“হালাল প্রেম” পর্ব- ৫৮

“হালাল প্রেম”
পর্ব- ৫৮
(নূর নাফিসা)
.
.
“আমি একজনকে পছন্দ করি, আপু।”
কথাটা বলে ফোপাঁতে লাগলো সাফওয়ানা। যেন খুব সাহস যুগিয়ে কথাটা প্রকাশ করতে হয়েছে তাকে। শারমায়া চরম বিস্মিত! সে রাগান্বিত গলায় বললো,
“কি! এই মেয়ে, আমার দিকে তাকা। এসব কি শুনছি আমি? এই শিক্ষা পেয়েছিস তুই আমাদের পরিবার থেকে। মেহমান আসছে দেখতে আর আজ তুই এসব শোনাচ্ছিস! উনাদের কি অপমান করার জন্য ডেকেছি? আব্বু আম্মু জানলে উনাদের উপর কি প্রভাব পড়বে সেই সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা কি তোর আছে? বাবা মা এতো আদর-যত্নে লালন পালন করেছে ফলাফল এমন হওয়ার জন্য?”
জোভানও কিছুটা বিস্মিত হয়েছে। সাফওয়ানার সম্পর্কে এমন কিছু তারও ধারণার বাইরে। এরই মধ্যে ফোনটা বেজে উঠলো। মিরাজ কল করেছে। জোভান কল কেটে দিয়ে শারমায়াকে শান্ত করতে বললো,
“শারমায়া…শারমায়া, থামো। গলা নিচু করো।”
“তুমি বুঝতে পারছো সে কি বলছে? আমাদের কাছ থেকে কখনোই এমন কিছু প্রত্যাশা করেনি বাবা মা। এখন এসব জানলে কষ্ট পাবে না তারা?”
“চুপ করো। ঠান্ডা মাথায় কথা বলি। এভাবে গরম মেজাজে তো কোনো সমাধান আসবে না। আমি কথা বলছি।”
জোভান লক্ষ্য করেছে সাফওয়ানা খুবই ভয়ার্ত অবস্থায় আছে। কথাগুলো প্রকাশ করতে যেন তার মাঝে সাহসের বড্ড ঘাটতি রয়েছে। তার হাত পা কাঁপছে। তাই জোভান শারমায়াকে থামিয়ে নরম গলায় সাফওয়ানাকে বললো,
“ছেলে কি তোমার ক্লাসমেট?”
সাফওয়ানা দু’দিকে মাথা নাড়ালে জোভান বললো,
“সিনিয়র?”
সাফওয়ানা এবারও মাথা নাড়িয়ে ইতিবাচক জবাব দিলে জোভান বললো,
“রিলেশন কত বছরের?”
“রিলেশনে যাইনি। তবে অনেক পছন্দ করি।”
জোভান সামান্য বিস্মিত হয়ে বললো,
“মানে কি? সে তোমাকে পছন্দ করে না?”
“জানিনা।”
কথার কোনো কূল কিনারা পাচ্ছে না জোভান। হাসিও পাচ্ছে তার। কিন্তু হাসি চাপা রাখলো। সে আবার জিজ্ঞেস করলো,
“সে তোমাকে পছন্দ করে কিনা সেটাই জানো না আর তুমি তার জন্য অপেক্ষা করবে?”
“সে-ও করে হয়তো, তবে প্রকাশ করেনি। তবে আমি তাকে পছন্দ করি।”
“আচ্ছা, আজ যেহেতু মেহমান আসছে তাদের তো আর ফিরিয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। উনারা আসুক, তুমি তাদের সামনে যাও। পরে আমরাই না হয় সেই ছেলের সাথে কথা বলে জেনে নিবো। তার ছবি দেখাও আর এড্রেসটা দাও।”
শারমায়া বলে উঠলো,
“তুমি এভাবে আস্কারা দিতে পারো না তাকে।”
জোভান তার দিকে তাকালো শুধু আর সেই দৃষ্টি দেখেই সে বুঝে নিয়েছে জোভান তাকে আপাতত চুপ থাকতে বলছে। মেহমান চলে গেলে পরে কথা বলে একটা ব্যবস্থায় আসবে। তাই শারমায়া চুপ করে রইলো। সাফওয়ানা সেই যে মাথা নত করেছে, এখনো সেভাবেই আছে। চোখ থেকে পানি পড়ছে টুপটাপ। জোভান বললো,
“কি হলো? ছবি নেই? তাহলে এড্রেস দাও। নাকি সেটাও নেই?”
সাফওয়ানা কম্পিত কণ্ঠে বললো,
“আমি ইফাজ ভাইয়ার কথা বলছি।”
জোভান এবার চরম অবাক! সে ইফাজকে পছন্দ করে! আর সে কি জানে না ইফাজের পরিবারই আসছে তাকে দেখতে! সে সাথে সাথেই শারমায়ার দিকে তাকাতেই দেখলো শারমায়াও অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়েছে। তার দৃষ্টিতেও যেন একই প্রশ্ন ভাসছে, সে কি জানে না ইফাজের বাবা মা তাকে দেখতে আসছে! দুজনের মুখেই হাসি চেপে আছে। শারমায়া কিছু বলতে যাচ্ছিলো জোভান চুপ থাকতে ইশারা করলো। অতঃপর ফোনে রেকর্ডিং অন করে বিস্মিত কণ্ঠে বললো,
“হোয়াট! তুমি ইফাজকে পছন্দ করো মানে! তুমি ভাবতে পারলে কি করে যে ইফাজ তোমাকে পছন্দ করে! তুমি জানো তার যে গার্লফ্রেন্ড আছে?”
সাফওয়ানা তার ভেজা দৃষ্টি জোভানের দিকে তুলে আবার নামিয়ে নিলো এবং বললো,
“তার গার্লফ্রেন্ড আগে ছিলো। এখন তো নেই।”
“কে বললো তোমাকে এই কথা?”
“আপু ই তো বলেছিলো।”
শারমায়া বললো,
“আমি তো সেই চার-পাঁচ বছর আগে শুনিয়েছিলাম এই গল্প। এখন যে নেই সেটা কি বলেছি?”
“কিছু মানুষ দেখলেই চেনা যায়। উনি তার উক্তিতে অটুটই আছেন। গার্লফ্রেন্ড থাকলে কি আর এভাবে বিয়ের জন্য চাপ দিতো বন্ধুবান্ধবরা? বিয়ে করলে তাকেই করবো। নয়তো কাউকে না।”
জোভান গম্ভীরমুখে বললো,
“ইম্পসিবল! এসব ভাবনা ছেড়ে দাও একদম। যা-ই বলেছিলাম তোমার পক্ষটা ভেবে দেখবো, কিন্তু এখন আমি আর এসবে নেই। ইফাজ বলতে কেউ নেই। ভুলে যাও এসব। আর বাবা মা যাকে পছন্দ করবে তাকে চুপচাপ মেনে নিবে। এটাই ফাইনাল।”
“তাহলে আমিও মেহমানদের সামনে যাবো না।”
“না যাও। ইফাজের জন্য অন্য কোথাও মেয়ে দেখা শুরু করবো।”
বলতে বলতে জোভান রেকর্ডিং সেভ করে নিলো। মুখে মুচকি হাসিটাও ভেসে উঠলো স্পষ্টভাবে। সাফওয়ানা কিছুটা অবাক হয়ে তাকালো জোভানের দিকে। শারমায়া আর পারছে না হাসি চাপা রাখতে। সে ফিক করে হেসে উঠলো। জোভান বললো,
“তুমি হাসো? আমার বিষম খাওয়ার অবস্থা।”
অতঃপর সাফওয়ানাকে বললো,
“ভাগ্যিস, তোমার পছন্দের পাত্র ইফাজই ছিলো। আমি তো টেনশনে পড়ে গিয়েছিলাম, আংকেল আন্টিকে যে নিয়ে আসছি পরে কি জবাব দিবো। অন্য কাউকে পছন্দ করলে একটা গোলযোগ তো বাঁধতোই ফ্যামিলিতে।”
তাদের কথাবার্তা ও কর্মকাণ্ডে সাফওয়ানা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বললো,
“মানে কি!”
জোভান তার মাথায় হাত রেখে দুইবার চাপড়ে বললো,
“আমাদের কাছে বলেছো তো বলেছো ই। আর কারো কাছে কিন্তু বলতে যেয়ো না এসব। সামনে কি হয় শুধু দেখে যাও চুপচাপ। আর দোয়া করো ইফাজ যেনো রাজি হয় বিয়ের জন্য।”
শারমায়া হাসি থামিয়ে বললো,
“আম্মু কি তোকে বলেনি ইফাজ ভাইয়ার বাবা মা আসছে তোকে দেখতে?”
“মানে! আম্মু যে বললো আংকেলের কোন বন্ধু আসছে!”
জোভান হেসে বললো,
“উনারা বাবারা বাবারা বন্ধু, আমরা ছেলেরা ছেলেরা বন্ধু। ক্লিয়ার?”
সাফওয়ানা যেন চরম লজ্জার শিকার হয়ে গেলো! আগে জানলে তো তাদেরও জানতে দিতো না। সে লজ্জিত হাসি মুখে চাপা রেখে দ্রুত পায়ে বেরিয়ে গেলো নিজের রুমের উদ্দেশ্যে। জোভান হাসলো, শারমায়া তার পেটে চিমটি কেটে বললো,
“রেকর্ড করলে কেন?”
“তুমি দেখে ফেলেছো!”
“তোমার উপর সবসময়ই আমার নজরদারি থাকে।”
“আচ্ছা? তবে দেখো তো, আমার মন কি চাইছে?”
“ফাজলামো রাখো, প্রশ্নের উত্তর দাও।”
“কাজে লাগতে পারে, তাই রেখে দিলাম।”
“আমার মেজাজ সত্যিই প্রচুর খারাপ ছিলো। এখন আমি মাইর দিতাম! ইফাজ ভাইয়ার কথা বলায় কিছু বললাম না। আব্বু আম্মু জানলে কতটা কষ্ট পেতেন, ভাবতে পারছো!”
“যাক, যা হয় ভালোর জন্যই হয়। বাদ দাও।”
“ক্ষুধা লাগেনি? চলো খাবার দেই।”
“উহুম, উনারা আসুক। পরে খাবো।”
বলতে বলতে মিরাজকে কল ব্যাক করলো। মিরাজ বললো,
“কি রে, বিয়ের সানাই টানাই রেডি করবো নাকি?”
“পরে জানাচ্ছি, সন্ধ্যায় বাসায় আসিস।”
সারাটাদিন সাফওয়ানার লজ্জায় মরি মরি অবস্থা! কি লজ্জাটাই না পেলো ভাইয়া ও আপুর কাছে। যখনই জোভানের সাথে দেখা হয়, জোভানকে মুখ চেপে হাসতে দেখা যায়৷ আর সাফওয়ানা যেন পালাতে পারলেই বাঁচে! ইচ্ছে তো করছিলো ঘরের এক কোণে চুপটি মেরে বসে থাকতে। কিন্তু তা যে সম্ভব নয়। ইফাজের বাবা মাকে দেখে তার আত্মা ধুকপুক করছিলো। যদিও তাদের পূর্ব থেকেই চেনে, তবুও মনের মধ্যে একটা ভয়ার্ত অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। উনারা কি পছন্দ করবে তাকে? যখন জানতে পারলো, উনারা তাকে পছন্দ করেছে এবং তার বাবা মাকে দাওয়াত করে গেছে তখন মনে অন্য ভয় জাগ্রত হলো। বাবা মা পছন্দ করবে তো?
সন্ধ্যার পূর্বেই শারমায়াসহ জোভানের পরিবার ও মেহমান বেরিয়ে গেলেন। শারমায়ার ইচ্ছে করছিলো থেকে যেতে। চারদিন পর থেকে রমজান মাস শুরু তাই থেকে যেতে পারলো না। জুলেখা ইয়াসমিন বলেছেন, রমজানের প্রথম সপ্তাহ তাদের সাথে কাটিয়ে তারপর এসে যেন কিছুদিন বাবামায়ের সাথে কাটায়। প্রতিবছরই রমজানের প্রথমদিকে তাদের বাসায় আত্মীয়দের দাওয়াত করেন, তাই সেখানে শারমায়ার থাকাটা জরুরী।
ইশারের নামাজ পড়ে বাসায় ফিরে শারমায়াকে রুমে নামাজ পড়তে দেখলো জোভান। সে বারান্দায় এসে দাঁড়িয়ে শারমায়ার নামাজ আদায় দেখতে লাগলো। নামাজ শেষ করে জায়নামাজ উঠিয়ে বারান্দায় তাকাতেই দেখলো জোভান তাকিয়ে আছে। জোভান তাকে ইশারায় ডাকলে শারমায়া জায়নামাজ রেখে তার কাছে এলো। জোভান মুখখানা দু’হাতে ধরে কপালে ঠোঁট ছুয়ে দিয়ে বললো,
“বাতাসটা ভালো লাগছে না?”
“হুম, ঠান্ডা বাতাস। বৃষ্টি হবে মনে হয়।”
“হয়তো।”
ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে দাঁড়িয়ে খুশগল্প করছিলো দুজন। মিনিট পাঁচেক পরে ই মিরাজের কল এলো। মিরাজ জানালো তারা জোভানদের বাসার ছাদে আছে। জোভানকে সেখানে যেতে বললো। জোভান কল কেটে শারমায়াকে বললো,
“আমি ছাদ থেকে আসছি একটু।”
“এখন ছাদে কেন?”
“তারা ছাদে আছে।”
“ফ্ল্যাটে না এসে ছাদে কেন গেলো?”
“হাওয়া খেতে ভালো লাগছে হয়তো তাই।”
জোভান হেসে বলতে বলতে বেরিয়ে গেলো। ছাদে এসে দেখলো তিনজনই এসেছে। সকলের হাতেই স্পিড ক্যান, ঢোকের পর ঢোক গিলে যাচ্ছে। মিরাজ তার দিকে স্পিড ক্যান এগিয়ে দিয়ে বললো,
“তুই শ্বশুর বাড়ি থেকে ঘুরে এলি, আমরা যমুনা ফিউচার পার্ক থেকে ঘুরে এলাম। এবার বল ইফাজের শ্বশুর বাড়ির খবর কি?”
জোভান ক্যান খুলতে খুলতে বললো,
“আংকেল আন্টি তো কনফার্ম। দুলহারাজের কি খবর?”
ইফাজ বললো,
“জোভান, তুইও কি পাগল হয়ে গেছিস? মা বললো আর তুই সাফওয়ানাকে দেখাতে নিয়ে গেলি! সাফওয়ানা পিচ্চি একটা মেয়ে, আমি যাকে ছোট বোনের মতো দেখি, আর তাকে কি না! তোর কাছে কিন্তু এমন কিছু কখনোই প্রত্যাশা করিনি।”
মিরাজ তার কাধে ঘুষি মেরে বললো,
“ওই! সে কি তোর মায়ের পেটের বোন? এতো অযুহাত দেখাচ্ছিস কেন? এইবার বিয়ে না করলে তোর খবর আছে।”
“ফাজলামোর একটা লিমিট থাকা দরকার। বোন তো বোনই!”
জোভান বললো,
“প্রত্যেক বাবা মা ই সন্তানের ভালোটা চায় এবং সন্তানের কাছ থেকে কিছু প্রত্যাশা করে। সেই আদিকালের জেদ নিয়ে বসে থেকে আংকেল আন্টিকে এভাবে হতাশ করিস না। তোর জীবন সাজিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা কম করছেন না তারা৷ যে ভাগ্যে নেই, তাকে মনে বেঁধে রাখারও কোনো মানে হয় না। সাফওয়ানাকে কর আর যাকেই কর, বিয়ে করে নে।”
সাদাত বললো,
“কেন, সাফওয়ানা খারাপ কিসে? ভাই, এতো জ্বালাতন করিস না তো আর। কত খালাতো, ফুপাতো, চাচাতো, মামাতো ভাইবোনের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে আর তুই আছিস কত মাইল দূরের বোন নিয়ে! তোর জন্য একত্রে হানিমুনেও যেতে পারি না। সবাই বউ নিয়ে যাবে আর তুই আলাদা থেকে যাবি। এতোদিন তো জোভান ছিলো তোর সঙ্গী, এখন কিন্তু সেই সুযোগও নেই। ভাবি চলে এসেছে। আর সিঙ্গেল থাকিস না। আংকেল আন্টি পছন্দ করেছে যখন, চুপচাপ বিয়ে করে নে।”
“আচ্ছা, বয়সের ডিসট্যান্সটাও তো দেখবি তোরা! হুট করে একটা বললেই হলো?”
জোভান পকেট থেকে ফোন বের করতে করতে বললো,
“তুই আছিস বয়সের ডিসট্যান্স নিয়ে? আর ওদিকে পিচ্চি যে তোর চেয়ে একধাপ এগিয়ে! এখন কি হবে বল?”
জোভান রেকর্ডিংটা অন করে শোনালো। উপস্থিত সকলেই অবাক! মিরাজ তো দুহাত মাথায় তুলে লাফানো শুরু করে দিয়েছে! সাদাত বললো,
“ভাই! এসব কবে থেকে চলছে! শুধু কি আমাদের সামনেই তুই মুখোশধারী মানব?”
ইফাজ বললো,
“স্পিচ লেস! জোভান, সত্যিই কি পিচ্চি বলেছে এগুলো?”
“পিচ্চি কি সারাজীবন পিচ্চিই থাকবে?”
“না মানে, আমি তাকে পছন্দ করি এমন কিছু সে ভাবলো কিভাবে!”
“হয়তো বেশি ভালো লাগার পরিণাম! আমার বোন দেখতে খারাপ না তো, কালোও না, বোচাও না, খাটোও না। তোর সাথে বেমানান হবে না। বাকিটা তোর ইচ্ছে। লাইফ তোর, সুতরাং তোর ভালো লাগার উপরই ডিপেন্ড করবে। চাপিয়ে দেওয়ার মতো আমি বা আমরা কেউই না।”
“না, দেখতে খারাপ তো বলছি না আমি। তার স্মার্টনেস সবসময়ই আমার পছন্দ। কথা বলার স্পিড তো সুপার। তাইতো দুষ্টুমিও করি বেশি। কিন্তু এমন রিলেশনের ব্যাপারে কখনোই আমি ভাবিনি।”
মিরাজ বললো,
“ভাবিসনি তো কি হয়েছে? এখন থেকে ভাবতে শুরু কর। আর কোনো কিন্তু টিন্তু নেই। আমাকে যদি এভাবে বলা হতো আমি ডিরেক্টলি কবুল বলে দিতাম। ইগনোর করিস না মেরে ভাই। এই প্রেম কিন্তু আর ফিরে পাবি না। পিচ্চি তোকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করতে রাজি না। আহা পিচ্চি! মেয়েটাকে কুমারী থাকতে বাধ্য করিস না। রাজি হয়ে যা না…”
ওদিকে জোভান ও সাদাত হাসছে মিরাজের অভিনয় দেখে। এদিকে ইফাজের মুখেও ফুটে আছে চাপা হাসি, রেকর্ডিংএ সাফওয়ানার কথা শুনে। অবাক তো বটেই! মিরাজ তার গাল টিপে বলেই যাচ্ছে,
“বল রাজি? বল না! রাজি? হুম? রাজি?”
ইফাজ তার হাত সরিয়ে দিয়ে বললো,
“যা, রাজি।”
“ইয়েএএ…!”
মিরাজ স্পিড ক্যান লাথি দিয়ে ছাদের অপর প্রান্তে পাঠিয়ে সাদাতকে টেনে নাচাতে লাগলো। জোভান মুচকি হেসে ডান হাত ইফাজের দিকে সামান্য বাড়িয়ে বললো,
“কংগ্রেস করবো নাকি?”
প্রত্যুত্তরে ইফাজ মুচকি হাসির রেখা প্রশস্ত করে হাত বাড়িয়ে নিজেই তার হাত ধরে হ্যান্ডশেক করে বললো,
“লাইফে এই প্রথমবার বোধহয় কোনো ডিসিশন এতো কম সময়ে নিলাম তা-ও আবার সবচেয়ে বড় ডিসিশনের ক্ষেত্রেই!”
“সমস্যা নেই। তুই সময় নিয়ে ভেবে দেখ।”
“উহুম, এটাই ফাইনাল। ভেবে ভেবে তো জীবনে অনেক কিছুই করলাম। এটা নাহয় ব্যতিক্রমই থাক। তো, নিজেদের পক্ষের ডিসিশন আবার চেঞ্জ করে ফেলিস না। মত দিয়ে ফেলেছি যখন, পালিয়ে হলেও বিয়ে করে ফেলবো। কিডন্যাপ করার দায়িত্ব সাদাত ও মিরাজের।”
সাদাত মিরাজের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করে বললো,
“ছাগল, নাচানাচি বন্ধ কর। শোন, ওদিকে জেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করছে!”
“ধুর! সেই চিন্তা করার দায়িত্ব আমার বাপের।”
“নিজের দোষ সব বাপের ঘাড়ে! আল্লাহ জানে, তোর ভবিষ্যৎ ছেলে কত মামলা খাওয়ায় তোরে!”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here