সেই সন্ধ্যা পর্ব-১

0
6401

#সেই_সন্ধ্যা
#সুমাইয়া_সিদ্দিকা_আদ্রিতা
#পর্ব_১
.
রাত ২’টো বেজে ৩৬ মিনিট। একটা এ্যাম্বুলেন্স এসে হাসপাতালের সামনে থামলো। ওয়ার্ড বয়’রা দৌড়ে এলো এ্যাম্বুলেন্সের সামনে। একটা রক্তাক্ত মানুষ পরে আছে এ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে। তাড়াতাড়ি তাকে হাসপাতালের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হলো। এই সময়ে কোনো ডাক্তার থাকে না বললেই চলে। কিন্তু আজকে কাজের চাপ বেশি থাকায় কিছু ডাক্তাররা এখনো কাজ করছে। বাইরে থেকে কান্নাকাটির আওয়াজ পেয়ে ডক্টর আখি বাইরে গেলেন। একজন নার্স দৌড়ে এলো আখির কাছে।

-“ম্যাম ইট’স ইমার্জেন্সি।”
-“কি হয়েছে?”
-“একটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। পেশেন্টকে নিয়ে আসা হয়েছে এখানে।”
-“এক্ষুনি ওটি রেডি করো আমি আসছি।”
-“ওকে ম্যাম।”

আখি চেঞ্জিং রুমে যেয়ে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিলো। ওটির সামনে যেতেই পেশেন্টের বাড়ির লোকেরা হুমড়ি খেয়ে পরলো আখির সামনে। পেশেন্টের মা কাঁদতে কাঁদতে আখি সামনে আসলেন। বললেন,
-“ডাক্তার আমার মেয়ে গাড়ি অ্যাক্সিডেন্ট করেছে প্লিজ ওকে বাঁচান।”
-“আন্টি আপনি কাঁদবেন না। আমরা দেখছি আপনার মেয়েকে।”

আখি ওটিতে ঢুকে পরলো। ওটিতে ঢুকে দেখে ডক্টর নিয়ানও আছে এখানে। নিয়ান বললেন,
-“পেশেন্টের কন্ডিশন খুব সিরিয়াস। ইমিডিয়েটলি অপারেশন করতে হবে।”
-“কিন্তু এটা অনেক রিস্কি হবে। পেশেন্টের কন্ডিশন দেখে মনে হচ্ছে এই অপারেশনটা করতে গেলে পেশেন্টের লাইফ রিস্কও দেখা দিতে পারে।”
-“তাহলে এখন কি করব? এভাবে তো আর একজন মানুষকে চোখের সামনে মরতে দেখতে পারি না।”
-“যেভাবেই হোক অপারেশনটা আমাদের করতেই হবে।”
-“আমাদের কাছে এই অপারেশনটা রিস্কি মনে হচ্ছে। তার মানে এই অপারেশনটা এখন একজনই করতে পারবে।”
-“ইউ মিন…”
-“ইয়েস ইউ আর রাইট। এখন একমাত্র উনিই পারবে এই অপারেশন করতে। আখি কল হিম রাইট নাউ।”

আখি তাড়াতাড়ি বাইরে বেরিয়ে এলো অপারেশন থিয়েটার থেকে। ডক্টরের নম্বরে কল করলো। রিং হওয়ার সাথে সাথেই ডক্টর ফোন রিসিভ করলো। আখি বললো,
-“হ্যালো!”
-“ইট’স অ্যান ইমার্জেন্সি এন্ড উই নিড ইউ।”
-“ওকেহ আ’ম কামিং।”
-“কাম ফাস্ট।”

ডক্টর কল কেটে দিল। ঘড়ি ধরে একদম ১০ মিনিটের মাথায় ডক্টর এসে পৌঁছালো হাসপাতালে। রেডি হয়ে তাড়াতাড়ি ওটিতে ঢুকে গেল। আখি, নিয়ান আর ইমি ডক্টরকে দেখে একটু স্বস্তি পেলো। ডক্টর আসতেই অপারেশন শুরু করে দিল। ঘন্টা খানেকের মধ্যেই অপারেশন শেষ হয়ে গেল। ডক্টর হাতের গ্লাভস খুলতে খুলতে বললো,
-“আখি তুই যেয়ে ওর ফ্যামিলি মেম্বারদের বলে দে যে ও এখন ঠিক আছে।”
-“ওকে।”

আখি বাইরে যেয়ে মেয়েটির পরিবারের সবাইকে বলে আসলো যে পেশেন্ট এখন ঠিক আছে। আখি অপারেশন থিয়েটারে যেয়ে দেখলো ডক্টর নেই। নিয়ানকে জিজ্ঞেস করলো,
-“স্নিগ্ধ কোথায় গেল?
-“কেবিনের দিকে গিয়েছে।”
-“আচ্ছা।”

মাঝ রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে এই মাত্র যে অপারেশন করে আসলো সেই ডক্টর। আখি পারমিশন না নিয়েই ঢুকে পরলো কেবিনে।

-“স্নিগ্ধ!”
স্নিগ্ধ গম্ভীর গলায় বললো,
-“হুম বল।”
-“কি হলো শরীর খারাপ করছে?”
-“আরে না জাস্ট মাথাটা একটু ব্যাথা করছে এই আর কি।”
-“কোথায় ছিলি এতক্ষণ?”
-“একটা কাজে বেরিয়ে ছিলাম।”
-“আচ্ছা তাহলে তুই এখন বাসায় যা, রেস্ট নে।
-“কিন্তু মেয়েটা?”
-“কোন মেয়ে?”
-“এই মাত্র যার অপারেশন করে আসলাম।”
-“ওহ্ আচ্ছা। ওকে আমরা বাকিরা দেখে নিবো।”
-“সিয়র?”
-“আমি ডক্টর এমনি এমনি হইসি?”
-“আহা! রাগ করিস কেন?”
-“যা বাসায় যা শয়তান।”
-“হুহ্।”
-“কালকে সকালে একটু তাড়াতাড়ি আসিস।”
-“কি করতে?”
-“পেশেন্টকে একটু দেখতে হবে তো তোর নাকি? আফটার অল অপারেশনটা তুই করেছিস।”
-“আচ্ছা সকালে দেখা হচ্ছে তাহলে।”
-“বাই।”

স্নিগ্ধ চলে গেল ওর বাসায়। আখি চলে গেল পেশেন্টকে দেখতে। স্নিগ্ধ বাসায় পৌঁছালো ভোর ৪:৩০ মিনিটে। ও ওর রুমে যেয়েই টাওয়াল নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল। শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে কিছু পুরোনো স্মৃতি আওরাচ্ছে ও। প্রায় ঘন্টা দু’এক শাওয়ার নিয়ে এসে বিছানায় শরীরটা এলিয়ে দিল। কিছু সময়ের মাঝেই ওর চোখে ঘুম এসে ভর করলো। আখি নিজের কেবিনে চেয়ারে বসে মাথা হেলিয়ে দিয়েই ঘুমিয়ে গিয়েছে। গতকাল রাতে ও এই পেশেন্টের জন্য বাসায় যেতে পারে নি। তখনি হঠাৎ একজন নার্স এসে আখির কেবিনে নক করলো। আখির কাঁচা ঘুমটা ভেঙে গেল।

-“আসুন।”
-“ম্যাম গতকাল রাতে যে পেশেন্টের অপারেশন করেছেন তার জ্ঞান ফিরেছে।”
-“আচ্ছা আপনি যান আমি আসছি।”
-“ওকে ম্যাম।”

নার্স চলে গেল। আখি ফোন হাতে নিয়ে দেখে সকাল ৮ টা বাজে। ও স্ট্যােথোস্কোপ হাতে নিয়ে পেশেন্টের রুমে ঢুকে দেখে মেয়েটি মুখ গোমড়া করে আধশোয়া হয়ে বসে আছে। গতকাল মুখে রক্তে মাখামাখি হয়ে থাকার কারনে মেয়েটির মুখ ভালো মতো খেয়াল করে নি। আজ মেয়েটিকে ভালো মতো দেখে নিলো। টানা টানা দু’টো চোখ দেখতে একদম প্রতিমার চোখের মতো। চোখের পাপড়ি গুলো ঘন ও বড় বড়। আর ফর্সা ত্বক দেখেই বোঝা যাচ্ছে মেয়েটির স্কিন খুব সেন্সিটিভ। একটু জোরে ধরলেই দাগ বসে যাবে। পাতলা মাঝারি দু’টো ঠোঁট দেখে যেন মনে হয় পুরো পেন্সিলে আঁকা। ঘন কালো চুল গুলো খোঁপায় বাঁধা। কিন্তু খোঁপার সাইজ দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে এই মেয়ে চুল ছাড়লে নির্ঘাত হাঁটু পর্যন্ত পৌঁছাবে। সব মিলিয়ে মেয়েটি ভয়াবহ সুন্দরী। এই বয়সেই এতো সুন্দরী মেয়েটা ভাবতেই আখি একটু অবাক হলো। ও নিজেই মেয়েটার ওপর ক্রাশ খেয়েছে। পরবর্তী মুহূর্তেই আখি মুখে হাসি ফুটিয়ে মেয়েটির কাছে এগিয়ে গেল।

-“এখন কেমন আছো?”
-“আমি বাসায় যাব। আমার এখানে একটুও ভালো লাগছে না।”
-“বাসায় যাব বললেই তো তোমাকে বাসায় যেতে দেয়া যাবে না কিউটি।”
-“আমার নাম কিউটি না। আমার নাম সকাল। অপর্ণা ইসলাম সকাল।”
-“বাহ্ তোমার নামটা তো তোমার মতোই ভারি মিষ্টি।”
-“থ্যাংক্স ফর ইয়র কমপ্লিমেন্ট। বাট আই ওয়ান্ট টু গো মাই হোম।”
-“তোমার শরীরের অবস্থা এখন ভালো না। তোমাকে তো কিছুদিন এখানে থাকতেই হবে। গতকাল তোমার যা অবস্থা হয়েছিল বাবাহ্ ভাবতেই ভয়ে গা শিউরে উঠছে আমার।”
-“তুমি তো ডক্টর। তোমার তো ভয় পাওয়ার কথা না। আমি তো জানি ডক্টরেরা ব্রেভ হয়।”
-“হুমম ডক্টরেরা সব সময় ব্রেভ হয়। তাই তো তুমি এখনো বেঁচে আছো।”
-“আমিও ডক্টর হতে চাইতাম কিন্তু রক্ত আমি সহ্য করতে পারি না। তাই ডক্টর হওয়ার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিয়েছি।”
-“তাই! তা তুমি কিসে পড়ছো এখন?”
-“এসএসসি পাস করে ইন্টারে উঠেছি এবার।”
-“তুমি তো সম্পূর্ণ একটা বাচ্চা মেয়ে।”
-“সকাল মোটেও বাচ্চা নয়। আমি বড় হয়ে গিয়েছি।”
-“ওলে বাবা লে। তুমি আসলেই অনেক কিউট। সাথে সুইট ও।”
-“আমার ক্ষিদে পেয়েছে।”
-“ওহ্ হ্যা আমি তো একদমই ভুলে গিয়েছিলাম।”

আখি নার্সকে ডেকে পাঠালো। নার্সকে বলল সকালের পরিবারকে খবর দিতে যে সকালের জ্ঞান ফিরেছে। আর সকালের জন্য নাস্তা আনতে বলল। আখি সকালের সব চেকাপ করে বেরিয়ে গেল কেবিন থেকে। সকাল ১০ টার দিকে স্নিগ্ধর ফোন বেজে উঠলো। ও বিরক্ত হয়ে পাশে থেকে বালিশ নিয়ে নিজের কানের উপর রেখে চেপে ধরলো। কিন্তু কোনো লাভ হলো না। ওর ফোন তাও ননস্টপ বাজতে লাগলো। শেষমেশ নিজের সকল ঘুম বিসর্জন দিয়ে ফোনটা রিসিভ করে কানে রাখতেই আখি ঝারি দিয়ে উঠলো।

-“আবে তোর ফোনের আওয়াজ কি কানে যায় না?”
-“কি হয়েছে সকাল সকাল চেঁচাচ্ছিস কেন?”
-“তাড়াতাড়ি হসপিটালে চলে আয়।”
-“এখনি আসতে হবে?”
-“হ্যা গতকাল যে পেশেন্টের অপারেশন করেছিলাম আমরা সে মেয়ে জেদ ধরেছে সে আর হসপিটালে থাকবে না। সে বাসায় যাবে।”
-“আজিব! ও যে অসুস্থ ও কি তা জানে না? পাগল নাকি মেয়েটা?”
-“আরে ভাই তুই জ্ঞান দিবি যখন তখন আগে এখানে আয়। তারপর মেয়েটার সামনে যেয়ে ওকে জ্ঞান দিস।”
-“আচ্ছা আসছি আমি। বাই দ্যা ওয়ে মেয়েটির জ্ঞান কখন ফিরেছে?”
-“এই সকাল ৮ টা নাগাত।”
-“আচ্ছা আসছি তুই ফোন রাখ।”

আখি ফোন রাখতেই স্নিগ্ধ এক প্রকার বিরক্তি নিয়েই উঠে পড়লো ঘুম থেকে। তাড়াতাড়ি করে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নিজের স্ট্যােথোস্কোপটা গলায় ঝুলিয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো। সকাল ফোনে গেমস খেলছিল। কেবিনের দরজা খোলার আওয়াজ পেয়েও ও তাকালো না। ও নিজের মতো মনোযোগ সহকারে গেমস খেলতে ব্যস্ত। এদিকে স্নিগ্ধ সকালের কেবিনে ঢুকে হা করে সকালের দিকে তাকিয়ে আছে। মনে মনে বললো, “এই মেয়েকে দেখলে কে বলবে যে এই মেয়ে গতকালকে মৃত্যুর সাথে সাক্ষাৎ করে এসেছে?” স্নিগ্ধ গলা ঝেড়ে বললো,
-“এক্সকিউজ মি!”

সকাল ফোন থেকে চোখ উঠিয়ে স্নিগ্ধর দিকে তাকাতেই ওর মুখটা আপনা আপনি হা হয়ে গেল। ও মুখ ফসকে বলেই ফেললো,
-“ক্রাশ!”

স্নিগ্ধ সকালের কথা শুনে ভ্রু কুঁচকালো। সকাল তখনো স্নিগ্ধর দিকে নিজের ক্রাশিত চোখ নিয়ে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে। মনে মনে বললো, “এত হ্যান্ডসাম ছেলে আমি আমার লাইফে একটাও দেখি নি। এত কিউট ছেলে হয়? হায়…. পুরাই একটা চকোলেট বয়।” স্নিগ্ধর একটু অস্বস্তি হতে লাগলো সকালের এমন চাহনি দেখে। সে গলা ঝেড়ে সকালের সামনে যেয়ে দাঁড়ালো। তখনি আখি আর একটা নার্স কেবিনে ঢুকলো। সাথে সকালের মা-ও আসলো। আখি স্নিগ্ধর সাথে সকালের মায়ের পরিচয় করিয়ে দিল।

-“আন্টি উনি হলো ডক্টর স্নিগ্ধ আহমেদ। উনিই আপনার মেয়ের অপারেশন করেছে। আর স্নিগ্ধ উনি হলেন পেশেন্টের মা।”
-“আসসালামু আলাইকুম আন্টি।”
-“ওয়ালাইকুমুস সালাম। তোমাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ বাবা। তুমি যে আমাদেরকে কি ফিরিয়ে দিয়েছো তা তুমি জানো না। ও আমাদের পরিবারের সবার প্রাণ।”
-“জ্বি আন্টি আমি বুঝতে পারছি।”

স্নিগ্ধ আর সকালের মা কথা বলছিল। এই ফাঁকে আখি এলো সকালের পালস্ চেক করতে। আখি সকালের দিকে তাকিয়ে দেখে ও স্নিগ্ধর দিকে একধ্যানে তাকিয়ে আছে। আখি অবস্থা বুঝতে পেরে মুচকি হেসে সকালের গাল টেনে দিল। ওমনি সকালের ধ্যান ভাঙ্গলো। ও গালে হাত বুলাতে বুলাতে আখির দিকে চোখ ছোট ছোট করে তাকালো। আখি ফিসফিস করে বললো,
-“কি দেখছো ওভাবে ওর দিকে তাকিয়ে?”
-“ইয়ে না মানে উনি আমার অপারেশন করেছেন গতকাল?”
-“জ্বি।”
-“উনি কি বিবাহিত?”
আখির হাসিটা এবার আরেকটু বড় হলো। বললো,
-“না উনি এখনো সিঙ্গেল।”
-“গ্রেট! তাহলে তো একটা চান্স নেওয়াই যায়।”

সকাল কথাটা একটু জোরেই বলে ফেলল। যা শুনে স্নিগ্ধ আর সকালের আম্মু ওর দিকে তাকালো। আখি সকালের কথা শুনে ঠোঁট কামড়ে হাসি আটকানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে যাচ্ছে।

-“ইজ এভরিথিং ওকে?”
-“ইয়েস অল ওকে।”
-“হুম। সো মিস….”
-“সকাল।”
-“হুম মিস সকাল এখন আপনি কেমন ফিল করছেন?”
-“দুর্দান্ত।”
-“জ্বি!”
-“আই মিন খুব ভালো।”
-“হুম গুড। একদিনে আপনার অবস্থা এতো ভালো হয়েছে দেখে আমারও ভালো লাগলো।”
-“সকাল বোরিংনেস সহ্য করতে পারে না। আর হসপিটাল একটা বোরিং জায়গা। তাই তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাচ্ছি।”
-“হসপিটাল কারই বা ভালো লাগে বলুন?”
-“বাট আমার আজকে এই হসপিটালটা অনেক ভালো লাগছে।”
-“এক্সকিউজ মি!”
-“না মানে কিছু না।”

আখি স্নিগ্ধ আর সকালের ফেস এক্সপ্রেশন আর কথোপকথন শুনে নিঃশব্দে হেসে যাচ্ছে। স্নিগ্ধ সকালের ওর দিকে তাকানো দেখে আন্দাজ করতে পারছে যে ওর মনে কি চলছে। স্নিগ্ধ সেসব উপেক্ষা করে সকালের রিপোর্ট গুলো দেখতে লাগলো। আর সকাল গালে হাত দিয়ে স্নিগ্ধকে দেখছে। আখি সকালের পাশে এসে দাঁড়ালো। ফিসফিস করে বললো,
-“সত্যি কি পছন্দ হয়েছে ডক্টরকে?”
-“পছন্দ হয়েছে মানে কি বলছো? আমি তো রীতিমতো ফিদা হয়ে গেছি ওনার উপর।”
-“তোমার চয়েস খুব ভালো বলতে হচ্ছে।”
-“বাই দ্যা ওয়ে নাম কি এই হ্যান্ডসাম ডক্টরের?”
-“স্নিগ্ধ।”
-“দেখতেও স্নিগ্ধ আর নামও স্নিগ্ধ। হায়য়য়…..
-“হাহাহা…. এই ডক্টর সাহেবকে পটানো এতো ইজি না।”
-“বুঝতে পেরেছি আমি।”
-“কিভাবে?”
-“যেখানে সব ছেলেরা আমার জন্য পাগল, সেখানে উনি আমার দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না।”
-“হুমম একটু কষ্টকর হবে তোমার জন্য।”
-“নো প্রবলেম। যে জিনিস কষ্ট করে পেতে মজা লাগে সেই মজা সহজ জিনিসে কোথায়!”
-“বাহ্ তুমি তো খুব ভালো কথা বলতে পারো।”
-“একটু বেশি পেকে গেছি তো তাই।”

আখি আর সকাল হাসতে লাগলো। স্নিগ্ধ ভ্রু কুঁচকে তাকালো ওদের দিকে। হাতে রিপোর্ট নিয়ে এগিয়ে গেল সকালের দিকে।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here