৫ম তলার মেয়েটা পর্ব-৩৬

0
662

#৫ম_তলার_মেয়েটা

#পর্ব_৩৬

পম্পি বুঝতে পারছেনা সিরাত কি বলছে।হয়তো কোলাহলের কারণে ভালো করে শুনতে পায়নি তাই পম্পি আবার জিজ্ঞেস করলো-
—রজনী খালামনির কথা জিজ্ঞেস করছি।কেমন আছে খালামনি?
—আমি কিভাবে রজনীর খবর জানবো?

সিরাত খুব রেগে ছিলো পম্পির বাবার এমন আচরণে। নিশ্চয়ই খুব খারাপ কিছু করেছে রজনীর সাথে,তাই রজনী এভাবে চলে গেলো।

—কেন?খালামনি তো আপনার সঙ্গেই গেলো, তাহলে আপনি জানেন না কেন?
—ও তো আমার সাথে যায়নি।
—মানে?
—রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আমরা কথা বলছি, চল একটু পাশে গিয়ে কথা বলি।
তোমাদের বাসা থেকে বের হয়ে ও আমাকে আমার রাস্তায় চলে যেতে বলল।আমি বুঝতে পারলাম না ও কি বলছে।আমি জিজ্ঞেস করলাম ও কোথায় যাবে?বলল জানে না।আমি ওকে বললাম ,আমি পৌঁছে দেই ,রাজি হলো না।আর বলল, কখনো যেন ওর সাথে আমি যোগাযোগ না করি।আমি বার বার কারণ জিজ্ঞেস করলেও ও কিছুই বলল না।ওর চোখে কি যে কষ্ট দেখেছি!

—আমি ফোন দিয়েছিলাম, পাইনি।মোবাইল বন্ধ। ভেবেছিলাম আপনার সাথে আছে, নিশ্চিন্তে ছিলাম তাই এই দুই দিন খবর নেইনি। কিন্তু এখন খুব চিন্তা হচ্ছে। কোথায় যেতে পারে?
—ওর ভাইয়ের কাছে যেতে পারে।এই ছাড়া তো ওর আর যাওয়ার জায়গা নেই।
—হতে পারে।
—পম্পি কিছু মনে করো না এখন আমাকে যেতে হবে।একটু তাড়া আছে।যে কোন প্রয়োজনে আমার সাথে যোগাযোগ করো।

সিরাত চলে গেলে স্বর্ণা জানতে চাইলো , ব্যপার কি? এতক্ষণ সে কোন কথা বলেনি।যদিও বুঝতে পারছিলো কোন সমস্যা হয়েছে।
পম্পি ওকে বলল,পরে সব কিছু বুঝিয়ে বলবে।

পম্পির এখন ভয় করছে। রজনী কোথায় গেলো। তার ভাইয়ের ওখানে কিছুতেই যাবে না।মরে গেলেও যাবে না, একদিন রজনী কথায় কথায় এই কথা বলেছিল পম্পিকে।
ওদের শপিং এ আর মনোযোগ দিতে পারলো না।

একদিনে কেনাকাটা এগিয়েছে ভালোই। তাবাসসুমের সময় বের করে শপিং এ আসা খুব কঠিন।তাই আজ যতটা পারা যায় কেনাকাটা এগিয়ে রাখতে চান।তিনি স্বর্ণার জন্য ও তিনটা শাড়ি নিচ্ছেন। যেখানে আগে নওমির জন্য নেয়ার কথা সেখানে নওমির জন্য যা পছন্দ হচ্ছে স্বর্ণার জন্য নিতে চাচ্ছেন।ছেলের বৌ কখনো মেয়ে হতে পারে না।শাশুড়ী বৌকে আপন করে নিলে দেখা যায় বৌ তা করে না আবার বৌ আপন করতে চাইলে শাশুড়ি তা চান না।বৌ-শাশুড়ির এই সম্পর্ক যেন আজন্ম সাপে নেউলে সম্পর্ক।দুই পক্ষের মধ্যে সুন্দর মধুর সম্পর্ক গড়ে উঠতে দেখা যায় খুব কম।তবে শাশুড়ির দিক থেকে আগে হাত বাড়াতে হয়।আর এখানে আগেই দেয়াল তুলে দিয়েছেন তাবাসসুম । নিজের মেয়ের জন্য যা চিন্তা করা হয় বা করা হয় শাশুড়ি তাঁর ছেলের বৌ এর জন্য সেটা করতে পারেন না।
সবাই তাবাসসুমের এই ব্যপারটা খেয়াল করছে। তাশফি ভাবছে যতটুকু আম্মু করছে তাতেই খুশি এর বেশি কিছু করার দরকার নেই তবুও আম্মু খুশি থাকুক।নওমির এই সব ব্যপার গায়ে লাগছিলো না,তাশফি ওকে ভালোবাসে,সে তাশফিকে ভালোবাসে এটাই সবচেয়ে বড় কথা, অন্যকিছুতে কিছু যায় আসেনা।

স্বর্ণা খুব বিরক্ত হচ্ছে আম্মুর এমন আচরণে-
—আম্মু বিয়ে কি আমার? আমার জন্য তুমি শাড়ি নিচ্ছ কেন?আর ভাইয়ার বিয়েতে আমি এই শাড়ি পড়বো না।আমি আগেই একটা পেইজে পছন্দ করে রেখেছি,আজকেই ওয়ার্ডার করবো।

তাবাসসুম চোখ পাকিয়ে তাকালেন মেয়ের দিকে।
এর পরেই মেয়ের কথাটা মনে পরে গেল-
বাসা থেকে বের হওয়ার সময়ই স্বর্ণা তার মাকে বার বার বলেছে,’ভালো করে কথা বলো, নওমি কষ্ট পায় এমন কোন কথা বলো না।’

‘হু , মনে আছে, নওমি খুব সেনসেটিভ মেয়ে।’

‘আম্মু হতেই পারে কাউকে তোমার পছন্দ না,জীবনে চলার পথে সবাইকে পছন্দ হবে এমন কোন কথাও নেই।তবে এটাও তো জরুরি না যে ,সেই অপছন্দের মানুষকে জানানো যে ,তাকে পছন্দ কর না।’
স্বর্ণার কথা শুনে তাবাসসুম অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিলেন।ভাবতে লাগলেন,এতটা বড় কখন হয়ে গেল মেয়েটা!এত সুন্দর কথা মেয়ে শিখলো কোথায়? তিনি মা দেখেই তাঁর কাছ থেকেই শুধু শিখবে তা কোথায় লেখা আছে?মনে মনে খুব ভালো লাগছে তাঁর।

মেয়েটা সব সময় ভাইয়ের পক্ষ নিয়ে কথা বলে। এতে তাঁর ভালোও লাগে।ভাই-বোন দুজন যেন সব সময় একে অপরের পাশে থাকে। দুজনের সম্পর্ক যেন কখনো মলিন না হয়।

তাঁর মনে হচ্ছে বিয়ে হলেই ছেলে পর হয়ে যাবে। এই ভয়ই তাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। তাঁর যেন স্বাভাবিক বুদ্ধি লোপ পেয়েছে। ছেলের এক সময় না এক সময় তো বিয়ে দিতেই হবে।এখন তাশফি, নওমিকে পছন্দ করলো দেখেই দোষ হয়ে গেলো?

বাসায় পৌঁছেই পম্পি তার আব্বুর কাছে গেলো। কথা বলতে ইচ্ছে না করলেও বলতে হবে।
তিনি শুয়ে আছেন। পম্পি তার আব্বুর দিকে তাকিয়ে চমকে গেলো। হঠাৎ যেন বয়স অনেক বেড়ে গেছে তাঁর,মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি,চুল এলোমেলো,রাতের পোষাকই পড়ে আছেন।

—রজনী খালামনির ভাইয়ের নাম্বার কি তোমার কাছে আছে?
পম্পির বাবা এই প্রশ্ন শুনে উঠে বসলেন।
—কেন?কি দরকার?
—খালামনি ওখানে গিয়েছে কিনা খোঁজ নিবো।
—ওর খবর নেয়ার দরকার নেই।ও ভালোই আছে, সুখে আছে।
—আজ সিরাতের সাথে দেখা হয়েছিল। খালামনির কথা জিজ্ঞেস করতেই বলল,খালামনি কোথায় সে জানে না।
—মানে কি?
পম্পির বাবা উত্তেজিত হয়ে গেলেন।
—আমাদের বাসা থেকে বের হতেই খালামনি সিরাতকে বলল-, তার পথ আলাদা।সিরাত যেন আর কখনো খালামনির সাথে যোগাযোগ না করে।
—ও কোথায় গেছে?
—সিরাত জানে না।আমি আজ কল করেছিলাম। তার সাথে যোগাযোগের কোন রাস্তা খোলা রাখেনি।

তাড়াতাড়ি মোবাইল নিয়ে রজনীর ভাইকে কল দিলেন। রজনীর ভাই জানালো রজনী তাদের ওখানে যায়নি।কোথায় গেছে জানে না। আত্নীয়দের সবার ঠিকানা জেনে নিলেন তিনি।
কয়েক জায়গায় কল দিলেন পম্পির বাবা। রজনীকে খুঁজে বের করা কঠিন না হলেও খুব একটা সহজও হবে না।
পম্পিরর বাবা রেডি হলেন দেখে পম্পি বলল-সেও সাথে যেতে চায়।
বাবা, মেয়ে রওনা হলেন রজনীকে খুঁজতে।

পম্পির বাবার লোক এর মাধ্যেই রজনীর খোঁজ শুরু করে দিয়েছে।আর শহরে ওর যাওয়ার মতো তেমন কোন জায়গা নেই।গ্রামে যেতে পারে।সেটার সম্ভাবনাই বেশি।ওর বাবার বাড়িতে ওদের নিজেদের কোন ঘর নেই।বাবা মরে যাওয়ার পর সব যোগাযোগ বন্ধ ওদের সাথে।ওর এক চাচা থাকেন গ্রামে। রজনীর ভাই সেখানেও খবর নিয়েছে, রজনী সেখানেও যায়নি। রজনী যেন হঠাৎ উধাও হয়ে গেলো।

হাজেরার কাছে সব কিছু অন্য রকম মনে হচ্ছে। অথচ এই সবই তাঁর নিজের হাতে সাজানো গোছানো।জালেরা বেগম,হাজেরাকে জড়িয়ে ধরলেন বুকের সাথে, তাঁর চোখ দিয়ে পানি চলে এলো।
শাশুড়িকে তিনি বরাবরই দূরে রেখেছেন আর শাশুড়িও তাকে খুব একটা কাছে টানেননি।তাই তাদের সম্পর্কটা খুব একটা মধুর ছিল না।
এখন জালেরা বেগমের বুকে তিনি মায়ের গন্ধ পাচ্ছেন।হাজেরা একেবারে লেপ্টে গেলেন শাশুড়ির বুকে। দুজনের চোখেই পানি।

এই দৃশ্য দরজার বাইরে থেকে দেখে তোফাজ্জল আর ভেতরে ঢুকলেন না। তার চোখটাও যেন ভিজে উঠছে। তাড়াতাড়ি চলে গেলেন এই দৃশ্যের বাইরে।

এর পর হাজেরা তাঁর ঘরের দিকে নজর দিলেন। সাহায্য কারী লোকদের এটা সেটা করতে বলতে লাগলেন।তারা প্রতিদিন হাজেরার ঘর পরিষ্কার করলেও তিনি এত এত ময়লা দেখাতে লাগলেন, বলতে লাগলেন ফার্নিচার ঠিকমত মোছা হয়নি, সব কাজে শুধু ফাঁকিবাজি।আসলে ঘরের চালিকা না থাকলে যা হয় আর কি।জালেরা বেগম বেশির ভাগ সময় নামাজ, দোয়া,দুরুদ পড়ে কাটিয়েছেন।
কাজের লোকরা যা করেছে,তাই। এত দিন ভাইয়ের বাসায় থেকে এক মুহুর্তের জন্যও নিজের মনে হয়নি, কোন কিছু। তিনি ছিলেন ওখানে কিন্তু তাঁর মন পড়ে ছিল এখানে।সব কিছু তিনি ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখতে লাগলেন।

এই মায়ার কারনেই মানুষ পৃথিবী ছেড়ে যেতেও ভয় পায়।

জালেরা বেগম তাড়া দিলেন খাওয়ার জন্য।

এই মহিলা সারাজীবন অন্যকে খাওয়ানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পরেন।কেউ তৃপ্তি নিয়ে খাচ্ছে এই দৃশ্য দেখলেও যেন তাঁর তৃপ্তি হয়।গ্রামে এই জন্য তাঁর অনেক সুনাম। তাঁর দুয়ার থেকে কেউ অভুক্ত পেটে যেতে পারে না।

—কিন্তু আম্মা আমার এখন ডায়েট চার্ট অনুসারে খেতে হয়।এখন কিছু খেলে রাতে আর খেতে পারবো না,আর কিছুক্ষণ পরে একবারে রাতের খাবার খেয়ে ফেলবো ।
—কি যে কউ না?একটু খাইলে কিছু হইবো না।
—না,আম্মা মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসছি, এখন একটু না মেনে চললে হবে?

জালেরা বেগম এই কথা শুনে বললেন-
—মৃত্যুর দুয়ার থাইকা কেউ ফিরতে পারে না বুঝলা? যখন ইজরাইল আইবো ফেরত যাইবো না। যত দিন যার হায়াত আছে ততদিনই বাঁচবো মানুষ।
—ঠিকই বলছেন আম্মা ,যার ডাক যখন আসবে তখনই যেতে হবে।

জালেরা কিংবা তোফাজ্জল কেই নওমির প্রসঙ্গ তুলছেন না, তাঁরা কথা বলছেন খুব সাবধানে, রাস্তায় বৃষ্টির পানি জমে থাকলে পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ার মতো।হাজেরা আসবেন তাই জালেরা বেগম আজ রান্না করেছেন। হাজেরা মুখে দিয়েই বুঝতে পারলেন। তিনি বললেন-
—আম্মা আপনার হাতের রান্না মুখে দিলেই বোঝা যায়, অপূর্ব স্বাদ।আজ মনে হয় অনেক বেশি খেয়ে ফেলবো।
—খাও মা, একদিন একটু বেশি খাইলে কিছু হয় না।
এই যে এত মমতা দিয়ে খাওয়াচ্ছেন জালেরা বেগম এটা কি ফিরিয়ে দেয়া যায়, নাকি তিনি ফেরাতে পারবেন?

তাঁরা কেউ নওমির প্রসঙ্গ না তুললেও হাজেরা খুব স্বাভাবিকভাবেই জানতে চাইলো নওমির কথা।
তোফাজ্জল চুপ করেই রইলেন।
জালেরা বেগম বললেন সব কিছু। হাজেরা চলে যাওয়ার পর থেকে নওমির বিয়ে ঠিক হওয়া পর্যন্ত।
—ভালোই হলো আম্মা,মেয়েটার ভালো একটা ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক হলো।আমি এই কয়দিন অনেক চিন্তা ভাবনা করেছি।নওমির কি দোষ? দোষ আপনার ছেলেকেও দিতাম না,যদি সে আমাকে আগেই জানাতো।
—এই সব কথা বাদ দেও মা।
—ঠিকই বলছেন আম্মা।মেয়েটা ঐ দিন বুদ্ধি করে তাড়াতাড়ি হসপিটালে না নিতে বললে খারাপ কিছু ঘটতে পারতো।মেয়েটার কাছে আমি ঋণী। তবে আমার একটা ইচ্ছা আছে পরে সেটা বলবো।

তোফাজ্জল একটু অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন। কি এমন ইচ্ছে আছে তাঁর?
—আরে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।যা করতে চাইছি বুঝে,শুনেই করতে চাইছি।সবাই আমার সাথে এক মত হবেন আশা করি।

হাজেরা ওয়াসরুম থেকে এসে আয়নার সামনে বসলেন।আজ তিনি ইচ্ছে করেই সময় গড়াচ্ছেন।
তোফাজ্জল শুয়ে শুয়ে মোবাইলে কি যেন করছেন।চুল আঁচড়ে,লোশন দিচ্ছেন অহেতুক এটা সেটা করছেন।আজ তাঁর মনে পড়ছে বিছানায় শুয়ে থাকা মানুষটার সাথে কাটানো প্রথম রাতের কথা।কি ভয় আর লজ্জায় মুড়ে ছিলেন। মানুষটার প্রথম স্পর্শে ভয়ে কাঁপছিলেন।

ভাবনায় এতটাই ডুবে ছিলেন যে,হাতের স্পর্শে চমকে উঠলেন হাজেরা। তোফাজ্জল তাঁর কাঁধে হাত রেখে জিজ্ঞেস করলেন-
—ঘুমাবে না?

সেই নবযৌবনা বধূর মতো কেঁপে না উঠলেও একটু যেন আলোরণ তুলল দেহ-মনে।তিনি কি এই মানুষটাকে ভালোবাসেন? এই প্রশ্নের উত্তর তাঁর জানা নেই।তবে এটা জানেন,এই মানুষটাকে ছাড়া কোথাও থেকে তিনি বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারবেন না।আজ এই পরন্ত বেলায় এই মানুষটার মাঝে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে ।

তোফাজ্জল হাজেরার চোখের দিকে তাকিয়ে বললেন-
-‘যখন চোখের সামনে ছিলে,
বুঝিনি তুমি আমার জীবনের কত অমূল্য সম্পদ! হেলায় হারিয়ে ফেলে
বেদিশা হয়ে খুঁজেছি তোমায়।
চোখের সামনে রেখে অন্যখানে,অন্যমাঝে খুঁজে ফিরি সুখ,কেন মিছে?
সবই তো আছে পড়ে
শুধু খুঁজে নিতে জানতে হয়।’

—বাহ্ ,মনে হয় কবি হয়ে গেলে?
—এক সময় লিখতাম।
—কই জানি না তো।
-‘যে সব জানার ছিল বাকি,বুঝার ছিল বাকি
এখন সব পূরণ করে নাও।
আমি তো তোমাতেই আছি।
আর হবে না তোমার-আমার ফাঁকি।।’

হাজেরা যেন লজ্জা পেলেন।এই বয়সেও তাঁর কেন নতুন প্রেমে পড়ার মতো লজ্জা লাগছে!!!

চলবে…

#ফাহমিদা_লাইজু

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here