#স্রোতের_টানে
লেখিকা:#Tarin_Niti
পর্ব:৪৩ (শেষ পর্ব)
আয়ান গাড়ি থেকে নেমে একপ্রকার দৌড়ে হসপিটালের ভেতরে আসল।তারপর রিসেপশন থেকে ফারিহা কোথায় আছে জেনে আবার ছুটলো ফারিহার কাছে যাওয়ার জন্য।আয়ান তিন তলায় গিয়ে দেখে ওটির সামনে মিস্টার আজাদ মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে।হনুফা বেগম একটু দূরে দাঁড়িয়ে শাড়ির আঁচলে চোখ মুছছে।আয়ান তাড়াতাড়ি করে হনুফা বেগম সামনে গিয়ে বললো,
“মনি ফারিহা কোথায়?ও্ ওর কি হয়েছে?”
হনুফা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বললো, “জানি না বাবা ডাক্তাররা ভেতরে নিয়ে গেছে।ফারিহা কি রকম যেন করছিল।আমার খুব ভয় লাগছে”
মিস্টার আজাদ একবার আয়ানের দিকে তাকিয়ে আবার আগের মত মাথায় হাত দিয়ে বসলো।আয়ান তো পারছে না এখনি ওটির ভেতর ঢুকে যায়।অস্থির হয়ে এদিক ওদিক পায়চারি করছে।তখনই ওটি থেকে একটা নার্স বেড়োলো।আয়ান ছুটে এসে নার্সকে কিছু বলতে যাবে কিন্তু তার আগেই নার্স তাড়াতাড়ি করে বললো,
“এক্ষুনি দুই ব্যাগ ও পজেটিভ রক্ত লাগবে পেশেন্টের প্রচুর ব্লিডিং হচ্ছে।আপনারা তাড়াতাড়ি রক্তের ব্যবস্থা করুন।”
আয়ান উত্তেজিত হয়ে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো,
“আ্ আমার স্ত্রী কেমন আছে?আর আমার বাচ্চা!”
“দেখুন এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।আপনারা তাড়াতাড়ি রক্তের ব্যবস্থা করুন।”
ইতিমধ্যে জিহাদ হসপিটালে চলে এসেছে।জিহাদ আয়ানকে বললো,
“স্যার আপনি চিন্তা করবেন না।আমি যেখান থেকে পারছি রক্তের ব্যবস্থা করছি।”
জিহাদ এদিক-ওদিক কল করতে লাগলো।তারপর 5 মিনিটের মধ্যেই রক্তের ব্যবস্থা হয়ে গেল।জিহাদ রক্তের ব্যবস্থা করা,ইনফেকশন,ঔষধ নার্সরা যা যা বলেছে সব জিহাদ ব্যবস্থা করে।আর আয়ান তো কিছু বলতেও পারছে না।আয়ানের শরীর অসম্ভব রকমের কাঁপছে।
_____________
প্রায় এক ঘন্টা পর নার্স তোয়ালে পিচ্চি একটা বাচ্চা নিয়ে হাসি মুখে ওটি থেকে বের হলো। নার্সকে বেরোতে দেখে আয়ান,মিস্টার আজাদ, হনুফা বেগম নার্সেটার কাছে গেল।আয়ান ওর বাচ্চা দিকে একবারও তাকালো না,উত্তেজিত হয়ে নার্সকে বললো,
“ফারিহা কোথায়?ও এখন কেমন আছে??”
নার্সটা হেসে বললো, “চিন্তা করবেন না।আপনার স্ত্রী এখন সুস্থ আছে কিছুক্ষণ পর উনাকে কেবিনে দেওয়া হবে।আপনার মেয়েকে তো দেখুন”
আয়ান এবার বাচ্চাটার দিকে তাকালো। একদম ফুটফুটে ছোট্ট একটা বাচ্চা।চোখ মুখ লাল, দেখতে কিছুটা ফারিহার মত হয়েছে।নাক, ঠোঁট সব ফারিহার মতো চোখ বন্ধ বলে আয়ান বুঝতে পারছে না।নার্সটা আয়ানের কোলে ওর মেয়েকে দিল।আয়ান কখনো বাচ্চাদের কোলে নেয় নি।কাঁপা কাঁপা হাতে ওর মেয়েকে কোলে তুলে নিলো তারপর শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরলো।ওর মেয়ে!আয়ান আজকে বাবা হয়েছে।আয়ান খুশিতে মেয়েকে বুকে জরিয়ে কান্না করে দিল।তারপর মেয়ের কপালে চুমু খেলো।
মিস্টার আজাদ আয়ানের কাছে এসে হাত বাড়ালো।আয়ান বাচ্চাটাকে মিস্টার আজাদের কোলে দিল। মিস্টার আজাদ ছলছল চোখে নাতনিকে দেখছে। হনুফা বেগমও বাচ্চাটাকে দেখে কাঁদছে।তারপর একে একে সবাইকে দেখিয়ে নার্স বেবিকে নিয়ে গেল কিছু পরীক্ষা করার জন্য।
প্রায় দুই ঘণ্টা পর ফারিহার জ্ঞান ফিরলো।ডাক্তার বলেছে একজন একজন করে দেখা করতে তাই মিস্টার আজাদ আগে আয়ানকে পাঠালো।আয়ান আস্তে আস্তে কেবিনে গিয়ে ফারিহার বেডের পাশে বসলো।তারপর খুব সাবধানে ফারিহার হাত ধরল। আয়ানের ছোয়ায় ফারিহা চোখ মেলে তাকালো।তারপর আয়ানকে দেখে মুচকি হাসলো।ফারিহা দুর্বল কন্ঠে বললো,
“আপনার কথাই ঠিক হয়েছে।নার্স বলল আমাদের নাকি মেয়ে হয়েছে?”
আয়ান ফারিহার ঠোটে আঙুল রেখে বললো,
“হুশ কথা বলো না তোমার কষ্ট হবে।আর হ্যাঁ আমাদের ঘরে একটা প্রিন্সেস এসেছে একদম তোমার মত দেখতে”
ফারিহা আয়ানের দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে আবার হাসলো।আয়ান ফারিহার একহাত ওর দু হাতের মুঠোয় নিয়ে চুমু খেলো।
আজকে ওরা দুজনেই কাঁদছে,বাবা মা হওয়ার আনন্দে কাঁদছে!
কিছুক্ষণ পর মিস্টার আজাদ আর হনুফা বেগমও ফারিহার সাথে দেখা করতে আসলো।
কয়ের ঘন্টা পর নার্স বাচ্চাটাকে নিয়ে এলো ফিডিং করানোর জন্য।ফারিহা ওর মেয়েকে বুকে জড়িয়ে কেঁদে দিল।মা হওয়ার অনুভূতি এতো আনন্দের!
.
প্রায় এক সপ্তাহ হসপিটালে থাকার পর ডাক্তার ফারিহাকে বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দিলো।এই এক সপ্তাহে আয়ান সারাদিনরাত হসপিটালে ছিল।একটা বারের জন্যও বাড়িতে যায়নি।জিহাদ আয়ানের পোশাক এনেছিল এখানেই ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নিত। কিন্তু ফারিহার পাশ একটুও নড়তো না।ডাক্তার নার্সরা আয়ানের পাগলামি দেখে হাসতো আবার ফারিহার এতো ভালো ভাগ্যের প্রশংসা করতো। মিস্টার আজাদ যত আয়ানকে দেখছে তত অবাক হচ্ছে।শিহাব আর নওশীনও প্রতিদিন এসে ফারিহার সাথে দেখা করে যেতো।
ফারিহা রেডি হয়ে ওর মেয়েকে কোলে নিয়ে বসে আছে।আজকে বাড়ি ফিরে যাবে!ফারিহার আনন্দে চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।তখন আয়ান কেবিনে এসে মিস্টার আজাদকে বললো,
“বাবা আমি চাই আমার মেয়ে প্রথমে আমার বাড়িতে যাক”
মিস্টার আজাদ কিছু বলতে গেলে আয়ান আবার বললো,
“প্লিজ এখন অন্তত আমার মেয়ে বউকে আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখবেন না।এই নয় মাসে ফারিহার থেকে দূরে থেকে আমি অনেক কষ্ট পেয়েছি।এবার আমার মেয়েকে আমার কাছ থেকে দূরে করবেন না!”
মিস্টার আজাদ হেসে বললো, “আমাকে এতটা খারাপ ভেবো না।এই কয়েক মাস ফারিহাকে আমি আমার কাছে রেখেছি তোমাকে বুঝতে দেওয়ার জন্য যে ফারিহাকে ছাড়া তুমিও ভালো থাকবে না।তুমি ফারিহাকে ভালোবাসো,আমার মেয়েকে যেনো আর কষ্ট না দাও তাই এই প্রক্রিয়া।কিন্তু আমিও একজন বাবা,আমি জানি একজন বাবার কাছে তার সন্তান কতোটা কাছের।আমি তোমার সন্তানকে তোমার থেকে আলাদা করবো না।তুমি তোমার মেয়েকে নিয়ে যেতে পারো”
মিস্টার আজাদের কথা শুনে আয়ান হাসিমুখে মিস্টার আজাদ কে জরিয়ে ধরলো। মিস্টার আজাদ একটু অবাক হলো কেননা এই প্রথম আয়ান ওনাকে জড়িয়ে ধরেছে।তারপর মিস্টার আজাদ একটু হেসে আয়ানের পিঠে হাত রাখল।ফারিহা ওর মেয়েকে কোলে নিয়ে ছলছল চোখে ওদেরকে দেখছে।ফারিহাও আজকে না করলো না কারণ ফারিহা তো অনেক আগেই আয়ানকে ক্ষমা করে দিয়েছে।আর আয়ানের থেকে ওর মেয়েকে দূরে রাখার অধিকার ফারিহার নেই।ফারিহা তো অনেক খুশি ওর মেয়ে বাবার ভালোবাসা পাবে।
প্রায় নয় মাস পর ফারিহা আয়ানের বাড়িতে পা রাখলো।ফারিহার চোখমুখ খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠছে।ও ওর নিজের সংসারে ফিরে এসেছে।আর সাথে করে নিয়ে এসেছে ওর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ ওর মেয়ে।বাড়িতে ঢুকে ফারিহা কিছুটা অবাক হলো!মনে হচ্ছে যেন বাড়িতে অনুষ্ঠানে লেগেছে।সবাই এদিক ওদিক ছুটাছুটি করছে।
ড্রয়িং রুমের ফ্লোরে রং বেরঙ্গের বেলুন পরে আছে। মনে হচ্ছে যেন কোন বাচ্চার জন্মদিন।ফারিহা অবাক হয়ে আয়ানের দিকে তাকালে আয়ান ভেতরে ঢুকে ফারিহার দিকে এক হাত বাড়িয়ে দিল।ফারিহা একহাতে মেয়েকে কোলে নিয়ে আরেক হাত আয়ানের হাতের উপর রাখল।
ফারিহার পিছুপিছু মিস্টার ভেতরে ঢুকলো।মিস্টার আজাদ এই প্রথম আয়ানের বাড়িতে আসলো।মিস্টার আজাদ সবকিছু দেখে অবাক হয় কারন এই এক সপ্তাহ আয়ান হসপিটালেই ছিল। তাহলে এসব আয়োজন কখন করলো কখন!সার্ভেন্টদের সবার চোখে-মুখে খুশির ঝিলিক।ফারিহার সাথে ওদের সম্পর্ক খুব ভাল ছিল।ফারিহা চলে যাওয়ার পর বাড়িটা যেন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছিল এখন আবার সব জীবন্ত হয়ে উঠেছে।সার্ভেন্টরা একে একে বাচ্চাকে কোলে নিল।সার্ভেন্ট হলেও ফারিহা ওদেরকে সবসময় কাছের মানুষ ভাবতো তাই নিজের মেয়েকে ওদের কাছে দিয়ে দোয়া চাইলো। সবার চোখ মুখ খুশি উপচে পড়ছে ওদের বাড়িতে একটা পরী এসেছে।
ফারিহা অনেক নিচে সময় কাটালো।আয়ান মিস্টার আজাদকে ফ্রেশ হওয়ার জন্য একটা রুম দেখিয়ে দিল তারপর ফারিহাকে নিয়ে উপড়ে গেল।উপরে এসে ফারিহা আরও অবাক হল।অনেকদিন পর আয়ানের রুমে এসে,ফারিহার শরীর কেঁপে উঠলো। তারপর ভেতরে এসে অবাক হয়ে দেখতে লাগলো। আয়ান রুমটা একদম বাচ্চাদের রুমের মতো সাজিয়েছে।ফারিহা অবাক হয়ে বললো,
“কি ব্যাপার এভাবে কে সাজালো?আপনি তো সব সময় সাদা কালো পছন্দ করেন।আজ এত রঙ্গিন!”
“এতদিন আমার মেয়ে ছিলনা এখন আমার মেয়ে এসেছে। আর ওকি সবসময় চোখের সামনে সাদা কালো দেখবে নাকি?তাই একদম বাচ্চাদের রুমের মত করে সাজিয়েছি।সুন্দর হয়েছে না?”
ফারিহা একটু এগিয়ে বাচ্চাকে দোলনায় শুইয়ে দিল। বিছানার পাশে দোলনাটা ছিল ফারিহা বাচ্চাটাকে শুইয়ে দিয়ে নিজে বিছানায় বসলো।আয়ান ফারিহার পাশে এসে বসলো।ফারিহা আয়ানের দিকে তাকিয়ে বললো,
“হুম সুন্দর হয়েছে।আচ্ছা ওর নাম কি রাখবেন ভেবেছেন?”
আয়ান উৎফুল্ল হয়ে বললো, “হ্যাঁ ভেবেছি।আয়ান আর ফারিহার মেয়ে আরিহা!আমার মেয়ের নাম হবে ‘আরিহা খান’।নামটা কেমন?”
আয়ানের প্রশ্নে ফারিহা চোখমুখ কুঁচকে বললো,
“আরিহা নামটা সুন্দর কিন্তু আমার নাম যেমন বাপির সাথে মিলিয়ে ফারিহা বিনতে আজাদ।আমি চাই আমার মেয়ের নামও ওর বাবার নামের সাথে মিল থাকবে।”
আয়ান ভ্রু কুচকে তাকালে ফারিহা হেসে বললো,
“আমার মেয়ের নাম হবে আরিহা বিনতে আয়ান!”
ফারিহার কথা শুনে আয়ানের ঠোঁট প্রসারিত হলো। তারপর বললো, “এটাতো আরো ভালো।আমার মেয়ের নাম আমার সাথে মিল থাকবে। হ্যাঁ এটাই ফাইনাল”
ফারিহা এখনো ভালো করে সুস্থ হয়নি তাই আয়ান খুব সাবধানে ফারিহাকে সাইড থেকে জড়িয়ে ধরলো, ফারিহা মুচকি হাসলো।
বিকেলের দিকে ঝুমা আন্টি রিমঝিম কে নিয়ে আসে ফারিহার সাথে দেখা করার জন্য।রিমঝিম তো বাচ্চাকে দেখে খুশিতে কখনো হাততালি দিচ্ছে কখনো বাচ্চাকে আদর করছে।ফারিহা এতদিন পর রিমঝিমকে কাছে পেয়ে খুশি হয়।ফারিহা চেয়েছিল রিমঝিমকে একেবারেই ওর কাছে নিয়ে আসবে আয়ানকে বলাতে আয়ান সম্মতি দিয়েছে।কিন্তু ঝুমা আন্টি দিতে চায় না।তাছাড়া রিমঝিম ফারিহাকে ভালবাসলেও অনাথ আশ্রম ওর বন্ধুদেরকে ছেড়ে এখানে আসবেনা।রিমঝিম ছোট হলেও ফারিহা রিমঝিমের কথা মেনে নে।কারণ বাচ্চারা যেটা করতে চায় সেটাই করতে দেওয়া উচিত।তাদের কথার বিরুদ্ধে কাজ করলে সেটা উল্টো তাদের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলবে।তবে ফারিহা প্রত্যেক সপ্তাহ অনাথ আশ্রম যায়।তখন তো রিমঝিমের সাথে দেখা হবেই।রিমঝিম আরিহার পাশে বাসে কিছুক্ষণ পর পর হাত ধরছে, চুমু খাচ্ছে।
.
রাতে ফারিহা রুমে এসে দেখে আরিহা কান্না করছে আর আয়ান ওকে কোলে নিয়ে পায়চারি করছে। ফারিহা নিচে গিয়েছিল মিস্টার আজাদের কোন অসুবিধা হচ্ছে কিনা দেখতে।এসে দেখে এই কান্ড! আয়ান আরিহাকে কোলে নিয়ে দোলাচ্ছে আর বলছে,
“সোনা মা আমার।কান্না করে না,এই তো বাবা এখানে।”
ফারিহা রুমে ঢুকতে ঢুকতে বললো, “কি?সেদিন তো বলেছিলেন আমি নয় মাস পেটে রাখলেই চলবে,।পৃথিবীতে আসার পর আপনি ওকে সামলাবেন। এখন পারছেন না কেনো?”
আয়ান একটু ভাব নিয়ে বললো, “কি বললো পারছিনা!এই দেখো আমি কোলে নিয়ে কান্নার আটকানোর চেষ্টা করছি”
“হ্যাঁ দেখছি তো কিভাবে চেষ্টা করছেন।দিন আমাকে দিন।”
ফয়রিহার আরিহাকে কোলে নেওয়ার সাথে সাথে আরিহার কান্না বন্ধ হয়ে গেল।আয়ান হা করে একবার ফারিহাকে দেখছি আর একবার আরিহাকে দেখছে।তারপর অবাক হয়ে বললো,
“এটা কি হলো? মায়ের কোলে যাওয়ার সাথে সাথে কান্না বন্ধ!আর আমি যে এতক্ষন আদর করলাম? শুনেছি মেয়েরা নাকি বাবার ভক্ত হয়,আমার মেয়ে তো দেখছি উল্টো!”
ফারিহা হেসে বলল, “চিন্তা করবেন না কিছুদিন যাক দেখবেন ঠিক হয়ে যাবে।”
ফারিহা আরিহার কান্না থামিয়ে ফিডিং করিয়ে দোলনায় শুইয়ে দিল।তারপর ব্যালকনির দিকে গেলল।ব্যালকনি গিয়ে ফারিহা অনেক অবাক হল কারণ এখানে আর একটাও ক্যাকটাস গাছ নেই সব ফারিহার পছন্দের ফুল গাছ।ফারিহা খুশি হয়ে পেছনে ফিরে দেখে আয়ান ব্যালকনির দরজার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।ফারিহা এক মুহূর্ত দেরি না করে ছুটে গিয়ে আয়ানকে জড়িয়ে ধরল।ফারিহা জানেনা এটা কেনা করেছে এই প্রথম হয়তো নিজ থেকে আয়ানকে জড়িয়ে ধরল।আয়ান ফারিহাকে আরো শক্ত করে ওর বুকের সাথে চেপে ধরলো।কিছুক্ষণ এভাবে থাকার পর আয়ান ওখানে রাখা একটা গোলাপ গাছ থেকে লাল গোলাপ নিয়ে ফারিহা সামনে হাঁটু গেড়ে বসে বললো,
“আমার এতদিনের করা সব কাজকর্মের জন্য তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি।প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও।ভালোবাসি তোমায়,খুব ভালোবাসি!”
ফারিহা ছলছল চোখে আয়ানের দিকে তাকালো।ফারিহা তো অনেক আগেই আয়ানকে ক্ষমা করে দিয়েছে।ফারিহা ফুলটা হাতে নিয়ে আবার আয়ানকে জরিয়ে ধরল।কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরে রেখে আয়ান আলতো করে ফারিহার ঠোঁটে চুমু খেলো।ফারিহা লজ্জায় আয়ানের বুকে মুখ গুঁজলো।তারপর আয়ানের বুকে মুখ গুজেই ফারিহা বললো,
“আমিও আপনাকে ভালোবাসি,খুব ভালোবাসি”
ফারিহার কথা শুনে আয়ানের ঠোঁটের হাসি প্রসারিত হলো।আজকের এই মুহূর্তটা ওর জীবনের সেরা মুহূর্ত।আয়ান কিছুক্ষণ ফারিহার লজ্জা মাখা মুখ দেখে তারপর ফারিহাকে কোলে তুলে নিল।ফারিহা আয়ানের গলা জড়িয়ে ধরে ওর দিকে তাকালো।আজ থেকে ওদের সম্পর্কে কোনো বাধা নেই, নেই কোনো প্রতিশোধের খেলা!আজকে দুজন সুখের রাজ্যে পাড়ি দেবে যে ভালবাসায় থাকবে না কোন অভিনয়,থাকবে না কোন ছলনা।আয়ান আজকে ফারিহাকে সত্যিকারের ভালোবাসবে।ফারিহা কিছুক্ষণ আয়ানের দিকে তাকিয়ে থেকে গুটিসুটি মেরে বুকে মুখ গুঁজলো।
সমাপ্ত
★★★ যারা যারা গল্পটা পড়েছেন সবার মন্তব্য দেখতে চাই।গল্পটা কেমন হয়েছে জানাবেন ☺☺ কমেন্ট পড়তে আমার খুব ভালো লাগে 🤭🤭🤭