#সুপ্ত_প্রেমাসুখ
#ইলোরা_জাহান_ঊর্মি
#পর্বঃ২৬
ব্রেক টাইমে লাইব্রেরিতে গিয়ে বসল ইলোরা, অরিশা, ডালিয়া আর নাদিয়া। টুম্পা আজ আসেনি। ফোন করে বলেছে বাড়িতে কী যেন জরুরি কাজ আছে। তাহসিন আর অন্তর ক্যাম্পাসে আছে। লাইব্রেরিতে তেমন কাউকে চোখে পড়ছে না এই মুহূর্তে। একটা টেবিল দখল করে বসে একেকজন একেক বই নিয়ে নাড়াচাড়া করছে। কিছুক্ষণ পর ইলোরার চোখ চলে গেল পাশের টেবিলে। এরেন বসে আছে। হাতে একটা বই থাকলেও দৃষ্টি ইলোরার দিকে। ইলোরা কিছুটা নড়েচড়ে বসল। এরেন যে তাকে অনুসরণ করে এখানে এসে বসেছে, তা তার কাছে স্পষ্ট। এরেনের চাহনির সামনে ইলোরা বইয়ে মনোযোগ বসাতে পারল না। বেশ কিছুক্ষণ পর একটা মেয়ে এসে দাঁড়াল এরেনের সামনে। মেয়েটা দেখতে যেমনি সুন্দরী, তেমনি মিষ্টি। ইলোরা ভ্রু কুঁচকে মেয়েটার দিকে তাকাল। মেয়েটাকে দেখামাত্র এরেনের চোখে-মুখে একরাশ খুশি খেলে গেল। এরেনের মুখোভাব লক্ষ্য করে ইলোরা আগ্রহী দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। সে মনোযোগ দিয়ে এরেন আর মেয়েটার কথোপকথন শোনার চেষ্টা করতে লাগল। এরেন গদগদ কন্ঠে বলল,“বুশরা, কত্তদিন পর দেখা! কী খবর তোমার?”
বুশরা মিষ্টি হেসে বলল,“এই তো ভালো। তোমার?”
“ভালো। হঠাৎ ভার্সিটিতে এলে যে?”
“হ্যাঁ, দরকারি একটা কাজে এসেছি। তোমার ফ্রেন্ডসদের দেখে ওদের কাছে তোমার কথা জিজ্ঞেস করে জানলাম তুমি লাইব্রেরিতে আছো, তাই চলে এলাম। তো, আন্টি আঙ্কেল কেমন আছেন?”
“আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো।”
“জারিন? ওর কী খবর?”
“সে তো দিব্যি আছে। তো, বিয়ে করছো কবে তুমি?”
বুশরা হাসিমুখেই উত্তর দিলো,“এটা আবার জিজ্ঞেস করা লাগে না কি? তুমি যেদিন বলবে সেদিনই করব।”
এরেন দাঁত কেলিয়ে হেসে বলল,“বাহ্! কনে যখন রাজি আছে, তাহলে আর দেরি করে কী লাভ? চলো এ বছরই বিয়ে করে ফেলি। আজই গিয়ে আম্মীকে বলব, তোমার পুত্রবধূ আনার ব্যবস্থা করো তাড়াতাড়ি।”
বুশরা মুখ বাঁকিয়ে বলল,“ওকে, দেখা যাক তোমার সাহস কতদূর।”
ইলোরা অবাক হয়ে দুজনের কথা শুনছিল। কিন্তু বিয়ের কথা শুনে হঠাৎ করেই যেন তার মাথায় বজ্রপাত পড়ল। নিমিষেই মুখটা কালো হয়ে গেল। এরেন আর ঐ মেয়েটার কথা শুনে তো মনে হচ্ছে দুজনেই বেশ সিরিয়াস মুডে আছে। তাহলে কি ওদের দুজনের মাঝে কোনো সম্পর্ক আছে? কী সম্পর্ক সেটা? ভালোবাসার? এরেন এই মেয়েটাকে ভালোবাসে বলে বিয়ে করতে চায়? কিন্তু সে তো বিবাহিত। এই মেয়েটার জন্যই কি এরেন এক্সিডেন্টলি বিয়েটা মানতে পারেনি? এই মেয়েকে বিয়ে করলে তো এরেন তাকে ছেড়ে দিবে। তাদের সম্পর্কটা সত্যি সত্যিই ভেঙে যাবে তাহলে? ইলোরার মাথাটা ভনভন করে উঠল। চোখ দুটো হঠাৎ করেই জ্বালাপোড়া করতে লাগল। ঝাপসা চোখে সে এরেনের দিকে তাকাল। এরেন ঐ মেয়েটার সাথে হাসিমুখে কথা বলছে তো বলছেই। ইলোরা চোখ বন্ধ করে নিজেকে দমিয়ে হঠাৎ উঠে দাঁড়াল। তাকে উঠতে দেখে অরিশা বলল,“কিরে? উঠলি কেন?”
“তোরা থাক, আমি আসছি।” কথাটা কোনোমতে বলেই ইলোরা ব্যাগ নিয়ে প্রায় দৌড়েই লাইব্রেরি থেকে বেরিয়ে গেল। সবাই অবাক হয়ে ইলোরার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল। ইলোরাকে এভাবে চলে যেতে দেখে এরেন ভ্রুকুটি করে অরিশাকে প্রশ্ন করল,“কোনো সমস্যা হয়েছে তোমাদের মধ্যে?”
অরিশা বলল,“না ভাইয়া। হঠাৎ করে ও চলে গেল কেন বুঝলাম না।”
এরেন কিছু একটা ভেবে বুশরাকে বলল,“বুশরা, তোমার সাথে পরে কথা হবে। বাসায় গিয়ে কল করব। এখন আমার একটু কাজ আছে। কিছু মনে করো না প্লিজ, বাই।”
বুশরাকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে এরেন দ্রুত পায়ে হেঁটে লাইব্রেরির বাইরে চলে গেল। বুশরা অবাক হয়ে গেল এরেনের এহেন কাজে। এরেন এদিক-ওদিক ইলোরাকে খুঁজতে খুঁজতে শেষে ক্যাম্পাসের একপাশে সাকিব আর রনির সাথে ইলোরাকে দেখতে পেল। এরেন তাড়াতাড়ি সেদিকে এগিয়ে গেল। এরেনকে দেখে রনি প্রশ্ন করল,“বুশরার সাথে দেখা হয়েছে তোর? ও তোকে খুঁজছিল।”
এরেন একবার ইলোরার দিকে তাকিয়ে আবার দৃষ্টি ফিরিয়ে রনির দিকে তাকিয়ে বলল,“হ্যাঁ, দেখা হয়েছে।”
এরেন খেয়াল করল ইলোরা তার দিকে তাকাচ্ছেও না। এমন ভান করছে যেন সে তাকে দেখেইনি। তখনই সেখানে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে উপস্থিত হলো ডালিয়া। সে এসে চিন্তিত কন্ঠে বলল,“ইলো, কী হয়েছে? বেশি শরীর খারাপ লাগছে তোর?”
ইলোরা কোনো উত্তর দিলো না। ডালিয়ার কথা শুনে এরেন অবাক হয়ে তাকাল ইলোরার দিকে। সাকিব বলল,“হ্যাঁ, ওকে তো একা পাঠানো সম্ভব না। চল আমি তোদের দুজনকে বাসায় রেখে আসি।”
এরেন প্রশ্ন করল,“কী হয়েছে?”
সাকিব বলল,“হঠাৎ করে ইলুর শরীর খারাপ লাগছে। কাল যা অসুস্থ ছিল। আজও আবার তেমন অসুস্থ হয়ে পড়লে তো সমস্যা। তোরা থাক, আমি বরং ওদের বাসায় রেখে আসি।”
এরেন শান্ত দৃষ্টিতে ইলোরার দিকে তাকাল। ইলোরার মুখটা থমথমে দেখাচ্ছে। ইলোরা আর ডালিয়াকে নিয়ে সাকিব ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে গেল। এরেন কিছুক্ষণ সেদিকে তাকিয়ে থেকে সেও হাঁটা ধরল। রনি তার পেছনে দৌড়ে আসতে আসতে বলল,“আরে তুই আবার কোথায় যাচ্ছিস?”
এরেন হাঁটতে হাঁটতে গম্ভীর গলায় বলল,“বাড়ি যাচ্ছি।”
“এখনই কেন?”
“ভালো লাগছে না।”
এরেন রনিকে রেখেই দ্রুত পদে ক্যাম্পাসের বাইরে চলে গেল। রনি অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে মাথা চুলকে বিড়বিড় করে বলল,“এটা কী হলো? আমি একা একা কী করব এখন?”
বাড়িতে পৌছে ইলোরা লম্বা শাওয়ার নিল। কী থেকে কী হয়ে গেল ভাবতেই তার মাথা ছিঁড়ে যাচ্ছে। সে ভেবেছিল এরেন আর তার চিন্তাভাবনা একই। অথচ আজ তা ভুল প্রমাণিত হলো। এরেন তাকে নিয়ে বা তাদের সম্পর্কটা নিয়ে কিছুই ভাবে না। ইলোরা অনেক ভেবেচিন্তে নিজেকে সামলে নিল। কারণ তাকে বিধ্বস্ত অবস্থায় দেখলে পরিবারের সবাই প্রশ্ন করবে, যার উত্তর সে দিতে পারবে না। তাই তার মন পুড়লেও সে মুখে হাসি ফুটিয়ে রাখল।
•
নিজের রুমে সটান শুয়ে টিভির দিকে একধ্যানে তাকিয়ে আছে এরেন। দৃষ্টি টিভির দিকে থাকলেও মনোযোগ নেই। একদৃষ্টিতে টিভির দিকে তাকিয়ে সে অন্যকিছু ভাবছে। আজ দুদিন হলো ইলোরা ভার্সিটিতে আসছে না। ডালিয়া সাকিবের সাথে আসে। গতকাল সাকিবের কাছে রনি জিজ্ঞেস করেছিল ইলোরার কথা। সাকিব বলেছিল ইলোরার শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। আজও আসেনি। সবাই বলছে ওর শরীর ভালো যাচ্ছে না। কিন্তু এরেনের তা বিশ্বাস হচ্ছে না। তার ধারণা ইলোরা শরীর খারাপের অজুহাত দেখিয়ে ভার্সিটিতে আসতে চাইছে না। কেন আসছে না তা-ও সে খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারছে। মেয়েটা যে তাকে ভুল বুঝে বসে আছে, তা সে প্রথমদিনেই বুঝতে পেরেছিল। কিন্তু এখন ওর ভুল ভাঙানোর উপায় কী? ওর সাথে কথা বলা দরকার, কিন্তু ফোন নাম্বারই তো নেই। এভাবে কতদিন ভার্সিটি কামাই করবে কে জানে? এরেনের ভাবনার মাঝে জারিন দুই মগ কফি নিয়ে রুমে ঢুকল। এরেনের পাশে বসে হাসিমুখে বলল,“নে ভাইয়া, কফি এনেছি।”
এরেনের কোনো হেলদোল নেই। জারিন ভ্রুকুটি করে তাকাল ভাইয়ের দিকে। তারপর কিছুটা জোরে ডেকে বলল,“ভাইয়া, ধ্যানে আছিস না কি?”
এরেন চমকে উঠল। জারিনকে দেখে শান্ত স্বরে বলল,“ওহ্, তুই?”
জারিন বলল,“হ্যাঁ, তোর জন্য কফি নিয়ে এসেছি। তুই চমকে উঠলি কেন?”
এরেন উঠে বসতে বসতে বলল,“এমনি, দে।”
এরেন জারিনের হাত থেকে মগটা নিয়ে চুমুক দিলো। জারিন প্রশ্ন করল,“কী ভাবছিলি?”
“কিছু না।”
“মিথ্যে বলছিস কেন? ভাবির কথা ভাবছিলি?”
এরেন এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে চুপচাপ কফির মগে চুমুক দিলো। জারিন তার মগে চুমুক দিয়ে বলল,“এত ভাবিস না। কতদিন আর ভার্সিটিতে না গিয়ে থাকতে পারবে? একদিন, দুদিন, তিনদিন। তারপর তো যেতেই হবে। হয়তো কালই আবার যেতে পারে।”
এরেন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,“দেখি।”
জারিন মন খারাপ করে বলল,“সেদিন গেলাম ভাবির সাথে কথা বলার জন্য, অথচ কিছুই বলতে পারলাম না। ভাবছি আবার যাব। তার সাথে এবার কথা বলেই ছাড়ব। এভাবে তো আর চলতে পারে না। ওর জানা দরকার তুই কী চাস।”
এরেন তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,“জানিয়েই কী হবে? জানালেই তো আর সাথে সাথে ওকে স্ত্রীর অধিকার দিয়ে ঘরে তুলতে পারব না। বাবা শুনলে কখনও এসব মানবে না।”
জারিনের মুখটা চুপসে গেল। সে মুখ কালো করে বলল,“তাই তো। তোর মাস্টার্স কমপ্লিট করতে তো এখনও পুরো এক বছর বাকি। আচ্ছা শোন, চেষ্টা করতে দোষ কী? হয়তো আম্মী বুঝালে বাবা মানতেও পারে। আমরা না হয় একবার চেষ্টা করেই দেখি আগে আম্মীকে জানিয়ে। কী বলিস?”
এরেন চিন্তিত কন্ঠে বলল,“ওকে, ভেবে দেখছি কী করা যায়। এখন আপাতত ওর ভুল ভাঙানো লাগবে।”
“রনি ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করেছিলাম ভাবির নাম্বারের কথা, তার কাছে নেই। কোনোভাবে নাম্বারটা জোগাড় করতে পারলেও হত।”
এরেন ছোটো একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলল,“কাল পর্যন্ত অপেক্ষা করে দেখি ভার্সিটিতে আসে কি না।”
•
বেলকনিতে দাঁড়িয়ে রাতের আকাশের চাঁদ দেখছে মুনা। হঠাৎ পেছন থেকে কেউ আলতো করে জড়িয়ে ধরে কাঁধে থুতনি রাখল। মুনা হালকা কেঁপে উঠলেও পেছন ফিরে তাকাল না। পাঁচদিনে এই স্পর্শটা বেশ পরিচিত হয়ে গেছে তার। মুনা চুপচাপ বাইরের দিকে তাকিয়ে রইল। কিছুক্ষণ এভাবেই কাটানোর পর আফসার মুনার কানের কাছে মুখ নিয়ে প্রশ্ন করল,“মন খারাপ?”
মুনা ডানে বায়ে মাথা দোলালো। আফসার আবার প্রশ্ন করল,“তাহলে হঠাৎ আমার লাফিং কুইন এত চুপচাপ কেন?”
মুনা মৃদু কন্ঠে বলল,“এমনি।”
আফসার মুনাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করিয়ে দুহাতে তার মুখটা তুলে ধরে বলল,“আজই তো তোমার বাড়ি থেকে এলে। এখনই মন খারাপ করলে কীভাবে চলবে মুন?”
মুনা চুপচাপ আফসারের বুকের দিকে দৃষ্টি স্থির করে দাঁড়িয়ে রইল। আফসার মুচকি হেসে বলল,“কাল ভার্সিটি যাব আমরা। ফ্রেন্ডসদের সাথে দেখা হলে দেখবে এমনিতেই মন ফুরফুরে হয়ে যাবে।”
মুহুর্তে মুনার চোখেমুখে একরাশ খুশি এসে ছড়িয়ে পড়ল। সে উৎফুল্ল হয়ে বলল,“সত্যি?”
আফসার মৃদু হেসে মুনাকে বুকে টেনে নিয়ে বলল,“হুম।”
মুনা তো খুশিতে আটখানা। যদিও সে বন্ধুদের সাথে ভিডিয়ো কলে কথা বলেছে। কিন্তু ভিডিয়ো কলে দেখা আর সামনাসামনি দেখার মাঝে অনেক তফাৎ। মুনা আফসারের বুকে চুপটি করে রইল। আফসার হঠাৎ বলে উঠল,“এই মুন শোনো, কাল থেকে কিন্তু তুমি আমার ক্লাসে সরাসরি আমার দিকে তাকিয়ে থাকবে না।”
মুনা বেশ অবাক হয়ে মাথাটা উঁচু করে আফসারের মুখের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করল,“কেন?”
আফসার চিন্তিত মুখে বলল,“তুমি আমার দিকে তাকিয়ে থাকলে আমার ক্লাস নিতে প্রবলেম হবে।”
মুনা প্রশ্নভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। আফসার মুনার কানের কাছে মুখ নিয়ে ধীর কন্ঠে বলল,“বলা তো যায় না, আমার বউয়ের মুখের দিকে তাকালে যদি আমি লেকচার গুলিয়ে ফেলি, তখন?”
মুনার মুখ লজ্জায় লাল বর্ণ ধারণ করল। আফসার সিরিয়াস হয়ে বলল,“ওহ্, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে ভুলেই গিয়েছিলাম। শোনো লাফিং কুইন, এখন থেকে তোমার বিখ্যাত হাসিটা অন্তত আমার ক্লাসে দিয়ো না। বউ বলে যে ছাড় পাবে, এমনটা কিন্তু ভুলেও ভেবো না। এবার আমার ক্লাসে হাসাহাসি করলে আমি কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখব। মনে থাকে যেন।”
নিমেষেই মুনার মুখটা কালো হয়ে গেল। পাজি লোকটা আবার শুরু করেছে খোঁটা দেওয়া। মুনা আফসারের হাত ঠেলে গাল ফুলিয়ে বলল,“ছাড়ুন।”
আফসার ত্যাড়াভাবে বলল,“ছাড়ার জন্য ধরেছি না কি? তাছাড়া আমার বউকে আমি ধরেছি, তাতে তোমার কী শুনি?”
মুনা আবার বলল,“ছাড়ুন।”
আফসার আরেকটু শক্ত করে চেপে ধরে বলল,“উঁহু, ছাড়ব না।”
মুনা কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলল,“ছাড়ুন তো।”
আফসার ভ্রু কুঁচকে বলল,“তোমার সাহস তো কম না। নিজের টিচারের সাথে রাগ দেখাচ্ছ! জানো এর জন্য আমি তোমাকে পানিশমেন্ট দিতে পারি? এভাবে নড়াচড়া করলে কিন্তু সত্যিই পানিশমেন্ট দিব।”
মুনা গোমড়া মুখে আফসারের থেকে ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করছে। আফসার সরু চোখে তাকিয়ে বলল,“পানিশমেন্ট পেতে চাও না কি? মনে তো হচ্ছে তুমি তা-ই চাইছো।”
আফসারের কোনো কথায় মুনা কানই দিলো না। সে তার মতো ঠেলাঠেলি করতে ব্যস্ত। আফসার কিছুক্ষণ সরু চোখে মুনার মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে হঠাৎ টুকুস করে মুনার গালে গাঢ় একটা চুমু খেয়ে বসল। আকস্মিক ঘটনায় মুনা বেশ অবাক হয়ে গেল। বাঁ হাতটা আপনাআপনি নিজের গালে চলে গেল। চোখ দুটো ছানাবড়া করে সে আফসারের দিকে তাকাল। আফসার দুষ্টু হেসে ভ্রু নাচিয়ে বলল,“কী? আরও পানিশমেন্ট চাও?”
সঙ্গে সঙ্গে মুনা চোখ নামিয়ে নিল। লজ্জায় তার মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে তার। না পারছে আফসারের হাত থেকে নিজেকে ছাড়াতে, আর না পারছে তার দিকে তাকাতে। অথচ আফসার তার দিকে তাকিয়ে ঠোঁট টিপে হেসে চলেছে। শেষে মুনা লজ্জায় নিজেই আফসারের বুকে মুখ লুকাল। আফসার এবার শব্দ করে হেসে শক্ত করে মুনাকে বুকে চেপে ধরল।
চলবে………………….🌸
(ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। এখন থেকে প্রতিদিন গল্প দিতে পারব না, তবে চেষ্টা করব।🙂)