হিমি পর্ব-১০

0
1246

হিমি
লেখনী- সৈয়দা প্রীতি নাহার

১০.

অর্থনীতির ক্লাস শেষ করে সবে বেরিয়েছে মিশ্মি। উল্টোদিকের বিল্ডিংএ গার্লস কমন রুমে বসার উদ্দেশ্যে পা বাড়াতেই পুরুষালী গলায় ভেসে এলো মিশ্মির নাম। মিশ্মি চমকে উঠে এদিক ওদিক তাকালো। নীল টি শার্টের উপর নীল সাদার চেক শার্ট পরনে নিহান দাঁড়িয়ে। রোদচশমা টি শার্টের গলায় ঝুলানো। হাতে কালো রঙের ঘড়ি। চুলগুলো খাড়া হয়ে আছে। চাপ দাঁড়িতে হাত বুলিয়ে শ্যামবর্ণের ছেলেটি মিশ্মির মুখোমুখি দাঁড়ালো। মৃদু হেসে বললো,

‘কেমন আছো?’

মিশ্মি হাসার চেষ্টা করে বললো,

‘ভালোই। আপনি কেমন আছেন ভাইয়া?’

নিহান মাথা দুলালো যার অর্থ সে ভালো আছে। মিশ্মি কোনো কথা বললো না বিপরীতে। চোখ ঘুরিয়ে আশপাশ দেখছে সে। নিহান কিছু বলবে বলবে করেও থেমে যাচ্ছে। কোনো এক কারনে গলায় কথাগুলো আটকে যাচ্ছে। শেষমেষ জোর করে বলেই ফেললো,

‘বাড়ি ফিরছো?’

মিশ্মি আমতা আমতা করে বললো,

‘আমি আসলে কমন রুমে যাচ্ছিলাম।’

নিহান ভ্রু কুঁচকালো। ঘড়িতে সময় দেখে নিয়ে বললো,

‘তোমার ক্লাস তো শেষ মেই বি। এর পর আর কোনো ক্লাস আছে বলে মনে হচ্ছে না।’

মিশ্মি ছোট্ট করে বললো,

‘জি ক্লাস নেই।’

‘তাহলে কমন রুমে বসবে কেনো? বাড়ি কখন ফিরবে?’

মিশ্মি অপ্রস্তুত হাসলো। বললো,

‘ফিরবো কিছুক্ষন পর। একটানা ক্লাস করে ক্লান্ত হয়ে গেছি তাই রেস্ট নিতে বসতাম একটু।’

নিহান হাস্যোজ্জল গলায় বললো,

‘তাহলে চলো। বসি কোথাও। আমার ফ্রেন্ডসরা নিজস্ব কাজে ব্যস্ত। একা ভালো লাগছে না। তুমি থাকলে সঙ্গ পাওয়া যাবে।’

মিশ্মি চেয়েও না করতে পারলো না। নিহানের সাথে হাঁটা দিলো। ভার্সিটির পেছনের সারিবদ্ধ গাছের পাশে বেঞ্চে বসলো দুজনে। এখানকার পরিবেশ খুব ভালো। রোদের তাপ খুব একটা লাগে না। গাছের ছায়ায় আটকে যায়। ফুরফুরে বাতাস‌ও বয়। ছাত্র ছাত্রীদের গিজগিজ কম। নিরিবিলিতে অনেকটা সময় পার হলো। নিহান বুঝতে পারে মিশ্মি কথা বলতে লজ্জা পাচ্ছে। মেয়েটা বরাবর‌ই এমন। আগ বাড়িয়ে কখনোই কিছু বলে না। চাপা স্বভাবের। নিহানের সাথে পরিচয় খুব অল্প দিনের বিধায় সংকোচ বোধ করছে। মিশ্মিকে সহজ করতে তার পরিবার, বাবা মায়ের কথা জানতে চায় নিহান। মিশ্মি‌ও সাধারন ভাবে জবাব দেয় প্রতি কথার। নিহানের পরিবার সম্পর্কেও টুকটাক প্রশ্ন করে। তারপর আবার‌ও সেই নিরবতা। নিহান বেঞ্চ থেকে উঠে গিয়ে ঝালমুড়ি কেনে। মেয়েরা স্ট্রীট ফুড খুব ভালোবাসে। মিশ্মিও ভালোবাসে। নিহান দেখেছে মাঝে মাঝেই এই রাস্তায় ঝালমুড়ি খেতে ছুটে আসছে মিশ্মি আর তার বন্ধুরা। মিশ্মির বন্ধুদের দল বড় নয়। ছোট। মাত্র তিনজন তারা। এই তিনজনের মধ্যে একজনের বিয়ে হয়ে গেছে। স্বভাব বসত বিবাহিত বান্ধবী আগের মতো মিশতে পারে না। তাতে মিশ্মি বা তার বান্ধবী তন্নীর কোনো হেলদোল নেই। নিহান ঠোঙায় ঝালমুড়ি নিয়ে ফিরে এলো বেঞ্চে। মিশ্মি অন্যমনস্ক হয়ে বসে ছিলো। নিহান ঠোঙা এগিয়ে দিলে ঘাড় ঘুরিয়ে নিহানকে দেখে মিশ্মি। নিহান‌ও তাকায় তার দিকে। চোখাচোখি হয় দুজনের। মিশ্মির ছোট চোখদুটো ফুলে আছে। কপালে অজান্তেই ভাজ পরেছে। মিশ্মি চোখ সরিয়ে মাটির দিকে তাকায়। মাথা নেড়ে বলে,

‘খাবো না ভাইয়া। আপনি খান।’

নিহানের কানে বাজতে থাকে ‘ভাইয়া’। মিশ্মি প্রায় সবাইকেই ভাইয়া বলে ডাকে। কিন্তু তা বলে নিহানকেও ডাকবে? এই ভাইয়া শব্দটা শুনলেই রাগ লাগে নিহানের। আর কেউ ডাকলে নয় শুধু মিশ্মি ডাকলে। যাকে ব‌উ করতে চায় সে যদি বার বার ভাইয়া ডেকে নিজেকে বোন বানিয়ে দেয় তাতে রাগ হ‌ওয়াটাও স্বাভাবিক। এসব তো মিশ্মি বুঝে না। সে নিষ্পাপ মনেই ভাইয়া ডেকে বেরায়। আর এদিকে আহত হয় বেচারা প্রেমিক।

‘তুমি তো ঝালমুড়ি পছন্দ করো!’

‘আপনি কি করে জানলেন?’

নিহান জোরপূর্বক হেসে বললো,

‘কি করে আবার! সব মেয়েরাই এসব ভালোবাসে তাই মনে হলো।’

মিশ্মি থমথমে গলায় বললো,

‘সবার ভালোবাসা পূর্ণতা পায় না। তাই সময় থাকতেই সরে যাওয়া উচিত।’

নিহান ভড়কে গেলো। ভড়কালো মিশ্মি নিজেও। নিজের অজান্তেই এক কথার মাঝে আরেক কথা বলে ফেলেছে সে। নিহান সন্দিহান গলায় বললো,

‘মানে? আমি তো এসব কিছু বলি নি মিশ্মি। তাহলে সরে যাওয়ার কথা আসছে কেনো?’

মিশ্মি নিহানের হাত থেকে ঠোঙা নিজের হাতে নিলো। এক মুঠো ঝালমুড়ি হাতে নিয়ে মুখে পুরলো। খেতে খেতে বললো,

‘ও কিছু না। এমনিই বলছিলাম। আপনার ক্লাস নেই?’

নিহান জবাব দিলো না। মিশ্মির বলা কথার পেছন কারন খুঁজছে সে। মিশ্মি হয়তো ব্যাপারটা বুঝে গেলো। কথা ঘুরাতে বললো,

‘ঝাল নেই একদম। একটু লঙ্কাগুড়ো এনে দেবেন?’

নিহান যেনো হাতে আকাশের চাঁদ পেয়েছে! চট করে দাঁড়িয়ে দৌড় লাগালো ঝালমুড়ি নিয়ে দাঁড়ানো লোকটার কাছে। লঙ্কাগুড়োর বোতল নিয়ে ফিরে এলো সে। মিশ্মি দু তিন বার বোতল ঝাঁকিয়ে অনেকটা লঙ্কাগুড়ো ঢাললো মুড়িতে। ভয়ানক ঝাল অনায়াসেই খেলো সে। নিহান কথা বাড়ানোর তাগিদে বললো,

‘শপিং শেষ?’

মিশ্মি ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো। নিহান হাসি মুখে বললো,

‘তোমার বোনের বিয়ের শপিং? কি যেনো নাম ওর?’

মিশ্মির চেহারা ছেয়ে গেলো নিকষ কালো অন্ধকারে। ঝালমুড়ি চিবানোয় মনোযোগী হয়ে বললো,

‘অথৈ।’

‘হ্যাঁ, অথৈ। ওর বিয়েটা একটু তাড়াতাড়ি হয়ে যাচ্ছে না?’

মিশ্মি দীর্ঘশ্বাস গোপন করে বললো,

‘হয়তো! তবে অথৈ খুশি। বর কনে খুশি হলে আমাদের‌ও উচিত খুশি হ‌ওয়া।’

নিহান মাথা দুলিয়ে প্রশ্ন করলো,

‘পাত্র কি করে?’

‘ভার্সিটির প্রফেসর।’

নিহান গোল গোল চোখে তাকালো। ভাবুক গলায় বললো,

‘কোন ভার্সিটির? অথৈ যে ভার্সিটিতে পরে সেখানের? প্রেমের বিয়ে না কি?’

মিশ্মি ঠোঁটে কৃত্রিম হাসি ফুটিয়ে বললো,

‘অনেকটাই তাই। স্যার ওকে দেখে প্রেমে পরে গেছেন। অথৈ ওনাকে চেনে না। আসলে, তিনি আমাদের ভার্সিটির প্রফেসর।’

নিহান আবার‌ও চমকালো। কৌতুহলী গলায় বললো,

‘কোন প্রফেসর?’

‘জীব বিজ্ঞান ডিপার্টমেন্টের ইয়াসির আহমেদ।’

‘হুয়াট! ‌উনি? ‌ইয়াসির স্যার? ‌ইয়াসির স্যার অথৈকে দেখে প্রেমে পরেছেন?’

মিশ্মি ভাবলেশহীন গলায় বললো,

‘এতো অবাক হ‌ওয়ার কি আছে? প্রেমে পরতেই পারেন। অথৈ কি কম সুন্দরী না কি?’

নিহান ফিচেল গলায় বললো,

‘তা নয়। কিন্তু ইয়াসির স্যার কারো প্রেমে পরতে পারেন জানা ছিলো না। উনি তো কখনো কোনো মেয়ের দিকে চোখ তোলে তাকান নি অব্দি। শুনেছি ক্লাসের মেয়েদের‌ সাথে বেশ রুড বিহেইভ করেন। আর সেই তিনি প্রেমে পরে গেলেন? দেখলেন কোথায় ওই পিচ্চিকে?’

মিশ্মি হাসলো। হেসে হেসেই বললো,

‘যাকে চোখ তোলে দেখেছেন তার প্রেমেই পরেছেন। আমাদের ভার্সিটিতে অনুষ্ঠান ছিলো। অথৈও এসেছিলো সেদিন আমার সাথে। তখন‌ই হয়তো দেখেছেন। আমি জানি না সঠিক।’

কথা শেষ করে উঠে দাঁড়ালো মিশ্মি। নিহান‌ও উঠে দাঁড়ালো তার সাথে। মিশ্মি ব্যস্ত ভঙ্গীতে বললো,

‘আসছি ভাইয়া। পরে কথা হবে।’

নিহান অনিচ্ছাসত্ত্বেও মাথা দুলিয়ে সায় দিলো। মিশ্মি কয়েকপা এগুতেই নিহান ছুটে এসে মিশ্মির সামনে দাঁড়ালো। বলতে লাগলো,

‘আমি ড্রপ করে দেই?’

মিশ্মি ঝট করে বলে উঠলো,

‘না। মানে, আপনার সাথে আমায় দেখলে বাড়িতে তুলকালাম লেগে যাবে।’

‘বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে নামিয়ে দেবো নাহয়। খুব রোদ! ‌এই সময় রিকশাও পাবে না হয়তো। ইউ ক্যান ট্রাস্ট মি।’

মিশ্মি কথা বাড়ালো না। মৃদু হেসে যেতে রাজি হলো।
.

পেশেন্ট দেখার মাঝপথেই মায়ের ফোন পেয়ে কিছুটা বিব্রত হয় তাহির। ফোন না উঠিয়ে সাইলেন্স করে দেয় সে। প্রেসক্রিপশন লিখা শেষ করে রোগীকে রোগ বিষয়ক বিষদ বর্ণনা করে বিদায় জানালো। অ্যাসিটেন্টকে ডেকে বলে দিলো আজ আর রোগী দেখবে না সে। বাকিদের এপোয়েনমেন্ট কাল শিফ্ট করতে। অ্যাসিটেন্ট ছেলেটি তাহিরের কথা মতো রোগীদের চলে যেতে বললো। রোগীদের মধ্যে দেখি গেলো হতাশা। সারাদিন ধরে কেবিনের বাইরে বসে থেকে এখন ডাক্তার বলছে এটেন্ড করবে না। ডাক্তারকে কঠোর হৃদয়ের অধিকারি বলে মনে হতে লাগলো কারো কাছে। কেউ কেউ আবার ভয়ানক সব গালি গালাজ দিয়ে প্রস্থান করলো। কয়েকজন চুপচাপ চলে গেলেও মনে মনে এখানে আর কখনো না আসার প্রতীজ্ঞা করলেন। তাতে অবশ্য‌ তাহিরের কিছু যায় আসে না। তার একমাত্র ভাবনা মায়মুনাকে নিয়ে। কাজের সময় সচরাচর মা ফোন করেন না। আজ হঠাৎ‌ করলেন। তাও তিন বার। তাহির কল ব্যাক করলো। মায়মুনা জামান ফোন তুলে গম্ভীর গলায় বলেন,

‘আমরা পৌঁছে গেছি। তুমি কখন আসছো?’

তাহির চোখ বোজে লম্বা শ্বাস টানে। বলে,

‘সরি মা। আসতে দেরি হবে আমার।’

মায়মুনা জামান গলার স্বর কড়া করে বললেন,

‘পেশেন্ট দেখা কখন শেষ হবে?’

‘পেশেন্ট দেখবো না আর। কালকের এপোয়েনমেন্ট রেখেছি সবার জন্য।’

‘তাহলে আসতে পারবে না কেনো?’

‘আসতে পারবো না বলি নি মা। বলেছি দেরি হবে!’

মায়মুনা জামান সন্দিহান গলায় বলেন,

‘কিসের জন্য দেরি হবে তাহির? পেশেন্ট দেখা নেই, হাসপাতালে এমার্জেন্সি নেই। তবে?’

তাহির গ্লাস হাতে নিয়ে পানি খেলো। ঘাড় বাকিয়ে বললো,

‘শরীর খারাপ লাগছে। তোমরা কেনাকাটা করো। আমি কিছু সময় রেস্ট নিয়ে আসবো। তাছাড়াও আমার পছন্দ খুব বাজে। কি কিনতে কি কিনবো তার ঠিক নেই। আমি বরং তোমাদের পিক পরবো। রাখছি মা।’

মায়মুনা ফোন ব্যাগে রাখেন। পাশে বসা ভাইঝিকে নিয়ে চলে আসেন শপিং মলের বাইরে। ছেলে তার কথার অমান্য করছে। কয়েকদিন ধরেই করছে। বিয়ের আগে এই হাল হলে বিয়ের পর কি হবে ভাবতেই আত্‌কে উঠেন মায়মুনা। শপিং মলের দরজা পেরুতেই ভয়ঙ্কর এক ধাক্কা খান তিনি। যদিও দোষ মায়মুনার ছিলো তবুও অপর পাশ থেকে আসা নির্দোষ মেয়েটিকে দোষী বানিয়ে দিলেন তিনি। মেয়েটি হতবিহ্বল হয়ে গেলো। মায়মুনা রাগী গলায় এ যুগের ছেলেমেয়েদের বেহাল্লাপনা, বেয়াদবির পেছনে বাবা মায়ের দেয়া শিক্ষার দিকে আঙুল তুললেন। সামনে দাঁড়ানো মেয়েটি বিনীত ভাবেই বললো,

‘আন্টি আই এম সরি কিন্তু আপনি এভাবে আমার বাবা মায়ের ব্যাপারে কথা বলতে পারেন না। আমি মেনে নেবো না সেটা।’

মায়মুনার রাগ বেড়ে গেলো এতে। চোখ গরম করে বললেন,

‘তুমি আবার‌ও আমার আপমান করছো? বড়দের সাথে বেয়াদবি করার সাহস কোথায় পাও তুমি?’

‘আমি বেয়াদবি করছি না তবুও আমার কথা শুনে তেমন মনে হলে আমি সরি বলছি। সিন ক্রিয়েট করবেন না।’

‘সরি বলে আমাকে ধন্য করছো না তুমি। সরি শব্দটা বললেই সাত খুন মাফ হয়ে যায় না। মায়ের মতো এক মহিলাকে ইচ্ছাকৃত ধাক্কা দিয়ে তাকে আবার সরি বলো?’

মেয়েটি গাল ফুলিয়ে শ্বাস ছাড়লো। কাঠ কাঠ গলায় বললো,

‘যে কাজ আমি করি নি তার জন্য সরি বলতে বাধ্য ন‌ই আমি। ধাক্কা ইচ্ছাকৃত ছিলো না তার চেয়েও বড় কথা আপনি আমায় ধাক্কা দিয়েছেন। আমি দেই নি। সেক্ষেত্রে আপনার উচিত আমাকে সরি বলা।’

মায়মুনা জামান গর্জে উঠেন এবার। কেনাকাটা করতে আসা প্রায় সবাই জড়ো হয়ে গেছে সেখানে। মায়মুনা বলেন,

‘তোমার স্পর্ধা দেখে আমি আশ্চর্য হচ্ছি। বয়সে বড় একজনকে সরি বলতে বলছো তুমি। কোনো কান্ডজ্ঞান আছে তোমার?’

‘জি না নেই। আমি ভীষন খাপছাড়া আর আপনার কথায় বেয়াদব। যেমন তেমন বেয়াদব ন‌ই ভয়ানক বেয়াদব। আমার বেয়াদবি প্রকাশ পায় ঠিক তখন যখন কেউ আমার বাবা মা নিয়ে কথা বলে। তাই বলছি, যা হয়েছে ভুলে যান। এই যে আপু, নিয়ে যান ওনাকে। হাইপার হয়ে যাচ্ছেন তো। অসুস্থ হয়ে পরতে পারেন।’

মায়মুনার ভাইঝি তাকে অনুরোধের সুরে বললো,

‘চলো ফুপি। গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। কথা বাড়িয়ে লাভ নেই।’

মায়মুনা কপট রাগ নিয়ে বেরুলেন। ভীড় কিছুটা ফাঁকা হতেই কাপরের অনেকগুলো ব্যাগ হাতে এগিয়ে আসেন অনাহিতা। বাইরের দিকে তাকিয়ে বলেন,

‘কি হচ্ছিলো হিমি? তুই এখানে দাঁড়িয়ে কি করছিস? ‌অথৈ কখন থেকে অপেক্ষা করছে তোর জন্য।’

হিমি মাথা চুলকে শার্টের হাতা ঝেড়ে বললো,

‘কিছুনা মামানি। একজনের সাথে ধাক্কা লেগেছিলো। তিনি আবার সম্পূর্ণ দোষ আমার ঘাড়ে চাপাচ্ছিলেন। একটু কথা কাটাকাটি। আর কিছুনা।’

অনাহিতা ঠেস মারা গলায় বললেন,

‘যেখানে যাস সেখানে ঝামেলা বাঁধিয়ে দিস। না জানি আমার মেয়ের বিয়ের দিন কি করে বসিস তুই! চল এখন।’

হিমি মিঁইয়ে যায় কিছুটা। শুকনো ঢোক গিলে মামানির হাত থেকে ব্যাগগুলো নিজের হাতে নিয়ে এগুতে থাকে উপর তলার দিকে। ধাক্কা দেয়া মহিলার উপর রাগ লাগছে হিমির। এনাকে ভদ্র মহিলা বলা যায় না কিছুতেই। আবার অভদ্র মহিলাও বলা যায় না। বড়দের সম্মান দিয়ে কথা বলতে হয়। যদিও তিনি সম্মানের যোগ্য নন তবুও অসম্মান করা যাবে না। এনাকে স্মৃতি থেকে আউট করতে হবে। একদম ডিলিট।

চলবে,,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here