#হঠাৎ_পাওয়া_সুখ (৭ম পর্ব)
লেখা -শারমিন মিশু
সোহানা ম্যাডামের সামনে রাফিউল ইসলামকে বিমুর্ষ মুখে বসে থাকতে দেখে মারজুকের মনে হলো কিছু একটা অবশ্য হয়েছে।
সোহানা ম্যাডাম মারজুককে দেখে বললো বসুন।
তারপর ভদ্রলোকের দিকে তাকিয়ে বললো,, এতক্ষন তো আমার কথা আপনার বুঝে আসেনি। এবার শুনুন উনি কি বলে!
-মারজুক বললো,, ম্যাডাম কি হলো কি? আমি তো কিছুই বুঝছিনা!
-আরে কিছুদিন আগে উনার মেয়ে ভর্তি ছিলোনা আমাদের হসপিটালে?
-হুম নাবিলা! তার কি হলো?
-হুম নাবিলা। মেয়েটা ছয় সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা!
-মারজুক বিষ্পোরিত চোখে সোহানা ম্যাডামের দিকে তাকালো।
-সোহানা বেশ স্বাভাবিক ভাবে বললো,, এটা অসম্ভব কিছু নয় মারজুক!
উনারা আমার সাথে আগে কথা বলেছে। আমি আজ উনারা আসার পরে পরীক্ষা করেছি। আর তাতে রিপোর্ট পজিটিভ আসছে!
-মারজুকের ভিতরে এক ঝড় বয়ে গেলো এতদিন তো মা বাবাকে মানানোর একটা মাধ্যম ছিলো এবার কি হবে?
নিজেকে স্বাভাবিক করে বললো,,,ম্যাডাম এখন উনারা কি করতে চাইছে?
-উনারা এই বাচ্ছাটা রাখতে চাইছেনা!
-মানে এবরশন?
-এক্সাক্টলি!
-আমি উনাদের নিষেধ করেছি এটা না করতে! কিন্তু উনারা কিছুতে মানতে চাইনা!
-রাফিউল ইসলাম বললো,, ডাক্তার এতদিন না হয় ব্যাপারটা ডেকে রাখা গেছে! কিন্তু এরপর কিভাবে মানুষের মুখ বন্ধ করবো আমরা! মানুষ তো প্রশ্ন তুলবে আমার মেয়ের চরিত্র নিয়ে! জানতে চাইবে কে এই বাচ্ছার বাবা? কি জবাব দিবো আমরা?
বাচ্ছাটা এখনো একটা রক্তপিন্ড স্যার! আমার জানামতে এ অবস্থায় তো এবরশন করা যেতে পারে!
স্যার আমাদের মান সন্মানের প্রশ্ন!
-নাবিলা মানে আপনার মেয়ে কি চায়? মারজুক প্রশ্ন ছুৃঁড়লো।
-ভদ্রলোক মাথা নামিয়ে নিলো!
-আচ্ছা আমরা আগে আপনার মেয়ের সাথে কথা বলি আঙ্কেল! উনার মতামত না থাকলে আমরা এতোবড় অপরাধ করতে পারবোনা আঙ্কেল!
আমরা ডাক্তার খুনি নই! আমাদের কাজ মানুষের জীবন বাঁচানো মানুষকে খুন করা নয়!
আপনার মেয়ে কি আছে এখানে?
-হুম আছে। আমার বড় মেয়ের সাথে বাহিরে বসে আছে।
-আচ্ছা তাদের ডাকুন!
পর্দা ফাঁক করে দুজন মহিলা রুমের ভিতরে আসলো। মারজুক চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলো নেভি-ব্লু কালারের বোরখা পরিহিতা নাবিলা। চোখগুলো যে মানুষের এতো সুন্দর হতে পারে নাবিলাকে না দেখলে মারজুক হয়তো তা কখনো জানতে পারতোনা। তবে নাবিলার চোখগুলো ভিজে আছে। বোধহয় এতক্ষন কেঁদেছে। মারজুক ওই চোখের মধ্যে ডুবে গেলো! পরক্ষনেই এটা পাপ মনে করে আবার নিজের দৃষ্টি সংযত করে নিলো।
নাবিলা আসতেই সোহানা ম্যাডাম নাবিলার দিকে প্রশ্ন ছুঁড়লো,, আপনার বাবা যে কথাটা বলছে তাতে কি আপনার সম্মতি আছে?.
-নাবিলা চুপ করে থাকলো..-
-দেখুন আপনি কথা না বললে তো আমরা কিছু করতে পারবোনা!
–
-এবার মারজুক বলে উঠলো,, তাহলে কি আমরা ধরে নিবো আপনিও এটাই চাইছেন?
-এবার নাবিলা মাথা তুলে তাকলো,, ওর চোখের স্পষ্ট ভয়ের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে!
কান্নাজড়িত কন্ঠে বললো,,, না ম্যাডাম আমি এ বাচ্ছা কে মারতে পারবোনা। যা হয়েছে তাতে তো তার কোন দোষ নেই! অন্যের পাপের শাস্তি ও কেন পাবে?
আমি ওকে মেরে ফেললে আমার মাঝে আর একজন খুনীর মাঝে পার্থক্য কোথায়?
আমি বাবাকে আগেই বলেছি আমি এটা করতে পারবোনা। আজ এখানেও আমি আসতে চাইনি ওনারা আমাকে জোর করে এনেছে!
-সোহানা বললো,, দেখো তোমার হাতে কিন্তু এখনো সময় আছে! ১২০দিনের আগে চাইলে তুমি বাচ্ছাটাকে নষ্ট করে দিতে পারো! এরপর কিন্তু পারবেনা!
ভালো করে ভেবে নাও!
-না ম্যাডাম ভাবাভাবির কিছু নাই! আমি এটা কিছুতেই পারবোনা! আমার বাবা মা এই সমাজ আমাকে গ্রহন না করলেও আমি কিছুতেই এটা করবোনা।
আল্লাহ জানে আমি কতটা সত্যের পথে আছি! আমার উপর যা অন্যায় হয়েছে যে অবিচার আমার উপর করা হয়েছে তাতে আমার দোষ ছিলো কি ছিলোনা তাও উনি জানে!
আমি জানি আল্লাহ আমার সহায় আছে!
-আপনার বাচ্ছার কিন্তু বাবার কোন পরিচয় নাই!
-তাতে কি আমি তো আছি! মায়ের পরিচয়ে বেড়ে উঠবে আমার সন্তান!
মরিয়ম (আঃ) যদি পিতৃবিহীন সন্তান জন্ম দিয়ে লালন পালন করতে পারেন আমি কেন পারবোনা?
-এই মুহুর্তে ওর বাবা বললেন,, তখনকার সময় এখনকার সাথে কেন মিলাচ্ছিস! আজকের দুনিয়া খুব কঠিন রে মা!
-বাবা তখন আর এখনের কথা নয়। তখন উনাদের আরো কঠিন সময় পার করতে হয়েছে। সেখানে আমি তো…
আর দুনিয়া কখনো আমাদের জন্য কঠিন ছিলোনা আমরাই দুনিয়াকে আমাদের জন্য কঠিন করে ফেলেছি!
সরি বাবা! আমি পারবোনা বাবা এতোবড় অন্যায় করতে! আমায় জোর করোনা বলে নাবিলা বেরিয়ে গেলো।
-মারজুক এতক্ষণ বিস্মিত হয়ে নাবিলার কথা গুলো শুনছিলো। কেমন জোরালো প্রতিবাদী কন্ঠস্বর! এমন কাউকেই তো আমি চেয়েছি সব সময়! মারজুকের ভিতরের থেকে আওয়াজ আসলো,,মারজুক সুযোগ হাতছাড়া করিসনা! এমন মেয়ে পাওয়া কঠিন! যা হয় হবে তুই এই মেয়েকে নিজের করে নে!
-রাফিউল সাহেব আশাহত হয়ে বেরিয়ে যেতে নিলে,, পিছন থেকে মারজুক ডেকে বললো,, দাঁড়ান আঙ্কেল!
-রাফিউল সাহেব পিছন ঘুরতেই মারজুক বললো,,, নাবিলার এবং তার সন্তানের দায়িত্ব কেউ নিজের ঘাড়ে করে নিলেতো আর আপানদের এই ব্যাপারে ভাবতে হবেনা তাইনা?
-রাফিউল সাহেব বলে উঠলেন,, কি বলতে চাইছেন আপনি?
-মানে কেউ যদি নাবিলার আর তার বাচ্ছার দায়িত্ব নেয় তো!!
-রাফিউল সাহেব উপহাসের সাথে বললো,,, হাসালেন আপনি! সব জেনেশুনে কে নিবে আমার মেয়ের দায়িত্ব?
-নিচের দিকে তাকিয়ে বললো,,,যদি বলি আমি নিবো!
রাফিউল সাহেব আর সামনে বসা থাকা ডাঃ সোহানা মারজুকের দিকে এমন ভাবে তাকালো মনে হচ্ছে মারজুক কোন ভিনগ্রহ থেকে এসেছে!
-সোহানা বললো,, কি বলছেন ডাক্তার মারজুক বুঝে শুনে বলছেন তো!
-এ ব্যাপারটা নিয়ে অনেকদিন ধরে আমি ভেবেছি ম্যাডাম! আমি তো আরো আগে সিদ্ধান্ত নিয়েছি!
ঠিক যখন থেকে নাবিলা হসপিটালে ছিলো তখন থেকে।
আর নাবিলার দায়িত্ব নিতে পারলে বাচ্ছাটার দায়িত্ব কেন নিতে পারবোনা?
-মারজুক আবেগ দিয়ে সব হয়না! আপনি এখন হয়তো মেয়েটার অসহায়ত্বের জন্য তাকে হেল্প করতে চাইছো! কিন্তু আপনার সোসাইটির খেয়াল আছে? আপনার মা বাবাকে তো আমি চিনি তাই বলছি……
-এটা আবেগ নয় ম্যাডাম! আমি বিবেকের দ্বারাই কাজ করছি। আর বাবা মায়ের ব্যাপারটাও আমি দেখবো।
-রাফিউল ইসলাম বললেন,, স্যার আপনাদের সোসাইটিতে কখনো আমার মেয়েকে মেনে নিবেনা স্যার!! শুধু শুধু আমাদের লোভ দেখাবেন না!
আর মেয়েকে ও আমি চিনি! তার অসহায়ত্ব দেখে কেউ তার উপর দয়া করবে এ ব্যাপারটা ও কিছুতেই মেনে নিবেনা!
-আঙ্কেল আমি তার উপর দয়া করছিনা। এমনিতেও দু’তিন দিনের মধ্যে আমি আপনাদের ওখানে যেতাম!
আমি নাবিলাকে স্বসন্মানে আমার স্ত্রী হিসাবে আমার বাড়ী নিয়ে আসবো। ওর উপর বা ওর অসহায়ত্বের উপর কোন দয়া আমি করছিনা!
-রাফিউল সাহেব বললেন,, আপনার ফ্যামিলি যদি মেনে নেয় আমারও কোন আপত্তি থাকবেনা বলে উনি বেরিয়ে গেলো।
হসপিটাল থেকে বেরিয়ে মারজুক মার্জিয়াকে ফোন করলো যেন এখনি বাড়ীতে আসে যা করার তাড়াতাড়ি করতে হবে। হাতে একদম সময় নেই। এদিকে ছোটমামাকে ও ফোন দিয়েছে। মারজুকের আজ অবদি যা অর্জন বা এখনো নিজেকে ভদ্র সভ্য বলে যে পরিচয় দিতে পারে তার পিছনে ছোটমামার অবদান ও কম নেই। উনার সাপোর্ট ছিলো বলে মারজুক এতদূর আসতে পেরেছে। অবশ্য ছোট মামার সাথে ওর বয়সের পার্থক্য মাত্র ছয় বছরের। দুজনে বন্ধুর মত সব কথা একে অপরের সাথে শেয়ার করতো। নাবিলার ব্যাপারটা মারজুক আগেই উনাকে জানিয়েছে, উনার কোন আপত্তি নেই উনি তখনি জানিয়ে দিয়েছে!
এটাও বলেছে কখনো যদি এ ব্যাপারে হেল্প লাগে উনি নির্দিধায় করবে।
আজ তার সাহায্য যে অনেক বেশি দরকার!
স্বপ্ন ভিলায় এক পিনপতন নিরবতা! থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে! সবাই কেমন গম্ভীর হয়ে আছে!
মারজুক কথাটা বলার পর থেকে মুনতাসীর আহমেদ এতক্ষণ চুপ করেই ছিলো। মারজুক, মার্জিয়া আর ওর মামার দিকে একবার তাকিয়ে আবারো বললো,,, আব্বু মেয়েটা কিন্তু অনেক ভালো!
এপর্যায়ে চেঁচিয়ে উঠলো মুনতাসীর আহমেদ,, রাখো তোমার ভালো! এত ভালো হলে তো আর ছেলেদের নজরে পড়তোনা! মারজুক,,, আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি তোমার রুচিবোধ দেখে! তোমার একথা মনে রাখা উচিত তুমি কোন পরিবারের ছেলে!
-আজ অবদি কখনো বাবার মুখের উপর কথা বলেনি মারজুক। কিন্তু আজ তো বলতেই হবে! মারজুক নিচের দিকে তাকিয়ে বললো,,,আব্বু তুমি অযথাই ভুল বুঝছো! মেয়েটা পরিস্থিতির স্বীকার! যা কিছু হয়েছে তাতে নাবিলার কোন দোষ নেই!
-এবারে সেলিনা রাগী কন্ঠে বলে উঠলো,, একটা ধর্ষিতা আমার বাড়ির বউ হতে পারেনা। সোসাইটিতে আমাদের একটা সন্মান আছে ভুলে যাসনা! তুই কি করে এ মেয়েকে ঘরে তোলার কথা ভাবলি?
আমার বাড়ি ওই মেয়েকে আমি তুলতে পারবোনা!
কার না কার পাপ এনে আমার মাথায় তুলবি! সোসাইটিতে মুখ দেখাবো কি করে?
আমি ভাবতে পারছিনা এতো এতো মেয়ে তোকে দেখালাম, তারা যেমন সুন্দরী আর স্মার্ট ছিলো তেমনি তাদের স্ট্যাটাস! আর সেসব রেখে শেষমেশ তুই কিনা…..
আমার তো লজ্জায় মাথা কাটা যাবে সমাজে!
-মার্জিয়া কিছু বলতে নিলেই ওর বাবা বলে উঠলো,, তুই আবার ভাইয়ের হয়ে সাফাই গাইতে আসিস না! হয়েছিস তো দুজনে একরকম! নিজের সময় ভাইকে দিয়ে সুপারিশ করিয়েছিস এখন আবার ভাইয়ের হয়ে আসছিস কথা বলতে!
-এবারে ওর ছোটমামা বলে উঠলো,,, তোমরা কি শুরু করছো! দুলাভাই,, বুবু তোমরা মারজুককে অযথাই ভুল বুঝছো!
-সেলিনা বললো,, রাসেল তুই কোন কথা বলবিনা!
-কেন বলবোনা কথা! আজ আমি বলবো! তোমরা দুজনে পড়ে ছিলে নিজেদের কর্মজীবন নিয়ে! এ ছেলেমেয়ে কিভাবে মানুষ হয়েছে খবর আছে!
সারাজীবন সোসাইটি, টাকা পয়সা এসব নিয়েই তো পড়ে ছিলে কখনো বাচ্ছা গুলোর দিকে খেয়াল করেছো?
ছেলেটা একটা ভালো কাজ করতে চাইছে কোথায় তোমরা তাকে সাপোর্ট দিবে তা না তোমরা পড়ো আছো তোমাদের সোসাইটি নিয়ে!
তোমাদের তো গর্ভ করা উচিত!
তোমাদের এই হাই লেভেলের সোসাইটিতে তো এরকম ঘটনা অহরহ ঘটছে কই তখন তো তোমাদের হাই লেভেলের সোসাইটির মানুষরা কিছু বলেনা! তাদের মান সন্মান ও তাতে নষ্ট হয়না।
কিন্তু মধ্যবিত্ত বা নিন্মমধ্যবিত্ত কোন পরিবারে যখন এরকম কিছু ঘটনার স্বীকার হয় তখন তোমাদের সোসাইটির লোকেরা কথা শুনাতে একটু ও ভুল করেনা!
তার কারণ তোমাদের সোসাইটির লোকেরা নিজ থেকে এ অপকর্ম করলে তা হয় ফ্রি মাইন্ড, বিনোদন। আর গরীব মানুষেরা এ অপকর্মের স্বীকার হলে তারা হয়ে যায় নীচু জাত!
বুবু তোদের এ ঝাঁকঝমক জীবন থেকে একটু বেরিয়ে আয়!
আর মেয়েটার এ দুর্ঘটনা সম্পর্কে তো প্রায় বলতে গেলে কেউই জানেনা! তাহলে তোদের সমস্যা কোথায়?
-মারজুকের বাবা থমথমে মুখে বলে উঠলো,, জানেনা, জানতে কতক্ষণ?
এসব কথা কখনো চাপা থাকেনা!
-তোমাদের ছেলের কথাটা তো ভাবা উচিত তোমাদের?
-মুনতাসির আহমেদ এবার চেঁচিয়ে উঠলো,,, খবরদার রাসেল!! তুমি ওর পক্ষ হয়ে কথা বলোনা।
এ ছেলে এখন আবেগের বশে একটা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে পরে যে এটা নিয়ে পস্তাবে না তার কি ঠিক আছে?
-মারজুক এ পর্যায়ে বলে উঠলো,, আব্বু আমি আবেগ দিয়ে চলিনা। আমি এখন সেই ১৭/১৮বছরের কোন ছেলে না। প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছি আমি। কিসে ভালো কিসে মন্দ সেই কথা বুঝার জ্ঞান আমার যথেষ্ট আছে!
-কথা তো দেখছি বেশ ভালো বলতে শিখেছো?
-আপনারা যে একটা ভুলের মধ্যে আছেন সেটাই শুধু আমি ধরিয়ে দিয়েছি!.
-রাসেল তুমি যদি তোমার ভাগ্নের হয়ে আমার কাছে সাফাই গাইতে আসো তবে শুনে রাখো,, ও যদি ওই মেয়েকেই বিয়ে করে তবে আমার বাসায় ওদের কারো জায়গা হবেনা। আমার সোসাইটি আমার আত্মসন্মান আমার কাছে অনেক বেশি! এই ছেলের জন্য আমি তা নষ্ট করতে পারবোনা বলে উঠেই হনহন করে চলে গেলো।
-সবাই সেলিনার বেগমের দিকে তাকাতে উনি, বলে উঠলেন আমার দিকে তাকাচ্ছিস কেন? আমি পারবোনা অন্যের পাপ আমার ঘাড়ে তুলতে! দুনিয়ায় মেয়ের এতো অভাব পড়েনি যে ওমন একটা মেয়ে আমি আমার ছেলের বউ করবো। আমার স্বামি যখন মানবেনা তখন আমিও মানবোনা বলে উনিও চলে গেলো।
মারজুক কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা,, মাথায় হাত দিয়ে সোফায় বসে পড়লো।
ছোটমামা,,মাথায় হাত দিয়ে বললো,, চিন্তা করিস না মামা! আমি আর মার্জিয়া তোর সাথেই আছি। ওরা না মানলে আমি ওই মেয়ের সাথেই তোর বিয়ে দিবো!
-মামা, আব্বু আম্মুর অমতে গিয়ে…
-আরে কোন ভালো কাজ করতে গেলে বাবা মা বাঁধা দিলে তা মানা যায়না। তুই একটা মেয়ের সন্মান বাঁচাতে চাইছিস! একটা বাচ্ছার পিতৃ পরিচয় দিতে যাচ্ছিস এটা যে কতবড় সওয়াবের কাজ তোর বাবা মা যদি জানতো তাহলে তো এমন করতোনা। আর সবচেয়ে বড় কথা তুই ওকে তোর বিয়ের জন্য পছন্দ করেছিস! যে ছেলে এতদিন কোন মেয়েকে পছন্দই করতে পারেনি সে যে কাউকে পছন্দ করলো এটাই তো আমাদের ভাগ্য!
আমি খবর নিয়েছি মেয়েটার সম্পর্কে, মেয়েটা আসলেই ভালো!
আর তোর বাবা মা আজ রাগ করে থাকলেও এক সময় না একসময় মেনে নিবে!
-মার্জিয়া বললো,,, হ্যা ভাইয়া আমিও তোর পাশে আছি। তোর কোন কষ্ট আমি আর হতে দিবোনা। এর আগেও তুই একবার কষ্ট পেয়েছিস আমি কিছু করতে পারিনি কিন্তু আজ আমি চুপ করে বসে থাকবোনা। আমি জানি আমার ভাই কোন ভুল মানুষকে পছন্দ করবেনা সেই বিশ্বাস আমার আছে!
-মারজুক ওর ছোটমামার দিকে তাকাতেই উনি ওর পিঠ চাপড়ে বললো,, নো টেনশন ভাগ্নে!! তোর ছোটমামা থাকতে তোর কোন চিন্তাই নাই।
কথায় আছেনা,,
মামা ভাগ্নে যেখানে
বিপদ কাটে সেখানে…..
#চলবে….
কমেন্ট করে জানাবের আপনার কি এমন মামা আছে কি না !