সেই সন্ধ্যা পর্ব-১৬

0
1690

#সেই_সন্ধ্যা
#সুমাইয়া_সিদ্দিকা_আদ্রিতা
#পর্ব_১৬
.
স্নিগ্ধ সকালের দিকে তাকিয়ে দেখে সকাল ওর দিকে ভ্রু কুঁচকে গাল ফুলিয়ে বসে আছে। স্নিগ্ধ বুঝতে পেরে হেসে এক ওয়েটারকে ডেকে আইসক্রিম দিয়ে যেতে বললো। সকালও তাতে দাঁত বের করে হেসে দিল। আইসক্রিম খাওয়ার সময় স্নিগ্ধ এক ধ্যানে সকালের দিকে তাকিয়ে আছে। সকাল অলরেডি দু’টো আইসক্রিম শেষ করে ফেলেছে। বর্তমানে তিন নম্বর আইসক্রিমটা খাচ্ছে সে। সকাল স্নিগ্ধর দিকে তাকিয়ে স্নিগ্ধর চোখের সামনে হাত নাড়াতেই হকচকিয়ে গেল স্নিগ্ধ। সকাল জিজ্ঞেস করলো,
-“কি দেখছিলেন ওভাবে তাকিয়ে?”
-“না মানে ওই… তোমার..তোমার ঠোঁটের পাশে আইস..আইসক্রিম লেগে গিয়েছে।”
-“ওহ আচ্ছা।”

সকাল চোখ দু’টো ট্যারা করে নিচে তাকিয়ে ঠোঁট নাড়িয়ে বোঝার চেষ্টা করছে, আসলে আইসক্রিমটা ঠোঁটের কোথায় লেগেছে! তা দেখে স্নিগ্ধর পেট ফেটে হাসি চলে আসলো। কোনোমতে নিজেকে সামলে টেবিল থেকে টিস্যু নিয়ে সকালের ঠোঁটের পাশে লেগে থাকা আইসক্রিম মুছে দিল। স্নিগ্ধর স্পর্শে সকাল হালকা কেঁপে উঠলো। স্নিগ্ধর দিকে একবার তাকিয়ে লজ্জা পেয়ে চোখ নিচে নামিয়ে নিলো। সকালের গালের লালিমা দেখে স্নিগ্ধ মুচকি হাসলো।

পরশ নিজের রুমে পায়চারি করছে। বুকের ভেতরটা কেমন যেন হাসফাস করছে ওর। ভীষণ অস্থির লাগছে। চোখের সামনে বারবার ভেসে উঠছে সকালের সেই হাস্যজ্বল চেহারাটা। পরশ সকালকে চায়। ভীষণ ভাবে পেতে চায় ও সকালকে নিজের করে। হঠাৎই চোখের সামনে ভেসে উঠলো আজ রাস্তায় স্নিগ্ধ আর সকালের হাত ধরে পাশাপাশি হাঁটার দৃশ্য। ওমনি ওর চোখ যেন জ্বলে উঠলো। পরশের বারবার মনে হচ্ছে, স্নিগ্ধ ওর সকালকে ওর কাছ থেকে কেঁড়ে নিতে চাইছে। সকালের ওপর স্নিগ্ধ নিজের অধিকার ফলাতে চাইছে। পরশ অনেক ভাবনা চিন্তা করার পর এক কঠিন সিদ্ধান্ত নিলো।
সকাল শুয়ে শুয়ে ল্যাপটপে আফির সাথে ভিডিও কলে কথা বলছিল। হঠাৎ আফি বলে উঠলো,
-“সকাল!”
-“হ্যা, বল।”
-“স্নিগ্ধ ভাইয়াকে কবে বলবি নিজের মনের কথাটা?”
সকাল শোয়া থেকে উঠে বসে ইতস্তত করে জিজ্ঞেস করলো,
-“মানে?”
-“তুই স্নিগ্ধ ভাইয়াকে ভালোবাসি কথাটা কবে বলবি?”
চমকে উঠে সকাল বললো,
-“পাগল তুই? আম..আমি উনাকে কিভাবে?”
-“টিপিক্যাল সাজিস না তো, প্লিজ! তুই উনাকে ভালোবাসিস তা তোর চোখ-মুখ দেখলেই বোঝা যায়। উনার সামনে তুই যেভাবে লজ্জা পাস, যেভাবে খুশি হোস, ছলছল দৃষ্টিতে যেভাবে তাকাস! তাতে যে কেউ বুঝে যাবে তুই স্নিগ্ধ ভাইয়াকে ভালোবাসিস।”
সকাল কিছু বললো না। সকালকে চুপ করে থাকতে দেখে আফি বললো,
-“দেখ, ঢং করিস না। উনাকে ভালোবাসিস তো নির্দ্বিধায় বলে দে উনাকে।”
সকাল অসহায় চেহারা নিয়ে বললো,
-“কিন্তু উনি কি রাজি হবেন?”
-“আলবাত রাজি হবেন। কারন আমিও উনার চোখে তোর জন্য ভালোবাসা দেখেছি।”
-“হয়তো ভুল দেখেছিস তুই। আমার এখনো পুরোনো কথাগুলো স্পষ্ট মনে আছে। উনি বলেছিলেন ভালো লাগা আর ভালোবাসা আলাদা জিনিস।”
-“হ্যা, অবশ্যই ভালো লাগা আর ভালোবাসা দু’টো অনুভূতি।”
-“এমনও তো হতে পারে যে আমি শুধু উনার ভালো লাগা!”
-“বাজে বকিস না তো! চুপচাপ কাল কলেজে যেয়ে উনাকে তোর মনের কথাটা বলে দিবি।”
-“সিয়র!”
-“হান্ড্রেড পার্সেন্ট সিয়র।”
রাতে ডাইনিং টেবিলে খেতে বসে অনুভব ওর বাবাকে বললো,
-“বাবা!”
-“হ্যা বলো।”
-“আমি পরশু কানাডা ব্যাক করছি।”
-“কেন?”
-“সামনেই আমার এক্সাম বাবা। বিজনেস আর ঘুরাঘুরি করতে করতে তো আমার পড়াশোনা জলে ভেসে গেল।”
-“পরশু যেতেই হবে? পরে গেলে চলবে না!”
-“না পরশুই যেতে হবে। পরীক্ষা আগামী সপ্তাহে।”
-“আচ্ছা তাহলে আমিও তোমার সাথে ফিরে যাব। অ্যান্ড ইট’স ফাইনাল। নো মোর ওয়ার্ডস।”
-“ঠিক আছে।”
সকাল ওদের কথা শুনে খাবার মুখে দিয়ে বললো,
-“আপনি এখনো পড়াশোনা করেন?”
-“হ্যা।”
-“ওওও… মানুষ এত পড়াশোনা কিভাবে করে?”
-“যেভাবে তুমি পড়ছো, সেভাবে।”
-“হুহ!”

অনুভব মুচকি হেসে আড়চোখে বারবার সকালের দিকে তাকাতে লাগলো। সকাল নিজের মতো খেয়ে-দেয়ে উঠে চলে গেল। অনুভব সেদিকে তাকিয়ে এক দীর্ঘশ্বাস ফেললো। পছন্দের মানুষটা যদি ঠিকভাবে পাত্তা না দেয়, তবে চোট সোজা হৃদয়ে গিয়ে লাগে।
পরদিন সকাল নিজের সবগুলো জামা ছড়িয়ে ছিটিয়ে তার দিকে তাকিয়ে বসে আছে। মেজাজটা খারাপ হয়ে আছে। মেডিকেলে আজ অনুষ্ঠান থাকায় বুঝতেই পারছে না কি পড়ে যাবে। অবশেষে ও চিন্তা ভাবনা করার পর আফিকে ভিডিও কল দিল। আফি কল রিসিভ করতেই সকাল বললো,
-“সকাল না অনেক কনফিউজড।”
-“কোন ব্যাপারে?”
-“সকাল আজকে কোন জামা পড়বে?”
-“তুই একটা চিজ বটে।”
-“আমি চিজ না তো! আমি তো মানুষ।”
-“তুই মানুষ না। তুই একটা এলিয়েন।”
সকাল গাল ফুলিয়ে বললো,
-“সকাল কিন্তু অনেক রাগ করবে?”
-“ঢংগী!”
-“অ্যাঅ্যা…. তুই পঁচা।”
-“উফফ… চুপ কর। দেখি, আমাকে ড্রেস দেখা।”
-“এখনি দেখাচ্ছি।”

সকাল ক্যামেরা ঘুরিয়ে ওর সবগুলো জামা দেখালো। শেষে আফি সকালকে একটা হলুদ রঙের স্টাইলিশ লং কুর্তি বেছে দিল পড়ার জন্য। ভিডিও কলেই আফিকে একটা লম্বা চুমু দিয়ে ফোন কেটে দিল সকাল। আকাশি রঙের জিন্সের সাথে কুর্তি পড়ে, গলায় কালো রঙের স্কার্ফ পেঁচিয়ে তৈরি হয়ে বেরিয়ে গেল বাসা থেকে। অনুষ্ঠান বিকেলে থাকায়, সকাল পাঁচটায় এসে মেডিকেলে ঢুকলো। মেডিকেলে ঢুকতেই পরশ এসে ওর সামনে দাঁড়ালো। সকাল মৃদু হেসে বললো,
-“এভাবে হুট করে সামনে এসে দাঁড়ালে কেন?”
-“একটু আসবে আমার সাথে? তোমার সাথে কিছু কথা ছিল।”
-“হ্যা বলো।”
-“এখানে না। আমরা মেডিকেলের পেছন দিকে যাই!”
-“ওদিকে কেন? যা বলার এখানেই বলো।”
-“প্লিজ সকাল, চলো না প্লিজ!”
-“এমন করছো কেন? কি এমন কথা বলবে যে মেডিকেলের পেছনে যেতে হবে?”
-“তুমি কি আমাকে বিশ্বাস করো না!”
-“এটা কি ধরনের কথা? বিশ্বাস করি বলেই তো বন্ধুত্ব করেছি তোমার সাথে।”
-“তাহলে প্লিজ চলো আমার সাথে।”
-“বুঝেছি! তুমি আমাকে ওখানে নিয়ে গিয়ে তবেই শান্ত হবে। আচ্ছা চলো। শুনি কি এমন বলবে তুমি।”

পরশ হালকা হেসে সামনের দিকে পা বাড়ালো। সকাল পরশের পেছন পেছন যেতে গিয়ে দেখলো আফি আসছে। সকাল হাত নাড়িয়ে এদিকে আসতে বলে পরশের পেছনে চলে গেল। পরশ আফিকে খেয়াল করে নি। পরশ এখন শুধু ভাবছে কিভাবে সে নিজের মনের কথাটা বলবে সকালকে। মেডিকেলের পেছনে এসে থামতেই সকাল আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো খুবই শান্ত একটা পরিবেশ এদিকটায়। এবার পরশের দিকে তাকিয়ে সকাল জিজ্ঞেস করলো,
-“বলো কি বলতে চাও।”
-“না মানে… আসলে আমি… বলতে চাচ্ছিলাম… আমি তোমাকে…”
-“এত আমতা আমতা করছো কেন? যা বলবে সরাসরি বলে ফেলো।”
-“তুমি রাগ করবে না তো!”
-“রাগ কেন করবো? তুমি কি আমাকে রাগানোর মতো কিছু বলবে?”
-“জানি না।”
সকাল পরশের চেহারা দেখে ফিক করে হেসে দিয়ে মজা করে বললো,
-“তোমার এত নার্ভাসনেস দেখে আমার মনে হচ্ছে তুমি আমাকে প্রপোজ করতে চাইছো।”

কথাটা শুনতেই চমকে উঠলো পরশ। কিছুক্ষণ সকালের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। সন্ধ্যে নামতে শুরু করেছে। সন্ধ্যার এই হালকা আলো সকালের চোখেমুখে পরে এক অসম্ভব সৌন্দর্য সৃষ্টি করছে। ভালোবাসার মানুষটাকে ভালোবাসার নজরে দেখলে হয়তো এমনই লাগে। পরশেরও তার ব্যতিক্রম কিছু মনে হচ্ছে না। বেশ কিছুক্ষণ এভাবে কেটে যাওয়ার পর সকালের দিকে তাকিয়ে থেকে পরশ বললো,
-“হ্যা।”
-“কি হ্যা?”
-“আই লাভ ইউ।”

সকাল গম্ভীর মুখে পরশের দিকে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে থেকে আবারও ফিক করে হেসে দিল। সকালের এই হাসির কোনো মানে খুঁজে পেলো না পরশ। ও সকালকে প্রপোজ করলো। আর সকাল কি-না তাতে পাত্তাও দিল না! আচ্ছা, সকাল কি মজা হিসেবে নিয়েছে ব্যাপারটা? চিন্তাটা মাথায় আসতেই পরশ বললো,
-“হাসছো কেন তুমি?”
-“ওমা! হাসবো না? আমি যেটা বললাম, তুমি তো সেটাই করলে।”
পরশ অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো সকালের দিকে। সকাল কোনোমতে নিজের হাসি থামিয়ে বললো,
-“অনেক মজা হয়েছে পরশ। এবার বলো, কি এমন জরুরি কথা বলার জন্য এখানে ডেকেছো আমাকে?”
-“সকাল আমি কিন্তু কোনো মজা করি নি। আমি সত্যি বলছি। আমি তোমাকে পছন্দ করি। ইনফ্যাক্ট ভালোবাসি বলতে পারো। সেই প্রথমদিন থেকেই তোমাকে আমি লক্ষ্য করতাম। ভালো লাগতো তোমাকে দেখতে। তারপর আস্তে আস্তে আমার মনে হলো আমি তোমার সাথে আর কথা না বলে থাকতে পারবো না। তাই তোমার সাথে বন্ধুত্ব করে ফেললাম। কিন্তু এখন! এখন আমার মনে হচ্ছে আমি তোমাকে হারিয়ে ফেলবো। তোমাকে আমি হারিয়ে ফেলতে চাই না সকাল। আমি তোমাকে সারাজীবন নিজের কাছে রাখতে চাই। আমার ভালোবাসায় তোমাকে রাঙিয়ে দিতে চাই। ভালোবাসি তোমাকে আমি।”

সকাল ড্যাবড্যাব করে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো পরশের দিকে। সকাল অবাক হয়েছে। শুধু অবাক নয় অনেক অবাক হয়েছে সাথে বিস্মিতও হয়েছে। এরকম কিছু ভাবতেও পারে নি ও পরশের ব্যাপারে। সকাল জোরপূর্বক মুখে হাসি টেনে বললো,
-“তুমি আমার সাথে মজা করছো পরশ?”
-“এখনো আমার কথাগুলো তোমার কাছে মজা মনে হচ্ছে?”
-“তার মানে সত্যি সত্যি তুমি….”
-“হ্যা। সত্যি সত্যি আমি তোমাকে ভালোবাসি।”

এই মুহূর্তে কি বলা উচিৎ তা বুঝতে পারছে না সকাল। কিন্তু এভাবে ধোঁয়াশার মধ্যে রাখাটাও উচিৎ হবে না ছেলেটাকে। এই ভেবে সকাল এক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে পরশের চোখের দিকে তাকিয়ে বললো,
-“আমি জানি ভালোবাসাটা হুট করে হয়ে যায়। কিন্তু তোমার বোঝা উচিৎ ছিল আমি তোমার সাথে বন্ধুত্ব করেছি। এর মানে আমি তোমাকে শুধু আমার বন্ধু ভাবি। তার বেশি কিছু আমি তোমাকে কখনো ভাবি নি পরশ। কিন্তু বন্ধুত্বের মর্যাদাটা তুমি রাখতে পারলে না। আমি অন্য একজনকে পছন্দ করি পরশ। প্লিজ তুমি আমাকে ভুলে যাও। আমি চাই না তুমি এসব ভেবে কষ্ট পাও। আমি চাই তুমি এটা ভেবে সন্তুষ্ট থাকো যে আমি হয়তো তোমার ভাগ্যে লেখা ছিলাম না। আই হোপ তুমি আমার কথাটা বুঝতে পারছো!”
পরশ নির্লিপ্ত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
-“সেই অন্য একজনটা কি স্নিগ্ধ স্যার?”
সকাল নিচের ঠোঁট কামড়ে মাথাটা এবার নিচু করে আবারও পরশের চোখের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়ালো। তা দেখে পরশ মলিন হেসে বললো,
-“আচ্ছা। তাহলে তুমি যাও এখন।”
-“তুমি?”
-“চিন্তা করো না, আমি ঠিক আছি। একটু একা থাকতে চাইছি এখন।”
-“প্লিজ পরশ আমি চাই না তুমি মন খারাপ করো। দেখো, শুনতে খারাপ লাগলেও সত্যি এটাই যে আমার মনে তোমার জন্য একজন বন্ধুর থেকে বেশি আর কোনো ফিলিংস নেই।”
-“হ্যা বুঝেছি। এবার একটু একা ছাড়বে আমাকে?”
সকাল মন খারাপ করে পরশের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চলে যেতে গেলে পেছন থেকে পরশ বলে উঠলো,
-“বন্ধু যখন বানিয়েছো, তখন তোমার পিছু আমি এ জীবনে ছাড়ছি না। তোমার প্রেমিক না হতে পারলাম তাতে কোনো দুঃখ নেই। তোমার বন্ধু হতে পেরেছি এই অনেক। সারাজীবন এই বন্ধুত্বের হাত ছাড়বো না। সব সময় তোমার পাশে থাকবো তোমার একজন ভালো বন্ধু হয়ে।”

অশ্রুসিক্ত নয়নে কথাগুলো বলে সকালের দিকে একপলক তাকিয়ে উল্টো দিকে ঘুরে গেল পরশ। সকাল পরশের দিকে ছলছল দৃষ্টিতে তাকিয়ে চলে গেল। পরশ এতক্ষণ নিজের আটকে রাখা কান্নাটা আর দমিয়ে রাখতে পারলো না। হাঁটু ভেঙে নিচে বসে কেঁদে ফেললো। খুব কষ্ট হচ্ছে ওর। মনে হচ্ছে আজ ওর কলিজাটা কেউ টেনে ছিঁড়ে ফেলছে। পরশ দাঁত দিয়ে নিজের হাত কামড়ে ধরলো কান্না থামানোর জন্য। সত্যি একতরফা ভালোবাসা গুলোর মতো যন্ত্রণা আর কিছুতে নেই।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here