#মুহূর্তে
পর্ব-১০
নিলুফার ইয়াসমিন ঊষা
একমাস পর,
ক্লাস শেষে কবিতা ও অনু ক্যান্টিনে বসে গল্প করছিলো।
কবিতা দেখে তীর্থসহ তার কয়েকটা বন্ধুও ক্যান্টিনে এসেছে। তাদের দেখেই একটি টেবিল খালি করা হয়। আশেপাশের থেকেও অনেকে উঠে যায়। কবিতা বুঝতে পারে না তীর্থদের থেকে সবাই এত ভয় পায় কেন? সে ভার্সিটিতে আসার পর থেকে তীর্থের কোনো খারাপ দিক দেখে নি। টেবিলে বসা তীর্থ কবিতার দিকে তাকায়। কবিতার দিকে তাকাতেই তার ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি এঁকে উঠে। সাথে সাথে কবিতা চোখ সরিয়ে নেয়। এই ছেলেকে হাসলে এত আকর্ষণীয় দেখায় কেন?
কবিতাকে এভাবে লজ্জা পেতে দেখে অনু পিছনে তাকিয়ে একপলক তীর্থকে দেখে। তারপর বিরক্তি নিয়ে কবিতাকে বলে, “তোকে না বলেছি ওর থেকে দূরে থাকতে। একদম তাকাবি না ওর দিকে। ভার্সিটিতে সবাই ওকে নিয়ে কত খারাপ কথা বলাবলি করে তুই জানিস না?”
“তো সাথে ভালোও তো বলে। ওইটা তো কানে শুনিস না। অনেকের হেল্প করে। একটু রাজনীতি করে মানছি কিন্তু অন্যদের সাহায্যও তো করে। যাদের সামর্থ্য নেই তাদের ভর্তির ফি কমিয়ে দিলো আবার মেয়েদেরও কত সম্মান করে। আজ পর্যন্ত অন্য কোনো মেয়ের দিকে তাকাতেও দেখি নি।”
অনু কবিতার কথা শুনে আরেকবার পিছনে ফিরে তীর্থের দিকে তাকিয়ে বলল, “এখনো তোর দিকে তাকিয়ে আছে।”
“কেবল আমার দিকেই তাকায় জান। এখন আমার রূপের জাদু এত বেশি হলে ছেলেটার কী দোষ বল?” কথাটা বলেই হেসে দেয় কবিতা।
“ফাজলামো না। তুই ভুলেও ওর প্রতি দুর্বল হবি না বলে দিলাম। তোর বোন একতো ওই ছ্যাঁচড়ার প্রেমে পড়ে বসে আছে তুই ভুলেও এমন করবি না। আমি মানছি তীর্থ অন্যের সাহায্য করে, ভালো কাজও করে আবার তার নজরও খারাপ না। সব মানছি, কিন্তু সাথে গুন্ডামীও করে। ওর ব্যাকগ্রাউন্ডও শুনেছি বিশেষ ভালো নয়। তোর বড় ভাই ওর কথা জানলে তোকে আস্ত কবর দিবে। আমার কথা শুন, কথনকে নিয়ে আরেকবার ভাব। তুই ওর মতো সেটেল্ড ছেলে আর পাবি না। সবদিক দিকে ও তোর জন্য বেস্ট। ওর পরিবার ভালো, দেখতেও সুদর্শন, ভবিষ্যত উজ্জ্বল, চিন্তাধারাও তোর মতো, তোর স্বপ্নকেও সাপোর্ট করে। আমি বুঝতে পারছি না তুই ওকে বিয়ে করতে চাচ্ছিস না কেন?”
“প্রথমত আমি বিয়ের জন্য মানা করি নি, কথন করেছে। আমার মনে হয় উনি নিজের আগের গার্লফ্রেন্ডকেই ভালোবাসে এখনো। আর যেখানে কেউ আমাকে ভালোবাসে না আমি তাকে এই কারণে বিয়ে করতে পারব না যে সে সেটেল্ড। দ্বিতীয়ত আমার মনে তীর্থের জন্য তেমন কোনো অনুভূতি নেই। উনি ধ্রুব ভাইয়ার বন্ধু। প্রায় বাসায় আসে দেখে কথা হয়।”
“প্রায় না প্রতিদিন। তোর কথা এবং কাজে আমি অন্তত মিল খুঁজে পাচ্ছি না।”
“জ্বালানো বন্ধ কর তো।” বিরক্তি নিয়ে বলে কবিতা।
“তুই কথনের সাথে কথা বলে দেখেছিস? একদিন দেখা করার পর তার খবরও নিলি না।”
“উনি খোঁজ নেয় নি। আমি কেন নিব?”
” আমি বুঝি না ছেলেটা সবদিক থেকে ভালো তাহলে তুই তোর ইগো একপাশে রেখে নিজের থেকে তার সাথে কথা বলতে পারিস। ও সব দিক থেকে পার্ফেক্ট।”
“এত ভালো হলে নিজে বিয়ে করে নেয়।”
“দেখ আমার নিজের ক্যারিয়ার অনেক প্রিয়। কিন্তু তোর তো পড়াশোনায় বিন্দুমাত্র ধ্যান নেই। এইজন্যই বলছি কথনের সাথে বিয়ে করে নিলেই তোর জন্য ভালো হবে।কেন যেন আমার মনে হয় সে তোর স্বপ্নের পথেও তোর পাশে থাকবে।”
এমন সময় টেবিলের সামনে এসে দাঁড়ায় পলাশ ও লিমন। তারা এসেই জিজ্ঞেস করে, “ভাবি কেমন আছেন?”
কবিতা থতমত খেয়ে যায় দুইজনের মুখ থেকে ভাবি ডাক শুনে। অনু ধমকের সুরে তাদের জিজ্ঞেস করে, “কে আপনার ভাবি?”
“কবিতা ভাবি ছাড়া আর কে হবে?”
“আপনার কোন ভাইয়ের সাথে ওর বিয়ে হয়েছে শুনি?”
কবিতা টেবিলের উপর কনুই রেখে নিজের গালে হাত দিয়ে বলল, “আরে বাদ দে তো, ভাবি ডাকতে কি ট্যাক্স লাগে না’কি? তাই না ভাইয়া?”
“একদম ঠিক।”
“কিন্তু আমাকে ভাবি ডাকলে গিফট দেওয়া লাগবে। জলদি হাজার টাকা বের করেন। প্রতিবার ভাবি ডাকলে পাঁচশো টাকা। আপনারা দুইবার ডেকেছেন তাই একহাজার টাকা।”
টাকার কথা শুনতেই দুইজনের মুখের রঙ উড়ে যায়। লিমন জোরপূর্বক হেসে বলে, “তীর্থ ভাই মনে হয় ডাকতেছে। আমি যাই।”
লিমন প্রায় দৌড়ে যায়। তার পিছনে দৌড় পলাশও দৌড়ে যেয়ে বলে, “আমাকেও ডাকে।”
“আরে ভাই টাকা তো দিয়ে যান।” কবিতা ও অনু দুইজনে হেসে দেয় তাদের দৌঁড়ে যাওয়া দেখে। তারপর দুইজন বিল দিয়ে উঠে যায়। দরজা থেকে বের হবার পূর্বে কবিতা আরেকবার তাকায় তীর্থের দিকে। তীর্থের দৃষ্টি তার দিকে। কবিতা ক্যান্টিনের দরজা দিয়ে বের হবার পরও শেষবারের মতো পিছিয়ে তাকায় তীর্থের দিকে। এখনো তীর্থের দৃষ্টি তার দিকে আটকানো। কবিতা সেখান থেকেই তীর্থকে ভেঙিয়ে অনুর সাথে চলে যায়।
তীর্থের হাসি আরও গাঢ় হয় কবিতার এমন কান্ড দেখে। এমনভাবে সে শেষ কবে হেসেছিলো তার এইটাও মনে নেই। তার এমন হাসি দেখে লিমন বলে, “ভাই আপনাকে এর আগে এমনভাবে কখনো হাসতে দেখি নাই। ভাবিই তো আপনার এমন হাসির কারণ তারে যাইতে দিবেন না।আজ ভাবির বান্ধবী কইলো ভাবির না’কি বিয়ার কথা চলে।”
কথাটা শুনেই তীর্থ চমকে তাকায় লিমনের দিকে। কিন্তু কিছু বলল না। হঠাৎ তার চোখের সামনে ভেসে উঠলো কবিতাকে দৃষ্টি দর্শনে দিনটি। বাস হঠাৎ চালু হওয়ায় কবিতা পড়ে যেতে নিয়েছিলো। কবিতা তার কাঁধে হাত রেখে নিজেকে সামলায়। সেও তাকায় কবিতার দিকে। চোখে চোখ পড়ে। দৃষ্টি মিলন হয়। তার নয়নে আঁকা ছিলো কৃষ্ণবর্ণ কাজল। সোনালী রোদ্দুর তার মুখে এসে পড়ায় তাকে স্নিগ্ধ দেখাচ্ছিল। হঠাৎ তার মনে হলো সে ওই দুটো নয়নের মতো এমন সুন্দর দৃশ্য আর দেখে নি।
লিমনের কথাটা শুনে তীর্থ নিজের বুকে ব্যাথা অনুভব করে। এমনটা হবার কথা না। কবিতার সাথে তার বেশি সময় কাটে নি। তাদের মাঝে বিশেষ কথাও হয় নি। তবে কেন তার এমন হচ্ছে?
কবিতার মাঝে এমন কিছু আছে যাতে সে নিজেকেও কবিতার জন্য ভুলিয়ে দেয়। যতক্ষণ সে কবিতার দিকে তাকিয়ে থাকে ততক্ষণ তার মনে কোনো চিন্তা আসে না। তার অতীতের স্মৃতিতে তার বুক ব্যাথা করে না। সে পাড়লে তো কবিতাকে মনের সিন্দুকে লুকিয়ে রাখে যেখান থেকে কেউ তাকে না দেখতে পারবে, না ছুঁতে পারবে। কবিতা শুধু তার হয়ে থাকবে। শুধুই তার।
.
.
কবিতা নিজের ক্লাসরুমে যাওয়ার সময় দেখতে পায় তাহিরাকে। তার সাথে আরেকটা মেয়ে রয়েছে। কবিতা দূর থেকে বুঝতে পারলো না তাদের মাঝে কি কথা হচ্ছে কিন্তু ভালোভাবে কথা হচ্ছে তা মোটেও মনে হলো না। মনে হচ্ছে মেয়েটা তাহিরাকে ধমকাচ্ছে। হঠাৎ মেয়েটা তাহিরার হাত শক্ত করে ধরে নিলো। এই পরিস্থিতি দেখে কবিতা দ্রুত যায় তাহিরার কাছে।
“কী হচ্ছে এইখানে?” কবিতার কন্ঠ শুনতেই মেয়েটা তাহিরার হাত ছেড়ে দেয়। থতমত খেয়ে যায় কিছু মুহূর্তের জন্য। তারপর নিজেকে সামলে তাহিরাকে আঙুল দেখিয়ে বলে, “শেষ ওয়ার্নিং দিচ্ছি ধ্রুবর কাছ থেকে দূরে থাকবে, নাহলে ভালো হবে না।”
কবিতার রাগ উঠে যায়। সে মেয়েটাকে কিছু বলতে নিলেই তাহিরা তার হাত ধরে নেয়। কিছু বলতে দেয় না। তাই কবিতার রাগ ঝরে তাহিরার উপরই, “আপু তোমাকে ধমক দিয়ে যাচ্ছিলো কিন্তু তুমি কিছু বলো নি কেন মেয়েটাকে?”
“বাদ দে, অকারণে ঝগড়া করে কি লাভ? মেয়েটা এমনিতেই কষ্টে আছে। আমি উল্টাপাল্টা বললে আরও কষ্ট পাবে।”
“ওই মেয়ের ভাব দেখে তো মনে হয় নি যে ও কষ্টে আছে। তোমার এই গুণই তো আমার সহ্য হয় না। ভালো হওয়া ভালো কিন্তু অতিরিক্ত ভালো হওয়াটা নিজের জন্যই একসময় বিষ হয়ে যায়। দয়া করে তোমার মহান ভাবটা কমাও। আর ধ্রুব ভাইয়াকে নিয়ে কি বলল?”
অনু বলে, “এই মেয়ে না ধ্রুবর গার্লফ্রেন্ড ছিলো কয়দিন আগে?”
“গার্লফ্রেন্ড!” বিস্মিত গলায় বলে কবিতা, “তাহিরা আপু তুমি এই ব্যাপারে জানতে?”
তাহিরা মাথা নামিয়ে নেয়, “আসলে ঠিক গার্লফ্রেন্ড না, ওর সাথে কথা বলতো। ও মনে করেছে ধ্রুব ওকে পছন্দ করে। গত একমাস ধরে কথা বন্ধ করার কারণে ও ভাবছে আমার কারণে এমনটা হয়েছে।”
“আর এইটা কি সত্যি?”
তাহিরার গালদুটো হঠাৎ-ই গোলাপি আভায় ঢেকে যায়, “জানি না।”
অনু ভীষণ বিরক্তি নিয়ে বলে, “আপনারা দুই বোন একরকম। কথা আর ভাবে কোনো মিল নেই। বিশ্বাস করেন আপনাদের একজনের পছন্দও ভালো না।”
কবিতা অনুকে কিছু বলতে নিবে এর পূর্বেই ফোন বেজে উঠে তার। ব্যাগ থেকে কবিতা ফোন বের করে দেখে আননোওন নাম্বার। কবিতা কল ধরে জিজ্ঞেস করে, “হ্যালো, কে?”
“বিনা মগজের মেয়ে বলছেন?”
কবিতা চোখ বন্ধ করে বিরক্তির নিশ্বাস ফেলে, “আর আপনি কি ছ্যাঁকা খেয়ে ব্যাঁকা হওয়া পার্টি বলছেন?”
“মিস আমার শার্টে পানি ফেলার কন্টেক্টওয়ালি আপনি দয়া করে পাঁচ মিনিটের মধ্যে নিচে আসুন আমি আপনার জন্য অপেক্ষা করছি।”
“আর মিস্টার পাগলের ডাক্তার, আপনি আমার জন্য অপেক্ষা কেন করছেন?”
“মিস ক্ষুধা লাগছে, কারণ আপনি আমার বাসায় যাচ্ছেন। আপনার ভাই বলে নি?”
কবিতা অবাক হয়ে বলে, “ভাইয়া? কোথায় না-তো।”
“নিচে আসুন। আমি দাঁড়িয়ে আছি।”
“আমার ক্লাস আছে।”
“আপনাকে দেখে মনে হয় না আপনি জীবনে বইয়ের দিকে ভালো নজরে তাকাইসেন। ক্লাস মিস দেওয়ার বাহানা দিচ্ছি। চাইলে জলদি আসো, নাহলে আমি গেলাম। তারপর তোমার কবির ভাইকে বলো তুমি ক্লাস করছিলে।”
কবিতার উওর না শুনেই কথন কল কেটে দেয়। কবিতা বিরক্ত হয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে তাহিরা ও অনুর দিকে তাকায়। দেখে দুইজনেরই ভূত দেখার মতো তার দিকে তাকিয়ে আছে। অনু জিজ্ঞেস করে, “কোন এলিয়েনের সাথে কথা বলছিলি তুই?”
“কথন নামক এলিয়েনের সাথে কথা বলছিলাম সে না’কি নিচে দাঁড়িয়ে আছে। আমার যেতে হবে। তুই ধ্রুব ভাইয়াকে নিয়ে তোর সম্পূর্ণ ভাষণ তাহিরা আপুকে শোনা। আমি গেলাম।”
“আরে কিন্তু ক্লাস আছে তো।”
কবিতা কোনো কথা শুনল না। তড়িঘড়ি করে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে শুরু করল।
কবিতার যাবার পর তীর্থ এবং তার সাথীরাও ক্যান্টিনে থাকে না। তারা এসে পড়ে তাদের আড্ডার জায়গায়। ভার্সিটির বাহিরেই একটি চা’য়ের দোকান আছে। সেখানেই প্রতিদিন তাদের আড্ডা বসে। তীর্থ আবারও একটি সিগারেট মুখে দিতে নিয়েও থেমে যায়। সামনে থেকে কবিতাকে আসতে দেখে হাতের সিগারেট হাত থেকে ফেলে দেয়। সে উঠে দাঁড়ায়। সে ভাবে কবিতা তার সাথেই কথা বলতে এসেছে। তার এমনটা ভাবার বিশেষ কারণ নেই। হঠাৎ তার এমনটা মনে হলো। কিন্তু তার ভাবনাটা সত্যি হলো না। কবিতা তার দিকে একটিবার তাকালও না। তার ঠিক পাশ কাটিয়ে চলে গেল।
তীর্থ পিছনে ফিরে দেখে কবিতা একটি গাড়ি সামনে যেয়ে দাঁড়ায়। গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা পুরুষটির সাথে কিছু কথা বলে। লোকটা দেখতে সুদর্শন। পরিপাটি মনে হচ্ছে তাকে। এই লোকটার সাথেই কি কবিতার বিয়ে ঠিক হয়েছে? ভাবতেই কেমন যেন বুকের ভেতর মুচড়ে উঠে তার। সাথে সাথে সে চোখ ফিরিয়ে নেয়। তার মনে হয় ওই পরিপাটি লোকটার সাথেই কবিতাকে মানায়, তার মতো এলোমেলো মানুষের সাথে নয়।
কবিতা কথনের সামনে দাঁড়িয়েই বকা দেয়, “কেউ এভাবে ফোন কাটে? আমার কথা তো সম্পূর্ণ শুনবেন না’কি? মাথায় কি আক্কেল নামক কিছু আছে?”
কথন কবিতার কথাগুলো না শোনার ভাব করে যেয়ে গাড়িতে উঠে বসে এবং কবিতাকেও বলে উঠে বসতে। কবিতা না চাওয়া সত্ত্বেও গাড়িতে উঠে। কথন কবিতার হাতে একটি প্যাকেট দিয়ে বলে, “খেয়ে নেও।”
“কী এটা?”
“পেস্ট্রি ও ডোনাট।”
“ওয়াও আমার ফেভারিট। আমি ভাবিনি আপনি আমার জন্য এগুলো আনবেন। যত ভেবেছি এত খারাপও আপনি না।”
“তুমি দুই মিনিট পর পর ক্ষুধা লাগছে ক্ষুধা লাগছে করবে, তাই আমার কান যেন ঝালাপালা না হয়ে যায় এইজন্য আনলাম।”
কবিতা মুখ বানায় কথাটা শুনে, “যাই হোক আজ হঠাৎ নিতে আসলেন যে?”
“মা তোমাকে দেখতে চাইলো। সাথে ঘরও দেখাতে চাইলো। বিয়ের আগে তোমার শশুড়বাড়ি দেখা প্রয়োজন তাই না?”
কবিতা ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায় কথনের কথা শুনে, “বিয়ে? কার বিয়ে? আপনি না বিয়ের জন্য মানা করে দিবেন?”
কথন গাড়ি চালাতে শুরু করতে নিলেই তার চোখ যায় কবিতার উপর। সে সিটবেল্ট পড়ে নি। কথন জিজ্ঞেস করে, “সিটবেল্ট পড়তে পারো না?”
কবিতা মাথা নাড়িয়ে নাবোধক উওর দেয়। কথন উঠে কবিতার সিটবেল্ট লাগাতে যায়।
“করছেনটা কী?” কবিতার প্রশ্ন শুনে কথন তাকাল তার দিকে। মেয়েটার চোখেমুখে বিস্ময়ের ছাপ। সাথে মিশ্রিত লাজুকতা। সে খেয়াল করে নি কিন্তু কবিতার কাছে এসে পড়েছে সে। কবিতার কথায় যখন সে তার দিকে তাকায় তখন সে কবিতার মুখোমুখি। প্রথম শুভ দৃষ্টিমিলনের মুহূর্ত এলো। দৃষ্টিমিলনের পরের মুহূর্তেই কবিতা দৃষ্টি নামিয়ে নেয়। তার চোখের পলকগুলো কী ঘন! তার ফর্সা মুখটায় লুকানো আছে লালচে আভা। কবিতার চোখ, নাক গড়িয়ে কথনের দৃষ্টি আটকায় কবিতার ঠোঁটে। কবিতার ঠোঁটজোড়া দেখে তার মনে হলো কোনো শিল্পী এঁকেছে এই ঠোঁটজোড়া। তাও এতটা নিখুঁতভাবে!
চলবে….
[বিঃদ্রঃ ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন। গল্পটা কেমন লাগছে জানাবেন। ধন্যবাদ।]
সকল পর্ব-
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=381227816949915&id=100051880996086