেই। শুভ্র সময় নষ্ট করল না। সেও যেতে লাগল ওদিকে। পেছনে আসছে নারিস।

কিছুসময় যাওয়ার পর মরুভূমির কাছে চলে এলো তারা। সামনে দেখল সব পশুপাখিগুলে ভিড় জমিয়েছে। শুভ্র খেয়াল করল ওখানেই একটা মেয়ে পড়ে আছে৷ কিন্তু একি! শুভ্র এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল ওদিকে। মনে হচ্ছে– এ তো সেই মেয়ে, যাকে প্রায় স্বপ্নে দেখে সে। সেই একই জামা শরীরে। শুভ্র দৌড়ে কাছে গিয়ে বসে পড়ল মেয়েটার পাশে। মেয়েটার আশে-পাশে রক্ত ছড়িয়ে আছে। শুভ্রের চোখ পড়ল মেয়েটার পেটের উপর। কেটে গেছে ওখানে। অনেকক্ষাণি কাটা। সেখান থেকেই রক্ত বেরিয়েছে অনেক। মেয়েটার দিকে চোখ বুলিয়ে নিল একবার। সমস্ত চেহারায় বালি লেগে আছে৷ শুভ্র হাত দিয়ে মুখের বালি সরিয়ে দিলো। কী অপরুপ সৌন্দর্যের অধিকারী এই মেয়ে! রুপের দিকে তাকালে যেন হারিয়ে যাবে কেউ এই রুপের গহীনে। শুভ্র দৃষ্টি সরিয়ে নিল এই ভেবে– এখন এসবে মন দেয়ার সময় নয়৷ মেয়েটার শরীর থেকে প্রচুর রক্ত বেরিয়ে গেছে। কিছু একটা করতে হবে তাকে। গ্রামে নিয়ে যেতে হবে।

শুভ্র প্রথমে কান পাতল মেয়েটার বুকের বাম পাশে। হৃৎপিণ্ড লাফাচ্ছে। হ্যাঁ, মেয়েটা জীবিত৷ শুভ্র আশেপাশে কিছু খোঁজার চেষ্টা করল। কোনো উপায় না দেখে নিজের শরীরের পাতলা ফতুয়া জাতীয় জামাটা খুলে ফেলল। এরপর ওটা ছিড়ে পেটের আঘাত প্রাপ্ত অংশকে ঘিরে বেঁধে দিলো। এরপর মেয়েটাকে উঠিয়ে কাঁধে তুলে নিয়ে গ্রামের উদ্দেশ্যে রিতীমত দৌঁড়াতে শুরু করল।

পশুপাখিগুলো পেছন পেছন যেতে লাগল শুভ্রের। নারিস তো সাথে আছেই। শুভ্র মেয়েটাকে নিয়ে অরণ্য থেকে বেরিয়ে যাওয়া মাত্র পশুপাখি গুলে থমকে দাঁড়াল। দাঁড়িয়ে তাদের যাওয়া দেখতে লাগল। যেন পশুপাখিগুলোর সীমানা এই পর্যন্তই।

শুভ্র সরাসরি চলে এলো তার নিজ বাড়িতে। সেখানে তার মা উপস্থিত আছেন৷ শুভ্র ঘরে ঢুকে সরাসরি বিছানায় শুইয়ে দিলো মেয়েটাকে। নারিস এদিকে চলে গেছে বৈদ্য ডাকতে।

শুভ্রের মা মেয়েটার কাছে এসে একবার দেখে নিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “এই পরীর মতো কোমল মেয়েটার কী হয়েছে? জামায় তো অনেক রক্ত লেগে আছে।”

শুভ্র হাঁপিয়ে গেছে মেয়েটাকে আনতে আনতে৷ অস্থিরতা বিরাজ করেছে তার ভিতরে। সেই অবস্থায় বলল, “জানি না ঠিক কি হয়েছে৷ আমি অরণ্যে ছিলাম নারিসের সাথে৷ হঠাৎ একটা চিৎকার ভেসে আসল। আমরাও সেদিকে ছুটে গিয়ে দেখি মেয়েটা পড়ে আছে। তারপর সময় নষ্ট না করে নিয়ে এলাম এখানে। পেটে ধারাল কিছুর আঘাত লেগেছে মেয়েটার, অনেক রক্ত ক্ষরণ হয়েছে সেখান থেকে।”

বুড়ো এক বৈদ্য এসে উপস্থিত হলো ততক্ষণে। এসেই মেয়েটার কাছে গিয়ে পেটের বাঁধন খুলে দিলো৷ সঙ্গে আনা ছোটো একটা থলে থেকে বিভিন্ন ঔষুধি দ্রব্য বের করে নিয়ে চিকিৎসা শুরু করল। এর মাঝে একবার গরম পানি চেয়েছে শুভ্রের মার কাছে। শুভ্রের মা-ও দ্রুত সম্ভব গরম পানি নিয়ে এলে চিকিৎসা শুরু করল বুড়ো বৈদ্য।

কিছুক্ষণ পর বৈদ্য উঠে দাঁড়িয়ে বলল, “দেখ শুভ্র সব চিকিৎসা করে দিয়েছি৷ কাটা জায়গায় পরিষ্কার করে সেখানে পট্টি লাগিয়ে দিয়েছি। জ্ঞান ফিরে আসবে কিছু সময় পর। সব একদম ঠিকঠাক আছে৷ ওর যত্ম নিলে আশা করি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। কিন্তু এই মেয়ে তো আমাদের গ্রামের বলে মনে হচ্ছে না। কোথায় পেলে তাকে। যতদূর…”

শুভ্র থামিয়ে দিয়ে বলল, “দেখুন বৈদ্য, এসব আলেচনা পড়ে করবনি। মেয়েটাকে আগে বাঁচানো দরকার। তারপরই মেয়েটার মুখ থেকে সব শোনা যাবে।”

বৈদ্য কথায় সায় দিয়ে বলল, “যাই হোক আমার পক্ষ থেকে যা করতে হয় করব। বাকীটা দেখ কী হয়? সবি দেবী কথনকুপের লীলা।” একটা বড়ো শ্বাস ফেলল সে৷ তারপর শুভ্রের মায়ের উদ্দেশ্যে বলল, “মেয়েটাকে গরম পানিতে একটা কাপড় ভিজিয়ে শরীর মুছে তোমার একটা ভালো জামা পরিয়ে দাও। জ্ঞান আসলে আমাকে খবর দিও। আর নারিস জিনিসগুলো আমাকে নিয়ে দে।”

নারিস এতক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে সব অবলোকন করছিল। বৈদ্য ইশারার কথা বুঝতে পেরে সব জিনিস থলেতে ভরে নিয়ে বৈদ্যর সাথে বেরিয়ে গেল সেখান থেকে। শুভ্র-ও একবার মেয়েটার দিকে চোখ বুলিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।

ঘর থেকে বের হতে না হতেই শুভ্রের সামনে পড়ল শুভ্রের বাবা। উঁচু গলায় শুভ্রকে জিজ্ঞেস করলেন, “কিরে তুই নাকি কোনো মেয়েকে এখানে কাঁধে করে নিয়ে এসেছিস অরণ্যের ভেতর থেকে? গ্রামবাসীরা কী বলছে এসব?”

শুভ্র এক কথায় জবাব দিলো, “হ্যাঁ বাবা।”

“মেয়েটা নাকি এইখানকার না।”

“হ্যাঁ। সেটা মেয়েটার রুপেই বলে দেয়।”

“তাহলে মেয়েটাকে পেলি কোথায় আর কই আছে সে এখন?”

“অরণ্যের পেরিয়ে মরুভূমির ওখানে। ঘরেই আছে আমাদের মেয়েটা। মা গরম পানি দিয়ে শরীর মুছতেছে, তারপর জামা পরিবর্তন করাবে।”

এবার শুভ্রের বাবা রাগান্বিত হয়ে বললেন, “তোকে কতবার বলেছি ওখানে যাবি না। অরণ্যে যাওয়াও বন্ধ করে দেবো আজ থেকে। দেবী যদি অসন্তুষ্ট হয় তাহলে কী হবে জানিস? ধ্বংস! আমাদের ধ্বংস হবে। ওদিকে যাওয়া নিষেধ করেছি কতবার তোকে?”

বাধ্য ছেলের মতো জবাব দিতে লাগল শুভ্র, “আমি অরণ্যেই ছিলাম। কিন্তু চিৎকারের শব্দ পেয়ে ওদিকটাই গিয়েছিলাম দেখার জন্য।”

“হয়েছে। আজ ফসলের জমিতে যাসনি কেন? একা কত খেটে খাওয়াব তোদের। তুই হাত না চালালে চলবে?”

শুভ্র কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনি গ্রামের এক ছোট্ট ছেলে এসে জানাই গ্রামের উত্তর পাশে এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। শুভ্র ভাবনায় পড়ে গেল। একটা প্রশ্ন জেগে উঠল তার মনে– এটা কী তাদের গ্রামের সমতা হলো? নতুন একজন আসায় আরেকজনের মৃত্যু। এ কেমন সমতা। আগে জানতো গ্রামে একজন জন্মালে একজনের মৃত্যু হয়। কিন্তু কোথা থেকে এক মেয়ে আসল আর তাতেই একজনের মৃত্যু হয়ে ৬৬৬ মিল হয়ে রইল।

হঠাৎ ঘরের ভেতর থেকে ডাক পড়ল শুভ্রের মা’র– এই শুভ্র, শুভ্র কইরে, ভিতরে আয়।”

ডাক শুনে সরাসরি ভিতের চলে গেল শুভ্র ও তার বাবা। শুভ্র এগিয়ে গেল মেয়েটার দিকে। মেয়েটার চোখ খোলা দেখে অবাক হলো কিছুটা। হ্যাঁ, মেয়েটার জ্ঞান ফিরেছে৷

কিন্তু মেয়েটা শুভ্রকে দেখে কাঁপতে শুরু করল। তার শরীর কাঁপতে লাগল। এই কম্পন যেন থামবার নয়, মেয়েটা কাঁপা শরীরে ডান হাতের তর্জনী আঙ্গুল উপরে উঠিয়ে শুভ্রের দিকে ইঙ্গিত করে উচ্চারণ করল, “মাসেহ!”

তারপর আবার জ্ঞান হারাল মেয়েটা। শুভ্র ভাবনায় পড়ে গেল, মেয়েটা ওকে দেখে এমন হয়ে গেল কেন? এটা কী কোনো ইঙ্গিত? ওদিকে শুভ্রের বাবা বৈদ্য ডাকতে বেরিয়ে গেছে।

চলবে…..

(ভুলত্রুটি মার্জনীয়। পড়ে কেমন লাগল অবশ্যই জানাবেন।)
অরণ্যের পশুপাখিগুলো সব এক দিকে ছুটছে। চিৎকারের শব্দ যেদিক থেকে এসেছে ঠিক সেদিকেই। শুভ্র সময় নষ্ট করল না। সেও যেতে লাগল ওদিকে। পেছনে আসছে নারিস।

কিছুসময় যাওয়ার পর মরুভূমির কাছে চলে এলো তারা। সামনে দেখল সব পশুপাখিগুলে ভিড় জমিয়েছে। শুভ্র খেয়াল করল ওখানেই একটা মেয়ে পড়ে আছে৷ কিন্তু একি! শুভ্র এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল ওদিকে। মনে হচ্ছে– এ তো সেই মেয়ে, যাকে প্রায় স্বপ্নে দেখে সে। সেই একই জামা শরীরে। শুভ্র দৌড়ে কাছে গিয়ে বসে পড়ল মেয়েটার পাশে। মেয়েটার আশে-পাশে রক্ত ছড়িয়ে আছে। শুভ্রের চোখ পড়ল মেয়েটার পেটের উপর। কেটে গেছে ওখানে। অনেকক্ষাণি কাটা। সেখান থেকেই রক্ত বেরিয়েছে অনেক। মেয়েটার দিকে চোখ বুলিয়ে নিল একবার। সমস্ত চেহারায় বালি লেগে আছে৷ শুভ্র হাত দিয়ে মুখের বালি সরিয়ে দিলো। কী অপরুপ সৌন্দর্যের অধিকারী এই মেয়ে! রুপের দিকে তাকালে যেন হারিয়ে যাবে কেউ এই রুপের গহীনে। শুভ্র দৃষ্টি সরিয়ে নিল এই ভেবে– এখন এসবে মন দেয়ার সময় নয়৷ মেয়েটার শরীর থেকে প্রচুর রক্ত বেরিয়ে গেছে। কিছু একটা করতে হবে তাকে। গ্রামে নিয়ে যেতে হবে।

শুভ্র প্রথমে কান পাতল মেয়েটার বুকের বাম পাশে। হৃৎপিণ্ড লাফাচ্ছে। হ্যাঁ, মেয়েটা জীবিত৷ শুভ্র আশেপাশে কিছু খোঁজার চেষ্টা করল। কোনো উপায় না দেখে নিজের শরীরের পাতলা ফতুয়া জাতীয় জামাটা খুলে ফেলল। এরপর ওটা ছিড়ে পেটের আঘাত প্রাপ্ত অংশকে ঘিরে বেঁধে দিলো। এরপর মেয়েটাকে উঠিয়ে কাঁধে তুলে নিয়ে গ্রামের উদ্দেশ্যে রিতীমত দৌঁড়াতে শুরু করল।

পশুপাখিগুলো পেছন পেছন যেতে লাগল শুভ্রের। নারিস তো সাথে আছেই। শুভ্র মেয়েটাকে নিয়ে অরণ্য থেকে বেরিয়ে যাওয়া মাত্র পশুপাখি গুলে থমকে দাঁড়াল। দাঁড়িয়ে তাদের যাওয়া দেখতে লাগল। যেন পশুপাখিগুলোর সীমানা এই পর্যন্তই।

শুভ্র সরাসরি চলে এলো তার নিজ বাড়িতে। সেখানে তার মা উপস্থিত আছেন৷ শুভ্র ঘরে ঢুকে সরাসরি বিছানায় শুইয়ে দিলো মেয়েটাকে। নারিস এদিকে চলে গেছে বৈদ্য ডাকতে।

শুভ্রের মা মেয়েটার কাছে এসে একবার দেখে নিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “এই পরীর মতো কোমল মেয়েটার কী হয়েছে? জামায় তো অনেক রক্ত লেগে আছে।”

শুভ্র হাঁপিয়ে গেছে মেয়েটাকে আনতে আনতে৷ অস্থিরতা বিরাজ করেছে তার ভিতরে। সেই অবস্থায় বলল, “জানি না ঠিক কি হয়েছে৷ আমি অরণ্যে ছিলাম নারিসের সাথে৷ হঠাৎ একটা চিৎকার ভেসে আসল। আমরাও সেদিকে ছুটে গিয়ে দেখি মেয়েটা পড়ে আছে। তারপর সময় নষ্ট না করে নিয়ে এলাম এখানে। পেটে ধারাল কিছুর আঘাত লেগেছে মেয়েটার, অনেক রক্ত ক্ষরণ হয়েছে সেখান থেকে।”

বুড়ো এক বৈদ্য এসে উপস্থিত হলো ততক্ষণে। এসেই মেয়েটার কাছে গিয়ে পেটের বাঁধন খুলে দিলো৷ সঙ্গে আনা ছোটো একটা থলে থেকে বিভিন্ন ঔষুধি দ্রব্য বের করে নিয়ে চিকিৎসা শুরু করল। এর মাঝে একবার গরম পানি চেয়েছে শুভ্রের মার কাছে। শুভ্রের মা-ও দ্রুত সম্ভব গরম পানি নিয়ে এলে চিকিৎসা শুরু করল বুড়ো বৈদ্য।

কিছুক্ষণ পর বৈদ্য উঠে দাঁড়িয়ে বলল, “দেখ শুভ্র সব চিকিৎসা করে দিয়েছি৷ কাটা জায়গায় পরিষ্কার করে সেখানে পট্টি লাগিয়ে দিয়েছি। জ্ঞান ফিরে আসবে কিছু সময় পর। সব একদম ঠিকঠাক আছে৷ ওর যত্ম নিলে আশা করি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। কিন্তু এই মেয়ে তো আমাদের গ্রামের বলে মনে হচ্ছে না। কোথায় পেলে তাকে। যতদূর…”

শুভ্র থামিয়ে দিয়ে বলল, “দেখুন বৈদ্য, এসব আলেচনা পড়ে করবনি। মেয়েটাকে আগে বাঁচানো দরকার। তারপরই মেয়েটার মুখ থেকে সব শোনা যাবে।”

বৈদ্য কথায় সায় দিয়ে বলল, “যাই হোক আমার পক্ষ থেকে যা করতে হয় করব। বাকীটা দেখ কী হয়? সবি দেবী কথনকুপের লীলা।” একটা বড়ো শ্বাস ফেলল সে৷ তারপর শুভ্রের মায়ের উদ্দেশ্যে বলল, “মেয়েটাকে গরম পানিতে একটা কাপড় ভিজিয়ে শরীর মুছে তোমার একটা ভালো জামা পরিয়ে দাও। জ্ঞান আসলে আমাকে খবর দিও। আর নারিস জিনিসগুলো আমাকে নিয়ে দে।”

নারিস এতক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে সব অবলোকন করছিল। বৈদ্য ইশারার কথা বুঝতে পেরে সব জিনিস থলেতে ভরে নিয়ে বৈদ্যর সাথে বেরিয়ে গেল সেখান থেকে। শুভ্র-ও একবার মেয়েটার দিকে চোখ বুলিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।

ঘর থেকে বের হতে না হতেই শুভ্রের সামনে পড়ল শুভ্রের বাবা। উঁচু গলায় শুভ্রকে জিজ্ঞেস করলেন, “কিরে তুই নাকি কোনো মেয়েকে এখানে কাঁধে করে নিয়ে এসেছিস অরণ্যের ভেতর থেকে? গ্রামবাসীরা কী বলছে এসব?”

শুভ্র এক কথায় জবাব দিলো, “হ্যাঁ বাবা।”

“মেয়েটা নাকি এইখানকার না।”

“হ্যাঁ। সেটা মেয়েটার রুপেই বলে দেয়।”

“তাহলে মেয়েটাকে পেলি কোথায় আর কই আছে সে এখন?”

“অরণ্যের পেরিয়ে মরুভূমির ওখানে। ঘরেই আছে আমাদের মেয়েটা। মা গরম পানি দিয়ে শরীর মুছতেছে, তারপর জামা পরিবর্তন করাবে।”

এবার শুভ্রের বাবা রাগান্বিত হয়ে বললেন, “তোকে কতবার বলেছি ওখানে যাবি না। অরণ্যে যাওয়াও বন্ধ করে দেবো আজ থেকে। দেবী যদি অসন্তুষ্ট হয় তাহলে কী হবে জানিস? ধ্বংস! আমাদের ধ্বংস হবে। ওদিকে যাওয়া নিষেধ করেছি কতবার তোকে?”

বাধ্য ছেলের মতো জবাব দিতে লাগল শুভ্র, “আমি অরণ্যেই ছিলাম। কিন্তু চিৎকারের শব্দ পেয়ে ওদিকটাই গিয়েছিলাম দেখার জন্য।”

“হয়েছে। আজ ফসলের জমিতে যাসনি কেন? একা কত খেটে খাওয়াব তোদের। তুই হাত না চালালে চলবে?”

শুভ্র কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনি গ্রামের এক ছোট্ট ছেলে এসে জানাই গ্রামের উত্তর পাশে এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। শুভ্র ভাবনায় পড়ে গেল। একটা প্রশ্ন জেগে উঠল তার মনে– এটা কী তাদের গ্রামের সমতা হলো? নতুন একজন আসায় আরেকজনের মৃত্যু। এ কেমন সমতা। আগে জানতো গ্রামে একজন জন্মালে একজনের মৃত্যু হয়। কিন্তু কোথা থেকে এক মেয়ে আসল আর তাতেই একজনের মৃত্যু হয়ে ৬৬৬ মিল হয়ে রইল।

হঠাৎ ঘরের ভেতর থেকে ডাক পড়ল শুভ্রের মা’র– এই শুভ্র, শুভ্র কইরে, ভিতরে আয়।”

ডাক শুনে সরাসরি ভিতের চলে গেল শুভ্র ও তার বাবা। শুভ্র এগিয়ে গেল মেয়েটার দিকে। মেয়েটার চোখ খোলা দেখে অবাক হলো কিছুটা। হ্যাঁ, মেয়েটার জ্ঞান ফিরেছে৷

কিন্তু মেয়েটা শুভ্রকে দেখে কাঁপতে শুরু করল। তার শরীর কাঁপতে লাগল। এই কম্পন যেন থামবার নয়, মেয়েটা কাঁপা শরীরে ডান হাতের তর্জনী আঙ্গুল উপরে উঠিয়ে শুভ্রের দিকে ইঙ্গিত করে উচ্চারণ করল, “মাসেহ!”

তারপর আবার জ্ঞান হারাল মেয়েটা। শুভ্র ভাবনায় পড়ে গেল, মেয়েটা ওকে দেখে এমন হয়ে গেল কেন? এটা কী কোনো ইঙ্গিত? ওদিকে শুভ্রের বাবা বৈদ্য ডাকতে বেরিয়ে গেছে।

চলবে…..

(ভুলত্রুটি মার্জনীয়। পড়ে কেমন লাগল অবশ্যই জানাবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here