১৬_পৃষ্ঠায় পর্ব – ১১

#১৬_পৃষ্ঠায়
পর্ব – ১১ #অর্ধাঙ্গিনী (প্রথম অংশ)
লেখিকা- Zaira Insaan

এক ফালি অতলসিক্ত রোদ্দুর নিনির মুখশ্রী খানা ভরে দিল। আকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে রোদ্দুরের খেলা। নিনির ঘুম ভাঙল উঠে সে ফ্রেশ হয়ে নিচে নামতেই সিনান বলল,, ব্যাগ প্যাক করো আমরা আজকেই চট্টগ্রাম ফিরবো।” কথাটি কর্ণগোচর হতেই নিনি চমকালো। সে বলল,, আমরা বলতে?” সিনান ব্যস্ত স্বরে বলল,, ভাইয়া, আমি, তুমি।” নিনি অবাক হয়ে ‘এহ্যা’ করে উঠলো। গতকালই এনোনের সাথে কথা হলো আর আজকের মধ্যেই চট্টগ্রাম ফিরবে! এত দ্রুত! নিনি বলল,, না আজকে না।” সিনান এক গাল হেসে বলল,, জানতাম তুমি এটায় বলবে তাই তো ভাইয়া রাতেই তোমার ব্যাগ প্যাক করলো।” নিনি চরম পরিমাণে চমকালো। এনোন তার ব্যাগ প্যাক করলো! কবে করলো? নিনির মাথায় প্রশ্নটি ঘুরতে লাগলো। তার মানে সে যখন ঘুমিয়েছিল তখনি এনোন এসে তার ব্যাগ গোছালো। নিনি গালে হাত রেখে এসব ভাবতে লাগল তখনি এনোন নিচে নামলো নিনি কে এ অবস্থায় দেখে সে ভ্রু কুটি করল। নিনি ফিরতেই এনোন কে দেখে ভূত দেখার মত লাফিয়ে উঠলো সিনান জোরে হেঁসে দিল। এনোন আরো কপাল কুঁচকালো নিনি কিছু বলতে গিয়েও বলল না উপরে তড়িগড়ি করে উঠে রুমের দরজা বন্ধ করল। আলমারি খুলতেই দেখে পুরো ফাঁকা। নিনি মুখ বাকালো ল্যাগেজ খুলতেই দেখে সবকিছু সুন্দর করে গোছানো। নিনির লজ্জা করে উঠলো হঠাৎ, এনোনের যা করার দরকার নেই তাও করে ফেলল। নিনি লজ্জায় লাল হয়ে ল্যাগেজের চেইন বন্ধ করে দিল। ল্যাগেজ নিয়ে নিচে নামলো সে এনোনের চোখাচোখি হতেই চোখ সরালো সে। এনোনের মুখোভাব স্বাভাবিক তাও তাকাতে পারছে না সে মাথা নুয়ে রেখেই হাঁটতে লাগলো। সিনান অনেক দ্রুত হেঁটে সামনে চলে গেল শুধু পেছনে পড়ে রইল এনোন ও নিনি। এনোন চাইলেও দ্রুত হেঁটে চলে যেতে পারতো কিন্তু নিনির যে হাঁটার গতি! সেও কচ্চপের মতো হাঁটছে। এনোন বিরক্ত হয়ে বলল,, দ্রুত হাঁটো নাহয় ট্রেন চলে যাবে।”
“যাক” ফট করে কথার উল্টো জবাব দিল নিনি। এনোন একটু অবাক হলো নিনি পেছনে ফিরে ঠোঁট টিপে বলল,, আমার ল্যাগেজ গোছানোর দরকার কি জন্য ছিল আপনার? আমি বলছি?”
এনোন ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে বলে,, বলো নি বিধায় গোছালাম।” নিনি একটু রাগ দেখিয়ে বলল,, বললে মনে হয় করতেন না?” এনোন কথার প্যাচ লাগিয়ে বলল,, তুমি বলতা? ব্যাগ কি প্যাক করলাম তুমি তো দেখি লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছো কখন থেকে।” কথাটি ধারে আবারো লজ্জা পেয়ে বসল নিনির। লোকটি তাকে কথার মাধ্যমে লজ্জায় ফেলছে বুঝতে পারলো নিনি। সে ফিরতে যাবে তখন এনোন তার হাত ধরে নিলো নিনি ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই এনোন তাকে নিজের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে তার এক কাধের ব্লাউজ ভালোভাবে উঠিয়ে গম্ভীর মুখে বলে,, তোমার স্ট্র্যাপ দেখা যাচ্ছিল।” নিনি লজ্জায় লালাভ হয়ে উঠে দৃষ্টি এলোমেলো হয়ে যায় তার। এনোন হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলে,, Shit! দেরি হয়ে যাচ্ছে।” বলে তার হাত ধরে নেয় তারপর হাঁটতে শুরু করলো। নিনি অবাক হলেও মাথা নুয়ে রাখলো মুখে এক লজ্জা চিলতে হাসি।

একে অপরের হাত মুঠোয় বন্দি দেখে কপাল কুচকালো সিনান বলল,, বাহ্! আজকে সূর্য কোন দিকে উঠলো?” এনোন তাড়া দিয়ে বলল,, চুপ কর আর সামনে হাঁট।” সিনান ফিক করে হেসে দিল। নিনি হাত ছাড়িয়ে নিল এনোন প্রশ্নাত্তুর দৃষ্টিতে তাকালো সিনান অপর পাশ থেকে বলল,, ভাবি বোধহয় আমার সামনে রোম্যান্স হতে চাইছে না, সমস্যা নেই আমি অন্য পাশে বসছি।” বলে সে হেঁসে অন্য সীটে গিয়ে বসল। এনোন নিনির পাশে বসতে যাবে এমন সময় এক লোক পেছন থেকে তার কাঁধে হাত রেখে ডেকে বলল,, আপনি এনোন না?”

(চলবে…)

[ কালকে দ্বিতীয় অংশ দেওয়া হবে। ]

#১৬_পৃষ্ঠায়
পর্ব – ১১ #অর্ধাঙ্গিনী (দ্বিতীয় অংশ)
লেখিকা – Zaira Insaan

এনোন নিনির পাশে বসতে যাবে এমন সময় এক লোক পেছন থেকে তার কাঁধে হাত রেখে ডেকে বলল,, আপনি এনোন না?”
এনোন ফিরে তাকালো বলল,, ইয়েস।” নিনিও বসা অবস্থায় ঘাড় ফিরিয়ে পিছনে তাকালো। লোকটি মুচকি হেসে বলল,, আমাকে চিনছেন?” এনোন তাকে আগাগোড়া ভালোভাবে দেখে নিল নিনিও লোকটির তাকিয়ে এনোনের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালো। এনোন বলে,, না চিনে নি!” লোকটি ভেবাছেকা খেয়ে গেল তার মুখমন্ডল দেখে হঠাৎ ফিক করে হেসে দিল নিনি এনোন আড়চোখে কপাল কুঁচকে তাকায় তার দিকে নিনি মুখে হাত দিয়ে হাসি দমালো। লোকটি আবারো বলল,, আমাকে চিনেন নি? আমরা দুই বছর আগে নিউ ইয়র্কে অফিস মিটিং করেছিলাম!” লোকটি মনে করে দেওয়ার স্বরে বলল। এনোনের ভ্রু জোড়া সোজা হয়ে যায় দুই বছর আগের কথা কার মনে থাকে? কত মিটিং করেছে কত জনের সাথে এই লোকটি আবার কে? এনোন মনে করতে পারলো না বলল,, এখনো চিনে নি।” নিনি খিক খিক করে মুখ টিপে হেঁসে দিল। লোকটি ও এনোন তাকালো ওর দিকে লোকটি কি ভাবছে কে জানে বলল,, আচ্ছা আপনি ইনজয় করেন আমার ওয়াইফ ওয়েট করছে আমার আমি যাই।” বলে দ্রুত এনোনের পাশ কেটে সামনে চলে গেল। এনোন নিনির পাশে বসে গম্ভীর গলায় বলে,, হাসছিলা কেন?” নিনি মুখে হাসি রেখেই উত্তর দেয়,, কেউ ইন্সাল্ট হলে তখন আমার হাসি পায়।” এনোন আর কিছু বলল না নড়েচড়ে বসল নিনি আড়চোখে তাকায় ওর দিকে দেখে এনোন ও মিটমিট করে হাসছে অন্য দিকে তাকিয়ে।
_______________________

ট্রেন চলল তার নিজ গতিতে নিনি কবে ঘুমিয়ে পড়লো তার খেয়াল নেই। নিনির ঘুম ভাঙ্গতেই সে কিছু একটা অনুভব করতে পারলো সে খেয়াল করলো সে এনোনের বুকের বা পাশে শুয়ে আছে আর এনোন তাকে এক হাতে জড়িয়ে ধরে আছে। এনোন সীটে মাথা হেলিয়ে রেখে ঘুমিয়ে আছে নিনির ডান হাত এনোনের ডান হাতের মুঠোয় তে। নিনি চোখ বড়বড় করলো সে কবে এভাবে ঘুমিয়েছে? নাকি এনোন তাকে নিজের কাছে নিয়ে আসলো! নিনি সে অবস্থাতে আশে পাশে তাকালো সবাই নিজেদের সীটেই ঘুমিয়ে আছে শুধু সিনান ছাড়া সে কানে ইয়ারফোন গুজে নিউজফিড ক্রোল করছে। নিনি চমকালো সিনান দেখে নিলো না তো? নিনি ধীরে ধীরে উঠতে নিলে সে সময় এনোনের ফোন বেজে উঠল এনোন চমকে উঠে বসল নিনির দিকে এক পলক তাকিয়ে ফোন রিসিভ করতে দাঁড়ালো নিনি কে বলল,, আমি ২ মিনিটের মধ্যে আসছি।” বলে সে পেছনের দিকে চলে গেল। নিনি ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলল এনোনের মতিগতি সে বুঝতে পারছে না হুটহাট করে কাজ করে এনোন। দুই মিনিটের মধ্যে ফিরলো এনোন বসতেই নিনি জিজ্ঞেস করল,, কে কল করছে?”
“বললে তুমি চিনবে?” মোবাইলের দিকে চোখ রেখেই বলল এনোন। নিনি রেগে কিসব বিড়বিড় করে বলল এনোন ওর দিকে এক পলক তাকায়। মোবাইল পকেটে ঢুকাতে যাবে এমন সময় মেসেজ আসল তার। সিনান মেসেজ করেছে তাকে এনোন তাকালো তার সীটের দিকে তারপর মেসেজ সিন করল। টাশকি খেল এনোন কেননা তাদের একসাথে ঘুমের ছবি পাঠিয়েছে সিনান। রেগে গেল এনোন ওর দিকে তাকাতেই দেখে সিনান ঘাড় ফিরিয়ে মিটমিট করে হাসছে। এনোন চোয়াল শক্ত করে পকেটে ঢুকালো মোবাইল।
________________________

চট্টগ্রাম পৌঁছাতে আরো তিন ঘন্টা বাকি আছে। ততক্ষণে নিনির কোমড় ধরে গেছে। কোমড় ব্যাথা শুরু হয়ে গেল তার নিনি কে বারবার নড়তে চড়তে দেখে এনোন জিজ্ঞেস করলো,, কোন সমস্যা?”
নিনি তাকিয়ে বলল,, হুম, কোমড় ব্যাথা করছে যদি কোথাও গিয়ে হেঁটে আসতে পারতাম।” এনোন বলল,, চাইলে ট্রেন থেকে নেমে হেঁটে হেঁটে চট্টগ্ৰামে পৌঁছাতে পারো।” এনোনের এমন নিরলস ভাবে কথা শুনে চেতে উঠলো নিনি। গরম চোখে তাকিয়ে বলে,, রাগ উঠানোর ছাড়া আর আপনার কোন কাজ নেই? শুধু শুধু কেন রাগাচ্ছেন?” এনোন বলল,, বাচ্চা মানুষ থেকে রাগ ও উঠে বুঝি!” এনোনের কথা শুনে আরো বেশি মাথা গরম হয়ে গেল নিনির বলল,, বাচ্চা কে? আপনি আমাকে বাচ্চা ডাকছেন?”
এনোন গা ছেঁড়া ভাব নিয়ে বলল,, যে যেটা বুঝে আরকি!”
নিনির চোওড়া ভাবে মাথা খারাপ হলো তাও কিছু বলল না। শুধু শুধু এই লোকটা এমন কেন করছে সেটাই বুঝতে পারছে না সে।

(চলবে…)

[ কালকে বাকি অংশ দেওয়া হবে। ]

#১৬_পৃষ্ঠায়
পর্ব – ১১ #অর্ধাঙ্গিনী (বাকি অংশ)
লেখিকা – Zaira Insaan

কলিং বেল বেজে উঠতেই অর্সা এসে দরজা খুলল। পাশে সর্ণালিও এসে দাঁড়ালো। দরজা খুলার সাথে সাথে অর্সা কে দেখে চোয়াল শক্ত হলো এনোনের। ভেতরে ঢুকলো তারা। নিনি মাথা নুয়ে আছে। অর্সা ভ্রু কুটি করল এদের দেখে। উজ্জল সাহেব নিচে নেমে তাদের প্রশ্ন করল,, জার্নি কেমন গেল তোদের?” এনোন কিছু না বললেও সিনান বলে উঠলো,, হয়রানি হয়ে!” হেঁসে উঠলো সবাই শুধু এনোন ছাড়া। সে নিনির দিকে তাকালো নিনিও হাসছে। এনোন চোখ সরিয়ে উপরে উঠে গেল। সবাই তাকালো এনোনের দিকে এমন ব্যবহার কেন তার?

রাতের খাবার শেষ করে যে যার রুমে চলে গেল। নিনি এনোনের রুমে যেতেই দেখলো সে কারো সাথে গুরুগম্ভীর হয়ে কথা বলছে নিনি কে দেখে ফোন রেখে দিল সে। নিনি আবারো আগের মত সোফা থেকে বালিশ নিতেই এনোন তার দিকে না তাকিয়ে বলল,, বারান্দায় ঘুমাতে হবে না, বেডে শুয়ে পড়।”
নিনি চমকে জিজ্ঞেস করলো,, তো আপনি বারান্দায় ঘুমাবেন?” এনোন বলল,, না!”
নিনি কপাল কুঁচকালো কিছু বলবে তার আগেই এনোন বলে বসল,, একসাথে ঘুমাবো আমরা।”
চোখ দুটো বড়বড় করলো নিনি অবাক হয়ে বলে,, এখানে?” বেডের দিকে এক হাত ইশারা করে বললো। এনোন বিরক্ত হয়ে বলল,, তো কি চাচ্ছো কোথায় ঘুমাবা?” নিনি আমতা আমতা করলো বলল,, না মানে আমি কারোর সাথে ঘুমাতে পারি না তাই বারবার জিজ্ঞেস করছি।” এনোন ‘ওহ’ বলে শুয়ে পড়লো। নিনি হা করে তাকিয়ে আছে। তাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে এনোন বলল,, কি? এভাবে তাকিয়ে আছো কেন? ক্রাশ খায়ছো?”
চট করে মুখ বন্ধ করল নিনি। বেডে এক পাশে বসে বাংলাদেশ ইন্ডিয়ার বর্ডার বানালো মাঝখানে বালিশ দিয়ে তারপর বলল,, লাইন ক্রোস করবেন না একদমও।” এনোন শুনেও না শোনার ভান ধরে ওপাশে ফিরে গেল। নিনি ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে শুয়ে পড়লো। কিছুক্ষণ পর পর পেছনে ফিরে তাকাচ্ছে লাইন ভঙ্গ হলো নাতো। তারপর ঘুমিয়ে পড়লো নিনি।
____________
প্রভাতের আলো ফুটেছে। সাথে ফুটেছে ভালোবাসার এক নতুন অধ্যায়।
নিনি আধো আধো চোখ খুলে তাকালো সামনের দিকে এনোন কে নিজের অতিরিক্ত কাছে দেখে হচকচিয়ে ভয় পেয়ে গেল সে। সামনে বালিশ নেই সেটা নিচে পড়ে আছে নিনি খেয়াল করলো সে নিজেই এনোনের কাছে এসেছে। এনোন নিজের জায়গায় ঘুমিয়েছে নিনি নিজের সহ তার জায়গা অর্ধেক দখল করে ফেলেছে। এনোনের বুকে মুখ গুজে দিয়ে তার গায়ে পা তুলে রেখেছে। প্রচন্ড মাত্রায় লজ্জা ধরে বসল তাকে। নিনি আস্তে করে সরে উঠে দাঁড়ালো আয়নার দিকে চোখ যেতেই দেখল তার শাড়ি ঠিক নেই! উলটপালট হয়ে আছে। চোখ কপালে উঠে গেল, ছিঃ রাতে সে এভাবে ঘুমিয়েছে তাও এনোনের গা ঘেঁষে! গা রি রি করে উঠলো তার, পাশে চোখ যেতেই দেখে এনোন চুল ঠিক করতে করতে বাথরুমে ঢুকছে মুখশ্রী দেখেই বোঝা যাচ্ছে তার অনেক আগেই ঘুম ভেঙেছিল। তাড়াতাড়ি শাড়ি ঠিক করলো নিনি। নিজেকে মনে মনে শায়েস্তা করতে লাগল সে।

সকালের নাস্তা শেষ করে গল্প করতে বসল সবাই। শুধু এনোন রুমে বসে আছে। কলিং বেল বেজে উঠতেই এনোন নিচে আসলো আর নিনির পাশে দাঁড়ালো। দরজা খুলল সিনান। সামনে পুলিশ দেখে ভ্রু কুঁচকালো সবাই।
নাজমুল সাহেব ভিতরে এসে বলল,, অর্সা কে এখানে?”
ঘাবড়ে গেল অর্সা। তাও বলল,, আমি।”
নাজমুল সাহেব বলেন,, চলেন আমাদের সাথে।” সবাই একে অপরের দিকে চাওয়া চাওয়ি করতে লাগল।
নিনি চোখ বড়বড় করে এনোনের দিকে তাকালো তারপর আস্তে করে বলল,, আপনি ডেকেছেন?”
এনোন এক পলক তাকালো তার দিকে।
উজ্জল সাহেব বলেন,, কেন কি হয়েছে?”
নাজমুল সাহেব বলেন,, ওনার নামে টর্চারের কেস ফাইল করা হয়েছে।” ভড়কে উঠলো অর্সা। সাথে সবাইও। সর্ণালি জিজ্ঞেস করেন,, কে করেছে?”
এনোন বলল,, আমি করেছি।” সবাই তাকালো তার দিকে। নিনি মাথা নুয়ে রাখলো ভয় করছে তার।
উজ্জল সাহেব গম্ভীর মুখে বলেন,, কেন?”
এনোন চোয়াল শক্ত করে বলে,, নিনি কে টর্চার করতো এই মহিলা।” এনোনের মুখে প্রথম বার নিজের নাম শুনে বুক ধক করে উঠল নিনির শ্বাস প্রশ্বাস ঘন হয়ে আসলো। সর্ণালি অবাক হয়ে অর্সার দিকে তাকিয়ে জোরে বলে উঠে,, কিহ্!”
অর্সা হতমত খেয়ে গেল। এমন কিছু হয়ে যাবে ভাবেনি সে।
নাজমুল সাহেব বলেন,, সরেন আর উনাকে এরেষ্ট করতে দিন।”
উজ্জল সাহেব হাত দিয়ে থামিয়ে এনোনের দিকে তাকিয়ে বলে,, প্রমাণ আছে তোর কাছে?”
এনোন ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে বলল,, প্রমাণ তোমাদের সামনেই, নিনি।” বলে নিনির দিকে তাকালো এনোন। নিনি ঢোক গিললো গলা দিয়ে আর আওয়াজ বের হচ্ছে না তার। সবাই তার উত্তরে অপেক্ষায় আছে সিনান বলল,, বলো ভাবি।”
অর্সা রেগে বলে উঠে,, এই মেয়ের জন্য তুই আমাকে জেলে পাঠাবি? এনোন! এই মেয়ে তো….।”
তাকে পরের কথাগুলো বলতে সুযোগ না দিয়ে এনোন গর্জ কন্ঠে বলে উঠে,, পরের কথাগুলো বলার সাহস করবেন না, ও আমার অর্ধাঙ্গিনী।” কথাটি বলে থামে এনোন। নিনি চমকে চরম অবাক হয়ে তাকালো এনোনের দিকে। সাথে সবাইও বেশ অবাক হলো তার বলার কথাই। সিনানের মুখে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠল যাক ৪ মাসের মধ্যে এনোন নিনি কে নিজের বউ হিসেবে মেনে তো নিলো – মনে মনে বলে উঠলো সিনান।
এনোন নিনির দিকে আশ্বস্ত কন্ঠে বলে,, সব বলো।”
নিনি কাঁদো কাঁদো মুখ করে ফেলল তারপর দ্রুত মাথা নাড়লো। সর্ণালি ও উজ্জ্বল সাহেব অবাক হয়ে অর্সার দিকে তাকালো। উজ্জল সাহেব গম্ভীর গলায় নাজমুল সাহেব কে বলেন,, নিয়ে যান।” চমকালো অর্সা। নাজমুল সাহেব মেয়ে কনস্টেবল কে ইশারা করলো। মেয়ে কনস্টেবল এসে অর্সাকে নিয়ে যেতে লাগল। অর্সা যাওয়ার আগে নিনির দিকে রক্তু চোখে তাকালো নিনি চোখ সরিয়ে এনোনের দিকে তাকালো। এনোন আর তাকালো না নিনির দিকে মেঝেতে তাকিয়ে রইল।
উজ্জল সাহেব নিনির দিকে গম্ভীর হয়ে বলেন….

(চলবে…)

[ আপনাদের রেসপন্স নেই কেন? গল্প টা কি আপনাদের মন মতো হচ্ছে না? ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here