সুপ্ত_প্রেমাসুখ পর্বঃ৩৩

0
1000

#সুপ্ত_প্রেমাসুখ
#ইলোরা_জাহান_ঊর্মি
#পর্বঃ৩৩

আজ শুক্রবার। ভার্সিটি বন্ধ তাই সাকিব ঠিক করল ডালিয়া আর ইলোরাকে নিয়ে মার্কেটে যাবে ওদের প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্য। সকাল সাড়ে নয়টায় ইলোরা আর ডালিয়া রেডি হতে লাগল। তখনই এরেনের ফোন এল। ইলোরা ফোন রিসিভ করে কানে ধরতেই এরেন ঘুমঘুম কন্ঠে বলল,“গুড মর্নিং আমার মিষ্টি বউটা।”

ইলোরা বলল,“মর্নিং অনেক আগে হয়েছে। এখনও শুয়ে আছো তুমি?”

এরেন অলসভাবে বলল,“আজ তো ভার্সিটিতে যেতে হবে না তাই তাড়াও নেই।”

“আমার তাড়া আছে। তুমি আরও ঘুমাও পড়ে পড়ে।”

“কিসের তাড়া?”

“মার্কেটে যাচ্ছি কেনাকাটা করতে।”

এরেন লাফ দিয়ে উঠে বসে বলল,“আমিও যাব।”

ইলোরা ভ্রুকুটি করে বলল,“তুমি কোথায় যাবে?”

“মার্কেটে।”

“কেন?”

“আজ তো তোমাকে দেখার উপায় নেই। মার্কেটে গেলে দেখা হবে তোমার সাথে।”

“পাগল! তুমি এখনও ফ্রেশ হওনি,ব্রেকফাস্ট করোনি। দরকার নেই যাওয়ার। তাছাড়া আমরা বেশিক্ষণ থাকবও না।”

এরেন দুঃখী দুঃখী গলায় বলল,“ও বউ,তোমার ইচ্ছে করে না আমাকে দেখতে?”

“আশ্চর্য! কাল তো আমাদের দেখা হবে। এখন ইচ্ছে করলেও তোমার আসার দরকার নেই। আমরা একা যাচ্ছি না,ভাইও যাচ্ছে।”

“তার মানে তোমার ইচ্ছে করে। রাইট?”

ইলোরা হিজাবে পিন লাগাতে লাগাতে হেসে বলল,“থামো তো। চুপচাপ উঠে ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করো। পরে কথা বলব। এখন বাই।”

এরেন গাল ফুলিয়ে বলল,“ওকে বেগম সাহেবা।”

ইলোরা হাসতে হাসতে ফোন রেখে দিলো। ডালিয়া বলল,“না করলি কেন?”

“ও মাত্র ঘুম থেকে উঠেছে। শুধু শুধু কষ্ট করবে কী করতে বল?”

“বউকে দেখতে চাইছে তাতে আবার কষ্ট কিসের?”

“তুই থাম। চল এখন।”

ওরা দুজন রুম থেকে বেরোতেই সাকিবও বেরিয়ে এল। বাড়ি থেকে বেরিয়ে রওনা দিলো মার্কেটের উদ্দেশ্যে। মার্কেটে পৌঁছে সাকিব বলল,“তোদের যা লাগে দেখ। আমি ওদিকটায় আছি।”

সাকিব গিয়ে নিজের জন্য শার্ট দেখতে লাগল। ইলোরা আর ডালিয়া ঘুরে ঘুরে নিজেদের জন্য এটা ওটা দেখতে লাগল। হঠাৎ ইলোরার চোখ চলে গেল পাশের একটা দোকানে। সে চোখ বড়ো করে অবাক কন্ঠে বলল,“কে শোনে কার কথা?”

ডালিয়া ইলোরার দৃষ্টি অনুসরণ করে সামনে তাকিয়ে ফিক করে হেসে বলল,“আমি জানতাম এমন কিছুই হবে।”

পাশের দোকান থেকে এরেন আর জারিন ওদের দিকে এগিয়ে এল। জারিন এসেই ইলোরাকে জাপটে ধরে বলল,“ভাবি, কেমন আছো?”

ইলোরা হেসে বলল,“ভালো আছি আপু। তুমি কেমন আছো?”

“ভালো। তোমার জামাই আমাকে টেনেহিঁচড়ে মার্কেটে নিয়ে এসেছে তোমার সাথে দেখা করার জন্য।”

ইলোরা বাঁকা চোখে এরেনের দিকে তাকিয়ে বলল,“তোমাকে না বললাম আসার দরকার নেই?”

এরেন মাথা চুলকে বলল,“তুমি বললেই আমি শুনব?”

ডালিয়া গলা ঝেড়ে জারিনকে বলল,“আপু,আমাকে ড্রেস চুজ করতে একটু হেল্প করো প্লিজ।”

জারিন ডালিয়ার হাত ধরে দোকানের দিকে এগোতে এগোতে বলল,“আচ্ছা চলো।”

ইলোরা ভ্রু কুঁচকে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। এরেন ইলোরার কানের কাছে মুখ নিয়ে জোরে কাশির শব্দ করল,“এহেম এহেম।”

ইলোরা চমকে উঠে দু’পা পিছিয়ে যেতেই এরেন ফিক করে হেসে উঠল। ইলোরা মুখ ফুলিয়ে বলল,“এত তাড়াতাড়ি এলে কীভাবে?”

এরেন দাঁত কেলিয়ে হেসে বলল,“বাবার গাড়ি নিয়ে। সাকিব কোথায়?”

“ওদিকটায় আছে।”

এরেন ইলোরার হাত ধরে টেনে অন্যদিকে নিয়ে গেল। একটু আড়ালে গিয়ে দাঁড়াল দুজন। ইলোরা বলল,“এখানে নিয়ে এলে কেন? ভাই খুঁজবে তো।”

এরেন ইলোরার ঠোঁটে আঙুল চেপে ধরে বলল,“চুপচাপ দাঁড়াও। কোনো কথা বলবে না।”

তারপর আঙুল সরিয়ে বলল,“চোখ বন্ধ করো।”

ইলোরা প্রশ্নভরা দৃষ্টিতে এরেনের দিকে তাকাল। এরেন তাড়া দিতেই সে চোখ বন্ধ করল। মিনিট খানেক পরেই পায়ে কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে ফট করে চোখ খুলল। নিচের দিকে তাকিয়ে দেখল এরেন হাঁটু গেড়ে বসে তার পা ধরেছে। ইলোরা লাফিয়ে উঠতে গেলেই এরেন তার পা দুটো চেপে ধরে চোখ পাকিয়ে বলল,“একটুও নড়বে না। চোখ খুলতে বারণ করেছি না?”

ইলোরা নড়াচড়া করতে করতে বলল,“পায়ে হাত দিচ্ছ কেন তুমি? আশেপাশের লোকজন তাকিয়ে আছে।”

এরেন ইলোরার কথায় কান না দিয়ে নিজের কাজ শেষ করে উঠে দাঁড়াল। ইলোরা নিজের পায়ের দিকে তাকিয়ে উচ্ছসিত হয়ে বলল,“নূপুর। কত্ত সুন্দর!”

এরেন হাসিমুখে বলল,“যাক মহারানির পছন্দ হয়েছে।”

“তুমি কিনেছ?”

“আর কে কিনবে?”

“কী দরকার ছিল এসবের?”

এরেন দু’পা এগিয়ে গিয়ে বলল,“এগুলো সবসময় পায়ে রাখবে। খুলবে না কখনও।”

ইলোরা হাসল। এরেন এদিক-ওদিক চোখ বুলিয়ে হঠাৎ টুকুস করে ইলোরার বাঁ গালে একটা চুমু খেল। ঘটনাটা এত তাড়াতাড়ি ঘটল যে ইলোরা গালে হাত দিয়ে হা করে এরেনের দিকে তাকিয়ে রইল। এরেন দুষ্টু হেসে নিচু স্বরে বলল,“এভাবে তাকিয়ে থাকলে আরেক গালেও……।”

এরেনের কথার মাঝে ইলোরা এরেনের বুকে হালকা একটা ঘুষি মেরে বলল,“অসভ্য।”

“তাহলে আরেকটু অসভ্যতামি করি?” কথাটা বলে এরেন আরও কাছে এগিয়ে আসতে নিতেই ইলোরা ওকে মৃদু ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে লাজুক হেসে দ্রুত সেখান থেকে চলে এল। এরেনও হেসে ওর পিছু নিল। জারিন আর ডালিয়া ওদের দেখে এগিয়ে এল। জারিন ভ্রু নাচিয়ে বলল,“এত তাড়াতাড়ি প্রেম শেষ হয়ে গেল।”

ইলোরা লজ্জায় চোখ পাকিয়ে এরেনের দিকে তাকাল। ডালিয়া ঠোঁট টিপে হাসছে। এরেন জারিনের মাথায় টোকা মেরে বলল,“বেশি পাকনামি করতে বলিনাই তোরে। সাকিব কই?”

ডালিয়া হেসে বলল,“তার তো খবরই নেই। দোকানে গিয়ে দোকানদারি করতে লেগে পড়ল না-কি কে জানে?”

এরেন সামনের দিকে পা বাড়িয়ে বলল,“আমি দেখছি।”

প্রায় তিন মিনিটের মধ্যেই এরেন আর সাকিব একসাথে ফিরল। সাকিব বলল,“তোদের কেনাকাটা হয়েছে? আমার এক ফ্রেন্ডের সাথে দেখা হয়েছে তাই ওর সাথে কথা বলতে গিয়ে দেরি হয়ে গেল।”

ডালিয়া বলল,“হ্যাঁ হয়েছে।”

এরেন সাকিবকে প্রশ্ন করল,“চলে যাবি এখন?”

সাকিব বলল,“হ্যাঁ।‌ তোরা কখন যাবি?”

“জারিনের কেনাকাটা বাকি আছে এখনও।”

“আচ্ছা তাহলে বিকেলে দেখা হবে।”

“ওকে।”

সাকিব ইলোরা আর ডালিয়াকে বলল,“আয়,বিল মিটিয়ে আসি আগে।”

সাকিব সামনের দিকে হাঁটা দিলো। ডালিয়াও তার পিছু নিল। জারিন বলল,“বাই ভাবি। আবার দেখা হবে একদিন।”

ইলোরা জারিনের কথায় মুচকি হেসে মাথা দুলিয়ে এরেনের দিকে তাকাল। এরেন মুচকি হেসে বলল,“সাবধানে যেও। বাসায় ফিরে ফোন করব।”

ইলোরা এবারও মুচকি হেসে মাথা দুলিয়ে চলে গেল। এরেন ইলোরার চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে রইল। জারিন বলল,“মেয়েটাকে সারাজীবন নিজের কাছে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে তাড়াতাড়ি ভাইয়া।”

এরেন ছোটো একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলল,“হুম। ঐ দোকানে চল।”

সাকিব,ইলোরা আর ডালিয়া বাড়ি ফিরে দেখল মালিহা বেগম আর মিথিলা ফিরে এসেছে। ওদেরকে দেখেই মিথিলা ঠোঁট উল্টে বলল,“ভাই,তুমি স্বার্থপরের মতো আমাকে রেখে ওদের দুজনকে নিয়ে মার্কেটে চলে গেলে?”

সাকিব এগিয়ে গিয়ে মিথিলার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,“মন খারাপ করে না বোন। তোকে একা নিয়ে যাব। ওকে?”

মিথিলা মন খারাপ করে বলল,“সবার সাথে যাওয়ার মজাই আলাদা। কবে নিয়ে যাবে তারও তো কোনো ঠিক নেই।”

সাকিব বলল,“সামনের শুক্রবার নিয়ে যাব,প্রমিজ।”

মিথিলা মাথা কাৎ করে হতাশ ভঙ্গিতে বলল,“ওকে।”

ডালিয়া আর ইলোরার পেছন পেছন মিথিলাও রুমে গেল। তারপর কে কী এনেছে তা বের করে দেখতে লাগল। ইলোরা অলস ভঙ্গিতে ধপ করে বিছানায় সটান শুয়ে পড়ল। কিছুক্ষণ পর মিথিলা হঠাৎ চোখ বড়ো করে বলল,“ওয়াও আপ্পি! তোমার পায়ের নূপুর দুটো কী সুন্দর! আজ কিনেছো?”

ইলোরা ফট করে চোখ খুলে একবার পায়ের দিকে তাকিয়ে বলল,“হ্যাঁ।”

“আমার বেস্ট ফ্রেন্ড তানিশারও সেইম নূপুর আছে। তুমি এটা আমাকে দিয়ে দাও না প্লিজ।”

ইলোরা লাফিয়ে উঠে পা দুটো গুটিয়ে বসে বলল,“একদম না। এগুলো দেয়া যাবে না। তুই আগামী শুক্রবার যখন মার্কেটে যাবি তখন এমন কিনিস।”

মিথিলা মন খারাপ করে বলল,“এমন তো নাও পেতে পারি। আমি কিছু চাইলে তুমি তো কখনও এমন সঙ্গে সঙ্গে না করো না। তাহলে এখন এমন করছো কেন?”

ইলোরা অসহায় মুখে ডালিয়ার দিকে তাকাল। ডালিয়া বুঝতে পারল এগুলো ইলোরা কেনেনি। কিনলে সে অবশ্যই দেখত। নিশ্চয়ই এরেন গিফট করেছে। ডালিয়া বলল,“মিথি,ও ওগুলো খুব পছন্দ করে কিনেছে। তুই এক কাজ কর। আমারটা নে। এই দেখ আমিও কিনেছি।”

এই বলে ডালিয়া ব্যাগ থেকে ওর নূপুর জোড়া বের করল। মিথিলা বলল,“তোমারটা তো অন্যরকম।”

ডালিয়া নূপুর জোড়া মিথিলার হাতে দিয়ে বলল,“এগুলোও সুন্দর। দেখ তুই।”

মিথিলা সেগুলো উল্টেপাল্টে দেখে হেসে বলল,“আসলেই সুন্দর। থ্যাংক ইউ আপ্পি।”

ডালিয়া মুচকি হাসল। ইলোরা হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। এই মিথি যে এগুলো নিয়ে ছাড়তো তা তার ভালোমতোই জানা ছিল। এরেন বলেছে এগুলো কখনও না খুলতে। সাবধানে রাখতে হবে এখন থেকে।


পরদিন ভার্সিটিতে আড্ডা দেয়ার সময় অরিশা হঠাৎ খেয়াল করল কয়েকজন ছেলে তাদের দিকে কেমন চোখে যেন তাকিয়ে আছে। ছেলেগুলো তাদের সিনিয়র,যারা একদিন র্যাগিং করেছিল। অরিশা কয়েকবার খেয়াল করে তারপর ইলোরাকে বলল,“ইলো দেখ,ওই ছ্যাঁচড়া ভাইরা কীভাবে তাকিয়ে আছে এদিকে।”

ইলোরা সেদিকে তাকাতেই ছেলেগুলো মুখ দিয়ে হুইসেল বাজিয়ে চোখ মারল। আবার কয়েকজন ফ্লাইং কিসও ছুঁড়ল। তাহসিন রেগেমেগে বলল,“কত্তবড়ো ছ্যাঁচড়া এগুলা! দাঁড়া,আমি যাইতাছি।”

ডালিয়া বাধা দিয়ে বলল,“এরা সিনিয়র। ঝামেলা করিস না পরে মার খাবি।”

ইলোরা দাঁতে দাঁত চেপে বলল,“ভাই যদি একবার দেখে তো খবর আছে এদের।”

মুনা বলল,“চল,সাকিব ভাইয়াকে জানাই। নইলে এরা আরও মাথায় উঠে নাচবে।”

ইলোরা কিছুটা ভেবে বলল,“হ্যাঁ চল।”

সবাই মিলে উঠে দাঁড়াতেই টুম্পা হঠাৎ চিৎকার করে বলে উঠল,“গাইস দেখ দেখ। বউয়ের জন্য তার জামাই-ই যথেষ্ট।”

সবাই চমকে তাকাতেই দেখল এরেন ঐ ছেলেদের মধ্যে একজনের কলার চেপে ধরে কী যেন বলছে। ছেলেগুলোও প্রচন্ড ক্ষেপে গেছে। মারামারি লাগার মতো অবস্থা হয়ে গেছে। ইলোরা ভাবল এতগুলো ছেলে যদি একসাথে এরেনকে ধরে তাহলে অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে। ইলোরা হন্তদন্ত হয়ে সেদিকে ছুটতে যেতেই ডালিয়া খপ করে ওর হাত ধরে ফেলল। ইলোরা রাগত স্বরে বলল,“ডালিয়া হাত ধরলি কেন? হাত ছাড়। এতগুলো ছেলের সাথে ও একা পারবে না। ওকে না আটকালে নির্ঘাত মার খাবে।”

ডালিয়া বলল,“আরে থাম। ঐ দেখ ভাই আসছে।”

ইলোরা দেখল সাকিব আর রনি ছুটে আসছে। ওরা তিনজন একসাথেই ছিল। এরেনের হঠাৎ এদিকে চোখ চলে আসায় সে পুরো ব্যাপারটা খেয়াল করেছে। তাই সাকিব আর রনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই সে ছুটে এসেছে‌। সাকিব আর রনি গিয়ে ধাক্কাধাক্কি করে সবাইকে কোনোমতে থামাল। সাকিব কিছুটা অবাক হলো কারণ এরেন ওদের সাথে কখনও লাগতে আসে না। এসব ওর অপছন্দ। রনি এরেনকে প্রশ্ন করল,“কী সমস্যা এরেন?”

এরেন রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে ব্যাপারটা খুলে বলতেই সাকিব নিজের রাগ ঝাড়তে তেড়ে গেল ছেলেগুলোর দিকে। ততক্ষণে ইলোরারা সবাই সেখানে উপস্থিত হয়েছে। রনি আর তাহসিন মিলে সাকিবকে টেনে ধরে রাখল। নইলে আজ নিশ্চিত একধাপ মারপিট হয়ে যেত। সাকিব অগ্নি দৃষ্টিতে ছেলেগুলোর দিকে তাকিয়ে বকতে শুরু করল। ইতোমধ্যে অনেক ছাত্রছাত্রী সেখানে জড়ো হয়ে গেছে দেখে ছেলেগুলো মানে মানে কেটে পড়ল। রনি সাকিবকে বুঝাতে ব্যস্ত। এরেন একপাশে দাঁড়িয়ে এখনও রাগে ফুঁসছে। একে তো ওমন একটা ঘটনা ঘটলো তার ওপর আবার ছেলেগুলো ওকে মারতেও উদ্যত হয়েছিল। ইতঃপূর্বে এরেনের এমন রাগ ইলোরা কখনও দেখেনি। আগেরবারও এরেন এই ছেলেগুলোর উপর রেগে গিয়েছিল কিন্তু এতটা না। একদিকে ভাই রাগে ফুঁসছে আরেকদিকে বর। ইলোরা ভয়ে ভয়ে দুজনের দিকে তাকাল। সাকিব অনেকটা শান্ত হয়েছে তাই সে সন্তর্পণে গিয়ে এরেনের পাশে দাঁড়াল। এরেন একবার তার দিকে তাকিয়ে আবার চোখ ফিরিয়ে অন্যদিকে তাকাল। ইলোরা কিছু না ভেবে এরেনের এক হাত আলতো করে ধরে বলল,“ঠিক আছো?”

এরেন এবার তার হাতের দিকে তাকাল। তারপর ইলোরার মুখের দিকে তাকিয়ে মুখ দিয়ে ফুস করে একটা শব্দ করে উপর নিচে মাথা দোলালো। মনে হলো সে একটু শান্ত হয়েছে। ইলোরা এরেনের হাত ছেড়ে সাকিবের দিকে এগিয়ে গেল। সাকিব অসহায় মুখে ইলোরার দিকে তাকিয়ে বলল,“সরি বোন। ওরা এমনই। জীবনেও শুধরাবে না। নেক্সট টাইম আর ভুলেও ওদের দিকে তাকাস না।”
ইলোরা মাথা দুলিয়ে সম্মতি জানাল।

চলবে……………….🍁

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here