হৃদয় নিবাসে তুই পর্ব-৬

0
2726

#হৃদয়_নিবাসে_তুই
#পর্ব_০৬
লেখনীতেঃ ভূমি

রক্তিম রুমে ডুকার পরও আরো প্রায় আধঘন্টা বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ছিল অদ্রিজা।মাথা ব্যাথা করছে প্রচুর।নিজের সাথে ঘটা প্রত্যেকটা ঘটনার জন্য মনটা তাকেই দায় করল বারবার।বার কয়েক সুপ্ত নিঃশ্বাস ফেলে অন্ধকার আকাশের থালার ন্যায় উজ্জ্বল চাঁদটার দিকে তাকিয়ে রইল সে।ছোটবেলায় সে বিশ্বাস করত কেউ মারা গেলে সে আকাশের তারা হয়ে যায়।সত্যিই কি হয়?তার বাবাও কি আকাশের তারা হয়ে দেখছে তাকে? কে জানে!অদ্রিজা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।আকাশ থেকে চোখ সরিয়ে তাকাল চারপাশে।দূরের বিল্ডিংগুলোয় আলো জ্বলছে।কোন ফ্ল্যাটে আবার অন্ধকার।রাস্তায় সোড়িয়ামের আলোয় চোখে পড়ছে কুকুরগুলো।সাত কি আটটা কুকুর দলবেঁধে ঘেউ ঘেউ করছে।এপাশ ওপাশ থেকে ছুটে চলা গাড়িগুলো ও আলো ছুড়ছে এলোমেলোভাবে।অদ্রিজা ক্লান্ত চাহনিতে তাকিয়ে রইল। আরো কিছুক্ষন পর রক্তিম ঘুমিয়ে পড়েছে এমনটা ভেবেই রুমে ডুকল সে।কিন্তু রুমে ডুকতেই তার ভাবনা ভুল প্রমাণিত হলো।রক্তিম এখনো ঘুমোয়নি।খাটে হেলান দিয়ে ল্যাপটপ কোলে বসে আছে।দুই হাতে টাইপ করতে করতেই অদ্রিজার দিকে একবার তাকাল সে।তারপর আবারও ল্যাপটপের স্ক্রিনে দৃষ্টি ফেলল।অদ্রিজা বার কয়েক গম্ভীর ভাবে নিঃশ্বাস নিয়ে খাটের কাছে গিয়ে দাঁড়াল।খাটের বা পাশের খালি জায়গাটা তার জন্য বুঝতে পেরেই গুটিশুটি হয়ে শুঁয়ে পড়ল সে।কিন্তু ঘুম?ঘুম যে আসছে না।মাথা ব্যাথায় টনটন করে উঠল মাথা।বোধ হয় রুমের লাইট জ্বালানো থাকাতেই ঘুমটা আসল না আর মাথা ব্যাথাটাও ক্রমশ বাড়ল।কে জানে।প্রায় আধঘন্টা চেষ্টা করেও তার ঘুম আসল না।রক্তিম তখনও ল্যাপটপে টাইপ করছিল।ডান পাশ ফিরে রক্তিমের মুখের দিকে তাকিয়েই বিরক্ত হলো অদ্রিজা। কপাল কুঁচকে তাকিয়ে রইল সেদিক পানে।রক্তিম সেই দৃষ্টিটা খেয়াল করল কিনা কে জানে।তবে সেভাবে টাইপ করতে করতেই বলে উঠল,

‘ এভাবে না তাকিয়ে কি বলবেন বলে ফেলুন।’

অদ্রিজা দাঁতে দাঁত চেপে বলল,

‘ আপনার সিগারেটের গন্ধে মাথা ব্যাথা শুরু হয়েছে সে কখন থেকে। মাথা ব্যাথা কমানোর জন্য ঘুমের প্রয়োজন আমার মিঃ রক্তিম।কিন্তু আমার ঘুমটাও বোধ হয় আপনার সহ্য হয় না।তাই তো লাইটটা জ্বালিয়ে কাজ করছেন।আমি ঘুমোতে পারছি না মিঃ রক্তিম।’

রক্তিম এবার ভ্রু কুঁচকে তাকাল অদ্রিজার দিকে।গুঁটিশুঁটি হয়ে শুঁয়ে আছে। দৃষ্টিটা তার দিকেই।সেই দৃষ্টিতে একরাশ বিরক্তি।ঘন কালো, লম্বা চুলের খোঁপাটা বালিশের আশ্রয় পেয়েই বোধ হয় নিজেকে এলোমেলো করে ছুড়ে দিল। চোখের সামনে অদ্রিজা নামক রমণীর সৌন্দর্যে এলোমেলো চুলগুলোর দ্বিগুণ সৌন্দর্য মোহিত করল তাকে। বার কয়েক অদ্রিজার চোখে চোখ ফেলেই মুচকি হাসল সে।মাথাটা কিছুটা ঝুঁকিয়ে লতিয়ে পড়ে থাকা রমণীটির মুখের উপর এনেই ফিসফিসিয়ে বলে উঠল,

‘ আমার সিগারেটের ধোঁয়ায় আপনার যতটুকু মাথা ব্যাথা তৈরি হয়েছে তার থেকে ও সহস্রগুণ ব্যাথা আপনি আমার মস্তিষ্কে তৈরি করেছেন অদ্রিজা।তাহলে বলুন?আপনাকে কিভাবে ঘুমোতে দিই?যেখানে আমার ঘুম আমাকে গ্রহণ করছে না আপনার দেওয়া ব্যাথার জন্য?’

অদ্রিজা ভ্রু জোড়া কুঁচকে চেয়ে রইল।ঝুঁকে থাকা রক্তিমকে একনজর দেখে নিয়েই বোকার মতো প্রশ্ন করে বসল,

‘ আমার দেওয়া ব্যাথা?আপনার মস্তিষ্কে ব্যাথা তৈরি করেছি?কি বলছেন রক্তিম?আমি আপনাকে ব্যাথা দিয়েছি?’

রক্তিম ঠোঁট টেনে হাসল। ভ্রু নাচিয়ে বলল,

‘ কেন?মিথ্যে বলছি অদ্রিজা?’

অদ্রিজা সরু চাহনিতে তাকাল।রক্তিমকে ব্যাথা দিয়েছে এমন কোন ঘটনাই মস্তিষ্ক মনে করতে পারল না।সুপ্তশ্বাস ফেলে দৃঢ় কন্ঠে বলল সে,

‘ হ্যাঁ। মিথ্যেই বলছেন।আপনি কোন সত্যি কথা বলতে পারেন নাকি রক্তিম?’

রক্তিম এবার সোজা হয়ে বসল।ল্যাপটপে কিছু একটা টাইপ করেই ল্যাপটপটা অফ করে পাশে রেখে দিল।অদ্রিজার দিকে ফিরে বলল,

‘ এক্চুয়েলি ইউ আর রাইট।আমি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মিথ্যেবাদী অদ্রিজা।অন্তত আপনার ক্ষেত্রে।আর আপনি আমার সেই মিথ্যেতেই দৃশ্যমান থাকবেন।যদি সত্যতে দৃশ্যমান হতে চানও কোনদিন, আমি দেব না অদ্রিজা। ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে আপনাকে আমার মিথ্যের সাথেই মিশিয়ে দেব। ‘

অদ্রিজা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল।সত্য?মিথ্যে?রক্তিমের বলা কথাগুলোর কোন মানে খুঁজে না পেয়েই বিরক্তি নিয়ে বলল,

‘ এজ ইউর উইশ!লাইটটা অফ করবেন?এর থেকে তো ভালো আকাশের তারা দেখে আব্বুকে উপলব্ধি করা। ঘুমোতে তো দিবেনই না। তার থেকে বেলকনিতে বসে তারাই দেখি।’

রক্তিম হুহা করে হেসে উঠল। তারপর মাথাটা উপর করে হেলিয়ে দিল। চোখজোড়া বন্ধ করেই বলল,

‘ আকাশের তারায় আপনার বাবা নেই অদ্রিজা।ঐসব মিথ্যে বিশ্বাসে বিশ্বাস করবেন না। তারা তারাই।তারার মাঝে কখনো মা কিংবা বাবা থাকে না।ওসব তো আমাদের ঠকানোর জন্য বলে থাকে সবাই।ওসব ফাও কথা বিশ্বাস করবেন তো ঠকবেন অদ্রিজা।’

অদ্রিজা কিছু বলল না।রক্তিম নামক মানুষটার সাথে শুধু শুধুই কথা বলছে সে।বিরক্তিতে চোখমুখ কুঁচকে পাশ ফিরতে যাবে তখনই আবারও ঝুঁকল রক্তিম।অদ্রিজার এক হাত টেনে ধরেই বলে উঠল,

‘ আপনার ঘুম দরকার?’

অদ্রিজা তীক্ষ্ণ চাহনিতে তাকাল।এতক্ষন ধরে ঘুমানোর কথা বলছে সে।অথচ রক্তিম এই মাত্র জিজ্ঞেস করছে ঘুম দরকার কিনা?আশ্চর্য!দাঁতে দাঁত চেপে রক্তিমের দিকে তাকিয়েই বলল সে,

‘ নাহ।’

রক্তিম বাঁকা হাসল।অদ্রিজার হাতটা সেভাবেই ধরে রেখেই বলে উঠল,

‘ উহ!রেগে যাচ্ছেন কেন আপনি?আপনার ঘুম দরকার।আমারও ঘুম দরকার।আপনার ঘুম না আসার কারণটা যদি আমি হই তো, আমার ঘুম না আসার কারণটাও আপনি।তো ইকুয়্যাল ইকুয়্যল না?চলুন একটা ডিল করি।আপনার ঘুমের জন্য আমি লাইট অফ করে দিব।আর আপনি আমার ঘুমের ব্যবস্থা করে দিবেন।রাজি?’

অদ্রিজা গোলগোল চোখ করে তাকাল।সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠল,

‘ আপনি কি ছোট বাচ্চা যে আপনার ঘুমের ব্যবস্থা করতে হবে? আজব!তাছাড়া আপনি আমার উপর মিথ্যে দ্বোষারোপ করছেন রক্তিম।আমি আপনাকে কিছুই করিনি।’

‘ প্রমাণ আছে?’

শক্ত চাহনিতে তাকাল অদ্রিজা।ফোসফাস করে বার কয়েক নিঃশ্বাস ছেড়েই শান্ত কন্ঠে বলল,

‘ বলুন? আপনার ঘুমানোর কি ব্যবস্থা করতে পারি?’

রক্তিম মুচকি হাসল। লাইটের সুইচটা অফ করে দিয়েই লম্বা চওড়া শরীরটা এলিয়ে দিল বিছানায়।অদ্রিজা রক্তিমের অদ্ভুত ঘুমানোর ব্যবস্থা থেকে বেঁচে গেল ভেবেই ওপাশ ফিরল।ঠিক তখনই ওপাশের ব্যাক্তিটি অদ্ভুত কাজ করে বসল। তার শক্তপোক্ত হাত জোড়া দিয়ে জড়িয়ে নিল অদ্রিজাকে।সঙ্গে সঙ্গেই অদ্রিজার পুরো শরীর বয়ে বিরক্তি ছুঁয়ে গেল।পরমুহুর্তেই মনে পড়ল রক্তিমের বাবার থেকে টাকা নিয়েই বিয়েটা করেছে সে।চাইলেও এই লোকটার স্পর্শকে ঠেলে দিতে পারবে না সে।নিরব ভাবে হাতজোড়ার স্পর্ষে চোখজোড়া বন্ধ করতেই রক্তিম কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলল,

‘ কিছুই করতে হবে না অদ্রিজা।আপনাকে এভাবে জড়িয়ে ধরতে দিলেই হবে।ঘুমটা আমার প্রয়োজন আজ!তীব্রভাবে প্রয়োজন।তাই আপনাকে জড়িয়ে ধরাটা আমার কাছে ভুল মনে হচ্ছে না।আর আপনিই তো বললেন, আপনার শরীরটা আমার কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন।তবে আপনার শরীরটাকে জড়িয়ে ধরাটা অপরাধ হবে না বলুন?’

অদ্রিজা কিছু বলল না।অদ্ভুত পুরুষটির কোমল ছোঁয়ায় অস্বস্তিতে ভরে উঠল মন।আজকে তার ছোঁয়া স্পষ্ট বলছে, তার ছোঁয়ায় কোন কামনা নেই।নেই কোন লালসা।অদ্রিজা হাঁসফাঁস করল।রক্তিম নামক মানুষটির উষ্ণতা শরীর বয়ে ছুঁয়ে যেতেই লোমকূপ অদ্ভুত অনুুভূতিতে কেঁপে কেঁপে উঠল।এই শীতের রাতেও ঘেমে উঠল চোখমুখ।অস্বস্তিতে মন উশখুশ করতে লাগল।

.

সকাল হলো।সূর্যের ঝকঝকে কিরণ না হলেও মৃদু আলো চারদিকটায় ঠিকই ছড়িয়েছে।অদ্রিজা চোখ মেলে চাইল।রাতে সেই অসহ্য মানুষটাকে সহ্য করার প্রয়াসে তারই দুই হাতের বন্ধনে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে খেয়ালই হয়নি তার।ঘুম জড়ানো চোখে এদিক ওদিক তাকাল অদ্রিজা।নিজেকে রক্তিমের বাহুবন্ধনে না পেয়ে একটু হলেও অবাক হলো।পরমুহুর্তে পুরো রুম জুড়ে কোথাও রক্তিমকে না দেখে অবাক হওয়ার মাত্রা দ্বিগুণ হলো।অস্থির হয়ে আবারও এদিক ওদিক তাকাল।না নেই।ঘড়ির ঘন্টার কাঁটাটা তখন ছয় ছুঁতে যাচ্ছে।এত সকালে কোথায় গেল?অদ্রিজা ভ্রু কুঁচকে উঠে দাঁড়াল।ওয়াশরুম চেক করে বেলকনির দরজার সামনে দাঁড়াতেই রক্তিমকে দেখতে পেল সে। ছাঁই রাঙ্গা টিশার্ট আর টাউজার পরিহিত যুবকটি পকেটে হাত রেখে একদম সোজা হয়েই অন্য দিক ফিরে দাঁড়িয়ে আছে।এত তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে গিয়েছে?অদ্ভুত!একনজর রক্তিমের দিকে তাকিয়ে আবারও চলে আসতে যাবে ঠিক তখনই রক্তিম বলে উঠল,

‘ যাচ্ছেন কেন?’

অদ্রিজা থমকে দাঁড়াল।রক্তিম অন্যদিকেই ফিরে রয়েছে।হাতে মোবাইল নেই।তার মানে কথাটা তাকেই বলেছে।কিন্তু রক্তিম টের পেল কিভাবে সে যে এখানে এল?চোখজোড়া সরু করে রক্তিমের দিকে তাকিয়ে থাকতেই রক্তিম উল্টোদিক ফিরে দাঁড়াল।ঠোঁটে দুষ্টু হাসি ঝুলিয়ে বলল,

‘ শুভ সকাল মিসেস অদ্রিজা।’

অদ্রিজা এবারও কিছু বলল না।রক্তিমের দিকে তাকিয়ে রইল।কি বলবে খুঁজেও পেল না।শুভ সকালের বদলে কি শুভ সকাল বলা উচিত তার?বুঝে উঠল না অদ্রিজা।চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতেই রক্তিম এগিয়ে এল।চোখ টিপে ফিসফিসিয়ে বলে উঠল,

‘ কি ব্যাপার বলুন তো?আমার প্রেমে ট্রেমে পড়ে গেলেন নাহ তো?সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই আমায় খুঁজে বেড়াচ্ছেন যে?একদিনের জড়িয়ে ধরায় এতটা অস্থির হয়ে পড়লেন আমার জন্য?উফফস!তাহলে তো আপনাকে রোজই জড়িয়ে ধরে ঘুমানো উচিত।আপনি আরো অস্থির হয়ে ভালোবাসতে শুরু করবেন আমায়।কি বলুন? ‘

অদ্রিজা মুখ চোখ কুঁচকে তাকাল।ঠোঁট চেপে বলল,

‘ মোটেও তেমন কিছু নাহ বিষয়টা। আর কোন অস্থিরতা টস্থিরতা ও নয়।আপনি রুমে না থাকলে দরজা লাগিয়ে ভালো ভাবে ঘুমানো যেত তাই দেখছিলাম। আর ঐ যে বললেন ভালোবাসা?সেটার প্রশ্ন তো আসছেই না মিঃ রক্তিম।’

রক্তিম মুচকি হাসল।অদ্রিজার একেবারে কাছাকাছি গিয়ে বলে দিল,

‘ ধরুন আপনি আমায় ভালোবাসলেন।আমাকে চাইলেন।খুব করে চাইলেন।আমার জন্য অস্থিরভাবে দিন রাত পার করলেন।বিষয়টা দারুণ হবে না?’

অদ্রিজা দুই পা পিঁছিয়ে রক্তিমের থেকে দূরে গিয়ে দাঁড়াল।দৃঢ় কন্ঠে বলল,

‘ নাহ।খুব বিশ্রী এবং জঘন্য হবে।আর এই বিশ্রী ও জঘন্য বিষয়টা কখনোই ঘটবে না রক্তিম।আমি বলছি।’

‘ আর আমি বলছি, ঘটবে।খুব শীঘ্রই ঘটবে অদ্রিজা।খুব শীঘ্রই কোন এক সন্ধ্যা, কিংবা কোন এক সকাল, কিংবা হতে পারে কোন এক অন্ধকার রাতে আপনি আমার সামনে এসে বলবেন,”ভালোবাসি”।’

অদ্রিজা বিরক্ত নিয়ে তাকাল।রক্তিম কথাটা বলেই বাঁকা হাসল।অদ্রিজার পাশ কাটিয়ে যেতে যেতেই বলল,

‘ রেডি থাকবেন।আমি যাওয়ার সময় আপনাকে দিহানের কাছে নিয়ে যাব। তারপর ভার্সিটিতে ছেড়ে আসব।’

অদ্রিজা তীক্ষ্ণ চাহনিতে তাকিয়ে রইল রক্তিমের যাওয়ার পথে।এতটা বিশ্বাস নিয়ে বলল কথাগুলো?এতটা আস্থা?কেন?

.

রক্তিমের গাড়িতে করেই হসপিটাল পর্যন্ত এসেছে অদ্রিজা।বাসা থেকে হসপিটালের পথটা গাড়ি করে আসতে আধ ঘন্টা লাগে।এই আধ ঘন্টায় রক্তিমও তার সাথে কথা বলে নি।সেও রক্তিমের সাথে কথা বলেনি।নামার সময় ও কিছু বলেনি রক্তিম।হসপিটালের সামনে গাড়ি থামিয়ে নিজের মতো চুপচাপ বসে রইল ।অদ্ভুত!রক্তিম কি অদ্রিজাকে ইগনোর করছে?অদ্রিজা বুঝে উঠল না।মিনমিনে চাহনিতে পেছনে রক্তিমের দিকে বার কয়েক তাকিয়ে থেকেই পা বাড়াল সামনে।হসপিটালে দিহানের কেবিনের সামনে গিয়েই পা জোড়া জমে গেল।দিহান এখন কথা বলার অবস্থায় আছে।কি বলবে সে?দিহান তার কথার উত্তরে কি কি বলবে? ঠক, প্রতারক উপাধি দিয়ে কথা বলবে কি?অদ্রিজা ভাবতে পারল না।কাঁপা হাতে দরজার পর্দাটা সরিয়ে দিহানের দিকে তাকাল।ঘুমোচ্ছে সে।অদ্রিজা দূর থেকেই দেখল।কাছাকাছি যাওয়ার সাহস সঞ্চয় করতে পারল না নিজের মধ্যে।কাছে গেলে যদি দিহান জেগে যায়?জেগে উঠেই যদি বলে বসে, ” দ্রিজা?আমায় একটিবার সুযোগ দিলে না কেন?কেন আমায় প্রতিশ্রুতি দিয়ে অন্য কাউকে জীবনের সঙ্গী করে নিলে?” কি উত্তর দিবে সে?মুহুর্তেই চোখ টলমলিয়ে উঠল অদ্রিজার।আর এক মুহুর্তও না দাঁড়িয়ে তাড়াহুড়ো করে সরে গেল সেখান থেকে।জোরে জোরে শ্বাস ফেলে দ্রুত পা ফেলে বেরিয়ে আসল হসপিটাল থেকে।যেন একপ্রকার পালিয়ে আসল।

#চলবে…..

{ ভুলত্রুটি মার্জনীয়।কেমন হয়েছে গঠনমূলক মন্তব্য করে জানাবেন।ভালোবাসা সবার প্রতি🥀❤️}

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here