সেদিনও জ্যোৎস্না ছিল পর্ব-২০

0
5987

#সেদিনও_জ্যোৎস্না_ছিল

#তানিয়া

পর্ব:২০

বাবলি কাটা চুল,মিনি স্কার্ট,হাতকাটা জামা, পায়ে পেনসিল হিল! বাহ্ এমন মেয়েকে দেখলে ছেলে কেনো মেয়েরাই নিজেদের হিংসে করবে।সোহানা বসে আছে ড্রয়িং রুমে আর তাকে ঘিরে বসেছে বাড়ির সবাই।শাহেদের ইমিডিয়েট খবর পেয়ে সোহানা ফ্লাইটের টিকিট কেটেই চলে এসেছে।আর এসেই বাড়ির সবাইকে এমনভাবে চমক দিল যে সবার পিলে ধরে গেলো। প্রথমে তো কেউ বুঝতেই পারলো না হঠাৎ কে এলো পরে সোহানা নিজের পরিচয় দিতেই সব নিস্তব্ধ হয়ে গেলো। মেহু কোলাহল শুনে নিচে আসতেই দেখে বাড়িতে একটা মেয়েকে সবাই ঘিরে বসে আছে। আর সেটা দেখে তার বুকটা ধ্বক করে উঠে। অচেনা ভয় যেন মনে নাড়া দিচ্ছে। নিজেকে সামলে নিয়ে এগিয়ে যেতে নীলা চোখ বড় করে মেহুকে কিছু বলার চেষ্টা করে মেহু সেটা বুঝতে না পেরে সামনে এসে দাঁড়ায়।লুৎফা মেহুকে দেখছে আর মনে মনে আশংকা করছে এখন কি হবে সেটার?লুৎফার ভাবার বাকি আর সোহানা চট করে এসে মেহুকে প্রশ্ন করে।

“হাই আমার যদি ভুল না হয় তবে তুমিই আদ্যর ওয়াইফ।আ্যম আই রাইট?”

মেহুর মুখ থেকে জবাব আসে না সে বার বার সোহানাকে দেখছে।কি মিষ্টি একটা মেয়ে! তবে ড্রেসআপ তেমন ভালো না অন্তত বাঙালি জাতির জন্য এটা লজ্জাজনক পোশাক।আর এ মেয়ে কতো অনায়াসে এ পোশাকে সবার সাথে আলাপ করছে।সোহানা উত্তর না পেয়ে তুড়ি বাজায় মেহুর সামনে।মেহু চমকে উঠতে সোহানা আবারও প্রশ্ন করে।মেহু মাথা নেড়ে জানান দেয় সে আদ্যর স্ত্রী। সোহান হাত বাড়িয়ে দেয় হ্যান্ডশেক করার জন্য মেহুর ইচ্ছে করছে না তবুও ভদ্রতা বজায় রাখতে কাজটা করলো।

“হেই আমি সোহানা ইউএসএ থেকে আসছি।শাহেদ আঙ্কেল নিশ্চয়ই তোমাদের আমার কথা বলেছে?আসলে আঙ্কেলের মুখ থেকে সবটা শুনে এত খারাপ লাগলো যে কি বলবো।তাছাড়া এটাও ভাবলাম এত হ্যান্ডসাম একটা ছেলে শেষে কিনা কাজের মেয়েকে বিয়ে করলো।মনে মনে খুব আফসোস করলাম তবে সেটাকে স্থায়ী করতে দিলাম না কারণ তুমিও বিপদে পড়েছো তাই হঠাৎ এমনটা হলো।যাই হোক তোমরা যদিও সবটা জানো তবুও বলছি আমার এখানে আসার একটাই কারণ সেটা হচ্ছে আদ্য আর মেহুর যখন ডিভোর্স হবে তার পর পরই আমাদের বিয়ে হবে।সে সময়টুকু আমি এ বাড়িতে থাকবো। আফটার অল যার সাথে বিয়ে হবে তাকে একটু জেনে নেওয়া উচিত আর তোমাদের ডিভোর্স এর সেই সময়টা নিশ্চয়ই কম হবে না।তাছাড়া আদ্যকে অপছন্দ করার মতো কোনো বিষয় নেই ওকে আমি ছোট থেকেই পছন্দ করতাম যদিও মাঝখানে বিচ্ছিন্ন সময় থাকাই আদ্যকে প্রায় মনে ছিলো না তবে এখন সেটা আর হচ্ছে না।এবার রোজ আদ্যকে চোখের সামনে দেখবো।

আচ্ছা আমার রুমটা কোথায়? আমি খুব ক্লান্ত। এত লম্বা জার্নিতে তো আর এত বকবক করা যায় না। নাউ আমার রেস্ট দরকার তাই আমার রুমটা দেখিয়ে দিলে ফ্রেশ হতে পারতাম।”

সোহানা সবার দিকে সপ্রশ্নে তাকালো যদি উত্তর পাওয়া যায় কিন্তু সোহানার এত কথা শুনে সবার হুঁশ উধাও হয়ে গেলো।সোহানা বিরক্ত ভঙ্গিতে মেহুকে জিজ্ঞেস করে তার রুমের কথা। মেহু এতক্ষণ নির্লিপ্ত ভাবে সবটা দেখছিল।সে সোহানাকে রুম দেখাতে নিতে যেতেই সোহানা মেহুকে তার লাগেজ নিয়ে আসতে বললো।সোহানার কথায় লুৎফার মেজাজসহ বাকি সবার মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। একমাত্র সুজাতা মজা পেলো বিষয়টায়।সে মুখ টিপে হেসে উঠলো।

মেহুর হঠাৎ কান্না পেয়ে গেলো কান্নাটা সামলে নিয়ে সে সোহানার লাগেজ নিয়ে তাকে রুম দেখাতে গেলো। লুৎফা কিছু বলতেও গিয়েও বলতে পারলো না কারণ একে তো হাজার অশান্তি তখন দেখা যাবে তার কথা নিয়ে শাহেদ রাগারাগি করছে।তাছাড়া এতদূর থেকে মেয়েটা এসেছে কিছু বললেও হয়তো খারাপ লাগবে কিন্তু তাই বলে সে মেহুকে দিয়ে নিজের কাজ করাতে পারেনা।মেয়েটা হয়তো ভুলে গেছে মেহু কাজের মেয়ে নয় এ বাড়ির বউ আর আদ্যর বউ ই।

মেহু রান্নাঘরে ঢুকেই ডুকরে কেঁদে উঠলো।এতদিন সে এ বাড়ির সবার কাজ করেছে কিন্তু বিন্দু মাত্র খারাপ লাগে নি কিন্তু সোহানার সামান্য এ কাজে তার নিজেকে অনেকটা ছোট লাগছিলো মনে হচ্ছিল বিয়ের পর এ প্রথম কেউ তাকে কাজের মেয়ের হুকুম দিয়েছে। নীলা আর আমেনা দুজনে মিলে মেহুকে বোঝাচ্ছে। আমেনা নীলাকে বললো,

“বড় বৌ তুমি এ মাইয়াটারে অহোন তোমার লগে নিয়া যাও এহানে কানলে যে কেউ দেখবো।একটু ঘরে নিয়া বুঝাও তো আমি এদিকটা সামলায় লই।”

নীলা মেহুকে বার বার বলছে যে এ মেয়ে আদ্যকে কখনো বশ করতে পারবে না কিন্তু সেই কথা মেহু বুঝলে তো।মেহুর এক কথা সোহানার রূপে আমরা নিজেরাই কথা বলতে ভুলে গেছি সেখানে তো আদ্য পুরুষ। সে হয়তো মাথা ঘুরে পড়েই যাবে।নীলার মনে হলো মেহু ভুল কিছু বলে নি।সে কিছুটা ভাবনা চিন্তা করে চট করে মাথায় একটা বুদ্ধি নিয়ে এলো।

“আচ্ছা মেহু আমরা যদি আদ্যকে একটা পরীক্ষা করি কেমন হয় মানে তুমি এমন কিছু করবে যার ফলে আদ্যর মেজাজ খারাপ হয়ে যাবে। ”

মেহু জলভরা চোখে নীলার দিকে তাকায় আর মুখে ভাব আনে না বোঝার।নীলা বুঝতে পেরে বলে,

“বুঝলে না তো তাহলে শোনো আমি বলছি। দাড়াও আমি সূচীকে ডেকে আনি।কারণ আমার চেয়ে সূচী আরো ভালো বুদ্ধি দিতে পারবে।চাচী শ্বাশুড়ি অনেক ভাগ্য গুণে একটা মেয়ে পেয়েছেন।এতো চালাক সূচী।একটু অপেক্ষা করো।”

নীলা দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে এলো।আর কিছুক্ষণের মধ্যেই সে সূচীকে নিয়ে হাজির হলো।নীলা তার পরিকল্পনা এবার উপস্থাপন করলো।

…….যেহেতু মেহু আর আদ্যর সম্পর্কটা অন্য পাঁচটা সম্পর্কের মতো নয় তাই তাদের সম্পর্ককে আর পাঁচটা স্বামী স্ত্রীর মতো করতে হলে তাদের মধ্যে প্রেম সৃষ্টি করতে হবে আর সেই প্রেমটা সৃষ্টি করবে মেহু।

প্রেমের কথা শুনে মেহুর পিলে লাফালাফি শুরু করলো।যে লোকটাকে দেখলে তার চোখে অন্ধকার নেমে আসে,যে লোকের গলার স্বরে মেহুর গলা শুকিয়ে যায়,যার হৃদয় পাথরের মতো শক্ত সেই লোকের মনে মেহু জাগাবে প্রেম। মনে হচ্ছে জোর করে গাধাকে ঘোড়া বানানোর দায়িত্ব মেহুকে দেওয়া হচ্ছে। মেহু বার বার নিষেধ করে সে এগুলো পারবে না কিন্তু নীলা আর সূচী নাছোড়বান্দা তারা দুজনে মেহুকে জোর করে পুরো পরিকল্পনা শুনতে বাধ্য করলো।

মেহুর দায়িত্ব হচ্ছে আদ্য যা অপছন্দ করে সেগুলোই সে বারবার করবে।আর সোহানা যখন এসে পড়েছে তখন এমনভাব দেখাবে যাতে সোহানার আসায় তার কোনো ভাবান্তর নেই।সে হেসেখেলে সোহানার সাথে সময় কাটাবে।আদ্যর সামনে সোহানার সাথে এমন ভাব করবে যেন সোহানা এ বাড়িতে যে উদ্দেশ্যে এসেছে তাতে মেহুর কিছু যায় আসে না।এমনকি এ মুহুর্তে থেকে সে যতটা সম্ভব আদ্যকে এড়িয়ে চলবে।এতসব কাজে যদি আদ্যর মধ্যে সাময়িক কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় অর্থাৎ তোমার আচরণ আর ইগনোরেন্সে যদি বেচারা অস্থির বোধ করে তাহলেই বুঝবে তার মনে তোমাকে নিয়ে সামান্য হলেও ফিলিং আছে আর সেই ফিলিংটাকে ভালোবাসায় রূপান্তর করতে হবে কীভাবে করবে সেটা যদি মেহু শুনতে চায় তবে নীলার বলতে আপত্তি নেই। নীলার কথায় মেহু লজ্জায় মাথা নুইয়ে ফেলে।এ মেয়েটা কীভাবে যে এসব কথা বলে ফেলে মেহু ভেবে পায় না।আগে কখনো তাকে এমনটা মনে হয় নি।”

আদ্য বাড়িতে আসতেই দেখে সুন্দর একটা মেয়ে খুবই আপত্তিকর পোশাকে সবার সাথে বসে আলাপ করছে।শাহেদ বাসায় কল করে জানিয়েছিলো সোহানার আসার খবর যেন আদ্য না পায়। অফিস টাইম শেষে যখন আদ্য বাসায় যাবে তখনি সেই সোহানাকে দেখবে।আর সত্যি সত্যি তাই হলো।আদ্য এখনো জানে না তাদের বাসায় বসে থাকা এ অচেনা মেয়েটা আর কেউ নয় তার ছোট বেলার সেই বিরক্তিকর মেয়েটা।আদ্য কয়েক পা এগোতে সুজাতা বসা থেকে আদ্য বলে চেচিয়ে উঠে যেন আদ্যকে অনেক দিন পর দেখেছে।আসলে তার উদ্দেশ্য ছিলো সোহানার দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাতে সোহানা আদ্যকে দেখতে পায় আর তাই হলো।সোহানা আদ্য নাম শুনে সোজা হিরোইনদের মতো করে আদ্যকে জড়িয়ে ধরে আদ্য তখনো অবাক।এ মেয়ে কে,তাকেই বা কেনো এভাবে পরিচিত ভঙ্গিতে জড়িয়ে ধরলো।আদ্য ছাড়াতে যাওয়ার আগেই সোহানা বলে উঠলো,

“ওউউ আদ্য তুমি এতো লেট করে এলে কেনো। বাবু জানো কতক্ষণ তোমার অপেক্ষায় ছিলাম। সেই পাঁচ ঘন্টা আগে দেশে এসেছি আর তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।আঙ্কেল বলেছে তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে নাহলে তো এয়ারপোর্ট থেকে সোজা অফিসে যেতাম।”

আদ্য পাথরের মতো আটকে আছে। এ মেয়েটাকে তাকে ছাড়ছেও না বরং আরো শক্ত করে আটকে ধরেছে।কি বলছে কিছুই বুঝতে পারছে না মনে হয় পাবনা থেকে পালিয়ে এসেছে নাহলে এগুলো কি বলছে?ওদিকে দূর থেকে মেহু আগুন নেত্রে দুজনকে দেখছে।মনে মনে বকা দিচ্ছে সোহানাকে আর আদ্যকে। মেয়েটা না হয় বেহায়া কিন্তু আদ্য সেও কি এমন নাকি?কীভাবে মেয়েটার বুকের সাথে লেপ্টে আছে দেখো মনে হচ্ছে এত আরাম সে জীবনেও পায় নি।মেহুর ইচ্ছে হলো দুজনকে গিয়ে গরম পানি ঢালতে কিন্তু সেটা সম্ভব হচ্ছে না।অনেক্ক্ষণ চেষ্টার পর আদ্য সফল হয় সোহানাকে ছাড়াতে।জিজ্ঞেস করে সে কে?সোহানা বিরাট হা করে এমন একটা ভাব করে যেন তাকে না চিনেটা বড় ধরনের কোনো অপরাধ।

“হোয়াট দ্যা হেল আদ্য? তুমি আমাকে চিনতে পারছো না আরে আমি সোহানা, আমার বাবা সাজ্জাদ মানে তোমার বাবার বন্ধু সাজ্জাদের মেয়ে আমি।”

আদ্য এতক্ষণে বুঝলো এই সেই রোগা পটকা মেয়েটা যে কিনা তাকে ছোট থাকতে খুব জ্বালাতো।কিন্তু এ কি তার তো অনেক পরিবর্তন হয়েছে আগের মতো সেই রোগা নেই এখন স্বাস্থ্য বেশ হয়েছে। আদ্য কিছু বলতে যেতেই হঠাৎ মেহুকে দেখতে পায় আর মেহুকে দেখেই সে একটা শয়তানি হাসি দেয়।তারপর খুব আহ্লাদের স্বরে সোহানার সাথে আলাপ করে।

“ওহো আই এ্যাম সরি সোহানা,তুমি এতো সুন্দর হয়ে গেছো যে আমি তোমাকে চিনতে পর্যন্ত পারি না।আমি তো ভাবতেই পারি নি আমার জন্য এত বড় সারপ্রাইজ বাড়িতে অপেক্ষা করছে নাহলে তো সব কাজ ফেলে সেই কখন চলে আসতাম।বাই দ্যা ওয়ে তুমি অপেক্ষা করো আমি জলদি ফ্রেশ হয়ে এসে তোমার সাথে আড্ডা দিবো।অনেক গল্প হবে আজ।”

কথা শেষ করে আদ্য উপরে উঠে আসে আর সোহানা খুব লোলুপ চাহনিতে সেদিকে চেয়ে থাকে।ওদিকে মেহুর শরীর রাগে শিরশির করতে থাকে।

“আমার সাথে ধমক আর রাগারাগি ছাড়া কিছুই পারেনা আর ঐ বিদেশীর সাথে কি মিষ্টি মিষ্টি কথা। যেন কথা নয় মধু ঝরছে মুখ থেকে। আমার সাথে কথা বলতে গেলে নিম তিতা বের হয় আবার বলে কিনা অনেক গল্প বাকি।কেনো রে গোল আলু আমিও কি কোনো অংশে কম নাকি।আমার সাথে গল্প করতে এলে আমি তোকে ঠাকুমার ঝুলি থেকে শুরু করে রাজা বাদশার সব গল্প বলতাম।আহ্ কি প্রেম মনে হচ্ছে মেলায় হারিয়ে যাওয়া দুই কপোত-কপোতী।”

সচরাচর আদ্য অফিস থেকে ফিরলে নিচেই নাশতা করে।কিন্তু আজ সে নিজের নাশতা তার রুমে দিতে বলেছে এমনকি তার নাশতার সাথে সাথে সোহানার নাশতাও দিতে বলেছে।মেহু দুজনের নাশতা উপরে নিয়ে উঠতেই দেখে দুজনের অট্টহাসিতে রুমের দেয়ালগুলো কাঁপছে। সেই সাথে মেহুর হাতের ট্রেটাও। মেহু অনেক কষ্টে ট্রেটা শক্ত করে ধরে রুমে ঢুকে।দুজনে মেহুকে দেখে কোনোরূপ পরিবর্তন হয় না বরং সোহানা আরো আবেগ নিয়ে কথা শুরু করে।মেহুর ইচ্ছে হলো মেয়েটাকে টেনে জানলা দিয়ে গলিয়ে দিতে কিন্তু এটা সম্ভব না।চাইলে দরজা দিয়ে ধাক্কাও দেয়া যায় কিন্তু সেটা পারবে না আদ্যর ভয়ে।মেহুর অনেক কিছু মন চাইছে কিন্তু ভয় আর সাহসের অভাবে কোনোটাই সে পারবে না।কিন্তু একটা কাজ সে মনে মনে করতে পারবে সেটা হলো গালি দেওয়া।ইচ্ছে মতো দুজনকে মনের মাধুরি মিশিয়ে গালি দিতে লাগলো আর আশ্চর্যের ব্যাপার একটু পর মেহুর মনটাও ভালো হয়ে গেলো।

প্রায় দুই ঘন্টা পর আদ্য আর সোহানা রুম থেকে বের হয়ে এলো।এরমধ্যে মেহু কয়েকবার উঁকিঝুঁকি দিয়েছিল অবশ্যি তাতে দেখলো দুজনের মাখামাখি ধরনের অবস্থা আর সোহানা তো কথায় কথায় আদ্যর গায়ের উপর ঢলে পড়ছে।মেহুর ইচ্ছে হলো চুলকানি পাতা নিয়ে দুজনের গায়ে ছিটিয়ে দিতে তাতে বোধ হয় গলাগলি বাদ দিয়ে দূরে দূরে থাকতো।

সোহানাকে নিয়ে বেশ হৈচৈ হলো খাবার টেবিলে।শাহেদ আহসান তো সোহানার প্রায় সকল খাবারের আয়োজন করেছেন এমনকি যে সুজাতা সবাইকে হুকুম দিতে থাকে সেই মানুষটা নিজেই উঠে এটা ওটা দিচ্ছে। লুৎফার রাগ লাগছে কিন্তু সেটা প্রকাশ করছেন না।মেহু দেখলো আদ্য সোহানাকে খাবার নিয়ে সাধাসাধি করছে।এতো আহ্লাদ হওয়ার কারণটা কি মেহু বুঝলো না।

রাতে মেহু কিছু না খেয়ে রান্নাঘর গুছিয়ে নিজের রুমে গেলো। আদ্য তখনো রুমে ফেরে নি।সোহানার সাথে বসে বসে গল্প করছে।মেহু রুম গোছাতে শুরু করলো।বিছানা ঠিক করলো তারপর ফ্রেশ হয়ে এসে ঘুমতে যেতে আদ্য রুমে ঢুকলো।খুব শান্ত ভঙ্গিতে মেহুকে জানালো মেহু যেন এ ঘরে না থাকে।সে যেন আজকের পর থেকে আবারও ছাদের সেই চালাঘরে গিয়ে থাকে।মেহু হা হয়ে গেলো আদ্যর কথায়।এতদিন তো সে এ ঘরে ছিল তাতে আদ্য তাকে কিছু বলে নি হঠাৎ কি হলো যে তাকে রুম ছাড়তে হলো।ভাবী আর সূচী বলেছিলো আদ্যকে পরীক্ষা করতে যে মেহুকে সে পছন্দ করে কিনা এখন তো তার আচরণে বোঝা যাচ্ছে আদ্য তাকে পছন্দই করে না তাহলে কীভাবে সে এখানে থাকবে।মেহু প্রশ্ন করতে গিয়ে দেখে আদ্য হাই তুলছে আর এমনভাবে তুলছে যেন তার অনেক ঘুম পেয়েছে। হাইয়ের মাধ্যমে সে মেহুকে রুম ছাড়তে আদেশ দিচ্ছে। মেহু কিছু না বলে রুম থেকে চলে গেলো।
,
,
,
চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here