হুজুরের বউ যখন ডক্টর 🌼🌼🌼
রাইটার : রাকিবুল ইসলাম
পর্বঃ ০৩
বাবা : চুপ….. যদি আর একটা কথা উচ্চারণ করলে তোর জিহবা টেনে ছিড়বো
আল্লাহ তোর কপালে ভাল মেয়ে রাখছে
ধৈর্য ধর বাবা।কারো এমন ক্ষতি করিস নাহ।
কারো সংসার নষ্ট করিস নাহ।
ওদের দুজনকে থাকতে দে
নয়ন : আমি জাফরীকে ছাড়া বাচবনা
__________
জাফরী আর মেহেদি গাড়িতে উঠলো
সিটে দুজনে বসে আছে।
জাফরী বললো হুজুর দেখি কি নিয়েছেন আমার জন্য।এবার মেহেদি আসতে করে ব্যাগ থেকে একটা ফোন বের করে দিলো স্যামসাং।
জাফরী ফোনটা হাতে নিয়ে মেহেদির গালে একটা
চুমু দিলো
মেহেদি : ধ্যাত কেউ এইভাবে চুমু দেয়
জাফরী : সমস্যা নাই বাস তো ফাকা আছে কেউ দেখে নাই।আর দেখুক,,, নিজের বরকে তো চুমু দিয়েছি অন্য কাউকে তো দেই নাই।
আচ্ছা হুজুর আপনি কি করে বুঝলেন আমার ফোন দরকার।
মেহেদী : আপনি সেদিন মোবাইলে বললেন আপনার ফোনটা বার বার করে হ্যাং হয়ে যায় এইজন্য এটা কিনেছি শুধু আপনার জন্য।
জাফরী : আচ্ছা আপনার ফোন কই
মেহেদী : আমার ফোন আছে
জাফরী : আরে ভাই কই,,, সেই ফোন
মেহেদী : আপনি আমাকে ভাইয়া বললেন
জাফরী : তো কি বলব হুম বউকে ফোন দেখাতে ভয় পাচ্ছেন। নাকি ফেসবুকে আমার স্বতীন জোগাড় করছেন হুম
মেহেদী : তুমি কি আমাকে ফেসবুকে অ্যাক্টিভ দেখতে পাও
জাফরী : নাহ তো, দেখা যায় নাহ কেন আপনাকে
মেহেদী : আসলে আমার ফোনটা নষ্ট হয়ে গেছে
তাই ফেসবুকে জেতে পারি নাহ
জাফরী : তাহলে আপনি নিজে ফোন না নিয়ে আমাকে দিলেন কেন…!!!!
মেহেদী : কারণ আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি, আপনি আপনার বাবা মাকে ছেড়ে আমার কাছে এসেছেন।
আমি জানি আমার অভাব তাই হয়তো আপনার আশার কথা গুলো আমাকে বলেন নাহ
কিন্তু আমি তো বুঝি, আর আমাকে ফোন নেয়া লাগবে নাহ।আমার বউটা খুশি থাকলেই আমি খুশি।আমার বউটা ডাক্তার হোক এটাই আমি চাই।
অন লাইনেও তো অনেক আপেক্ষা করতে হয়
তাই না।
জাফরীর চোখে পানি চলে আসলো হুজুরটা এতোই ভালোবাসে আমাকে।
জাফরী বাসের জানালার ধারে বসে ছিলো
আসতে করে জাফরী মেহেদীর ডান হাতটা চেপে ধরে মাথাটা কাধে লাগিয়ে কান্না করছে।
জাফরীর চোখের পানি মেহেদীর পান্জাবিতে টপ টপ করে পড়ছে।
মেহেদি বললো আরে পাগলী কান্না করছেন কেন
কি হয়েছে আপনার আমি আছিতো।
জাফরী : মা বাবার কথা মনে পড়ছে হুজুর।
ওরা আমাদের বিয়েটা মনেহয় কোনদিন মেনে নেবে নাহ।
মেহেদি : ঠিক একদিন মেনে নেবে দেখিয়েন আমার বিশ্বাস।
জাফরীকে জড়িয়ে ধরে মাথায় মুখ লাগিয়ে আছে
মেহেদী।আর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
_____________
নয়ন : যে করেই হোক জাফরীকে আমি চাই
নয়নের বন্ধু : কিন্তু দোস্ত কি করে সম্ভব
নয়ন : আমি ওকে খুব ভালোবাসি। ওকে ছাড়া বাচব নাহ
নয়নের বন্ধু : দোস্ত অন্যের বউয়ের প্রতি এমন নজর দেয়া তোর ঠিক হচ্ছে বল তো।
আর জাফরী তো বিবাহিত,ওর স্বামী আছে।
ওদের সংসার টা কি নষ্ট করা তোর ঠিক হবে না।
নয়ন : তোরা থাকবা না থাক।আমার ব্যাবস্থা আমিই করব।
দেখ এবার আমি কি করি,মেহেদী যেন জাফরীকে দেখতে না পারে তার ব্যাবস্থা করব
নয়নের বন্ধু : কি করে সেটা
নয়ন : দেখেই যা আসতে আসতে কি হয়।
______________
জাফরীকে নিয়ে মেহেদি তার বাড়ির সামনে নামলো।জাফরী দৌড়ে গিয়ে তার শ্বাশুড়ি মাকে জড়িয়ে বললো আস্সালামুআলাইকুম
মা তুমি কেমন আছো।
মেহেদীর মা জাফরীকে দেখে খুশি হয়ে গেল
এইতো মা ভালো আছি।
হঠাৎ তুমি,,, তোমার তো আসার কথা ছিলো নাহ তাইনা।
জাফরী : আসলে মা আমার কলেজ ছুটি তাই কি করব এটাই তো আমার বাড়ি তাইনা।
মেহেদীর মা : তা ঠিক
জাফরী ঘরে প্রবেশ করলো ঘরে গিয়ে দেখছে
অনেক গুলো ঔষুধ।
জাফরী ঔষুধ দেখে মেহেদীকে ডাক দিয়ে বললো
হুজুর এই ঔষুধ গুলো কিসের।
মেহেদি বললো এগুলো আম্মুর ঔষুধ
জাফরী বলল কি হয়েছে মায়ের
মেহেদি : একটু অসুস্থ
জাফরী : মায়ের অসুখ আমাকে তো কিছুই বলেন নি
মেহেদি : কি আর বলব বলুন।আপনাকে টেনশন দিতে চাই নাই।টেনশন করলে আপনার পড়াশোনা ক্ষতি হবে।
জাফরী : যত্তোসব ফালতু চিন্তা আপনার।
আপনি বললেন না কেন আম্মুর অসুখ হয়েছে
মেহেদি : আরেহ বললাম তো টেনশন হবে আপনার তাই
জাফরী : আজিব লোক আপনি, যত্তোসব
মেহেদি জাফরীর কাধে হাত দিলো রাগ করে
জাফরী কাধ থেতে হাতটা ঝাটকা মেরে ফেলে দিলো।
মায়াবী হওয়া ভালো এতো মায়াবী ভালো নাহ।আম্মুর অসুখ হয়েছে আপনি জানান নাই।
আপনার সাথে কোন কথা নাই।
আসলে মেহেদি একটু বোকা টাইপের
একটু কেউ যতি কড়া কথা বললে মন খারাপ করে বসে থাকে।
প্রায় ঘন্টা খানিক অতিবাহিত হয়ে গেল
মেহেদি জানালার কাছে বসে থেকে নদীতে
সাতার কাটা হাস গুলো দেখছে।
জাফরী পিছন থেকে এসে খপ করে মেহেদিকে
জড়িয়ে ধরে বলছে আমার লক্ষী হুজুর
রাগ করছেন বুঝি আমার উপর।
কি হলো বাবু রাগ করছো আমার উপর
মেহেদি : আমি কি ছোট বাচ্চা নাকি বাবু হতে যাব কেন
জাফরী : তাহলে কি বলব
মেহেদি : সেটা আপনার ব্যাপার
জাফরী : চোখটা বন্ধ করুণ তো
মেহেদি : কেন….???
জাফরী : আহ বন্ধ করুণ তো।আমি না বলা পর্যন্ত চোখ খুলবেন না কেমন।
মেহেদি : আচ্ছা
জাফরী মেহেদির পান্জাবির বোতাম গুলো আসতে করে খুলতেছে।
মেহেদি : আপনার লক্ষণ ভাল মনে হচ্ছে নাহ
চোখ খুলতেছি
জাফরী : নাহ চোখ খোলা যাবে নাহ
মেহেদি : তাহলে পান্জাবির বোতাম খুলতেছেন কেন,,,, আমার লজ্জা লাগে
জাফরী : ধ্যাত বউয়ের কাছে কিসের লজ্জা
হুজুর আপনার গায়ে আলাদা একটু সুগন্ধি আছে আমাকে সেই রোমান্টিক লাগছে।
মেহেদি : প্লিজ পান্জাবি খুলিয়েন নাহ আমার লজ্জা লাগছে।
জাফরী : এই শুনুন আমি আপনার বউ,আপনার গায়ের পান্জাবী খোলার অধিকার আমার আছে।
আর আপনি কি জানে না স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কত কর্তব্য আছে?
হাদিসে আছে..
স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কর্তব্য
১) সামর্থ্য অনুযায়ী স্ত্রীর খোরপোষ তথা ভরণ-পোষণ দিতে অবহেলা না করা এবং স্ত্রীর জন্য পৃথক বাসস্থানের ব্যবস্থা করা। যেমন, পৃথক একটি কামরা দেয়া।
২) স্ত্রীকে দ্বীনী মাসআলা-মাসায়িল শিখাতে থাকা এবং নেক কাজের প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে থাকা।
৩) স্ত্রীর সাথে সুন্দর আচরণ করা, ভাল ব্যবহার করা, ছোট খাট বিষয় নিয়ে অহেতুক রাগ না করা।
৪) মাহরাম আত্মীয়-স্বজনের সাথে মাঝে মধ্যে দেখা সাক্ষাতের সুযোগ দেয়া।
৫) খামাখা স্ত্রীর প্রতি কু-ধারণা পোষণ না করা এবং তার ব্যাপারে একেবারে উদাসীনও না থাকা।
৬) খরচের ব্যাপারে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা। কৃপণতা না করা আবার বেহুদা খরচেরও অনুমতি না দেয়া।
৭) প্রয়োজন অনুপাতে তার মানবিক চাহিদা পূরণ করে তার দিল-দেমাগ ও দৃষ্টিকে গুনাহ থেকে হেফাজতের ব্যবস্থা করা এবং তা সাধারণভাবে সপ্তাহে একবার হওয়া ভাল। আর প্রতি চার মাসে একবার হওয়া জরুরী।
৮) অন্তরঙ্গ মূহুর্তে তার সাথে যেসব কথাবার্তা হয় তা অন্য কারো নিকট কোন অবস্থাতেই প্রকাশ না করা।
৯) নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী তাকে কিছু হাত খরচ দেয়া এবং তাকে সেই টাকা তার ইচ্ছানুযায়ী যে কোন বৈধ খাতে খরচের অনুমতি দেয়া।
১০) প্রচলিত বিভিন্ন কুপ্রথা ও অনুষ্ঠান- যেখানে বেপর্দা বা অন্য কোন গুনাহ হয়ে থাকে-সেখানে যেতে বাধা দেয়া।
১১) তার অসাবধানতা বা বুদ্ধিমত্তার অভাবে কোন ভুল-ত্রুটি হয়ে গেলে তাতে ধৈর্য ধারণ করা। কখনো শাসন বা সংশোধনের প্রয়োজন দেখা দিলে ভারসাম্য বজায় রাখা।
ইত্যাদি ইত্যাদি।
– ও বাবা আমার বউ দেখছি সবই জানে?
– জি এখানে চুপ করে দাড়িয়ে থাকুন আমি একটু আদর করবো,
চলবে……….?