হৃদমোহিনী পর্ব-৭

0
2751

হৃদমোহিনী
পর্ব ৭
মিশু মনি
.
৮.
সায়ানকে সবাই শনপাপড়ি বলে ডাকে৷ সেয়ানা মাল বলেও ডাকা হয়৷ এই নামের উৎপত্তির পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান যে মেয়েটির সে হচ্ছে অবনী। এখন সবাই মিলে সেই অবনীর বিয়েতেই যাচ্ছে৷ বন্ধুরা যখন এসব নিয়ে হাসাহাসি করছিলো সায়ান তখন মনেমনে ভাবছে মেঘালয় ও মিশুর কথা। সেই যে ওরা চলে গেলো, আর আসার নাম গন্ধই নেই। মেঘালয় কখনো কোনো মেয়েকে এতটা পাত্তা দিয়েছে বলে সায়ানের মনে পড়ছে না।

ও ঝাপ দিয়ে সিট থেকে নেমে পড়লো। কেবিন থেকে বেড়িয়ে এসে কল দিলো মেঘালয়ের নাম্বারে। মেঘালয় রিসিভ করতেই সায়ান বললো, ‘গরীবের বাহুবলি, ভাই কই আপনি?’
– ‘ট্রাকের উপরে আছি৷’
– ‘রাজকন্যাকে কি আপনার ট্রাক মনেহচ্ছে ভাই?’
– ‘অশ্লীল কথাবার্তা কবে বাদ দিবি শনপাপড়ি?’
– ‘দুইটা বাচ্চার বাপ হলে। তুই কই আছিস মেঘুশালা?’
– ‘বললাম তো ট্রাকের উপর।’
– ‘রেলগাড়িতে ট্রাক কই পাইলি তুই? গাড়িটাকে কি তোর ট্রাক মনেহচ্ছে?’

মেঘালয় হাসতে হাসতে বললো, ‘ইয়ার্কি না দোস্ত। একটা এক্সিডেন্ট হয়ে গেছে।’
– ‘মানে!’
– ‘মানেটা পড়ে বুঝাই? ফোনে এতকিছু বলা সম্ভব না। কালকে শুনিস।’

মেঘালয় কল কেটে দিলে সায়ান বাথরুমের দিকে চলে গেলো। বাথরুমে ঢুকে দরজা লাগাতে যাবে এমন সময় দেখলো সেখানে একটি মেয়ে। মেয়েটি ভয়েই চিৎকার দিতে যাবে এমন সময় সায়ান এক হাতে ওর মুখ চেপে ধরলো। চোখ পিটপিট করে ভয়েই কাঁপছে মেয়েটি।

সায়ান হাত ছেড়ে দিয়ে বলল, ‘চেঁচাবেন না প্লিজ। নয়ত আমাকে গণধোলাই দেবে পাবলিক।’
– ‘আপনি এখানে কেন? বলা নেই, কওয়া নেই সোজা বাথরুমে ঢুকে গেলেন একেবারে?’
– ‘হুস। এটা কি আমার শ্বশুরের বেডরুম যে বলে কয়ে ঢুকতে হবে?’

মেয়েটি রেগে বলল, ‘আপনার বোঝা উচিৎ ছিলো ভেতরে কেউ আছে৷ এ রকম হুট করেই ঢুকে পড়লেন কেন?’
– ‘আপনি কোন আক্কেলে দরজা খোলা রেখে বাথরুমে ঢুকে পড়েছেন?’

মেয়েটি আরো রেগে বলল, ‘আমার আক্কেল নিয়ে কথা বলার আগে নিজের আক্কেল চেক করেন। এই দেখেন দরজা লাগালেও খুলে যায় আপনা আপনি। আমি তো সেটা জানতাম না।’

সায়ান হেসে বলল,’এটা আপনার বোঝা উচিৎ ছিলো। তারপর টয়লেটে বসে একহাতে দরজা টেনে ধরে কাজ সারতেন।’

মেয়েটি ভয়ংকর রেগে বলল, ‘ছিহ কি বাজে কথা বলেন আপনি?’
– ‘সত্য কথা শুনতে বাজেই মনেহবে।’
– ‘আমি কিন্তু চিৎকার করে লোকজন জড়ো করতে পারি, তখন বিপদে পড়বেন আপনি৷’

সায়ান বললো,’বাহ! লোকজন ডেকে কি বলবেন শুনি? আমি আপনাকে জোর করে বাথরুমে নিয়ে এসেছি? আসার সময় চেঁচালেন না,আবার বাথরুমে ঢুকে চেঁচাবেন? পাবলিক দেখলেই বুঝবে আমি কত ইনোসেন্ট একটা ছেলে।’
মেয়েটি দাঁতে দাঁত চেপে বলল,’ইনোসেন্ট অন মাই ফুট। ভিলেনমার্কা চেহারা। দেখলেই বোঝা যায়৷ সরে দাঁড়ান,আমি বের হবো ‘

সায়ান একটু সরে দাঁড়ালো। মেয়েটি জামা ঠিক করে বের হতে যাচ্ছিলো এমন সময় সায়ান বললো, ‘ছিইহ কি গন্ধ আপনার শরীরে৷’
মেয়েটি অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালো সায়ানের দিকে। সায়ান ফিক করে হেসে বললো, ‘সরি।’

মেয়েটি রাগে ফুসতে ফুসতে বের হয়ে এলো বাথরুম থেকে। সায়ান হেসে ফেললো। কাউকে জব্দ করতে ওর দারুণ মজা লাগে৷ মেয়েটিকে জব্দ করে ভালো মজা পাওয়া যাবে৷
ও বের হয়ে মেয়েটির পিছুপিছু যেতে লাগলো। মেয়েটা সোজা গিয়ে একটা কেবিনে ঢুকে পড়লো। সেটা দেখে ভেতরটা ছ্যাৎ করে উঠলো মেঘালয়ের৷ কেবিনের ভেতর গিয়ে তো আর জব্দ করা যাবেনা। বড্ড ইচ্ছে করছিলো মেয়েটাকে জব্দ করতে সেটা আর হলোনা।

হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছিলো এমন সময় দেখলো মেয়েটি কেবিনের দরজা খুলে বের হয়ে এলো। হাতে একটা বড় ব্যাগ। ব্যাগটা টেনে নিয়ে যেতেই পারছে না সে। সায়ান এগিয়ে গিয়ে বলল, ‘হেল্প লাগবে?’
– ‘গায়ে পড়ে কথা বলতে আসবেন না।’
– কখন গায়ের উপর পড়লাম? মাত্রই তো পরিচয় এত তারাতারি ওসব কি আর করা যায়?’

বলেই চোখ টিপ মারলো। মেয়েটা রেগে বলল, ‘চরম খারাপ লোক তো আপনি। আপনার মত বাজে লোক এ জীবনে আর দ্বিতীয়টি দেখিনি। যত্তসব। সরে দাড়ান।’
– ‘আরে, একটু হেল্প করতে চাইছি।’
– ‘নো নিড। বেশি ডিস্টার্ব করলে পুলিশে ইনফর্ম করবো।’
– ‘শিওর। বাংলাদেশ পুলিশ আমার বাপের মত।’

মেয়েটা আর কিছু বললো না। রাগে দাঁত কিড়মিড় করতে করতে ব্যাগটা টানতে টানতে এগোতে লাগলো। সায়ান এগিয়ে এসে আবারও দুষ্টুমি করে বললো, ‘মেয়েরা আমার জন্য পাগল। আমার চেহারা দেখলেই তারা ফিদা হয়ে যায়। বেল যেমন ন্যাড়া মাথা দেখলেই টুপ করে পড়তে চায়৷ তেমনি মেয়েরাও আমাকে দেখলে কাছে না এসে পারে না। তার উপর আমি ক্লোজ আপ টুথপেস্ট ইউজ করি ‘

মেয়েটি বললো, ‘এত লুইচ্চা কেন আপনি?’
– ‘পাওয়ার। আমার হর্স পাওয়ার আছে বুঝলেন। বাংলাদেশ পুলিশ আমার বাপের মতন।’
– ‘আপনি কতটা বেয়াদব আপনি জানেন? দেখতে তো একেবারে ভদ্রলোকের মতন। কিন্তু ভেতরে ভেতরে চরম ইতর টাইপের।’

সায়ান হেসে বললো, ‘নিজেও স্বীকার করছেন আমি দেখতে একেবারে জেন্টলম্যান? আর ভেতরটা কিভাবে দেখলেন আপনি? একগাদা জামাকাপড় পড়েছি তারপরও ভেতর দেখতে পাচ্ছেন? আপনার চোখের পাওয়ার এত বেশি?’

মেয়েটি এক হাতে সায়ানের কলার টেনে ধরে বললো, ‘ইতরামির একটা সীমা থাকে। ডোন্ট ক্রোস ইউর লিমিট ওকে?’

এমন সময় একটা লোক এসে বলল,’কি হচ্ছে এখানে? ‘

মেয়েটি কিছু বলার আগেই সায়ান বলল,’আমার স্ত্রী রেগে গেলে আগুন হয়ে যায়৷ তখন ফায়ার সার্ভিস ও ওকে শীতল করতে পারেনা।’

মেয়েটি মুখ খুলতে যাবে তখন সায়ান ওর মুখ চেপে ধরে বললো, ‘বাবু প্লিজ মুখ খারাপ করোনা।’
লোকটি মুখ বাঁকা করে চলে গেলে সায়ান হাতটা ছেড়ে দিলো। মেয়েটা রেগে বললো,’ইউ…’
– ‘বিডি পুলিশের ছেলে।’
– ‘রাবিশ৷ যান তো এখান থেকে৷ বিরক্ত লাগছে আমার।’

সায়ান একটু এগিয়ে এসে কি যেন ভেবে আবারও পিছিয়ে এলো। বললো, ‘আমরা বাংলা সিনেমার মত রোমান্টিক কাজ কাম সেরে ফেললাম না?’
– ‘হোয়াট? রোমান্টিক কাজ কাম মানে?’
– ‘এইযে খুনসুটি। হয় হয়, সিনেমায় এমন ই হয়। আমি শাকিব খান আর আপনি বুবলি।’

মেয়েটি এবার এমনভাবে তাকালো যে সায়ান আর এক মুহুর্ত ও দাঁড়ালো না। এক ছুটে নিজের কেবিনের ভেতরে চলে গেলো। গিয়েই দরজা লাগিয়ে দিয়ে হো হো করে হেসে উঠলো।

সবাই জিজ্ঞেস করলো এভাবে হাসির কারণ কি? সায়ান পুরো ব্যাপারটা খুলে বলতেই সবাই হেসে উঠলো। হাসি থামতেই চাইছিলো না, সেই মুহুর্তে দরজায় কে যেন নক করলো। পূর্ব উঠে গিয়ে দরজা খুলে দিলো।

দরজায় ওপাশে কার সাথে যেন কথা বললো পূর্ব। সবাই দরজার দিকে তাকিয়ে আছে। পূর্ব সরে যেতেই একটা মেয়ের মাথা দেখা গেলো। মেয়েটি বললো, ‘আমার ব্যাগটা কি আপনাদের কেবিনে রাখতে পারি? আসলে আমি না আজকে সিট পাইনি। সেজন্যই ব্যাগটা কারো কেবিনে সেফলি রাখতে চাচ্ছিলাম।’

সবাই উৎসুক চোখে তাকালো। সায়ানের মুখে মিটিমিটি হাসি৷ কারণ এই মেয়েটিকেই একটু আগে জব্দ করে এসেছে সে। সবাই আন্দাজ করে নিলো এটিই সেই মেয়ে। এটুকু বুঝতে কারো অসুবিধা হলোনা। মৌনি বললো, ‘আপনি নিজেও আমাদের সাথে যেতে পারেন আপু। আমরা পুরো কেবিনটাই বুক করে নিয়েছি৷ যদি আপনার আপত্তি না থাকে।’

মেয়েটি একবার চোখ বুলিয়ে নিলো মৌনি, রোদ ও দুপুরের প্রতি। তারপর ভিতরে প্রবেশ করলো। সে এখনও সায়ানকে দেখতে পায়নি। পূর্ব ব্যাগটা ভেতরে টেনে নিতে সাহায্য করলো। মেয়েটি সিটে বসে সামনের দিকে তাকাতেই সায়ানের সাথে চোখাচোখি হয়ে গেলো।

৯.
মেঘালয় বললো, ‘পৃথিবীতে অনেক রকমের ছেলে আছে জানো?’
মিশু মাথা নেড়ে ‘না’ বললো।
মেঘালয় বললো, ‘তুমি খুব সরল একটা মেয়ে। সেজন্যই এত বড় ধোকা খেয়েছো। আশাকরি এরপর থেকে আর এরকম ভূল কখনো করবে না। সবকিছুর আগে নিজেকে ভালোবাসো,নিজেকে সম্মান করো বুঝেছো?’

মিশু মাথা দোলালো। তারপর বললো, ‘আমি তন্ময়কে অনেক বিশ্বাস করতাম। ওর কোনো কথাই কখনও অবিশ্বাস্য ছিলোনা। সে আমাকে সবসময় সাপোর্ট দিতো।’
– ‘সাপোর্ট দিলেই ছেলেটা ভালো হয়ে যায়না। আর যেহেতু তোমাদের প্রেমটা ভার্চুয়ালে। চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করার প্রশ্নই আসেনা।’

মিশু নিরবে শুনে গেলো কথাগুলি। মেঘালয়ের কণ্ঠস্বর আর উচ্চারিত প্রত্যেকটা বাক্যই ওকে মুগ্ধ করে দিচ্ছে। মানুষটা সত্যিই অনেক ভালো একজন মানুষ। এমনকি ওর বন্ধুগুলোও সবাই একদম আলাদা।
মিশু জিজ্ঞেস করলো, ‘আপনারা বিয়ে বাড়িতে কতদিন থাকবেন?’
– ‘সপ্তাহ খানেক তো থাকবো ই।’
– ‘আমাদের বাসায় আসবেন অবশ্যই। যারা আমার এতটা উপকার করেছে তাদেরকে অবশ্যই বাসায় নিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে।’
– ‘সেটা দেখা যাক। তোমাদের এলাকায় একবার গিয়েছিলাম আমি। সেবার কি হয়েছিলো জানো?’

মিশু চাদরের ভেতরেই একটু নড়েচড়ে বসলো। তারপর জানতে চাইলো কি হয়েছিলো?
মেঘালয় বলতে আরম্ভ করলো, ‘সেবার বেড়াতে গিয়ে একটা বাচ্চা মেয়ে আমার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলো।’

মিশু ফিক করে হেসে বললো, ‘তারপর?’
– ‘মেয়েটা ক্লাস নাইনে পড়তো। সেকি পাগলামি যে করতো। ওর পাগলামির সীমা দেখে মেয়েটির বাবা নিজেই আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিলো বিয়ে করার জন্য।’

হেসে ফেললো মিশু৷ অতটুকু বাচ্চা মেয়েকে তো আর বিয়ে করা সম্ভব নয়। মেঘালয়ের দিকে তাকিয়ে দেখলো সে গভীরভাবে কি যে ভাবছে। জিজ্ঞেস করলো, ‘কি ভাবছেন?’

চমকে উঠলো মেঘালয়। তারপর কথাগুলো মনে করে করে মিশুকে খুলে বলতে লাগলো।

সময়টা ছিলো গ্রীষ্মকাল। কাঠফাটা রোদ চারিদিকে। তার উপর রংপুর জেলা খরার জন্য বিখ্যাত৷ এই খরায় মেজাজ ও খরখরে হয়ে উঠেছে। মেঘ, সায়ান ও পূর্ব বেড়াতে এসেছে এক আন্টির বাসায়।
বাসা থেকে বের হয়ে বাইরে ঘোরাঘুরি করতে করতে একটা গাছের নিচে দাঁড়িয়ে বিশ্রাম নিচ্ছে। হঠাৎ গাছের উপর থেকে টুপ করে কি যেন পড়লো মাথার উপর। মেঘালয় মাথায় হাত দিয়ে দেখলো গরম গরম একটা বস্তু। হাতটা সামনে নিয়ে দেখে পাখির গু। মেজাজ এমনিতেই খরখরে হয়ে আছে, এখন আরো রাগ হচ্ছে। মেঘ রেগে বললো ‘পাখি কি এই গরমে হাগার জায়গা পায়না?’

কথাটা বলা শেষ হতেই একটা উচ্ছল কিশোরীর প্রাণোচ্ছল হাসির শব্দ কানে আসলো। হাসির শব্দে সবাই ফিরে তাকালো মেয়েটির দিকে। মেয়েটি খিলখিল করে হেসে যেতেই লাগলো। সেই হাসির শব্দ ঝুনঝুনির মত বাজতে থাকলো সবার কানে।

মেঘালয় সবেমাত্র ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেছে। তখন প্রচন্ড রাগ ছিলো ওর৷ রেগে বললো, ‘এই পুচকে মেয়ে হাসো কেন?’
মেয়েটি আরো জোরে হেসে উঠলো। তারপর ওদের তিনজনকে অবাক করে দিয়ে কাছে এসে নিজের ওড়না দিয়ে মেঘালয়ের মাথা থেকে পাখির পায়খানা পরিষ্কার করে দিয়েছিলো। সেই হয়েছিলো শুরু। এরপর থেকে মেঘালয়ের পিছনে আঠার মত লেগে থাকতো মেয়েটি৷ মেঘ যেখানে যেতো, সেখানেই ছুটে চলে যেতো। এমনকি মায়ের কাছে জোর করে পিঠা বানিয়ে নিয়ে মেঘালয়ের জন্য নিয়ে যেতো। এতটাই পাগল ছিলো সে। পাগলামি সহ্য করতে করতে দিন কয়েক পরে মেঘালয় ঢাকায় ফিরে এলো। মেয়েটি তখন মেঘের জন্য হাত কেঁটে পাগলামি শুরু করেছিলো। বাধ্য হয়েই মেয়েটির বাবা বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলো মেঘালয়ের বাসায়।

কথাগুলো শুনে হো হো করে হেসে উঠলো মিশু। হাসি থামার পর বললো, ‘কি পাগল ছিলো মেয়েটা। আপনি বিয়ে করেন নি কেন?’
– ‘পাগল? তখন আমার মাত্র ইন্টারমিডিয়েট শেষ হয়েছে। পুরো জীবনটাই সামনে পড়ে আছে৷ আর তাছাড়া রিলেশন চালানোর মত ইচ্ছে ছিলোনা কারণ মেয়েটি অনেক ছোট ছিলো।’

মিশু হেসে বললো, ‘তাতে কি? ক্লাস নাইনের মেয়ে হলে কি হবে? ভালোবাসায় তো পি.এইচ.ডি সেরে ফেলেছে।’
– ‘ওটাকে ভালোবাসা বলেনা। ওটাকে বলে আবেগ।’
– ‘ভালোবাসা তো আবেগ দিয়েই তৈরী তাইনা?’
– ‘না। ভালোবাসায় আবেগের বাইরেও অনেক কিছুই থাকে। ওই পাগলীকে তখন মাথায় তুললে আজকে এই জায়গায় আমি পৌছাতে পারতাম না।’

মিশু আর কিছু বললো না। এখনও ওর হাসি পাচ্ছে। মেঘালয়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো, ‘আমার ভালোবাসা টাকে আপনি কি বলবেন? আমি তন্ময়ের জন্য সবকিছু ছেড়ে ঢাকায় চলে গিয়েছিলাম।’

মেঘালয় মুচকি হেসে বললো, ‘এটা বোকামি।’

অবাক হয়ে মেঘালয়ের দিকে তাকিয়ে রইলো মিশু। লোকটার কথাগুলো একটু নিষ্ঠুর ধাচের হলেও এটাই সত্য, কঠিন সত্য!

(চলবে ইনশাআল্লাহ। লেখা আটকায় কে? 🤔)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here